প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

রোজগার মেলায় ১ লক্ষেরও বেশি নিয়োগপত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের বঙ্গানুবাদ

Posted On: 12 FEB 2024 12:14PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

 

আমার প্রিয় যুব বন্ধুরা,

আজ সরকারি ক্ষেত্রে ১ লক্ষেরও বেশি যুবক-যুবতীর হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হয়েছে। আপনাদের অধ্যবসায় এবং কঠোর পরিশ্রমই এই সাফল্যের চাবিকাঠি। আমি আপনাদের ও আপনাদের পরিবারের সদস্যদের আমার আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। কেন্দ্রীয় সরকার যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থানের জন্য যে উদ্যোগ নিয়েছে, তা দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। অতীতে পূর্ববর্তী সরকারগুলি চাকরির বিজ্ঞপ্তি জারির পর নিয়োগপত্র প্রদানের মধ্যে বিস্তর সময় ব্যয় করতো। ফলে, উৎকোচের এক সংস্কৃতি গড়ে উঠেছিল। আমরা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতাকে অগ্রাধিকার দিয়েছি এবং দক্ষতা নিশ্চিত করেছি। সরকার নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সময় মেনে চলার উপর গুরুত্ব দিচ্ছে। এর ফলে, প্রত্যেক যুবক-যুবতী তাঁদের ক্ষমতা অনুযায়ী সমান সুযোগ পাচ্ছেন। এখন যুবসম্প্রদায়ের মধ্যে এই আস্থা জন্মেছে যে, কঠোর পরিশ্রম করলে তার ফল তাঁরা পাবেন। ২০১৪ সাল থেকে আমাদের উদ্দেশ্য হ’ল – কেন্দ্রীয় সরকারের কাজে যুবক-যুবতীদের যুক্ত করা। তাঁরা দেশ গড়ার কাজে নিয়োজিত হবেন। বিজেপি সরকার তার কার্যকালের মেয়াদে পূর্ববর্তী সরকারের শেষ দশকের তুলনায় দেড় গুণ বেশি সরকারি চাকরি দিয়েছে। আজ আমরা দিল্লিতে একটি সুসংহত প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের শিলান্যাস করলাম। আমি নিশ্চিত যে, আমাদের দক্ষতা বৃদ্ধির যে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে, তা এর মাধ্যমে আরও গতি পাবে। 

বন্ধুগণ,

সরকারের উদ্যোগের জন্য দেশের যুবসম্প্রদায়ের কাছে নতুন নতুন সুযোগ তৈরি হচ্ছে। কর্মসংস্থান এবং স্বনিযুক্তির ক্ষেত্রে নতুন নতুন সুযোগ তৈরির পেছনে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ রয়েছে। সদ্য পেশ হওয়া বাজেটে ১ কোটি পরিবারের জন্য বাড়ির ছাদে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। যাঁরা তাঁদের বাড়ির ছাদে সোলার প্যানেল বসাবেন, সেইসব পরিবারের লোকেরা দুটি সুযোগ পাবেন। তাঁদের বিদ্যুতের জন্য কোনও অর্থ দিতে হবে না আবার বাড়তি বিদ্যুৎ বিক্রি করে তাঁরা অতিরিক্ত অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। বাড়ির ছাদে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের মাধ্যমে বিভিন্ন ক্ষেত্রে লক্ষ লক্ষ কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। ছাদে সোলার প্যানেল বসানো, ব্যাটারি সংক্রান্ত ব্যবসা অথবা দেওয়ালে তার বসানো – বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রচুর কর্মসংস্থান হবে।  

আমার যুব বন্ধুরা,

আজ আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে তৃতীয় বৃহত্তম স্টার্টআপ ব্যবস্থাপনা ভারতে গড়ে উঠেছে। বর্তমানে দেশে নতুন উদ্যোগ বা স্টার্টআপ সংস্থা প্রায় ১ লক্ষ ২৫ হাজার। দ্বিতীয় অথবা তৃতীয় স্তরের শহরগুলিতেও প্রচুর স্টার্টআপ সংস্থা তৈরি হচ্ছে। বিভিন্ন জেলা সদরেও স্টার্টআপ সংস্থা দেখা যাচ্ছে। এর ফলে, লক্ষ লক্ষ যুবক-যুবতীর জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হচ্ছে। সদ্য পেশ হওয়া বাজেটে স্টার্টআপ সংস্থাগুলিকে কর ছাড়ের কথা বলা হয়েছে। এর ফলে, আমাদের যুবসম্প্রদায় উপকৃত হবেন। এছাড়াও, এবারের বাজেটে গবেষণা ও উদ্ভাবনে উৎসাহদানের জন্য ১ লক্ষ কোটি টাকার একটি তহবিল গড়ে তোলার পরিকল্পনা করা হয়েছে। 

বন্ধুগণ,

রোজগার মেলায় নিয়োগপত্র প্রদানের জন্য ভারতীয় রেলও অংশগ্রহণ করেছে। দীর্ঘ সফরের জন্য পরিবহণের নানা সুযোগ থাকলেও বহু পরিবার এখনও রেল যাত্রাকেই পছন্দ করেন। ভারতীয় রেল বহু ক্ষেত্রে ব্যাপক সংস্কার বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে। এই দশকের শেষে ভারতীয় রেলের আমূল পরিবর্তন নজরে আসবে। ২০১৪ সালের আগে রেলের যা অবস্থা ছিল, তা থেকে এটা স্পষ্ট যে, পূর্ববর্তী সরকারগুলি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রকে অবহেলা করেছে। রেলের বৈদ্যুতিকীকরণ, বিভিন্ন রুটে দ্বিতীয় রেললাইন বসানো, পরিচালনগত ক্ষেত্রে দক্ষতা বৃদ্ধি এবং যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলিতে কোনও নজর দেওয়া হ’ত না। সাধারণ মানুষের নানা সমস্যার বিষয়ে পূর্ববর্তী সরকারগুলি উদাসীন ছিল। ২০১৪ সালের পর থেকে আমরা একটি সর্বাঙ্গীন পরিকল্পনা কার্যকর করছি। রেল যাত্রাকে আধুনিক করে তোলা হচ্ছে।  রেল পরিকাঠামোর মানোন্নয়ন ঘটানো হচ্ছে। বন্দে ভারত এক্সপ্রেস থেকে সাধারণ ট্রেন – সব ট্রেনের জন্যই অত্যাধুনিক কামরার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সদ্য পেশ হওয়া বাজেটে ৪০ হাজার আধুনিক কামরার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। এর ফলে, যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য বাড়বে। 

বন্ধুগণ,

যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হলে শুধু যাতায়াতেরই সুবিধা হয় না, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিও নিশ্চিত হয়। নতুন নতুন বাজার সৃষ্টি হয়, পর্যটন ক্ষেত্রের বিকাশ ঘটে। ফলস্বরূপ, লক্ষ লক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়। অর্থাৎ, উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা দেশের উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ প্রভাব বিস্তার করে। তাই, উন্নয়নের জোয়ার আনতে পরিকাঠামো ক্ষেত্রে বিনিয়োগ বাড়ানো হচ্ছে। সদ্য পেশ হওয়া বাজেটে পরিকাঠামোর উন্নয়নের জন্য ১১ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। এর ফলে, সড়ক, রেলপথ, বিমানবন্দর, মেট্রো রেল এবং বিদ্যুৎ ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত প্রকল্পগুলিতে গতি আসার পাশাপাশি কর্মসংস্থানের নতুন নতুন সুযোগ তৈরি হবে।

বন্ধুগণ,

আজ এখানে আধা-সামরিক বাহিনীতে যোগদানের জন্য বিপুল সংখ্যক যুবক-যুবতী নিয়োগপত্র পেয়েছেন। তাঁদের অনেকেরই উচ্চাকাঙ্ক্ষা এর ফলে পূরণ হবে। গত কয়েক বছর ধরে আধা-সামরিক বাহিনীর নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সংস্কার কার্যকর করা হয়েছে। এ বছরের জানুয়ারি থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হচ্ছে। এখন থেকে হিন্দি ও ইংরেজির পাশাপাশি ১৩টি ভাষায় কর্মপ্রার্থীরা লিখিত পরীক্ষা দিতে পারবেন। ফলে, এইসব পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীরা সকলেই সমান সুযোগ পাবেন। এছাড়াও, সীমান্তবর্তী অঞ্চলের জেলাগুলি এবং জঙ্গী প্রভাবিত জেলার জন্য অতিরিক্ত কোটার ব্যবস্থা করা হয়েছে। 

বন্ধুগণ,

উন্নত ভারত গড়ার ক্ষেত্রে প্রত্যেক সরকারি কর্মীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। আজ ১ লক্ষেরও বেশি কর্মী উন্নত ভারত গড়া অভিযানে আরও উৎসাহ ও উদ্দীপনার সঙ্গে সামিল হবেন। আপনারা যে দপ্তরেই কাজ করুন না কেন, দেশ গড়ার কাজে প্রত্যেক দিন আপনাদের নিয়োজিত হতে হবে। সরকারি কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য কেন্দ্রীয় সরকার কর্মযোগী ভারত পোর্টালের সূচনা করেছে। এই পোর্টালে বিভিন্ন বিষয়ের ৮০০-রও বেশি পাঠক্রম রয়েছে। ইতোমধ্যেই ৩০ লক্ষেরও বেশি কর্মী এই পাঠক্রমগুলিতে নাম নথিভুক্ত করেছেন। আপনারা দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য এই পোর্টালকে সম্পূর্ণভাবে কাজে লাগান। নিয়োগপত্র পাওয়ার জন্য আরও একবার আপনাদের আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। আপনাদের কর্মজীবনের প্রত্যেক পর্যায়ে দেশের উন্নতি নিশ্চিত করার মাধ্যমে সকলের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করি। আপনাদের অধ্যবসায়ই দেশের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করুক। আপনাদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি শুভকামনা রইল। অনেক অনেক ধন্যবাদ।  


(প্রধানমন্ত্রী মূল ভাষণটি হিন্দিতে দিয়েছিলেন) 


PG/CB/SB



(Release ID: 2006079) Visitor Counter : 85