প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
SVAMITVA যোজনায় সুবিধাপ্রাপকদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর মতবিনিময় এবং সম্পত্তি কার্ড বিতরণের সময় প্রদত্ত ভাষণের বাংলা অনুবাদ
Posted On:
18 JAN 2025 6:04PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫
ঘোষক – এই গৌরবময় মুহূর্তে চারটি রাজ্য ও একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের সুবিধাপ্রাপক সম্পত্তি কার্ডধারীদের সঙ্গে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আলোচনা শুরু করার জন্য প্রথমেই মধ্যপ্রদেশের সীহোর জেলার মনোহর মেওয়াদাকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।
মনোহর মেওয়াদা – নমস্কার স্যার।
প্রধানমন্ত্রী – নমস্কার মনোহরজি।
মনোহর মেওয়াদা – স্যার আমার নাম মনোহর মেওয়াদা।
প্রধানমন্ত্রী – ভালো আছেন তো?
মনোহর মেওয়াদা – ভালো আছি স্যার।
প্রধানমন্ত্রী – আচ্ছা, আপনার পরিবারে কারা আছেন?
মনোহর মেওয়াদা – আমার পরিবারে আমি, আমার স্ত্রী ও দুই ছেলে আছে। আমার বড় ছেলের বিয়ে হয়ে গেছে, তাই আমার পুত্রবধূও আছে এবং আমার নাতিও আছে।
প্রধানমন্ত্রী – মনোহরজি, আমি জেনেছি আপনি দলিলের ওপর ঋণ নিয়েছেন। এই ঋণ আপনাকে কতটা সাহায্য করেছে? এতে আপনার জীবনে কী পরিবর্তন এসেছে? দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ আপনার কথা শুনছেন, তাই মনোহরজি, আপনার অভিজ্ঞতা আমাদের বলুন।
মনোহর মেওয়াদা – স্যার আমি SVAMITVA যোজনার অধীনে জমির পাট্টা পেয়েছি । এজন্য আমি খুশি হয়েছি, আমার পরিবারও খুশি হয়েছে। আপনাকে প্রণাম জানাচ্ছি, ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী – আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ। মনোহরজি, আমি বিস্তারিতভাবে জানতে চাই, অনুগ্রহ করে বলুন।
মনোহর মেওয়াদা – বিস্তারিতভাবে স্যার, মানে পাট্টা পেয়েছি, সেই পাট্টার ওপর ঋণ নিয়েছি। স্যার, দুগ্ধ খামারের জন্য দশ লাখ টাকার ঋণ নিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী – দশ লাখ।
মনোহর মেওয়াদা – হ্যাঁ স্যার, আমি দশ লাখ টাকার ঋণ নিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী – তাহলে সেটা দিয়ে আপনি কী করলেন?
মনোহর মেওয়াদা – স্যার, আমি একটি দুগ্ধ খামার শুরু করেছি। আমি দুগ্ধ খামারে কাজ করি, আমার ছেলেরাও সেখানে কাজ করে। পাশাপাশি আমি কৃষিকাজও করি এবং দুগ্ধ খামারের দেখাশোনাও করি।
প্রধানমন্ত্রী – আপনার কতগুলো গরু আছে?
মনোহর মেওয়াদা – স্যার, আমার পাঁচটি গরু এবং একটি মহিষ আছে, মোট ছয়টি। এটাই আমার ব্যবসা। এর থেকে আমি অনেক উপকৃত হয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী – অর্থাৎ এখন বাড়ির কাগজপত্র থাকায় ঋণ পেয়েছেন।
মনোহর মেওয়াদা – স্যার, আগে আমার হাতে বাড়ির কাগজপত্র ছিল না, তাই আমার জন্য ঋণ নেওয়া সম্ভব ছিল না। এখন আমার হাতে বাড়ির কাগজ আছে, তাই আজ আমার ঋণ নেওয়ার সুবিধা হয়েছে। যে কোনো ব্যাংকে গেলেই ঋণ পাই।
প্রধানমন্ত্রী – আচ্ছা, এমন তো নয় যে এই ঋণ খরচ হয়ে যাবে আর ছেলে-মেয়েরা ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়বে।
মনোহর মেওয়াদা – না স্যার, ছেলে-মেয়েদের তেমন হবে না। কারণ আমি যে কাজ করছি, আমার ছেলেমেয়েরাও সেই একই কাজ করছে।
প্রধানমন্ত্রী – আপনি তো ভালো উপার্জন করছেন।
মনোহর মেওয়াদা – হ্যাঁ স্যার।
প্রধানমন্ত্রী – আপনি কি ঋণ শোধ করছেন?
মনোহর মেওয়াদা – হ্যাঁ স্যার।
প্রধানমন্ত্রী – অর্থাৎ, আপনি নিয়মিত ঋণ পরিশোধ করছেন।
মনোহর মেওয়াদা – হ্যাঁ স্যার, আমার কিস্তি প্রায় ১৬,০০০ টাকা। আমার মাসিক আয় ৩০,০০০ টাকা, সেখান থেকেই কিস্তি দিই এবং বাকি খরচও চালাই।
প্রধানমন্ত্রী – খুব ভালো মনোহরজি। কেন্দ্রীয় সরকারের এই প্রকল্পের কারণে আপনার জীবনের অসুবিধা কমেছে—এটি আমার কাছে অত্যন্ত সন্তোষজনক। আরও ভালো লাগছে যে ‘SVAMITVA যোজনা’র মাধ্যমে লাখ লাখ পরিবার আয় করছে এবং আপনার মতো পরিবারগুলো উৎসাহ ও সহায়তা পাচ্ছে।
মনোহর মেওয়াদা – হ্যাঁ স্যার।
প্রধানমন্ত্রী – আমাদের সরকার প্রতিটি নাগরিককে সম্মানের সঙ্গে বাঁচার সুযোগ দিতে বদ্ধপরিকর। মানুষের জীবনযাত্রাকে সহজ করার জন্য ‘SVAMITVA যোজনা’ অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। আপনাকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই মনোহরজি। আপনি গ্রামের সবাইকে বলবেন—সকলেরই উচিত নিজেদের কার্ড ব্যবহার করে ঋণ গ্রহণ করা এবং কোনো না কোনো ব্যবসা শুরু করা। এ কথা অবশ্যই সবাইকে জানাবেন। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ মনোহরজি।
মনোহর মেওয়াদা – স্যার, আমার পক্ষ থেকে এবং আমার পরিবারের পক্ষ থেকেও আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। নমস্কার।
প্রধানমন্ত্রী – নমস্কার।
ঘোষক – এবার রাজস্থানের শ্রীগঙ্গানগর জেলার SVAMITVA সম্পত্তি কার্ডধারী শ্রীমতি রচনা জি তাঁর অভিজ্ঞতা শেয়ার করবেন।
রচনা – মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আমার শুভেচ্ছা জানাই।
প্রধানমন্ত্রী – নমস্কার রচনা জি, নমস্কার। রচনা জি, আপনি কী কাজ করেন, আপনার পরিবারে কারা আছেন, আর কীভাবে এই SVAMITVA যোজনার সঙ্গে যুক্ত হলেন—সেটা বলুন।
রচনা – স্যার, আমার পরিবারে আমার স্বামী নরেশ কুমার বিষ্ণই, এক ছেলে এবং এক মেয়ে আছে।
প্রধানমন্ত্রী – আচ্ছা, এই প্রকল্পের বিষয়ে কিছু বলুন।
রচনা – স্যার, আমি এখানে ২০ বছর ধরে বসবাস করছি। আমার একটি ছোট ঘর আছে, কিন্তু তার কোনো নথি আমার হাতে ছিল না। এখন SVAMITVA যোজনার অধীনে এই কার্ডটি পেয়েছি। এর মাধ্যমে আমি ৭ লাখ ৪৫ হাজার টাকার ঋণ নিয়েছি। সেই টাকায় আমি একটি দোকান খুলেছি, ব্যবসা করছি এবং আমার ছেলে-মেয়ের উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন পূরণ করছি।
প্রধানমন্ত্রী – অর্থাৎ, কার্ড পাওয়ার আগে আপনার হাতে সম্পত্তির কোনো নথি ছিল না, একেবারেই কিছু ছিল না।
রচনা – না স্যার, আমার কিছুই ছিল না।
প্রধানমন্ত্রী – তখন নিশ্চয়ই অনেক সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছে।
রচনা – হ্যাঁ স্যার, ভীষণ দুশ্চিন্তায় ছিলাম। এখন SVAMITVA যোজনার কার্ড পাওয়ার পর আমি এবং আমার পরিবার খুব খুশি।
প্রধানমন্ত্রী – আচ্ছা, কখনো কি আপনার মনে হয়েছে—যখন ২০ বছর কেটে গিয়েছিল আর আপনার হাতে কিছুই ছিল না—তখন নিশ্চয়ই আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন? কখনো এমন অনুভব হয়েছিল?
রচনা – স্যার, আমি কোনোদিন ভাবিনি যে এমন কিছু হবে। আমি ২০ বছর ধরে একই ঘরে বসবাস করছি স্যার।
প্রধানমন্ত্রী – আচ্ছা, SVAMITVA যোজনার থেকে আর কী কী সুবিধা পেয়েছেন বলুন তো।
রচনা – হ্যাঁ স্যার, বলছি। এর মাধ্যমে আমি এসবিএম প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছি। এছাড়া স্যার, আমি ৮ লাখ টাকার মুদ্রা ঋণও নিয়েছি। আমরা আয়ুষ্মান কার্ডও পেয়েছি স্যার।
প্রধানমন্ত্রী – ব্যবসা ভালো চলছে তো?
রচনা – একেবারেই ভালো চলছে স্যার। আমি মনরেগাতেও কাজ করি।
প্রধানমন্ত্রী – অর্থাৎ, আপনি মোট ১৫ লাখ টাকার ঋণ নিয়েছেন, একটি দোকান চালাচ্ছেন, মনরেগাতেও কাজ করছেন, আর আপনার স্বামীও নিশ্চয় কিছু করেন।
রচনা – স্যার, উনি ড্রাইভার।
প্রধানমন্ত্রী – আচ্ছা, আমি জানতে পেরেছি যে আপনার মেয়ে বিদেশে পড়াশোনা করতে চায়। এর কৃতিত্ব কি আপনি SVAMITVA যোজনাকেই দেবেন?
রচনা – স্যার, আমি তাকে বিদেশে পাঠাতে চাই। সেও যেতে চায়।
প্রধানমন্ত্রী – দয়া করে বিস্তারিত বলুন। কোন দেশে পাঠাতে চাইছেন?
রচনা – অস্ট্রেলিয়া।
প্রধানমন্ত্রী – অস্ট্রেলিয়া। অর্থাৎ, SVAMITVA যোজনার জন্যই এটা সম্ভব হচ্ছে।
রচনা – হ্যাঁ স্যার।
প্রধানমন্ত্রী – ভালো রচনা জি, আমি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করছি যাতে আপনার এবং আপনার কন্যার এই স্বপ্ন খুব শীঘ্রই পূর্ণ হয়। SVAMITVA যোজনা শুধু প্রয়োজনীয়তা পূরণ করছে না, বরং আমাদের নাগরিকদের আকাঙ্ক্ষাকেও পূরণ করছে—এটা অত্যন্ত সন্তোষজনক বিষয়। প্রকৃত অর্থে, যে কোনো প্রকল্পের তাৎপর্য হলো মানুষের জীবনযাত্রাকে উন্নত করা। রচনা জি, আপনি মাঝখানে কিছু বলতে চাইছিলেন।
রচনা – স্যার, আমি বলতে চাই যে আপনি আমাদের নেতা। আপনি গরিব মানুষের কল্যাণের জন্য যে প্রকল্প শুরু করেছেন, তার জন্য আমি এবং আমার পরিবারের পক্ষ থেকে আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
প্রধানমন্ত্রী – অনেক অনেক ধন্যবাদ। আপনি যে গ্রামে থাকেন, সেখানকার সকল মানুষকেও আমার শুভেচ্ছা জানাবেন। আচ্ছা, এবার দেখি আমাদের সঙ্গে কে যুক্ত হচ্ছেন।
ঘোষক – এবার মহারাষ্ট্রের নাগপুর জেলার সম্পত্তি কার্ডধারী, শ্রী রোশন শম্ভাজী পাটিল আলোচনার জন্য যুক্ত হচ্ছেন।
প্রধানমন্ত্রী – নমস্কার রোশন জি।
রোশন – নমস্কার স্যার।
প্রধানমন্ত্রী – রোশন জি, বলুন।
রোশন – হ্যাঁ স্যার, সাধু এবং মহাপুরুষদের জন্মভূমি মহারাষ্ট্র থেকে এবং দীক্ষার পবিত্র ভূমি নাগপুর থেকে আমি, রোশন পাটিল, আপনাকে প্রণাম জানাচ্ছি স্যার।
প্রধানমন্ত্রী – নমস্কার।
রোশন – নমস্কার স্যার।
প্রধানমন্ত্রী – আপনার ছেলের নাম কী?
রোশন পাটিল – স্যার, আমার ছেলের নাম শরবিল। আজ তার জন্মদিনও।
প্রধানমন্ত্রী – আজ তার জন্মদিন...
রোশন পাটিল – হ্যাঁ স্যার, আজ তার জন্মদিন...
প্রধানমন্ত্রী – তাকে আমি আশীর্বাদ দিলাম।
রোশন পাটিল – আপনার আশীর্বাদের জন্যে সে কৃতজ্ঞ।
প্রধানমন্ত্রী – ঠিক আছে রোশন জি, আপনি কী করেন এবং আপনার পরিবারে কারা আছেন?
রোশন – স্যার, আমি কৃষক, চাষাবাদ করি এবং পাশাপাশি একটি ব্যক্তিগত চাকরিও করি স্যার। আমার পরিবারে মোট ছয়জন সদস্য আছেন – আমার স্ত্রী, আমার মা–বাবা, আমার দুই ভাই এবং আমার ছোট ছেলে স্যার।
প্রধানমন্ত্রী – তাহলে এই SVAMITVA কার্ড, সম্পত্তির দলিল—এসব কিভাবে পেলেন এবং এর থেকে কীভাবে উপকৃত হলেন?
রোশন – স্যার, মালিকানা কার্ড পাওয়ার পরেই এর ওপর ঋণ নিতে পেরেছি। আগে স্যার ঋণ নিতে পারতাম না। আমার একটি বড় বাড়ি আছে, গ্রামে একটি পুরনো বাড়িও আছে। তাই আমার SVAMITVA কার্ড থাকার কারণে ঋণ নিতে পেরেছি স্যার। ব্যাংক থেকে ৯ লাখ টাকার ঋণ নিয়ে সেই টাকার কিছু অংশ দিয়ে একটি বাড়ি তৈরি করেছি এবং আরেক অংশ দিয়ে মাঠে সেচের ব্যবস্থা করেছি। এর ফলে আমার ফসলের উৎপাদন বেড়েছে, আয়ও বেড়েছে। দুই–তিন বছর আগে আমি মাত্র একটি ফসল ফলাতাম, কিন্তু এখন আমি তিনটি ফসল ফলাই এবং আমার আয়ও বেড়েছে, চাষ থেকেও ভালো লাভ পাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী – ঠিক আছে, আপনার হাতে নথিপত্র, কাগজপত্র থাকার পর ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে কোনো সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিলেন কি?
রোশন – হ্যাঁ স্যার, আগে নথিপত্র নিয়ে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতাম। কিন্তু SVAMITVA কার্ড পাওয়ার পর আর কোনো নথির প্রয়োজন হয় না, শুধু SVAMITVA কার্ডই সবার জন্য যথেষ্ট।
প্রধানমন্ত্রী – আপনার আত্মবিশ্বাস আছে।
রোশন – এর জন্য আমি আপনার কাছে অত্যন্ত কৃতজ্ঞ স্যার।
প্রধানমন্ত্রী – মানুষের ব্যাংকের ওপর পূর্ণ আস্থা আছে।
রোশন – হ্যাঁ স্যার, ব্যাংকারদেরও এর ওপর অনেক বিশ্বাস আছে এবং এর মাধ্যমে সহজেই ঋণ পাওয়া যায়।
প্রধানমন্ত্রী – কিন্তু এখন বাড়ি তৈরি করলেন, ঋণ কীভাবে শোধ করবেন?
রোশন – হ্যাঁ স্যার, আমি শাক–সবজির চাষ করি, সেখান থেকে লাভ হয়। আর দু–তিন রকমের শস্য আছে, সেগুলো থেকেও লাভ হয়। সেচের ব্যবস্থা থাকার কারণে অন্য ফসলও ভালো হয় স্যার, তাই আয় বেড়েছে। এই কারণে আমি সহজেই ঋণ শোধ করতে পারব স্যার।
প্রধানমন্ত্রী – ঠিক আছে রোশন জি, কেন্দ্রীয় সরকারের আর কোন কোন প্রকল্প থেকে আপনি উপকৃত হয়েছেন?
রোশন – হ্যাঁ স্যার, আমি কেন্দ্রীয় সরকারের উজ্জ্বলা গ্যাস যোজনার সুবিধা পেয়েছি, পিএম কিষাণ সম্মান নিধি যোজনার সুবিধা পেয়েছি, পিএম ফসল বিমা যোজনার সুবিধাও পেয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী – ঠিক আছে রোশন জি, SVAMITVA যোজনার মাধ্যমে মানুষ এত ধরনের সুবিধা পাচ্ছে, এটা সত্যিই আনন্দের বিষয়। আপনি আর কিছু বলছিলেন।
রোশন – হ্যাঁ স্যার, SVAMITVA যোজনার কারণে মানুষ অনেক সুবিধা পাচ্ছে। আমাদের গ্রামের কিছু মানুষ ঋণ নিয়ে দোকান খুলেছে। আগে তারা কিছুই করতে পারত না—চাষের ভিত্তিতে ঋণ নিতে পারত না, ঘরের ভিত্তিতেও ঋণ নিতে পারত না। কিন্তু SVAMITVA কার্ডের কারণে সবাই সহজে ঋণ পাচ্ছে। এই কারণেই মানুষ ছোট–ছোট ব্যবসা ও চাষাবাদ করতে সক্ষম হয়েছে। ফলে তাদের আয় দ্বিগুণ হয়েছে স্যার এবং তারা সহজেই পরিবার ও সন্তানদের বড় করে তুলছে এবং একটি সুখী জীবন যাপন করছে স্যার।
প্রধানমন্ত্রী – খুব ভালো, রোশন জি। আপনি বললেন যে আপনার গ্রামের অন্যান্য মানুষও এর সুবিধা পাচ্ছেন। আমি চাইব যে গ্রামের সবাই এই ব্যবস্থার সুবিধা নিক। আর আপনিও একটি নতুন বাড়ি তৈরি করেছেন।
রোশন – হ্যাঁ স্যার, এর সমস্ত কৃতিত্ব আপনারই স্যার। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাতে চাই স্যার।
প্রধানমন্ত্রী – খুব ভালো, আপনাদের প্রতিও আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি এবং নাগপুরের মানুষদেরও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
রোশন – ধন্যবাদ স্যার, অসংখ্য ধন্যবাদ।
প্রধানমন্ত্রী – এখন কে আছেন?
ঘোষক – এখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মহোদয় ওড়িশার রায়গড় জেলার সম্পত্তি কার্ডধারী শ্রীমতী গজেন্দ্র সংগীতা জির সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।
সংগীতা – মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আমার প্রণাম।
প্রধানমন্ত্রী – নমস্কার সংগীতা জি।
সংগীতা – নমস্কার।
প্রধানমন্ত্রী – সংগীতা জি, আপনি কী কাজ করেন, বলুন তো।
সংগীতা – সেলাইয়ের কাজ করি।
প্রধানমন্ত্রী – আচ্ছা, আর আপনার পরিবারে কারা আছেন?
সংগীতা – আমাদের পরিবারে চারজন সদস্য। দুটি সন্তান আর আমার স্বামী। আমার মেয়েটি এম.কম–এর ফাইনাল ইয়ারে পড়ছে, ছেলেটি অন্ধ্রপ্রদেশের কাড়াপ্পায় কাজ করছে এবং আমার স্বামীও একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে কাজ করে।
প্রধানমন্ত্রী – খুব ভালো, সংগীতা জি। বাড়ির সম্পত্তির অধিকার পাওয়ার পর, কাগজপত্র হাতে পাওয়ার পর আপনার জীবনে কী পরিবর্তন এসেছে?
সংগীতা – হ্যাঁ স্যার, বড় পরিবর্তন এসেছে। আমরা যে স্থায়ী কাগজপত্র পেয়েছি, তা আমাদের আত্মবিশ্বাস অনেক বাড়িয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী – এখন কাগজপত্র পেয়ে কী করলেন?
সংগীতা – হ্যাঁ, আমরা কাগজপত্র পেয়েছি। আমি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার জন্যও আবেদন করেছি।
প্রধানমন্ত্রী – ব্যাংক থেকে কি ঋণ নিয়েছেন?
সংগীতা – না স্যার, আমি এখনো নিইনি, তবে নেওয়ার কথা ভাবছি।
প্রধানমন্ত্রী – কিন্তু ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন তো, ঋণ নিতে চান?
সংগীতা – হ্যাঁ স্যার, আমি এখন ঋণ নেওয়ার কথা ভাবছি।
প্রধানমন্ত্রী – তাহলে ঋণ নিয়ে কী করবেন?
সংগীতা – ঋণ নিয়ে আমার ব্যবসাটা একটু বাড়াতে চাই, সেলাইয়ের ব্যবসাটা একটু বাড়াতে চাই স্যার।
প্রধানমন্ত্রী – অর্থাৎ আপনি আপনার ব্যবসায় আরো গুরুত্ব দেবেন।
সংগীতা – হ্যাঁ, আর আমার ছেলে–মেয়ের পড়াশোনার জন্যও কাজে লাগতে পারে, যদি কিছু টাকা পাই।
প্রধানমন্ত্রী – খুব ভালো সংগীতা জি। আপনার কাজ এবং আপনার পরিবার দুটোই এগিয়ে নিয়ে যান। এর জন্য আপনাকে শুভেচ্ছা জানাই। ‘SVAMITVA’ যোজনার মাধ্যমে আপনার সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তার অবসান হয়েছে। আপনি বাড়ির কাগজপত্র পেয়েছেন এবং আপনি স্বনির্ভর গোষ্ঠীরও সদস্য। আপনি কিছু বলছিলেন সংগীতা জি…
সংগীতা – হ্যাঁ স্যার, ৬০ বছর হয়ে গেল। আমাদের হাতে কোনো স্থায়ী কাগজপত্র ছিল না স্যার, আমরা SVAMITVA যোজনার মাধ্যমে এটি পেয়েছি। আমি আপনার প্রতি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ স্যার।
প্রধানমন্ত্রী – ঠিক আছে, আপনাদের আশীর্বাদই আমার সবচেয়ে বড় শক্তি। দেখুন, আপনারা স্বনির্ভর গোষ্ঠীতেও কাজ করছেন এবং আমাদের সরকারও মহিলাদের স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে ধারাবাহিকভাবে সহায়তা করছে। আপনি দেখবেন, SVAMITVA যোজনা পুরো গ্রামেই পরিবর্তন এনে দেবে। আচ্ছা, আমাদের জন্য আরও কয়েকজন মানুষ অপেক্ষা করছেন। ভাই, এবার আমরা কার সঙ্গে কথা বলব?
ঘোষক – জম্মু ও কাশ্মীর। এখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জম্মু–কাশ্মীরের সাম্বা জেলার আরেকজন ‘SVAMITVA’ কার্ডধারী শ্রী বীরেন্দ্র কুমারের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।
প্রধানমন্ত্রী – নমস্কার বীরেন্দ্র জি।
বীরেন্দ্র – হ্যাঁ, নমস্কার।
প্রধানমন্ত্রী – বীরেন্দ্র জি, আপনার সম্পর্কে কিছু বলুন।
বীরেন্দ্র – প্রধানমন্ত্রী জি, আমি একজন কৃষক এবং আমি ও আমার পরিবার খুবই খুশি যে আমি সম্পত্তির কার্ডটি পেয়েছি। আমরা বহু প্রজন্ম ধরে এই ভূমিতে বসবাস করছি এবং এখন নথিপত্র হাতে পাওয়ার পর আমরা গর্ব অনুভব করছি। প্রধানমন্ত্রী জি, এজন্য আমি আপনার প্রতি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ।
প্রধানমন্ত্রী – ঠিক আছে, আগে নথিপত্র ছিল না এবং অন্য গ্রামের মানুষদেরও হয়তো ছিল না।
বীরেন্দ্র – স্যার, আমাদের গ্রামের কারও হাতেই কোনো নথিপত্র ছিল না। একশ বছরেরও বেশি সময় ধরে বহু প্রজন্ম এই গ্রামে বাস করলেও কোনো কাগজপত্র বা নথি ছিল না। এখন SVAMITVA যোজনার অধীনে নথিপত্র পাওয়ার পর গ্রামের সবাই সুখী বোধ করছে।
প্রধানমন্ত্রী – সম্পত্তি কার্ড পাওয়া সত্যিই ভালো বিষয়।
বীরেন্দ্র – আমি একটি সম্পত্তি কার্ড পেয়েছি, যার কারণে আমার জমি নিয়ে যে বিবাদ চলছিল, সেটি এখন নিষ্পত্তি হবে। এই সম্পত্তি কার্ডের সাহায্যে আমি আমার জমি বন্ধক রেখে ব্যাংক থেকে ঋণ নেব এবং আমার বাড়ি মেরামত করব, পাশাপাশি পরিবারের আর্থিক অবস্থাও শক্তিশালী করব।
প্রধানমন্ত্রী – খুব ভালো। আপনার গ্রামের অন্যরাও কি SVAMITVA যোজনার মাধ্যমে উপকৃত হয়েছে? তাদের মধ্যেও কি পরিবর্তন এসেছে?
বীরেন্দ্র – হ্যাঁ স্যার, নিশ্চয়ই পরিবর্তন এসেছে। SVAMITVA যোজনার অধীনে আমরা যে সম্পত্তির কার্ড পেয়েছি, তাতে প্রতিটি গ্রামবাসীর মালিকানার অধিকার স্পষ্টভাবে নির্ধারণ হয়েছে। জমি ও সম্পত্তি নিয়ে যত ধরনের বিরোধ ছিল, সেগুলোর অনেকটাই মিটে গেছে। ফলে গ্রামবাসীরাও এখন নিজেদের জমি ও সম্পত্তি ব্যাংকে বন্ধক রেখে ঋণ নিতে পারছেন এবং আরও নানা ধরনের সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন। তাই গ্রামের পক্ষ থেকে আমি আপনাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী – বীরেন্দ্র জি, আপনার সঙ্গে কথা বলে ভালো লাগল এবং আমি আনন্দিত। আর আমার জন্য সবচেয়ে সুখের কথা হলো যে আপনি SVAMITVA যোজনার অধীনে প্রাপ্ত কার্ডটিকে শুধু বাড়ির কাগজ হিসেবে দেখছেন না, বরং এটি আপনার উন্নতির পথও নিশ্চিত করেছে। আপনাকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই। শীতকাল চলছে, তাই সব জম্মু–কাশ্মীরবাসী নিজেদের স্বাস্থ্যের যত্ন নিন। আপনাদের অনেক অনেক অভিনন্দন।
বীরেন্দ্র – ধন্যবাদ স্যার।
ঘোষক – এখন উপস্থিত সকলকে সম্বোধন করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জিকে বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী – নমস্কার!
আজ দেশের গ্রামীণ অর্থনীতির জন্য এক ঐতিহাসিক দিন। বহু রাজ্যের মাননীয় রাজ্যপালরা এই অনুষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। ওডিশা, ছত্তীশগড়, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র ও গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রীরাও আমাদের সঙ্গে সংযুক্ত আছেন। জম্মু–কাশ্মীরের উপ–রাজ্যপাল, লাদাখের উপ–রাজ্যপালও আমাদের সঙ্গে আছেন।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার আমার সহকর্মীরা দেশের নানা প্রান্তে, নানা অনুষ্ঠানে উপস্থিত আছেন। রাজ্য সরকারের মন্ত্রীরা, সাংসদ ও বিধায়কবৃন্দ এবং অন্যান্য জন–প্রতিনিধিরাও এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত আছেন।
হাজার হাজার গ্রাম–পঞ্চায়েতের সঙ্গে যুক্ত সব সহকর্মী, SVAMITVA যোজনার লাখ লাখ সুবিধাপ্রাপক—এই অনুষ্ঠান সত্যিই অত্যন্ত বৃহৎ ও ঐতিহাসিক। আপনারা সবাই এতে উৎসাহের সঙ্গে যোগদান করেছেন। আমি আপনাদের সবাইকে অভিনন্দন জানাই।
বন্ধুগণ,
গ্রামে বসবাসকারী মানুষদের তাদের ঘরের আইনি প্রমাণ দেওয়ার জন্য পাঁচ বছর আগে SVAMITVA যোজনা শুরু করা হয়েছিল। কোথাও একে বলা হয় ঘরৌনি, কোথাও রাইটস রেকর্ড, কোথাও প্রপার্টি কার্ড, কোথাও মালমাট্টা পত্র, আবার কোথাও রেসিডেনশিয়াল ল্যান্ড লিজ— নাম আলাদা হলেও, এগুলো সবই মালিকানার প্রমাণপত্র। গত ৫ বছরে প্রায় ১.৫ কোটি মানুষকে এই SVAMITVA কার্ড দেওয়া হয়েছে। আজকের এই কর্মসূচিতে আরও ৬৫ লক্ষাধিক পরিবার এই SVAMITVA কার্ড পেয়েছে। অর্থাৎ, SVAMITVA যোজনার আওতায় প্রায় ২.২৫ কোটি গ্রামবাসী তাদের ঘরের স্থায়ী আইনি নথি পেয়েছেন। সকলকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাই। আর আজকের এই কর্মসূচির মাধ্যমে যারা সরকারি ভূমিসংক্রান্ত নথি পেয়েছেন, কিভাবে তার সুবিধা নিতে হবে, তা নিশ্চয়ই আজকের আলোচনায় স্পষ্ট হয়েছে।
বন্ধুগণ,
একবিংশ শতাব্দীর পৃথিবীতে জলবায়ু পরিবর্তন, জল সঙ্কট, স্বাস্থ্য সঙ্কট, মহামারীর মতো একাধিক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। কিন্তু বিশ্ব আজ আরও এক বড় প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি— সেটি হলো সম্পত্তির অধিকার, অর্থাৎ সম্পত্তির অনুমোদিত নথি থাকার প্রশ্ন। বহু বছর আগে জাতিসংঘ বিশ্বব্যাপী বহু দেশে ভূমি ও সম্পত্তি নিয়ে একটি সমীক্ষা চালিয়েছিল। তাতে প্রকাশ পায়, বিশ্বের বহু মানুষের হাতে তাদের সম্পত্তির উপযুক্ত আইনি কাগজপত্র নেই। জাতিসংঘ স্পষ্টভাবে বলেছিল, দারিদ্র্য কমাতে হলে মানুষের জন্য সম্পত্তির অধিকার নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। বিশ্বের এক খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদ এই সম্পত্তি-অধিকার নিয়ে বিস্তৃত একটি গ্রন্থ লিখেছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, গ্রামে মানুষের যে সামান্য সম্পত্তি আছে, তা কার্যত মৃত সম্পত্তি— কারণ এর কোনো লেনদেন করা যায় না, এর মাধ্যমে গ্রামের গরিব মানুষের আয় বৃদ্ধি সম্ভব হয় না।
বন্ধুগণ,
এই আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধকতা থেকে ভারতও মুক্ত ছিল না। আমাদের অবস্থাও প্রায় একই রকম ছিল। আপনারা জানেন, ভারতের গ্রামীণ মানুষের কাছে লাখ লাখ কোটি টাকার সম্পত্তি থাকলেও, তার কোনো বাজারমূল্য ছিল না। কারণ মানুষের হাতে ঘরের আইনি কাগজপত্র ছিল না। এর ফলে ঘরের মালিকানা নিয়ে বিবাদ হতো, শক্তিশালী মানুষ অন্যের ঘর দখল করত, আর ব্যাংকও আইনি প্রমাণ ছাড়া সেই সম্পত্তির বিপরীতে ঋণ দিত না। এভাবে দশকের পর দশক ধরে চলছিল। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, পূর্ববর্তী সরকারগুলো এ নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। তাই ২০১৪ সালে সরকার গঠনের পর আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম এই সমস্যার সমাধান করব। আমাদের নীতি হলো— সবাইয়ের উন্নয়ন, সবার বিশ্বাস। সেই কারণেই আমরা SVAMITVA যোজনা শুরু করি। সিদ্ধান্ত হয়, ড্রোনের সাহায্যে দেশের প্রতিটি গ্রামে ভূমি জরিপ করা হবে এবং গ্রামবাসীদের আবাসিক সম্পত্তির কাগজপত্র দেওয়া হবে। আজ আমরা এই যোজনার সুফল দেখছি। সন্তুষ্টির বিষয়, অন্তত আমরা গ্রামের দরিদ্র মানুষের জন্য কিছু করতে পেরেছি।
ভাই ও বোনেরা,
আমাদের দেশে প্রায় ৬ লক্ষ গ্রাম রয়েছে। এর অর্ধেকেরও বেশি গ্রামে ইতিমধ্যে ড্রোন ব্যবহার করে জরিপ সম্পন্ন হয়েছে। আইনি প্রমাণ পাওয়ার পর লাখ লাখ মানুষ ঘর-দুয়ার ও সম্পত্তির ভিত্তিতে ব্যাংক থেকে ঋণ নিচ্ছেন। সেই টাকায় তারা গ্রামের ভেতরে ছোট ব্যবসা শুরু করছেন। বহু ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক পরিবারও এর সুবিধা পাচ্ছে। তাদের জন্য এই সম্পত্তি কার্ড একটি বড় আর্থিক সুরক্ষা। অতীতে অবৈধ দখল ও দীর্ঘদিন ধরে চলা মামলায় আমাদের দলিত, পিছিয়ে পড়া ও আদিবাসী পরিবারগুলো সবচেয়ে বেশি ভুগেছে। এখন আইনি প্রমাণ হাতে পাওয়ার পর তারা সেই সঙ্কট থেকে মুক্তি পাচ্ছে। অনুমান করা হচ্ছে, প্রতিটি গ্রামে সম্পত্তি কার্ড তৈরি হলে এক লাখ কোটিরও বেশি মূল্যের অর্থনৈতিক কার্যক্রমের রাস্তা খুলবে। এটি ভারতের অর্থনীতিতে বিপুল মূলধন যোগ করবে।
বন্ধুগণ,
আজ আমাদের সরকার আন্তরিকভাবে গ্রাম স্বরাজ বাস্তবায়নে কাজ করছে। স্বত্ব যোজনার পাশাপাশি গ্রামোন্নয়ন পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নও দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে। আজ আমাদের হাতে স্পষ্ট মানচিত্র আছে, কোথায় জনবসতি, কোথায় কৃষিজমি— তা সহজেই বোঝা যাচ্ছে। ফলে উন্নয়নমূলক পরিকল্পনা আরও নিখুঁত হবে। এতদিন ভুল পরিকল্পনার কারণে যে অপচয় ও বাধা তৈরি হতো, তা আর হবে না। গ্রাম পঞ্চায়তের অধীনে কোন জমি পড়ে, কোথায় চর, কোথায় রাস্তা— এসব নিয়ে যে বিবাদ হতো, তা আর হবে না। সম্পত্তির অধিকার নিশ্চিত হওয়ার ফলে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলোও আর্থিকভাবে শক্তিশালী হবে। পাশাপাশি, অগ্নিকাণ্ড, বন্যা, ভূমিধ্বসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায়ও সম্পত্তি কার্ড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে, ক্ষতিপূরণের দাবি করাও সহজ হবে।
বন্ধুগণ,
আমরা জানি, কৃষিজমি নিয়ে অসংখ্য বিবাদ হয়। ভূমির কাগজপত্র পেতে মানুষকে বারবার দৌড়াতে হয়, যার ফলে দুর্নীতিও বাড়ে। এই সমস্যার সমাধানে জমির নথি ডিজিটাল করা হয়েছে। আজ SVAMITVA যোজনা এবং ভূ-আধার গ্রামীণ উন্নয়নের ভিত্তি হয়ে উঠছে। এর মাধ্যমে জমির একটি অনন্য পরিচয় তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যেই প্রায় ২৩ কোটি ভূমি আধার নম্বর জারি করা হয়েছে। ফলে সহজেই বোঝা যাচ্ছে কোন অংশ কার নামে নিবন্ধিত। গত ৭–৮ বছরে প্রায় ৯৮% ভূমি রেকর্ড ডিজিটাল হয়েছে, আর বেশিরভাগ জমির মানচিত্র এখন ডিজিটালভাবে উপলব্ধ।
বন্ধুগণ,
মহাত্মা গান্ধী একবার বলেছিলেন – “ভারত বসবাস করে তার গ্রামে, ভারতের আত্মা নিহিত আছে গ্রামে।” শ্রদ্ধেয় বাপুজীর সেই ভাবনাকে গত এক দশকে সত্যিকার অর্থে বাস্তবে রূপ দেওয়া হয়েছে।
গত ১০ বছরে ২.৫ কোটিরও বেশি পরিবারকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে, যার অধিকাংশই গ্রামের পরিবার। এই সময়ে ১০ কোটিরও বেশি পরিবারে শৌচাগারের ব্যবস্থা করা হয়েছে, যার বেশিরভাগই গ্রামের মানুষ। উজ্জ্বলা গ্যাস সংযোগ পাওয়া ১০ কোটি বোনেদের মধ্যেও বেশিরভাগই গ্রামে বসবাস করেন। গত পাঁচ বছরে নলকূপের জল সরবরাহ পৌঁছেছে ১২ কোটিরও বেশি পরিবারে, এদের বেশিরভাগই গ্রামের। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা ৫০ কোটিরও বেশি মানুষের মধ্যেও অধিকাংশ গ্রামীণ জনগণ।
গত এক দশকে স্বাস্থ্যসেবার জন্য ১.৫ লক্ষেরও বেশি আয়ুষ্মান আরোগ্য মন্দির গড়ে তোলা হয়েছে, যার বেশিরভাগই গ্রামে। স্বাধীনতার পর এত বছর ধরে কোটি কোটি গ্রামীণ মানুষ এ ধরনের মৌলিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিলেন। আমাদের দলিত, পিছিয়ে পড়া এবং আদিবাসী পরিবারের উপরই সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছিল। আজ সেই পরিবারগুলোই এই সুবিধাগুলোর সর্বাধিক উপকারভোগী।
বন্ধুগণ,
গ্রামে উন্নত সড়ক নিশ্চিত করার জন্যও গত দশকে অভূতপূর্ব প্রচেষ্টা নেওয়া হয়েছে। ২০০০ সালে, অটল বিহারী বাজপেয়ীজি প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা চালু হয়। তখন থেকে আজ পর্যন্ত প্রায় ৮.২৫ লক্ষ কিলোমিটার গ্রামীণ রাস্তা নির্মিত হয়েছে। এর মধ্যে গত ১০ বছরেই আমরা প্রায় ৪ লক্ষ কিলোমিটার রাস্তা তৈরি করেছি, অর্থাৎ প্রায় অর্ধেকটাই গত দশকে সম্পন্ন হয়েছে। আজ আমরা সীমান্তবর্তী দুর্গম গ্রামগুলির সাথে যোগাযোগ উন্নত করার জন্য ভাইব্রান্ট ভিলেজ প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন করছি।
বন্ধুগণ,
শুধু রাস্তা নয়, গ্রামে ইন্টারনেট সুবিধা দেওয়াকেও আমরা অগ্রাধিকার দিয়েছি। ২০১৪ সালের আগে দেশের ১০০টিরও কম পঞ্চায়েত ব্রডব্যান্ড ফাইবারের সাথে যুক্ত ছিল। গত ১০ বছরে আমরা ২ লক্ষেরও বেশি পঞ্চায়েতকে ব্রডব্যান্ড ফাইবার সংযোগ দিয়েছি। ২০১৪ সালের আগে দেশের গ্রামাঞ্চলে এক লক্ষেরও কম কমন সার্ভিস সেন্টার (CSC) ছিল। গত ১০ বছরে আমাদের সরকার ৫ লক্ষেরও বেশি নতুন কমন সার্ভিস সেন্টার তৈরি করেছে। এগুলো শুধুই সংখ্যা নয়—এই সংখ্যাগুলো প্রমাণ করে সুবিধা গ্রামে পৌঁছেছে, আধুনিকতা সেখানে এসেছে। আগে যে সুযোগ-সুবিধা মানুষ শুধু শহরে দেখত, এখন সেগুলো গ্রামেও পাওয়া যাচ্ছে। এর ফলে শুধু গ্রামের সুযোগ-সুবিধা নয়, তার অর্থনৈতিক শক্তিও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বন্ধুগণ,
২০২৫ সালটিও শুরু হয়েছে গ্রামের ও কৃষকের জন্য বড় বড় সিদ্ধান্তের মাধ্যমে। সরকার প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনা চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর অধীনে এতদিনে কৃষকেরা প্রায় ১.৭৫ লক্ষ কোটি টাকার দাবি পূরণ পেয়েছেন। ডিএপি সারের দাম বিশ্ববাজারে বহুগুণ বেড়েছে। তবুও কৃষক যেন সাশ্রয়ী দামে সার পান, তার জন্য সরকার আবারও হাজার হাজার কোটি টাকার ভর্তুকির ব্যবস্থা করেছে। গত এক দশকে কৃষকদের জন্য সারের ভর্তুকিতে প্রায় ১২ লক্ষ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে—যা ২০১৪ সালের আগের দশকের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। প্রধানমন্ত্রী কিষান সম্মান নিধির আওতায় এতদিনে প্রায় ৩.৫ লক্ষ কোটি টাকা সরাসরি কৃষকের অ্যাকাউন্টে জমা হয়েছে। এটি কৃষক কল্যাণে কেন্দ্রীয় সরকারের অঙ্গীকারকে সুস্পষ্ট করে।
বন্ধুগণ,
একটি উন্নত ভারত গঠনে নারী শক্তির বিশাল ভূমিকা রয়েছে। তাই গত এক দশকে আমরা প্রতিটি বড় প্রকল্পের কেন্দ্রবিন্দুতে মা-বোনদের ক্ষমতায়নকে স্থান দিয়েছি। ব্যাংক সখী ও বিমা সখীর মতো প্রকল্প গ্রামীণ মহিলাদের নতুন সুযোগ দিয়েছে। লাখপতি দিদি যোজনা দেশের ১.২৫ কোটিরও বেশি মহিলাকে "লাখপতি দিদি"তে পরিণত করেছে। SVAMITVA যোজনা মহিলাদের সম্পত্তির অধিকারকে আরও শক্তিশালী করেছে। বহু রাজ্যে সম্পত্তির নথিতে স্বামীর পাশাপাশি স্ত্রীর নামও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কোথাও প্রথমে স্ত্রীর নাম, কোথাও দ্বিতীয়—কিন্তু দুজনের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়েছে। এমনকি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় দরিদ্রদের দেওয়া ঘরের বেশিরভাগই মহিলাদের নামে নিবন্ধিত।
আরও আনন্দের বিষয় হলো, SVAMITVA যোজনার মাধ্যমে ড্রোন ব্যবহার করে সম্পত্তির অধিকার প্রদান করা হচ্ছে। এখন নমো ড্রোন দিদি যোজনার আওতায় গ্রামীণ মহিলারা ড্রোন চালক হচ্ছেন, কৃষিকাজে সহায়তা করছেন এবং অতিরিক্ত আয় করছেন।
বন্ধুগণ,
SVAMITVA যোজনার মাধ্যমে আমাদের সরকার গ্রামীণ জনগণকে এমন এক ক্ষমতা দিয়েছে, যা ভারতের গ্রামীণ জীবনকে সম্পূর্ণরূপে রূপান্তরিত করতে পারে। যদি আমাদের গ্রাম ও গরিব মানুষ শক্তিশালী হয়, তবে উন্নত ভারতের যাত্রাও আরও সুগম হবে। গত দশকে গ্রাম ও গরিবদের স্বার্থে নেওয়া পদক্ষেপের ফলে ২৫ কোটি মানুষ দারিদ্র্য থেকে মুক্তি পেয়েছেন। SVAMITVA মতো প্রকল্পের মাধ্যমে আমি বিশ্বাস করি, আমরা গ্রামগুলোকে ভারতের উন্নয়নের শক্তিশালী কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে পারব।
আবারও আপনাদের সবাইকে শুভেচ্ছা জানাই।
ধন্যবাদ!
SC/PK
(Release ID: 2160799)
Visitor Counter : 17
Read this release in:
English
,
Malayalam
,
Urdu
,
Marathi
,
हिन्दी
,
Manipuri
,
Assamese
,
Punjabi
,
Gujarati
,
Odia
,
Tamil
,
Telugu
,
Kannada