প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

অরুণাচল প্রদেশের ইটানগরে একগুচ্ছ উন্নয়নমূলক প্রকল্পের সূচনা উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

Posted On: 22 SEP 2025 3:28PM by PIB Kolkata

নতুন দিল্লি, ২২  সেপ্টেম্বর, ২০২৫

 

ভারত মাতা কি জয়! ভারত মাতা কি জয়! ভারত মাতা কি জয়!

জয় হিন্দ! জয় হিন্দ! জয় হিন্দ!

অরুণাচল প্রদেশের মাননীয় রাজ্যপাল শ্রী কে. টি. পারনায়কজি, রাজ্যের জনপ্রিয় ও কর্মঠ মুখ্যমন্ত্রী পেমা খান্ডুজি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার আমার সহকর্মী কিরেন রিজিজু, রাজ্য সরকারের মন্ত্রীরা, আমার সহকর্মী সংসদ সদস্য নবম রেবিয়া জি এবং তাপির গাও জি, সমস্ত বিধায়ক, অন্যান্য জনপ্রতিনিধি এবং অরুণাচল প্রদেশের আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা,

বোমিয়েরং দোনি পোলো! সর্বশক্তিমান দোনি পোলোর কাছে আমাদের সকলের মঙ্গল প্রার্থনা করি!

বন্ধুগণ,
হেলিপ্যাড থেকে এই মাঠে আসার পথে,  অনেকের সঙ্গে দেখা হল,  যারা ত্রিবর্ণরঞ্জিত জাতীয় পতাকা নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। অরুণাচল প্রদেশের  শ্রদ্ধা ও স্নেহর জন্য আমি  গর্বিত । আমাকে এত সুন্দর করে স্বাগত জানানোর হয়েছে। এর জন্য আমার আসতে দেরী হয়ে গেল।   তাই  আমি আপনার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। অরুণাচলের এই পবিত্র ভূমি কেবল উদীয়মান সূর্যের দেশ নয়,  দেশপ্রেম আরও উপরে স্থান করে নেয়।  আমাদের ত্রিবর্ণরঞ্জিত পতাকার উপরের রঙ যেমন গেরুয়া, তেমনি অরুণাচলের প্রধান রঙও গেরুয়া। এখানকার প্রতিটি মানুষ বীরত্বের প্রতীক, সরলতার প্রতীক। আমি রাজনীতির বৃত্তে ঢোকার আগেও বহুবার অরুণাচল প্রদেশ এসেছি। এখানে  আমার প্রচুর স্মৃতি আছে এবং সেগুলির কথা মনে করে আমি খুব আনন্দ পাই । আপনাদের সঙ্গে কাটানো প্রতিটি মুহূর্ত আমার কাছে খুব একটি মূল্যবান স্মৃতি।  আপনাদের  আমার প্রতি ভালোবাসা এবং স্নেহ আমার জীবনের সবচেয়ে বড় সম্পদ। তাওয়াং মঠ থেকে নামসাইয়ের সোনালী প্যাগোডা পর্যন্ত অরুণাচল প্রদেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চল শান্তি এবং সংস্কৃতির সঙ্গমস্থল। ভারত মাতার কাছে যা অত্যন্ত গর্বের,  আমি এই পবিত্র ভূমিকে  শ্রদ্ধার সঙ্গে প্রণাম জানাই।   
 
বন্ধুগণ,
আজ আমার অরুণাচল সফর তিনটি কারণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। প্রথমত, নবরাত্রির প্রথম দিনে এই সুন্দর পাহাড়গুলো দেখার সৌভাগ্য আমার হল। নবরাত্রির প্রথম দিনে, আমরা হিমালয়ের কন্যা মা শৈলপুত্রীর পূজা করি। দ্বিতীয় কারণ হল, আজ থেকে দেশজুড়ে পরবর্তী প্রজন্মের জিএসটি সংস্কার কার্যকর হয়েছে। এটি "জিএসটি সাশ্রয় উৎসব"-এর সূচনা। এই  উৎসবের মরশুমে দেশের মানুষ দ্বিগুণ আনন্দ পেয়েছেন। এবং তৃতীয় কারণ হল, আজ এই শুভ দিনে অরুণাচল প্রদেশে নতুন নতুন  উন্নয়ন প্রকল্প শুরু  হচ্ছে। আজ, অরুণাচল প্রদেশকে বিদ্যুৎ, যোগাযোগ, পর্যটন এবং স্বাস্থ্য সহ একাধিক ক্ষেত্রের সঙ্গে প্রকল্প উপহার দেওয়া হয়েছে।  এটি বিজেপির ডবল ইঞ্জিন সরকারের দ্বিগুণ সুবিধার একটি উজ্জ্বল উদাহরণ। আমি এই প্রকল্পগুলির জন্য অরুণাচলের জনগণকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। এখানে আসার আগে, আমি ছোট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ  করার, তাদের দোকানের পশরা দেখার এবং আরও গুরুত্বপূর্ণভাবে, তাদের ক্ষমতা এবং উৎসাহ অনুভব করার সুযোগ  পেয়েছিলাম। এই সাশ্রয় উৎসবে ব্যবসায়ী, কারিগর এবং জনসাধারণের মধ্যে উচ্ছ্বাস স্পষ্টভাবে দেখতে পাচ্ছিলাম। 


বন্ধুগণ, 

যদিও সূর্যের প্রথম রশ্মি অরুণাচলের উপর পড়ে, দুঃখের বিষয় হল, দ্রুতহারের উন্নয়নের রশ্মি এখানে পৌঁছাতে কয়েক দশক সময় লেগেছে। আমি ২০১৪ সালের আগেও অনেকবার অরুণাচল সফর করেছি, আপনাদের মাঝে থেকেছি এবং এই অঞ্চলের পরিশ্রমী মানুষ এবং এর অপার সম্ভাবনা কতটা  তা প্রত্যক্ষ করেছি। সেই সময় যারা দিল্লিতে বসে দেশ পরিচালনা করছিলেন তারা অরুণাচলকে উপেক্ষা করেছেন। কংগ্রেসের মতো দলগুলি ভেবেছিল যে এখানে খুব কম লোক বাস করে এবং মাত্র দুটি লোকসভা আসন রয়েছে,  তাই অরুণাচলকে গুরুত্ব  দেওয়া মানেই এক নতুন সমস্যায় পড়া  ঝামেলা? কংগ্রেসের এই মানসিকতা অরুণাচল এবং সমগ্র উত্তর-পূর্বের প্রচুর ক্ষতি করেছে। আমাদের সমগ্র উত্তর-পূর্ব উন্নয়নের নিরীখে অনেক পিছিয়ে ছিল। 
 

বন্ধুগণ,  

২০১৪ সালে যখন আপনারা আমাকে দেশের সেবা করার সুযোগ দিয়েছিলেন, তখন আমি দেশকে  কংগ্রেসের এই মানসিকতা থেকে মুক্ত করার সংকল্প নিয়েছিলাম। রাজ্যের ভোট বা আসনের সংখ্যার উপর ভিত্তি করে আমরা সিদ্ধান্ত নিই না।  আমাদের  নীতি হল দেশ প্রথমে। আমাদের মন্ত্র হল নাগরিক দেব ভবঃ। যাদের কথা কেউ কখনও ভাবেনি, মোদী তাদের শ্রদ্ধা করেন। এই কারণেই কংগ্রেসের শাসনকালে ভুলে যাওয়া উত্তর-পূর্ব ভারত,  ২০১৪ সাল থেকে আমাদের উন্নয়ন অগ্রাধিকারের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। আমরা উত্তর-পূর্বের জন্য বাজেট কয়েকগুণ বাড়িয়েছি। আমরা প্রত্যন্ত অঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ এবং সেখানে সব কিছু সরবরাহকে আমাদের সরকারের বৈশিষ্ট্য করে তুলেছি। শুধু তাই নয়, আমরা নিশ্চিত করেছি যে সরকার  দিল্লিতে বসে শুধু পরিচালিত হবে না। কর্মকর্তা এবং মন্ত্রীদের আরও ঘন ঘন উত্তর-পূর্বে আসতে হবে, এখানে রাতে থাকতে হবে এবং তৃণমূল স্তরে কাজ করতে হবে।  


বন্ধুগণ,

কংগ্রেস সরকারের আমলে, একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়তো  দুই - তিন মাসে একবার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে আসতেন। অন্যদিকে, বিজেপি সরকারের সময়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা ইতিমধ্যেই ৮০০ বারেরও বেশি উত্তর-পূর্বাঞ্চল সফর করেছেন।  এটি কেবল একটি প্রতীকী সফর এবং ঘুরে বেড়ানোর বিষয় নয়। আমাদের মন্ত্রীরা যখন আসেন, তখন তারা প্রত্যন্ত অঞ্চলে, জেলায়, ব্লকে যাওয়ার চেষ্টা করেন এবং শুধু তাই নয়, তারা এখানে কমপক্ষে একটি রাত কাটানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। আমি নিজে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ৭০ বারেরও বেশি উত্তর-পূর্বাঞ্চল সফর করেছি। গত সপ্তাহে, আমি মিজোরাম, মণিপুর এবং আসামে ছিলাম এবং গুয়াহাটিতে রাত কাটিয়েছি। উত্তর-পূর্বাঞ্চল আমার হৃদয় জুড়ে। এই কারণেই আমরা মনের দূরত্ব ঘুচিয়ে দিল্লিকে আপনাদের আরও কাছে নিয়ে এসেছি। 
    


  
বন্ধুগণ,  

আমরা উত্তর-পূর্বের আটটি রাজ্যকে দেবী লক্ষ্মীর আটটি রূপ - 'অষ্টলক্ষ্মী'  হিসেবে শ্রদ্ধা করি। আর তাই আমরা এই অঞ্চলকে উন্নয়নের ক্ষেত্রে কখনও পিছিয়ে রাখতে পারি না। কেন্দ্রীয়  সরকার এই অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য আরো বেশী করে অর্থ ব্যয় করছে। আমি আপনাদেরকে একটি উদাহরণ দিচ্ছি। আপনাদের মধ্যে কেউ কেউ হয়তো জানেন যে কেন্দ্রীয় সরকারের সংগৃহীত করের একটি অংশ রাজ্যগুলির সাথে ভাগ করে নেওয়া হয়। কংগ্রেস সরকারের সময়, অরুণাচল প্রদেশ দশ বছরে কেন্দ্রীয় করের থেকে মাত্র প্রায় ৬,০০০ কোটি টাকা পেয়েছিল। কিন্তু আমাদের বিজেপি সরকারের দশ বছরে, অরুণাচল এক লক্ষ কোটি টাকারও বেশি পেয়েছে। সোজা কথায়, বিজেপি সরকার অরুণাচলকে ১৬ গুণ বেশি অর্থ দিয়েছে। এবং এটি কেবল করের অংশ। এর পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় সরকার এখানে বিভিন্ন প্রকল্পে বিনিয়োগ করছে এবং বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। সেই কারণেই আজ আপনারা  অরুণাচল প্রদেশ জুড়ে এত ব্যাপক এবং দ্রুত উন্নয়ন প্রত্যক্ষ করছেন।   


বন্ধুগণ,

যখন সঠিক উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করা হয়, সৎ ভাবে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়, তখন সেই কাজের ফলাফল নজরে আসে।  আজ,  উত্তর-পূর্বাঞ্চল দেশের উন্নয়নের চালিকাশক্তি হয়ে উঠছে। এখানে সুশাসনের উপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। আমাদের সরকারের কাছে, নাগরিকদের কল্যাণ সবথেকে  গুরুত্বপূর্ণ । আপনার জীবনযাত্রাকে সহজ করার জন্য, আমরা নানা ধরণের কাজ করছি। কোথাও যাওয়া আসায়  যাতে আপনাদের কোনও অসুবিধা না হয়, তা নিশ্চিত করার জন্য, যাতায়াতে সুবিধা করা হয়েছে। স্বাস্থ্য পরিষেবার প্রসার ঘটানোর  জন্য, চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতি ঘটানো হয়েছে । শিশুদের পড়াশোনায় যাতে কোনও সমস্যা না হয় তা নিশ্চিত করার জন্য, শিক্ষার প্রসার ঘটানো হয়েছে। আপনার ব্যবসা-বাণিজ্যর উদ্যোগকে সহায়তা করার জন্য, নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এই সমস্ত বিষয়গুলি বিবেচনা করে , বিজেপির ডাবল-ইঞ্জিন সরকার অক্লান্ত পরিশ্রম করছে। যেসব অঞ্চলে আগে যাওয়া আসা করা অসম্ভব বলে মনে হত, সেখানে আজ  মহাসড়ক তৈরি হচ্ছে। সেলা টানেলের মতো পরিকাঠামো প্রকল্পর কথা এক সময়ে ভাবাও যেত না, কিন্তু আজ সেলা টানেল অরুণাচলের পরিচয়ের প্রতীক হয়ে উঠেছে।    


 
বন্ধুগণ,
কেন্দ্রীয় সরকার অরুণাচল প্রদেশ সহ উত্তর-পূর্বের প্রত্যন্ত অঞ্চলে হেলিপোর্ট তৈরির জন্য সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তাই উড়ান প্রকল্পের মাধ্যমে এই অঞ্চলগুলিকে যুক্ত করা হয়েছে। হলঙ্গি বিমানবন্দরে নতুন টার্মিনাল ভবনও কাজ করছে। এখন, এখান থেকে দিল্লিতে সরাসরি বিমান চলাচল শুরু হয়েছে। এর ফলে কেবল নিয়মিত যাত্রী, ছাত্র এবং পর্যটকরাই নয়, কৃষক এবং ক্ষুদ্র শিল্পও উপকৃত হচ্ছে। এখান থেকে দেশের প্রধান প্রধান বাজারে ফল, শাকসবজি এবং অন্যান্য পণ্য পরিবহন এখন অনেক সহজ হয়ে গেছে।  


বন্ধুগণ, 

আমরা সকলেই ২০৪৭ সালের মধ্যে ভারতকে একটি উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে  গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি।  ভারত তখনই বিকশিত হবে যখন দেশের প্রতিটি রাজ্য উন্নত হবে। ভারত তখনই উন্নতি করবে যখন প্রতিটি রাজ্য জাতীয় লক্ষ্য অর্জনে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবে। আমি আনন্দিত যে উত্তর-পূর্বাঞ্চল এই জাতীয় লক্ষ্য অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বিদ্যুৎ ক্ষেত্র এর একটি চমৎকার উদাহরণ। ভারত ২০৩০ সালের মধ্যে অপ্রচলিত উৎস থেকে ৫০০ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করেছে। সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি এবং জলবিদ্যুতের মাধ্যমে এই লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব হবে। অরুণাচল প্রদেশও দেশের সঙ্গে পা মিলিয়ে এগিয়ে চলেছে। আজ উদ্বোধন করা দুটি প্রকল্প বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী রাজ্য হিসেবে অরুণাচলের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে। এই প্রকল্পগুলি রাজ্যের হাজার হাজার যুবকের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করবে এবং এখানে উন্নয়নমূলক কাজের জন্য ব্যয়সাশ্রয়ী মূল্যের বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করবে। কংগ্রেসের সবসময়ই একটা অভ্যাস ছিল। যখনই কোনও জটিল  উন্নয়নমূলক কাজের প্রসঙ্গ আসত, তারা তখন সেই কাজ না করে সরে যেত। এই  কারণে অরুণাচল প্রদেশ সহ উত্তর-পূর্ব ভারত  প্রচণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দুর্গম, পাহাড়ি, অথবা  গভীর বনে থাকা জায়গাগুলি , যেখানে উন্নয়ন ছিল চ্যালেঞ্জ, কংগ্রেস সেগুলোকে "অনগ্রসর" বলে ঘোষণা করে এবং সেই জায়গার কথা ভুলে যেত। এর মধ্যে ছিল উত্তর-পূর্বের আদিবাসী অঞ্চল এবং জেলাগুলি। সীমান্তবর্তী গ্রামগুলিকে কংগ্রেস "দেশের শেষ গ্রাম" বলে অবহেলা করত এবং সেখানে উন্নয়নের  দায়িত্ব থেকে সরে গিয়েছিল। এইভাবে কংগ্রেস তাদের ব্যর্থতা লুকানোর চেষ্টা  করেছিল। ফলস্বরূপ, আদিবাসী এবং সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে মানুষ ক্রমশ অন্যত্র সরে যাচ্ছিল।     
 


বন্ধুগণ,

আমাদের বিজেপি সরকার এই পদ্ধতির পরিবর্তন করেছে। কংগ্রেস যেগুলিকে "অনগ্রসর জেলা" বলত, আমরা সেগুলিকে "উচ্চাকাঙ্ক্ষী জেলা" বলি এবং সেই অঞ্চলের উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিয়েছি। সীমান্তবর্তী গ্রামগুলিকে কংগ্রেস "শেষ গ্রাম" বলে অভিহিত করেছিল, আমরা সেগুলিকে দেশের প্রথম গ্রাম হিসাবে গুরুত্ব দিতে শুরু করেছি। এর ফলাফল আজ সবার সামনে স্পষ্ট। সীমান্তবর্তী গ্রামগুলি উন্নয়নের নতুন জোয়ারের সাক্ষী থাকছে। প্রাণবন্ত গ্রাম কর্মসূচির সাফল্য মানুষের জীবনযাত্রাকে সহজ করে তুলেছে। অরুণাচল প্রদেশেও, ৪৫০ টিরও বেশি সীমান্তবর্তী গ্রামে দ্রুত উন্নয়ন হচ্ছে। সড়ক, বিদ্যুৎ এবং ইন্টারনেটের সুবিধা এই অঞ্চলগুলিতে পৌঁছেছে। আগে মানুষ সীমান্তবর্তী গ্রাম থেকে শহরে চলে যেত, কিন্তু এখন এই সীমান্তবর্তী গ্রামগুলি পর্যটনের নতুন কেন্দ্র হয়ে উঠছে।    
 

বন্ধুগণ,  

অরুণাচলের পর্যটনের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। নতুন নতুন অঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হওয়ার ফলে এখানে পর্যটন ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমি আনন্দিত যে গত দশকে অরুণাচল ভ্রমণকারী পর্যটকের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। কিন্তু অরুণাচলের সম্ভাবনা প্রকৃতি এবং সংস্কৃতি-ভিত্তিক পর্যটনের থেকেও  অনেক বেশি। আজ, বিশ্বজুড়ে সম্মেলন এবং কনসার্ট পর্যটনের প্রবণতা ক্রমশ বাড়ছে। এই আবহে তাওয়াংয়ে নির্মিত আধুনিক কনভেনশন সেন্টার অরুণাচলের পর্যটন ক্ষেত্রে একটি নতুন মাত্রা যোগ করবে। সরকারের প্রাণবন্ত গ্রাম কর্মসূচিও আমাদের সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থিত গ্রামগুলির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ হিসেবে প্রমাণিত হচ্ছে এবং এই প্রয়াস অরুণাচলকে যথেষ্ট উপকৃত করবে।   
  
বন্ধুগণ,
আজ, অরুণাচল প্রদেশ জুড়ে দ্রুত উন্নয়ন হচ্ছে। কারণ দিল্লি এবং ইটানগর দুই জায়গাতেই বিজেপির সরকার রয়েছে। উন্নয়নের জন্য  কেন্দ্র এবং রাজ্যের সম্মিলিত শক্তি কাজ করছে। যেমন ধরুন, এখানে একটি ক্যান্সার ইনস্টিটিউটের কাজ শুরু হয়েছে, মেডিকেল কলেজ স্থাপন করা হচ্ছে এবং এখানকার অনেক মানুষ আয়ুষ্মান প্রকল্পের আওতায় বিনামূল্যে চিকিৎসা পাচ্ছেন। কেন্দ্র এবং রাজ্যের ডাবল-ইঞ্জিন সরকারের কারণেই এই সবকিছু সম্ভব হয়েছে।   

বন্ধুগণ,

ডাবল ইঞ্জিন সরকারের উদ্যোগের ফলে অরুণাচলের কৃষি ও উদ্যানপালনেও উন্নতি হয়েছে। এখানকার কিউই, কমলা, এলাচ এবং আনারস রাজ্যকে একটি নতুন পরিচয় দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী-কিষাণ সম্মান নিধির তহবিলও এখানকার কৃষকদের জন্য খুবই কার্যকর হিসেবে প্রমাণিত হচ্ছে।   


বন্ধুগণ,

আমাদের মা ও বোনেদের ক্ষমতায়ন আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারগুলির মধ্যে অন্যতম। তিন কোটি ‘লাখপতি দিদি’ তৈরি করা একটি বড় সিদ্ধান্ত এবং এটি মোদীর মিশন। আমি আনন্দিত যে পেমা খান্ডুজি এবং তাঁর সরকার এই কাজের দ্রুত বাস্তবায়ন করছেন। এখানে বিপুল সংখ্যক কর্মজীবী মহিলার কথা বিবেচনা করে  হোস্টেল নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে যা আমাদের মেয়েদের জন্যও অনেক সুবিধাজনক হবে। 

 


বন্ধুগণ,

আজ, আমি এখানে অনেক মা ও বোনদের দেখতে পাচ্ছি। আপনাদের সকলকে আবারও GST সাশ্রয় উৎসবের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। পরবর্তী প্রজন্মের GST সংস্কারগুলি আপনাদের জীবনে সবচেয়ে বেশি ইতিবাচক প্রভাব বিস্তার করবে। এখন থেকে, আপনারা আপনাদের  পরিবারের জন্য প্রতি মাসের বাজেটে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় কিছু টাকা বাঁচাতে পাবেন।  রান্নাঘরের জিনিসপত্র, শিশুদের শিক্ষা উপকরণ,  পোশাক বা  জুতা সবকিছুই এখন আরও সস্তা হয়ে উঠেছে। 

বন্ধুগণ,

২০১৪ সালের আগের দিনগুলোর কথা ভাবুন। সেই সময় কত সমস্যা ছিল।  আকাশছোঁয়া মুদ্রাস্ফীতি , সর্বত্র ব্যাপক কেলেঙ্কারি , এবং তদানীন্তন কংগ্রেস সরকার জনগণের উপর করের বোঝা ক্রমশ বাড়িয়েই চলছিল। সেই সময়ে, কেউ বছরে মাত্র দুই লক্ষ টাকা আয় করলেও তাদের আয়কর দিতে হত। এটি ১১ বছর আগের কথা। দুই লক্ষ টাকার আয়ের উপর কর বসানো হত।  অনেক প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের উপর, কংগ্রেস সরকার ৩০ শতাংশেরও বেশি কর আরোপ করেছিল। এমনকি বাচ্চাদের টফির উপরও প্রচুর কর আরোপ করা হত।   

বন্ধুগণ,  
 
সেই সময়, আমি আপনাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম আপনাদের আয় এবং সঞ্চয় দুইই বৃদ্ধি করার জন্য আমি কাজ করব। বছরের পর বছর ধরে, দেশ অনেক বড় বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। কিন্তু আমরা ধারাবাহিকভাবে আয়কর কমিয়েছি। একবার ভাবুন, ১১ বছর আগে দুই লক্ষ টাকার আয়ের উপর কর ছিল। এ বছর, আমরা ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বার্ষিক আয়কে সম্পূর্ণ করমুক্ত বলে ঘোষণা করেছি। আজ থেকে, জিএসটির  মাত্র দুটি হার কার্যকর হয়েছে ─  ৫ শতাংশ এবং ১৮ শতাংশ। অনেক জিনিসপত্র সম্পূর্ণ করমুক্ত করা হয়েছে, এবং বেশ কিছু জিনিসপত্রের উপর কর উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো হয়েছে। আপনি নতুন বাড়ি তৈরি করতে চান, স্কুটার বা বাইক কিনতে চান, বাইরে খেতে যেতে চান, অথবা বেড়াতে চান, সবকিছুই এখন আরও সস্তা হয়েছে। এই জিএসটি সাশ্রয় উৎসব আপনাদের জন্য সত্যিই স্মরণীয় হতে চলেছে।   

বন্ধুগণ,  
   
"নমস্কার" বলার আগেও "জয় হিন্দ" বলার এই বিশেষ অভ্যাসের জন্য আমি অরুণাচল প্রদেশের প্রশংসা করি। আপনারা নিজেদের আগে দেশকে অগ্রাধিকার দেন। আজ, যখন আমরা সবাই মিলে 'বিকশিত ভারত'  বা উন্নত ভারত গড়ে তোলার জন্য কাজ করছি, তখন দেশ আমাদের কাছ থেকে একটি বিশেষ জিনিস প্রত্যাশা করে। সেই প্রত্যাশা হল 'আত্মনির্ভরতা' । ভারত তখনই উন্নত হবে যখন সে স্বনির্ভর হবে।  ভারতের আত্মনির্ভরতার জন্য, স্বদেশী পণ্য ব্যবহারের মন্ত্র অপরিহার্য। সময়ের এবং রাষ্ট্রের  দাবি হল, আমরা স্বদেশী পন্য ব্যবহার করব:  দেশে যা তৈরি হয় শুধু সেগুলিই  কিনব,  দেশে যা তৈরি হয় শুধু সেগুলিই  বিক্রি করব, এবং গর্বের সাথে বলব - এটি স্বদেশী পণ্য। আপনারাও কি আমার সঙ্গে এটা বলবেন? যখন আমি বলব, "গর্বের সঙ্গে বলুন," তখন আপনারা বলবেন, "এটি স্বদেশী।" গর্বের সাথে বলুন - এটি স্বদেশী! গর্বের সাথে বলুন –এটি স্বদেশী! গর্বের সঙ্গে বলো - এটি স্বদেশী!  এই মন্ত্র অনুসরণ করলেই দেশের উন্নয়ন হবে এবং অরুণাচল প্রদেশ ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নও ত্বরান্বিত হবে। আবারও,  এই উন্নয়ন প্রকল্পগুলির জন্য আপনাদের সকলকে আমি আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। আজ শুধু নবরাত্রির শুভ উৎসব নয়, সাশ্রয়ের উৎসবও। আর যেহেতু আপনারা সকলেই এই মহা উৎসবের অংশ, তাই আমার একটা অনুরোধ, দয়া করে আপনাদের মোবাইল ফোন বের করুন, টর্চলাইট জ্বালিয়ে সেগুলো উঁচুতে তুলুন। চারদিকে তাকান: এটি সাশ্রয় উৎসবের দৃশ্য; এটিই এর শক্তি। নবরাত্রির এই প্রথম দিনে, সর্বত্র আলো এবং অরুণাচলের আলো সমগ্র দেশে ছড়িয়ে পড়ুক। আপনার চারপাশে দেখুন।  উজ্জ্বল তারার মতো আলো জ্বলছে। আপনাদের সকলকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই। অনেক অনেক ধন্যবাদ!    

(প্রধানমন্ত্রীর মূল ভাষণটি হিন্দিতে ছিল) 

 

SC/CB


(Release ID: 2170073)