প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
মুম্বাইয়ে উন্নয়ন প্রকল্পের সূচনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ
Posted On:
13 JUL 2024 8:28PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ১৩ জুলাই, ২০২৪
মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল শ্রী রমেশ ব্যাস জি, মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিণ্ডেজি , আমার মন্ত্রিসভার সহকর্মী পীযূষ গোয়েল জি, রামদাস অটওয়াল জি, উপমুখ্যমন্ত্রী শ্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীশ জি, অজিত দাদা পাওয়ার জি, রাজ্য সরকারের মন্ত্রী মঙ্গল প্রভাত জি, দীপক কেশরকর জি এবং অন্যান্য বিশিষ্টজনেরা, ভদ্রমহোদয় ও ভদ্রমহোদয়াগণ !
মহারাষ্ট্রে আমার সমস্ত ভাইবোনদের শুভেচ্ছা !
আজ আমি মুম্বই এবং মহারাষ্ট্রে ৩০,০০০ কোটি টাকা মূল্যের প্রকল্পের শিলান্যাস ও উদ্বোধন করার সুযোগ পেয়ে সম্মানিত বোধ করছি। এই প্রকল্পগুলি তাৎপর্যপূর্ণভাবে মুম্বই এবং এর সন্নিহিত এলাকাগুলিতে যোগাযোগের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। রেল এবং সড়ক যোগাযোগ প্রকল্পগুলি ছাড়াও এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে মহারাষ্ট্রের তরুণদের দক্ষতা উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রকল্প, যার মাধ্যমে বহু কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। আপনি হয়তো এটি খবরের কাগজে পড়েছেন কিংবা টিভিতে দেখেছেন। মাত্র দুই-তিন সপ্তাহ আগে কেন্দ্রীয় সরকার মহারাষ্ট্রের জন্য বধাবন বন্দর প্রকল্প অনুমোদন করেছে। ৭৬,০০০ কোটি টাকার এই প্রকল্প এই অঞ্চলে ১০ লক্ষের বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে।
বন্ধুগণ,
গত এক মাস ধরে ভারত এবং বিদেশে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্দীপনার সাক্ষী থেকেছে মুম্বই। ছোট-বড় সব বিনিয়োগকারী উদ্দীপনার সঙ্গে তৃতীয়বারের জন্য আমাদের সরকারকে স্বাগত জানিয়েছে। মানুষ বিশ্বাস করে যে, শুধুমাত্র এনডিএ সরকারই স্থায়িত্ব প্রদান করতে পারে। তৃতীয়বারের জন্য শপথ নিয়ে আমি অঙ্গীকার করেছিলাম যে, এই তৃতীয় পর্বে এনডিএ সরকার তিন গুণ দ্রুত গতিতে কাজ করবে। আজ আমরা সেই প্রতিশ্রুতির বাস্তব রূপ দেখতে পাচ্ছি।
বন্ধুগণ,
মহারাষ্ট্রের এক গৌরবময় ইতিহাস রয়েছে। উন্নত ভারত গড়ার ক্ষেত্রে মহারাষ্ট্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। মহারাষ্ট্রের রয়েছে শক্তিশালী শিল্প, কৃষি ক্ষমতা এবং মজবুত আর্থিক ক্ষেত্র। এই শক্তি মুম্বইকে দেশের প্রধান আর্থিক কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। আমার লক্ষ্য হল, এই শক্তিকে ত্বরান্বিত করে মহারাষ্ট্রকে বিশ্বের বৃহত্তম আর্থিক ক্ষমতার কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা এবং মুম্বইকে বিশ্বের অর্থপ্রযুক্তির রাজধানীতে রূপান্তরিত করা। আমি চায়, পর্যটনের ক্ষেত্রে মহারাষ্ট্র দেশের শীর্ষে পৌঁছে যাক। পর্যটন এবং মেডিক্যাল পর্যটনের ক্ষেত্রে মহারাষ্ট্রের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। ভারতের উন্নয়নে এক নতুন অধ্যায় রচনা করতে চলেছে মহারাষ্ট্র এবং আমরা সবাই এই যাত্রার অংশীদার।
বন্ধুগণ,
একুশ শতকে ভারতে মানুষের আশা-আকাঙ্খা এখন সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছেছে। এই শতাব্দীর প্রায় ২৫টি বছর কেটে গিয়েছে এবং আমাদের দেশবাসী দ্রুত উন্নয়নের জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠেছেন, তাদের লক্ষ্য হল আগামী ২৫ বছরের মধ্যে ভারতকে একটি উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলা। বিশেষ করে এক্ষেত্রে মুম্বই এবং সামগ্রিকভাবে মহারাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। আমরা মুম্বই এবং এর আশপাশের এলাকাগুলির যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সমৃদ্ধ করতে চাই। মুম্বইয়ের উপকূলীয় সড়ক এবং অটল সেতুর কাজ শেষ হয়েছে। আপনাদের মনে থাকতে পারে যে, অটল সেতু নির্মাণের সময় অনেক বাধা এসেছিল। কিন্তু আজ প্রত্যেকে এর ব্যাপক সুফল পাচ্ছেন। আমি জানতে পেরেছি যে, প্রায় ২০,০০০ গাড়ি প্রতিদিন এই সেতু ব্যবহার করে থাকে এবং প্রতিদিন প্রায় ২০-২৫ লক্ষ টাকার জ্বালানি তেলে সাশ্রয় করছে। এখন পানভেল পৌঁছতে ৪৫ মিনিট কম সময় লাগে, যা সময় বাঁচানো এবং পরিবেশ রক্ষা, দুটি কাজই করছে। এর মাধ্যমে মুম্বইয়ের পরিবহন ব্যবস্থাকে আমরা আধুনিক করে তুলছি। মুম্বই মেট্রো সম্প্রসারণের কাজও দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে। ১০ বছর আগে মুম্বইয়ে মাত্র ৮ কিলোমিটার মেট্রো লাইন ছিল, এখন তা প্রায় ৮০ কিলোমিটারে পৌঁছে গিয়েছে। এছাড়া মুম্বইয়ে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দীর্ঘ মেট্রো পথের কাজ চলছে।
বন্ধুগণ,
ভারতীয় রেলে পরিবর্তনের ফলে মুম্বই এবং মহারাষ্ট্র ব্যাপকভাবে উপকৃত হচ্ছে। ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ টার্মিনাস, নাগপুর এবং আজনি স্টেশনকে ঢেলে সাজানোর কাজ দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে। আজ ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ টার্মিনাস এবং লোকমান্য তিলক স্টেশনে নতুন প্ল্যাটফর্ম চালু করা হয়েছে। এর ফলে এই দুটি স্টেশন থেকে দীর্ঘ ২৪ কোচের ট্রেন চলাচল করতে পারবে।
বন্ধুগণ,
গত এক দশকে মহারাষ্ট্রে জাতীয় সড়কের দৈর্ঘ্য তিন গুণ বাড়ানো হয়েছে। এনডিএ সরকার তীর্থকেন্দ্রগুলির উন্নয়ন এবং তীর্থযাত্রীদের জন্য সুযোগ-সুবিধা ধারাবাহিকভাবে বাড়িয়ে চলেছে। আমরা জানি, পাণ্ডারপুর ওয়াড়িতে এখন লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থীর সমাগম হয়েছে। পুনে থেকে পাণ্ডারপুর পর্যন্ত যাত্রাপথকে আরও মসৃণ করা হয়েছে এবং পুণ্যার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
ভাই ও বোনেরা,
যোগাযোগের ক্ষেত্রে এ ধরনের পরিকাঠামো গড়ে তোলার ফলে পর্যটন, কৃষি এবং শিল্পক্ষেত্র উপকৃত হচ্ছে, নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর পাশাপাশি তা মহিলাদের সুরক্ষা এবং তাঁদের মর্যাদাও বৃদ্ধি করেছে। এনডিএ সরকারের এইসব উদ্যোগের ফলে গরিব, কৃষক, মহিলা এবং তরুণদের ক্ষমতায়ন হচ্ছে। আমি আনন্দিত যে, মহারাষ্ট্র সরকার প্রতি বছর ১০ লক্ষ তরুণকে দক্ষতা প্রশিক্ষণ প্রদানের অঙ্গীকার করেছে।
বন্ধুগণ,
ভারতে দক্ষতা উন্নয়ন এবং ব্যাপক হারে কর্মসংস্থান একান্ত আবশ্যক। এই লক্ষ্যে আমাদের সরকার কাজ করে চলেছে। কোভিড-এর মতো কঠিন সমস্যার মুখোমুখি হওয়া সত্বেও গত ৪-৫ বছরে ভারত রেকর্ড কর্মসংস্থানের স্তরে পৌঁছানোর সাফল্য পেয়েছে। সম্প্রতি ভারতের রিজার্ভ ব্যাঙ্কের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ৩-৪ বছরে দেশে প্রায় ৮ কোটি নতুন কর্মসংস্থান হয়েছে। এই তথ্য গোপন করে কর্মসংস্থান নিয়ে ভুল ধারণা ছড়ানো হচ্ছে। এই ধরনের মিথ্যা ধারণা বিনিয়োগ, পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং ভারতের অগ্রগতির পরিপন্থী। তথাপি তাঁদের প্রকৃত অভিসন্ধি ধরা পড়ে গিয়েছে এবং ভারতের বুদ্ধিমান মানুষ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। যখনই একটি সেতু নির্মাণ করা হয়, একটি রেললাইন পাতা হয়, একটি রাস্তা তৈরি করা হয়, কিংবা একটি লোকাল ট্রেনের কোচ তৈরি করা হয়, তখনই কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়।
বন্ধুগণ,
এনডিএ সরকারের উন্নয়নের মডেলে সমাজের বঞ্চিত শ্রেণীকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। দশকের পর দশক ধরে যাঁরা সমাজের নীচে পড়ে রয়েছেন, আমাদের নজর তাঁদের দিকে। নতুন সরকার শপথ নেওয়ার পর পরই গরিবদের জন্য পাকা বাড়ির ক্ষেত্রে আমরা গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং কৃষকদের কল্যাণে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিয়েছি। এ পর্যন্ত ৪ কোটি গরিব মানুষ পাকা বাড়ি পেয়েছেন। আগামী বছরগুলিতে মহারাষ্ট্রে আরও ৩ কোটির বেশি গরিব, দলিত, অনগ্রসর এবং আদিবাসী পরিবার পাকা বাড়ি পাবে।
বন্ধুগণ,
পথ বিক্রেতারা যাতে মর্যাদার সঙ্গে বাঁচতে পারেন, আমরা তা সুনিশ্চিত করেছি। সেক্ষেত্রে স্বনিধি যোজনা ব্যাপকভাবে সহায়তা করছে। এ পর্যন্ত এই প্রকল্পে ৯০ লক্ষ ঋণ অনুমোদন করা হয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ১৩ লক্ষটি পেয়েছেন মহারাষ্ট্রের পথ বিক্রেতারা। শুধুমাত্র মুম্বইয়েই দেড় লক্ষ পথ বিক্রেতা স্বনিধি যোজনায় উপকৃত হয়েছেন। যাঁরা এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন, তাঁদের মাসিক আয় প্রায় ২,০০০ টাকা করে বেড়েছে, যার ফলে তাঁরা বার্ষিক ২০,০০০-২৫,০০০ টাকা অতিরিক্ত আয় করতে পারছেন।
বন্ধুগণ,
স্বনিধি যোজনার অন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক আমিই তুলে ধরছি। এই প্রকল্পে ঋণ গ্রহীতারা তাঁদের ঋণ পুরোপুরি শোধ করে দিচ্ছেন, যা আমাদের গরিব ভাই-বোনেদের আত্মসম্মান ও সততার বার্তা দিচ্ছে। স্বনিধি যোজনার সুবিধাপ্রাপকরা এ পর্যন্ত ৩.২৫ লক্ষ কোটি টাকা মূল্যের ডিজিটাল লেনদেন করেছেন।
বন্ধুগণ,
ভারতের সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও জাতীয় সচেতনতা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে মহারাষ্ট্রের উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ, বাবাসাহেব আম্বেদকর, মহাত্মা জ্যোতিবা ফুলে, সাবিত্রিবাঈ ফুলে, লোকমান্য তিলক এবং বীর সাভারকার সহ বহু মহান ব্যক্তিত্বের পরম্পরার ধারক-বাহক হল মহারাষ্ট্র। সংহতি এবং সদিচ্ছার মধ্যেই দেশের অগ্রগতি নিহিত রয়েছে। এই অনুভূতি নিয়ে আমি আপনাদের সবাইকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি।
আপনাদের অনেক ধন্যবাদ !
ভারত মাতা কি জয় !
ভারত মাতা কি জয় !
ভারত মাতা কি জয় !
আপনাদের অনেক ধন্যবাদ ।
প্রধানমন্ত্রী মূল ভাষণটি দিয়েছেন হিন্দিতে।
PG/MP/NS
(Release ID: 2033888)
Read this release in:
English
,
Urdu
,
Hindi
,
Hindi_MP
,
Marathi
,
Manipuri
,
Assamese
,
Punjabi
,
Gujarati
,
Odia
,
Tamil
,
Kannada
,
Malayalam