প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
বাজেট পরবর্তী ওয়েবিনারে ভাষণ দিলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী
Posted On:
04 MAR 2025 1:36PM by PIB Kolkata
নতুন দিল্লি, ৪ মার্চ ২০২৫
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয়ের ওপর বাজেট পরবর্তী ওয়েবিনারে ভাষণ দিলেন। আলোচ্যের মধ্যে ছিল বিকাশের চালিকাশক্তি হিসেবে এমএসএমই, উৎপাদন, রপ্তানি, পরমাণুশক্তি মিশন এবং নিয়ন্ত্রণবিধ, বিনিয়োগ এবং ইজ অফ ডিয়িং বিজনেস সংক্রান্ত সংস্কার। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারের তৃতীয় মেয়াদে প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাজেট নানা দিক থেকেই বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। বহু ক্ষেত্রেই সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের প্রত্যাশার তুলনায় বেশি। উৎপাদন এবং রপ্তানি ক্ষেত্রে এই বাজেটে একাধিক তাৎপর্যপূর্ণ ঘোষণা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ১০ বছরে সংস্কার প্রক্রিয়া, আর্থিক শৃঙ্খলা, দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক বিকাশের প্রশ্নে দেশের দায়বদ্ধতা প্রতিফলিত। এর সুবাদে শিল্পমহলে আস্থার পরিবেশ তৈরি হয়েছে। উৎপাদন এবং রপ্তানি ক্ষেত্রকে আরও প্রসারিত করে তোলার জন্য তিনি এবিষয়ে কর্মরত প্রতিটি পক্ষের কাছে আবেদন রেখেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এখন ভারতের সঙ্গে শক্তিশালী অর্থনৈতিক অংশিদারিত্ব গড়ে তুলতে আগ্রহী। এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে হবে।
কয়েক বছর আগে চালু হওয়া জনবিশ্বাস আইনের প্রসঙ্গ তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় এবং প্রাদেশিক স্তরে বাণিজ্য জগতের ওপর অবাঞ্ছিত বোঝা সরিয়ে নিতে ৪০ হাজারেরও বেশি বিধিনিয়ম বাতিল করা হয়েছে। এর ফলে, ইজ অফ ডুয়িং বিজনেসের প্রশ্নে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। আয়কর ক্ষেত্রেও সরলীকরণের পথে হাঁটা হচ্ছে এবং তৈরি হয়ে উঠছে জনবিশ্বাস বিল ২.০। শিল্প সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর্মপ্রণালীর জটিলতা অপসারণ করতে প্রযুক্তির ব্যবহারে জোর দেন প্রধানমন্ত্রী।
সারা বিশ্বে বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক আঙিনায় ভারত এখন বিকাশভূমি হিসেবে স্বীকৃতি আদায় করে নিচ্ছে। কোভিড অতিমারীর সময় সারা বিশ্বের বিকাশ হার কমে গেলেও ভারতে ঠিক তার উল্টোটা হয়েছে। এর মূলে রয়েছে আত্মনির্ভর ভারতের ধারণা এবং সংস্কার ক্ষেত্রে উপযুক্ত উদ্যোগ। অস্থির বিশ্বে সরবরাহ শৃঙ্খল ব্যবস্থাপনা যে কোন সময় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্ভরযোগ্য শরিকের প্রয়োজনীয়তা এখন আরও বেশি করে অনুভূত। বর্তমান সরকার শিল্প মহলের সঙ্গে সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায় বলে প্রধানমন্ত্রী জানান।
বর্তমানে ১৪টি ক্ষেত্র পিএলআই প্রকল্পের আওতায় সুবিধা পাচ্ছে এবং এর সুবাদে ১.৫ লক্ষ টাকা বিনিয়োগের জেরে ১৩ লক্ষ কোটি টাকা মূল্যের উৎপাদন হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
ভারতের বিকাশ যাত্রায় গবেষণামূলক উদ্যোগের প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উদ্ভাবনমূলক উদ্যোগ উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ চাবিকাঠি। খেলনাপাতি, জুতো এবং চর্মজ পণ্যের উৎপাদনে ভারত বিশ্বের দেশগুলির মধ্যে প্রথম সারিতে। চিরাচরিত শিল্পপণ্যের উৎপাদন প্রক্রিয়ায় প্রযুক্তির ব্যবহার বিপ্লব আনতে পারে বলে তিনি মনে করেন।
অণু, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ক্ষেত্র (এমএসএমই) ভারতীয় অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। এই ক্ষেত্রের প্রসার কর্মসংস্থানের প্রসারে বিশেষ ভাবে সহায়ক। ১৪ বছর পর এমএসএমই-র সংজ্ঞা পুনর্মার্জিত হয়েছে এবং এর ফলে নিজেদের কাজের পরিধি আরও বাড়িয়ে তুলতে এই ধরনের উদ্যোগপতিরা আরও উৎসাহিত হবেন বলে প্রধানমন্ত্রী আশাপ্রকাশ করেছেন। দেশে এমএসএমই-র সংখ্যা ৬ কোটি ছাড়িয়ে গেছে বলে তিনি জানান। এমএসএমই ক্ষেত্রের প্রসারে সরকারের উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১০ বছর আগে এই খাতে প্রদত্ত ঋণের পরিমাণ ছিল প্রায় ১২ লক্ষ কোটি টাকা। বর্তমানে এই অঙ্কটি প্রায় ৩০ লক্ষ কোটি টাকা। এই বাজেটে এমএসএমই সংস্থাগুলির ঋণ বাবদ গ্যারান্টির পরিমাণ দ্বিগুণ হয়ে ২০ কোটি টাকা হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। এছাড়া মূলধনের চাহিদা মেটাতে ৫ লক্ষ টাকার ঋণ সীমা পর্যন্ত চাহিদা ভিত্তিক ক্রেডিট কার্ডেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। ক্ষুদ্র সংস্থাগুলির ঋণের চাহিদা মেটাতে বিগত ১০ বছরে মুদ্রা যোজনা সহ বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। এই যোজনার আওতায় ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে গ্যারান্টির প্রয়োজন না থাকায় অণুশিল্প সংস্থাগুলি বিশেষ ভাবে উপকৃত হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। তিনি আরও বলেন, মহিলা এবং তপশিলি জাতি ও উপজাতি ভুক্ত ৫ লক্ষ নতুন উদ্যোগপতি ২ কোটি টাকা ঋণ পাবেন। এঁদের সঠিক পথে পরিচালিত করা শিল্পমহলের দায়িত্ব বলে প্রধানমন্ত্রী মনে করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিনিয়োগের প্রসারে রাজ্যগুলির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাণিজ্য সহায়ক পরিবেশ তৈরি হলে লগ্নির পথ সুগম হয়ে ওঠে। যে সব রাজ্যের নীতি বাণিজ্য বান্ধব, সেখানে বিনিয়োগ এসেছে বেশি।
নীতি, প্রকল্প এবং নির্দেশিকা প্রণয়নে প্রাসঙ্গিক সব পক্ষের সমন্বয় ও আদান-প্রদানের ওপর প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়েছেন।
SC/AC/AS
(Release ID: 2108094)
Visitor Counter : 12