প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী এনএক্সটি কনক্লেভে যোগ দিয়েছেন

Posted On: 01 MAR 2025 12:36PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ১ মার্চ, ২০২৫


প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ নতুন দিল্লির ভারত মণ্ডপমে আয়োজিত এনএক্সটি কনক্লেভে যোগ দিয়েছেন। এই উপলক্ষ্যে তিনি উপস্থিত গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সম্বোধিত করে নিউজএক্স ওয়ার্ল্ডের শুভ উদ্বোধনের জন্য আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান। তিনি বলেন যে এই নেটওয়ার্কে হিন্দি, ইংরেজি এবং বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষার চ্যানেল যুক্ত হয়েছে আর আজ এটা আন্তর্জাতিক হয়ে উঠছে। প্রধানমন্ত্রী বেশ কিছু ফেলোশিপ এবং ছাত্রবৃত্তির শুভ সূচনা উপলক্ষ্যেও নিজের ভাবনা-চিন্তার কথা বলে এই কর্মসূচিগুলির জন্য শুভকামনা জানান। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, আগেও এই ধরনের মিডিয়া কর্মসূচিতে তিনি অংশগ্রহণ করেছেন, কিন্তু আজ নিউজএক্স ওয়ার্ল্ড একটি নতুন মানদণ্ড স্থাপন করেছে। এই অভিজ্ঞতার জন্য প্রধানমন্ত্রী বিশেষ শুভেচ্ছা জানান। তিনি বলেন, এই ধরনের মিডিয়া কর্মসূচির একটি পরম্পরা আমাদের দেশে রয়েছে। কিন্তু নিউজএক্স ওয়ার্ল্ড একে একটি নতুন মাত্রা দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন যে তাঁর শীর্ষ সম্মেলন রাজনীতি - কেন্দ্রিক আলোচনার তুলনায় নীতি- কেন্দ্রিকই বেশি ছিল। এতে বিভিন্ন ক্ষেত্রের অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তি আলাপ-আলোচনায় অংশগ্রহণ করেছেন। এভাবে তাঁরা একটি অভিনব মডেলে কাজ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী আশা করেন যে অন্যান্য সংবাদ মাধ্যমও তাঁদের নিজস্ব অভিনব পদ্ধতিতে এই প্রবৃত্তি ও ভাবনাকে সমৃদ্ধ করবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গোটা বিশ্ব আজ উৎসাহের সঙ্গে একবিংশ শতাব্দীর ভারতের দিকে তাকিয়ে আছে। সারা বিশ্বের মানুষ আজ ভারতে আসতে ও এই দেশকে বুঝতে চায়। তিনি বলেন যে, ভারত একটি এমন দেশ, যেখানে নিত্যনতুন ইতিবাচক খবর তৈরি হচ্ছে, নতুন নতুন রেকর্ড তৈরি হচ্ছে। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি প্রয়াগরাজে মহাকুম্ভ উপলক্ষ্যে নদীর তীরে গড়ে ওঠা একটি অস্থায়ী শহরে কোটি কোটি মানুষের পবিত্র স্নান বিশ্ববাসীকে আশ্চর্যান্বিত করেছে। গোটা বিশ্ব ভারতের এই মহা আয়োজনে অনেক উদ্ভাবনী দক্ষতা দেখেছে। তিনি আরও বলেন, ভারত সেমি-কন্ডাক্টর থেকে শুরু করে এয়ারক্র্যাফ্ট ক্যারিয়ার পর্যন্ত সব কিছু তৈরি করছে। গোটা বিশ্ব ভারতের এই সাফল্য নিয়ে বিস্তারিত জানতে চায়। নিউজএক্স ওয়ার্ল্ড-এর জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ হয়ে উঠতে পারে। 

কয়েক মাস আগে ভারতে আয়োজিত বিশ্বের সর্ববৃহৎ নির্বাচনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, গত ৬০ বছরে প্রথমবার ভারতে কোনও সরকার ক্রমাগত তৃতীয়বার ক্ষমতায় এসেছে। জনগণের এই ভরসার ভিত্তি হল, তাঁদের বিগত ১১ বছরের অভিজ্ঞতা। প্রধানমন্ত্রী আশা করেন যে, এই নতুন চ্যানেল নিরপেক্ষভাবে ভারতের বাস্তব গাঁথাগুলিকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কয়েক বছর আগে আমি দেশের সামনে ‘ভোকাল ফর লোকাল’ এবং ‘লোকাল ফর গ্লোবাল’-এর লক্ষ্য রেখেছিলাম, আর আজ আমরা এই স্বপ্নকে সাকার হতে দেখছি। তিনি বলেন, ভারতের আয়ুষ উৎপাদিত ভেষজ পণ্য এবং যোগ ব্যয়াম ক্রমে স্থানীয় থেকে আন্তর্জাতিক হয়ে উঠেছে। ভারতের সুপার ফুড মখানা-ও তার আন্তর্জাতিক পরিচিতি তৈরি করেছে, পাশাপাশি বাজরা- যাকে ‘শ্রী অন্ন’ বলা হয় সেটিও আন্তর্জাতিক সমৃদ্ধি লাভ করেছে। তিনি বলেন, তাঁর বন্ধু এবং অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী টনি এবোট দিল্লি হাটে ভারতীয় বাজরা দিয়ে তৈরি রান্নার পদ খেয়েছেন। এর ফলে তিনি খুব আনন্দিত। 

শ্রী মোদী বলেন, শুধু বাজরা নয়, ভারতের হলুদও এখন আন্তর্জাতিক হয়ে উঠেছে। ভারত বিশ্বে প্রয়োজনের ৬০ শতাংশেরও বেশি হলুদ সরবরাহ করে। তিনি বলেন, ভারতের কফিও আন্তর্জাতিক পরিচিতি পেয়েছে। ফলে ভারত এখন বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম কফি রপ্তানিকারক দেশ হয়ে উঠেছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, ভারতের মোবাইল ফোন ইলেক্ট্রনিক পণ্য এবং ঔষধী আন্তর্জাতিক পরিচিতি গড়ে তুলেছে। ভারত বেশ কিছু আন্তর্জাতিক উদ্যোগে নেতৃত্ব দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী ফ্রান্সে এআই অ্যাকশন সামিটে অংশগ্রহণের সুখস্মৃতির কথা উল্লেখ করে বলেন, সেখানে ভারত সহ-আতিথেয়তার দায়িত্বে ছিল, আর এখন থেকে ভারতই এর আতিথেয়তার দায়িত্ব সামলাবে। প্রধানমন্ত্রী তাঁর অধ্যক্ষতার সময়ে ভারতে সফল জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের উল্লেখ করেন, যেখানে ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-পূর্ব ইউরোপ করিডরকে একটি নতুন অর্থনৈতিক পথ হিসেবে পেশ করা হয়েছিল। আর সেখানে ভারত গ্লোবাল সাউথ থেকে একটি শক্তিশালী কণ্ঠস্বর দিয়েছে। আর দ্বীপ রাষ্ট্রগুলির হিতকে প্রাধান্য দিয়েছে। তিনি বলেন যে, বিশ্ব উষ্ণায়নের সঙ্কট দূর করার জন্য ভারত বিশ্বের সামনে ‘মিশন লাইফ’-এর লক্ষ্য প্রস্তুত করেছে। শ্রী মোদী আন্তর্জাতিক সৌরসংঘ এবং বিপর্যয়রোধী বুনিয়াদি পরিকাঠামোর জন্য সংঘ গড়ে তোলার মতো উদ্যোগে ভারতের নেতৃত্বের কথা উল্লেখ করেন। এক্ষেত্রে যেভাবে বেশ কিছু ভারতীয় ব্র্যান্ড আন্তর্জাতিক হয়ে উঠছে, ভারতের সংবাদ মাধ্যমও এই আন্তর্জাতিক সুযোগগুলিকে বুঝতে পারছে এবং সেগুলির সদ্ব্যবহার করছে, প্রধানমন্ত্রী এর জন্য আনন্দ প্রকাশ করেন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, অনেক দশক ধরে বিশ্বের অনেক উন্নত দেশ ভারতকে ব্যাক অফিস বলতো, কিন্তু আজ ভারত বিশ্বের নতুন কারখানায় পরিণত হয়ে উঠছে। তিনি এক্ষেত্রে জোর দিয়ে বলেন, ভারত এখন নিছকই একটি কর্মশক্তি নয়, ভারত একটি বিশ্বশক্তি। তিনি বলেন, যে দেশ একসময় অনেক পণ্য আমদানি করতো, তারা এখন একটি রপ্তানি কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন যে, দেশের কৃষকরা আগে তাঁদের উৎপাদিত পণ্য নিয়ে স্থানীয় বাজার অবধি যেতে পারতো, তাঁরা এখন  বিশ্বের বাজারে পৌঁছে যাচ্ছে। শ্রী মোদী পুলওয়ামা স্নো মটর, মহারাষ্ট্রের পুরন্দর আঞ্জির এবং কাশ্মীরের ক্রিকেট ব্যাটের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক চাহিদার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন যে ভারতের উৎপাদিত উৎকৃষ্ট সামরিক সাজ-সরঞ্জাম বিশ্বের সামনে ভারতীয় কারিগরি এবং প্রযুক্তিগত ক্ষমতাকে তুলে ধরছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, ইলেক্ট্রনিক থেকে শুরু করে অটোমোবাইল ক্ষেত্র পর্যন্ত বিশ্বের সামনে প্রতিটি ক্ষেত্রে ভারত নতুন শক্তি প্রদর্শন করছে। ভারত শুধু বিশ্বকে পণ্য সরবরাহ করছে না, ভারত এখন বিশ্বের সরবরাহ শৃঙ্খলে একটি বিশ্বাসযোগ্য অংশীদার হয়ে উঠেছে। 

শ্রী মোদী বলেন, আজ  বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারতের এই নেতৃত্ব প্রদান অনেক বছরের কঠিন পরিশ্রম এবং সুব্যবস্থিত নীতিগত সিদ্ধান্তেরই পরিণাম। তিনি গত ১০ বছরের উন্নয়নের অগ্রগতির দিকে আলোকপাত করে বলেন, যেখানে অসম্পূর্ণ সেতু ও সড়কপথ ছিল, সেখানে এখন উন্নতমানের সড়কপথ এবং অত্যাধুনিক এক্সপ্রেসওয়ে নির্মিত হওয়ায় নতুন গতিতে সাধারণ মানুষের স্বপ্নগুলি বাস্তবায়িত হয়েছে। সফরের সময় এবং খরচ হ্রাস পাওয়ায় প্রতিটি শিল্পোদ্যোগ তাদের লজিস্টিক টার্ন অ্যারাউন্ডের সময় কমাতে পেরেছে। এর ফলে অটোমোবাইল ক্ষেত্রও অনেক লাভবান হয়েছে। তিনি বিভিন্ন বাহনের ক্রমবর্ধমান চাহিদা এবং বিদ্যুৎচালিত বাহনের উৎপাদনে উৎসাহ বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করে বলেন, আজ ভারত এক প্রধান অটোমোবাইল উৎপাদক এবং রপ্তানিকারক দেশে পরিণত হয়েছে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইলেক্ট্রনিক পণ্যের উৎপাদনে এ ধরনের পরিবর্তন দেশে দেখা গেছে। গত এক দশকে প্রথমবার আড়াই কোটিরও বেশি পরিবারে বিদ্যুৎ সংযোগ পৌঁছেছে ।  এর ফলে বিভিন্ন বৈদ্যুতিন উপকরণের চাহিদা ও উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি বলেন যে, সস্তায় ডেটা পাওয়ায় মোবাইল ফোনের চাহিদা বেড়েছে। আর এর ফলে বিভিন্ন ডিজিটাল উপকরণেরও চাহিদা বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে, বিভিন্ন পিএলআই প্রকল্পের মাধ্যমে এই চাহিদাকে সুযোগে পরিবর্তিত করা হয়েছে। এর ফলে ভারত একটি প্রধান ইলেক্ট্রনিক্স রপ্তানিকারক দেশে পরিণত হয়েছে। বড় বড় লক্ষ্য নির্ধারণে এবং সেগুলি বাস্তবায়নে ভারতের ক্ষমতা ‘ন্যূনতম সরকার, অধিকতম প্রশাসন’ মন্ত্রে নিহিত যা সরকারি হস্তক্ষেপ বা কোনওরকম চাপ ছাড়া দক্ষ এবং কার্যকরী প্রশাসনের স্বরূপ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন কীভাবে ব্রিটিশ আমলে তৈরি প্রায় দেড় হাজার অপ্রচলিত আইনকে বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। এরকমই একটি আইন ছিল ড্রামাটিক পারফরমেন্স অ্যাক্ট, যা সার্বজনিক স্থানে নাট্যকলা প্রদর্শনকারীদের গ্রেপ্তারের অনুমতি দিত। এই আইন দেশ স্বাধীন হওয়ার পরেও ৭০ বছর ধরে কার্যকর ছিল। বর্তমান সরকার একে বাতিল করেছে। প্রধানমন্ত্রী বাঁশের উদাহরণ দিয়ে বলেন, এই বাঁশ দেশের বিভিন্ন জনজাতি অধ্যুষিত এলাকা, বিশেষ করে উত্তরপূর্ব ভারতের জীবনরেখা। কিন্তু পুরনো আইনে এই বাঁশকে গাছ বলে মনে করা হত। তাই বাঁশ কাটলে গ্রেপ্তার হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। বর্তমান সরকার এই আইনকে বদলে দিয়েছে। এখন বাঁশকে বিজ্ঞানসম্মতভাবে ঘাস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। তিনি এই ধরনের বিভিন্ন অবাঞ্ছিত আইন নিয়ে পূর্ববর্তী সরকারগুলির নেতাদের নীরবতার কথা উল্লেখ করেন এবং সেগুলি বাতিলের জন্য বর্তমান সরকারের প্রচেষ্টার ওপর জোর দেন। 

প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, ১০ বছর আগে আইটিআর জমা দেওয়া একটি কঠিন কাজ ছিল। কিন্তু আজ কিছুক্ষণের মধ্যেই করে ফেলা যায়। আর কয়েকদিনের মধ্যেই রিফান্ড প্রত্যেকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা হয়ে যায়। তিনি বলেন যে, সংসদে আয়কর আইনগুলিকে আরও সরল করার প্রক্রিয়া চালু রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়কে করমুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। এরফলে দেশের বেতনভোগী মানুষরা অনেক লাভবান হয়েছেন। তিনি বলেন যে বাজেট প্রবীণ পেশাদারদের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন এবং তাঁদের সঞ্চয় বৃদ্ধির সহায়ক। দেশের মানুষের জীবনযাপন সরল করা, আকাঙ্ক্ষা পূরণ এবং ব্যবসাকে আরও সরল ও খোলা আকাশ প্রদান করাই ছিল এর মূল লক্ষ্য। তিনি বলেন যে, অনেক স্টার্টআপ জিও স্পেশিয়েল বা ভূ -স্থানিক তথ্যের দ্বারা লাভবান হচ্ছেন। এর জন্য আগে সরকারের অনুমতি নিয়ে মানচিত্র তৈরি করতে হত। কিন্তু বর্তমান সরকার এই প্রক্রিয়া বদলে দিয়েছে, এর ফলে স্টার্টআপ এবং বেসরকারি কোম্পানিগুলি আরও ভালোভাবে এই তথ্যগুলি ব্যবহার করতে পারছে। 

বিশ্বকে শূন্যের ধারণা দিয়েছে যে ভারত, তা এখন অনন্ত উদ্ভাবনের ভূমিতে পরিণত হয়েছে। একথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতীয়রা এখন শুধুই উদ্ভাবন করছে না “ইন্ডোভেটিং”-ও করছে। এর মানে হল, ভারতীয় প্রক্রিয়ায় উদ্ভাবন করা। তিনি বলেন, যে ভারত এমন সব সমাধান তৈরি করছে যা সস্তা, পরিবেশের অনুকূল এবং কোনরকম ‘গেটকিপিং’ ছাড়াই বিশ্বের সামনে এই সমাধানগুলি তুলে ধরছে। তিনি উল্লেখ করেন যে, যখন বিশ্বে একটি নিরাপদ এবং বিনিয়োগ অনুকূল কার্যকর ডিজিটাল লেনদেনে প্রক্রিয়ার প্রয়োজনীয়তা ছিল, তখন ভারত ইউপিআই বা (ইউনিফায়েড পেমেন্টস ইন্টারফেস) চালু করেছে। শ্রী মোদী বলেন, প্রফেসর কার্লোস মনটেস ইউপিআই প্রযুক্তির মধ্যে সাধারণ মানুষের ব্যবহারের সুবিধা দেখে প্রভাবিত হয়েছেন। আর তিনি উল্লেখ করেছেন যে আজ ফ্রান্স, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এবং সিঙ্গাপুরের মতো দেশগুলি ইউপিআই-কেই তাদের দেশের আর্থিক লেনদেনের জন্য ব্যবহার করছে। তিনি এটাও বলেন, অনেক দেশ ভারতে ডিজিটাল সার্বজনীন বুনিয়াদি পরিকাঠামো, ইন্ডিয়া স্টেটের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার জন্য চুক্তিতে হস্তাক্ষর করছে। কোভিড-১৯ বিশ্বব্যাপি মহামারীর সময় ভারতে তৈরি ভ্যাকসিন বিশ্বের অসংখ্য দেশে উৎকৃষ্ট স্বাস্থ্য পরিষেবা সমাধানের কাজ করেছে। বিশ্ববাসীর স্বার্থেই আরোগ্য সেতু অ্যাপকে একটি ওপেন সোর্স হিসেবে রচনা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, ভারত আজ একটি প্রধান মহাকাশ শক্তি এবং অন্যান্য দেশের মহাকাশ আকাঙ্ক্ষা পূরণেও সাহায্য করছে। তিনি বলেন যে ভারত সার্বজনীন কল্যাণের জন্য এআই নিয়ে কাজ করছে। আর নিজেদের অভিজ্ঞতা ও বিশেষ জ্ঞান বিশ্ববাসীর কল্যাণে সঁপে দিচ্ছে।

আজ বেশ কিছু ফেলোশিপের শুভ সূচনা করার জন্য আই টিভি নেটওয়ার্কের প্রশংসা করে শ্রী মোদী জোর দিয়ে বলেন, ভারতের যুবশক্তি উন্নত ভারতের সবচাইতে বড় সুবিধাভোগী, সেজন্য তাঁদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। জাতীয় শিক্ষা নীতি ছাত্রছাত্রীদের পাঠ্যপুস্তকের বাইরে ভাবনাচিন্তার সুযোগ দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন মাধ্যমিক পর্যায়ের ছাত্রছাত্রীরা কোডিং শিখছে এবং এআই ও ডেটা সায়েন্সের মতো বিষয় নিয়ে পড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। নতুন নতুন প্রযুক্তির ব্যবহারিক অভিজ্ঞতা প্রদানকারী অটল টিঙ্কারিং ল্যাব-এর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবারের বাজেটে ৫০,০০০ নতুন অটল টিঙ্কারিং ল্যাব তৈরির কথা ঘোষণা করা হয়েছে। 

শ্রী মোদী বলেন, সংবাদের বিশ্বে বিভিন্ন এজেন্সির সদস্য হওয়া উন্নত সংবাদ ‘কভারেজ’এ সাহায্য করে। একইরকমভাবে গবেষণার ক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীদের যথা সম্ভব বেশি করে তথ্য ও সূচনার উৎসগুলির কাছে পৌঁছনোর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। তিনি বলেন যে, আগে অনেক বেশি সদস্য চাঁদা দিয়ে বিভিন্ন পত্রিকার সদস্য হতে হত। কিন্তু সরকার ‘এক রাষ্ট্র, এক সদস্য’ উদ্যোগ শুরু করে গবেষকদের এই দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত করে দিয়েছে। এর ফলে দেশের প্রত্যেক গবেষণার জন্য বিনামূল্যে সারা পৃথিবীর যেকোন বিখ্যাত পত্র-পত্রিকা পড়া সম্ভব হচ্ছে। তিনি বলেন যে, সরকার এই উদ্যোগের জন্য ৬,০০০ কোটি টাকারও বেশি খরচ করতে চলেছে। মহাকাশ গবেষণা, জৈব প্রযুক্তি গবেষণা এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় প্রত্যেক ছাত্রের জন্য সর্বোত্তম গবেষণার সুবিধা সুনিশ্চিত করতে সরকারের উদ্যোগের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের শিশুরা ভবিষ্যতে বিশ্বে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছে। ডঃ ব্রায়ান গ্রিনের সঙ্গে আইআইটি ছাত্রদের বৈঠক এবং মহাকাশযাত্রী মাইক মৈসিমিনোর সঙ্গে কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের বৈঠকের উল্লেখযোগ্য অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বিশ্বাস ব্যক্ত করেন যে, ভবিষ্যতে একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভাবন ভারতের যে কোনও ছোট বিদ্যালয়েও সম্ভব হবে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের আকাঙ্ক্ষা এবং লক্ষ্য প্রত্যেক আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজের জয় পতাকা উড়াচ্ছে। তিনি বলেন যে, এটা ছোট ভাবনা এবং ছোট পদক্ষেপের সময় নয়। তিনি আনন্দের সঙ্গে বলেন, যে একটি সংবাদ মাধ্যম গ্রুপ নিউজএক্স ওয়ার্ল্ড এই ভাবনাকে বুঝেছে। তিনি এই বিষয়ে আলোকপাত করেন যে, ১০ বছর আগে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে পৌঁছনোকে গুরুত্ব দেওয়া হত। কিন্তু আজ আমাদের নেটওয়ার্ক আন্তর্জাতিক হওয়ার জন্য সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছে। শ্রী মোদী বলেন, এই প্রেরণা ও সংকল্প প্রত্যেক নাগরিক এবং শিল্পপতির মধ্যে থাকতে হবে। তিনি গোটা বিশ্বের সমস্ত বাজার, ড্রয়িং রুম এবং ডাইনিং টেবিলে একটি ভারতীয় ব্র্যান্ড দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করে বলেন, “মেড ইন ইন্ডিয়া” যেন সারা বিশ্বের মন্ত্রে পরিণত হয়। প্রধানমন্ত্রী নিজের স্বপ্নের কথা জানিয়ে বলেন, যখন অসুস্থ হবেন, তখন “হুইল ইন ইন্ডিয়া”র কথা ভাববেন। যখন বিবাহের পরিকল্পনা নেবেন, তখন “ওয়েড ইন ইন্ডিয়া”র সম্পর্কে ভাবা উচিত। আর বিভিন্ন  সম্মেলন, প্রদর্শনী এবং সঙ্গীত অনুষ্ঠানে ভারতকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। তিনি নিজের মনে  ইতিবাচক দৃষ্টিকোন এবং শক্তিকে উৎসাহ যোগানোর গুরুত্বের দিকে আলোকপাত করেন। তিনি বলেন যে, অনন্ত সম্ভাবনা রয়েছে। এখন এটা আমাদের ওপর নির্ভর করে, যে আমরা কতটা সাহস এবং দৃঢ় সংকল্প নিয়ে সেগুলিকে বাস্তবে রূপান্তরিত করি। 

শ্রী মোদী বলেন, ভারত আগামী ২৫ বছরে একটি উন্নত রাষ্ট্র হওয়ার সংকল্প নিয়ে এগিয়ে চলেছে। নিজের বক্তব্যের শেষে তিনি আইটিভি নেটওয়ার্ককে বিশ্বমঞ্চে স্থাপনের জন্য এ ধরনের সংকল্প নিতে উৎসাহিত করেন এবং তাদের নিশ্চিত সাফল্যের প্রতি বিশ্বাস ব্যক্ত করেন। 

এই অনুষ্ঠানে আইটিভি মিডিয়া নেটওয়ার্কের প্রতিষ্ঠাতা এবং রাজ্য সভার সাংসদ শ্রী কার্তিকেয় শর্মা, অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী  টনি অ্যাবট, শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী  রানীল বিক্রমসঙ্ঘে সহ অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। 
   

SC/SB/NS…. 


(Release ID: 2107625) Visitor Counter : 3