প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

গুজরাট নগর বিকাশ আখ্যানের ২০ বছর উপলক্ষে আয়োজিত সমারোহে ফের সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কে কঠোর বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী

Posted On: 27 MAY 2025 2:33PM by PIB Kolkata

নতুন দিল্লি, ২৭ মে ২০২৫

 

গুজরাটের গান্ধীনগরে আজ গুজরাট নগর বিকাশ আখ্যানের ২০ বছর উপলক্ষে আয়োজিত সমারোহে ভাষণ দিলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। ওই মঞ্চ থেকে তিনি নগর বিকাশ বর্ষ ২০২৫-এর সূচনা করেন – যা নগর বিকাশ বর্ষ ২০০৫-এর ২০ বছর পূর্তির বার্তা দেয়। সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ২ দিনে ভদোদরা, দাহোদ, ভুজ, আমেদাবাদ এবং গান্ধীনগর সফরে তিনি অপারেশন সিঁদুরের সাফল্য এবং দেশপ্রেমের উদযাপন প্রত্যক্ষ করেছেন। তিনি বলেন, এই চেতনা শুধুমাত্র গুজরাটেই সীমাবদ্ধ নেই, ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশে। 

১৯৪৭ সালে স্বাধীনতা ও দেশ ভাগের ঠিক পরেই প্রথম জঙ্গি হামলার বিষয়টি উল্লেখ করেন তিনি। ভারতকে কার্যত তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছিল সেই সময়। একটি ভাগে পাকিস্তান জঙ্গিদের প্রশয় দিয়ে গেছে ধরাবাহিকভাবে। এই প্রসঙ্গে তিনি সর্দার প্যাটেলের সেই দৃষ্টিভঙ্গীর উল্লেখ করেন – যা বার্তা দেয় যে পাক - অধিকৃত কাশ্মীর পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত ভারতীয় সেনার থামা উচিত নয়। কিন্তু প্যাটেলের পরামর্শ তখন শোনা হয়নি। ৭৫ বছর ধরে সন্ত্রাসবাদের ধারা অব্যাহত থেকেছে। তারই ফল পহেলগামের ঘটনা। কূটনৈতিক নানা ফন্দিফিকির চালিয়ে যাওয়া সত্বেও পাকিস্তান ভারতের সামরিক শক্তির মুখোমুখি হয়েছে বারবার। পাকিস্তানকে সম্পূর্ণ ভাবে পর্যুদস্ত করে ভারত স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছে যে সরাসরির যুদ্ধে জিততে পারবে না ইসলামাবাদ। সেকথা বুঝেই প্রতিবেশী দেশ ছায়াযুদ্ধে নেমেছে। সাধারণ মানুষকে, এমনকি নিরীহ তীর্থযাত্রীদেরও হত্যা করতে জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দিয়ে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে ভারতে। 

বসুধৈব কুটুম্বকম-এর ধারণা ভারতের সাংস্কৃতিক মূল্যবোধে প্রোথিত এবং এই দেশ সমগ্র বিশ্বকে বরাবর একটি পরিবার হিসেবে দেখে বলে প্রধানমন্ত্রী ফের উল্লেখ করেন। শান্তির পথে থাকলেও চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় জোরালো জবাব দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী মনে করিয়ে দেন। ৬ মে ঘটনার পর পরিস্থিতি এখন পাল্টে যাচ্ছে বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, এখন পাকিস্তানের নেতিবাচক এইসব কাজকর্মকে ছায়াযুদ্ধ বলা ভুল হবে। তবে, ২২ মিনিটের মধ্যে জঙ্গিদের ৯টি ঘাঁটি গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং ক্যামেরায় বিষয়টি ধরা আছে। এই নিয়ে প্রশ্নের অবকাশ নেই। পাকিস্তান এখন সুচতুর কৌশলে এগোচ্ছে – এটা স্পষ্ট। ৬ মে-র প্রত্যাঘাতের পর পাকিস্তানে জঙ্গিদের শেষকৃত্য যেভাবে সম্পন্ন হয়েছে এবং সেখানে পাকিস্তানি সেনা আধিকারিকরা যেভাবে উপস্থিত থেকেছেন, তাতে এটা স্পষ্ট ইসলামাবাদ একটি সুনির্দিষ্ট যুদ্ধ পরিকল্পনা ফেঁদেছে। এরও যথাযোগ্য জবাব দেওয়া হবে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত বিকাশ এবং কল্যাণের পথে হেঁটেছে বরাবর। সঙ্কটের সময় সকলের দিকে বাড়িয়ে দিয়েছে সাহায্যের হাত। এই সব সত্বেও এই দেশকে প্রায়ই হামলার শিকার হতে হয়েছে। দশকের পর দশক ধরে এই দেশ বঞ্চিত হয়েছে। সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত রাখার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জম্মু ও কাশ্মীরের জলসম্পদ ব্যবস্থাপনা দীর্ঘদিন অবহেলার শিকার হয়েছে। বাঁধ তৈরি হয়েছে, কিন্তু তার উপযুক্ত রক্ষণাবেক্ষণ হয়নি। ৬০ বছর ধরে জলাধারগুলির পলি খননের কাজ বকেয়া থেকেছে। জল সঞ্চয়ের ক্ষমতাও কমে গেছে ভীষণ ভাবে। জলের প্রাপ্য অধিকার ভারতবাসীকেই পেতেই হবে বলে প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দেন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বৈরিতা নয়, ভারত শান্তি ও সমৃদ্ধি চায়। ২০১৪-র ২৬ মে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁর প্রথমবার দায়িত্ব গ্রহণের কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সময় অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের বহরে ভারত ছিল বিশ্বের একাদশ স্থানে। এর মধ্যে এসেছে বহু বাধা, কোভিড-১৯-এর মত বিপর্যয়, প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে বিরোধ এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ। তা সত্বেও অর্থনীতি হিসেবে ১১ থেকে উঠে ৪ নম্বরে এসে পৌঁছেছে ভারত। ছোটবেলা থেকেই গুজরাটে থাকার সময় এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন দায়িত্ব পালনের সুবাদে তিনি দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করার শিক্ষা পেয়েছেন বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। 

নগর উন্নয়নের ক্ষেত্রে গুজরাট সরকারের দায়বদ্ধতার কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। বিগত ২০ বছরের অভিজ্ঞতা এই রাজ্যকে এক্ষেত্রে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে প্রধানমন্ত্রী প্রত্যয়ী। 

ভারতের বিকাশ যাত্রা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এদেশের ২৫ থেকে ৩০ কোটি মানুষ স্বাধীনতার জন্য লড়াই না করলে ১৯৪৭-এ বিদেশী শাসকের হাত থেকে মুক্তি সম্ভব হতো না। ১৪০ কোটি ভারতবাসী অবশ্যই আগামী ২৫ বছরে উন্নত ভারত গঠনে সক্ষম হবেন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৬ মে শুরু হওয়া অপারেশন সিঁদুর তার প্রাথমিক গন্ডি পেরিয়ে ক্রমে জাতীয় প্রগতির প্রতীক হয়ে উঠবে। চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ থেকে পরবর্তীকালে তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হয়ে ওঠার স্বপ্ন পূরণে ভারতবাসীর প্রত্যয় মূল শক্তি বলে তিনি মনে করিয়ে দেন। বিদেশী পণ্যের ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এপ্রসঙ্গে তিনি সরকারের গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচির কথা তুলে ধরেন। ভারতে তৈরি পণ্যের ব্যবহারে দেশবাসীকে আরও উদ্যোগী হতে বলেন তিনি। দেশের অর্থনীতিকে আরও জোরদার করা এবং বিশ্বের মঞ্চে ভারতকে সম্মানের আসনে অধিষ্ঠিত করা প্রতিটি ভারতীয় নাগরিকের লক্ষ্য হওয়া উচিত বলে মনে করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। 

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গুজরাটের রাজ্যপাল শ্রী আচার্য দেবব্রত, মুখ্যমন্ত্রী শ্রী ভূপেন্দ্রভাই প্যাটেল, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী মনোহরলাল এবং শ্রী সি আর পাতিল প্রমুখ। 

 

SC/AC/AS


(Release ID: 2131801)