প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

ছত্তিশগড়ের নব রায়পুরে রজত মহোৎসব উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের বঙ্গানুবাদ

Posted On: 01 NOV 2025 7:31PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ১ নভেম্বর, ২০২৫

 

ভারত মাতার জয়!

ভারত মাতার জয়!

মা দন্তেশ্বরীর জয়!

মা মহামায়ার জয়!

মা বমলেশ্বরীর জয়!

ছত্তিশগড় মহতারীর জয়!

ছত্তিশগড়ের মাননীয় রাজ্যপাল রমেন ডেকাজি, রাজ্যের জনপ্রিয় এবং কর্মতৎপর মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণুদেও সাইজি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় আমার অগ্রজ সহকর্মীবৃন্দ, জুয়েল ওরামজি, দুর্গা দাস উইকেজি এবং তোখন সাহুজি, রাজ্য বিধানসভার মাননীয় অধ্যক্ষ আমার বন্ধু রামন সিংজি, রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রীদ্বয় অরুন সাওজি এবং বিজয় শর্মাজি, অন্যান্য মাননীয় মন্ত্রীগণ, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিগণ আর ছত্তিশগড়ের প্রত্যেক প্রান্ত থেকে বিপুল সংখ্যায় আগত আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা,

আমার ছত্তিশগড়ের সকল ভাই বোনেদের, শিশুদের, প্রণম্য বয়স্কদের এবং মায়েদের আমি হাত জোর করে জানাই জয় জোহর !

আজ, ছত্তিশগড় রাজ্য গঠনের ২৫ বছর পূর্ণ হল। এই বিশেষ মুহূর্তটি পালন উপলক্ষ্যে আমি ছত্তিশগড়ের সকল নাগরিককে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও শুভ কামনা জানাই। 

ভাই ও বোনেরা,

ছত্তিশগড় রাজ্যের রজত জয়ন্তী সমারোহে ছত্তিশগড়িয়া ভাই বোনেদের সঙ্গে এই আনন্দের সহভাগী হওয়া আমার জন্য সৌভাগ্যের বিষয়। আপনারা সবাই খুব ভালোভাবেই জানেন যে আমি ভারতীয় জনতা পার্টির কার্যকর্তা বা কর্মীরূপে ছত্তিশগড় রাজ্য গঠনের আগের সময়টাও দেখেছি এবং বিগত ২৫বছরের উন্নয়নের যাত্রাপথের সাক্ষী থেকেছি। সেজন্য আজকের এই গর্বের মুহূর্ত উদযাপনে অংশগ্রহণ করা আমার মনেও একটি অদ্ভুত অনুভূতি এনে দিয়েছে। 

বন্ধুগণ,

আমার ২৫বছরের যাত্রাপথ সম্পূর্ণ করেছি। আর আজ পরবর্তী ২৫ বছরের নতুন যুগের সূর্যোদয় হচ্ছে। আপনারা কি আমার জন্য একটি কাজ করবেন? সবাই বলুন, আপনারা আমার একটি অনুরোধ রাখবেন? রাখবেন? আপনারা প্রত্যেকে নিজেদের মোবাইল ফোন বের করে হাতে নিন। মোবাইল ফোনের ফ্ল্যাশ লাইট জ্বালান। হ্যাঁ, এভাবেই আমরা আগামী ২৫ বছরের সূর্যোদয়ের শুভ সূচনা করছি। প্রত্যেকেই নিজের হাতের মোবাইল ফোনের ফ্ল্যাশ লাইট জ্বালান। এবার চারিদিকে তাকিয়ে দেখুন, আমি দেখতে পাচ্ছি আপনাদের হাতে ছত্তিশগড়ের উন্নয়নের স্বপ্নগুলির সূর্যোদয় হয়েছে। আপনাদের উত্তোলিত হাতে নতুন যুগের সংকল্পগুলির আলোকরশ্মি দেখা যাচ্ছে। এই আলোকরশ্মি আপনাদের সামর্থের পরিচায়ক। আর এই সামর্থই আপনাদের ভাগ্য নির্মাণ করবে। 

বন্ধুগণ,

২৫বছর আগে অটলজির নেতৃত্বাধীন সরকার আপনাদের হাতে, আপনাদের স্বপ্নের ছত্তিশগড় সমর্পণ  করেছিল। এর পাশাপাশি এই সংকল্পও গ্রহণ করা হয়েছিল, যে ছত্তিশগড়ের উন্নয়ন নতুন নতুন উচ্চতা স্পর্শ করবে। আজ যখন আমি বিগত ২৫ বছরের উন্নয়ন যাত্রার দিকে তাকাই, তখন আমার মাথা গর্বে উঁচু হয়ে যায়। আমার ছত্তিশগড়ের ভাই ও বোনেরা হাতে হাত মিলিয়ে অনেক সাফল্য অর্জন করেছেন। ২৫বছর আগে যে বীজ বপন করা হয়েছিল, আজ তা উন্নয়নের বটবৃক্ষে পরিণত হয়েছে। ছত্তিশগড় আজ উন্নয়নের পথে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। আজও ছত্তিশগড় একটি নতুন গণতন্ত্রের মন্দির, নতুন বিধানসভা ভবন পেয়েছে। এখানে আসার আগে আমার নতুন আদিবাসী সংগ্রহালয় উদ্বোধনের সৌভাগ্য হয়েছে। আর আজ এই মঞ্চ থেকেও প্রায় ১৪০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগে নির্মীয়মান বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। আমি এই সকল উন্নয়নকর্মের জন্য আপনাদের সকলকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই।  

বন্ধুগণ,

২০০০ সালের পর থেকে এখানে একটি প্রজন্ম সম্পূর্ণভাবে বদলে গেছে। আজ এখানে এমন একটি নবীন প্রজন্ম উঠে এসেছে, যারা ২০০০ সালের আগের সেই পুরনো দিনগুলি দেখেনি। যখন ছত্তিশগড় তৈরি হয়েছিল, তখন এ রাজ্যের অনেক গ্রামে পৌঁছনো খুব কঠিন কাজ ছিল। তখন অনেক গ্রামে কোনও সড়কপথের চিহ্নমাত্র ছিল না। এখন আজ ছত্তিশগড়ের গ্রামে গ্রামে প্রায় ৪০,০০০ কিলোমিটার সড়কপথের নেটওয়ার্ক তৈরি হয়েছে। বিগত ১১ বছরে ছত্তিশগড়ে জাতীয় মহাসড়কও অভূতপূর্বভাবে সম্প্রসারিত হয়েছে। নতুন নতুন এক্সপ্রেসওয়ে এখন ছত্তিশগড়ের নতুন মর্যাদার পরিচায়ক হয়ে উঠেছে। আগে রায়পুর থেকে বিলাসপুর পৌঁছতে অনেক ঘণ্টা সময় লেগে যেত। এখন তার অর্ধেক সময়েই পৌঁছে যাওয়া যায়। আজও এখান থেকে একটি নতুন চার লেনের মহাসড়ক নির্মাণ প্রকল্পের শিলান্যাস করা হয়েছে। এই মহাসড়ক ছত্তিশগড়ের সঙ্গে ঝাড়খণ্ডের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করে তুলবে। 

বন্ধুগণ,

ছত্তিশগড়ের রেল এবং বিমান যোগাযোগ সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে ব্যাপক কাজ হয়েছে। আজ ছত্তিশগড়ে বেশ কয়েকটি ‘বন্দে ভারত’-এর মতো দ্রুতগতির ট্রেন চলে। রায়পুর, বিলাসপুর এবং জগদলপুরের মতো শহরে এখন সরাসরি বিমান পথেও যাওয়া যায়। আগে ছত্তিশগড় শুধুই কাঁচামাল রপ্তানির জন্য বিখ্যাত ছিল। এখন ছত্তিশগড় একটি শিল্প সমৃদ্ধ রাজ্য হিসেবেও নতুন নতুন ভূমিককে তুলে ধরছে। 

বন্ধুগণ,

বিগত ২৫ বছরে ছত্তিশগড় যা কিছু অর্জন করেছে, তার জন্য আমি প্রত্যেক মুখ্যমন্ত্রী এবং প্রত্যেক সরকারকে অভিনন্দন জানাই। কিন্তু অনেক বেশি কৃতিত্ব আমি ডঃ রমন সিংজিকে দিতে চাই। তিনি যখন ছত্তিশগড় মন্ত্রিসভার নেতৃত্ব দিয়েছেন, তখন রাজ্যের সামনে অনেক সমস্যা ছিল। আমি এজন্য অনেক আনন্দিত যে আজ তিনি রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ রূপে সকলকে পথ প্রদর্শন করে চলেছেন আর বিষ্ণুদেও সাই জির নেতৃত্বাধীন সরকার ছত্তিশগড়ের উন্নয়নকে এখন দ্রুতগতিতে এগিয়ে নিয়ে চলেছে।  

বন্ধুগণ,

আপনারা আমাকে খুব ভালোভাবেই জানানে, আজ যখন আমি জিপ থেকে নামছিলাম তখন অনেক পুরনো সব চেহারা দেখতে পাচ্ছিলাম। তখন আমার মনে আনন্দের ঢেউ খেলে যায়। এই রাজ্যের এমন কোনও এলাকা নেই, যেখানে আমি সেই সময় যাইনি। আর সেজন্য আপনারাও আমাকে খুব ভালোভাবেই চেনেন। 

বন্ধুগণ,

আমি দারিদ্রকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। আমি জানি, গরিবের চিন্তা কেমন হয়, গরিবের অসহায়তা কেমন হয়। সেজন্য, যখন দেশবাসী আমাকে সেবা করার সুযোগ দিয়েছে, তখন আমি দরিদ্র কল্যাণকেই গুরুত্ব দিয়েছি। গরিবের জন্য ওষুধ, গরিবের জন্য রোজগার, গরিবের পড়াশোনা এবং তাঁদের জন্য সেচের সুবিধা -  এই বিষয়গুলিকে আমাদের সরকার অগ্রাধিকার দিয়েছে। এ বিষয়ে আমি আপনাদেরকে একটি উদাহরণ দিতে চাই। 

বন্ধুগণ,

২৫বছর আগে আমাদের এই ছত্তিশগড়ে মাত্র একটি মেডিক্যাল কলেজ ছিল। আর আজ ছত্তিশগড়ে ১৪টি মেডিক্যাল কলেজ আছে। তাছাড়া আমাদের রায়পুরে এইমস হাসপাতাল চালু হয়েছে। আমার মনে আছে, দেশে ‘আয়ুষ্মান আরোগ্য মন্দির’ গড়ে তোলার অভিযানও ছত্তিশগড় থেকেই শুরু হয়েছিল। আজ ছত্তিশগড়ে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার আয়ুষ্মান আরোগ্য মন্দির রয়েছে। 

বন্ধুগণ,

আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি যাতে গরিবরা সম্মানের সঙ্গে জীবন ধারণ করতে পারেন। বস্তিগুলিতে কাঁচা বাড়িতে থাকার জীবন, গরিব মানুষকে আরও নিরাশার অন্ধকারে ঠেলে দেয়, হতাশ করে দেয়। তাঁরা তখন দারিদ্রের বিরুদ্ধে লড়াই করার সাহস হারান। সেজন্য আমাদের সরকার প্রত্যেক গরিবের মাথার ওপর পাকা ছাদ তৈরি করে দেওয়ার সংকল্প নিয়েছে। বিগত ১১ বছরে ইতিমধ্যেই ৪ কোটি গরিব মানুষকে পাকা বাড়ি বানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন আমরা আরও ৩ কোটি নতুন পাকা বাড়ি বানিয়ে দেওয়ার সংকল্প নিয়ে কাজ করে চলেছি। আজকের দিনেও ছত্তিশগড়ে সাড়ে ৩ লক্ষেরও বেশি গরিব পরিবার তাঁদের নতুন পাকা বাড়িতে গৃহপ্রবেশ করছেন। আরও প্রায় ৩ লক্ষ পরিবারকে ১২০০ কোটি টাকার কিস্তি প্রদান মঞ্জুর করা হয়েছে।  

বন্ধুগণ,

এটা দেখায় যে ছত্তিশগড়ের বিজেপি সরকার গরিবদের পাকা বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার কাজটিকে কতটা গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। বিগত এক বছরে আমাদের এই ছত্তিশগড়ে গরিবদের জন্য সাড়ে ৭ লক্ষ পাকা বাড়ি তৈরি হয়েছে। আর এটা নিছকই কোনও পরিসংখ্যান নয়। প্রতিটি পাকা বাড়ি তৈরির পিছনে রয়েছে একটি পরিবারের স্বপ্ন, একটি পরিবারের অপার খুশি। আমি আজ সমস্ত সুবিধাভোগী পরিবারগুলিকে অনেক অনেক শুভকামনা জানাই। 

বন্ধুগণ,

ছত্তিশগড়ের জনগণের জীবনকে সহজ করে তুলতে আপনাদের জীবনের সমস্যাগুলি দূর করতে আমাদের সরকার লাগাতার কাজ করে চলেছে। আজ ছত্তিশগড়ের গ্রামে গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে গিয়েছে। যেখানে আগে বিদ্যুৎ আসতো না, সেইসব এলাকাগুলির জীবন আজ বদলে গেছে। আজ সেখানে এমনকি ইন্টারনেটও পৌঁছে গেছে। আগে সাধারণ পরিবারের মানুষের জন্য রান্নার গ্যাসের সংযোগ পাওয়া একটি বড় স্বপ্ন ছিল। দু-একটি বাড়িতে যখন গ্যাস সিলিন্ডার আসতো, তখন মানুষ দূর থেকে দেখতো আর ভাবতো যে ওরা বড়লোক বলে ওদের বাড়িতে গ্যাস সিলিন্ডার যাচ্ছে। আমার বাড়িতে কবে গ্যাস সিলিন্ডার আনতে পারবো? আমাদের সরকার দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াই করতে থাকা প্রত্যেক পরিবারকে গুরুত্ব দিয়ে উজ্জ্বলা গ্যাস প্রকল্পের মাধ্যমে বাড়িতে বাড়িতে রান্নার গ্যাস সংযোগ এবং সিলিন্ডার পৌঁছে দিয়েছে। আজ ছত্তিশগড়ের গ্রামের দরিদ্র মানুষ, দলিত ও পিছিয়ে পড়া মানুষ, বিভিন্ন জনজাতি পরিবারের মানুষের বাড়িতেও রান্নার গ্যাস সংযোগ পৌঁছে গেছে। এখন আমরা চেষ্টা করছি সিলিন্ডারের পাশাপাশি আপনাদের রান্নাঘরে যেভাবে নলের মাধ্যমে পানীয় জল সরবরাহ করা হচ্ছে তেমনভাবেই নলের মাধ্যমে সস্তায় রান্নার গ্যাস পৌঁছে দিতে। আজই নাগপুর-ঝাড়সুগুড়া গ্যাস পাইপলাইন জাতির উদ্দেশে সমর্পণ করা হয়েছে। আমি এই প্রকল্পের জন্য ছত্তিশগড়ের জনগণকে শুভেচ্ছা জানাই।  

বন্ধুগণ,

ছত্তিশগড়ে দেশের একটি বড় জনজাতি জনসংখ্যা বসবাস করে। এই জনজাতি সমাজের একটি গৌরবময় ইতিহাস রয়েছে। তাঁরা ভারতের ঐতিহ্য রক্ষা এবং উন্নয়নের জন্য অনেক বড় অবদান রেখেছেন। আমাদের বিভিন্ন জনজাতি সমাজের এই অবদানকে যাতে গোটা দেশ জানে, গোটা বিশ্ব জানে তা সুনিশ্চিত করার জন্য আমরা নিরন্তর কাজ করে চলেছি। সারা দেশের নানা প্রান্ত থেকে জনজাতি স্বাধীনতা সংগ্রামীদের তথ্য জোগাড় করে সংগ্রহ তৈরি করা, সংগ্রহালয় গড়ে তোলা এবং ভগবান বীরসা মুণ্ডার জন্মদিবসকে জনজাতীয় গৌরব দিবস হিসেবে ঘোষণা করা- এ রকম অনেক কাজে জনজাতি সমাজের অবদানের গৌরবগাথা যেন লেখা থাকে, গৌরব গান যেন হতে থাকে, আমরা সেই চেষ্টা করছি।  

বন্ধুগণ,

আজ এই পর্বে আমরা আর একটি পদক্ষেপ নিয়েছি। আজ দেশবাসী উদ্দেশে ‘শহীদ বীর নারায়ণ সিং আদিবাসী স্বতন্ত্রতা সংগ্রাম সেনানী সংগ্রহালয়’-এরও উদ্বোধন করা হয়েছে। এই সংগ্রহালয়ে স্বাধীনতার আগে দেড়শো বছরেরও বেশি সময় ধরে দেশের বিভিন্ন জনজাতি সমাজ যে সংঘর্ষ করে গেছে, তার ইতিহাসকে তুলে ধরা হয়েছে। আমাদের জনজাতি স্বাধীনতা সংগ্রামীরা কীভাবে স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছেন, তার সুক্ষাতিসূক্ষ বণর্না এখান দেখা যাবে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস এই সংগ্রহালয় আগামী অনেক প্রজন্মকে প্রেরণা জুগিয়ে যাবে।

বন্ধুগণ,

আমাদের সরকার একদিকে বিভিন্ন জনজাতির ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ করছে, অন্যদিকে, জনজাতিগুলির উন্নয়ন এবং কল্যাণের কথা মাথায় রেখে কাজ করে চলেছে। ‘ধরতি আবা জনজাতীয় গ্রাম উৎকর্ষ অভিযান’-এর মাধ্যমে আমরা দেশের হাজার হাজার জনজাতি গ্রামে উন্নয়নের নতুন আলো পৌঁছে দিচ্ছি। এটি প্রায় ৮০,০০০ কোটি টাকার প্রকল্প। আশি হাজার কোটি টাকা। স্বাধীন ভারতে কখনও এই মাপে কোনও জনজাতি এলাকায় কাজ হয়নি। এভাবেই, দেশের সবচাইতে পিছিয়ে পড়া জনজাতিগুলির উন্নয়নের জন্যও প্রথমবার কোনও জাতীয় প্রকল্প তৈরি হয়েছে। পিএম-জনমন যোজনার মাধ্যমে পিছিয়ে পড়া জনজাতিগুলির হাজার হাজার বস্তিতে উন্নয়নের কাজ চলছে। 

বন্ধুগণ,

আদিবাসী সমাজ অনেক প্রজন্ম ধরে বিভিন্ন অরণ্যজাত সামগ্রী সংগ্রহ করে। কিন্তু আমাদের সরকারই প্রথমবার ‘বন-ধন কেন্দ্র’ রূপে তাঁদের জন্য অরণ্য উপজ সামগ্রী থেকে অধিক রোজগারের পথ খুলে দিয়েছে। কেন্দুপাতা বিক্রির উন্নত ব্যবস্থা করা হয়েছে। আজ ছত্তিশগড়ে কেন্দুপাতা সংগ্রাহকদের আগের থেকে অনেক বেশি অর্থ পাওয়া যাচ্ছে। 

বন্ধুগণ,

আমি আজ অত্যন্ত আনন্দিত যে, এখন আমাদের ছত্তিশগড় নকশাল, মাওবাদের আতঙ্কের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হচ্ছে। নকশালবাদের কারণে আপনারা ৫০-৫৫ বছর ধরে যত কষ্ট পেয়েছেন, তা অত্যন্ত পীড়াদায়ক। আজ যাঁরা কথায় কথায় সংবিধান দেখান, আজ যাঁরা সামাজিক ন্যায়ের নামে কুমিরের মতো কাঁদেন, তাঁরা অনেক দশক ধরে নিজেদের নিহিত রাজনৈতিক স্বার্থে আপনাদের সঙ্গে অন্যায় করেছে।  

বন্ধুগণ,

মাওবাদী আতঙ্কের কারণে দীর্ঘকাল ধরে ছত্তিশগড়ের আদিবাসী জনজাতি এলাকাগুলি সড়কপথ থেকে বঞ্চিত ছিল। বাচ্চাদের জন্য কোনও স্কুল ছিল না, অসুস্থদের জন্য কোনও হাসপাতাল ছিল না। আর যেগুলি ছিল, সেগুলিকে বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়া হত। চিকিৎসকদের, শিক্ষকদের মেরে ফেলা হত। আর অনেক দশক ধরে যাঁরা দেশ শাসন করছিলেন, তাঁরা আপনাদেরকে সেই অসহায়তার মধ্যে ফেলে রেখে নিজেরা শীততাপ নিয়ন্ত্রিত কামরায় বসে জীবনের আনন্দ উপভোগ করতেন। 

বন্ধুগণ,

কিন্তু মোদী তার জনজাতি ভাই-বোনেদের এভাবে হিংসার কবলে থেকে সর্বনাশের দিকে এগিয়ে যাওয়া সহ্য করতে পারেনি। আমি লক্ষ লক্ষ মা ও বোনদের এভাবে তাঁদের সন্তানদের জন্য বিলাপ করে কান্না সহ্য করতে পারিনি। সেজন্য ২০১৪ সালে যখন আপনারা আমাদের সুযোগ দিয়েছেন, তখনই আমরা ভারতকে মাওবাদী আতঙ্ক থেকে মুক্ত করার সৎ সংকল্প নিয়েছি। আজ তার ফল দেশবাসী দেখছে। ১১ বছর আগে দেশের ১২৫টিরও বেশি জেলা মাওবাদী সন্ত্রাসের কবলে ছিল। আর আজ তার মধ্যে ৩টি জেলায় সামান্য মাওবাদী উৎপাত রয়েছে। কিন্তু আমি দেশবাসীকে গ্যারান্টি দিচ্ছি, সেই দিন দূরে নেই যখন আমাদের ছত্তিশগড়, আমাদের ভারত, এই ভারতের প্রতিটি প্রান্ত মাওবাদী সন্ত্রাস থেকে সম্পূর্ণরূপে মুক্ত হয়ে যাবে।  

বন্ধুগণ,

এখানে ছত্তিশগড়ের যে যুবক-যুবতীরা পথভ্রষ্ট হয়ে হিংসার পথে পা বাড়িয়েছিল, তারা এখন দ্রুত গতিতে অস্ত্র সমর্পণ করছে। কিছুদিন আগে কাঁকেরে ২০ জনেরও বেশি নকশালবাদী মূল ধারায় ফিরে এসেছে। তার আগে ১৭ অক্টোবর তারিখে বস্তারে ২০০ জনেরও বেশি নকশালবাদী আত্মসমর্পণ করেছে। বিগত কয়েক মাসে সারা দেশে মাওবাদী সন্ত্রাসের সঙ্গে যুক্ত কয়েকশো সন্ত্রাসবাদী  অস্ত্র সমর্পণ করেছে। তাদের অনেকের মাথার ওপরই লক্ষ কোটি টাকার পুরস্কার ছিল। এখন তারা বন্দুক ও অন্যান্য অস্ত্র ছেড়ে দেশের সংবিধানকে স্বীকার করে নিয়েছে। 

বন্ধুগণ,

আগে যেখানে যেখানে বোমা, বন্দুকের ভয় ছিল, সেখানকার পরিস্থিতি আজ বদলে গেছে। বীজাপুরের চিল্কাপল্লি গ্রামে ৭ দশক পর এই প্রথম বিদ্যুতের আলো পৌঁছেছে। অবুঝমাড়ের রেকাওয়া গ্রামে স্বাধীনতার পর প্রথমবার বিদ্যালয় ভবন তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। আর পূওয়োর্তী গ্রাম যাকে কখনও সন্ত্রাসের দূর্গ বলে মনে করা হত, আজ সেখানে উন্নয়নের জোয়ার এসেছে। এখন সেখানে লাল পতাকার জায়গায় ত্রিবর্ণ রঞ্জিত জাতীয় পতাকা পত পত শব্দ করে উড়ছে। আজ বস্তারের কোনও এলাকায় ভয় নেয়। উৎসবের আবহ। সেখানে ‘বস্তার পন্ডুম’ এবং ‘বস্তার অলিম্পিক’-এর আয়োজন হচ্ছে। 

বন্ধুগণ,

আপনারা কল্পনা করতে পারেন নকশালবাদের মতো সমস্যার বিরুদ্ধে লড়াই আমরা ২৫বছর ধরে এমনভাবে লড়েছি যে এই সমস্যা আজ সমাধানের পথে, আর তারপর এই এলাকার উন্নয়নের গতি আরও দ্রুত হবে। 

বন্ধুগণ,

ছত্তিশগড়ের জন্য আগামী ২৫ বছর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের উন্নত ভারত গড়ে তুলতে হবে। সেজন্য ছত্তিশগড়ের উন্নয়নকেও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন। আমি ছত্তিশগড়ের নবীন প্রজন্মের মানুষদের বলবো যে এই সময় আপনাদের সময়। আমার নবীন বন্ধুরা, এমন কোনও লক্ষ্য নেই যা আপনারা অর্জন করতে পারবেন না। আমি আপনাদের আশ্বস্ত করছি, এটা মোদীর গ্যারান্টি। আপনাদের প্রতিটি পদক্ষেপ প্রত্যেক সংকল্পের সঙ্গে মোদী দাঁড়িয়ে থাকবে। আমরা মিলেমিশে ছত্তিশগড়কে এগিয়ে নিয়ে যাবো, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবো। এই বিশ্বাস নিয়ে আর একবার ছত্তিশগড়ের প্রত্যেক ভাই-বোনকে অনেক অনেক শুভ কামনা জানাই। অনেক অনেক ধন্যবাদ। সম্পূর্ণ শক্তি দিয়ে আমার সঙ্গে বলুন, দু-হাত ওপরে তুলে তুলে বলুন, ভারত মাতার জয় ! ভারত মাতার জয় ! ভারত মাতার জয় ! ভারত মাতার জয় ! ভারত মাতার জয় ! অনেক অনেক ধন্যবাদ !

 

SC/SB/NS


(Release ID: 2185666) Visitor Counter : 3