প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
আসামের গুয়াহাটিতে লোকপ্রিয় গোপীনাথ বরদলৈ আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের উদ্বোধন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ
प्रविष्टि तिथि:
20 DEC 2025 8:26PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ২০ ডিসেম্বর, ২০২৫
নমস্কার। লুইৎপোরিয়া রাইজোলোঈ মুর শ্রোদ্ধা আরু মরোম জাসিসু ! ( ব্রহ্মপুত্র নদের দু-পাড়ে অবস্থিত রাজ্যের জনগণকে আমার শ্রদ্ধা এবং অভিবাদন জানাই।)
আসামের রাজ্যপাল লক্ষ্মণ প্রসাদ আচার্য জি, মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্বশর্মা জি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় আমার সহযোগী আসামের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোওয়াল জি, রামমোহন নাইডু জি, মুরলীধর মোহোল জি, পবিত্রা মার্গেরিটা জি, আসাম সরকারের মন্ত্রীগণ, অন্যান্য শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তিবর্গ, ভাও ও বোনেরা।
আমি নিজের বক্তব্য শুরু করার আগেই আপনাদের সকলের কাছে একটি নিবেদন জানাই যে, আজ যেমন বিজয় দিবস, তেমনি এক প্রকার উন্নয়ন দিবসও। আর এই উন্নয়ন শুধু আসামের নয়, সমগ্র উত্তরপূর্ব ভারতের উন্নয়নের উৎসব, সেজন্য আপনাদের প্রতি আমার অনুরোধ, আপনারা নিজেদের মোবাইল ফোন বের করুন, তার ফ্ল্যাশ লাইট অন করুন এবং আসুন সবাই মিলে এই উন্নয়ন উৎসবে অংশীদার হই। প্রত্যেকের মোবাইল ফোনের আলো জ্বলা উচিত। আপনারা দেখুন, সমগ্র দেশের মানুষ হাততালি দিয়ে স্বাগত জানাচ্ছে, আসামের এই উন্নয়নের উৎসবকে স্বাগত জানাচ্ছে। যখন উন্নয়নের আলো পৌঁছায়, তখন জীবনের প্রতিটি পথ নতুন নতুন উচ্চতা স্পর্শ করতে শুরু করে। সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
বন্ধুগণ,
আসামের মাটির সঙ্গে আমার আত্মিক সংযোগ, এখানকার মানুষের ভালোবাসা এবং স্নেহ, আর বিশেষ করে আসাম ও উত্তরপূর্ব ভারতের মা ও বোনেদের আপনত্ব আমাকে নিরন্তর প্রেরণা জোগায়, উত্তরপূর্ব ভারতের উন্নয়নের জন্য আমাদের সংকল্পকে শক্তি জোগায়। আমি দেখতে পাচ্ছি আজ আর একবার আসামের উন্নয়নের নতুন অধ্যায় যুক্ত হচ্ছে। আর এক্ষেত্রে ভারতরত্ন ভূপেনদার গানের পঙক্তিগুলি অত্যন্ত সঠিক, - ‘লুইতোর পার জিলিকাঈ তুলিবোলোই, আমি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, আমি হংকল্পবদ্ধ!’ অর্থাৎ লুইত নদীর তট উজ্জ্বল হবে, অন্ধকারের প্রত্যেক দেওয়াল ভাঙবে আর তা অবশ্যই হবে। এটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা, এটাই আমাদের সংকল্প।
বন্ধুগণ,
ভূপেনদার এই পঙক্তিগুলি নিছকই একটি গানের পঙক্তি ছিল না, এগুলি আসামকে যাঁরা ভালোবাসতেন তেমনি প্রত্যেক মহান আত্মার সংকল্প ছিল। আর এই সংকল্প আমাদের সামনে আজ বাস্তবায়িত হচ্ছে। আসামের বিশাল ব্রহ্মপুত্রের ধারাগুলি যেমন কখনও থামে না, তেমনি বিজেপির ডবল ইঞ্জিন সরকারের উন্নয়নের ধারাও এখানে অনবরত প্রবাহিত হয়ে চলেছে। আজ লোকপ্রিয় গোপীনাথ বরদলৈ বিমান বন্দরের নতুন টার্মিনাল বিল্ডিং উদ্বোধন আমাদের এই সংকল্পের প্রমাণ। আমি প্রত্যেক আসামবাসীকে এবং দেশের জনগণকে এই নতুন টার্মিনাল বিল্ডিং-এর জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই।
ভাই ও বোনেরা,
কিছুক্ষণ আগেই আমার গোপীনাথ বরদলৈ জির মূর্তির আবরণ উন্মোচনের সৌভাগ্য হয়েছে। বরদলৈ জি আসামের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। তিনি আসামের গৌরব ছিলেন। আসামের পরিচয়, আসামের ভবিষ্যৎ এবং আসামের কল্যাণের ক্ষেত্রে তিনি কখনও কোনও আপোষ করেননি। তাঁর এই মূর্তি আগামী অনেক প্রজন্মকে প্রেরণা জোগাতে থাকবে, তাঁদের মনে আসামকে নিয়ে গর্বের ভাবনা জাগাবে।
বন্ধুগণ,
আধুনিক বিমান বন্দরের মতো পরিষেবা যোগাযোগ ব্যবস্থার আধুনিক পরিকাঠামো- এগুলি যে কোনও রাজ্যের জন্য নতুন নতুন সম্ভাবনা এবং নতুন নতুন সুযোগের সিংহদ্বার খুলে দেয়। এগুলি রাজ্যের ক্রমবর্ধমান আত্মবিশ্বাস এবং জনগণের ভরসার স্তম্ভ হয়ে ওঠে। আপনারাও যখন দেখেন যে আসামে এতো সুন্দর হাইওয়ে তৈরি হচ্ছে, বিমান বন্দর তৈরি হচ্ছে, তখন আপনারাও বলেন- এতদিনে আসামের সঙ্গে ন্যায় হওয়া শুরু হয়েছে।
নাহলে বন্ধুগণ,
কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন সরকারগুলির জন্য আসাম এবং উত্তরপূর্ব ভারতের উন্নয়ন তাঁদের পরিকল্পনার মধ্যেই ছিল না। তাঁরা বলতেন, আসাম ও উত্তরপূর্ব ভারতে কারা যাবেন? কংগ্রেস বলতো আসামের ও উত্তরপূর্ব ভারতের আধুনিক বিমানবন্দর, হাইওয়ে এবং উন্নত রেলওয়ের প্রয়োজনই কী রয়েছে? এরকম ভাবনা-চিন্তার ফলেই অনেক দশক পর্যন্ত এই সমগ্র অঞ্চলের উন্নয়নকে উপেক্ষা করেছে।
বন্ধুগণ,
কংগ্রেস ৬-৭ দশক ধরে যে ভুলগুলি করে গেছে, মোদী একটি একটি করে সেগুলি সংশোধন করছে। মোদীর বক্তব্য হল, কংগ্রেসীরা উত্তরপূর্ব ভারতে যান বা না যান, আমারতো আসাম তথা উত্তরপূর্ব ভারতে এলেই এরকম মনে হয় যেন নিজের মানুষদের মধ্যে এসে গেছি। মোদীর জন্য আসামের উন্নয়ন অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এটা আমাদের দায়িত্ব, তেমনি এটি আমাদের জবাবদিহিতাও।
আর সেজন্য বন্ধুগণ,
িগত ১১ বছরে আসাম এবং উত্তরপূর্ব ভারতের জন্য লক্ষ লক্ষ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প শুরু করা হয়েছে। আজ আসাম অগ্রগতির পথে এগিয়ে চলেছে এবং নতুন নতুন রেকর্ড স্থাপন করছে। আমি একথা জেনে খুশি হয়েছি যা আসাম ভারতীয় দণ্ডবিধি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে দেশের এক নম্বর রাজ্যে পরিণত হয়েছে। আসাম ৫০ লক্ষেরও বেশি স্মার্ট প্রিপেড মিটার স্থাপন করে একটি নতুন রেকর্ডও তৈরি করেছে। কংগ্রেসের শাসনকালে স্লিপ ছাড়া বা কোনওরকম ঘুষ না দিয়ে আসামে সরকারি চাকরি পাওয়া অসম্ভব ছিল। কিন্তু আজ এখানকার হাজার হাজার যুবক-যুবতী স্লিপ ছাড়া এবং ঘুষ না দিয়েই চাকরি পাচ্ছে। বিজেপি সরকারের অধীনে প্রতিটি মঞ্চে অসমিয়া সংস্কৃতি প্রচার করা হচ্ছে। গত বছরের ১৩ এপ্রিল ১১ হাজারেরও বেশি নৃত্যশিল্পী একসঙ্গে গুয়াহাটি স্টেডিয়ামে বিহু নৃত্য পরিবেশন করেছিলেন, সেই দৃশ্য আমি আজও ভুলতে পারিন না। সেই অনুষ্ঠানটি গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস-এ স্থান পেয়েছে। আসাম দ্রুত উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে আর নতুন নতুন রেকর্ড স্থাপন করছে।
বন্ধুগণ,
এখন এই নতুন টার্মিনাল ভবনটি গুয়াহাটি তথা আসামের ক্ষমতাকে আরও বাড়িয়ে দেবে। এই টার্মিনালটি প্রত্যেক বছর ১ কোটি ২৫ লক্ষেরও বেশি যাত্রীর যাতায়াত সক্ষম হয়ে উঠবে। এর অর্থ হল, বিপুল সংখ্যক পর্যটক আসামে আসতে পারবে। ভক্তদের জন্য মা কামাক্ষ্যার দর্শনও সহজ হয়ে উঠবে। এই নতুন বিমান বন্দর টার্মিনালে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গেই ‘উন্নয়ন এবং ঐতিহ্য সংরক্ষণ’ এই মন্ত্রের অর্থ কী তা স্পষ্ট হয়ে উঠবে। এই বিমান বন্দরটি আসামের প্রকৃতি এবং সংস্কৃতিকে মাথায় রেখে ডিজাইন করা হয়েছে। টার্মিনালটি সবুজে ভরা এবং এর ভিতরে ‘ইন্ডোর ফরেস্ট’ বা আভ্যন্তরীণ অরণ্যের ব্যবস্থা রয়েছে। এর চার পাশের ডিজাইনও প্রকৃতির সঙ্গে সাজুয্য রেখে তৈরি করা হয়েছে, যাতে এখানে আসা সমস্ত যাত্রী শান্তি অনুভব করেন। এর নির্মাণে বিশেষভাবে বাঁশের অনুপম ব্যবহার আশ্চর্য করে দেয়। বাঁশ আসামের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি শক্তি এবং সৌন্দর্য উভয়েরই প্রতিনিধিত্ব করে। আর দিল্লির পূর্ববর্তী সরকারগুলি বাঁশকেও চিনতে পারেনি। আপনারা শুনলে অবাক হবেন, ২০১৪ সালে আপনারা আমাকে প্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগ করার আগে আমাদের দেশে বাঁশ কাটা নিষিদ্ধ করার জন্য একটি আইন ছিল। এখন কেউ কি ব্যাখ্যা করতে পারেন কেন? কারণ কারা বাঁশকে গাছ ঘোষণা করেছিল। আর একবার এটিকে গাছ ঘোষণা করার ফলে বাঁশকে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করার সমস্ত দরজা বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো। বিশ্ব বাঁশকে কী উদ্ভিদ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় সেজন্য আমরা আইনটি বাতিল করে বাঁশকে তার প্রকৃত বৈজ্ঞানিক পরিচয় ঘাস হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ করেছি। এর ফলে আজ বাঁশ দিয়ে এক বড় দুর্দান্ত ভবন তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। আপনারা সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখেন, তাহলে দেখতে পাবেন একটি ভারতীয় বিমান বন্দরের এই নকশা আজ সমগ্র পৃথিবীতে আলোচিত হচ্ছে।
বন্ধুগণ,
পরিকাঠামোর এই উন্নয়নের অনেক বড় বার্তা, ভারতের উন্নয়ন যাত্রার পরিচয় হয়ে উঠছে। এর ফলে অনেক শিল্পোদ্যোগ উৎসাহ পাচ্ছে। বিনিয়োগকারীরা উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার ভরসা পাচ্ছে। স্থানীয় পণ্যগুলি বিশ্বের বাজারে পৌঁছে যাওয়ার পথ খুলছে। আর সবচেয়ে বড় ভরসা পাচ্ছে সেইসব যুবক-যুবতীরা, যাদের জন্য নতুন নতুন সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। আর সেজন্য আজ আমরা আসামকে অসীম সম্ভাবনার এই উড়ানে এগিয়ে যেতে দেখতে পাচ্ছি।
বন্ধুগণ,
আজ ভারতকে দেখার ক্ষেত্রে বিশ্বের দৃষ্টিভঙ্গী বদলে গেছে। ভারত ২০৪৭-এর প্রস্তুতি নিচ্ছে। উন্নত ভারতের সংকল্পকে বাস্তবায়িত করার জন্য আমরা পরিকাঠামো উন্নয়নের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল যে, উন্নয়নের এই মহান অভিযানে দেশের প্রত্যেক রাজ্যের প্রত্যেক এলাকার অংশীদারিত্ব রয়েছে। আমরা পশ্চাৎপদদের অগ্রাধিকার দিচ্ছি। দেশের প্রত্যেক রাজ্য যাতে একসঙ্গে উন্নতি করে, আর উন্নত ভারতের অভিযানে নিজেদের অবদান রাখে, আমাদের সরকার সেই লক্ষ্যে কাজ করছে। আর আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে আজ আসাম এবং উত্তরপূর্ব ভারত আমাদের এই অভিযানে নেতৃত্ব দিচ্ছে। আমরা ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ নীতির মাধ্যমে উত্তরপূর্ব ভারতকে গুরুত্ব দিয়েছি, আর আজ আমরা আসামকে ভারতের ‘ইস্টার্ন গেটওয়ে’ বা পূর্বের সিংহদ্বার রূপে বিকশিত হতে দেখছি। আসাম ভারতকে আশিয়ান দেশগুলির সঙ্গে যুক্ত করার ক্ষেত্রে সেতুর ভূমিকা পালন করছে। এই সূত্রপাত এখন অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে। আর আসাম অনেক ক্ষেত্রে উন্নত ভারতের ইঞ্জিন হয়ে উঠবে।
বন্ধুগণ,
আজ আসাম সমগ্র উত্তরপূর্ব ভারতের উন্নয়নে নতুন সিংহদ্বার হয়ে উঠছে। মাল্টিমডেল কানেক্টিভিটি সম্পর্ক এই এলাকার দিশা এবং দশা দুটিই বদলে দিয়েছে। আসামের নতুন নতুন নির্মাণের গতি, নতুন নতুন মোবাইল টাওয়ার স্থাপনের গতি, উন্নয়ের প্রত্যেক কাজের গতি, স্বপ্নগুলিকে বাস্তবে রূপান্তরিত করছে। ব্রহ্মপুত্রের ওপর গড়ে ওঠা সেতুগুলি আসামের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে নতুন শক্তি এবং আত্মবিশ্বাস দিয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকে ৬-৭ দশক ধরে এ রাজ্যে শুধু তিনটি বড় সেতু তৈরি
হয়েছে। কিন্তু বিগত এক দশকে এ রাজ্যে চারটি নতুন মেগা ব্রিজ গড়ে উঠেছে। তাছাড়া অনেক ঐতিহাসিক প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। বোগিবিল এবং ঢোলা-সাদিয়ার মতো নতুন দীর্ঘতম সেতুগুলি আসামকে রণনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে আরও শক্তিশালী করে তুলেছে। রেল যোগাযোগ ব্যবস্থাতেও একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। বোগিবিল ব্রিজ শুরু হওয়ার ফলে আপার আসামের সঙ্গে দেশের বাকি অংশের দূরত্ব অনেক কমে গিয়েছে। গুয়াহাটি থেকে নিউ জলপাইগুড়ি পর্যন্ত যে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস যায় তার যাত্রাপথ ও সময় অনেক কমেছে। দেশে জলপথ উন্নয়নের কর্মযজ্ঞের সুফলও আসাম পাচ্ছে। জলপথে পণ্য পরিবহণ ১৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ থেকে প্রমাণিত হয় যে ব্রহ্মপুত্র নিছকই একটি নদ নয়, এটি আসামের আর্থিক শক্তির একটি প্রবাহ। পান্ডুতে এখন প্রথমবারের মতো জাহাজ মেরামতি পরিষেবা উন্নত হচ্ছে। বারাণসী থেকে ডিব্রুগড় পর্যন্ত যাতায়াতকারী গঙ্গা বিকাশ ক্রুজ নিয়ে জনমানসে উৎসাহ রয়েছে। এর ফলে উত্তরপূর্ব ভারত গ্লোবাল ক্রুজ ট্যুরিজমের মানচিত্রে নিজের জায়গা করে নিয়েছে।
বন্ধুগণ,
কংগ্রেস সরকার আসাম এবং উত্তরপূর্বাঞ্চলকে উন্নয়ন থেকে দূরে রাখার যে পাপ করেছে, তার ফলে দেশের সুরক্ষা, একতা এবং অখণ্ডতা অনেকটাই বিঘ্নিত হয়েছে। কংগ্রেসের শাসনকালে কয়েক দশক ধরে দেশে হিংসা ও সন্ত্রাস ক্রমবর্ধমান ছিল। আমরা মাত্র ১০-১১ বছরের মধ্যেই একে সমাপ্ত করার লক্ষ্যে অনেকটাই সাফল্য পেয়েছি। উত্তরপূর্ব ভারতে আগে যেখানে সন্ত্রাস এবং রক্তগঙ্গা বইতো, আজ সেখানে ৪জি এবং ৫জি প্রযুক্তির মাধ্যমে ডিজিটাল যোগাযোগ ব্যবস্থা দৃঢ় হচ্ছে। যে জেলাগুলিকে কখনও সন্ত্রাস আক্রান্ত বলে মনে করা হত, সেগুলি আজ দেশের উচ্চাকাঙ্ক্ষী জেলা রূপে অতিরিক্ত সুযোগ-সুবিধা পেয়ে উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলেছে। আগামীদিনে এই এলাকাগুলি ‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল করিডর’-ও হয়ে উঠবে। সেজন্য আজ উত্তরপূর্ব ভারতকে নিয়ে একটি নতুন ভরসার জায়গা তৈরি হয়েছে। আমাদের এই প্রক্রিয়াকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে হবে।
বন্ধুগণ,
আমাদের আসাম এবং উত্তরপূর্ব ভারতের উন্নয়নে সাফল্যের আর একটি কারণ হল, আমরা এই এলাকার পরিচিতি এবং সংস্কৃতিকেও নিরাপত্তা দিচ্ছি। কংগ্রেস আর একটি পাপ করেছিল। তারা এখানকার পরিচিতি মেটানোর ষড়যন্ত্র করেছিল। আর এই ষড়যন্ত্র নিছকই কয়েক বছরের ছিল না। কংগ্রেসের এই পাপের শিকড় প্রাক-স্বাধীনতা সময়কালের সঙ্গে যুক্ত। সেই সময় যখন মুসলিম লিগ এবং ব্রিটিশ সরকার মিলে ভারতকে বিভাজনের ভূমি প্রস্তুত করেছিল, তারা এখানকার পরিচয় মেটানোর ষড়যন্ত্র করেছিল। সেইসময় আসামকেও অবিভাজিত বাংলার বা ইস্ট পাকিস্তানের অংশ করে তোলার প্রকল্প রচিত হয়েছিল। কংগ্রেস ক্রমে সেই ষড়যন্ত্রের অংশ হয়ে উঠছিল। তখন বরদলৈ জি নিজের দলের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন। তিনি আসামের পরিচয় লুপ্ত করার এই ষড়যন্ত্রের বিরোধীতা করেছিলেন, আর আসামকে দেশ থেকে আলাদা হতে দেননি। ভারতীয় জনতা পার্টি নিজের দলের সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করে। যে দেশভক্তরা দেশের স্বার্থে পদক্ষেপ নিয়েছেন, তাঁদের সম্মান জানায়। পরবর্তীকালে অটলজির নেতৃত্বে যখন ভারতীয় জনতা পার্টির সরকার গঠিত হয়, তখনই বরদলৈ জিকে ভারতরত্ন উপাধি দেওয়া হয়।
ভাই ও বোনেরা,
বরদলৈ জি স্বাধীনতার আগে আসামকে বিভাজন থেকে রক্ষা করেছিলেন, কিন্তু তারপর কংগ্রেস আবার আসাম-বিরোধী এবং দেশ-বিরোধী কাজ করতে শুরু করে। কংগ্রেস তার ভোটব্যাঙ্ক বৃদ্ধির জন্য ধর্মীয় তুষ্টিকরণের ষড়যন্ত্র রচনা করেছিল। বাংলা এবং আসামে নিজেদের ভোট ব্যাঙ্কের খাতিরে অনুপ্রবেশকারীদের খোলা ছাড় দেওয়া হয়েছিল। এখানকার ডেমোগ্রাফি বদলে দেওয়া হয়েছিল। এই অনুপ্রবেশকারীরা আমাদের অরণ্যগুলিকে দখল করেছে, আমাদের জমিগুলিকে দখল করেছে। এর ফল এমন হয়েছে যে সমগ্র আসামের নিরাপত্তা এবং পরিচয় বিপন্ন হয়েছে।
বন্ধুগণ,
আজ হেমন্ত জির নেতৃত্বাধীন সরকার এবং তাঁর সমস্ত সঙ্গীরা অত্যন্ত পরিশ্রমের সঙ্গে আসামের সম্পদগুলিকে এই বেআইনী এবং দেশ-বিরোধী জবরদখল থেকে মুক্ত করাচ্ছে। আসামের সম্পদ যেন আসামের জনগণের কাজে লাগে সেজন্য প্রত্যেক স্তরে কাজ হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকারও অনুপ্রবেশ রুখে দেওয়ার জন্য কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে। অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের বিতারিত করার জন্য তাদের চিহ্নিত করা হচ্ছে।
কিন্তু ভাই ও বোনেরা,
কংগ্রেস পার্টি এবং তার জোটে থাকা অন্য দলগুলি খোলাখুলিভাবে দেশ-বিরোধী নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে। এমনকি দেশের সুপ্রিম কোর্টও অনুপ্রবেশকারীদের বিতারিত করার কথা বলেছে। কিন্তু এই দলগুলি তাদের ভোট ব্যাঙ্কের খাতিরে অনুপ্রবেশকারীদের বাঁচানোর জন্য ভাষণবাজি করছে। তাদের উকিলরা আদালতে অনুপ্রবেশকারীদের পক্ষ নিয়ে নানা পায়তারা কষছে। নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ নির্বাচন করানোর জন্য এসআইআর প্রক্রিয়া চালু করেছে। এক্ষেত্রেও দেশের প্রত্যেক কোণায় এসব দলের লোকেরা সমস্যায় পড়েছে। এই লোকেরা অসমিয়া ভাই-বোনদের কল্যাণে কিছুই করবে না। এঁরা আপনাদের জমি এবং অরণ্যে অন্যদের জবরদখল কায়েম রাখবে। এদের দেশ-বিরোধী মানসিকতা পুরনো আমলের
িংসা এবং অশান্তির পরিবেশকে আবার ফিরিয়ে আনতে পারে। আর সেজন্য আমার আসামের ভাই ও বোনেরা, আমাদের অনেক সাবধান থাকতে হবে। যে আসামের অস্মিতা রক্ষার জন্য বরদলৈ জির মতো দেশভক্তরা সারা জীবন নিজেদের সব কিছু উৎসর্গ করেছেন, সেই অস্মিতাকে আমাদের রক্ষা করতে হবে। আসামের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। আমাদের আসামের লাইনচ্যুত হওয়া থেকে বাঁচাতে হবে। কংগ্রেসের ষড়যন্ত্রগুলিকে প্রতি মুহূর্তে, প্রতি পদক্ষেপে বিফল করতে হবে।
বন্ধুগণ,
আজ গোটা বিশ্ব ভারতের দিকে অনেক আশা নিয়ে তাকিয়ে আছে। ভারতের ভবিষ্যতের নতুন সূর্যোদয় উত্তরপূর্ব ভারত থেকেই হবে। সেজন্য আমাদের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে আপনাদের স্বপ্ন সার্থক করার কাজ করতে হবে। আমাদের আসামের উন্নয়নকে সর্বাগ্রে রেখে চলতে হবে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আমাদের এই মিলিত প্রচেষ্টা আসামকে নতুন নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। আমরা উন্নত ভারতের স্বপ্ন বাস্তবায়িত করবো। আর উন্নত আসাম থেকেই উন্নত ভারতের পথ গড়ে উঠবে। এই কামনা নিয়ে আর একবার এই নতুন টার্মিনাল ভবন উদ্বোধনের জন্য আপনাদের সবাইকে শুভেচ্ছা জানাই। আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই। আমার সঙ্গে বলুন-
বন্দে মাতরম।
বন্দে মাতরম।
বন্দে মাতরম।
বন্দে মাতরম।
বন্দে মাতরম।
বন্দে মাতরম।
বন্দে মাতরম।
বিশেষ দ্রষ্টব্য- এটি প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের একটি আনুমানিক অনুবাদ, মূল ভাষণটি হিন্দিতে দেওয়া হয়েছে।
SC/SB/NS
(रिलीज़ आईडी: 2207190)
आगंतुक पटल : 3