প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
নতুন দিল্লির কর্তব্য পথে কর্তব্য ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভাষণ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী
Posted On:
06 AUG 2025 8:35PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ৬ অগাস্ট, ২০২৫
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ নতুন দিল্লির কর্তব্য পথে কর্তব্য ভবন থ্রি-র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভাষণ দিয়েছেন। অনুষ্ঠানে ভাষণে তিনি বলেন, অগাস্ট, বিপ্লবের মাস, ১৫ অগাস্টের আগে আরও একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক এনেছে। তিনি বলেন, ভারত সাক্ষী থাকছে একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ সাফল্যের যা আধুনিক ভারত গঠনের সঙ্গে সম্পর্কিত। নতুন দিল্লির উল্লেখ করে শ্রী মোদী সেখানে সাম্প্রতিক কিছু পরিকাঠামোগত কাজের তালিকা দেন : কর্তব্য পথ, নতুন সংসদ ভবন, নতুন প্রতিরক্ষা কার্যালয় প্রাঙ্গণ, ভারত মণ্ডপম, যশোভূমি, শহীদদের প্রতি উৎসর্গীকৃত জাতীয় যুদ্ধ স্মারক এবং নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বোসের মূর্তি এবং এই কর্তব্য ভবন। তিনি বলেন, এগুলি শুধুমাত্র নতুন ভবন বা সাধারণ পরিকাঠামো নয়। অমৃতকালে উন্নত ভারত গঠনে যে নীতি বাস্তবায়িত হচ্ছে, তা এইসব কাঠামো থেকেই উদ্ভূত এবং আগামী দশকগুলিতে দেশের গতিপথ নির্ধারিত হবে এই প্রতিষ্ঠানগুলি থেকেই। কর্তব্য ভবনের উদ্বোধনের জন্য তিনি সকল দেশবাসীকে অভিনন্দন জানান এবং এটির নির্মাণের সঙ্গে জড়িত ইঞ্জিনিয়ার এবং শ্রমজীবীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
শ্রী মোদী বলেন, গভীর ভাবনা-চিন্তা করে এই বাড়ির নাম দেওয়া হয়েছে ‘কর্তব্য ভবন।’ কর্তব্য পথ এবং কর্তব্য ভবন ভারতের গণতন্ত্র এবং তার সংবিধানের মূল আদর্শকে প্রতিধ্বনিত করছে। ভাগবৎ গীতা উদ্ধৃত করে প্রধানমন্ত্রী ভগবান শ্রী কৃষ্ণের শিক্ষা স্মরণ করান যেখানে তিনি বলেছিলেন, লাভ-ক্ষতির হিসাবের ওপরে উঠতে, শুধুমাত্র কর্তব্য পালন করতে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ভারতীয় সংস্কৃতিতে ‘কর্তব্য’ শব্দটি শুধুমাত্র দায়িত্বে সীমিত নয়, বরং এটি ভারতের কার্যসমন্বিত দর্শনের সারের প্রতিরূপ। প্রধানমন্ত্রী এটিকে একটি মহান পরিপ্রেক্ষিত বলে বর্ণনা করেন যা নিজেকে ছাড়িয়ে সমষ্টিকে কাছে আনে, কর্তব্যের প্রকৃত অর্থ তুলে ধরে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কর্তব্য শুধুমাত্র একটি ভবনের নাম নয়, এটি কোটি কোটি ভারতীয় নাগরিকের স্বপ্নপূরণের পবিত্র ভূমি। শ্রী মোদী বলেন, “কর্তব্য সূচনা এবং সমাপ্তি দুটিই, সহমর্মিতা এবং নিষ্ঠা দ্বারা গ্রথিত। কর্তব্য কাজের সূত্র, এটি স্বপ্নের সহযোগী, সংকল্পের আশা এবং প্রয়াসের চূড়া।” তিনি বলেন, কর্তব্য হল ইচ্ছাশক্তি যা প্রতিটি জীবনে প্রদীপ জ্বালায়, তিনি বলেন, কর্তব্য কোটি কোটি নাগরিকের সুরক্ষার ভিত্তি। তিনি আরও বলেন, কর্তব্য মা ভারতীর জীবনীশক্তির বাহন এবং ‘নাগরিক দেব ভব’ মন্ত্র উচ্চারণ করছে। তিনি আরও জানান, নিষ্ঠার সঙ্গে যে কাজ করা হয় দেশের জন্য তাই হল কর্তব্য।
স্বাধীনতার পর অনেক দশক ধরেই প্রশাসন চালিত হত ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক যুগে নির্মিত ভবনগুলি থেকে তার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এইসব পুরনো প্রশাসনিক ভবনে স্থানাভাব, আলোর অভাব, বায়ু চলাচলের অভাবে কাজের পরিবেশ অত্যন্ত খারাপ। তিনি বলেন, ভাবা যায় না কীভাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক প্রায় ১০০ বছর ধরে অপ্রতুল পরিকাঠামোর একটি বাড়ি থেকে কাজ করছে। ভারত সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রক, দিল্লির ৫০টি বিভিন্ন জায়গা থেকে কাজ করছে সেই বিষয়টির উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, এদের বেশিরভাগ মন্ত্রকই কাজ করছে ভাড়া বাড়ি থেকে। তিনি বলেন, প্রতি বছর ভাড়া গুনতে হয় বিপুল- ১৫০০ কোটি টাকার মতো। প্রধানমন্ত্রী জানান ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সরকারি অফিসগুলির জন্য ভাড়া দিতে এ রকম বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ করতে হয়। বিকেন্দ্রীকরণের জন্য আধিকারিকদের আসা-যাওয়ার অসুবিধা হয়। তিনি জানান, প্রায় ৮০০০-১০,০০০ কর্মচারী প্রতিদিন বিভিন্ন মন্ত্রকে আসা-যাওয়া করেন। শয়ে শয়ে গাড়ি চলাচল করে। খরচা বাড়ে, রাস্তায় যানবাহনের ভিড়ও বাড়ে। তিনি বলেন, এর ফলে যে সময় নষ্ট হয়, তাতে প্রশাসনিক দক্ষতায় সরাসরি প্রভাব পড়ে।
একবিংশ শতাব্দীর ভারতের প্রয়োজন একবিংশ শতাব্দীর আধুনিক বাড়ি, জানিয়ে শ্রী মোদী বলেন, এমন বাড়ি যা প্রযুক্তি, নিরাপত্তা এবং স্বাচ্ছন্দ্যের দিক দিয়ে উদাহরণস্বরূপ। তিনি বলেন, এই ধরনের বাড়িগুলি কর্মীদের জন্য সুস্থ পরিবেশ, দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ এবং সুষ্ঠুভাবে পরিষেবা দেওয়া নিশ্চিত করবে। কর্তব্য পথের দুধারে কর্তব্য ভবনের মতো একাধিক বাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে একটি সার্বিক দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রথম কর্তব্য ভবনটির নির্মাণ সম্পূর্ণ এবং অন্যান্য কর্তব্য ভবনের নির্মাণকাজ চলছে দ্রুত গতিতে। তিনি বলেন, যখন এইসব অফিসগুলি নতুন কমপ্লেক্সে স্থানান্তরিত হবে, তখন কর্মচারীরা উন্নত কর্ম পরিবেশের দ্বারা উপকৃত হবেন, প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা পাবেন যাতে তাঁদের কর্মদক্ষতাও বাড়বে। শ্রী মোদী বলেন, সরকারের ১৫০০ কোটি টাকা বাঁচবে যা এখন ভাড়া হিসেবে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা মন্ত্রকগুলির জন্য খরচ করতে হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এই বিশাল কর্তব্য ভবন এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো প্রকল্পগুলি যার মধ্যে নতুন প্রতিরক্ষা কমপ্লেক্সও আছে, সেগুলি শুধুমাত্র ভারতের গতির প্রমাণ নয়, তার আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গীরও প্রতিফলন।” তিনি বলেন, ভারত সারা বিশ্বকে যে দৃষ্টিভঙ্গী দিতে চাইছে তা নিজ দেশেও গৃহীত হয়েছে। যার প্রমাণ পরিকাঠামো উন্নয়ন। মিশন লাইফ এবং ‘ওয়ান আর্থ, ওয়ান সান, ওয়ান গ্রিড’ উদ্যোগের মতো ভারতের আন্তর্জাতিক অবদান তুলে ধরে শ্রী মোদী স্পষ্ট জানান যে এই ভাবনাগুলি মানুষের ভবিষ্যতের জন্য আশা বয়ে নিয়ে চলেছে। তিনি বলেন, কর্তব্য ভবনের মতো আধুনিক পরিকাঠামো মানব কেন্দ্রিক ভাবনা এবং গ্রহ কেন্দ্রিক কাঠামোর প্রতিরূপ। কর্তব্য ভবনে রুফ টপ সোলার প্যানেল বসানো হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি বসানো হয়েছে এই বাড়িতে গ্রিন বিল্ডিং-এর ভাবনার অনুসারী হয়ে, যা ছড়িয়ে পড়ছে ভারত জুড়ে।
সরকার একটি সার্বিক দর্শন নিয়ে দেশ গঠনের কাজে যুক্ত জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের কোনও অংশই এখন উন্নয়নের ধারা থেকে বঞ্চিত নয়। তিনি বলেন, দিল্লি যেখানে নতুন সংসদ ভবন নির্মাণের সাক্ষী থেকেছে, তখন দেশ জুড়ে ৩০,০০০-এর বেশি পঞ্চায়েত ভবন তৈরি হয়েছে। শ্রী মোদী বলেন, কর্তব্য ভবনের মতো ঐতিহাসিক ভবনের পাশাপাশি দরিদ্র মানুষের জন্য ৪ কোটির বেশি পাকা বাড়ি তৈরি করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, জাতীয় যুদ্ধ স্মারক এবং পুলিশ স্মারক তৈরি করা হয়েছে পাশাপাশি সারা দেশে ৩০০র বেশি নতুন মেডিক্যাল কলেজ নির্মিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আরও জানান, দিল্লিতে যখন ভারত মণ্ডপম তৈরি হয়েছে, দেশজুড়ে তখন ১৩০০-র বেশি অমৃত ভারত রেল স্টেশন তৈরি করা হয়েছে। তিনি জানান, যশোভূমির মহিমা রূপান্তরের মাত্রার প্রতিরূপ যা দেখা যাচ্ছে গত ১১ বছরে প্রায় ৯০টি নতুন বিমান বন্দর নির্মাণে।
মহাত্মা গান্ধীর বিশ্বাস ছিল যে অধিকার এবং দায়িত্ব একে অপরের সঙ্গে যুক্ত এবং কর্তব্য পালনে অধিকারের ভিত্তি দৃঢ় হয়। সেকথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে শ্রী মোদী বলেন, যখন নাগরিকদের কাছ থেকে কর্তব্য প্রত্যাশা করা হয়, তখন সরকারকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দায়িত্ব পালন করতে হয়। তিনি বলেন, যখন একটি সরকার নিষ্ঠার সঙ্গে তার কর্তব্য পালন করে তা প্রতিফলিত হয় প্রশাসনে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত এক দশককে দেশে সুপ্রশাসনের দশক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, সুপ্রশাসন এবং উন্নয়নের ধারা উৎসারিত হয় সংস্কারের নদীগর্ভ থেকে। সংস্কার হল একটি ধারাবাহিক এবং নির্দিষ্ট সময়ভিত্তিক প্রক্রিয়া। ভারত নিয়মিত গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার করে আসছে। শ্রী মোদী বলেন, “ভারতের সংস্কার শুধুমাত্র ধারাবাহিক তাই নয়, তা প্রাণবন্ত এবং দূরদৃষ্টিসম্পন্ন” সরকার-নাগরিক সম্পর্ক জোরদার করা, জীবনধারণ সহজ করা, বঞ্চিতদের অগ্রাধিকার দেওয়া, মহিলাদের ক্ষমতায়ন এবং প্রশাসনিক দক্ষতা বৃদ্ধি করতে চলতি প্রয়াসের উল্লেখ করেন শ্রী মোদী। তিনি বলেন, দেশ এইসব ক্ষেত্রে ধারাবাহিকভাবে উদ্ভাবন করছে। তিনি বলেন, “গত ১১ বছরে ভারত এমন একটি প্রশাসনিক মডেল তৈরি করেছে যা স্বচ্ছ, সংবেদনশীল এবং নাগরিক কেন্দ্রিক।”
যে কটি দেশ তিনি সফর করেছেন, সেখানে জনধন, আধার এবং মোবাইল এই জেএএম ট্রিনিটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং আন্তর্জাতিক স্তরে প্রশংসিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জেএএম সরকারি কর্মসূচিগুলি প্রদানে স্বচ্ছতা এবং লিকেজ মুক্ত করতে পেরেছে। তিনি বলেন, মানুষ অনেক সময় আশ্চর্য হয়ে যায় শুনে যে রেশন কার্ড, গ্যাসে ভর্তুকি এবং বৃত্তি সব ক্ষেত্রে প্রায় ১০ কোটি সুবিধাপ্রাপকের পরিচয়ই জানা যেত না- তাঁদের মধ্যে অনেকেই জন্মগ্রহণই করেনি। আগেকার সরকারগুলি এইসব ভুয়ো সুবিধাপ্রাপকদের নামে টাকা দিত। ফলে টাকা যেত বেআইনি অ্যাকাউন্টে। শ্রী মোদী বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে সেই সব ১০ কোটি ভুয়ো নাম সুবিধাপ্রাপকদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, বর্তমানে যে হিসাব পাওয়া গেছে তার থেকে দেখা যাচ্ছে, ৪.৩ লক্ষ কোটি টাকা ভুয়ো লোকের হাতে পড়া থেকে বাঁচানো গেছে এবং এই টাকা এখন খরচ করা হচ্ছে উন্নয়নমূলক কাজে। প্রধানমন্ত্রী আরও জানান, এতে প্রকৃত সুবিধাপ্রাপকরা যেমন খুশি হয়েছে, তেমনই জাতীয় সম্পদে সুরক্ষিত হয়েছে।
দুর্নীতি এবং লিকেজ ছাড়াও তামাদি আইন-কানুন দীর্ঘদিন ধরেই নাগরিকদের পক্ষে অসুবিধাজনক হয়ে উঠেছিল এবং সরকারে সিদ্ধান্ত গ্রহণে বাধা সৃষ্টি করতো। শ্রী মোদী জানান এর মোকাবিলায় ১৫০০-র বেশি তামাদি আইন- যা ঔপনিবেশিক যুগের দান, তা বাতিল করা হয়েছে- সেগুলি দশকের পর দশক ধরে প্রশাসনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। তিনি আরও বলেন, বাধ্যতাকরণ একটি বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছিল, এমনকি অত্যন্ত ছোট সংস্থার ক্ষেত্রেও এক একজন ব্যক্তিকে আগে একাধিক নথি জমা দিতে হত। প্রধানমন্ত্রী জানান গত ১১ বছরে এই রকম ৪০,০০০-এর বেশি বাধ্যতামূলক বিধি বাদ দেওয়া হয়েছে এবং এই সরলীকরণের কাজ চলছে দ্রুত গতিতে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগে বিভিন্ন দপ্তরের এবং মন্ত্রকের দায়িত্ব ভাগাভাগি নিয়ে টানাপোড়েনে দেরি হত এবং প্রতিবন্ধকতা তৈরি হত। এই কাজকে সুষ্ঠু করতে বিভিন্ন দপ্তরকে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে, দ্বৈতকরণ দূর করা হয়েছে এবং যেখানে প্রয়োজন, মন্ত্রকগুলিও মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে বা নতুন তৈরি করা হয়েছে। জল নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য জলশক্তি মন্ত্রক, সমবায় আন্দোলনকে শক্তিদান করতে সমবায় মন্ত্রক, মৎস্যচাষ ক্ষেত্রকে অগ্রাধিকার দিতে এই প্রথম মৎস্য মন্ত্রক এবং তরুণদের ক্ষমতায়নে নজর দিতে দক্ষতা উন্নয়ন এবং উদ্যোগপতিত্ব মন্ত্রকের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক তৈরির উদাহরণ দেন শ্রী মোদী। তিনি বলেন, এইসব সংস্কার প্রশাসনের দক্ষতা বৃদ্ধি করেছে এবং জনপরিষেবা প্রদানে গতি এনেছে।
সরকারের কর্মসংস্কৃতির উন্নতি করতে প্রয়াস নেওয়া হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিশন কর্মযোগী এবং আইগট-এর মতো ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মতো উদ্যোগের মাধ্যম সরকারি কর্মীদের প্রযুক্তি এবং পেশাদারি প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে তোলা হচ্ছে। ই-অফিস, ফাইল ট্র্যাকিং এবং ডিজিটাল অ্যাপ্রুভালের মতো ব্যবস্থা প্রশাসনিক প্রক্রিয়ায় বিপ্লব এনেছে- তাদের শুধুমাত্র দ্রুততর করেছে তাই নয়, পুরোপুরি দায়বদ্ধ করে তুলেছে।
নতুন বাড়িতে স্থানান্তর উৎসাহ বৃদ্ধি করবে এবং কাজ করার ইচ্ছা আরও বাড়াবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত সকলকে একই রকম প্রাণশক্তি এবং নিষ্ঠা নিয়ে নতুন ভবনে তাঁদের দায়িত্ব পালন করার আহ্বান জানান। যে যে পদেই থাকুক না কেন, তাঁদের প্রত্যেককে তাঁদের কর্মজীবনকে স্মরণীয় করে রাখার চেষ্টা করতে উৎসাহিত করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখন একজন অবসর নেবেন, তাঁর সেইরকম গর্ব নিয়ে যাওয়া উচিত যে তাঁরা দেশের জন্য তাঁদের ১০০ শতাংশ দিয়েছিলেন।
ফাইল এবং নথি সংরক্ষণের পরিপ্রেক্ষিত বদলের প্রয়োজনীয়তা আছে জানিয়ে শ্রী মোদী বলেন, হয়তো একটি ফাইল, একটি অভিযোগ অথবা একটি আবেদন রুটিন কাজ। কিন্তু কারো জন্য সেই এক টুকরো কাগজ অনেক আশার। একটি মাত্র ফাইল অসংখ্য মানুষের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বিষয়টি ব্যাখ্যা করে প্রধানমন্ত্রী জানান, যদি একটি ফাইল যা ১ লক্ষ নাগরিকের সঙ্গে জড়িত, তা যদি এক দিনের জন্যও দেরি হয় তাতে ১ লক্ষ শ্রমদিবস নষ্ট। তিনি আধিকারিকদের এই মনোভাব নিয়ে দায়িত্ব পালন করতে বলেন। সুবিধা মতো বা রুটিন ভাবনার বাইরে গিয়ে প্রভূত সুযোগ বুঝে নেওয়ার পরামর্শ দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনও নতুন ভাবনা রূপান্তরকারী পরিবর্তনের ভিত হতে পারে। তিনি সব সরকারি কর্মচারীকে কর্তব্য হিসেবে দেশ গঠনে গভীরভাবে দায়বদ্ধ হওয়ার পরামর্শ দেন। তাঁদের মনে করিয়ে দেন যে ভারতের উন্নয়নের স্বপ্ন দায়িত্বের গর্ভে লালিত হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন সমালোচনার সময় নয়, আত্মসমীক্ষার সময়। তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে প্রায় একই সময়ে স্বাধীন হওয়া একাধিক দেশ দ্রুত এগিয়ে গেছে। পক্ষান্তরে ভারতের অগ্রগতি শ্লথ ছিল নানা ঐতিহাসিক সমস্যার কারণে। শ্রী মোদী বলেন, এখন আমাদের দায়িত্ব এই সমস্যাগুলি যেন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে না পৌঁছায়। অতীতের প্রয়াসগুলির উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুরনো বাড়ির দেওয়ালগুলির অভ্যন্তরে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত এবং নীতি তৈরি হয়েছে, যার জন্য ২৫ কোটি নাগরিক দারিদ্রমুক্ত হয়েছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, নতুন ভবনে আরও বেশি দক্ষতার লক্ষ্য হবে পুরোপুরি দারিদ্র দূরীকরণ এবং উন্নত ভারতের স্বপ্নপূরণ। শ্রী মোদী সকলকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান যাতে ভারত বিশ্বে তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হয়ে উঠতে পারে। মেক ইন ইন্ডিয়া এবং আত্মনির্ভর ভারতের মতো উদ্যোগের সফল কাহিনীতে অবদান রাখার জন্য প্রত্যেক নাগরিককে উৎসাহ দেন তিনি। জাতীয় উৎপাদন বাড়াতে দায়বদ্ধতার পরামর্শ দেন তিনি, যাতে যখন পর্যটন নিয়ে আলোচনা হবে, ভারত যেন হয়ে ওঠে সারা বিশ্বে কাছে গন্তব্যস্থল। যখন কোনো ব্র্যান্ড নিয়ে আলোচনা হবে তখন যেন সারা বিশ্বে তাকায় ভারতীয় সংস্থার দিকে, যখন শিক্ষার প্রশ্ন আসবে, সারা বিশ্বের ছাত্রছাত্রীরা যেন ভারতকে বেছে নেয়। তিনি আরও বলেন, ভারতের সক্ষমতা বৃদ্ধি সকলের উদ্দেশ্য এবং ব্যক্তিগত লক্ষ্য হয়ে উঠতে হবে।
যখন সফল দেশগুলি এগোয়, তারা তাদের ইতিবাচক ঐতিহ্যকে ছেড়ে দেয় না, বরং সংরক্ষণ করে, জানিয়ে শ্রী মোদী বলেন, ভারত ‘বিকাশ অউর বিরাসত’-এর দর্শন নিয়ে এগিয়ে চলেছে। কর্তব্য ভবনের উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন, যে ঐতিহাসিক নর্থ এবং সাউথ ব্লক ভারতের জীবন্ত ঐতিহ্যের অংশে রূপান্তরিত হবে। এই ঐতিহ্যশালী ভবনগুলি ‘যুগে যুগীন ভারত সংগ্রহালয়’ নামে সাধারণের সংরক্ষণাগারে পরিবর্তিত হবে যাতে প্রতিটি নাগরিক ভারতের সমৃদ্ধ সভ্যতার সাক্ষী হতে পারে। সব শেষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর আশা, মানুষ যখন নতুন কর্তব্য ভবনে ঢুকবেন, তখন তাঁরা এই জায়গায় থাকা অনুপ্রেরণা এবং ঐতিহ্যকে বহন করবেন। তিনি কর্তব্য ভবনের উদ্বোধনের জন্য ভারতের নাগরিকদের আন্তরিক অভিনন্দন জানান। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, সাংসদ এবং কেন্দ্রীয় সরকারি আধিকারিকরা।
SC/AP/NS
(Release ID: 2153472)
Read this release in:
English
,
Urdu
,
Marathi
,
Hindi
,
Manipuri
,
Assamese
,
Punjabi
,
Gujarati
,
Odia
,
Tamil
,
Telugu
,
Kannada
,
Malayalam