প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
বিহারের সিওয়ানে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের বঙ্গানুবাদ
Posted On:
20 JUN 2025 3:15PM by PIB Kolkata
নতুন দিল্লি, ২০ জুন ২০২৫
ভারত মাতার জয়!
ভারত মাতার জয়!
ভারত মাতার জয়!
উপস্থিত সবাইকে প্রণাম জানাই। বাবা মহেন্দ্র নাথ, বাবা হংসনাথ, সহগরা ধাম, মা থাওয়ে ভবানী, মা অম্বিকা ভবানী, দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি, দেশরত্ন ডঃ রাজেন্দ্র প্রসাদ এবং লোকনায়ক জয়প্রকাশ নারায়ণের পবিত্র ভূমিতে দাঁড়িয়ে আমি আপনাদের সবাইকে অভিনন্দন জানাই!
বিহারের মাননীয় রাজ্যপাল শ্রী আরিফ মোহাম্মদ খান জি, বিহারের জনগণের সেবায় সমর্প্রিতপ্রাণ শ্রদ্ধেয় মুখ্যমন্ত্রী শ্রী নীতিশ কুমার জি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় আমার সহকর্মী জীতন রাম মাঁঝি জি, গিরিরাজ সিং জি, ললন সিং জি, চিরাগ পাসওয়ান জি, রামনাথ ঠাকুর জি, নিত্যানন্দ রায় জি, সতীশ চন্দ্র দুবে জি, রাজভূষণ চৌধুরী জি, বিহারের উপ-মুখ্যমন্ত্রী সম্রাট চৌধুরী জি, বিজয় কুমার সিনহা জি, সংসদে আমার সহকর্মী উপেন্দ্র কুশওয়াহা জি, বিহারের বিজেপির অধ্যক্ষ দিলীপ জয়সওয়াল জি, উপস্থিত অন্যান্য মন্ত্রীগণ, সাংসদ এবং বিধায়কগণ, আর আমার প্রিয় বিহারের ভাই ও বোনেরা!
এই সিওয়ানের মাটি আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের অনুপ্রেরণাস্থল। এই ভূমি আমাদের গণতন্ত্রকে, দেশকে, সংবিধানকে অনেক শক্তি যুগিয়েছে। এই সিওয়ানের মাটি দেশকে রাজেন্দ্র বাবুর মতো মহান সন্তান দিয়েছে। সংবিধান রচনা থেকে শুরু করে দেশকে সঠিক পথ দেখানোর ক্ষেত্রে রাজেন্দ্র বাবুর অনেক বড় ভূমিকা রয়েছে। এই সিওয়ানের মাটি দেশকে ব্রজ কিশোর প্রসাদ জি-এর মতো মহান সমাজ সংস্কারককেও দিয়েছে। ব্রজবাবু নারী ক্ষমতায়নকে নিজের জীবনের লক্ষ্য করে তুলেছিলেন।
বন্ধুগণ,
আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে এহেন মহাত্মা পুরুষদের জীবনের লক্ষ্যগুলিকে আমাদের এনডিএ-র ডবল ইঞ্জিন সরকার দৃঢ় প্রত্যয়ের সঙ্গে এগিয়ে নিয়ে চলেছে। আজকের এই অনুষ্ঠান এই ধরনের অসংখ্য প্রচেষ্টারই একটি অঙ্গ। আজ, এই মঞ্চ থেকে, কয়েক হাজার কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন কিংবা শিলান্যাস হয়েছে। উন্নয়নের এই প্রকল্পগুলি আমাদের বিহারকে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যাবে, সমৃদ্ধ বিহারে পরিণত করবে। সিওয়ান, সাসারাম, বক্সার, মতিহারি, বেতিয়া এবং আরা-র মতো বিহারের সমস্ত এলাকা যেন ক্রমাগত পুষ্পিত ও পল্লবিত হতে থাকে, তা সুনিশ্চিত করার ক্ষেত্রে এই প্রকল্পগুলি বড় ভূমিকা পালন করবে। এগুলির মাধ্যমে বিহারের গরিব, বঞ্চিত, দলিত, মহাদলিত, পিছিয়ে পড়া, অতি পিছিয়ে পড়া - প্রত্যেক সমাজের জনগণের জীবন সহজ হবে। আমি বিহারের জনগণকে, আপনাদের সকলকে এই প্রকল্পগুলির জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই। আমি একটু আগে যখন এখানে আসছিলাম ... গতকাল ভালোই বৃষ্টি হয়েছে, সকালেও সামান্য বৃষ্টি হয়েছে। তা সত্ত্বেও আপনারা এই বিপুল সংখ্যায় এখানে এসেছেন, আমাদের আশীর্বাদ দিয়েছেন, সেজন্য আমি হৃদয় থেকে আপনাদের যতই ধন্যবাদ জানাই না কেন তা কম পড়বে।
ভাই ও বোনেরা,
আপনারা সকলেই জানেন, আমি গতকালই বিদেশ থেকে ফিরেছি। এই সফরে বিশ্বের অনেক বড় বড় সমৃদ্ধ দেশের নেতাদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। সমস্ত নেতা ভারতের দ্রুত অগ্রগতি দেখে অত্যন্ত প্রভাবিত। তাঁরা ভারতকে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনৈতিক মহাশক্তি হয়ে উঠতে দেখছেন এবং নিশ্চিত ভাবে এই অগ্রগতিতে আমাদের বিহারের অনেক বড় ভূমিকা থাকবে। বিহার সমৃদ্ধ হবে এবং দেশের সমৃদ্ধিতেও অনেক বড় ভূমিকা পালন করবে।
বন্ধুগণ,
আমার এই বিশ্বাসের কারণ বিহারের জনগণের সামর্থ। আপনারা সবাই মিলে বিহার থেকে জঙ্গলের রাজত্ব দূর করেছেন। এখানে বসে থাকা নবীণ প্রজন্মের অনেক ভাই-বোনেরা ২০ বছর আগের দুর্দশার কথা তাদের বাবা-মায়ের কাছে শুনে থাকবে। তাঁদের খুব একটা ধারণা নেই যে এই জঙ্গলরাজ বিহারের পরিস্থিতি কেমন করে দিয়েছিল! যে বিহার অনেক শতাব্দী ধরে ভারতের উন্নয়নকে নেতৃত্ব দিয়েছে, তাকে হাত এবং লন্ঠন প্রতীকের নেতারা শোষণ ও দুর্নীতি পলায়নের প্রতীক করে তুলেছিল।
বন্ধুগণ,
বিহারে বসবাসকারী প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য সবচেয়ে বড় বিষয় হল তাঁদের আত্মসম্মান। আমার বিহারের ভাই ও বোনেরা অনেক কঠিন পরিস্থিতিতেও কাজ করে দেখিয়ে দেন। কিন্তু তাঁরা কখনও তাঁদের আত্মসম্মানের ক্ষেত্রে সমঝোতা করেন না। কিন্তু হাত এবং লন্ঠনওয়ালাদের দুর্নীতি বিহারের এই আত্মসম্মানকে অনেক আঘাত করেছে। এই দুর্নীতিবাজরা এমন লুটের রাজত্ব তৈরি করেছিল যে দারিদ্র্যই বিহারের দুর্ভাগ্যে পরিণত হয়েছিল। অনেক সমস্যার জট কাটিয়ে নীতিশজির নেতৃত্বে এনডিএ সরকার বিহারের বেলাইন হওয়া উন্নয়নের গাড়িকে আবার লাইনে ফিরিয়ে এনেছে। আমি আজ বিহারবাসীকে এই আশ্বাস যোগাতে এসেছি যে, আমরা বিগত দিনে বিহারের উন্নয়নে যত কাজই করে থাকি না কেন, আরও অনেক কাজ করতে হবে। এত শান্তভাবে চুপ থাকার মানুষ মোদী নয়। অনেক কাজ হয়েছে, কিন্তু, আমরা যে অনেক কিছু করে ফেলেছি তা নয়, আমাদের বিহারের জন্য আরও অনেক কিছু করতে হবে, আপনাদের জন্য করতে হবে, এখানকার প্রতিটি গ্রামের জন্য করতে হবে, এরাজ্যের প্রতিটি বাড়ির জন্য করতে হবে, প্রত্যেক নবীণ প্রজন্মের মানুষের জন্য করতে হবে। আমি যদি শুধুই ১০-১১ বছরের কথা বলি, তাহলে এই ১০ বছরে বিহারে প্রায় ৫৫ হাজার কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক তৈরি হয়েছে, ১.৫ কোটিরও বেশি বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে, ১.৫ কোটি মানুষের বাড়িতে নলের মাধ্যমে পানীয় জল সরবরাহ সুনিশ্চিত করা হয়েছে, ৪৫ হাজারেরও বেশি কমন সার্ভিস সেন্টার গড়ে তোলা হয়েছে, আজ বিহারের ছোট ছোট শহরগুলিতে নতুন নতুন স্টার্ট-আপ খুলছে।
বন্ধুগণ,
বিহারের অগ্রগতির এই গতি যেন ক্রমাগত বাড়তে থাকে, তা আমাদের সুনিশ্চিত করতে হবে। যারা একসময় বিহারে জঙ্গলরাজ চালিয়েছিল, তারা আজ সুযোগের অপেক্ষা করছে কীভাবে আবার ক্ষমতায় ফেরা যায়। কীভাবে আবার বিহারের বিভিন্ন অর্থনৈতিক সংস্থাকে দখল করতে পারে, সেজন্য নানা রকম ফিকির খুঁজছে। সেজন্য আমার বিহারের প্রিয় ভাই ও বোনেরা, আপনাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য, আপনাদের সন্তান-সন্ততিদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য, আপনাদের অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে। সমৃদ্ধ বিহার গড়ে তোলার যাত্রাপথে যারা ব্রেক লাগাতে চায় তাদেরকে কয়েক ক্রোশ দূরে রাখতে হবে।
বন্ধুগণ,
আমাদের দেশ অনেক দশক ধরে 'গরিবি হটাও' স্লোগান শুনে আসছে। ২-৩ প্রজন্মের মানুষ এই শ্লোগান শুনে বড় হয়েছে। প্রত্যেক নির্বাচনের আগে তাঁরা এসে এই শ্লোগান শোনাতেন। কিন্তু যখন আপনারা তাঁদের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে আমাদের সুযোগ দিয়েছেন, এনডিএ-কে ক্ষমতায় এনেছেন, তখন এনডিএ সরকার দেখিয়ে দিয়েছে যে প্রকৃতই দারিদ্র্য দূর করা সম্ভব। বিগত এক দশকে ভারতে রেকর্ড সংখ্যক, প্রায় ২৫ কোটি মানুষ দারিদ্র্যকে জয় করেছেন। বিশ্বব্যাঙ্কের মতো পৃথিবীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা ভারতের এই বিরাট সাফল্যের প্রশংসা করছে। আর ভারতের এই যে আশ্চর্যজনক সাফল্য, তার পিছনে আমাদের বিহারের নীতিশ কুমার জির সরকারের অনেক বড় অবদান রয়েছে। আগে, বিহারের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি অত্যন্ত দরিদ্র শ্রেণীর মধ্যে আসতো। কিন্তু বিগত দশকে, বিহারের প্রায় ৩ কোটি ৭৫ লক্ষ মানুষ নিজেদের দারিদ্র্যসীমার উপরে তুলে এনেছেন।
বন্ধুগণ,
স্বাধীনতার পর এত দশক ধরে, এত মানুষ গরিব ছিল, আকাশে-বাতাসে 'গরিবি হটাও' স্লোগান শোনা যেত, অথচ দারিদ্র্যও বাড়ছিল। এটা এজন্য নয় যে, বিহারের মানুষের পরিশ্রমের কোনও ত্রুটি ছিল, দেশবাসীর পরিশ্রমের কোনও ত্রুটি ছিল। আসল সমস্যা ছিল তাঁদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার কোনও পথ না থাকা। দীর্ঘকাল ধরে কংগ্রেসের লাইসেন্স রাজ দেশবাসীকে গরিব বানিয়ে রেখেছে। আর দরিদ্রদের অতি দারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দিয়েছে। তখন সবকিছুর জন্য কোটা-পারমিট নির্ধারিত ছিল। ছোট ছোট কাজ করতে হলেও পারমিটের প্রয়োজন হতো। কংগ্রেস-আরজেডির রাজত্বে গৃহহীনরা বাড়ি পেতেন না, তাঁদের জন্য নির্ধারিত রেশন দালালরা খেয়ে নিতো, সরকারি চিকিৎসা গরিবদের কাছে পৌঁছোত না, পড়াশোনা এবং রোজগারের জন্য অনেক লড়াই করতে হতো, বাড়িতে জল ও বিদ্যুৎ সংযোগ আনার জন্য সরকারি দপ্তরগুলিতে অসংখ্যবার চক্কর লাগাতে হতো। রান্নার গ্যাসের সংযোগের জন্য সাংসদদের সুপারিশ প্রয়োজন হতো। ঘুষ বা সুপারিশ ছাড়া কোনও চাকরি পাওয়া যেত না। সেজন্য সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী কারা ছিল? ভুক্তভোগী ছিলেন আমার দলিত সমাজ, মহাদলিত সমাজ, পিছিয়ে পড়া সমাজ ও অতিপিছিয়ে পড়া সমাজের ভাই ও বোনেরা। দশকের পর দশক ধরে তাঁদেরকে দারিদ্র্য দূরীকরণের স্বপ্ন দেখিয়ে, কিছু পরিবার ক্রমে কোটিপতি - লক্ষ কোটিপতি হয়ে ওঠে।
বন্ধুগণ,
বিগত ১১ বছর ধরে আমাদের সরকার দরিদ্র মানুষের জীবনের প্রতিটি প্রতিবন্ধকতা দূর করতে আন্তরিক ভাবে কাজ করে চলেছে, আর ভবিষ্যতেও করতে থাকবে। আমরা অক্লান্ত পরিশ্রম করছি, সেজন্য আপনারা এতো ভালো পরিণাম দেখতে পাচ্ছেন। যেমন অসংখ্য গৃহহীনের জন্য বাড়ি তৈরি করে দেওয়া। আজ যে পরিবারগুলির হাতে তাঁদের নতুন তৈরি বাড়ির চাবি তুলে দেওয়ার সৌভাগ্য আমার হয়েছে, তাঁরা এতো অশীর্বাদ দিচ্ছিলেন, তাঁদের চেহারায় এতো সন্তুষ্টি ছিল, তাঁরা এত ভাব বিভোর ছিলেন যে তা ভাষায় বর্ণনা করা যাবে না।
বন্ধুগণ,
বিগত দশকে, সারা দেশে চার কোটিরও বেশি গৃহহীন দরিদ্র মানুষ পাকা বাড়ি পেয়েছেন। আমি আপনাদের জিজ্ঞাসা করছি, আপনারা কি জবাব দেবেন? আমি যদি জিজ্ঞাসা করি, তাহলে আপনারা কি জবাব দেবেন? আমি এখনই বললাম, ৪ কোটি পরিবার পাকা বাড়ি পেয়েছে। এর মধ্যে আপনারা কতজন পেয়েছেন? একটু জোর গলায় বলুন, কতজন পেয়েছেন? তাহলে বুঝুন, চার কোটি মানুষ পাকাবাড়ি পেয়েছেন, শুধুই চারদিকে চারটি দেওয়াল তুলে দিলেই বাড়ি হয়ে যায় না। সেই বাড়িগুলিতে মানুষের স্বপ্ন সেজে ওঠে, সেই বাড়িগুলিতে সংকল্প লালিত হয়। আগামী দিনগুলিতে, আরও তিন কোটি পরিবার পাকা বাড়ি পাবে, তাঁদের বাড়িগুলি এখন নির্মীয়মান। আমি আগেই বলেছি, সেবার কাজে আমি কখনও থেমে থাকার পাত্র নই। যতটা কাজ হয়েছে, পূর্ববর্তী সরকারগুলির শাসনকাল থেকে অনেক বেশি কাজ হয়েছে। তবুও মোদী শান্তিতে ঘুমাবে না। মোদী দিন-রাত কাজ করবে, আপনাদের জন্য করতে থাকবে। কারণ, আপনারা আমাদের পরিবারের সদস্য। আর আমার পরিবারের একজনও সদস্য পিছিয়ে না থাকে, কষ্ট না পায়, সেই স্বপ্ন নিয়ে আমি এগিয়ে চলেছি। এর ফলে আমার বিহারের দরিদ্র ভাই-বোন, দলিত ভাই-বোন, মহাদলিত ভাই-বোন, পিছিয়ে পড়া ভাই-বোন, অতিপিছিয়ে পড়া ভাই-বোন সবচেয়ে বেশি লাভবান হবেন। এই যতন উন্নয়ন প্রকল্প সম্পন্ন হয়েছে, এগুলির দ্বারা সবচেয়ে বেশি লাভবান এরাই হবেন। বিহারে ইতিমধ্যে ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা’র মাধ্যমে ৫৭ লক্ষেরও বেশি পাকাবাড়ি তৈরি হয়েছে। আমাদের এই সিওয়ান জেলাতেও এক লক্ষ দশ হাজারেরও বেশি গৃহহীন দরিদ্র মানুষের জন্য পাকাবাড়ি তৈরি হয়েছে। আমি শুধুই একটি জেলার কথা বলছি, আর এই কাজ নিরন্তর জারি রয়েছে। আজও, বিহারের ৫০ হাজারেরও বেশি পরিবারের জন্য বাড়ির কিস্তি জারি করা হয়েছে। আর আপনারা জানেন, আমার জন্য দ্বিগুণ খুশির বিষয় কী? এই যে বাড়িগুলি তৈরি হয়েছে, সেগুলির মালিকানা অধিকাংশ হয়েছে মা ও বোনদের নামে। আমার যে মা, বোন ও কন্যাদের নামে আগে কখনও কোনও সম্পত্তি ছিল না, তাঁরাই আজ নিজের বাড়ির মালিক হয়েছেন।
বন্ধুগণ,
আমাদের সরকার বাড়ির পাশাপাশি বিনামূল্যে রেশন, বিদ্যুৎ এবং পরিশ্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থাও করেছে। বিগত বছরগুলিতে সারা দেশে ১২ কোটিরও বেশি নতুন পরিবারে নলের মাধ্যমে পরিশ্রুতি পানীয় জল পৌঁছেছে। এক্ষেত্রে সিওয়ানের সাড়ে চার লক্ষেরও বেশি পরিবারে প্রথমবার নলের মাধ্যমে জল পৌঁছেছে। এভাবে গ্রামে গ্রামে, শহরে শহরে প্রত্যেক বাড়িতে নলের মাধ্যমে পর্যাপ্ত পরিমানে জল সরবরাহের লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করছি। বিগত বছরগুলিতে, বিহারের অনেক শহরের জন্য পানীয় জলের পাইপলাইন এবং পয়ঃপ্রণালী পরিশুদ্ধকরণ প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে। এখন আরও কয়েক ডজন শহরের জন্য এই পানীয় জলের পাইপলাইন এবং পয়ঃপ্রণালী পরিশুদ্ধকরণ প্রকল্প মঞ্জুর করা হয়েছে। এই সমস্ত প্রকল্প দরিদ্র এবং মধ্যবিত্ত পরিবারগুলির জীবনকে আরও উন্নত করবে।
ভাই ও বোনেরা,
আরজেডি এবং কংগ্রেসের দুর্নীতি, তাঁদের সমস্ত পদক্ষেপ বিহার বিরোধী, বিনিয়োগ বিরোধী। যখনই তাঁদের মুখে উন্নয়নের কথা শোনা যায় তখন মানুষ নিজেদের ব্যবসা-বাণিজ্য, দোকানপাট, শিল্পোদ্যোগে তালা ঝোলানোর দুঃস্বপ্ন দেখেন। সেজন্য এরা বিহারের নবীণ প্রজন্মের মনে কখনও স্থান করে নিতে পারেনি। এরা বেহাল পরিকাঠামো, মাফিয়ারাজ, গুন্ডারাজ এবং দুর্নীতিকে লালন করতো।
বন্ধুগণ,
বিহারের নবীণ প্রজন্মের প্রতিভাবান মানুষেরা আজ তৃণমূল স্থরে যত কাজ হতে দেখছে, হাতেনাতে যাচাই করতে পারছে। এনডিএ কেমন বিহার তৈরি করছে তার উদাহরণ মঢ়ৌরা রেল কারখানা। আজ এই মঢ়ৌরা লোকোমোটিভ রেল কারখানা থেকে প্রথম ইঞ্জিন আফ্রিকায় রপ্তানি করা হচ্ছে। আপনাদের তৈরি এই ইঞ্জিন সেই মহাদেশের রেলগাড়িকে টেনে নিয়ে যাবে। আপনারা ভাবুন, আফ্রিকাতেও বিহারের জয়জয়কার হতে চলেছে। এই কারখানা সেই সারণ জেলায় তৈরি হয়েছে, যে জেলাকে হাত ও লন্ঠনওয়ালারা ‘পিছিয়ে পড়া জেলা’ বলে দূরে সরিয়ে রেখেছিল। আজ এই জেলা বিশ্বের যন্ত্র উৎপাদন এবং রপ্তানি মানচিত্রে নিজস্ব স্থান তৈরি করে নিয়েছে। জঙ্গলরাজওয়ালারা তো বিহারের অগ্রগতির ইঞ্জিনকেই অচল করে দিয়েছিল। আর এখন বিহারে উৎপাদিত ইঞ্জিন গিয়ে আফ্রিকায় রেল চালাবে। এটা অত্যন্ত গর্বের বিষয়, আমার দৃঢ় বিশ্বাস, অদূর ভবিষ্যতে আমাদের বিহার মেড ইন ইন্ডিয়ার একটি বড় কেন্দ্র হয়ে উঠবে। এখানকার মখানা ও ফল-সবজি যেমন রপ্তানি হবে, তেমনি বিহারের কারখানাগুলিতে উৎপাদিত পণ্যও বিশ্ববাজারে পৌঁছাবে। বিহারের নবীণ প্রজন্মের মানুষ যত পণ্য উৎপাদন করবে তা আত্মনির্ভর ভারতকে তত শক্তি যোগাবে।
বন্ধুগণ,
এতে বিহারে নির্মীয়মান আধুনিক পরিকাঠামো অনেক কাজে আসবে। আজ, বিহারে সড়কপথ, রেলপথ, বিমান পরিবহণ এবং জলপথ - প্রত্যেক ধরনের পরিকাঠামো গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব বিনিয়োগ হচ্ছে। বিহার নিয়মিত নতুন নতুন ট্রেন পাচ্ছে। এই রাজ্যে ‘বন্দে ভারত’-এর মতো আধুনিক ট্রেন চলছে। আজ আমরা আরও একটি বড় সূত্রপাত করতে চলেছি। শ্রাবণ মাস শুরু হওয়ার আগে, আজ বাবা হরিহরনাথের ভূমির সঙ্গে ‘বন্দে ভারত’ ট্রেনের মাধ্যমে বাবা গোরক্ষনাথের ভূমির সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। পাটনা থেকে গোরক্ষপুর নতুন ‘বন্দে ভারত’ ট্রেন পূর্বাঞ্চলের শিবভক্তরা একটি নতুন বাহন পেল। এই ট্রেন ভগবান বুদ্ধের তপোভূমিকে, তাঁর মহাপরিনির্বাণের ভূমি কুশিনগরকেও এই যাত্রায় যুক্ত করেছে।
বন্ধুগণ,
এই সমস্ত প্রচেষ্টার মাধ্যমে ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিহার যেমন এগোবে, তেমনি পর্যটনের ক্ষেত্রেও অত্যন্ত লাভবান হবে। এর ফলে, বিশ্বের পর্যটন মানচিত্রেও বিহার আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠবে। অর্থাৎ বিহারের নবীণ প্রজন্মের যুবক-যুবতীদের জন্য কর্মসংস্থানের অসংখ্য সুযোগ তৈরি হয়ে উঠতে চলেছে।
বন্ধুগণ,
দেশের মধ্যে সবাই যেন এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায়, কেউ যেন বৈষম্যের শিকার না হয়, এটাই আমাদের সংবিধানের ভাবনা। এই ভাবনা থেকেই গড়ে উঠেছে আমাদের মূল মন্ত্র - 'সবকা সাথ, সবকা বিকাশ'। কিন্তু এই লন্ঠন ও হাতওয়ালারা চায় - 'পরিবার কা সাথ, পরিবার কা বিকাশ'। তাঁদের রাজনীতির মূল কথাই এটা। নিজের নিজের পরিবারের স্বার্থে দেশ তথা বিহারের কোটি কোটি পরিবারের অনিষ্ট করতেও তাঁরা পিছুপা হয় না। বাবা সাহেব আম্বেদকর নিজেও এই ধরনের রাজনীতির বিরোধী ছিলেন। সেজন্য এসব দলের নেতারা তাঁকে প্রতি পদক্ষেপে অপমান করেছে। কিছুদিন আগে গোটা দেশ দেখেছে, আরজেডি-ওয়ালারা বাবা সাহেবের প্রতিকৃতির সঙ্গে কী অপমানজনক ব্যবহার করেছে। আমি দেখছিলাম, বিহারের বিভিন্ন জেলায় পোস্টার পড়েছিল, এতে লেখা ছিল, ‘বাবা সাহেবের অপমানকারীরা ক্ষমা চাও’। কিন্তু আমি জানি যে, এরা কখনও ক্ষমা চাইবে না। কারণ, এদের মনে দলিত, মহাদলিত, পিছিয়ে পড়া, অতিপিছিয়ে পড়া মানুষের প্রতি কোনও সম্মান নেই। আরজেডি এবং কংগ্রেস বাবা সাহেব আম্বেদকরের প্রতিকৃতিকে পায়ের তলায় রাখে। কিন্তু মোদী, বাবা সাহেব আম্বেদকরকে নিজের হৃদয়ে রাখে। বাবা সাহেবের অপমান করে, এরা নিজেদেরকে বাবা সাহেবের থেকেও বড় করে দেখাতে চায়। বিহারের জনগণ বাবা সাহেবের এই অপমান কখনও ভুলবে না।
বন্ধুগণ,
বিহারের দ্রুত অগ্রগতির জন্য যে লঞ্চিং প্যাড প্রয়োজন ছিল, তা নীতিশ জির অনেক ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় প্রস্তুত হয়েছে। এখন এনডিএ ঐক্যবদ্ধভাবে বিহারের উন্নয়নকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেবে। বিহারের নবীণ প্রজন্মের প্রতি আমার আস্থা রয়েছে। আমরা সবাই মিলে বিহারের প্রাচীন গৌরবকে ফিরিয়ে আনবো, বিহারকে উন্নত ভারতের শক্তিশালী ইঞ্জিনে পরিণত করব, এই বিশ্বাস নিয়ে, আপনাদের সবাইকে এই উন্নয়নমূলক প্রকল্পের শুভ উদ্বোধন ও শিলান্যাস উপলক্ষে অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই।
আমার সঙ্গে দুই হাত মুষ্টিবদ্ধ করে উপরে তুলে বলুন, ভারত মাতার জয়! যাদের হাতে দেশের ত্রিবর্ণরঞ্জিত পতাকা রয়েছে, তারা সেই পতাকাকে উপরে তুলে ধরে বলুন,
ভারত মাতার জয়!
ভারত মাতার জয়!
ভারত মাতার জয়!
অনেক অনেক ধন্যবাদ!
(প্রধানমন্ত্রীর মূল ভাষণটি ছিল হিন্দিতে)
SC/SB/AS
(Release ID: 2138531)
Read this release in:
Odia
,
English
,
Urdu
,
Hindi
,
Marathi
,
Manipuri
,
Assamese
,
Punjabi
,
Gujarati
,
Telugu
,
Kannada