প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

অপারেশন সিঁদুর নিয়ে লোকসভায় বিশেষ আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাষণ

Posted On: 29 JUL 2025 10:37PM by PIB Kolkata

 নয়াদিল্লি,  ২৯ জুলাই, ২০২৫

 

পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসবাদী হামলার প্রতিক্রিয়ায় ভারতের সুদৃঢ়, সফল ও নির্ণায়ক প্রত্যাঘাত “অপারেশন সিঁদুর” নিয়ে লোকসভায় আজ বিশেষ আলোচনার সময়ে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বক্তব্য রাখেন। অধিবেশনের সূচনায় সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের সঙ্গে তাঁর আলাপচারিতা স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি এই অধিবেশনকে ভারতের বিজয় উদযাপন এবং ভারতের গৌরবের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন হিসেবে দেখার জন্য সাংসদদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন। 

জঙ্গি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, এই বিজয় উৎসব জাতীয় অঙ্গীকার পূর্ণ হওয়ার প্রতীক – জাতীয় নিষ্ঠা ও আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলী। “বিজয় উৎসব ভারতের শসস্ত্র বাহিনীর বীরত্ব ও শক্তির প্রমাণ।” প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিজয় উৎসব ১৪০ কোটি ভারতীয়ের ঐক্য, ইচ্ছাশক্তি ও সম্মিলিত বিজয়ের উদযাপন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যাঁরা ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি দেখতে পান না, তাঁদের জন্য একটি আয়না সামনে রেখেছেন। ১৪০ কোটি নাগরিকের সম্মিলিত আবেগের সঙ্গে তাঁর কন্ঠস্বর মিশে রয়েছে। সেই সম্মিলিত আবেগের অনুরণন এই সভায় শোনা যাচ্ছে। তিনি তাঁর কন্ঠস্বরকে সেই চেতনার সঙ্গে যুক্ত করতে উঠেছেন। 

অপারেশন সিঁদুরের সময়ে ভারতের মানুষ যে অটল সমর্থন ও আশীর্বাদ দিয়েছেন সেজন্য তিনি জাতির কাছে ঋণী বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। এই অভিযানের সাফল্যের নেপথ্যে নাগরিকদের সম্মিলিত সংকল্প এবং ভূমিকা স্বিকার করেন তিনি। 

প্রধানমন্ত্রী পহেলগাঁওয়ে ২২ এপ্রিলের জঙ্গি হামলা, যেখানে পর্যটকদের ধর্ম পরিচয় জিজ্ঞাসা করে তাঁদের নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছিল, তার তীব্র নিন্দা করে একে চূড়ান্ত নিষ্ঠুরতা আখ্যা দেন। তিনি বলেন, ভারতে সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা উস্কে দিয়ে হিংসার আগুন জ্বালাবার এ এক পরিকল্পিত প্রয়াস ছিল। সম্মিলিত ঐক্য ও সহনশীলতার সঙ্গে এই চক্রান্ত ব্যর্থ করে দেওয়ায় নাগরিকদের ধন্যবাদ জানান তিনি। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২২ এপ্রিলের ঘটনার পর বিশ্বের সামনে ভারতের অবস্থান স্পষ্ট করতে তিনি ইংরেজিতে একটি বিবৃতি দিয়েছিলেন। তাতে সন্ত্রাস নির্মূলে ভারতের সুদৃঢ় সংকল্পের উল্লেখ করে বলা হয়েছিল, এই ঘটনার চক্রীদের এমন শাস্তি দেওয়া হবে, যা তারা কল্পনাও করতে পারবে না। প্রধানমন্ত্রী জানান, ২২ এপ্রিল তিনি বিদেশ সফরে ছিলেন, কিন্তু এই ঘটনা জানার পরই সফর কাটছাঁট করে দেশে ফিরে এসে তিনি উচ্চস্তরীয় বৈঠকে বসেন। সেই বৈঠকে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে নির্ণায়ক প্রতিক্রিয়া প্রদর্শনের নির্দেশ দেওয়া হয়। শ্রী মোদী বলেন, এ ছিল এক জাতীয় অঙ্গীকার। 
ভারতীয় সেনাবাহিনীর সক্ষমতা, শক্তি ও সাহসের ওপর পূর্ণ আস্থা জ্ঞাপন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিক্রিয়ার ধরণ, সময় ও স্থান নির্বাচনে সামরিক বাহিনীকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছিল। জঙ্গিদের এমন শাস্তি দেওয়া হয়েছে যে তাদের মূল চক্রীদের রাতের ঘুম উড়ে গেছে বলে শ্রী মোদী মন্তব্য করেন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পহেলগাঁও হামলার পর ভারত যে প্রত্যাঘাত হানতে পারে পাক সেনাবাহিনী সেই আশঙ্কা করেছিল, তাই তারা পরমাণু যুদ্ধের হুমকি দিতে থাকে। তা অগ্রাহ্য করে ভারত ৬ ও ৭ মে-র মধ্যরাতে অভিযান চালায়। মাত্র ২২ মিনিটের মধ্যে ভারতীয় সেনাবাহিনী তাদের নির্দিষ্ট লক্ষ্যে আঘাত হানে, পাকিস্তান কোনও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারেনি। 

শ্রী মোদী বলেন, ভারত এর আগেও পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ করেছে কিন্তু এই প্রথম সেইসব অঞ্চলে আঘাত হানার কৌশল নেওয়া হয়েছিল, যা আগে স্পর্শ করা হয়নি। গোটা পাকিস্তান জুড়ে জঙ্গি ঘাঁটিগুলিকে নিশানা করা হয়। এমন সব এলাকাতেও ভারত আঘাত হানে, যা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। এই প্রসঙ্গে তিনি বাহাওয়ালপুর ও মুরিদকের উল্লেখ করে বলেন, ওইসব জায়গার জঙ্গিঘাঁটিগুলি ধুলোয় মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানের পরমাণু হুমকি যে ফাঁকা আওয়াজ মাত্র তা স্পষ্ট বোঝা গেছে। পরমাণু বোমা নিয়ে ব্ল্যাকমেলিং-এর সামনে ভারত যে মাথা নত করবে না, তাও ভারত স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দিয়েছে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাক ভূখণ্ডের অনেক ভিতরে গিয়ে পাকিস্তানের বিমান ঘাঁটিগুলির প্রভূত ক্ষতি সাধন করে ভারত তার অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সক্ষমতা প্রদর্শন করেছে। আমরা এখন প্রযুক্তিচালিত যুদ্ধের যুগে বাস করছি এবং অপারেশন সিঁদুর এইক্ষেত্রে ভারতের মুন্সিয়ানা প্রমাণ করেছে। গত ১০ বছর ধরে ভারত যদি এই প্রযুক্তি যুগের জন্য প্রস্তুতি না নিত তাহলে ভারতকে প্রভূত ক্ষতি স্বীকার করতে হতো। এই প্রথম সারাবিশ্ব অপারেশন সিঁদুরের মাধ্যমে আত্মনির্ভর ভারতের শক্তি প্রত্যক্ষ করেছে। মেড ইন ইন্ডিয়া, ড্রোন ও ক্ষেপনাস্ত্র কতটা কার্যকর, তাও বোঝা গেছে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অপারেশন সিঁদুর ছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বায়ুসেনার যৌথ অভিযান, তিন বাহিনীর মধ্যেকার সমন্বয় পাকিস্তানকে সম্পূর্ণ পর্যুদস্ত করেছে। 

শ্রী মোদী বলেন, ভারতে এর আগে নাশকতার ছক কষা মূলচক্রীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে গেছে, নিরাপদ জায়গায় বসে তারা আবার হামলা চালানোর পরিকল্পনা করেছে। কিন্তু আজকের পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। এখন প্রতিবার হামলা চালানোর সময় চক্রীদের রাতের ঘুম উড়ে যায়। তারা জানে ভারত প্রত্যাঘাত হানবে এবং নির্ভুল লক্ষ্যে তাদের নিকেশ করবে। ভারত এখন এক্ষেত্রে এক “নব্য স্বাভাবিকতা” প্রতিষ্ঠা করেছে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অপারেশন সিঁদুর থেকে তিনটি স্পষ্ট নীতি উঠে এসেছে, প্রথমত, যেকোনও জঙ্গি হামলার ক্ষেত্রে ভারত তার নিজস্ব শর্তে, নিজস্ব পদ্ধতিতে, নিজস্ব সময়ে প্রত্যাঘাত হানবে। দ্বিতীয়ত, পরমাণু বোমা নিয়ে ব্ল্যাকমেল আর সহ্য করা হবে না। তৃতীয়ত, ভারত হামলার পিছনে থাকা চক্রী এবং সন্ত্রাসের মদতদাতাদের মধ্যে কোনও পার্থক্য করবে না। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের অপারেশন সিঁদুর গোটা বিশ্বের সমর্থন পেয়েছে। ভারত তাঁর জাতীয় সুরক্ষার জন্য যে পদক্ষেপ নিয়েছে, কোনও দেশ তার বিরোধিতা করেনি। রাষ্ট্রসংঘের ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে মাত্র ৩টি রাষ্ট্র পাকিস্তানের সমর্থনে বিবৃতি জারি করেছে। কোয়ার্ড, ব্রিকস-এর মতো দেশগোষ্ঠী এবং ফ্রান্স, রাশিয়া, জার্মানির মতো দেশগুলির থেকে ভারত প্রভূত সমর্থন পেয়েছে। 

ভারত সারা বিশ্বের সমর্থন পেলেও দেশের সেনাবাহিনীর বীরত্ব স্বীকার করতে বিরোধীরা প্রস্তুত নন বলে প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ২২ এপ্রিল জঙ্গি হামলার কয়েক দিনের মধ্যেই কিছু বিরোধী নেতা সরকারের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ এনে সরকারকে উপহাস করেন। জাতীয় শোকের সেই প্রহরে ওই উপহাস নাগরিকদের ভাবাবেগকে অশ্রদ্ধা করেছিল, সেনাবাহিনীর মনোবলে আঘাত হেনেছিল। কিছু বিরোধী নেতার ভারতের শক্তি এবং সেনাবাহিনীর সক্ষমতার প্রতি কোনও আস্থা নেই। সংবাদ শিরোনামে জায়গা করে নেওয়ার লক্ষ্যে তাদের মন্তব্য রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধি করলেও মানুষের বিশ্বাস ও আস্থা অর্জন করেনি বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। 

প্রধানমন্ত্রী জানান, ১০ মে ভারত অপারেশন সিঁদুর স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে। এই ঘোষণাকে ঘিরে নানা ধরনের জল্পনা দানা বাঁধে, ও ভিত্তিহীন প্রচার চালানো হয়। ভারতের সেনাবাহিনীর বক্তব্যের থেকেও যারা পাকিস্তানের অপপ্রচারের ওপর ভরসা করে তা আরও ছড়িয়ে দেন, তাদের কড়া সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। 

শ্রী মোদী বলেন, সার্জিকাল স্ট্রাইকের সময় ভারত এক রাতের মধ্যে শত্রু দেশের ভিতরে ঢুকে জঙ্গিদের লঞ্চ প্যাড গুঁড়িয়ে দিয়েছিল। বালাকোট বিমান হানার সময়ে ভারত সাফল্যের সঙ্গে জঙ্গি প্রশিক্ষণ শিবিরগুলিকে নিশানা করে। অপারেশন সিঁদুরের ক্ষেত্রেও ভারতের সামনে একটি সুস্পষ্ট লক্ষ্য ছিল। পহেলগাঁওতে হামলাকারীদের পিছনে থাকা সন্ত্রাসের ভরকেন্দ্র ও সন্ত্রাস পরিকাঠামোকে নির্মূল করতে চেয়েছিল ভারত। সেইজন্যই সুনির্দিষ্টভাবে জঙ্গিদের প্রধান ঘাঁটিগুলির ওপর আঘাত হেনে তাদের মূল কেন্দ্রগুলি ধ্বংস করে দেওয়া হয়। 

এবারও ভারতীয় সেনাবাহিনী ১০০ শতাংশ সাফল্য অর্জন করেছে বলে প্রধানমন্ত্রী দৃঢ়তার সঙ্গে জানান। তিনি বলেন, এই অভিযান ৬ মে মধ্যরাতে শুরু হয়েছিল। ৭ মে সূর্যোদয়ের পরেই ভারতীয় সেনাবাহিনী সাংবাদিক সম্মেলন করে জানায় যে তাদের অভিযান সফল হয়েছে। ভারতের উদ্দেশ্য প্রথম তেকেই স্পষ্ট ছিল – জঙ্গি নেটওয়ার্ক, নাশকতার মূলচক্রী এবং জঙ্গিদের সরবরাহ কেন্দ্রগুলি নির্মূল করা – এবং সেই পরিকল্পনা মতই অভিযান সম্পন্ন হয়। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী শ্রী রাজনাথ সিং-কে উদ্ধৃত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতীয় সেনাবাহিনী কয়েক মিনিটের মধ্যে তাদের সাফল্যের কথা পাক সেনাবাহিনীকে জানায়। ভারতের লক্ষ্য ছিল সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করা, পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ করা নয়। কিন্তু পাকিস্তান যখন জঙ্গিদের সমর্থনে যুদ্দের ময়দানে নামে তখন ভারত যথাযথ জবাব দেয়। ৯ মে মধ্যরাত এবং ১০ মে ভোরে ভারতীয় ক্ষেপনাস্ত্র এমন তীব্রতায় পাকিস্থানে আছড়ে পড়েছিল, যা তারা কল্পনাও করতে পারেনি। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের প্রত্যাঘাতে পাকিস্তান এতটাই আশঙ্কিত হয়ে পড়ে যে তাদের ডিজিএমও সরাসরি ভারতের ডিজিএমও-কে ফোন করে ভারতকে অভিযান বন্ধ করার আবেদন জানান। এই কথা ৭ তারিখ ভোরে সেনাবাহিনীর সাংবাদিক সম্মেলনে জানানো হয়েছিল। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৯ মে রাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপরাষ্ট্রপতি বেশ কয়েকবলার তাকে টেলিফোন করেন কিন্তু তিনি প্রতিরক্ষা আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে ব্যস্ত থাকায় কথা হয়নি। বৈঠক সেরে প্রধানমন্ত্রী মার্কিন উপরাষ্ট্রপতিকে টেলিফোন করলে তিনি বলেন, পাকিস্তান ভারতের ওপর বড় আঘাত হানতে চলেছে। এর উত্তরে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, “যদি তাই হয় সেক্ষেত্রে পাকিস্তানকে এর চড়া দাম দিতে হবে। ওরা বুলেট ছুঁড়লে আমরা গোলা দিয়ে তার জবাব দেবো।” প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান এখন বুঝেছে যে ভারতের প্রত্যাঘাত প্রতিবার আগের থেকে আরও জোরালো হবে। পাকিস্তান যদি আবার এমন কিছু করার সাহস দেখায় তাহলে তার যথাযোগ্য জবাব দেওয়া হবে। অপারেশন সিঁদুর বন্ধ হয়নি, স্থগিত রয়েছে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের ভারত আত্মবিশ্বাসে পরিপূর্ণ, আত্মনির্ভরতার শক্তিতে বলিয়ান হয়ে সে এগিয়ে চলেছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হল, বিরোধীরা তাঁদের রাজনৈতিক ভাষ্যের জন্য ক্রমশই আরও বেশি করে পাকিস্তানের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছেন।

বর্তমান যুগের যুদ্ধে তথ্য ও ভাষ্য নির্মাণের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এআই দিয়ে তৈরি ভুয়ো তথ্য সেনাবাহিনীর মনোবল ভাঙতে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। বিরোধীরা জাতীয় স্বার্থ উপেক্ষা করে পাকিস্তানের অপপ্রচারের মুখপাত্র হয়ে ওঠায় প্রধানমন্ত্রী উদ্বেগ প্রকাশ করেন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সার্জিকাল স্ট্রাইকের পর বিরোধী নেতারা সেনাবাহিনীর কাছ থেকে প্রমাণ চেয়েছিলেন। যখন জনমত সেনাবাহিনীর পক্ষে গেল তখন বিরোধীরা তাদের অবস্থান বদলে ফেলে বললেন, তাঁদের সময়েও নাকি এমন স্ট্রাইক হয়েছিল। যদিও তার সংখ্যা তিন থেকে পনেরোর মধ্যে ঘোরাফেরা করলো। 
বালাকোট বিমান হানার পরে বিরোধীরা একে সরাসরি চ্যালেঞ্জ না করলেও তার ছবি ও সাক্ষ্য প্রমাণ চেয়েছিলেন বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, বিরোধীরা বারবার কোথায় হানা দেওয়া হয়েছিল, কী কী ধ্বংস হয়েছিল, কতজন মারা গিয়েছিল, এইসব প্রশ্ন তুলেছিলেন। এ ছিল পাকিস্তানের ভাষ্যেরই প্রতিধ্বনি। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতীয় বায়ুসেনার পাইলট অভিনন্দনকে যখন পাকিস্তান ধরেছিল তখনও এদেশের কিছু ব্যক্তি এই ভেবে আনন্দ পাচ্ছিলেন যে এবার প্রধানমন্ত্রী বিপাকে পড়েছেন। অভিনন্দনকে আদৌ দেশে ফেরানো যাবে কিনা তাই নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন তারা। দৃঢ় সংকল্পে ভর করে ভারত অভিনন্দনকে দেশে ফেরানোর পর তারা চুপ করে গিয়েছিলেন। 

এবারও পহেলগাঁও হামলার পরে এক বিএসএফ জওয়ানকে পাকিস্তান যখন বন্দি করেছিল তখনও অনেকে ভেবেছিলেন সরকারকে কোণঠাসা করার একটা সুযোগ পাওয়া গেল। সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা ধরনের জল্পনা ছড়িয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু এইসব প্রয়াস সত্ত্বেও ভারত মর্যাদা ও স্পষ্টতার সঙ্গে তার অবস্থান স্পষ্ট করেছিল এবং প্রতিটি সৈনিককে রক্ষার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছিল। 

এই বিএসএফ জওয়ানও নিরাপদে ভারতে ফিরে এসেছিলেন বলে জানিয়ে শ্রী মোদী বলেন, জঙ্গিরা যখন হাহুতাশ করছে, তাদের মদতদাতারা হাহুতাশ করছে তখন তাই দেখে এদেশের কিছু মানুষও হাহুতাস করতে শুরু করলেন। এই নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা তোলারও চেষ্টা হল। অপারেশন সিঁদুরের সময়ে সমালোচকরা বারেবারে তাদের অবস্থান বদলেছেন। প্রথমে তারা অভিযানের কথা মানতেই রাজি ছিলেন না। তারপরে অভিযান কেন বন্ধ হল তাই নিয়ে প্রশ্ন তুলতে থাকলেন। 

বিরোধীরা দীর্ঘদিন ধরেই সেনাবাহিনীর প্রতি নেতিবাচক মনোভাব নিয়ে চলছেন বলে অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি বিরোধীরা কারগিল বিজয় দিবস উদযাপন করেননি, তার তাৎপর্যকেও স্বীকার করেননি। ডোকলামের সময়েও এই দৃশ্য দেখা গিয়েছিল। ভারতীয় সেনাবাহিনী যখন শৌর্য ও পরাক্রমের পরিচয় দিচ্ছিল, বিরোধী নেতারা তখন সংশয়জনক সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য গোপনে ছড়িয়ে দিচ্ছিলেন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিরোধীরা এখন পাকিস্তানের স্বরে কথা বলছেন। পহেলগাঁও-এর জঙ্গিরা আদৌ পাকিস্তানি ছিল কিনা এই নিয়ে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছেন, একই কথা পাকিস্তান বলেছে। আজ যখন সাক্ষ্য প্রমাণ সবকিছুই প্রকাশ্যে রয়েছে তখনও কিছু ব্যক্তি এইনিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অপারেশন সিঁদুরের একটি দিক নিয়েই বেশি আলোচনা হচ্ছে কিন্তু জাতীয় গৌরব ও সামর্থ্যের এমন দিকও এরমধ্যে রয়েছে যেদিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত। ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এগুলি সারা বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে। পাক ক্ষেপনাস্ত্র ও ড্রোনগুলিকে এই প্রতিরোধ ব্যবস্থা অনায়াসে ব্যর্থ করে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জানান, ৯ মে পাকিস্তান ভারতকে লক্ষ্য করে হাজারের কাছাকাছি ক্ষেপনাস্ত্র ও শসস্ত্র ড্রোন ছুঁড়েছিল। এগুলি মাটিতে পড়লে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারতো। কিন্তু ভারতের আকাশ প্রতিরোধ ব্যবস্থা এগুলি মাঝ আকাশেই নিষ্ক্রিয় করে দিয়েছে। 

আদমপুর বিমানঘাঁটির ওপর হামলা নিয়ে পাকিস্তান ভুয়ো তথ্য ছড়িয়েছে বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি নিজে পরের দিনই আদমপুর ঘাঁটি পরিদর্শন করে এই মিথ্যা সবার সামনে এনে দিয়েছেন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে যারা বিরোধী পক্ষে রয়েছেন তাঁরা দীর্ঘদিন দেশ চালিয়েছেন। তাঁরা খুব ভালো করেই জানেন প্রশাসনিক ব্যবস্থা কীভাবে কাজ করে। তাদের অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও তাঁরা ক্রমাগত সরকারী ব্যাখ্যা গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছেন। শ্রী মোদী বলেন, বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতি, বিদেশ মন্ত্রীর বক্তব্য, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর বক্তব্য কোনও কিছুই বিরোধীরা মানতে নারাজ। যে দল দশকের পর দশক ধরে শাসন ক্ষমতায় ছিল তারা কীভাবে দেশের প্রতিষ্ঠানগুলির ওপর এতটা আস্থাহীন হতে পারে তাই নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বিস্ময় প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, বিরোধীদের দেখে মনে হয় তারা পাকিস্তানের রিমোট কন্ট্রোলে চলছেন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পহেলগাঁও হামলায় যে জঙ্গিরা যুক্ত ছিল গতকালই অপারেশন মহাদেব-এ ভারতীয় সেনাবাহিনীর হাতে তারা নিহত হয়েছে। এই অভিযান নিয়ে বিরোধীরা যে উপহাস করেছিলেন তার সমালোচনা করে শ্রী মোদী বলেন, এর থেকেই বিরোধীদের নিম্নগামী দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় পাওয়া যায়। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অপারেশন সিঁদুর-এ ভারতের সামরিক শক্তির যে পরিচয় পাওয়া গেছে তা নিজে থেকে আসেনি এরজন্য সুনির্দিষ্ট প্রয়াস চালাতে হয়েছে। বিরোধীরা যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখন প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে স্বনির্ভরতা অর্জন নিয়ে কোনও ভাবনাচিন্তাই করা হতো না। 


সেইসময়ে প্রতিটি সামরিক চুক্তিকে ব্যক্তিগত লাভের সুযোগ বলে ধরা হতো। ভারত সাধারণ সরঞ্জামের জন্যও বিদেশের মুখাপেক্ষি হয়ে থাকতো। ভারতীয় সেনাবাহিনীকে দশকের পর দশক ধরে আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রের জন্য অপেক্ষা করে থাকতে হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। স্বাধীনতার পর ভারতের প্রতিরক্ষা উৎপাদন ব্যবস্থাকে ইচ্ছাকৃতভাবে দুর্বল করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। 

শ্রী মোদী বলেন, প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উৎপাদন বছরের পর বছর ধরে বন্ধ ছিল। সেই পরিস্থিতি চলতে থাকলে আজ একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে ভারত অপারেশন সিঁদুরের কল্পনাও করতে পারতো না। গত এক দশকে মেক-ইন-ইন্ডিয়ার আওতায় অস্ত্রশস্ত্র উৎপাদনের যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তা অপারেশন সিঁদুরের সাফল্যে নির্ণায়ক ভূমিকা পালন করেছে বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সংস্কারও স্বাধীনতার পর এই প্রথম হয়েছে। চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফের নিয়োগ ছিল বড় ধরনের এক সংস্কার। দীর্ঘদিন ধরে এই নিয়ে বিতর্ক চললেও এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এই পদে নিয়োগ করলেও ভারতে কখনও তা হয়নি। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বায়ুসেনার সংযুক্তি সাধন ভারতের প্রতিরক্ষা ক্ষমতাকে বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। অপারেশন সিঁদুরের সাফল্য এই রূপান্তরেরই প্রতিফলন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত আজ তার প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রকে বেসরকারি সংস্থার জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে এবং বেসরকারি সংস্থাগুলি চোখে পড়ার মতো অগ্রগতি করছে। টিয়ার টু ও টিয়ার থ্রি শহরগুলিতে শয়ে শয়ে প্রতিরক্ষা স্টার্টআপ গড়ে ওঠেছে, এর নেতৃত্ব দিচ্ছেন ২৭ থেকে ৩০ বছর বয়সী তরুণ পেশাদাররা, যাদের মধ্যে বহু মহিলাও রয়েছেন। 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের প্রতিরক্ষা বাজেট গত এক দশকে প্রায় তিনগুণ বেড়েছে। প্রতিরক্ষা উৎপাদন বেড়েছে প্রায় আড়াইশো শতাংশ। গত ১১ বছরে প্রতিরক্ষা রফতানি ৩০ গুণেরও বেশি বেড়েছে। বর্তমানে প্রায় ১০০টি দেশে ভারতীয় প্রতিরক্ষা সামগ্রী রফতানি করা হচ্ছে। 


প্রধানমন্ত্রী বলেন, অপারেশন সিঁদুর ভারতকে বিশ্ব প্রতিরক্ষা বাজারে দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠা করেছে। ভারতীয় অস্ত্রশস্ত্রের ক্রমবর্ধমান চাহিদা দেশীয় শিল্পকে আরও মজবুত করবে, এমএসএমইগুলির ক্ষমতায়ন ঘটাবে এবং যুব সমাজের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে। 

শ্রী মোদী বলেন, ভারত যুদ্ধের নয়, বুদ্ধের ভূমি। ভারত শান্তি ও সমৃদ্ধি চাইলেও সেই পথে এগোবার জন্য শক্তি ও সংকল্পের প্রয়োজন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতীয় সুরক্ষা নিয়ে বিরোধীদের কোনো সুস্পষ্ট ভাবনা কোনওদিনই ছিল না। তারা বরাবরই এরসঙ্গে সমঝোতা করে গেছেন। পাক অধিকৃত কাশ্মীর কেন পুনর্দখল করা গেল না, এই প্রশ্ন যারা তুলছেন তারা আগে বলুন ওই এলাকা পাকিস্তানের হাতে তুলে দিয়েছিল কারা। 

শ্রী মোদী বলেন, ভুল সিদ্ধান্তের জন্য ৩৮ হাজার বর্গ কিলোমিটার ভারতীয় ভূখণ্ড আকসাই চিনের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। ভুলবশত ওই এলাকা বন্ধা জমি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। ১৯৬২ এবং ৬৩ সালে তৎকালীন শাসক দল পুঞ্চ, উরি, নিলম উপত্যকা এবং কিষাণ গঙ্গা সহ জম্মু-কাশ্মীরের প্রধান প্রধান অঞ্চল শত্রুপক্ষের হাতে তুলে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৬৬ সালে কচ্ছের রানে যে মধ্যস্ততা হয়েছিল তার ফলস্বরূপ বিতর্কিত চাঁদবেট অঞ্চল সহ ৮০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা পাকিস্তানকে দেওয়া হয়। ১৯৬৫ সালের যুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনী হাজিপুর পাস পুনর্দখল করলেও তৎকালীন শাসকদল তা ফেরত দিয়ে দেয়। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালের যুদ্ধে ভারত পাক ভূখণ্ডের হাজার হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা নিজেদের দখলে এনেছিল। ৯৩ হাজার মানুষকে যুদ্ধবন্দি করেছিল। সেইসময় পাক অধিকৃত কাশ্মীর পুনর্দখলের সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করা হয়। এমনকি সীমান্তের কাছে থাকা কর্তারপুর সাহিবকেও সুরক্ষিত রাখা যায়নি। ১৯৭৪ সালে কাচাথিভু দ্বীপ শ্রীলঙ্কাকে উপহার দেওয়া হয়। এর ফল আজও তামিলনাড়ুর মৎস্যজীবীদের ভুগতে হচ্ছে। 

বিরোধীরা শাসন ক্ষমতায় থাকার সময়ে জাতীয় সুরক্ষার সঙ্গে আপস করে সিয়াচেন থেকে ভারতীয় সেনা প্রত্যাহারের চিন্তা-ভাবনা করেছিলেন বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। 

শ্রী মোদী বলেন, ২৬/১১-এর ভয়াবহ মুম্বাই হামলার কয়েক দিনের মধ্যেই তৎকালীন সরকার বিদেশী শক্তির চাপে পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি হয়ে যায়। সেই সময় একজন পাক কূটনীতিককেও বহিঃস্কার করা হয়নি, একটি ভিসাও বাতিল করা হয়নি। পাক মদতপুষ্ট জঙ্গি হামলা চলতে থাকলেও তৎকালীন সরকার পাকিস্তানকে মোস্ট ফেবার্ড নেশনের মর্যাদা দিয়ে রেখেছিল। 

দেশের নাগরিকরা যখন মুম্বাই হামলার বিচার চাইছিলেন, তৎকালীন শাসকদল তখন পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্যে ব্যস্ত ছিল। পাকিস্তান যখন এদেশে জঙ্গি পাঠাচ্ছিল তখন সরকার শান্তির কবিতা পাঠের আসর বসিয়েছিল। 

তাঁর সরকার এইসব কিছুর অবসান ঘটিয়েছে, পাকিস্তানের মোস্ট ফেবার্ড নেশনের মর্যাদা প্রত্যাহার করেছে, পাক নাগরিকদের ভিসা দেওয়া বন্ধ করেছে, আতারি ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। ভারতের জাতীয় স্বার্থকে বন্ধক রেখে সিন্ধু জলচুক্তি করা হয়েছিল। 

ভারতের আত্ম পরিচয়ের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত সিন্ধু ও ঝিলম নদীর জলবন্টনের বিষয়টি বিশ্বব্যাঙ্কের মধ্যস্থতার জন্য পাঠানো হয়েছিল বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। 
শ্রী মোদী বলেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ভারতে প্রবাহিত নদীর ৮০ শতাংশ জল পাকিস্তানকে দিতে সম্মত হয়েছিলেন। বিচক্ষণতা, কূটনীতি এবং জাতীয় স্বার্থের দিকে কোনও নজর দেওয়া হয়নি। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেসব নদীর উৎস ভারতীয় ভূখণ্ডে, তার জল এদেশের নাগরিকদেরই প্রাপ্য। 

পরিস্থিতি এমন না হলে পশ্চিম ভারতে অনেক জল প্রকল্প গড়ে তোলা যেত। পাঞ্জাব, হরিয়ানা, রাজস্থান ও দিল্লির কৃষকদের চাষের জল ও পানীয় জলের কোনও অভাব থাকতো না বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৪ সালের আগে গোটা দেশ সবসময় আতঙ্কের মধ্যে বাস করতো। যেকোনও জায়গায় যেকোনো সময়ে বোমা বিস্ফোরণ হতো। তৎকালীন সরকার নাগরিকদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়েছিল। গত ১১ বছরে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, জঙ্গি হামলার সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে কমেছে বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। 

২০০১ সালে সংসদে জঙ্গি হামলার প্রসঙ্গ তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তৎকালীন শাসক দল দোষী সাব্যস্ত জঙ্গি আফজল গুরুকে বেনিফিট অফ ডাউট দিয়েছিল। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তৎকালীন শাসক দলের এক নেতা একজন শীর্ষস্থানীয় মার্কিন কূটনীতিককে বলেছিলেন, হিন্দু গোষ্ঠীগুলি লস্কর-ই-তৈবার থেকেও বড় বিপদ। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজনৈতিক মত পার্থক্য থাকতেই পারে কিন্তু জাতীয় স্বার্থকে সবার ওপরে রাখতে হবে। 

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভারতের কন্ঠস্বর তুলে ধরার জন্য তিনি ভারতীয় প্রতিনিধি দলের প্রশংসা করেন। 
প্রধানমন্ত্রী দৃঢ় স্বরে বলেন, ভারত সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। যতদিন না সীমান্তপারের সন্ত্রাস বন্ধ হয় ততদিন অপারেশন সিঁদুর জারি থাকবে। পাকিস্তানের প্রতি এ এক সরাসরি হুঁশিয়ারী। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের ভবিষ্যত সুরক্ষিত, ভারত সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে চলেছে। মানুষের আবেগের প্রতিফলন ঘটিয়ে অর্থপূর্ণ এই আলোচনার জন্য তিনি সভার প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।   

 

 

SC/ SD/AG


(Release ID: 2150504)