প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
নতুন দিল্লির ইন্ডিয়ান এগ্রিকালচারাল রিসার্চ ইন্সটিটিউটে পিএম ধন ধান্য কৃষি যোজনা এবং আরও নানা প্রকল্পের সূচনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের বঙ্গানুবাদ
Posted On:
11 OCT 2025 3:31PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ১১ অক্টোবর, ২০২৫
মঞ্চে আসীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান জী, প্রযুক্তির কল্যাণে দূর প্রান্ত থেকে এই অনুষ্ঠানে সামিল রাজীব রঞ্জন সিং জী, ভগিরথ চৌধুরী জি, বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, জনপ্রতিনিধি এবং আমার কৃষক ভাই বোনেরা।
আজ ১১ অক্টোবর- একটি ঐতিহাসিক দিন। দেশের দুই কৃতি সন্তান ভারতরত্ন শ্রী জয়প্রকাশ নারায়ণ জী এবং ভারতরত্ন শ্রী নানাজি দেশমুখের জন্মবার্ষিকী আজ। গ্রামীণ ভারতের উন্নয়ন এবং গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলনে এঁদের অবদান চিরস্মরণীয়। এই ঐতিহাসিক দিনে দেশের স্বনির্ভরতা এবং কৃষকদের কল্যাণে দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের সূচনা হচ্ছে। প্রথমটি হল প্রধানমন্ত্রী ধন-ধান্য কৃষি যোজনা এবং দ্বিতীয়টি হল ডাল আত্মনির্ভরতা অভিযান। এই দুটি প্রকল্প বাবদ ভারত সরকার ৩৫০০০ কোটি টাকারও বেশি খরচ করবে।
বন্ধুরা,
আমাদের বিকাশ যাত্রায় কৃষি ক্ষেত্রের অবদান বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে থেকেছে। এই ক্ষেত্রে সরকারি সহায়তার দরকার ছিল সবসময়ই। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আগেকার সরকার সে পথে হাঁটেনি। ফলে এই ক্ষেত্র ক্রমে দুর্বল হয়ে পড়েছিল। কিন্তু একবিংশ শতকে দ্রুত বিকাশের পথে এগিয়ে যেতে হলে কৃষি ক্ষেত্রে সংস্কার অত্যন্ত জরুরি। এই কাজ শুরু হয়েছে ২০১৪ থেকে। কৃষকদের স্বার্থে নেওয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। বিগত ১১ বছরে ভারতে কৃষিজ পণ্যের রপ্তানি প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। খাদ্য শস্যের উৎপাদন ৯ কোটি মেট্রিক টন এবং শাকসব্জির উৎপাদন ৬ কোটি ৪০ লক্ষ মেট্রিক টন বেড়েছে। ভারত এখন সারা বিশ্বে দুধ উৎপাদনে প্রথম এবং মাছ উৎপাদনে দ্বিতীয়। মধু ও ডিম উৎপাদন গত ১১ বছরে দ্বিগুণ হয়েছে। এই সময় দেশে ছটি বড় সার কারখানা তৈরি হয়েছে। ২৫ কোটি মৃত্তিকা উর্বরতা পত্র বিতরণ করা হয়েছে কৃষকদের মধ্যে। অণুসেচের সুবিধা পৌঁছে গেছে ১ কোটি হেক্টর জমিতে। প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনার আওতায় প্রদান করা হয়েছে প্রায় ২ লক্ষ কোটি টাকা। বিগত ১১ বছরে সারা দেশে তৈরি হয়েছে ১০,০০০-এরও বেশি কৃষক উৎপাদক সংগঠন। আমার এখানে আসতে দেরি হল তার কারণ আমি আমাদের কৃষক, মৎস্যজীবী এবং কৃষি ক্ষেত্রে কর্মরত মহিলাদের সঙ্গে কথা বলছিলাম ও তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা শুনছিলাম।
কিন্তু বন্ধুরা,
আজ দেশ সীমিত কিছু সাফল্য নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে চাইছে না। প্রতিটি ক্ষেত্রে উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে হবে। সেজন্যই হাতে নেওয়া হয়েছে পিএম ধন-ধান্য কৃষি যোজনা। এক্ষেত্রে প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে উচ্চাভিলাষী জেলা কর্মসূচির সাফল্য। আগেকার সরকার দেশের ১০০টিরও বেশি জেলাকে অনুন্নত বলে ঘোষণা করার পর তাদের কথা কার্যত ভুলেই গিয়েছিল। আমরা তাদের অগ্রাধিকারের কেন্দ্রে নিয়ে এসেছি এবং উচ্চাভিলাষী জেলা হিসেবে ঘোষণা করেছি। এই জেলাগুলির ক্ষেত্রে সমন্বয়, সহযোগিতা ও প্রতিযোগিতার মন্ত্রে এগিয়েছি আমরা। এই প্রতিযোগিতা অবশ্যই সুস্থ প্রতিযোগিতা। তার ফল মিলেছে হাতেনাতে।
বন্ধুরা,
একশোটিরও বেশি এইসব জেলায় স্বাধীনতার পরেও দীর্ঘদিন পিছিয়ে থেকেছে। ২০ শতাংশ বসতি এলাকায় রাস্তা পর্যন্ত ছিল না। উচ্চাভিলাষী জেলা কর্মসূচির কল্যাণে ছবিটা পাল্টেছে। এইসব জেলার ১৭ শতাংশ শিশু টিকাকরণ কর্মসূচির বাইরে ছিল। এই ছবিটাও পাল্টে গেছে। এইসব অঞ্চলে ১৫ শতাংশেরও বেশি স্কুলে বিদ্যুতের সংযোগ ছিল না। এ ছবিও পাল্টে গেছে।
বন্ধুরা,
পিছিয়ে থাকা বঞ্চিত মানুষ অগ্রাধিকারের কেন্দ্রে এলে ইতিবাচক প্রবণতা পরিলক্ষিত হয় সর্বত্র। এইসব জেলায় প্রসূতি মৃত্যুর হার কমেছে, শিশুদের স্বাস্থ্য উন্নত হয়েছে এবং শিক্ষার প্রসার ঘটেছে।
বন্ধুরা,
এই পথ অনুসরণ করে আমরা কৃষি ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকা ১০০টি জেলাকে আরও উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। সেজন্যই প্রধানমন্ত্রী ধন-ধান্য কৃষি যোজনা হাতে নেওয়া হয়েছে। একটি খামারের উৎপাদনশীলতা কতটা, সেখানে এক বছরে কতবার চাষ হয় এবং ওই অঞ্চলে প্রাতিষ্ঠানিক ঋণ পাওয়ার সুযোগ কতটা- এইসব বিচার বিবেচনা করেই এই ১০০টি জেলাকে নির্বাচন করা হয়েছে।
বন্ধুরা,
এই কর্মসূচিতে সরকারের ৩৬টি কর্মসূচিকে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে প্রাকৃতিক চাষের জাতীয় অভিযান, এক বিন্দু আরও শস্য অভিযান কিংবা তৈলবীজ অভিযানের কথা উল্লেখ করা যেতে পারে। গবাদি পশুর টিকাকরণও এই যোজনার অন্তর্ভুক্ত।
বন্ধুরা,
উচ্চাভিলাষী জেলা কর্মসূচির মতোই পিএম ধন-ধান্য কৃষি যোজনাকে সফল করে তুলতে কৃষকদের পাশাপাশি, প্রশাসনিক আধিকারিকদেরও সমানভাবে উদ্যোগী হয়ে উঠতে হবে। জেলাস্তরে গড়ে তুলতে হবে কর্মপরিকল্পনা। এক্ষেত্রে ওই অঞ্চলের মাটি এবং জলবায়ুর কথা মনে রাখতে হবে। সেই অনুযায়ী স্থির করতে হবে কোন ফসল চাষ হবে এবং কোন ধরনের সারের ব্যবহার হবে। চাষ হওয়া সম্ভব না হলে জোর দিতে হবে পশুপালন কিংবা মাছ চাষের ওপরে। অনেক জায়গায় হয়তো মধু উৎপাদনের সুবিধা রয়েছে;উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে জলজ উদ্ভিদ চাষেও হাত লাগানো যেতে পারে। আমি নিশ্চিত যে, আমাদের আধিকারিকরা এই কাজে সফল হবেন এবং গ্রামীণ অর্থনীতি শক্তিশালী হয়ে উঠবে।
বন্ধুরা,
ডাল আত্মনির্ভরতা অভিযানেরও সূচনা হচ্ছে আজ। উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ক্ষমতায়নও এখানে অন্যতম লক্ষ্য। ভারত ধান ও গম উৎপাদনে অনেক দূর এগিয়েছে। কিন্তু তাতে দেশের মানুষের পুষ্টির চাহিদা পূরণ হবে না। প্রোটিন সমৃদ্ধ ডালের উৎপাদন বৃদ্ধি অত্যন্ত জরুরি। এক্ষেত্রে আমদানি -নির্ভরতা কমাতে হবে অবশ্যই।
বন্ধুরা,
১১,০০০ কোটি টাকার ডাল স্বনির্ভরতা অভিযানের মাধ্যমে আরও ৩৫ লক্ষ হেক্টর জমিকে ডাল চাষের আওতায় আনা হবে। এরফলে, উপকৃত হবে প্রায় ২ কোটি ডাল চাষি।
বন্ধুরা,
লালকেল্লার প্রাকার থেকে আমি বলেছিলাম যে, উন্নত ভারতের প্রধান ৪টি ভিত্তির একটি হলেন কৃষকরা। তাঁদের ক্ষমতায়নে বিগত ১১ বছরে ধারাবাহিক উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। কৃষি খাতে বাজেট বরাদ্দ প্রায় ৬ গুণ বেড়েছে। এরফলে বিশেষভাবে উপকৃত হয়েছেন ক্ষুদ্র কৃষকরা। কংগ্রেস সরকার, আমি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগের ১০ বছরে সারের ভর্তুকি বাবদ ৫ লক্ষ কোটি টাকা খরচ করেছে। পরবর্তী ১০ বছরে এই খাতে ১৩ লক্ষ কোটি দিয়েছে সরকার।
বন্ধুরা,
কংগ্রেস সরকার সমগ্র কৃষি খাতে এক বছরে যে পরিমাণ খরচ করতো, বর্তমানে সেই পরিমাণ টাকা শুধুমাত্র পিএম কিষাণ সম্মাননিধি প্রকল্পেই খরচ করা হচ্ছে। এই প্রকল্প বাবদ এখনও পর্যন্ত ৩ লক্ষ ৭৫,০০০ কোটি টাকা আপনাদের, অর্থাৎ কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বন্ধুরা,
কৃষকদের আয় বাড়াতে আমাদের সরকার তাঁদের সামনে চিরাচরিত কৃষি ছাড়াও পশুপালন, মৎস্য উৎপাদন এবং মৌমাছি চাষের সুযোগ এনে দিচ্ছে। বিগত ১১ বছরে দেশে মধু উৎপাদন দ্বিগুণ হয়েছে। ছ-সাত বছর আগেও মধু রপ্তানির মূল্যমান ছিল ৪৫০ কোটি টাকা। কিন্তু গত বছরে এই পরিমাণ দেড় হাজার কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।
বন্ধুরা,
কৃষি ক্ষেত্রে আমাদের বোনেদের অংশগ্রহণ গ্রামীণ অর্থনীতি এবং কৃষির আধুনিকীকরণে গতি এনেছে। লাখপতি দিদি এবং নমো ড্রোন দিদির আওতায় বিশেষভাবে উপকৃত হচ্ছেন মহিলারা। প্রাকৃতিক চাষের প্রসারেও মহিলাদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। সারা দেশে প্রাকৃতিক চাষের ১৭,০০০ ক্লাস্টার তৈরি হয়েছে। প্রাকৃতিক চাষ সম্পর্কে কৃষকদের অবহিত করে চলেছেন প্রায় ৭০,০০০ কৃষি সখী।
বন্ধুরা,
জিএসটি সংস্কার কৃষকদের ও গ্রামের মানুষের খরচ কমাবে এবং লাভ বাড়াবে। ট্র্যাক্টরের মতো সরঞ্জামের দাম ৪০,০০০ টাকা কমে গেছে।
বন্ধুরা,
জিএসটি সংস্কার অন্য অনেক কৃষি সরঞ্জামেরও দাম কমিয়েছে। অণুসেচের সরঞ্জাম সহ নানা ধরনের যন্ত্রপাতির কথা এক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
বন্ধুরা,
প্রাকৃতিক চাষে সহায়ক সার ও কীটনাশকের দামও জিএসটি সংস্কারের ফলে কমেছে। সব মিলিয়ে একটি গ্রামীণ পরিবারের খরচ দু-দিক থেকে কমেছে। কারণ কৃষি সরঞ্জামের দাম কমার পাশাপাশি, দৈনন্দিন জিনিসপত্রেরও দাম কমেছে।
আমার প্রিয় কৃষক বন্ধুরা,
স্বাধীনতার পর, খাদ্য উৎপাদনে আপনারা দেশকে স্বনির্ভর করেছেন। এখন উন্নত ভারত গড়ে তোলার কাজে আপনাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে হবে। বিশ্বের বাজারের জন্য পণ্য উৎপাদন বাড়াতেই হবে। আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা রয়েছে এমন শস্যের উৎপাদনে অগ্রাধিকার দেওয়া জরুরি। আমদানি কমানোর সঙ্গে সঙ্গে নিশ্চিত করতে হবে রপ্তানিও যাতে বাড়ে। এক্ষেত্রে পিএম ধন-ধান্য কৃষি যোজনা এবং ডাল আত্মনির্ভরতা অভিযান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। কৃষক ভাই-বোনেদের অভিনন্দন। সকলকে আসন্ন দীপাবলির শুভেচ্ছা। অনেক ধন্যবাদ।
SSS/AC/NS….
(Release ID: 2178250)
Visitor Counter : 5
Read this release in:
Telugu
,
English
,
Urdu
,
हिन्दी
,
Marathi
,
Manipuri
,
Assamese
,
Punjabi
,
Gujarati
,
Odia
,
Kannada
,
Malayalam