প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

‘পরীক্ষা পে চর্চা’, ২০২৪-এর সময় পড়ুয়া, শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং অভিভাবক-অভিভাবিকাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর আলাপচারিতা

“আমাদের সন্তানদের উদ্বেগের সঙ্গে মোকাবিলা করতে শেখানো জরুরি”

“পড়ুয়াদের চ্যালেঞ্জ যৌথভাবে অভিভাবক-অভিভাবিকা ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মোকাবিলা করতে হবে”

“স্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা পড়ুয়াদের উন্নতি ত্বরান্বিত করে”

“শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দায়িত্ব পড়ুয়াদের জীবন সাজিয়ে তোলা”

“অভিভাবক-অভিভাবিকাদের তাঁদের সন্তানের রিপোর্ট কার্ডকে তাঁদের ভিজিটিং কার্ড হিসেবে গণ্য করা উচিত নয়”

“পড়ুয়া ও শিক্ষক-শিক্ষিকার মধ্যে সম্পর্ক পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যবস্তুর বাইরে হওয়া উচিত”

“আপনার সন্তানের মধ্যে কখনই প্রতিহিংসামূলক প্রতিযোগিতার বীজ বপন করবেন না, এমনকি ভাই-বোনেরাও একে অন্যের অনুপ্রেরণা হওয়া উচিত নয়”

“যথাসম্ভব উত্তর লিখে অভ্যাস করা জরুরি, আপনার যদি সেই অভ্যাস থাকে তাহলেই পরীক্ষার হল-এর অধিকাংশ উদ্বেগ দূর হবে”

“প্রযুক্তিকে কখনই বোঝা বলে মনে করা উচিত নয়, যথাযথভাবে এর ব্যবহার করতে হবে”

“ ‘সঠিক’ সময়ের মতো আর কিছু হয় না, তাই এর জন্য অপেক্ষা নয়, চ্যালেঞ্জ আসতেই থাকবে, আপনাদের সেই চ্যালেঞ্জগুলিকে চ্যালেঞ্জ জানাতে হবে”

“যদি লক্ষ লক্ষ চ্যালেঞ্জ আসে, তবে কোটি কোটি সমাধানও থাকে”

“ব্যর্থতা কখনই মন খারাপের

Posted On: 29 JAN 2024 1:39PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ২৯ জানুয়ারি, ২০২৪

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ সপ্তম ‘পরীক্ষা পে চর্চা’ (পিপিসি) অনুষ্ঠানে নতুন দিল্লির ভারত মণ্ডপম-এ পড়ুয়া, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অভিভাবক-অভিভাবিকাদের সঙ্গে আলাপচারিতায় অংশ নেন। এই উপলক্ষে আয়োজিত একটি শিল্পকলা প্রদর্শনীও ঘুরে দেখেন তিনি। ‘পরীক্ষা পে চর্চা’ পরীক্ষার উদ্বেগ কম করতে পড়ুয়া, শিক্ষক-শিক্ষিকা, অভিভাবক-অভিভাবিকা সহ সামাজিক চিন্তনশীল মানুষকে এক মঞ্চে নিয়ে আসার জন্য প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর এক বিশেষ উদ্যোগ।

এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী পড়ুয়া, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অভিভাবক-অভিভাবিকাদের উদ্দেশে বলেন,  এই প্রদর্শনীতে পড়ুয়াদের যে সৃষ্টি তুলে ধরা হয়েছে, তা নতুন জাতীয় শিক্ষানীতির মূল ভিত্তি।  এই প্রদর্শনীগুলি থেকেই নতুন প্রজন্মের চিন্তাভাবনা প্রতিফলিত হয়। তাদের জীবনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাদের চিন্তাভাবনার পরিচয় পাওয়া যায়। 

আলাপচারিতার শুরুতে প্রধানমন্ত্রী এই স্থানের, অর্থাৎ ভারত মণ্ডপম-এর গুরুত্ব পড়ুয়াদের কাছে তুলে ধরেন এবং বলেন জি-২০ শিখর সম্মেলনে আন্তর্জাতিক স্তরের শীর্ষস্থানীয় নেতারা সমগ্র বিশ্বের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনার জন্য এখানে একত্রিত হয়েছিলেন। 

উদ্বেগ ও চাপ

দানিয়া সাবু ওমানের একটি বেসরকারি সিবিএসই স্কুলের পড়ুয়া এবং দিল্লির সরকারি সর্বদয়া বাল বিদ্যালয়, বুরারীর পড়ুয়া মহম্মদ আর্শ পড়ুয়াদের ওপর ক্রমবর্ধমান সামাজিক চাহিদা সংক্রান্ত চাপের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। প্রধানমন্ত্রী এই বিষয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ভূমিকার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, এই চাপ মোকাবিলার জন্য পড়ুয়াদের প্রস্তুত করে তুলতে হবে কারণ, তা জীবনের অংশ। তিনি পড়ুয়াদের কঠিন পরিস্থিতিতে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য মানসিক প্রস্তুতি নেওয়ার কথাও বলেন। এতে করে পড়ুয়ারা সর্বদাই কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত থাকবেন এবং তাদের ফলাফল ভালো হবে বলেও তাঁর মত। শ্রী মোদী একটি ব্যবহারিক নীতি মেনে বহির্জগতের এই চাপ মোকাবিলার জন্য পড়ুয়া ও অভিভাবক-অভিভাবিকাদের প্রতি আহ্বান জানান। 

বন্ধুদের মধ্যে প্রতিযোগিতা

আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের পড়ুয়া ভাগ্যলক্ষ্মী এবং গুজরাটের জে এন ভি পাঁচমহলের পড়ুয়া দ্রষ্টি চৌহান ও কেরালার কালিকুটের কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের পড়ুয়া সাথী দিলীপ বন্ধুদের মধ্যে প্রতিযোগিতার বিষয়টি উত্থাপন করেন। প্রধানমন্ত্রী যেকোনো ক্ষেত্রে সাফল্যের জন্য প্রতিযোগিতার ওপর গুরুত্ব দেন, যদিও তিনি বলেন প্রতিযোগিতা সর্বদাই হওয়া উচিত স্বাস্থ্যকর। পরিবারের তরফে ভাই-বোনেদের মধ্যেও অস্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতার যে বীজ বপন করা হয়, সে প্রসঙ্গটিও তুলে ধরেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী একটি ভিডিও-র মাধ্যমে এই প্রসঙ্গে উদাহরণ দেন। তাতে দেখা যায়, পড়ুয়ারা সাধারণত একে অপরের সঙ্গে প্রতিযোগিতামূলক মানসিকতা নিয়ে চলার থেকে সাহায্য করতেই বেশি পছন্দ করে। তিনি বলেন, পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করাই একমাত্র লক্ষ্য নয়, সামাজিক উন্নয়নও জরুরি। তিনি অভিভাবক-অভিভাবিকাদের তাঁদের সন্তানদের অন্য সন্তানের সঙ্গে তুলনা না করার জন্য অনুরোধ জানান। সন্তানদের সাফল্যের খতিয়ান কখনই যেন অভিভাবক-অভিভাবিকাদের প্রদর্শনের বিষয় না হয়ে ওঠে, সেদিকেও জোর দেন তিনি। 

পড়ুয়াদের উদ্দীপিত করতে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ভূমিকা

অন্ধ্রপ্রদেশের উপারাপল্লীর জেড পি হাইস্কুলের সঙ্গীত শিক্ষক শ্রী কোন্দাকাঞ্চি সম্পথা রাও এবং আসাম শিবসাগরের বান্টি মেদির প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী পড়ুয়াদের উৎসাহ দিতে শিক্ষক-শিক্ষিকার ভূমিকার বিষয় আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, পড়ুয়াদের উদ্বেগ কম করতে সঙ্গীতের ভূমিকা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। তিনি শ্রেণীকক্ষে প্রথম দিন থেকে শুরু করে পরীক্ষার সময় পর্যন্ত ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক ক্রমান্বয়ে মজবুত করার ওপর জোর দেন। এর ফলে পরীক্ষার সময় পড়ুয়াদের সমস্ত চাপ ও উদ্বেগ দূর হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তিনি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পড়ুয়াদের সঙ্গে যোগাযোগ আরও বাড়ানোর পরামর্শও দেন। এ প্রসঙ্গে তিনি একজন চিকিৎসক ও রোগীর ব্যক্তিগত সম্পর্কের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। এই ধরনের সম্পর্ক থাকলে যেকোনো সমস্যার সহজেই অর্ধেক সমাধান হয়ে যায় বলে মন্তব্য করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “শিক্ষকতা কখনই শুধুমাত্র একটি পেশা নয়, তাঁদের ওপর পড়ুয়াদের জীবন গড়ে তোলার দায়িত্বভার ন্যস্ত থাকে।”

পরীক্ষার উদ্বেগ মোকাবিলা

পশ্চিম ত্রিপুরার প্রণবানন্দ বিদ্যামন্দিরের আদ্রিতা চক্রবর্তী, ছত্তিশগড়ের বস্তার জেলার জওহর নবোদয় বিদ্যালয়ের তাইফুর রহমান, ওড়িশার কটকের আদর্শ বিদ্যালয়ের রাজলক্ষ্মী আচার্য প্রধানমন্ত্রীকে পরীক্ষার চাপ মোকাবিলার পন্থা সম্পর্কে জানতে চায়। অতিরিক্ত উৎসাহের দরুণ যে ভুলগুলি হয়, সেগুলি এড়িয়ে যাওয়ার দিকে বিশেষ জোর দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, পড়ুয়াদের অতিরিক্ত মনোযোগ থেকেও অনেক ক্ষেত্রে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। পরীক্ষার সময় নতুন বস্ত্র, আচার-অনুষ্ঠান বা নতুন কাগজ-কলমের মতো বিষয় নিয়ে অকারণ উত্তেজনা তৈরি না করার জন্য অভিভাবক-অভিভাবিকাদের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্দিষ্ট সময়ে প্রশ্নপত্র পড়ে নেওয়া উচিত। এর ফলেই শেষ মুহূর্তে আতঙ্ক এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব হবে। প্রধানমন্ত্রী পড়ুয়াদের লেখার অভ্যাস করার জন্য পরামর্শ দেন। সমগ্র পড়াশোনার সময়ের অন্তত পঞ্চাশ শতাংশ লেখার জন্য ব্যয় করা উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি। অন্য পড়ুয়ার লেখার গতি দেখে অযথা আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। 

স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন

রাজস্থানের সিনিয়র সেকেন্ডারি স্কুলের পড়ুয়া ধীরজ সুভাষ লাদাখের কার্গিলের পিএম শ্রী কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের পড়ুয়া নাজমা খাতুন এবং অরুণাচল প্রদেশের এক সরকারি স্কুলের শিক্ষক তোবি লাহুমে পড়াশোনা ও অভ্যাসের মধ্যে তালমিল প্রসঙ্গে প্রশ্ন করেন। এর জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মোবাইল ফোনকে যেমন সময়ে সময়ে চার্জ দিতে হয়, তেমনই শারীরিক সুস্বাস্থ্যের বিষয়েও নজর দিতে হবে। যথাযথ জীবনযাত্রা ও সুষম আহার এক্ষেত্রে বিশেষ জরুরি। কোনকিছুই অতিরিক্ত করার প্রয়োজন নেই বলেও প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “সুস্থ শরীর, সুস্থ মনের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।” কিছু নিয়ম মেনে সময় ব্যয় করা উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি। নিয়মিত পূর্ণ ঘুম ও সূর্যালোকে কিছু সময় কাটানো বিশেষ জরুরি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর ব্যক্তিগত জীবনও নির্দিষ্ট নিয়ম মেনেই চলে। তিনি বলেন, “যখন জেগে থাকবে, তখন সম্পূর্ণ জেগে থাক, যখন ঘুমোবে তখন গভীর ঘুম জরুরি।” শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখার জন্য নিয়মিত ব্যায়ামের ওপর গুরুত্ব দেন তিনি। 

ভবিষ্যতের উন্নতি

পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুরের কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের মধুমিতা মল্লিক এবং হরিয়ানার পানিপথের দ্য মিলেনিয়াম স্কুলের অদিতি তানওয়ার ভবিষ্যতের উন্নতি প্রসঙ্গ উত্থাপন করলে প্রধানমন্ত্রী তাদের দ্বিবিধা ত্যাগ করে এগিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। ভবিষ্যতের পথ বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বজায় রাখা জরুরি বলেও মন্তব্য করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ স্বচ্ছতা। ভারতীয় সংস্কৃতিতে বিগত ১০ বছরে অন্তত ২৫০ গুণ উন্নতি হয়েছে। তিনি বলেন, “আমাদের যদি কোনকিছু ক্ষমতা থাকে, তবে যেকোনো পরিস্থিতিতেই জীবনযাপন সম্ভব।” প্রধানমন্ত্রী পড়ুয়াদের নিজেদের কখনই দুর্বল না ভাবার পরামর্শ দেন। জাতীয় শিক্ষানীতি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন পাঠ্যক্রম এক সারিতে নিয়ে আসার প্রসঙ্গটি উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনো রেস্তোরাঁয় খাবার অর্ডার করার সময় যেমন আমরা কি খাব তা নিশ্চিত হতে হয়, তেমনই ভবিষ্যতের পথ ঠিক করার ক্ষেত্রেও স্থির লক্ষ্য জরুরি। কোনো সিদ্ধান্তের সদর্থক ও নেতিবাচক দিক চিন্তাভাবনা করে নিতে হবে।

অভিভাবক-অভিভাবিকাদের ভূমিকা

দিল্লি থেকে ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন পুদুচেরীর সরকারি হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের পড়ুয়া দীপ সারি। সে প্রধানমন্ত্রীকে অভিভাবক-অভিভাবিকাদের ভূমিকা প্রসঙ্গে প্রশ্ন করে। প্রধানমন্ত্রী পরিবারের মধ্যে বিশ্বাস কম থাকার প্রসঙ্গ তুলে বলেন, এই গভীর বিষয়টি অভিভাবক-অভিভাবিকা ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের গুরুত্বের সঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে। সততার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা, আস্থাজনিত সমস্যা মোকাবিলায় বিশেষ ভূমিকা পালন করে। অভিভাবক-অভিভাবিকাদের তাঁদের সন্তানের ওপর আস্থা থাকা জরুরি। তাঁদের আস্থা কম থাকলে পড়ুয়াদের মধ্যে হতাশা তৈরি হয়। সন্তানের সাহায্যের জন্য সর্বদাই সদর্থক আলোচনা প্রয়োজন। 

প্রযুক্তির ব্যবহার

ঝাড়খণ্ডের রামগড়ের এক অভিভাবক-অভিভাবিকা কুমারী পূজা শ্রীবাস্তব এবং মহারাষ্টের পুণের চন্দ্রেশ জৈন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যাপক হাতছানি এড়িয়ে পড়াশোনার সময়কে কিভাবে বাড়ানো যায়, সে প্রসঙ্গটি তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, অতিরিক্ত মোবাইল ফোনের ব্যবহার সর্বদাই সমস্যার সৃষ্টি করে। তিনি প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহারের ওপর জোর দেন এবং মোবাইল ফোনকে নিয়ম মেনে ব্যবহারের আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, গোপনীয়তা বজায় রাখা যেমন জরুরি, তেমনই এক্ষেত্রে কিছু নিয়ম থাকাও জরুরি। নৈশাহারের সময় কোনো বৈদ্যুতিন গ্যাজেট ব্যবহার না করা ও বাড়িতে একটি গ্যাজেট-বিহীন স্থান গড়ে তোলার কথাও বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বর্তমান বিশ্বে কেউ প্রযুক্তি থেকে দূরে যেতে পারবে না।” তবে কখনই এই প্রযুক্তি যেন বোঝা হয়ে না ওঠে। যথাযথভাবে এর ব্যবহার করতে হবে। প্রযুক্তি শিক্ষার উৎস হয়ে ওঠা উচিত। স্বচ্ছতা বজায় রাখতে বাড়ির সব সদস্যের সঙ্গে মোবাইল ফোনের পাসওয়ার্ড আদান-প্রদান করার পরামর্শও দেন তিনি। শ্রেণীকক্ষে মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে পরামর্শ দেওয়ার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। 

প্রধানমন্ত্রী কিভাবে চাপ মোকাবিলা করে সর্বদাই সদর্থক মানসিকতা বজায় রাখেন?

তামিলনাড়ুর চেন্নাইয়ের মডার্ন সিনিয়র সেকেন্ডারি স্কুলের পড়ুয়া এম ভাগেশ প্রধানমন্ত্রীকে তিনি কিভাবে চাপ মোকাবিলা করেন, সে বিষয়ে জানতে চায়। উত্তরাখণ্ডের উধমসিং নগরের ডায়ন্যাস্টি মডার্ন গুরুকুল অ্যাকাডেমির স্নেহা ত্যাগী প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করে, “আমরা কিভাবে আপনার মতো সদর্থক মানসিকতা বজায় রাখব?” জবাবে শ্রী মোদী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর গুরুদায়িত্ব সম্পর্কে পড়ুয়ারা ওয়াকিবহাল দেখে তিনি আনন্দিত। প্রত্যেককেই নানারকম কঠিন পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হয়। তিনি নিজে প্রতিটি চ্যালেঞ্জকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে মোকাবিলা করেন বলে মন্তব্য করেন। কখনই কোনো চ্যালেঞ্জ এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা উচিত নয়। নতুন নতুন পরিস্থিতির মোকাবিলা তাঁকে সমৃদ্ধ করে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “আমার সবচেয়ে বড় আস্থা হল ১৪০ কোটি দেশবাসী আমার সঙ্গে রয়েছে। লক্ষ লক্ষ চ্যালেঞ্জ এলে তার কোটি কোটি সমাধান রয়েছে। আমি কখনই নিজেকে একা মনে করি না। আমি সর্বদাই আমার দেশ ও দেশবাসীর ক্ষমতা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল।” দেশবাসীর ক্ষমতা যত বৃদ্ধি পাবে, ততই তাঁর নিজের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার ক্ষমতা বাড়বে বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। দরিদ্র জনগণ যখন দারিদ্র্যমুক্ত হন, তখন দেশ থেকে অনাহার দূর হয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমার দায়িত্ব পাকা বাড়ি, শৌচাগার, শিক্ষা, আয়ুষ্মান, নলবাহিত জলের মতো বিষয়গুলি নিয়ে স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করার সুযোগ করে দেওয়ার।” তাঁর কার্যকালের ১০ বছরে ২৫ কোটি মানুষ দারিদ্র্যমুক্ত হয়েছেন বলেও প্রধানমন্ত্রী জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেকের জীবনে প্রাথমিক গুরুত্ব স্থির করতে হবে। অভিজ্ঞতা ও বিশ্লেষণের মাধ্যমেই তা অর্জন করা সম্ভব। তিনি তাঁর ভুল-ভ্রান্তিকে শিক্ষা হিসেবে গণ্য করেন বলেও প্রধানমন্ত্রী জানান।

শ্রী মোদী কোভিড অতিমারীর উদাহরণ দিয়ে বলেন, অলস বসে না থেকে জনগণকে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন বা থালি বাজানোর মতো কর্মসূচি গ্রহণ করার চিন্তা করেছেন তিনি। একইভাবে, যথাযথভাবে দিশা-নির্দেশ ঠিক থাকলে আন্তর্জাতিক স্তরেও সাফল্য আমাদের নিশ্চিত।

যথাযথ শাসন ব্যবস্থার জন্য একটি সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা থাকা জরুরি এবং ততধিক প্রয়োজন যথাযথ দিশা-নির্দেশ।

প্রধানমন্ত্রী জীবনে কখনই হতাশ না হয়ে পড়ার কথা বলেন। তিনি বলেন, “আমি আমার জীবনে হতাশার সব দরজা-জানালা বন্ধ করে দিয়েছি।” বর্তমান প্রজন্মের জীবনযাত্রা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে জীবনযাপন অনেক সহজ হয়েছে। সমগ্র দেশের যৌথ প্রয়াসে দেশের ক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সদর্থক চিন্তাভাবনার ওপর আলোকপাত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই চিন্তাভাবনা অত্যন্ত কঠিন পরিস্থিতিতেও আলোর দিশা দেখায়। বক্তব্যের শেষে প্রধানমন্ত্রী প্রত্যেক পড়ুয়াকে তাদের ভবিষ্যতের লক্ষ্য অর্জনের জন্য শুভকামনা জানান। 

অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী শ্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান ও অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

‘পরীক্ষা পে চর্চা’র পূর্ববর্তী পর্বগুলি নিম্নলিখিত লিঙ্ক থেকে পাওয়া যাবে :
Pariksha Pe Charcha 2023
Pariksha Pe Charcha 2022
Pariksha Pe Charcha 2021
Pariksha Pe Charcha 2020
Pariksha Pe Charcha 2019
Pariksha Pe Charcha 2018


PG/PM/DM/…



(Release ID: 2000464) Visitor Counter : 76