প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
আবু ধাবিতে বাপস হিন্দু মন্দিরের উদ্বোধনে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ
Posted On:
14 FEB 2024 11:48PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪
শ্রী স্বামী নারায়ণ জয়দেব, মান্যবর শেখ নাহিয়ান আল মুবারক, সম্মানীয় মহন্ত স্বামীজি মহারাজ, ভারত, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত বিশিষ্ট অতিথিগণ এবং এই অনুষ্ঠানে বিশ্বের প্রতিটি প্রান্ত থেকে যোগদানকারী আমার ভাই ও বোনেরা!
মানব ইতিহাসে আজ এক নতুন সোনালী অধ্যায়ের সূচনা করল সংযুক্ত আরব আমিরশাহী। আবু ধাবিতে এই মন্দির উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ কয়েক বছরের কঠোর শ্রম এবং স্বপ্নের পরিসমাপ্তি ঘটল। প্রমুখ স্বামী যেখানেই থাকুন না কেন, তিনি নিশ্চয়ই আনন্দিত হবেন। আমার সঙ্গে পূজ্য প্রমুখ স্বামীজির সম্পর্ক পিতা ও সন্তানের মতো। আমার জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আমি তাঁর পিতৃত্বের স্নেহ পেয়েছি। গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী এবং দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবেও আমি তাঁর অভিভাবকত্ব পেয়েছি। বহুকাল আগে আমার রাজনৈতিক জীবনের গোড়ার দিকে দিল্লিতে অক্ষরধাম মন্দির তৈরির শিলান্যাস অনুষ্ঠানে আমি তাঁর পাশে উপস্থিত থাকার সুযোগ পেয়েছিলাম। আজ বসন্ত পঞ্চমী উৎসব এবং শাস্ত্রীজি মহারাজের জন্মবার্ষিকী। আমার বিশ্বাস, এই মন্দির আগামীদিনে মানুষের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং বিশ্ব ঐক্যের প্রতীক হয়ে উঠবে।
ভাই ও বোনেরা,
আজকের এই অনুষ্ঠানে মান্যবর শেখ নাহিয়ান আল মুবারকের উপস্থিতি বিশেষ উল্লেখযোগ্য। আমি তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ। এই মন্দির নির্মাণে ইউএই সরকার যে ভূমিকা পালন করেছে, তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। আমার ভাই মান্যবর শেখ মহম্মদ বিন জায়েদের জন্যই এই মন্দির নির্মাণ সম্ভব হয়েছে। কোটি কোটি ভারতবাসীর আকাঙ্ক্ষা পূরণে প্রেসিডেন্ট শেখ মহম্মদ বিন জায়েদের নেতৃত্বে ইউএই সরকার এই মন্দির নির্মাণে কীভাবে মনেপ্রাণে উদ্যোগী হয়েছিল, তা আমি জানি। তিনি ১৪০ কোটি ভারতবাসীর হৃদয়েই শুধু জায়গা করে নেননি, সেইসঙ্গে প্রমুখ স্বামীজির স্বপ্নের বাস্তবায়নেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছেন। আমার মনে পড়ছে, ২০১৫ সালে আমি যখন সংযুক্ত আরব আমিরশাহী সফরে আসি, তখন এই মন্দিরের ভাবনা নিয়ে মান্যবর শেখ মহম্মদের সঙ্গে আলোচনা করেছিলাম। তিনি অত্যন্ত উৎসাহের সঙ্গে আমার প্রস্তাবে সায় দিয়েছিলেন। মন্দিরের জন্য দ্রুত জমির ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন।
বন্ধুগণ,
এটি একটি তুচ্ছ বিষয় নয়। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ শপথ। বুর্জ খলিফা, ফিউচার মিউজিয়াম, শেখ জায়েদ মসজিদের পাশাপাশি এখন এই মন্দিরও এখানকার উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থান হয়ে উঠবে। আমার স্থির বিশ্বাস, ভবিষ্যতে এখানে প্রচুর সংখ্যক পূণ্যার্থী আসবেন। ভারত এবং বিশ্বের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা কোটি কোটি ভারতবাসীর হয়ে আমি প্রেসিডেন্ট শেখ মহম্মদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
বন্ধুগণ,
ভারত ও ইউএই-র বন্ধুত্বকে বিশ্বজুড়ে পারস্পরিক বিশ্বাস ও সহযোগিতার মডেল হিসেবে গণ্য করা হয়। বিশেষ করে, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে আমাদের সম্পর্ক এক নজিরবিহীন উচ্চতায় পৌঁছে গিয়েছে। আমাদের কাছে এই সম্পর্কের ভিত্তি হাজার হাজার বছর আগেই তৈরি হয়েছে। শত শত বছর আগে আরব দুনিয়া ভারত ও ইউরোপের দেশগুলির মধ্যে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সেতু হিসেবে কাজ করেছে। এই উল্লেখযোগ্য সাফল্যের জন্য আমি বাপস সংগঠন এবং এর সদস্যদের প্রশংসা করছি। বিশ্বজুড়ে বাপস সংগঠনের সদস্যরা অনেক মন্দির গড়ে তুলেছেন। আধুনিক বিশ্বে কীভাবে প্রাচীন নীতি আঁকড়ে থাকতে হয়, তার উল্লেখযোগ্য দৃষ্টান্ত হল, স্বামী নারায়ণ সন্ন্যাস পরম্পরা।
বন্ধুগণ,
ভারতে এখন ‘অমৃতকাল’ চলছে, যাকে আমাদের বিশ্বাস ও সংস্কৃতির সোনালী অধ্যায়ের উদযাপন বলা যেতে পারে। গত মাসে অযোধ্যায় দীর্ঘদিনের রাম মন্দির তৈরির স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। রামলালা এখন তাঁর নিজের গৃহে স্থান পেয়েছেন। অযোধ্যায় আমরা যে উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখেছি, তা আজ আবু ধাবিতেও প্রত্যক্ষ করছি। প্রথমে অযোধ্যায় রাম মন্দির এবং তারপর এখন আবু ধাবিতে এই মন্দির নির্মাণ দেখতে পেরে আমি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছি। এই মন্দিরের প্রতিটি স্তরে আপনি বৈচিত্র্যের ঝলক দেখতে পাবেন। মন্দিরে প্রবেশ করা মাত্রই আমার চোখে সম্প্রীতির বার্তা ধরা পড়েছে। সমস্ত ধরনের মানুষ এই মন্দির নির্মাণে অর্থদান করেছেন। সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর প্রতীক হিসেবে এই মন্দিরে সাতটি স্তম্ভ তৈরি করা হয়েছে। আমার বন্ধু, আমার ভাই শেখ মহম্মদ বিন জায়েদ যেন সকলের ভাই। তিনি আবু ধাবিতে মসজিদের পাশাপাশি গির্জা এবং ইহুদিদের জন্য উপাসনালয়ও গড়ে তুলেছেন। এখন এই ভগবান স্বামী নারায়ণের মন্দির বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যের ভাবনাকে এক নতুন মাত্রা দেবে।
বন্ধুগণ,
এই মহান অনুষ্ঠানে আমি আপনাদের সঙ্গে আরও একটি ভালো খবর ভাগ করে নিতে চাই। আজ সকালে সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর ভাইস-প্রেসিডেন্ট মহামান্য শেখ মহম্মদ বিন রশিদ ভারতীয় শ্রমিকদের জন্য একটি হাসপাতাল তৈরিতে জমি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন।
বন্ধুগণ,
আমাদের আধ্যাত্মিক ভাবনার মূল ভিত্তি হল, মানবতার ঐক্য। আমরা ‘বসুধৈব কুটুম্বকম’, অর্থাৎ গোটা বিশ্ব আমার পরিবার – এই মন্ত্রে বিশ্বাসী। এই নীতিকে সামনে রেখেই ভারত বিশ্বশান্তির লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে। জি-২০ সভাপতিত্বকালে ‘এক বিশ্ব, এক পরিবার, এক ভবিষ্যৎ’ – এই মন্ত্রকে আরও মজবুত করার এবং এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছে ভারত। ভারত এখন ‘এক বিশ্ব, এক স্বাস্থ্য’ – এই মিশনকে সামনে রেখে কাজ করে চলেছে। বিশ্বের কল্যাণের লক্ষ্যে আমাদের প্রেরণা যুগিয়েছে, আমাদের সংস্কৃতি ও বিশ্বাস। ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস এবং সবকা প্রয়াস’-এর মন্ত্রকে সেদিকেই চালিত করছে ভারত। এখানে উপস্থিত সকলকে আমি আবার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই। আমি এই মন্দিরকে মানবতার প্রতি উৎসর্গ করছি। মহন্ত স্বামীজি ও প্রমুখজি স্বামীজিকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছি এবং ‘জয় শ্রী স্বামী নারায়ণ’-এর সমস্ত ভক্তদের প্রতি শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী মূল ভাষণটি দিয়েছেন হিন্দিতে
PG/MP/DM/
(Release ID: 2007412)
Visitor Counter : 81
Read this release in:
English
,
Manipuri
,
Gujarati
,
Urdu
,
Hindi
,
Marathi
,
Assamese
,
Punjabi
,
Tamil
,
Telugu
,
Telugu
,
Kannada
,
Malayalam