প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উত্তরপ্রদেশের ঝাঁসির রানি লক্ষ্মীবাঈ সেন্ট্রাল এগ্রিকালচারাল ইউনিভার্সিটির কলেজ ও প্রশাসনিক ভবনের উদ্বোধন করেছেন

Posted On: 29 AUG 2020 3:13PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ২৯ আগস্ট, ২০২০

 



প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উত্তরপ্রদেশের ঝাঁসির রানি লক্ষ্মীবাঈ সেন্ট্রাল এগ্রিকালচারাল ইউনিভার্সিটির কলেজ ও প্রশাসনিক ভবনের উদ্বোধন করেছেন। তিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী প্রত্যেককে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করে অনেক কিছু শিখে বেরোনোর পর ছাত্রছাত্রীরা দেশের কৃষি ক্ষেত্রকে আরও শক্তিশালী করবে বলে তিনি আশা করেন। তিনি বলেন, নতুন ভবনের নতুন নতুন সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার ফলে ছাত্রছাত্রীরা উৎসাহিত এবং অনুপ্রাণিত হয়ে আরও কঠোর পরিশ্রম করবেন। 

"আমি ঝাঁসিকে দেবো না।" ౼রানি লক্ষ্মীবাঈ-এর এই উদ্ধৃতি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী  ঝাঁসি এবং বুন্দেলখণ্ডের জনসাধারণকে আত্মনির্ভর ভারত অভিযানকে সফল করে তোলার আহ্বান জানান।

শ্রী মোদী  বলেছেন, আত্মনির্ভর ভারত অভিযানে কৃষিক্ষেত্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। কৃষকদের, উৎপাদক এবং শিল্পোদ্যোগী হয়ে ওঠার মধ্য দিয়ে কৃষিক্ষেত্র আত্মনির্ভর হয়ে উঠবে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এই ভাবনার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে বিভিন্ন ঐতিহাসিক সংস্কার হাতে নেওয়া হয়েছে। অন্যান্য শিল্পের মতো কৃষকরাও এখন  তাঁদের উৎপাদিত সামগ্রী দেশের যে কোনও জায়গায় বিক্রি করতে পারেন, যার ফলে তাঁরা আরও ভালো দাম পাবেন। তিনি বলেছেন, ১ লক্ষ কোটি টাকার একটি তহবিল তৈরি করা হয়েছে যার মাধ্যমে ক্লাস্টার-ভিত্তিক উদ্যোগের মধ্য দিয়ে শিল্পে উন্নতির ব্যবস্থা করা হবে।

কৃষিক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্রমবর্ধমান উদ্যোগের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলি এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। তিনি বলেছেন, এখন দেশে তিনটি কেন্দ্রীয় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। ছয় বছর আগে এই সংখ্যা ছিল মাত্র এক। এর পাশাপাশি, তিনটি জাতীয় প্রতিষ্ঠান – আইএআরআই, ঝাড়খণ্ড, আইএআরআই, অসম এবং বিহারের মোতিহারির মহাত্মা গান্ধী ইনস্টিটিউট ফর ইন্টিগ্রেটেড ফার্মিং গড়ে তোলা হয়েছে। তিনি বলেছেন, এই প্রতিষ্ঠানগুলি ছাত্রছাত্রীদের জন্য নতুন সুযোগ এনে দেওয়ার পাশাপাশি, স্থানীয় কৃষকদের উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে কারণ, তাঁরা এই প্রতিষ্ঠানগুলি থেকে প্রযুক্তি ব্যবহারের সুফল সম্পর্কে ধারণা  পাবেন।

আধুনিক কৃষিক্ষেত্রে উন্নত প্রযুক্তি সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বর্তমানে নানা জায়গায়  পঙ্গপালের আক্রমণ হয়েছে। সরকার ক্ষয়ক্ষতি কমানোর জন্য এই আক্রমণ ঠেকাতে যুদ্ধকালীন তৎপরতা নিয়েছে। তিনি বলেছেন, বিভিন্ন শহরে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে, কৃষকদের আগে থেকে সতর্ক করা হচ্ছে, ড্রোনের সাহায্যে স্প্রে করা হচ্ছে।  এছাড়াও কৃষকদের প্রচুর স্প্রে মেশিন পাঠানো হয়েছে যাতে তাঁরা এই পঙ্গপাল ঠেকাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারেন।

শ্রী মোদী  বলেছেন, গত ছয় বছর ধরে সরকার গবেষণা ও কৃষির মধ্যে যোগসূত্র গড়ে তুলেছে এবং গ্রাম পর্যায়ে তৃণমূলস্তরে কৃষকদের বৈজ্ঞানিক পরামর্শ পেতে সাহায্য করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর থেকে কৃষিক্ষেত্র পর্যন্ত পরামর্শের একটি ব্যবস্থা গড়ে তোলার  জন্য তিনি  বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গড়ে তোলার অনুরোধ জানিয়েছেন।

কৃষি সংক্রান্ত ধ্যান-ধারণা এবং তার বাস্তব প্রয়োগ স্কুল পর্যায়ে পড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, গ্রামের স্কুলগুলিতে কৃষিকে একটি বিষয় হিসেবে চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর ফলে দু'ভাবে সুবিধা পাওয়া যাবে। প্রথমত, ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে কৃষি সংক্রান্ত একটি ধারণা গড়ে উঠবে। দ্বিতীয়ত, ছাত্রছাত্রীদের আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃষি পদ্ধতি এবং সেগুলিকে বাজারজাতকরণের নানা তথ্য দেওয়া হবে যা তারা তাদের পরিবারের সদস্যদের জানাতে পারবে। এইভাবে দেশে কৃষি-ভিত্তিক শিল্পোদ্যোগ গড়ে উঠতে পারে।

করোনা মহামারীর জন্য জনসাধারণ যে সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন, সেই অবস্থা  থেকে তাঁদের সুবিধা দিতে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, উত্তরপ্রদেশের গ্রামাঞ্চলের কোটি কোটি দরিদ্র মানুষের জন্য বিনামূল্যে রেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই সময়ে বুন্দেলখণ্ড অঞ্চলের ১০ লক্ষ দরিদ্র মহিলার কাছে বিনামূল্যে গ্যাসের সিলিন্ডার পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। গরীব কল্যাণ রোজগার অভিযানে উত্তরপ্রদেশে এ পর্যন্ত ৭০০ কোটি টাকারও বেশি খরচ করা হয়েছে। এর ফলে লক্ষ লক্ষ শ্রমিকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা গেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, প্রতিটি বাড়িতে পানীয় জলের ব্যবস্থা করার জন্য দ্রুতগতিতে কাজ চলছে। এই অঞ্চলে ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ ব্যয়ে প্রায় ৫০০টি জল সংক্রান্ত প্রকল্পের কাজ চলছে যার মধ্যে গত দু'মাসে ৩ হাজার কোটি টাকা এই প্রকল্পগুলিতে ব্যয় করা হয়েছে। এর ফলে, বুন্দেলখণ্ড অঞ্চলের লক্ষ লক্ষ পরিবার সরাসরি উপকৃত হবেন। তিনি বলেছেন, বুন্দেলখণ্ড অঞ্চলের মাটির তলার জলের স্তর বাড়ানোর জন্য 'অটল গ্রাউন্ড ওয়াটার স্কিম’-এর কাজ চলছে।  ঝাঁসি, মাহোবা, বান্দা, হামিরপুর, চিত্রকূট, লোলিতপুর ছাড়াও পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে জলস্তর বাড়ানোর জন্য ৭০০ কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ চলছে বলেও শ্রী মোদী উল্লেখ করেছেন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বুন্দেলখণ্ড এলাকায় বেতোয়া, কেন এবং যমুনা নদী থাকা সত্ত্বেও  পুরো অঞ্চলটি এই নদীগুলির সুফল পায়নি। সরকার এই পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটাতে উদ্যোগী হয়েছে। কেন ও বেতোয়া নদীর সংযোগ প্রকল্প এই অঞ্চলের ভবিষ্যৎ পরিবর্তন করবে বলে তিনি জানান। সরকার এই ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারগুলির প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেন, বুন্দেলখণ্ড অঞ্চল একবার প্রচুর পরিমাণ জল পেয়ে গেলে এই এলাকার জীবনযাত্রায় আমূল পরিবর্তন আসবে। বুন্দেলখণ্ড এক্সপ্রেসওয়ে এবং প্রতিরক্ষা করিডরের মতো প্রকল্পগুলি এই অঞ্চলে হাজার হাজার কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করবে। শ্রী মোদী বলেছেন, আজ বুন্দেলখণ্ডের চতুর্দিকে 'জয় জওয়ান, জয় কিষাণ এবং জয় বিজ্ঞান' মন্ত্র উচ্চারিত হচ্ছে। বুন্দেলখণ্ড অঞ্চলের প্রাচীন ঐতিহ্যকে আরও সমৃদ্ধ করে তুলতে কেন্দ্র এবং উত্তরপ্রদেশ সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। 

 

 


CG/CB/DM


(Release ID: 1649576) Visitor Counter : 185