প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী রোজগার মেলায় ভাষণ দিয়েছেন
Posted On:
12 JUL 2025 1:11PM by PIB Kolkata
নতুন দিল্লি, ১২ জুলাই ২০২৫
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ রোজগার মেলায় ভাষণ দিয়েছেন। এই অনুষ্ঠানে তিনি ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি দপ্তর ও সংস্থার জন্য ৫১,০০০ নিয়োগপত্র নবনিযুক্ত যুবক-যুবতীদের হাতে তুলে দেয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে আজ থেকে এই সব যুবক-যুবতী নতুন দায়িত্ব পালন করা শুরু করবেন। তিনি বিভিন্ন দপ্তরে যোগদানের কারণে তাঁদের অভিনন্দন জানান। আলাদা আলাদা দপ্তরে এঁরা নিজ নিজ কাজ করলেও মূল লক্ষ্য হবে এক — দেশের জন্য সেবা করা। এক্ষেত্রে 'সর্বাগ্রে নাগরিক'- সিটিজেন ফার্স্ট নীতি অনুসরণ করার পরামর্শ দেন তিনি।
শ্রী মোদী বলেন, ভারতের জনবিন্যাস এবং গণতন্ত্রের শক্তি অতুলনীয়। বিশ্বের সব থেকে বেশি যুবক-যুবতীর বাস এদেশে। এছাড়াও পৃথিবীর বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হল ভারত। এই অনন্য শক্তি দেশে-বিদেশে ভারতের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে। ভারতের এই বিপুল যুবশক্তিই সব থেকে বড় মূলধন। এই মূলধনকে দীর্ঘমেয়াদী সমৃদ্ধির জন্য কাজে লাগানোর উদ্দেশ্যে সরকার একে অনুঘটকে রূপান্তরিত করতে উদ্যোগী হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, "মাত্র দুদিন আগে আমি পাঁচ দেশ সফর করে এসেছি। প্রতিটি দেশে ভারতের যুবশক্তি অনুভূত হয়েছে। সফরকালে যে চুক্তিগুলি স্বাক্ষরিত হয়েছে সেগুলির ফলে দেশে-বিদেশে থাকা ভারতীয় যুবসম্প্রদায় উপকৃত হবে।" সফরকালে প্রতিরক্ষা, ওষুধ শিল্প, ডিজিটাল প্রযুক্তি, শক্তি এবং বিরল মৃত্তিকা সংক্রান্ত খনিজ পদার্থের সঙ্গে যুক্ত একাধিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এই চুক্তিগুলির প্রভাব হবে দীর্ঘমেয়াদী। "এই উদ্যোগগুলি আন্তর্জাতিক স্তরে অর্থনীতিতে ভারতের অবস্থান যেমন শক্তিশালী করবে, পাশাপাশি নির্মাণ শিল্প এবং পরিষেবা ক্ষেত্রে ভারতীয় যুবক-যুবতীদের কাছে নতুন নতুন সুযোগ তৈরি করবে।"
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কর্মসংস্থানের প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে। একবিংশ শতাব্দীতে কাজের ধারা দ্রুত বদলে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে উদ্ভাবন, স্টার্টআপ এবং গবেষণার ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, ভারতে ক্রমবর্ধমান এই সুযোগ-সুবিধাগুলি দেশের যুব সম্প্রদায়কে বড় বড় স্বপ্ন দেখতে সাহায্য করছে। নতুন প্রজন্মের প্রতি তাঁর আস্থা রয়েছে। যুবসম্প্রদায় যখন উচ্চাশা এবং স্বপ্ন নিয়ে নতুন কিছু করার উদ্দেশ্যে উদ্যোগী হয়, তখন তিনি ব্যক্তিগত ভাবে গর্ব অনুভব করেন।
শ্রী মোদী বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার বেসরকারি ক্ষেত্রে নতুন নতুন কর্মসংস্থান গড়ে তুলতে আগ্রহী। সম্প্রতি সরকার কর্মসংস্থান ভিত্তিক উৎসাহ প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে। এই প্রকল্পে যুবক-যুবতীরা বেসরকারি ক্ষেত্রে তাঁদের প্রথম চাকরি পেলে সরকার প্রত্যেককে ১৫,০০০ টাকা দেবে। "এককথায় বলা যায়, সরকার তাঁদের প্রথম চাকরির প্রথম মাইনেটি দেবে। এর জন্য বাজেটে প্রায় ১ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। আশা করা যায় এই প্রকল্প সাড়ে তিন কোটি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে।"
প্রধানমন্ত্রী দেশের উন্নয়নে, কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ভারতের উৎপাদন শিল্পকে বৈপ্লবিক শক্তি বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এর মাধ্যমে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশে ভারতের যাত্রা ত্বরান্বিত হবে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে মেক ইন ইন্ডিয়া কর্মসূচি যথেষ্ট শক্তিশালী হয়েছে। উৎপাদন ভিত্তিক উৎসাহ প্রকল্পেই দেশজুড়ে ১১ লক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। মোবাইল ফোন উৎপাদন এবং বৈদ্যুতিন ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব সম্প্রসারণ ঘটেছে। "আজ ভারতে বৈদ্যুতিন সামগ্রী উৎপাদনের পরিমাণ প্রায় ১১ লক্ষ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। গত ১১ বছরে যা পাঁচগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর আগে দেশে ২ থেকে ৪টি মোবাইল ফোন উৎপাদনকারী সংস্থা ছিল। আজ ভারতে ৩০০টি জায়গায় মোবাইল ফোন উৎপাদন হচ্ছে। এর ফলে লক্ষ লক্ষ যুবক-যুবতী কাজ পেয়েছেন।"
প্রধানমন্ত্রী প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদনের ক্ষেত্রে বিশ্বের প্রথম সারির দেশগুলির তালিকায় ভারতের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেন। বর্তমানে দেশে ১ লক্ষ ২৫ হাজার কোটি টাকার বেশি সামরিক সরঞ্জাম উৎপাদিত হচ্ছে। ভারত আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সব থেকে বেশি লোকোমোটিভ উৎপাদক রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হয়েছে। লোকোমোটিভ, রেল এবং মেট্রোর কোচ বিদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। গত ৫ বছরে গাড়ি নির্মাণ শিল্পে প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগ হয়েছে ৪ হাজার কোটি মার্কিন ডলার। এর ফলে নতুন কারখানা তৈরি হয়েছে, নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে এবং রেকর্ড পরিমাণে গাড়ি বিক্রি হয়েছে।
শ্রী মোদী আন্তর্জাতিক শ্রম সংগঠনে সদ্য প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ভারতের জনকল্যাণমূলক উদ্যোগের সুদূরপ্রসারি প্রভাব এই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। গত এক দশকে ৯০ কোটিরও বেশি ভারতবাসী বিভিন্ন সরকারি কল্যাণমূলক প্রকল্পের আওতায় এসেছেন। এই প্রকল্পগুলি শুধু কল্যাণমূলক কাজেই সীমাবদ্ধ নেই, এর মাধ্যমে মূলত গ্রামাঞ্চলে বিপুল কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।
শ্রী মোদী পিএম আবাস যোজনার মতো ফ্ল্যাগশিপ কর্মসূচিগুলির বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে জানিয়েছেন। এই প্রকল্পে ৪ কোটি বাড়ি তৈরি হয়েছে। আরও ৩ কোটি বাড়ি তৈরির কাজ চলছে। ১২ কোটি শৌচালয় স্বচ্ছ ভারত অভিযানে নির্মিত হয়েছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে নির্মাণকর্মী এবং কলের মিস্ত্রীরা প্রচুর কাজ পেয়েছেন। উজ্জ্বলা যোজনায় ১০ কোটির বেশি রান্নার গ্যাসের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। এর ফলে বটলিং শিল্পে পরিকাঠামো এবং রান্নার গ্যাস সরবরাহের ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন এসেছে। হাজার হাজার বিতরণ কেন্দ্র তৈরি হয়েছে। ফল স্বরূপ লক্ষ লক্ষ নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, "বাড়ির ছাদে পিএম সূর্য ঘর মুফত বিজলি যোজনার আওতায় সোলার প্যানেল বসানোর সুযোগ তৈরি হয়েছে। এই প্রকল্পে প্রত্যেক বাড়িকে ৭৫ হাজার টাকা দেওয়া হবে। এর ফলে ওই বাড়িগুলির বিদ্যুতের বিল কমবে। আবার কারিগর, ইঞ্জিনিয়ার এবং সোলার প্যানেল নির্মাতাদের জন্য নতুন নতুন কাজের সুযোগ তৈরি হবে। গ্রামাঞ্চলে নমো ড্রোন দিদি প্রকল্পের আওতায় মহিলাদের ড্রোন পাইলটের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এভাবে তাঁদের ক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।"
শ্রী মোদী বলেন, ৩ কোটি লাখপতি দিদি গড়ে তুলতে যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তা সফলভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে। ইতিমধ্যে দেড়কোটি মহিলা লাখপতি দিদি হয়েছেন। মহিলারা যাতে সুস্থায়ী কর্মসংস্থানের সুযোগ পান তার জন্য ব্যাঙ্ক সখী, বীমা সখী, কৃষি সখী এবং পশু সখীর মতো বিভিন্ন প্রকল্পের সূচনা হয়েছে। রাস্তার হকারদের জন্য আনুষ্ঠানিক সহায়তার প্রকল্প পিএম স্বনিধি কার্যকর হয়েছে। এর ফলে মূল ধারার অর্থনীতিতে লক্ষ লক্ষ নাগরিক অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। একই ভাবে পিএম বিশ্বকর্মা প্রকল্পে প্রশিক্ষণ দান এবং যন্ত্রপাতি ও মূলধনের ব্যবস্থা করায় হস্তশিল্পী এবং বিভিন্ন ধরনের পরিষেবা প্রদানকারীদের চিরায়ত জীবিকা আরও শক্তিশালী হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাত্র ১০ বছরে অগণিত প্রকল্পের সুফল পাওয়া যাচ্ছে। ২৫ কোটি নাগরিক দারিদ্র্যের নাগপাশ থেকে মুক্ত হয়েছেন। "কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি না হলে এত বড় পরিবর্তন বাস্তবায়িত হতো না। তাই বর্তমানে বিশ্ব ব্যাঙ্কের মতো গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলি ভারতের প্রশংসা করছে। পৃথিবীর প্রথম সারির যে দেশগুলিতে সাম্য অবস্থা তৈরি হয়েছে, ভারত তার মধ্যে অন্যতম।"
বর্তমান সময়কালকে প্রধানমন্ত্রী উন্নয়নের মহাযজ্ঞ বলে অভিহিত করেন। এই সময় দারিদ্র্য দূরীকরণে এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে জাতীয় স্তরে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি দেশের যুবসম্প্রদায়কে এবং সরকারি কাজে সদ্য নিয়োগ প্রাপ্তদের নতুন শক্তি ও উৎসাহ উদ্দীপনায় আরও সক্রিয় ভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।
শ্রী মোদী তাঁর ভাষণের শেষে বলেন, প্রত্যেক নাগরিক যাতে "নাগরিক দেবঃ ভবঃ" ভাবনায় পরিষেবা পান, তা নিশ্চিত করতে হবে। এই কাজকে পবিত্র কর্তব্য হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। সদ্য নিয়োগপ্রাপ্তদের আবারও আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, জনসেবার এক উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ তাঁদের গড়ে তুলতে হবে।
প্রেক্ষাপট
দেশের ৪৭টি জায়গায় ষোড়শ রোজগার মেলা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মসংস্থান সৃষ্টিকে অগ্রাধিকার দিতে প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকারের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে এই মেলার আয়োজন করা হয়। রোজগার মেলা যুবক-যুবতীদের ক্ষমতায়ন এবং দেশ গড়ার কাজে যুক্ত হওয়ার সুযোগ নিয়ে এসেছে। এপর্যন্ত ১০ লক্ষের বেশি নিয়োগপত্র এই রোজগার মেলাগুলিতে বিতরণ করা হয়েছে।
রেল, স্বরাষ্ট্র, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রক ছাড়াও ডাকবিভাগ, আর্থিক পরিষেবা বিভাগের মতো বিভিন্ন দপ্তরে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্তরা কাজ করার সুযোগ পাবেন।
SC/CB/AS
(Release ID: 2144319)
Read this release in:
English
,
Urdu
,
Marathi
,
Hindi
,
Nepali
,
Manipuri
,
Bengali-TR
,
Assamese
,
Punjabi
,
Gujarati
,
Odia
,
Tamil
,
Telugu
,
Kannada
,
Malayalam