রাষ্ট্রপতিরসচিবালয়
সংসদে মাননীয় রাষ্ট্রপতি শ্রীমতী দ্রৌপদী মুর্মু-র ভাষণের বঙ্গানুবাদ
Posted On:
31 JAN 2025 12:31PM by PIB Kolkata
নতুন দিল্লি, ৩১ জানুয়ারি, ২০২৫
মাননীয় সদস্যবৃন্দ,
সংসদের এই অধিবেশনে ভাষণ দিতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত।
কয়েক মাস আগেই, আমরা আমাদের সংবিধান গৃহীত হওয়ার ৭৫ তম বার্ষিকী উদযাপন করেছি এবং মাত্র কয়েক দিন আগে ভারতীয় সাধারণতন্ত্র নিজের যাত্রার ৭৫ বছর পূর্ণ করেছে। এই উদযাপন গণতন্ত্রের ধাত্রীভূমি হিসেবে ভারতের মর্যাদাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। দেশের সব নাগরিকের পক্ষ থেকে আমি বাবাসাহেব আম্বেদকর এবং সংবিধানের সব রূপকারকে শ্রদ্ধা জানাই।
মাননীয় সদস্যবৃন্দ,
দেশে চলছে ঐতিহাসিক মহাকুম্ভ উৎসব। মহাকুম্ভ ভারতের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং সামাজিক সচেতনতার উদযাপন। দেশ ও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী প্রয়াগরাজে পুণ্যস্নান করেছেন। সেখানে মৌনি অমাবস্যায় দুর্ভাগ্যজনক ঘটনায় আমি গভীরভাবে দুঃখিত। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি।
কয়েক দিন আগেই আমরা দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংজি-কে হারিয়েছি। দীর্ঘ ১০ বছর তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাজ করেছেন এবং দীর্ঘ সময়ে সংসদের সদস্য ছিলেন। মনমোহন সিংজি-র প্রতি আমি আন্তরিক শ্রদ্ধা জানাই।
মাননীয় সদস্যবৃন্দ,
এই অমৃতকালে আমার সরকার নজিরবিহীন নানা সাফল্যের মাধ্যমে বিকাশের যাত্রায় নতুন শক্তি সঞ্চার করছে। সরকারের তৃতীয় মেয়াদে কাজের গতি তিনগুণ হয়েছে। আজ নজিরবিহীন গতিতে গুরুত্বপূর্ণ নানা সিদ্ধান্ত এবং নীতির রূপায়ণ প্রত্যক্ষ করছে এই দেশ। দরিদ্র, মধ্যবিত্তবর্গ, তরুণ প্রজন্ম, মহিলা এবং কৃষকদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে এক্ষেত্রে।
আমার সরকারের তৃতীয় মেয়াদে “সকলের জন্য আবাসন”-এর লক্ষ্য অর্জনে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার মেয়াদ বাড়িয়ে আমরা আরও ৩ কোটি পরিবারকে নতুন বাড়ি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই লক্ষ্যে ৫,৩৬,০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে।
আমার সরকার গ্রামের দরিদ্র মানুষকে বাস্তুজমির মালিকানার অধিকার প্রদান করে অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তির ধারণাকে প্রসারিত করতে চায়। SVAMITVA প্রকল্পের আওতায় আমরা এখনও পর্যন্ত ২.২৫ কোটি সম্পত্তি পত্র প্রদান করেছি, যার মধ্যে ৭০ লক্ষ বিতরণ করা হয়েছে বিগত ৬ মাসের মধ্যে।
প্রধান পিএম কিষান সম্মান নিধি প্রকল্পের আওতায় সাম্প্রতিক মাসগুলিতে কৃষকদের ৪১,০০০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে।
“ধরতি আবা ট্রাইবাল ভিলেজ উৎকর্ষ” কর্মসূচির সূচনা হয়েছে জনজাতি গোষ্ঠীর ৫ কোটি মানুষের কল্যাণে, এজন্য বরাদ্দ হয়েছে ৮০,০০০ কোটি টাকা।
আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের আওতায় ৭০ বছর এবং তার উর্ধ্বে থাকা ৬ কোটি প্রবীণ নাগরিক প্রতি বছর ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত স্বাস্থ্য বিমার সুযোগ পাবেন।
মুদ্রা যোজনার আওতায় ক্ষুদ্র উদ্যোগপতিদের জন্য ঋণের উর্ধ্বসীমা ১০ লক্ষ থেকে বাড়িয়ে ২০ লক্ষ টাকা করা হয়েছে।
আমার সরকার যুব প্রজন্মের শিক্ষা এবং কর্মসংস্থানের বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়েছে। পিএম বিদ্যালক্ষ্মী প্রকল্পের সূচনা করা হয়েছে মেধাবি পড়ুয়াদের উচ্চশিক্ষা সংক্রান্ত সহায়তার জন্য। এছাড়াও ১ কোটি যুবক-যুবতী শীর্ষস্থানীয় ৫০০টি বাণিজ্যিক সংস্থায় শিক্ষানবিশির সুযোগ পাবেন। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা বিধানে প্রশ্নপত্র ফাঁস রুখতে একটি নতুন আইন প্রণীত হয়েছে।
সমবায়ের মাধ্যমে সমৃদ্ধির ধারণাকে প্রসারিত করার লক্ষ্যে সরকার ‘ত্রিভুবন’ সমবায় বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে।
প্রধানমন্ত্রী গ্রামসড়ক যোজনার চতুর্থ পর্যায়ের আওতায় সরকার ২৫,০০০ জনপদকে সংযুক্ত করতে ৭০,০০০ কোটি টাকা মঞ্জুর করেছে। দেশ অটলজির জন্ম শতবর্ষ উদযাপন করছে, প্রধানমন্ত্রী গ্রামসড়ক যোজনা প্রতিফলিত করছে তাঁর দর্শনকে।
বর্তমানে দেশে ৭১টি বন্দে ভারত, অমৃত ভারত এবং নমো ভারত ট্রেন চালু রয়েছে। বিগত ৬ মাসে চালু হয়েছে ১৭টি নতুন বন্দে ভারত এবং একটি নতুন নমো ভারত ট্রেন।
সরকার “এক দেশ এক নির্বাচন” এবং “ওয়াকঅফ আইন” সংশোধনের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রেও দ্রুত এগিয়ে চলেছে।
মাননীয় সদস্যবৃন্দ,
‘বিকশিত ভারত’-এর যাত্রায় আমার সরকারের ১০ বছরের কার্যকাল নতুন শক্তি সঞ্চার করেছে।
‘বিকশিত ভারত’-এর দর্শনে রয়েছে...
জনঅংশীদারিত্বের সম্মিলিত শক্তি,
দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের দিশানির্দেশ,
ডিজিটাল বিপ্লবের মাধ্যমে প্রযুক্তির ক্ষমতাকে কাজে লাগানো,
এবং আধুনিক পরিকামোর ভিত্তি।
ভারতকে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ করে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার।
‘বিকশিত ভারত’-এর অভিমুখে যাত্রা যাতে আমাদের সংবিধানের আদর্শ অনুযায়ী পরিচালিত হয়, তা নিশ্চিত করতে সরকার চারটি মূল নীতি – সেবা, সুপ্রশাসন, সমৃদ্ধি এবং মর্যাদা-কে নিজের কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দুতে স্থাপন করেছে।
সংস্কার, সম্পাদন এবং পরিবর্তনের ক্ষেত্রে দায়বদ্ধতা পূরণে সরকার দ্রুত এগিয়ে চলেছে।
আমার সরকারের চালিকা মন্ত্র হল “সকলের সঙ্গে, সকলের বিকাশ, সকলের বিশ্বাস, সকলের প্রয়াস” এবং লক্ষ হল ‘বিকশিত ভারত’-এর নির্মাণ।
মাননীয় সদস্যবৃন্দ,
বিকাশ তখনই অর্থপূর্ণ হয়ে ওঠে, যখন তার সুফল সমাজের প্রান্তবিন্দুতে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটির কাছে পৌঁছে যায়। এই হল অন্ত্যোদয়ের মূল কথা – যার প্রতি আমার সরকার সম্পূর্ণভাবে দায়বদ্ধ।
দরিদ্র মানুষ মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপনের অধিকারী হলে তাঁদের মধ্যে ক্ষমতায়ণের বোধ প্রোথিত হয় এবং তা দারিদ্রের সঙ্গে লড়াইয়ে সহায়ক হয়।
স্বচ্ছ ভারত অভিযানের আওতায় ১২ কোটি শৌচালয় নির্মাণের উদ্যোগ, প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনার আওতায় নিখরচায় ১০ কোটি এলপিজি সংযোগ, ৮০ কোটি অভাবী মানুষকে রেশন, সৌভাগ্য যোজনা এবং জলজীবন মিশন দরিদ্র মানুষকে এই আশ্বাস দিয়েছে, যে তাঁরা মর্যাদার সঙ্গে বাঁচতে পারেন। এইসব উদ্যোগের সুবাদে ২৫ কোটি মানুষ দারিদ্রের ছায়া থেকে বেরিয়ে এসে জীবনের পথে এগিয়ে চলেছেন। তাঁরা তৈরি করেছেন একটি নব্য মধ্যবিত্ত শ্রেণী - ভারতের বিকাশ যাত্রায় নবশক্তির সঞ্চারে সামিল এক বর্গ।
মাননীয় সদস্যবৃন্দ,
ভারতের মতো দেশে অর্থনৈতিক বিকাশের সংজ্ঞা নির্ধারিত হয় মধ্যবিত্ত শ্রেণীর আশা-আকাঙ্ক্ষা এবং তা পূরণের মাধ্যমে। মধ্যবিত্ত শ্রেণীর স্বপ্ন যত প্রসারিত হয়, দেশ এগিয়ে চলে তত বেশি। আমার সরকারই প্রথম মধ্যবিত্ত শ্রেণীর অবদানকে স্বীকৃতি দিয়েছে প্রতিটি ক্ষেত্রে।
সরকারি কর্মীরাও মধ্যবিত্ত শ্রেণীরই গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধি। সম্প্রতি আমার সরকার, সরকারি কর্মীদের কল্যাণে অষ্টম বেতন কমিশন গড়ে তুলেছে। এই সিদ্ধান্তের সুবাদে আগামী বছরগুলিতে সরকারি কর্মীরা অনেকটাই বর্ধিত বেতন পাবেন।
এছাড়াও কেন্দ্রীয় সরকার ইউনিফায়েড পেনশন স্কিমের আওতায় লক্ষ লক্ষ কর্মীকে ৫০ শতাংশ হারে পেনশন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যাকে স্বাগত জানিয়েছেন বহু মানুষ।
নিজের বাড়ি থাকার যে স্বপ্ন মধ্যবিত্তরা লালন করেন তার বাস্তবায়নও আমার সরকার সমানভাবে দায়বদ্ধ। তাঁদের সুরক্ষায় RERA-র মতো আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। গৃহ ঋণে ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে।
উড়ান প্রকল্পের আওতায় বিমানের আরোহী হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করেছেন প্রাট ১.৫ কোটি মানুষ। জন ঔষধি কেন্দ্রগুলির মাধ্যমে ৮০ শতাংশ ছাড়ে ওষুধ বিক্রির কর্মসূচি নাগরিকদের ৩০,০০০ কোটি টাকারও বেশি সাশ্রয় করেছে। বিভিন্ন পাঠক্রমে পড়ুয়াদের আসন সংখ্যায় বহুগুণ বৃদ্ধি মধ্যবিত্ত শ্রেণীকে দারুণভাবে উপকৃত করেছে।
দেশ গঠনে করদাতাদের ভূমিকা মান্যতা দিয়ে আমার সরকার কর সংক্রান্ত প্রণালীকে সরল করেছে। মুখাবয়বহীন মূল্যায়ন ব্যবস্থাপনা কর সংক্রান্ত বিবাদ কমিয়েছে এবং গোটা প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিয়ে এসেছে।
৭৫ বছরের উপরে থাকা প্রবীণ নাগরিকরা এবং যারা শুধুমাত্র পেনশন টুকুই পান, তাঁরা এখন নিজেদের আয়কর রিটার্ন দাখিল করার ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।
মাননীয় সদস্যবৃন্দ,
আমার সরকার নারী-নেতৃত্বাধীন বিকাশের মাধ্যমে দেশের ক্ষমতায়ণে বিশ্বাসী।
নারী শক্তি বন্দন অধিনিয়ম লোকসভা এবং রাজ্য বিধানসভাগুলিতে মহিলাদের জন্য আসন সংরক্ষণের সংস্থান এনেছে এবং এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
জাতীয় গ্রামীণ জীবিকা মিশনের আওতায় ৯১ লক্ষেরও বেশি স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে ক্ষমতায়িত করা হচ্ছে – যার সঙ্গে যুক্ত দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ১০ কোটিরও বেশি মহিলা। এই গোষ্ঠীগুলি ব্যাঙ্কের মাধ্যমে ৯ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি পেয়েছে।
আমার সরকার ৩ কোটি লাখপতি দিদি-র লক্ষ্যমাত্রা রেখেছে। আজ ১.১৫ কোটি লাখপতি দিদি মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপন করছেন। বিগত ৬ মাসে লাখপতি দিদি হয়েছেন প্রায় ৫০ লক্ষ মহিলা। এঁরা উদ্যোগপতি হিসেবে নিজেদের পারিবারিক আয়ে অবদান রাখছেন।
“সকলের জন্য বিমা”-র লক্ষ্যে কয়েক মাস আগে সূচনা হয়েছে বিমা সখী অভিযানের। আমাদের ব্যাঙ্কিং এবং ডিজি পেমেন্ট সখীরা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলিকে অর্থনৈতিক প্রণালীতে সংযুক্ত করায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। একইভাবে, কৃষি সখীরা প্রাকৃতিক চাষ এবং পশু সখীরা প্রাণী সম্পদের প্রসারে কাজ করে চলেছেন।
ড্রোন দিদি যোজনা মহিলাদের অর্থনৈতিক এবং প্রযুক্তিগত ক্ষমতায়ণের অন্যতম হাতিয়ার হয়ে উঠেছে।
ভারতীয় সংসদের কাছে এটা খুবই গর্বের যে দেশের মেয়েরা এখন যুদ্ধ বিমান চালনা করছেন, পুলিশ বাহিনীতে যোগ দিচ্ছেন, এবং বাণিজ্যিক সংস্থার নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আমার সরকারের সিদ্ধান্তের সুবাদে জাতীয় সামরিক বিদ্যালয় এবং ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমিতে নাম লেখাচ্ছে মেয়েরা।
অলিম্পিকস-এ পদক জয় করেও দেশকে গর্বিত করেছেন দেশের মেয়েরা।
এই সংসদের মাধ্যমে আমি ‘নারী শক্তি’-কে অভিনন্দন জানাই।
মাননীয় সদস্যবৃন্দ,
বিগত দশকে ভারতের তরুণ-তরুণীরা জাতীয় স্তরের প্রতিটি উদ্যোগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নির্বাহে এগিয়ে এসেছেন। আজ তাঁরা দেশকে গর্বিত করছেন প্রতিটি ক্ষেত্রে, স্টার্টআপ থেকে ক্রীড়া এবং মহাকাশ অভিযান সব ক্ষেত্রেই। লক্ষ লক্ষ তরুণ-তরুণী মাই ভারত পোর্টালের মাধ্যমে দেশ গঠনের প্রক্রিয়ায় অংশ নিচ্ছেন।
মেক ইন ইন্ডিয়া, আত্মনির্ভর ভারত, স্টার্টআপ ইন্ডিয়া, স্ট্যান্ডআপ ইন্ডিয়া এবং ডিজিটাল ইন্ডিয়া তরুণ প্রজন্মের জন্য কর্মসংস্থানের বিপুল পরিসর তৈরি করেছে। বিগত ২ বছরে স্থায়ী সরকারি চাকরি পেয়েছেন রেকর্ড ১০ লক্ষ কর্মপ্রার্থী।
যুব সমাজের দক্ষতার বিকাশ এবং তাঁদের সামনে নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলে দিতে আমার সরকার ২ লক্ষ কোটি টাকার একটি প্যাকেজে অনুমোদন দিয়েছে।
১ কোটি যুবক-যুবতী শিক্ষানবিশির মাধ্যমে বাস্তব দুনিয়ায় কাজের পরিমণ্ডল সম্পর্কে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবেন।
ভারতে এখন ১.৫ লক্ষ স্টার্টআপ রয়েছে – যেগুলি উদ্ভাবনার গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ।
মহাকাশ ক্ষেত্রের বিকাশে ১ হাজার কোটি টাকার ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফান্ডের সূচনা হয়েছে।
কিউএস ওয়ার্ল্ড ফিউচার স্কিলস ইনডেক্স ২০২৫ অনুযায়ী ভারত সারা বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে – যা ভবিষ্যৎ কর্মী পরিমণ্ডলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং ডিজিটাল প্রযুক্তি গ্রহণ ও ব্যবহারে পারঙ্গমতার আশ্বাস দেয়।
একইভাবে, গ্লোবাল ইনোভেশন ইনডেক্সে ভারত ৭৬ তম থেকে ৩৯ স্থানে উঠে এসেছে।
মাননীয় সদস্যবৃন্দ,
জাতীয় শিক্ষানীতির মাধ্যমে আমার সরকার নতুন শিক্ষা পরিমণ্ডল তৈরি করছে।
একজনও যাতে শিক্ষা বঞ্চিত না থাকে, মাতৃ ভাষায় শিক্ষার সুযোগ পায় – তা নিশ্চিত করা হচ্ছে। নিয়োগের বিভিন্ন পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে ১৩টি ভাষায় – যার ফলে দূর হয়েছে ভাষাগত ভেদাভেদ।
শিশুদের মধ্যে উদ্ভাবনার প্রসারে স্কুলগুলিতে তৈরি হয়েছে ১০,০০০-এরও বেশি অটল টিংকারিং ল্যাব।
ইজ অফ ডুইং বিজনেস সংক্রান্ত গবেষণার প্রসারে চালু করা হয়েছে এক দেশ – এক সদস্যতা কর্মসূচি – যার ফলে আন্তর্জাতিক স্তরের গবেষণা সংক্রান্ত বিষয়বস্তুর নাগাল পাওয়া যাচ্ছে নিখরচায়।
বিগত দশকে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা অনেক বেড়েছে এবং বেড়েছে তাদের উৎকর্ষমান। কিউএস ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি এশিয়া র্যাং কিং-এ অন্তর্ভুক্ত হয়েছে ১৬৩টি ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।
নতুন নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় চত্ত্বরের উদ্বোধন শিক্ষা ক্ষেত্রে ভারতের গৌরবোজ্জ্বল অতীতকে তুলে ধরে।
এমন দিন বেশি দূরে নেই, যখন ভারতীয় নাগরিকরা দেশে তৈরি গগণযান মহাকাশপোত-এ চেপে বহির্বিশ্বে পাড়ি দেবেন। স্পেস ডকিং-এর ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক সাফল্য ভারতকে নিজের মহাকাশ কেন্দ্র তৈরিতে সক্ষম করবে।
মাত্র কয়েক দিন আগে ইসরো তাদের ১০০ তম উৎক্ষেপণ সম্পন্ন করেছে। উপগ্রহ নির্ভুলভাবে স্থাপিত হয়েছে কক্ষপথে। এজন্য আমি ইসরো এবং দেশের প্রতিটি নাগরিককে অভিনন্দন জানাই।
মাননীয় সদস্যবৃন্দ,
আমার সরকার দেশে বিশ্বমানের ক্রীড়া পরিমণ্ডল তৈরি করায় একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। খেলো ইন্ডিয়া প্রকল্প, টার্গেট অলিম্পিক পোডিয়াম প্রকল্প কিংবা জাতীয় ক্রীড়া বিশ্ববিদ্যালয় গঠন এই বিষয়টিকে তুলে ধরে।
দিব্যাঙ্গ ক্রীড়াবিদদের জন্য গোয়ালিয়রে একটি বিশেষ ক্রীড়া কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে।
অলিম্পিকস, প্যারালিম্পিকস – সব ক্ষেত্রেই ভারতীয়রা ধারাবাহিকভাবে অসাধারণ প্রদর্শন করে চলেছেন। সম্প্রতি বিশ্ব দাবা চ্যাম্পিয়নশিপে নজিরবিহীন সাফল্য পেয়েছে ভারত।
ফিট ইন্ডিয়া মুভমেন্টের মাধ্যমে আমরা শক্তিশালী ও প্রাণবন্ত যুবসমাজ তৈরি করছি।
মাননীয় সদস্যবৃন্দ,
‘বিকশিত ভারত’ গঠনে গবেষণার পাশাপাশি কৃষক, সৈনিক এবং বিজ্ঞানের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের লক্ষ্য ভারতকে বিশ্বের অন্যতম উদ্ভাবনা কেন্দ্র করে তোলা।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে গবেষণার প্রসারে ৫০,০০০ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি করা হয়েছে জাতীয় গবেষণা ফাউন্ডেশন।
এছাড়াও বিজ্ঞান ধারা যোজনার আওতায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে উদ্ভাবনার প্রসারে ১০,০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হচ্ছে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রে ভারতের অবস্থান অনেক দৃঢ় হয়ে উঠেছে ইন্ডিয়া এআই মিশনের কল্যাণে।
সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ক্ষেত্রে ভারতকে প্রথম সারিতে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে জাতীয় কোয়ান্টাম মিশন।
আমার সরকার বায়োইথ্রি নীতি প্রণয়ন করেছে জৈব উৎপাদন ক্ষেত্রে প্রসারের লক্ষ্যে।
এই নীতি পরবর্তী শিল্প বিপ্লবের ক্ষেত্র প্রস্তুত করবে। জৈব-অর্থনীতির ক্ষেত্রে এই অগ্রাধিকার প্রাকৃতিক সম্পদের দক্ষ ব্যবহারের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের প্রসারের পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষায় বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।
মাননীয় সদস্যবৃন্দ,
আমার সরকার দেশকে নীতিপঙ্গুত্ব থেকে তুলে আনায় দৃঢ় পদক্ষেপের মাধ্যমে কাজ করেছে। কোভিড ১৯ নিয়ে সারা বিশ্বে উদ্বেগ এবং তারপর যুদ্ধ সংক্রান্ত অনিশ্চয়তা সত্ত্বেও ভারতীয় অর্থনীতি এগিয়ে চলেছে সুস্থিতভাবে।
আমার সরকার ইজ অফ ডুইয়ং বিজনেস-এর প্রসারে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে।
এই লক্ষ্যে ‘এক দেশ এক কর’ এবং জিএসটি ব্যবস্থাপনার সূচনা হয়েছে – যাতে উপকৃত হচ্ছে দেশের প্রতিটি রাজ্য।
মেক ইন ইন্ডিয়ার মতো উদ্যোগের সুবাদে আন্তর্জাতিক অনেক ব্র্যান্ড এখন তাদের পণ্যের মোড়কে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ মার্কা লাগাতে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।
মাননীয় সদস্যবৃন্দ,
গ্রাম থেকে শহর – সর্বত্র ছড়িয়ে থাকা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা অর্থনৈতিক প্রগতির গুরুত্বপূর্ণ বাহন। আমার সরকার এঁদের অর্থনীতির মেরুদণ্ড মনে করে এবং তাঁদের কাছে স্বনিযুক্তি সংক্রান্ত যাবতীয় সুবিধা পৌঁছে দিতে কাজ করছে।
এমএসএমই ক্ষেত্রের জন্য ক্রেডিট গ্যারান্টি প্রকল্প এবং ই-কমার্স এক্সপোর্ট হাব এক্ষেত্রে অত্যন্ত ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
তৃতীয় মেয়াদে, মুদ্রা যোজনার আওতায় ঋণের উর্ধ্বসীমা ১০ থেকে বাড়িয়ে ২০ লক্ষ টাকা করায় উপকৃত হয়েছেন কোটি কোটি ক্ষুদ্র উদ্যোগপতি।
আমার সরকার ঋণ পাওয়ার কাজ সহজ করেছে – আর্থিক পরিষেবা ক্ষেত্রে হয়েছে গণতন্ত্রীকরণ। আজ ঋণ, ক্রেডিট কার্ড কিংবা বীমার সুযোগ পাওয়া সাধারণ মানুষের পক্ষে অনেক সহজ।
দশকের পর দশক ধরে রাস্তায় ফেরিওয়ালা হিসেবে কাজ করা আমাদের ভাই ও বোনেরা ব্যাঙ্কিং প্রণালির বাইরে থেকে গিয়েছিলেন। তাঁরা আজ উপকৃত হচ্ছে পিএম স্বনিধি যোজনার কল্যাণে। তাঁদের লেনদেনের ডিজিটাল রেকর্ডের উপর ভিত্তি করে দেওয়া হচ্ছে অতিরিক্ত ঋণ সহায়তা।
ওএনডিসি উদ্যোগ ডিজিটাল বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবস্থাপনা নিয়ে এসেছে। ছোটখাটো ব্যবসায়ীরাও এখন অনলাইন শপিং পরিমণ্ডলের সুবিধা পাচ্ছেন পুরোদমে।
মাননীয় সদস্যবৃন্দ,
বিগত ১০ বছরে আমার সরকার বিকাশের নতুন নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। এর মধ্যে একটি হল ডিজিটাল বিপ্লব।
আজ ডিজিটাল প্রযুক্তি ক্ষেত্রে ভারত বিশ্বের অন্যতম অগ্রসর একটি দেশ। উন্নত নানা দেশের পাশাপাশি ভারতেও চালু হয়েছে ৫জি পরিষেবা।
ভারতের ইউপিআই প্রযুক্তিও উন্নত দেশগুলিকে আকৃষ্ট করেছে। বিশ্বে এই ধরনের লেনদেনের ৫০ শতাংশের বেশি হয়ে থাকে ভারতে।
আমার সরকার সামাজিক ন্যায় ও সমতা বিধানে ডিজিটাল প্রযুক্তিকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। ডিজিটাল লেনদেন এখন আর বিশেষ কিছু ব্যক্তি বা বর্গের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। আজ ছোটখাটো দোকানিরাও এর সুযোগ পাচ্ছেন।
ব্যাঙ্কিং পরিষেবা এবং ইউপিআই-এর মতো বিশ্বমানের প্রযুক্তির সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে গ্রামেও। বিগত ১০ বছরে ৫ লক্ষেরও বেশি সাধারণ পরিষেবা কেন্দ্র তৈরি হয়েছে – যার মাধ্যমে সাধারণ মানুষ অনলাইনে সরকারের বিভিন্ন পরিষেবা পেয়ে যাচ্ছেন।
মানুষের জীবনে সরকারের হস্তক্ষেপ যথাসম্ভব কমাতে আমার সরকার ই-গভর্ন্যান্স-এ গুরুত্ব দিয়েছে। ডিজি লকারের কল্যাণে তাঁরা যে কোনো সময়ে, যে কোনো জায়গা থেকে ব্যক্তিগত তথ্যাদি ব্যবহার করতে পারছেন।
তবে, ডিজিটাল সমাজের প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে সাইবার নিরাপত্তার দিকটিও দেশের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। ডিজিটাল জালিয়াতি, সাইবার অপরাধ কিংবা ডিপফেক-এর মতো অত্যাধুনিক নানা প্রযুক্তি প্রকৌশল সামাজিক অর্থনৈতিক এবং জাতীয় নিরাপত্তায় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসবের মোকাবিলায় আমার সরকার একের পর এক পদক্ষেপ নিয়েছে। সাইবার নিরাপত্তা ক্ষেত্রে তরুণ প্রজন্মের কাজের সুযোগও তৈরি হচ্ছে।
আমার সরকার সাইবার নিরাপত্তা বিষয়টি জোরদার করতে ধারাবাহিকভাবে কাজ করে চলেছে। এর কল্যাণে ভারত গ্লোবাল সাইবার সিকিউরিটি ইনডেক্সে টায়ার-১ মর্যাদা পেয়েছে।
মাননীয় সদস্যবৃন্দ,
আধুনিক পরিকাঠামো একটি দেশের মানুষের জীবনযাত্রার মানকেই উন্নত করে না, সেই দেশের একটি নতুন পরিচয় এবং গর্বের জায়গাও তৈরি হয়। বিগত দশকে ভারত বিশ্বমানের পরিকাঠামো নির্মাণের ক্ষেত্রে একের পর এক মাইলফলক স্পর্শ করেছে। এর ফলে, আন্তর্জাতিক আঙিনায় ভারতের ভারমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে, এদেশের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বেড়েছে, শিল্পের পালে হাওয়া লেগেছে এবং কর্মসংস্থানের নতুন পরিসর তৈরি হয়েছে।
আমার সরকার দেশের প্রতিটি প্রান্তে মহাসড়ক ও এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে মিশন মোডে কাজ করে চলেছে। প্রকল্প রূপায়ণের কাজে গতি এনেছে পিএম গতিশক্তি জাতীয় মহা পরিকল্পনা।
১০ বছর আগে মূলধনী খাতে ব্যয় ছিল ২ লক্ষ কোটি টাকার আশেপাশে। শেষ বাজেটে তা বেড়ে হয়েছে ১১ লক্ষ কোটি টাকা।
বিগত দশকের অগ্রগতির ধারাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে আমার সরকার গত ৬ মাসে ভবিষ্যতের জন্য পরিকাঠামো নির্মাণে রেকর্ড বিনিয়োগ করেছে।
ভাদাভানে ভারতের প্রথম গভীর সমুদ্র মেগা পোর্ট প্রকল্পের শিলান্যাস হয়েছে। ৭৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে এটি গড়ে উঠবে, জায়গা করে নেবে বিশ্বের প্রথম ১০টি বন্দরের মধ্যে।
আমি অত্যন্ত খুশির সঙ্গে জানাচ্ছি, উধমপুর-শ্রীনগর-বারামুলা রেল সংযোগ প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। এর ফলে কাশ্মীর ও কন্যাকুমারী এখন রেল পথে যুক্ত। এই প্রকল্পের আওতায় তৈরি হওয়া চন্দ্রভাগা সেতু বিশ্বের উচ্চতম রেল সেতু। ভারতের প্রথম রেল কেবল সেতু আঞ্জি ব্রিজ-এর কাজও সমাপ্ত।
শিনকুন লা সুড়ঙ্গের কাজও এগিয়ে চলেছে দ্রুত গতিতে। এটি হয়ে উঠবে বিশ্বের উচ্চতম সুড়ঙ্গ। লাদাখ এবং হিমাচল প্রদেশের মধ্যে সংযোগ ব্যবস্থা চালু থাকবে সারা বছর।
ভারতের উড়ান ক্ষেত্র দ্রুত গতিতে বিকশিত হচ্ছে। ১,৭০০ নতুন বিমানের বরাত দিয়েছে ভারতের উড়ান সংস্থাগুলি। বিমানবন্দরগুলির উন্নয়নের কাজও চলছে পুরোদমে। গত দশকে বিমানবন্দরের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে।
মাননীয় সদস্যবৃন্দ,
বিকশিত ভারতের লক্ষ্যে আমাদের শহরগুলিকে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করা দরকার।
এই লক্ষ্যে আমার সরকার শহুরে পরিষেবার আধুনিকীকরণ এবং শক্তি সাশ্রয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে। তৈরি করা হচ্ছে নতুন নতুন শহর।
আমার সরকার ১২টি শিল্প কেন্দ্র এবং ১০০টি শিল্প পার্ক গড়ে তুলতে ২৮,০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
শহরের পরিবহন ব্যবস্থাকে জোরদার করতে কাজ চলছে দ্রুত গতিতে। দিল্লি, পুনে, থানে এবং বেঙ্গালুরুতে মেট্রো প্রকল্প, আমেদাবাদ-ভুজ রেল পথে নমো ভারত র্যা পিড রেল, বিকশিত ভারতের শহরগুলিকে নতুন চেহারা দিচ্ছে। কয়েক সপ্তাহ আগেই দিল্লিতে রিথালা-নারেলা-কুন্দলি করিডরের কাজ শুরু হয়েছে – যা দিল্লি মেট্রোর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠবে। ২০১৪-য় দিল্লি-জাতীয় রাজধানী অঞ্চলে মেট্রো রেল পথের দৈর্ঘ্য ছিল ২০০ কিলোমিটার, এখন তার দ্বিগুণ।
আজ আমি অত্যন্ত খুশি হয়েছি যে, ভারতের মেট্রো নেটওয়ার্ক ১,০০০ কিলোমিটারের মাইলফলক পেরিয়ে গেছে – এক্ষেত্রে ভারত এখন বিশ্বের তৃতীয়।
এছাড়া, ৫২,০০০ বৈদ্যুতিক বাসের জন্যও ৮,০০০ কোটি টাকা খরচ করা হবে। নগর পরিবহণকে উন্নত করতে। এর ফলে কর্মসংস্থানের সুযোগও বাড়বে। সারা দেশে ১৫টি রোপওয়ে প্রকল্পের কাজ চলছে।
মাননীয় সদস্যবৃন্দ,
বহুমাত্রিক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক বিকাশের লক্ষ্যে সাধারণ পরিকাঠামোর পাশাপাশি সামাজিক পরিকাঠামো ক্ষেত্রেও বিপ্লব আনতে সরকার কাজ করে চলেছে।
সুলভে সকলের কাছে উন্নতমানের স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া আমার সরকারের অগ্রাধিকার। হাসপাতাল, চিকিৎসা কেন্দ্র উন্নত করে তোলার পাশাপাশি ওষুধপত্রের খরচ কমানো ও সুলভ্যতা নিশ্চিত হওয়ায় সাধারণ মানুষের চিকিৎসার খরচ কমছে।
দেশজুড়ে তৈরি হয়েছে ১ লক্ষ ৭৫ হাজার আয়ুষ্মান আরোগ্য মন্দির।
ক্যান্সার রোগীদের কথা মাথায় রেখে এক্ষেত্রে ব্যবহার্য বহু ওষুধে শুল্কে ছাড় দেওয়া হয়েছে।
৯ কোটি মহিলার সারভাইকাল ক্যান্সার সংক্রান্ত পরীক্ষা হয়েছে।
এনসেফালাইটিসের মোকাবিলায় আমার সরকারের ধারাবাহিক প্রচেষ্টার সুবাদে এই রোগের মৃত্যু হার কমে হয়েছে ৬ শতাংশ।
জাতীয় টিবি নির্মূলীকরণ কর্মসূচির কল্যাণে যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা কমেছে অনেকটাই।
প্রসূতি এবং শিশু মৃত্যুর হারও অনেক কমেছে।
গর্ভবতী মহিলা এবং শিশুদের প্রতিষেধক কর্মসূচির কাজ তদারকির জন্য চালু হয়েছে ইউ-উইন পোর্টাল। এখনও পর্যন্ত এই মঞ্চে ৩০ কোটির মতো প্রতিষেধকের ডোজের নিবন্ধন হয়েছে।
টেলি মেডিসিন ক্ষেত্রে ৩০ কোটি ই-টেলিকনসালটেশনের সুযোগ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে নাগরিকদের কাছে।
মেডিকেল কলেজগুলিতে আরও ৭৫ হাজার নতুন আসন তৈরিতে উদ্যোগী সরকার।
স্বাস্থ্য পরিকাঠামো এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম উৎপাদনে জোর দিচ্ছে সরকার। গড়ে তোলা হচ্ছে নতুন বাল্ক ড্রাগ এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম পার্ক।
মাননীয় সদস্যবৃন্দ,
আধুনীক এবং স্বনির্ভর কৃষিক্ষেত্র গড়ে তুলতে আমার সরকার কৃষকদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে শস্যের ন্যায্য মূল্য।
২০২৩-২৪-এ ভারত রেকর্ড ৩৩ কোটি ২০ লক্ষ টন খাদ্যশস্য উৎপাদন করেছে। আজ ভারত দুধ, ডাল এবং মশলা উৎপাদনে সারা বিশ্বে প্রথম।
বিগত দশকে ধান, গম, ডাল, তৈলবীজ ইত্যাদি ক্রয় খাতে ব্যয় তিনগুণ হয়েছে।
গত ৬ মাসে ১০৯টি জলবায়ু সহনশীল এবং উচ্চ উৎপাদনশীল ফসলের বীজ তুলে দেওয়া হয়েছে কৃষকদের হাতে।
কৃষি পরিকাঠামোকে উন্নত করতে কৃষি পরিকাঠামো তহবিল প্রকল্পের আওতা বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে, গ্রামীণ এলাকায় কর্মসংস্থানের প্রসার ঘটবে।
তৈলবীজ উৎপাদনে গতি আনতে অনুমোদিত হয়েছে জাতীয় তৈলবীজ মিশন।
প্রাকৃতিক কৃষির পালে হাওয়া লাগাতে জাতীয় স্তরে একটি কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
এবছরেই কৃষকদের কাছে সুলভে ডিএপি সার পৌঁছে দেওয়ার প্যাকেজের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।
মৎস্য চাষ ক্ষেত্রে গতি আনতে ১১টি ইন্টিগ্রেটেড অ্যাকোয়া পার্ক তৈরি করা হয়েছে।
মাননীয় সদস্যবৃন্দ,
কয়েক সপ্তাহ আগে ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তর ১৫০ বছর পূর্ণ করলো। আবহাওয়া বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে উন্নতির লক্ষ্যে আমার সরকার ২ হাজার কোটি টাকার “মিশন মৌসম”-এর সূচনা করেছে – যার ফলে উপকৃত হবেন কৃষকরা।
বাবাসাহেব আম্বেদকরের আদর্শ অনুযায়ী আমার সরকার খরা প্রবণ এলাকায় সেচ ও পানীয় জল পৌঁছে দিতে দুটি ঐতিহাসিক নদী সংযুক্তিকরণ প্রকল্পের কাজে অনেক দূর এগিয়েছে।
৪৪,০০০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের কেন-বেতোয়া সংযোগ প্রকল্পের সুবাদে মধ্যপ্রদেশ এবং উত্তর প্রদেশের লক্ষ্য লক্ষ্য কৃষক উপকৃত হবেন।
পরিমার্জিত পার্বতী-কালিসিন্ধ-চম্বল সংযোগ প্রকল্প, রাজস্থান এবং মধ্যপ্রদেশে সেচ ও পানীয় জলের চাহিদা মেটাবে।
পোলাভরম সেচ প্রকল্পের রূপায়ণে আরও ১২,০০০ কোটি টাকা মঞ্জুর করা হয়েছে।
মাননীয় সদস্যবৃন্দ,
৮ লক্ষ সমবায় সমিতি এবং তাঁদের ২৯ কোটি সদস্য গ্রামীণ ভারতের প্রায় ৯০ শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করে। সম্প্রতি শহর এলাকাতেও সমবায় ব্যবস্থাপনার প্রসার ঘটেছে।
সমবায় ক্ষেত্রের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ণে এবং কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে বেশ কয়েকটি উদ্যোগের সূচনা হয়েছে।
২০২৫ সালটি আন্তর্জাতিক সমবায় বছর হিসেবে উদযাপিত হচ্ছে। এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে ভারত।
মাননীয় সদস্যবৃন্দ,
দেশের বিকাশের প্রসঙ্গ উঠলেই নাগরিকদের সাফল্যের বিষয়টি এসে পড়ে অবধারিতভাবে। আজ দেশের বিকাশে সম্মিলিত প্রচেষ্টা পরিলক্ষিত।
আমার সরকারের যাবতীয় উদ্যোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন দলিত এবং জনজাতি গোষ্ঠী।
স্বাধীনতার পর দশকের পর দশক ধরে এঁরা অবহেলিত হয়েছেন। আমার সরকার তাঁদের কল্যাণকেই অগ্রাধিকার দিয়েছে।
‘ধরতি আবা জনজাতীয় গ্রাম উৎকর্ষ অভিযান’ এবং ‘পিএম জনমন যোজনা’-এর প্রত্যক্ষ উদাহরণ।
বিগত ১০ বছরে আদিবাসী প্রধান এলাকায় ৩০টি নতুন মেডিকেল কলেজ গড়ে তোলা হয়েছে।
আদিবাসী প্রধান এলাকায় সিকল সেল অ্যানিমিয়ার মোকাবিলায় একটি বিশেষ জাতীয় কর্মসূচি কাজ করে চলেছে। প্রায় ৫ কোটি মানুষের স্ক্রিনিং সম্পন্ন।
আমার সরকার আদিবাসী ঐতিহ্যের রক্ষায় বিশেষভাবে উদ্যোগী। এবছর ভগবান বিরসা মুন্ডার ১৫০তম জন্মবার্ষিকীতে জনজাতীয় গৌরব বর্ষে দেশজুড়ে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
মাননীয় সদস্যবৃন্দ,
‘বিকশিত ভারত’-এর অন্যতম শর্ত হল ভারসাম্য যুক্ত উন্নয়ন – যাতে কোনো অঞ্চল প্রগতির যাত্রায় পিছিয়ে না থেকে।
আমার সরকার উত্তরপূর্ব ভারতের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে।
১০-এরও বেশি শান্তি চুক্তির সুবাদে অনেক জঙ্গী গোষ্ঠীকে শান্তির পথে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।
উত্তরপূর্বের ৮টি রাজ্যের সম্ভাবনাকে তুলে ধরতে প্রথমবার আয়োজিত হয়েছে অষ্টলক্ষ্মী মহোৎসব।
উত্তরপূর্বের উন্নয়নের পাশাপাশি পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলির বিকাশে সরকার “পূর্বোদয়” শীর্ষক একটি সার্বিক উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, লাক্ষাদ্বীপ-এর মতো অঞ্চলে একাধিক উন্নয়ন পরিকল্পনার সূচনা হয়েছে।
৩৭০ ধারা রদ হওয়ার পর জম্মু-কাশ্মীরে তৈরি হয়েছে বিকাশের নতুন পরিমণ্ডল। সেখানে বিধানসভা নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে শান্তিপূর্ণভাবে। এজন্য জম্মু-কাশ্মীরের মানুষ প্রশংসার দাবি রাখেন।
মাননীয় সদস্যবৃন্দ,
দেশ বা সমাজের উন্নয়ন সার্থক হয়, যদি তা হয় নীতিনিষ্ঠ। আমার সরকার সংবিধানে নির্দেশিত নীতি অনুযায়ী কাজ করে চলেছে। আমার সরকারের মূল আদর্শ হল ‘সেবা’।
আমার সরকার দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে ১৪০ কোটি দেশবাসীর সেবা প্রধান কর্তব্য।
পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী এবং শৌচকর্মীদের কাছে ঋণের সুবিধা পৌঁছে দিতে পিএম-সুরাজ যোজনার পরিসর বাড়ানো হয়েছে।
দিব্যাঙ্গদের কাছে সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা সুষ্ঠুভাবে পৌঁছে দিতে ১ কোটি দিব্যাঙ্গ আইডি কার্ড বিতরণ করা হয়েছে।
শৌচকর্মীদের জন্য চালু হওয়া “নমস্তে যোজনা”-র আওতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
বিকশিত ভারতের যাত্রায় যাতে কেউ পিছিয়ে না থাকেন সেজন্য সচেষ্ট আমার সরকার।
মাননীয় সদস্যবৃন্দ,
ভারতের সাংস্কৃতিক চেতনাকে পুনর্জাগরিত করতে সচেষ্ট সরকার ঐতিহ্য এবং বিকাশের যুগলবন্দীতে বিশ্বাসী।
এবছর আমরা ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জীর ১৫০ তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করবো, যিনি বলেছিলেন ‘প্রকৃত জাতীয়তাবাদ শুধুমাত্র ভারতের ভৌগোলিক ঐক্য নয়, সাংস্কৃতিক ঐক্য জোরদার করার উপরেও নির্ভরশীল’।
একইভাবে, ভগবান মহাবীরের ২,৫৫০ তম নির্বাণ মহোৎসব এবং সন্ত মীরাবাইয়ের ৫২৫ তম জন্মবার্ষিকী উদযাপনও হয়েছে যথাযোগ্য মর্যাদায়।
বিভিন্ন দেশে কবি-সন্ত থিরুভাল্লুভর-এর স্মরণে কেন্দ্র গড়ে তোলা হচ্ছে।
আমার সরকার কাশী-তামিল সঙ্গমম, কাশী-তেলুগু সঙ্গমম এবং সৌরাষ্ট্র-তামিল সঙ্গমম-এর মতো আয়োজনের মাধ্যমে জাতীয় ঐক্য জোরদার করার উদ্যোগ নিয়েছে।
মাননীয় সদস্যবৃন্দ,
আমাদের প্রাচীন লিপি ও লেখ এক অমূল্য সম্পদ। এনিয়ে বিস্তারিত গবেষণা হওয়া দরকার। এই অমূল্য সম্পদকে ডিজিটাইজ করার কাজ চলছে জোরকদমে।
দেশের ঐতিহ্যের অন্যতম স্তম্ভ হল সমৃদ্ধ ভাষাগত সংস্কৃতি। অসমিয়া, মারাঠি, পালি, প্রাকৃত, বাংলার মতো ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাচালিত ভাষামঞ্চ ভাষিনী ব্যবহার করছেন দেশের বহু মানুষ।
মাননীয় সদস্যবৃন্দ,
এশিয়ার বৌদ্ধ ধর্মানুসারী দেশগুলিকে এক ছাতার তলায় নিয়ে আসতে আমার সরকার এশীয় বৌদ্ধ সম্মেলনের আয়োজন করেছে। গত বছর ভারতের আয়োজনে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির বৈঠকে যোগ দিয়েছে ১৪০টি দেশ।
আন্তর্জাতিক যোগ দিবস আয়োজনের মধ্য দিয়ে সারা বিশ্ব ভারতের সমৃদ্ধ ঐতিহ্য যোগাভ্যাসকে গ্রহণ করছে।
মাননীয় সদস্যবৃন্দ,
বিকাশের যাত্রাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে আমার সরকার সংস্কার, সম্পাদন এবং পরিবর্তনের মন্ত্রে কাজ করছে।
সংবিধান প্রণীত হওয়ার আগের বিভিন্ন আইনের পর্যালোচনা করে বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী গোটা ব্যবস্থাপনাকে গড়ে তুলতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এখনও পর্যন্ত সরকার ১,৫০০টি সেকেলে আইন বাতিল করেছে। ঔপনিবেশিক ধ্যানধারণা থেকে বেরিয়ে এসে পেনাল কোডের জায়গায় কার্যকর হয়েছে নতুন ‘ন্যায় সংহিতা’।
‘জন বিশ্বাস’ এবং ‘জন ভাগিদারি’-র মাধ্যমে আমার সরকার নাগরিকদের জীবন উন্নততর করে তুলছে। ‘বিবাদ সে বিশ্বাস’ উদ্যোগ হাতে নেওয়া হয়েছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিবাদের সন্তোষজনক মীমাংসার লক্ষ্যে।
৪০,০০০ বিধির সরলীকরণ হয়েছে এবং ৩,৫০০টি আইনী সংস্থানকে অপরাধের তকমা মুক্ত করা হয়েছে।
আমার সরকার দেশের পিছিয়ে থাকা অঞ্চলগুলিতে উচ্চাভিলাষী জেলা কর্মসূচি প্রণয়ন করেছে। এর ফলে, ওইসব জেলায় আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন দ্রততর হয়েছে। বিষয়টিকে স্বীকৃতি দিয়েছে রাষ্ট্রসঙ্ঘ।
সুপ্রশাসনের লক্ষ্যে গড়ে তোলা হয়েছে আই-গট কর্মযোগী ডিজিটাল মঞ্চ। এর মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত ১,৭০০ পাঠক্রমের মাধ্যমে উপকৃত হয়েছেন ২ কোটি কর্মী।
মাননীয় সদস্যবৃন্দ,
এবছর সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের ১৫০ তম জন্মবার্ষিকী। তাঁর আদর্শে অনুপ্রাণিত আমার সরকার এগিয়ে চলেছে দেশের স্বার্থকে সবার উপরে রেখে।
দেশের সীমানা এবং অভ্যন্তরীণ সুরক্ষায় ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রকে করে তোলা হচ্ছে স্বনির্ভর। মেক ইন ইন্ডিয়া-র পর আমরা এখন মেক ফর দ্য ওয়ার্ল্ড-এর উদ্যোগ নিয়েছি।
ভারতে তৈরি দুটি যুদ্ধ জাহাজ এবং একটি ডুবো জাহাজ নৌ সেনায় সামিল হয়েছে।
প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে স্বনির্ভরতা অর্জনে গড়ে তোলা হচ্ছে প্রতিরক্ষা শিল্প করিডর এবং একের পর এক স্টার্টআপ।
সীমান্ত এলাকার উন্নয়ন আমাদের অন্যতম অগ্রাধিকার। ওইসব এলাকায় সড়ক এবং আধুনিক পরিকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে। এক্ষেত্রে উল্লেখ্য অটল টানেল, সেলা টানেল কিংবা সোনমার্গ টানেল। সীমান্তি এলাকায় গ্রামগুলির উন্নয়নে হাতে নেওয়া হয়েছে ভাইব্র্যান্ট ভিলেজ কর্মসূচি।
উগ্র বামপন্থা নির্মূল করার চূড়ান্ত পর্যায়ের কাজ শুরু হয়েছে। সরকারের ধারাবাহিক প্রচেষ্টায় উগ্র বামপন্থা প্রভাবিত জেলার সংখ্যা ১২৬ থেকে কমে হয়েছে ৩৮।
বিশ্বজুড়ে অস্থির পরিবেশের মধ্যে ভারত অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং রাজনৈতিক সুস্থিতির একটি আলোকবর্তিকা। জি৭, কোয়াড, ব্রিক্স, এসসিও কিংবা জি২০ সব মঞ্চেই ভারতের গুরুত্ব স্বীকৃতি পেয়েছে।
আজ ভারত নিজের কথা তুলে ধরছে বিশ্বের বিভিন্ন মঞ্চে। ভবিষ্যতের লক্ষ্যে এদেশের দিশানির্দেশ তুলে ধরা হয়েছে তৃতীয় গ্লোবাল সাউথ কিংবা ইন্ডিয়া-আশিয়ান শিখর সম্মেলনের মতো মঞ্চে।
এমাসের শুরুর দিকে সরকার ভুবনেশ্বরে প্রবাসী জাতীয় দিবসের আয়োজন করে।
প্রবাসী ভারতীয় ভাই বোনেদের কল্যাণ সরকারের অগ্রাধিকার। সেজন্যই আমার সরকার ৬টি নতুন দূতাবাস এবং ৪টি নতুন বাণিজ্য দূতাবাস খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
‘বিশ্ব বন্ধু’ হিসেবে ভারতের ভাবমূর্তিকে তুলে ধরতে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে দীর্ণ নানা দেশে পাঠানো হয়েছে ত্রাণ সহায়তা।
বিভিন্ন দেশে ডিজিটাল জন পরিকাঠামো এবং জন ঔষধি কেন্দ্র গড়ে তুলেছে ভারত।
মাননীয় সদস্যবৃন্দ,
আমার সরকার ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কল্যাণের বিষয়টিতেও ওয়াকিবহাল।
২০৩০ নাগাদ অ-জীবাশ্ম জ্বালানি উৎস থেকে ৫০০ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।
পিএম সূর্যঘর মুফত বিজলে যোজনার আওতায় বাড়ির ছাদে ছাদে সোলার প্যানেল বসানো হচ্ছে। খরচ ধরা হয়েছে ৭৫,০০০ কোটি টাকা। এখনও পর্যন্ত ৭.৫ লক্ষ বাড়িতে বসেছে এধরনের প্যানেল।
জাতীয় গ্রিন হাইড্রোজেন মিশন খাতে ৮ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করা হবে। কাজ পাবেন ৬ লক্ষ মানুষ।
পরমাণু শক্তির প্রসারেও বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
পুরনো গাড়ির জন্য বিশেষ স্ক্র্যাপিং নীতি নিয়ে এসেছে আমার সরকার। এর ফলে, কর্মসংস্থানের প্রসার ঘটবে।
বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২৪-এ সূচনা হওয়া ‘মায়ের সম্মানে একটি গাছ’ কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন বহু মানুষ।
মাননীয় সদস্যবৃন্দ,
ভারত ১৪০ কোটি মানুষের দেশ। এখানে রয়েছে বৈচিত্র্যপূর্ণ নানা রাজ্য, অঞ্চল এবং ভাষা। কিন্তু সকলেরই একটি পরিচিতি – ভারত।
এবং আমাদের সামনে রয়েছে একটি লক্ষ্য – ‘বিকশিত ভারত’!
এই লক্ষ্য অর্জনে প্রেরণা হিসেবে কাজ করবে শহীদদের আত্মবলিদান, শ্রদ্ধেয় বাপুর আদর্শ এবং মা ভারতীর ঐক্যের লক্ষ্যে নিবেদিত প্রাণ সর্দার প্যাটেলের জীবন।
আরও একবার ঐক্যের শপথ নিয়ে ভারতের স্বপ্ন পূরণের প্রতি দায়বদ্ধতার অঙ্গীকার গ্রহণ করা যাক! আমরা একসঙ্গে এগিয়ে গেলে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম অবশ্যই ২০৪৭-এ এক উন্নত, সক্ষম ও সমৃদ্ধ ভারতকে প্রত্যক্ষ করবে।
সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা।
ধন্যবাদ।
জয় হিন্দ!
জয় ভারত!
SC/AC/SKD
(Release ID: 2098108)
Visitor Counter : 60