প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
প্রধানমন্ত্রী জেএনইউ ক্যাম্পাসে স্বামী বিবেকানন্দের মূর্তির আবরণ উন্মোচন করেছেন
জাতীয় স্বার্থের চাইতে আদর্শকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিৎ নয় : প্রধানমন্ত্রী
ভাবনার আদান-প্রদান এবং নতুন ভাবনার গতিকে সব সময় বিনা বাধায় চলতে দিতে হবে
Posted On:
12 NOV 2020 8:09PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ১২ নভেম্বর, ২০২০
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নতুন দিল্লিতে জেএনইউ ক্যাম্পাসে স্বামী বিবেকানন্দের মূর্তির আবরণ উন্মোচন করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী জেএনইউ-এর ছাত্রছাত্রী এবং দেশের যুব সম্প্রদায়কে তাঁর ভাষণে জাতীয় স্বার্থের চাইতে আদর্শকে অগ্রাধিকার দিলে কি ক্ষতি হতে পারে সেই বিষয়ে তাঁর মতামত জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আমাদের দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা এর ফলে যথেষ্ট ক্ষতির সম্মুখীন হয়। "কারণ, আমার আদর্শ একটি ভাবনায় চলবে, আবার জাতীয় স্বার্থ অন্য ভাবনায়, আমাকে একই গণ্ডীর মধ্যে ভাবনা-চিন্তা করতে হবে, আমি একই জিনিস নিয়ে কাজ করব, এই ধারণাটাই ভুল।” শ্রী মোদী বলেছেন, একজন তাঁর আদর্শের বিষয়ে গর্বিত হতেই পারেন, কিন্তু একইসঙ্গে জাতীয় স্বার্থের ক্ষেত্রে আমাদের দেখতে হবে আমাদের আদর্শ যেন স্বার্থের পরিপন্থী না হয়। এই বিষয়টির ওপর তিনি বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী ছাত্রছাত্রীদের বলেছেন, দেশের ইতিহাসে যখনই সঙ্কটের সময় এসেছে, তখন দেশের স্বার্থে প্রতিটি আদর্শের মানুষ একজোট হয়েছেন। স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে সব আদর্শের মানুষ জোট বেঁধেছিলেন। তাঁরা একসঙ্গে সংগ্রাম করেছেন। দেশ এই একই সংহতি দেখেছিল জরুরি অবস্থার সময়। প্রাক্তন কংগ্রেসি নেতৃবৃন্দ এবং কর্মীরা তাঁরাও জরুরি অবস্থার বিরুদ্ধে আন্দোলনে সামিল হয়েছিলেন। সেখানে আরএসএস-এর স্বেচ্ছাসেবক এবং জনসঙ্ঘের মানুষেরাও ছিলেন। সমাজতন্ত্র ও কমিউনিস্ট ভাবধারার মানুষও একজোট হয়েছিলেন।
এই সংহতির প্রতি প্রধানমন্ত্রী গুরুত্ব দিয়ে বলেছেন, কেউই তাঁর আদর্শ থেকে চ্যুত হবেন না। তবে সকলের একটি উদ্দেশ্য থাকতে হবে - জাতীয় স্বার্থ। আর তাই যখনই দেশের ঐক্য, অখণ্ডতা এবং জাতীয় স্বার্থের প্রশ্ন আসবে, তখন সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় কোনও আদর্শের কথা ভাবলে তা দেশের জন্য ক্ষতিকর হবে।
প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, ভাবনা ভাগ করে নেওয়া এবং নতুন ভাবনার গতিতে কোনও বাধা সৃষ্টি করা উচিৎ নয়। আমাদের দেশের মাটি হল সেই মাটি যেখানে বিভিন্ন ভাবধারার বীজ বিকশিত হয়েছে। এই ঐতিহ্যকে আরও শক্তিশালী করার দায়িত্ব আমাদের যুব সম্প্রদায়ের। এই ঐতিহ্যের জন্য ভারতে বিশ্বের সবথেকে প্রাণবন্ত গণতন্ত্র রয়েছে বলে শ্রী মোদী মন্তব্য করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারের সংস্কারের বিষয়ে ছাত্রছাত্রীদের বিস্তারিতভাবে জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আত্মনির্ভর ভারতের ধারণা ১৩০ কোটির বেশি মানুষের সঙ্ঘবদ্ধ চেতনার মাধ্যমে গড়ে উঠেছে। আর এটাই আমাদের উচ্চাকাঙ্ক্ষার মূল কারণ। দেশের সংস্কার অব্যাহত রাখার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শ্রী মোদী জেএনইউ-এর ছাত্রছাত্রীদের আবেদন জানিয়েছেন কিভাবে ভালো সংস্কারের মাধ্যমে খারাপ রাজনীতিকে পরিবর্তন ঘটিয়ে ভালো রাজনীতিতে পরিণত করা যায় তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করার। তিনি বলেছেন, আজ সংস্কারের পেছনে ভারতের প্রতিটি ক্ষেত্রকে আরও উন্নত করে তোলার চাহিদা রয়েছে। যে উদ্দেশ্য এবং লক্ষ্যের মাধ্যমে আজ সংস্কার হাতে নেওয়া হয়েছে তা অত্যন্ত আন্তরিক। তিনি বলেছেন, এই সংস্কার শুরুর সঙ্গে সঙ্গে একটি সুরক্ষার বলয় তৈরি করা হয়েছে এবং সেই সুরক্ষার ভিত্তি হল বিশ্বাস।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দীর্ঘ সময় ধরে দরিদ্রদের শুধুমাত্র স্লোগান দেওয়ার জন্যই ব্যবহার করা হত। দেশের ব্যবস্থার সঙ্গে দরিদ্র মানুষদের যুক্ত করার কোনও উদ্যোগই নেওয়া হয়নি। তিনি বলেছেন, দরিদ্র মানুষেরা ছিলেন সবথেকে অবহেলিত, যোগাযোগহীন এবং অর্থনৈতিক কর্মসূচির আওতার বাইরে। তিনি আরও বলেছেন, এখন দরিদ্র ব্যক্তিরা নিজেদের পাকা বাড়ি, শৌচালয়, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পরিচ্ছন্ন পানীয় জল, ডিজিটাল ব্যাঙ্কিং, কম খরচে মোবাইলের যোগাযোগ এবং ইন্টারনেট সংযোগ পাচ্ছেন। দরিদ্রদের চারপাশে এই সুরক্ষা কবচই তৈরি করা হয়েছে যেটি তাঁদের উচ্চাকাঙ্ক্ষা পূরণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একইভাবে, ভালো সেচের ব্যবস্থা, কৃষি বাজারগুলির আধুনিকীকরণ, ই-ন্যাম, সয়েল হেলথ কার্ড, ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে ভালো মানের ইউরিয়া সার পাওয়া - এসবের মাধ্যমে কৃষকের জন্য সুরক্ষার একটি বলয় তৈরি করা হয়েছে। সরকার প্রথমে তাঁদের চাহিদা পূরণের জন্য কাজ করেছে আর এখন তাঁদের উচ্চাকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য কাজ করছে।
প্রধানমন্ত্রী আশা করেন, জেএনইউ-তে স্বামীজির এই মূর্তি প্রত্যেকের জন্য অনুপ্রেরণার কারণ হবে এবং স্বামী বিবেকানন্দ যেমনটা চাইতেন, ঠিক সেরকম সাহস সকলের মধ্যে দেখা যাবে। তিনি আরও বলেছেন, এই মূর্তি অন্যের প্রতি দয়া করার বিষয়টির শিক্ষা দেবে যা স্বামীজির দর্শনের মূল কথা। তিনি আশা করেন, এই মূর্তি দেশের জন্য আমাদের একনিষ্ঠভাবে কাজ করা শেখাবে, আমাদের দেশকে ভালোবাসতে হয় কিভাবে তা শেখাবে যা ছিল স্বামীজির জীবনের মূলমন্ত্র। তিনি আশা করেন, এই মূর্তির মাধ্যমে দেশ একতার দর্শনে উদ্বুদ্ধ হবে এবং যুব সম্প্রদায়ের নেতৃত্বে উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলবে, স্বামীজি যা আশা করতেন। তিনি আশা করেন, এই মূর্তির মাধ্যমে একটি শক্তিশালী ও সমৃদ্ধশালী ভারতবর্ষ গড়ার যে স্বপ্ন স্বামীজি দেখতেন তা আমাদের অনুপ্রাণিত করবে।
***
CG/CB/DM
(Release ID: 1672468)
Visitor Counter : 244
Read this release in:
Urdu
,
English
,
Marathi
,
Hindi
,
Manipuri
,
Assamese
,
Punjabi
,
Gujarati
,
Odia
,
Tamil
,
Telugu
,
Kannada
,
Malayalam