স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক
azadi ka amrit mahotsav

নতুন দিল্লিতে বিএসএফ-এর দীক্ষান্ত অনুষ্ঠান এবং রুস্তমজি স্মারক বক্তৃতায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র ও সমবায় মন্ত্রী অমিত শাহ

Posted On: 23 MAY 2025 4:36PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ২৩ মে, ২০২৫

 

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র ও সমবায় মন্ত্রী অমিত শাহ আজ নতুন দিল্লিতে সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ-এর দীক্ষান্ত অনুষ্ঠান এবং রুস্তমজি স্মারক বক্তৃতায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন। অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় স্বারাষ্ট্র সচিব, তদন্ত ব্যুরোর অধিকর্তা এবং সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর মহানির্দেশক অন্য অভ্যাগতদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন। 

অনুষ্ঠানে শ্রী অমিত শাহ বলেন, ১৯৬৫-২০২৫ পর্যন্ত যাত্রাকালে বিএসএফ দেখিয়েছে  প্রতিকূল পরিস্থিতিতে এবং সীমিত সুযোগের মধ্যে দিয়েও যাত্রা শুরু করেও কিভাবে বিশ্বের সর্ববৃহৎ  মর্যাদাপূর্ণ সীমান্ত রক্ষী বাহিনী হয়ে ওঠা যায়। তিনি বলেন, সমস্ত বাধা অতিক্রম করে দেশাত্মবোধের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হলে, কিভাবে বৈশ্বিক উৎকর্ষ অর্জন করা সম্ভব, বিএসএফ তার এক অনন্য নিদর্শন। তিনি বলেন, বিএসএফ জওয়ানদের  প্রতিকূল পরিস্থিতিতে, গভীর জঞ্জল, রুক্ষ পাহাড় অথবা উপকূলবর্তী এলাকায় প্রথম সারির প্রতিরক্ষার কাজ করতে হয়। বিএসএফ-এর সক্ষমতার কথা মাথায় রেখে দেশে প্রতিটি সীমান্ত সুরক্ষার কাজে একটি বাহিনী নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়। বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের মতো সবথেকে জটিল সীমান্ত সুরক্ষার দায়িত্বও বর্তায় তাদের ওপর। 

বিএসএফ-কে গড়ে তোলার কাজে কেএফ রুস্তমজির অবদানের কথা স্মরণ করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী শ্রী অমিত শাহ বলেন, ১৯৬৫-র যুদ্ধের পর শান্তিকালীন সময়ও সীমান্ত রক্ষার কাজে একটি বাহিনী গড়ে তোলার গুরুত্ব অনুভূত হয়, যা থেকে বিএসএফ-এর সূচনা। রুস্তমজি ছিলেন, এই বাহিনীর প্রথম মহানির্দেশক। তিনি আরও বলেন, ১৯৭১-এ ভারতের ওপর চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধে বিএসএফ জওয়ানদের সাহসিকতা ও অবদান দেশ কখনও ভুলবে না। বাংলাদেশেরও তা কখনও ভোলা উচিত নয়। বাংলাদেশ গঠনে বিএসএফ-এর ভূমিকা অপরিসীম জানিয়ে তিনি বলেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াইয়ে সাহসিকতার এক অনন্য নিদর্শন গড়েছিল তারা।

শ্রী অমিত শাহ বলেন, সীমান্ত সুরক্ষার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ সুরক্ষার কাজেও বিএসএফ সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছে। তা সে বিপর্যয় মোকাবিলা হোক বা সন্ত্রাসবাদ বিরোধী অভিযানই হোক। তিনি বলেন, নির্বাচনের সময়, কোভিড-১৯ অতিমারীর সময়, নকশাল দমন অথবা সন্ত্রাস প্রতিরোধে এমনকি কোন ক্রীড়ানুষ্ঠানেও বিএসএফ সবসময় তাদের কর্তব্য নিষ্ঠার অনন্য নজির গড়েছে। 

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সমবায় মন্ত্রী বলেন, আজকের এই দীক্ষান্ত অনুষ্ঠান হচ্ছে এমন এক সময় যখন সারা বিশ্বের কাছে সশস্ত্র বাহিনী সাহসিকতার এক অনন্য নিদর্শন স্থাপন করেছে। তিনি বলেন, অপারেশন সিঁদুর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দৃঢ় রাজনৈতিক সদিচ্ছা, বিভিন্ন সংস্থা থেকে নির্ভুল গোয়েন্দা তথ্য এবং আমাদের বাহিনীর অপরিসীম দক্ষতাকে তুলে ধরেছে। তিনি বলেন, দশকের পর দশক ধরে আমাদর দেশ পাকিস্তান মদতপুষ্ট সন্ত্রাসবাদের শিকার। বছরের পর বছর ধরে পাকিস্তান ভারতে সন্ত্রাসবাদী হামলা চালিয়ে এসেছে। কিন্তু তাদের যথাযথ সদুত্তর কখনই এর আগে সেভাবে দেওয়া হয়নি। 

শ্রী অমিত শাহ বলেন, ২০১৪ সালে শ্রী নরেন্দ্র মোদী দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর উরিতে আমাদের সেনাদের ওপর প্রথম বড় মাপের সন্ত্রাসবাদী হামলা হয় এবং সেবারেই প্রথম সন্ত্রাসবাদীদের গোপন ঘাঁটিতে সার্জিকাল আক্রমণ চালিয়ে ভারত তার যোগ্য জবাব দিয়েছিল। তিনি বলেন, আমরা মনে করেছিলাম, এই জবাব সন্ত্রাসবাদী কাজকর্মের পরিসমাপ্তি ঘটিয়েছে। কিন্তু তা হয়নি। এরপর পুলওয়ামাতে আমাদের সেনাবাহিনীর ওপর পুনরায় সন্ত্রাসবাদী আক্রমণ হয়। সেইসময় ভারতীয় বাহিনী বিমান হানায় সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটিগুলিকে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। শ্রী শাহ বলেন, পহেলগাঁও সন্ত্রাসবাদী হামলার আরও ভয়াবহ নজির প্রত্যক্ষ করেছে। পাক মদতপুষ্ট সন্ত্রাসবাদীরা নিরীহ পর্যটকদের তাদের পত্নী ও পরিবারের সামনে ধর্মীয় পরিচয় জানতে চেয়ে নির্মম হত্যা করেছে। তিনি বলেন, এরপর প্রধানমন্ত্রী মোদী এই সন্ত্রাসবাদী আক্রমণের উপযুক্ত জবাব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এক্ষেত্রে অপারেশন সিঁদুর হয়ে ওঠে যোগ্য প্রত্যুত্তর। সারা বিশ্ব আজ ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর সাহসিকতা ও অস্ত্র ক্ষমতার প্রশংসা করছে। 

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের নানা প্রান্তেই সন্ত্রাসবাদী আক্রমণের জবাব দেওয়া হলেও ভারতের এই জবাব একেবারে অনন্য। তিনি বলেন, পহেলগাঁও আক্রমণের পর অপারেশন সিঁদুরের মাধ্যমে কয়েক মিনিটেই ৯টি সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটিকে সম্পূর্ণ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এর মধ্যে ছিল দুটি সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলির সদর কার্যালয়। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ভারতীয় বাহিনী প্রথম অবস্থায় পাকিস্তানের সামরিক ঘাঁটি অথবা বিমান ঘাঁটিতে আক্রমণ চালায়নি। কেবলমাত্র আমাদের মাটিতে জঘন্য সন্ত্রাসের উপযুক্ত প্রত্যত্তর দিতে সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটিগুলির ওপর আক্রমণ চালায়। শ্রী শাহ বলেন, আমরা মনে করেছিলাম যে এটাই যথেষ্ট। তবে সন্ত্রাসবাদীদের মদতপুষ্ট পাকিস্তান  আমাদের দেশের লোকালয় এবং সামরিক প্রতিষ্ঠানগুলির ওপর আক্রমণ চালাতে গেলে আমাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্ষম প্রতিরোধ গড়ে তোলে। ভারতীয় সামরিক বাহিনীও পাকিস্তানের সামরিক বিমানঘাঁটিগুলির ওপর আক্রমণ চালিয়ে আমাদের অস্ত্র ক্ষমতা, দক্ষতার নির্দশন তুলে ধরে। পাকিস্তানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যে কতখানি অকেজো তাও প্রমাণিত হয়। তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক অপারেশন সিঁদুরের মাধ্যমে সারা বিশ্বের সামনে তুলে ধরা হয়েছে। ভারতের এই প্রত্যুত্তরের পর দেখা গেছে নিহত সন্ত্রাসবাদীদের অন্ত্যেষ্টিতে পাক সেনা আধিকারিকরা যোগ দিয়েছেন। 

শ্রী অমিত শাহ বলেন, সারা দেশ আমাদের সীমান্ত রক্ষা বাহিনী এবং আমাদের সেনাবাহিনীকে নিয়ে গর্বিত। সীমান্তে বুলেটের বিরুদ্ধে বুলেটে জবাব দিয়েছে বিএসএফ। পাক বাহিনী এক কদমও এগোতে পারেনি। তিনি বলেন, অপারেশন সিঁদুরে বিএসএফ জওয়ান মহম্মদ ইমতিয়াজ আহমেদ এবং দীপক চিঙ্গাথাম মাতৃভূমি রক্ষায় শহীদের মৃত্যু বরণ করেছেন। দেশের প্রতিরক্ষা ইতিহাসে তাঁদের নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। 

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নকশাল বিরোধী অভিযানে বিএসএফ উল্লেখযোগ্য সাফল্যের কীর্তি রচনা করেছে। বিগত ৫ বছরে ৭৮-জনেরও বেশি নকশাল নিধন করা হয়েছে। তিনি বলেন, নরেন্দ্র মোদী সরকার, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এবং সমগ্র দেশ বিএসএফ জওয়ানদের সাহসিকতাকে সম্মান জানায়। 


SC/AB/NS


(Release ID: 2130923)