প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
পশ্চিমবঙ্গের দুর্গাপুরে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ
Posted On:
18 JUL 2025 5:57PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ১৮ জুলাই, ২০২৫
পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল ডঃ সি.ভি. আনন্দ বোস জি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার আমার সহকর্মী হরদীপ সিং পুরী জি, শান্তনু ঠাকুর জি এবং সুকান্ত মজুমদার জি, পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী জি, সংসদে আমার সহকর্মী সৌমিক ভট্টাচার্য জি এবং জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো জি, অন্যান্য জনপ্রতিনিধিরা, আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা, নমস্কার!
আমাদের দুর্গাপুর, একটি ইস্পাত নগরী হওয়ার পাশাপাশি, ভারতের কর্মশক্তির একটি প্রধান কেন্দ্রও। দুর্গাপুর ভারতের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আজ, আমাদের সেই ভূমিকা আরও জোরদার করার সুযোগ রয়েছে। কিছুক্ষণ আগে, এখানে ৫,৪০০ কোটি টাকার প্রকল্পের উদ্বোধন বা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। এই প্রকল্পগুলি এই অঞ্চলে যোগাযোগ বৃদ্ধি করবে। এগুলি গ্যাস-ভিত্তিক পরিবহন ব্যবস্থা এবং গ্যাস-ভিত্তিক অর্থনীতিকেও উন্নীত করবে। আজ চালু হওয়া প্রকল্পগুলি এই ইস্পাত নগরীর পরিচয়কে আরও শক্তিশালী করবে। অন্য কথায়, এই উদ্যোগগুলি "মেক ইন ইন্ডিয়া, মেক ফর দ্য ওয়ার্ল্ড" মন্ত্রের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে। এগুলি এখানকার যুবকদের জন্য অসংখ্য কর্মসংস্থানের সুযোগও তৈরি করবে। এই প্রকল্পগুলির জন্য আমি আপনাদের সকলকে আন্তরিকভাবে অভিনন্দন জানাই।
বন্ধুগণ,
আজ, বিশ্ব 'বিকশিত ভারত' (উন্নত ভারত) সংকল্পের কথা বলছে। এর পিছনে রয়েছে রূপান্তর ভাবনা। আজ ভারতজুড়ে যে পরিবর্তনগুলি দেখা যাচ্ছে - এই রূপান্তর 'বিকশিত ভারত'-এর ভিত্তি স্থাপন করছে। এই পরিবর্তনগুলির একটি প্রধান দিক হল ভারতের পরিকাঠামো। যখন আমি পরিকাঠামোর কথা বলি, তখন আমি সামাজিক, ভৌত এবং ডিজিটাল পরিকাঠামোর কথা বলি। দরিদ্রদের জন্য চার কোটিরও বেশি স্থায়ী ঘর, কোটি কোটি শৌচাগার, ১২ কোটিরও বেশি বাড়িতে নলের মাধ্যমে পরিশ্রুত পানীয় জলের সংযোগ, হাজার হাজার কিলোমিটার নতুন রাস্তা, নতুন মহাসড়ক, নতুন রেললাইন, ছোট শহরগুলিতে বিমানবন্দর এবং প্রত্যেক বাড়িতে এবং গ্রামে ইন্টারনেট সংযোগ - এই সমস্ত আধুনিক পরিকাঠামো পশ্চিমবঙ্গ সহ দেশের প্রতিটি রাজ্যকে উপকৃত করছে।
বন্ধুগণ,
পশ্চিমবঙ্গে ট্রেন সংযোগের ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব কাজ করা হয়েছে। দেশের যেসব রাজ্যে প্রচুর সংখ্যক বন্দে ভারত ট্রেন চলছে, তার মধ্যে বাংলা অন্যতম। কলকাতা মেট্রো দ্রুত সম্প্রসারিত হচ্ছে। এখানে নতুন নতুন রেললাইন স্থাপন করা হচ্ছে, এবং রেললাইন প্রশস্তকরণ ও বিদ্যুতায়নের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। অনেক রেলস্টেশনে আধুনিকীকরণ করা হচ্ছে। এছাড়াও, প্রচুর সংখ্যক রেলওয়ে ওভারব্রিজও তৈরি করা হচ্ছে। আজ, পশ্চিমবঙ্গকে আরও দুটি রেলওয়ে ওভারব্রিজ দেওয়া হয়েছে। এই সমস্ত প্রচেষ্টা বাংলার মানুষের জীবনকে উল্লেখযোগ্যভাবে সহজ করবে।
বন্ধুগণ,
আমরা এখানকার বিমানবন্দরটিকে উড়ান (উড়ে দেশ কা আম নাগরিক) প্রকল্পের সঙ্গে সংযুক্ত করেছি। গত এক বছরেই ৫,০০,০০০ এরও বেশি যাত্রী এর মধ্য দিয়ে যাতায়াত করেছেন। আপনারা ভালোভাবেই জানেন যে, এই ধরনের পরিকাঠামো যখন তৈরি হয়, তখন মানুষ কেবল উন্নত সুযোগ-সুবিধা থেকে উপকৃত হয় না, হাজার হাজার তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থানও হয়। এমনকি এই প্রকল্পগুলি সম্পন্ন করতে ব্যবহৃত কাঁচামালের জোগান ও উৎপাদনের সময় ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়।
বন্ধুগণ,
গত ১০-১১ বছরে, দেশে গ্যাস সংযোগের ক্ষেত্রে যে কাজ করা হয়েছে তা অতুলনীয়। গত দশক ধরে, দেশের প্রত্যেক বাড়িতে এলপিজি গ্যাস পৌঁছেছে এবং এই সাফল্য বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে। আমরা এক জাতি, এক গ্যাস গ্রিডের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কাজ করেছি এবং প্রধানমন্ত্রী উর্জা গঙ্গা যোজনা চালু করেছি। এই প্রকল্পের আওতায়, পশ্চিমবঙ্গ সহ পূর্ব ভারতের ছয়টি রাজ্যে গ্যাস পাইপলাইন স্থাপন করা হচ্ছে। লক্ষ্য হল এই রাজ্যগুলির শিল্প এবং পরিবারগুলিতেও সুলভ মূল্যের পাইপযুক্ত গ্যাস পৌঁছানো নিশ্চিত করা। যখন গ্যাস পাওয়া যাবে, তখনই এই রাজ্যগুলির যানবাহনগুলি সিএনজিতে চলতে সক্ষম হবে এবং আমাদের শিল্পগুলি গ্যাস-ভিত্তিক প্রযুক্তি গ্রহণ করতে সক্ষম হবে। আমি খুশি যে দুর্গাপুরের শিল্পভূমি এখন জাতীয় গ্যাস গ্রিডের অংশ হয়ে উঠেছে। এর ফলে স্থানীয় শিল্পগুলি ব্যাপকভাবে উপকৃত হবে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে, পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ২৫ থেকে ৩০ লক্ষ পরিবার সাশ্রয়ী মূল্যের পাইপযুক্ত গ্যাস পাবে। এর অর্থ এই যে এই পরিবারগুলির জন্য এবং বিশেষ করে আমাদের মা ও বোনদের জন্য জীবন সহজ হয়ে উঠবে। ফলস্বরূপ হাজার হাজার কর্মসংস্থানের সুযোগও তৈরি হবে।
বন্ধুগণ,
আজ দুর্গাপুর এবং রঘুনাথপুরের প্রধান ইস্পাত ও বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিকেও নতুন প্রযুক্তিতে সজ্জিত করা হয়েছে। প্রায় ১,৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। এই কেন্দ্রগুলি এখন আরও দক্ষ হয়ে উঠেছে এবং বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য প্রস্তুত। এই প্রকল্পগুলির সফল সমাপ্তির জন্য আমি বাংলার জনগণকে বিশেষ অভিনন্দন জানাই।
বন্ধুগণ,
ভারতের কারখানা হোক বা আমাদের ক্ষেত-খামার - সর্বত্রই কাজ চলছে একটি স্পষ্ট সংকল্প নিয়ে: ২০৪৭ সালের মধ্যে ভারতকে একটি উন্নত জাতিতে পরিণত করা। আমাদের পথ হল: উন্নয়নের মাধ্যমে ক্ষমতায়ন, কর্মসংস্থানের মাধ্যমে স্বনির্ভরতা এবং সংবেদনশীলতার মাধ্যমে সুশাসন। এই নীতিগুলি দ্বারা পরিচালিত হয়ে, আমরা পশ্চিমবঙ্গকে ভারতের উন্নয়ন যাত্রায় একটি শক্তিশালী ইঞ্জিনে পরিণত করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আবারও, আমি আপনাদের সকলকে এই উন্নয়ন প্রকল্পগুলির জন্য অভিনন্দন জানাই। আপাতত এটুকুই - আমার আরও অনেক কিছু বলার আছে, তবে এই প্ল্যাটফর্মে বলার পরিবর্তে, কাছাকাছি পরবর্তী পর্যায় থেকে বলাই ভালো হবে। সেখানে কী বলা হবে তা শোনার জন্য সমগ্র বাংলা এবং সমগ্র দেশ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। এমনকি সংবাদমাধ্যমও অত্যন্ত কৌতূহলী। তাই বন্ধুরা, এই অনুষ্ঠানের জন্য আমি আমার কথা এখানেই থামাচ্ছি। কিন্তু মাত্র কয়েক মুহূর্তের মধ্যে, আমি আবারও তীব্র সংকল্প নিয়ে কথা বলব - সেখান থেকে। আপনাদেরকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
SC/SB/DM/
(Release ID: 2146108)