প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
গাঁধীনগরে গুজরাট আর্বান গ্রোথ স্টোরির ২০ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য
Posted On:
27 MAY 2025 4:48PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ২৭শে মে, ২০২৫
ভারত মাতা কি জয়! ভারত মাতা কি জয়!
“কেন সব তেরঙ্গা পতাকাগুলি নামানো হয়েছে?”
ভারত মাতা কি জয়!
ভারত মাতা কি জয়!
ভারত মাতা কি জয়!
মঞ্চে আসীন গুজরাটের রাজ্যপাল আচার্য দেবব্রত জি, এই রাজ্যের জননন্দিত মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র ভাই পটেল, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় আমার সহকর্মী মনোহরলাল জি, সি. আর. পাটিল জি, গুজরাট সরকারের অন্যান্য মন্ত্রীবৃন্দ, সাংসদবৃন্দ, বিধায়কবৃন্দ এবং গুজরাটের সর্বত্র থেকে উপস্থিত আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা,
আমি দুই দিনের জন্য গুজরাটে রয়েছি। গতকাল আমি বরোদা, দাহোদ, ভূজ, আহমেদাবাদ সফর করেছি এবং আজ ভোরবেলা গান্ধীনগরে এসেছি। আমি যেখানেই গিয়েছি, সেখানেই দেশপ্রেমের উত্তর যেন ছিল গর্জনরত সিনদুরিয়া সাগর। সিনদুরিয়া সাগরের সেই গর্জন, তেরঙ্গার পতপত আর দেশমাতার প্রতি মানুষের হৃদয়ের অফুরন্ত ভালোবাসা—এ এক অনন্য দৃশ্য, এক অনন্য অনুভূতি। আর এ শুধু গুজরাটেই নয়, ভারতের প্রতিটি প্রান্তে একই আবেগ প্রবাহিত হচ্ছে। এ প্রতিটি ভারতবাসীর হৃদয়ের ধ্বনি।
যেমন একটি শরীর যতই সুস্থ হোক না কেন, যদি একটি কাঁটা বিঁধে যায় তবে পুরো শরীর কষ্ট পায়—আমরাও ঠিক তেমনই অনুভব করি। আর এখন আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সেই কাঁটা উপড়ে ফেলব।
বন্ধুগণ,
১৯৪৭ সালে যখন মা ভারতীকে খণ্ডিত করা হল, তখন আসলে শিকল ভাঙা উচিত ছিল, অথচ কেটে দেওয়া হল হাত-পা। দেশকে তিন টুকরো করা হল। সেই রাতেই কাশ্মীরের মাটিতে প্রথম সন্ত্রাসী আক্রমণ ঘটে। পাকিস্তান তথাকথিত মুজাহিদিনদের সহায়তায় মা ভারতীর একাংশ দখল করে নেয়। যদি সেইদিনই এই মুজাহিদিনদের শেষ করা যেত এবং যদি সরদার প্যাটেলের ইচ্ছানুযায়ী সেনাবাহিনী থেমে না যেত যতক্ষণ না পিওকে ফিরে আসে—তাহলে ইতিহাস ভিন্ন হতে পারত। কিন্তু সরদার সাহেবের কথা শোনা হল না, আর এই যে রক্তের স্বাদ ওরা পেল, তারই চক্র ৭৫ বছর ধরে চলেছে। পহলগাঁও-এ তারই বিকৃত রূপ আমরা দেখেছি। ৭৫ বছর ধরে আমরা ভুগেছি, তবু যখনই পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ হয়েছে, ভারতের সামরিক শক্তি প্রতিবারই ওদের পরাজিত করেছে। পাকিস্তান বুঝেছে, যুদ্ধে ভারতকে হারানো সম্ভব নয়, তাই ওরা প্রক্সি ওয়ার শুরু করেছে। প্রশিক্ষিত জঙ্গি পাঠিয়েছে নিরস্ত্র নিরীহ মানুষের উপর আঘাত হানতে। কেউ ভ্রমণে বেরিয়েছে, কেউ বাসে যাচ্ছে, কেউ হোটেলে বসে আছে, কেউ পর্যটক—যেখানে সুযোগ পেয়েছে, হত্যা করেছে। আমরা শুধু সহ্য করেছি। এখন প্রশ্ন করি আপনাদের—এ সহ্য করা উচিত কি? গুলির জবাব কি কামানে দেওয়া উচিত নয়? ইটের জবাব কি পাথরে দেওয়া উচিত নয়? এই কাঁটা কি শেকড় থেকে উপড়ে ফেলা উচিত নয়?
শুভ
বন্ধুগণ,
আমাদের দেশ ‘বসুধৈব কুটুম্বকম’-এর মহান মূল্যবোধ নিয়ে এগিয়েছে। আমরা বিশ্বকে এক পরিবার মনে করি, প্রতিবেশীর কল্যাণও কামনা করি। কিন্তু যখন আমাদের শক্তিকে বারবার চ্যালেঞ্জ করা হয়, তখন এ দেশ বীরদের দেশ হিসেবেই জবাব দেয়। এতদিন একে প্রক্সি ওয়ার বলা হত, কিন্তু ৬ মে–এর পর যা ঘটেছে, তাকে আর প্রক্সি ওয়ার বলা যায় না। ৯টি জঙ্গি ঘাঁটি চিহ্নিত করে মাত্র ২২ মিনিটে ধ্বংস করা হয়েছে। এবং এবার ক্যামেরার সামনে সবকিছু হয়েছে, যাতে আর প্রমাণ চাইতে না হয়। পাকিস্তান নিজেরাই প্রমাণ দিয়েছে—কারণ ৬ মে–এর পর নিহত জঙ্গিদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাধি দেওয়া হয়েছে, পাকিস্তানি সেনারা স্যালুট করেছে, পতাকা দিয়েছে। এ থেকে প্রমাণিত হয় যে এটা প্রক্সি ওয়ার নয়, বরং পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধনীতি। আর যুদ্ধ করলে জবাবও যুদ্ধে দেওয়া হবে।
বন্ধুগণ,
আমি নতুন প্রজন্মকে বলতে চাই—দেশকে কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে। ১৯৬০ সালে সিন্ধু জল চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। তার বিশদে গেলে অবাক হতে হয়। এমনকি জম্মু ও কাশ্মীরের নদীর উপর বাঁধের পলি পরিষ্কার করাও ৬০ বছর ধরে বন্ধ রাখা হয়। ফলে জলধারণ ক্ষমতা ১০০% থেকে নেমে ২–৩ শতাংশে দাঁড়ায়। দেশের মানুষের কি সেই জলের ওপর অধিকার নেই? আজ আমরা কেবল একটু খুলেছি, একটু পরিষ্কার শুরু করেছি, তাতেই ওদের আতঙ্ক।
বন্ধুগণ,
আমরা কারও সঙ্গে শত্রুতা চাই না। আমরা শান্তি চাই, উন্নতি চাই, যাতে বিশ্বের কল্যাণে অবদান রাখতে পারি। ২৬ মে ২০১৪–তে আমি প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিই। তখন ভারতের অর্থনীতি ছিল বিশ্বের ১১ নম্বরে। করোনা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, প্রতিবেশীর সমস্যা—সবকিছুর পরেও আজ ভারত ৪ নম্বর অর্থনীতি। উন্নয়নই আমাদের লক্ষ্য।
গুজরাট আমার জন্মদাতা ভূমি। এখান থেকে আমি শিক্ষা পেয়েছি, প্রেরণা পেয়েছি, স্বপ্ন পেয়েছি। তাই আজ যখন ২০০৫ সালের আরবান ডেভেলপমেন্ট ইয়ার-এর ২০ বছর পূর্তি উদ্যাপিত হচ্ছে, তখন গুজরাট সরকার শুধু অতীতের প্রশংসা করেনি, ভবিষ্যতের জন্য রোডম্যাপও তৈরি করেছে। এর জন্য আমি মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর দলকে অভিনন্দন জানাই।
বন্ধুগণ,
আজ আমরা চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি। কিন্তু এখন আর দেশ থেমে থাকতে রাজি নয়, সবাই জানতে চাইছে—কবে তৃতীয় হব? উত্তর আসে—“মোদী হ্যায় তো মুমকিন হ্যায়।”
আমাদের লক্ষ্য ২০৪৭—ভারতকে উন্নত দেশ করা। স্বাধীনতার ১০০ বছর উদ্যাপন হবে উন্নত ভারতের পতাকা উঁচিয়ে। যেমন ১৯২০–৪০-এর দশকে ভগৎ সিং, সুভাষচন্দ্র বসু, গান্ধীজি, প্যাটেল, সাভারকর, শ্যামজি কৃষ্ণবর্মা প্রজন্মকে স্বাধীনতার জন্য ত্যাগে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন, তেমনি আজ ১৪০ কোটির সংকল্পেই ভারত উন্নত হবে।
গুজরাটের ৭৫ বছরে আমরা প্রতিজ্ঞা নেব—শিল্প, কৃষি, শিক্ষা, ক্রীড়া—সবক্ষেত্রে উচ্চতায় পৌঁছব। এমনকি অলিম্পিকের আয়োজনের লক্ষ্যও আমাদের সামনে থাকবে। একসময় যে গুজরাটকে শুধু নুনের রাজ্য বলা হত, আজ বিশ্ব তাকে হিরের জন্য জানে—“নুন থেকে হীরে”—এই যাত্রা আমাদের পরিকল্পিত পরিশ্রমের ফসল।
বন্ধুগণ,
২০০৫ সালে আমরা ‘আরবান ডেভেলপমেন্ট ইয়ার’ পালন করেছিলাম, প্রতিটি বিভাগকে যুক্ত করে। পর্যটন বর্ষ থেকে রাণ উৎসব, স্ট্যাচু অফ ইউনিটি পর্যন্ত সব এসেছে এই দূরদৃষ্টির ফলে।
আজ ভারতকে ৪ থেকে ৩–এ তুলতে গেলে আমাদের শহরগুলিকে অর্থনৈতিক উন্নয়ন কেন্দ্র করতে হবে। টিয়ার ২, টিয়ার ৩ শহরগুলি হবে নতুন শক্তি। স্টার্টআপ থেকে খেলাধুলা—ছোট শহরের যুবক–যুবতীরাই নেতৃত্ব দিচ্ছে।
বন্ধুগণ, বিশ্ব আজ ভারতের উন্নয়ন মডেলকে উদাহরণ হিসেবে নিচ্ছে—অ্যাসপিরেশনাল ডিস্ট্রিক্ট মডেল, পর্যটন, লোথাল সামুদ্রিক জাদুঘর, গিফট সিটি—সব আমাদের কল্পনা থেকে বাস্তবায়ন হয়েছে।
ভাই ও বোনেরা,
আমাদের দেশ অশেষ সম্ভাবনায় ভরপুর। আমি সর্বদা আশাবাদী। জনগণের শক্তিই আমাদের আসল অস্ত্র। অপারেশন সিঁদূর শুধু সেনার কাজ নয়, ১৪০ কোটির দায়িত্ব। আমাদের প্রত্যেককে স্থানীয় পণ্যের ব্যবহার বাড়াতে হবে, বিদেশি নির্ভরতা কমাতে হবে। ভোকাল ফর লোকাল, ওয়ান ডিস্ট্রিক্ট ওয়ান প্রোডাক্ট—এই পথেই এগোতে হবে।
যদি আমরা প্রত্যেকে প্রতিজ্ঞা করি, তবে ২০৪৭–এর আগেই ভারত হবে উন্নত দেশ।
তাহলে আসুন, একসাথে বলি—
ভারত মাতা কি জয়! ভারত মাতা কি জয়!
ভারত মাতা কি জয়!
বন্দে মাতরম্! বন্দে মাতরম্!
বন্দে মাতরম্! বন্দে মাতরম্!
ধন্যবাদ!
SC/TM
(Release ID: 2159857)
Visitor Counter : 10
Read this release in:
English
,
Urdu
,
Marathi
,
हिन्दी
,
Manipuri
,
Assamese
,
Punjabi
,
Gujarati
,
Odia
,
Tamil
,
Telugu
,
Kannada
,
Malayalam