প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

মন কি বাতের ১২৯ তম পর্বের কিছু তথ্য প্রধানমন্ত্রী সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন

प्रविष्टि तिथि: 28 DEC 2025 11:47AM by PIB Kolkata

আমার প্রিয় দেশবাসী, নমস্কার। মন কি বাতে আবার স্বাগত জানাই, অভিনন্দন জানাই আপনাদের। কয়েক দিনের মধ্যেই দরজায় কড়া নাড়বে ২০২৬ সাল, আর আজ, যখন আমি কথা বলছি আপনাদের সঙ্গে, তখন পুরো একটা বছরের স্মৃতি ঘুরেফিরে আসছে মনের মধ্যে – কত ছবি, কত আলোচনা, কত সাফল্য, যেগুলি একসূত্রে বেঁধেছে দেশকে। ২০২৫ এমন কিছু মুহূর্ত দিয়েছে আমাদের যা নিয়ে গর্বিত হয়েছেন প্রতিটি ভারতবাসী। দেশের প্রতিরক্ষা থেকে খেলাধুলোর ময়দান অবধি, বিজ্ঞানের পরীক্ষাগার থেকে বিশ্বের বড়-বড় মঞ্চ পর্যন্ত। প্রতিটি জায়গায় নিজের দৃঢ় পদচিহ্ন রেখেছে ভারত। এই বছর অপারেশন সিঁদুর প্রত্যেক ভারতীয়ের জন্য গর্বের প্রতীক হয়ে উঠেছে। বিশ্ব দেখেছে যে আজকের ভারত নিজের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে কোনো আপোষ করে না। অপারেশন সিঁদুর চলাকালীন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভারত মায়ের প্রতি ভালোবাসা আর সমর্পণের ছবি সামনে এসেছে। মানুষজন নিজেদের মত করে ব্যক্ত করেছেন নিজেদের অনুভূতি।

বন্ধুরা, এই আবেগ তখনও দেখা গিয়েছিল যখন বন্দে মাতরমের ১৫০ বছর পূর্ণ হয়। আমি আপনাদের অনুরোধ করেছিলাম #VandeMataram150 যুক্ত করে নিজেদের বার্তা এবং পরামর্শ পাঠাতে। দেশের মানুষ অত্যন্ত উৎসাহের সঙ্গে অংশ নিয়েছেন এই অভিযানে।

বন্ধুরা, খেলাধুলোর ক্ষেত্রেও স্মরণীয় বছর হয়ে রইল ২০২৫। আমাদের পুরুষ ক্রিকেট দল আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতেছে। মহিলা ক্রিকেট দল প্রথম বার জিতে নিয়েছে বিশ্বকাপ। ভারতের কন্যারা উইমেন্স ব্লাইণ্ড টি-টুয়েন্টি ওয়ার্ল্ড কাপ জিতে ইতিহাস রচনা করেছে। এশিয়া কাপ টি-টুয়েন্টিতেও গর্বের সঙ্গে উড়েছে তেরঙ্গা পতাকা। প্যারা অ্যাথলীটরা বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে বহু পদক জিতে প্রমাণ করেছে কোনো বাধাই উদ্যমের পথ আটকাতে পারে না। বিজ্ঞান এবং মহাকাশ অভিযানের ক্ষেত্রেও বড় সাফল্যের স্বাক্ষর রেখেছে ভারত। প্রথম ভারতীয় হিসেবে ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনে পৌঁছেছেন শুভাংশু শুক্লা। পরিবেশ সংরক্ষণ এবং বন্যপ্রাণ রক্ষার সঙ্গে জড়িত অনেক উদ্যোগ উল্লেখযোগ্য হয়ে রইল ২০২৫ সালে। ভারতে চিতার সংখ্যাও এখন তিরিশের বেশি হয়ে গিয়েছে। ২০২৫এ আস্থা, সংস্কৃতি এবং ভারতের অসামান্য ঐতিহ্য - ভাস্বর হয়ে উঠেছে। বছরের শুরুতে প্রয়াগরাজে মহাকুম্ভের আয়োজন গোটা বিশ্বকে বিস্মিত করেছে। বছরের শেষে অযোধ্যার রামমন্দিরে ধ্বজারোহণ সমারোহ প্রতিটি ভারতীয়কে গর্বিত করেছে। স্বদেশী নিয়েও মানুষের উৎসাহ ছিল লক্ষণীয়। মানুষ সেই পণ্যই কিনেছেন যার সঙ্গে জুড়ে আছে কোনো ভারতীয়ের শ্রম এবং যাতে রয়েছে ভারতের মাটির সুঘ্রাণ। আজ আমরা গর্বের সঙ্গে বলতে পারি, ২০২৫ সাল ভারতকে আরও বেশি আত্মবিশ্বাস দিয়েছে। এটাও সত্যি যে এই বছর প্রাকৃতিক বিপর্যয় সহ্য করতে হয়েছে আমাদের, বহু অঞ্চলে সম্মুখীন হতে হয়েছে এমন বিপর্যয়ের। এখন দেশ ২০২৬ সালে নতুন আশা, নতুন শপথের সঙ্গে এগিয়ে যাওয়ার জন্য তৈরি।

আমার প্রিয় দেশবাসী, আজ বিশ্ব অনেক আশা নিয়ে তাকিয়ে আছে ভারতের দিকে। ভারতের থেকে প্রত্যাশার সবথেকে বড় কারণ হচ্ছে এর যুবশক্তি। বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে আমাদের সাফল্য, নতুন-নতুন উদ্ভাবন, প্রযুক্তির বিস্তার – এসব দেখে গোটা বিশ্বের নানা দেশ খুবই প্রভাবিত। সাথী, ভারতের তরুণদের মধ্যে সবসময় নতুন কিছু করার উদ্যম রয়েছে এবং তাঁরা সচেতনও বটে। আমার তরুণ সাথীরা অনেক বার আমাকে প্রশ্ন করেন যে দেশগঠনে নিজেদের অবদান বাড়াবেন কীভাবে? কীভাবে তাঁরা শেয়ার  করতে পারেন নিজেদের আইডিয়া? অনেক সাথী প্রশ্ন করেন যে আমার সামনে কীভাবে তাঁরা নিজেদের ভাবনা পরিবেশন করতে পারেন। আমার তরুণ সাথীদের এই জিজ্ঞাসার উত্তর হল ‘বিকশিত ভারত ইয়ং লীডারস ডায়লগ’। গত বছর এর প্রথম সংস্করণ অনুষ্ঠিত হয়, এবার কিছু দিন বাদে এর দ্বিতীয় সংস্করণ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সামনের মাসের ১২ তারিখে স্বামী বিবেকানন্দজীর জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে ‘জাতীয় যুব দিবস’ উদযাপিত হবে। এই দিন ‘ইয়ং লীডারস ডায়লগ’ও অনুষ্ঠিত হবে আর আমিও অবশ্যই যোগ দেব এতে। এতে আমাদের তরুণরা উদ্ভাবন, ফিটনেস, স্টার্টআপ ও কৃষির মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নিজেদের আইডিয়া ভাগ করে নেবেন। আমি এই অনুষ্ঠানের বিষয়ে খুবই উৎসুক।

বন্ধুরা, এটা দেখে আমার ভালো লেগেছে যে এই অনুষ্ঠানে আমাদের তরুণদের অংশগ্রহণ বাড়ছে। কিছুদিন আগেই এর সঙ্গে যুক্ত এক ক্যুইজ প্রতিযোগিতা হয়। এতে পঞ্চাশ লক্ষেরও বেশি তরুণ সামিল হন। একটি প্রবন্ধ প্রতিযোগিতাও হয়, যাতে শিক্ষার্থীরা নানা বিষয়ে নিজেদের ভাবনা ভাগ করে নেয়। এই প্রতিযোগিতায় তামিলনাড়ু প্রথম স্থানে এবং উত্তরপ্রদেশ দ্বিতীয় স্থানে ছিল।

বন্ধুরা, এখন দেশের মধ্যেই তরুণরা তাদের প্রতিভা প্রদর্শনের নতুন নতুন সুযোগ পাচ্ছে। এমন অনেক প্লাটফর্ম তৈরি হচ্ছে যেখানে যুবরা তাদের যোগ্যতা এবং পছন্দ অনুযায়ী প্রতিভা প্রদর্শন করতে পারে। এমনই একটা প্লাটফর্ম হলো Smart India Hackathon; এমন একটা মাধ্যম যেখানে ভাবনা রূপান্তরিত হয়।

 

বন্ধুরা, 'Smart India Hackathon ২০২৫' এ মাসেই সমাপ্ত হয়েছে। এই Hackathon চলাকালীন ৮০-টিরো বেশি সরকারি দপ্তরের ২৭০-এর অধিক সমস্যা নিয়ে ছাত্ররা কাজ করেছে। ছাত্ররা এমন বিষয়ে সমাধান দিয়েছিলো যেগুলো বাস্তব জীবনের চ্যালেঞ্জের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিলো। যেমন ট্রাফিকের সমস্যা। এটা নিয়ে যুবরা 'স্মার্ট ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট' সংক্রান্ত ভীষণ আকর্ষণীয় পারস্পেকটিভ শেয়ার করেছে। financial fraud এবং Digital arrest-এর মতো সমস্যার সমাধান নিয়েও যুবরা নিজেদের ধারণা তুলে ধরেছে। গ্রামে ডিজিটাল ব্যাঙ্কিংয়ের জন্য সাইবার সিকিউরিটি ফ্রেমওয়ার্কের মতো বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছে। বহু তরুণ কৃষিক্ষেত্রের চ্যালেঞ্জগুলি সমাধানের চেষ্টায় মগ্ন থেকেছে। বন্ধুরা গত সাত আট বছরে স্মার্ট ইন্ডিয়া হ্যাকাথনে ১৩ লাখেরও বেশি ছাত্র, আর ছয় হাজারেরও বেশি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। যুবরা শত শত সমস্যার যথাযথ সমাধান দিয়েছে। এই ধরনের হ্যাকাথনের আয়োজন বিভিন্ন সময়েই করা হয়ে থাকে। আমার যুব-বন্ধুদের কাছে অনুরোধ তারা যেন এই হ্যাকাথনে অবশ্যই অংশগ্রহণ করে।

 

বন্ধুরা, এখন জীবন-প্রযুক্তি চালিত হয়ে উঠছে, এবং যে পরিবর্তন আসতে বহুযুগ কেটে যেতো, সেই পরিবর্তন আমরা কয়েক বছরে হতে দেখছি। কখনো কখনো তো কিছু মানুষ উদ্বেগও প্রকাশ করেন যে - রোবট না মানুষের জায়গা নিয়ে নেয়। এমন পরিবর্তনশীল সময়ে মানব উন্নয়নের জন্য নিজেদের শিকড়ের সঙ্গে জুড়ে থাকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এটা দেখে আমার ভীষণ আনন্দ হয় যে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম আমাদের সংস্কৃতির যে ভিত্তি তাকে ভালোভাবে ধরে রেখেছেন- নতুন নতুন উপায়ে, নতুন চিন্তা-ভাবনার সঙ্গে।

 

বন্ধুরা, আপনারা Indian Institute of Science-এর নাম তো অবশ্যই শুনেছেন। গবেষণা এবং উদ্ভাবন-ই এই প্রতিষ্ঠানের পরিচয়। কয়েক বছর আগে সেখানকার কিছু ছাত্র অনুভব করেছিল যে পড়াশোনা এবং গবেষণার মাঝে সংগীতের জন্যেও একটা পরিসর প্রয়োজন। ব্যাস, সেখান থেকেই একটা ছোট্ট মিউজিক ক্লাস শুরু হলো। না কোন বড় মঞ্চ না বড় বাজেট। ধীরে ধীরে সেই প্রচেষ্টা বৃদ্ধি পেলো, আর এখন একে আমরা Gitanjali IIsc নামে চিনি। এখন এটা শুধুমাত্র ক্লাস নয়, ক্যাম্পাসের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। এখানে হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় সংগীত রয়েছে, লোক সংস্কৃতিক ঐতিহ্য রয়েছে, ধ্রুপদী শিল্পকলা রয়েছে, ছাত্ররা এখানে একসঙ্গে বসে অনুশীলন করেন। অধ্যাপকরাও সঙ্গে বসেন, তাঁদের পরিবারও সঙ্গে যুক্ত হয়। এখন দুশোরও বেশি মানুষ এর সঙ্গে যুক্ত। আর সব থেকে উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হল যারা বিদেশে চলে গেছেন তারাও অনলাইনে যুক্ত থেকে এই গ্রুপের রাশ ধরে আছেন।

 

 

বন্ধুরা, নিজেদের শেকড়ের সঙ্গে জুড়ে থাকার এই প্রচেষ্টা শুধু ভারতবর্ষ পর্যন্ত সীমাবদ্ধ নয়। পৃথিবীর ভিন্ন-ভিন্ন প্রান্ত এবং সেখানে বসবাসকারী সকল ভারতবাসীরাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। আর একটি উদাহরণ, যা আমাদের দেশের বাইরে, তা হল দুবাই। ওখানে বসবাস করা কন্নড়া পরিবারের লোকেরা নিজেদের একটি জরুরী প্রশ্ন করেছেন- আমাদের উত্তরসূরীরা টেক-ওয়ার্ল্ডে এগিয়ে চলেছে ঠিকই, কিন্তু তারা তাদের নিজেদের ভাষার থেকে দূরে সরে যাচ্ছে না তো? এখান থেকেই জন্ম নেয় কন্নড় পাঠশালা। এটি একটি এমন প্রচেষ্টা, যেখানে ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের কন্নড় ভাষা পড়া, লেখা এবং এই ভাষায় কথা বলা শেখানো শুরু হয়। এখন এই প্রচেষ্টার সঙ্গে হাজারেরও বেশি শিশুরা যুক্ত রয়েছে। সত‍্যি কন্নড়া নাডু, নুডি নম্মা হেম্মে। কন্নড় ভূমি এবং ভাষা আমাদের গর্ব।
বন্ধুরা, একটা পুরনো কথা আছে, ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয়। এই কথাটি আবার সত‍্যি করে দেখিয়েছেন মণিপুরের এক যুবক মোড্ররঙ্গথেম শেঠ জী। ওঁর বয়স ৪০ এর থেকেও কম। শ্রী মোড্ররঙ্গথেমজী মণিপুরের যে প্রতন্ত অঞ্চলে থাকতেন ওখানে বিদ‍্যুৎএর খুব সমস‍্যা ছিল। এই কঠিন পরিস্থিতির সঙ্গে মোকাবিলা করার জন‍্য উনি স্থানীয় সমাধানের ওপর জোর দিলেন এবং সৌরশক্তির মাধ‍্যমে সমাধান খুঁজে পেলেন। আমাদের মণিপুরে এমনিতেও সৌরশক্তি উৎপাদন করা সহজ। তাই মোইরাংথেমজী সোলার প‍্যানেল বসানোর অভিযান চালালেন এবং এই অভিযানের জন‍্য আজ ওঁর অঞ্চলের অনেক পরিবারে সৌরশক্তি পৌঁছে গেছে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, উনি স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং এবং কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রেও সৌরশক্তির ব‍্যবহার করেছেন। আজ ওঁর প্রচেষ্টায় বেশ কিছু স্বাস্থ‍্য কেন্দ্রেও সৌরশক্তির ব‍্যবহার হচ্ছে। ওঁর এই কাজের জন‍্য মণিপুরের মেয়েদেরও অনেক লাভ হয়েছে। স্থানীয় মৎস‍্যজীবী এবং শিল্পীরাও এতে উপকৃত হয়েছেন।

বন্ধুরা, এখন সরকার পি.এম. সূর্য ঘর মুফ্ত বিজলী প্রকল্পের আওতায় সোলার প‍্যানেল বসানোর জন‍্য সুবিধাভোগী প্রতিটি পরিবারকে প্রায় ৭৫ থেকে ৮০ হাজার টাকা দিচ্ছে। মোইরাংথেমজীর এই প্রচেষ্টা যদিও ব‍্যক্তিগত প্রচেষ্টা, কিন্তু সৌরশক্তির সঙ্গে জুড়ে থাকা প্রত‍্যেকটি অভিযানকে ত্বরান্বিত করছে। আমি মন কী বাতের মাধ‍্যমে ওঁকে আমার শুভকামনা জানাচ্ছি।

আমার প্রিয় দেশবাসী, আসুন আমরা এখন জম্মু-কাশ্মীরের দিকে এগোই। আমি জম্মু-কাশ্মীরের সাংস্কৃতিক এবং ঐতিহাসিক ঐতিহ‍্য নিয়ে এমন একটি কাহিনী বর্ণনা করতে চাই যা আপনাকে গর্বে ভরিয়ে তুলবে। জম্মু-কাশ্মীরের বারামুলায় জেহনপোরা নামে একটি অঞ্চল রয়েছে। ওখানে মানুষ বহু বছর ধরে অনেক উঁচু উঁচু টিলা দেখে আসছেন। সাধারণ এই টিলা, কেউই জানতেন না এগুলো কী! একদিন এর ওপর প্রত্নতাত্ত্বিকদের নজর পড়ল। যখন এই অঞ্চলটি ওঁরা খুঁটিয়ে দেখা শুরু করলেন, এই টিলাগুলি অন‍্যরকম দেখা গেল। এর পর এই টিলাগুলির বৈজ্ঞানিক নিরীক্ষণ শুরু হল। ড্রোন ক‍্যামেরার মাধ‍্যমে ওপর থেকে ছবি নেওয়া হল, মাটির ম‍্যাপিং করা হল। আর তারপর কিছু চমকে দেওয়া তথ‍্য সামনে এল, জানা গেল, এই টিলাগুলি প্রাকৃতিক নয়। এগুলি আসলে মানুষের তৈরী কিছু বড় ইমারতের অবশেষ। এই সময় আরেকটি চমৎকার বিষয় এর সঙ্গে যুক্ত হল। কাশ্মীর থেকে কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরে ফ্রান্সের একটি সংগ্রহশালায় একটি পুরনো, আবছা হয়ে আসা ছবি পাওয়া গেল। বারামুলার ওই ছবিতে তিনটি বৌদ্ধ স্তূপ দেখা গিয়েছিল। এখান থেকেই সময়ের মোড় ঘুরে যায় এবং কাশ্মীরের একটি গৌরবময় অতীত সামনে আসে। এটা প্রায় দুহাজার বছর পুরনো ইতিহাস। কাশ্মীরের জেহনপোরার এই বৌদ্ধ পরিসর আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে কাশ্মীরের অতীত কেমন ছিল, এর পরিচয় কতটা সমৃদ্ধ ছিল।

 

আমার প্রিয় দেশবাসী, এখন আমি আপনাকে ভারত থেকে কয়েক হাজার কিলোমিটার দূর, এমন এক প্রচেষ্টার কথা বলব, যা  হৃদয় স্পর্শী। ফিজিতে ভারতীয় ভাষা এবং সংস্কৃতির প্রসারের জন্য এক প্রশংসনীয় উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। ওখানে নতুন প্রজন্মকে তামিল ভাষার সঙ্গে যুক্ত করার জন্য বেশ কয়েকটি স্তরে ক্রমাগত চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। গতমাসে ফিজির রাকী-রাকী অঞ্চলের একটি স্কুলে প্রথম বার তামিল দিবস পালন করা হয়। ঐ দিন বাচ্চারা এমন এক মঞ্চ পায় যেখানে তারা মুক্ত হৃদয়ে নিজের ভাষার প্রতি গৌরব ব্যক্ত করেছিল। বাচ্চারা তামিল ভাষায় কবিতা শোনায়, ভাষণ দেয় এবং নিজেদের সংস্কৃতিকে সম্পূর্ন আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে মঞ্চে উপস্থাপন করে। বন্ধুরা, দেশের অভ্যন্তরেও তামিল ভাষার প্রসারের জন্য নিরন্তর কাজ হয়ে চলেছে। কিছু দিন আগেই আমার নির্বাচনী কেন্দ্র কাশীতে চতুর্থ 'কাশী তামিল সংগমম' আয়োজিত হয়েছিল। এখন আমি আপনাদের একটি audio clip শোনাচ্ছি।  আপনারা শুনুন আর  অনুমান করুন এই বাচ্চারা যারা তামিল বলার চেষ্টা করছে তারা কোন জায়গার।

(Audio Clip- 2 পায়েল)

বন্ধুরা, আপনারা জেনে অবাক হবেন তামিল ভাষায় এত সহজে নিজের ভাব প্রকাশ করতে পারা এই বাচ্চারা কাশীর, বারাণসীর। এদের মাতৃভাষা হিন্দী। কিন্তু তামিল ভাষার প্রতি আকর্ষণ এদের তামিল শিখতে উদ্বুদ্ধ করেছে। এই বছর বারাণসী তে ' কাশী তামিল সংগমম' এর সময় তামিল শেখার প্রতি বিশেষ জোর দেওয়া হয়। Learn Tamil - ' তামিল করাকলম' এই theme এর অন্তর্গত বারাণসী তে 50 এর ও বেশি স্কুলে বিশেষ অভিযান চালানো হয়। এরই ফল এই audio clip এ আমরা শুনতে পাই।

(Audio Clip- 2 বৈষ্ণবী)

বন্ধুরা, তামিল ভাষা পৃথিবীর প্রাচীনতম ভাষা। তামিল সাহিত্য ও অত্যন্ত সমৃদ্ধ। আমি 'মন কি বাতে' 'কাশী তামিল সংগমম' এ অংশ নেবার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলাম। আমার ভালো লাগছে যে আজ দেশের অন্যান্য   প্রান্তে ও বাচ্চা এবং যুবাদের মধ্যে তামিল ভাষার প্রতি নতুন করে আগ্রহ সৃষ্টি হচ্ছে। এটাই ভাষার শক্তি, এটাই ভারতের একতা।

বন্ধুরা, আগামী মাসে আমরা দেশের ৭৭তম সাধারণতন্ত্র দিবস উদযাপন করব। যখনই এরকম অবসর আসে, তখনই আমাদের মন স্বাধীনতা সংগ্রামী এবং সংবিধান প্রণেতা দের প্রতি কৃতজ্ঞতায় ভরে ওঠে। আমাদের দেশ স্বাধীনতার জন্য দীর্ঘ সংঘর্ষ  করেছে। স্বাধীনতার আন্দোলনে দেশের প্রতিটি প্রান্তের মানুষ নিজেদের অবদান রেখেছে। কিন্তু, এটা দুর্ভাগ্যজনক যে স্বাধীনতার অনেক বীর - বীরাঙ্গনারা সেই সম্মান পান নি, যা তাঁদের পাওয়া উচিত ছিল। এইরকমই একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী হলেন - ওডিশার পার্বতী গিরি।

জানুয়ারী 2026 শে তাঁর জন্ম শতবর্ষ পালিত হবে। তিনি 16 বছর বয়সে ' ভারত ছোড়ো আন্দোলনে' অংশ গ্রহন করেন। বন্ধুরা, স্বাধীনতার আন্দোলনের পর পার্বতী গিরি জী নিজের জীবন সমাজসেবা ও জনজাতীয় কল্যাণে সমর্পণ করেন। তিনি বেশ কয়েকটি অনাথ আশ্রমের প্রতিষ্ঠাও করেন । ওঁর প্রেরণামুলক জীবন প্রত্যেক প্রজন্মকে পথ দেখাবে।

'  মুঁ পার্বতী গিরি জিঁকু শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করুছী '

আমি পার্বতী গিরি জী কে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করছি

বন্ধুরা, এটা আমাদের দায়িত্ব যে আমরা যেন নিজেদের ঐতিহ্য কে না ভুলি। আমরা স্বাধীনতা প্রদানকারী বীর এবং বীরাঙ্গনাদের মহান গাথা কে আগামী প্রজন্মের কাছে পৌঁছাবো। আপনাদের মনে থাকবে যখন আমাদের স্বাধীনতার ৭৫তম বছর হয়েছিল, তখন সরকার একটি বিশেষ website তৈরী করেছিল। যার মধ্যে একটি বিভাগ - 'Unsung Heroes'-দের প্রতি সমর্পিত ছিল। আজও এই website visit করে আপনারা সেই সমস্ত মনীষীদের সম্পর্কে জানতে পারেন, দেশকে স্বাধীন করার ক্ষেত্রে যাঁদের মস্ত বড় ভূমিকা ছিল।

আমার প্রিয় দেশবাসী, মন কি বাত-এর মাধ্যমে আমাদের সমাজের কল্যাণের সঙ্গে জড়িত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনার খুব ভালো সুযোগ হয়। আজ আমি এমন এক বিষয় নিয়ে কথা বলব, যা আমাদের সকলের উদ্বেগের কারণ। ICMR অর্থাৎ Indian Council of Medical Research সম্প্রতি একটি report প্রকাশ করেছে, যাতে বলা হয়েছে নিমোনিয়া ও UTI - র মত অনেকগুলি অসুখের সঙ্গে লড়াই করার মত antibiotic ওষুধ গুলি কম কার্যকর প্রমাণিত হচ্ছে। আমাদের সকলের জন্য এটি একটি অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। Report বলছে, এর একটা বড় কারণ হল না ভেবে চিন্তে মানুষের antibiotic ওষুধ খাওয়া।

Antibiotic সেই ওষুধ নয়, যাকে যখন ইচ্ছে খাওয়া যায়। শুধুমাত্র Doctor এর পরামর্শেই এর ব্যবহার করা উচিত। আজকাল লোকেরা মনে করে ব্যাস একটা গুলি খেয়ে নিলেই সব কষ্ট সেরে যাবে। আর এটাই কারণ যে, অসুখ এবং সংক্রমণে antibiotic ওষুধ কাজ করছে না। আমি আপনাদের সকলের কাছে অনুরোধ করছি দয়া করে নিজেদের মন মত ওষুধের ব্যবহার বন্ধ করুন। Antibiotic ওষুধের ক্ষেত্রে তো একথা মনে রাখা খুবই জরুরী। আমি তো এটাই বলব- medicines এর জন্য guidance আর Antibiotics এর জন্য Doctor এর দরকার। এই অভ্যাস আপনার স্বাস্থ্য কে ভালো রাখতে খুব সাহায্য করবে।

আমার প্রিয় দেশবাসী, আমাদের পরম্পরাগত শিল্পগুলি সমাজকে সবল করার পাশাপাশি মানুষের আর্থিক বিকাশেরও বড় মাধ্যম হয়ে উঠছে। অন্ধ্রপ্রদেশের নারসাপুরম জেলার লেস ক্রাফ্টের চর্চা এখন সারা দেশ জুড়ে বাড়ছে। এই লেস ক্রাফ্ট শিল্পটি অনেক প্রজন্ম ধরে মহিলাদের হাতে রয়েছে। অত্যন্ত ধৈর্য ও সূক্ষ্মতার সঙ্গে দেশের নারীশক্তি এর সংরক্ষণ করেছেন। আজ এই পরম্পরাকে এক নতুন রঙ ও রূপ দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার ও নাবার্ড একযোগে কারিগরদের নতুন ডিজাইন শেখাচ্ছেন, উন্নততর স্কিল ট্রেনিং দিচ্ছেন এবং নতুন বাজারের সঙ্গে সংযুক্ত করছেন। নারসাপুরম লেস জিআই ট্যাগও পেয়েছে। আজ এর মাধ্যমে পাঁচশোরও বেশি প্রোডাক্ট তৈরি হচ্ছে এবং আড়াইশোর বেশি গ্রামে প্রায় এক লক্ষ মহিলা এতে কাজ পাচ্ছেন।

 

বন্ধুরা, মন কি বাত এমন মানুষদের সামনে আনারও মঞ্চ, যারা নিজেদের পরিশ্রমের দ্বারা শুধু পরম্পরাগত শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন তাই নয়, উপরন্তু তার মাধ্যমে স্থানীয় মানুষদের সশক্তিকরণও করছেন। মনিপুরের চূড়াচাঁদপুরে মার্গারেট রামথারসিয়েম(Ramtharsiem) জি এমনই এক প্রয়াস চালাচ্ছেন। উনি মণিপুরের পরম্পরাগত উৎপাদনগুলিকে, সেখানকার হ্যান্ডিক্রাফ্টকে, বাঁশ ও কাঠের তৈরি দ্রব্যকে এক বৃহৎ, প্রসারিত দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখেছেন। এবং সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই উনি একজন হ্যান্ডিক্রাফট আর্টিস্ট থেকে মানুষের জীবনে পরিবর্তন আনার এক মাধ্যম হয়ে উঠেছেন। আজ মার্গারেটজির ইউনিটে ৫০ জনেরও বেশি শিল্পী কাজ করছেন এবং তারা নিজ পরিশ্রমে দিল্লি সহ দেশের বিভিন্ন রাজ্যে তাদের নিজেদের প্রোডাক্টের এক মার্কেটও ডেভেলপ করেছেন।

 

বন্ধুরা, মনিপুর থেকেই আরেকটি উদাহরণ সেনাপতি জেলার বাসিন্দা চোখোনে ক্রিচেনা। তার পুরো পরিবার পরম্পরাগত কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ক্রিচেনা এই পরম্পরাগত অভিজ্ঞতাকে আরো বিস্তৃত করলেন। তিনি ফুলের চাষকে নিজের ভালোবাসায় পরিণত করলেন। আজ তিনি এই কাজে আলাদা আলাদা বাজারের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন এবং নিজের অঞ্চলের লোকাল কমিউনিটিকেও সবল করছেন। বন্ধুরা, এই উদাহরণ একথা বলে যে যদি পরম্পরাগত জ্ঞানকে আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় তাহলে তা আর্থিক বিকাশের বড় অবলম্বন হয়ে ওঠে। আপনার আশেপাশেও যদি এমন সাফল্যের কাহিনী থাকে তাহলে আমার সঙ্গে অবশ্যই শেয়ার করবেন।

বন্ধুরা, আমাদের দেশের সবচেয়ে সুন্দর বিষয় এটা যে, বছরভর সব সময়ই দেশের কোন না কোন অঞ্চলে উৎসবের আবহ থাকে। আলাদা আলাদা পার্বণ উদযাপন তো থাকেই, পাশাপাশি বিভিন্ন রাজ্যের স্থানীয় উৎসবও আয়োজিত হতে থাকে।

 

আপনি যদি ঘুরতে চান তাহলে দেশের কোনো না কোনো প্রান্ত এক অনন্য উৎসব নিয়ে প্রস্তুত। এ রকমই এক উৎসব এখন কচ্ছের রনে চলছে। এবছর 23 শে নভেম্বর শুরু হয়ে আগামী কুড়ি ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এই উৎসব চলবে। এখানে কচ্ছের লোকসংস্কৃতি, লোকসংগীত, নৃত্য আর হস্তশিল্পের বৈচিত্র আপনি দেখতে পাবেন। কচ্ছের  শুভ্র রনের সৌন্দর্য দেখাটাই এক সুখের অনুভূতি। রাতের বেলা যখন শুভ্র রনে জ্যোৎস্না ছড়িয়ে পড়ে সেই দৃশ্য মনন্ত্রমুগ্ধ করে দেয়ার মত। রণ উৎসবের টেন্ট সিটি ভীষণ জনপ্রিয়। আমি খবর পেয়েছি গত এক মাসে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এবং বিদেশ থেকেও দু লক্ষের বেশি মানুষ এই রন উৎসবে অংশ নিয়েছেন । আপনিও যখনই সুযোগ পাবেন এই ধরনের উৎসবে অবশ্যই অংশগ্রহণ করবেন। আর ভারতের বৈচিত্রের আনন্দ উপভোগ করবেন। বন্ধুরা ২০২৫ এর মন কি বাতের এটি শেষ পর্ব এবার আমরা ২০২৬ এর মন কি বাতে এরকমই উদ্যম উৎসাহ এবং আন্তরিকতার সঙ্গে নিজের মনের কথা বলার জন্য মন কি বাত অনুষ্ঠানে যুক্ত হব। নতুন শক্তি নতুন বিষয় নতুন প্রেরণায় পরিপূর্ণ করে দেয়ার মত দেশবাসীর অগণিত গাথা আমাদের সকলকে মন কি বাত এ একত্রিত করে। প্রতিমাসে এরকম অনেক বার্তা আমার কাছে আসে যাতে দেশবাসী বিকশিত ভারত নিয়ে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি বিনিময় করেন। তাদের থেকে পাওয়া পরামর্শ এবং এই বিষয়ে তাদের প্রয়াস দেখে যেসব কথা আমার কাছে অব্দি পৌঁছায় তাতে এই বিশ্বাস আরো মজবুত হয় যে  বিকশিত ভারতের সংকল্প নিশ্চয়ই বাস্তবায়িত হবে। এই বিশ্বাস দিনে দিনে আরো মজবুত হয়ে উঠছে। ২০২৬ সাল এই সংকল্প সিদ্ধির এক গুরুত্বপূর্ণ পর্যায় হবে। আপনি এবং আপনার  পরিবারের জীবন সুখের হোক এই কামনার সঙ্গে এই পর্ব থেকে বিদায় নেবার আগে একটা কথা নিশ্চয়ই বলবো "ফিট ইন্ডিয়া মুভমেন্ট"। আপনাকেও ফিট থাকতে হবে। শীতের এই মরসুম ব্যায়াম করার জন্য উপযুক্ত, ব্যায়াম করুন। আপনাদের সকলকে ২০২৬ এর অনেক অনেক শুভকামনা... ধন্যবাদ.... বন্দেমাতরম।


(रिलीज़ आईडी: 2209156) आगंतुक पटल : 20
इस विज्ञप्ति को इन भाषाओं में पढ़ें: Gujarati , Malayalam , Punjabi , Punjabi , Assamese , English , Urdu , Marathi , हिन्दी , Tamil , Kannada