প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

তানজানিয়ার রাষ্ট্রপতির ভারত সফর উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রেস বিবৃতি

Posted On: 09 OCT 2023 1:43PM by PIB Kolkata

নতুন দিল্লি, ৯ ই অক্টোবর, ২০২৩

 

মহামান্য রাষ্ট্রপতি সামিয়া হাসান জি,

উভয় দেশের মাননীয় প্রতিনিধিগণ,

সংবাদ মাধ্যমের বন্ধুগণ,

নমস্কার!

প্রথমত, আমি রাষ্ট্রপতি সামিয়া হাসান জি ও তাঁর প্রতিনিধি দলকে ভারতে স্বাগত জানাই।
তানজানিয়ার রাষ্ট্রপতি হিসেবে এটাই তাঁর প্রথম ভারত সফর। তবে তিনি দীর্ঘকাল ধরে ভারত ও আমাদের জনগণের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন।
ভারতের প্রতি তাঁর ভালবাসা এবং দায়বদ্ধতা প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদের সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী এবং নিবিড় করতে অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে।
জি-২০ গোষ্ঠীর অন্যতম স্থায়ী সদস্য হিসেবে আফ্রিকান ইউনিয়ন-এর যোগদানের পর, আজ প্রথমবারের মতো আমরা আফ্রিকার কোনো রাষ্ট্রপ্রধানকে ভারতে স্বাগত জানানোর সুযোগ পেয়েছি।
তাই তাঁদের এই সফরের গুরুত্ব আমাদের জন্য বহুগুণ বেড়ে গেছে।


বন্ধুগণ,


আজকের দিনটি ভারত ও তানজানিয়া পারস্পরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি ঐতিহাসিক দিন।
আজ আমরা আমাদের বহু শতাব্দী প্রাচীন বন্ধুত্বকে পুনরায় একটি কৌশলগত অংশীদারিত্বে আবদ্ধ করছি।
আজকের বৈঠকে আমরা আমাদের এই ভবিষ্যৎ কৌশলগত অংশীদারিত্বের ভিত্তি স্থাপন করে সম্ভাব্য বেশ কিছু নতুন উদ্যোগকে চিহ্নিত করেছি।
ভারত ও তানজানিয়া পারস্পরিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের জন্য একে অপরের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।
উভয় পক্ষ পরস্পরের স্থানীয় মুদ্রায় বাণিজ্যিক লেনদেন বাড়াতে একটি চুক্তি চূড়ান্ত করার কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
এভাবেই আমরা ভবিষ্যতেও আমাদের অর্থনৈতিক সহযোগিতার পূর্ণ সম্ভাবনা উপলব্ধি করার জন্য নতুন সুযোগগুলি অন্বেষণ করতে থাকব।

আফ্রিকা মহাদেশে তানজানিয়া ভারতের বৃহত্তম এবং নিকটতম উন্নয়ন সহযোগী।
ভারত ইতিমধ্যেই আইসিটি কেন্দ্র, বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ, প্রতিরক্ষা প্রশিক্ষণ, আইটিইসি এবং আইসিসিআর বৃত্তির মাধ্যমে তানজানিয়ার যুবক যুবতিদের দক্ষতা উন্নয়ন এবং সক্ষমতা  বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে।
জল সরবরাহ, কৃষি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে একসঙ্গে কাজ করে আমরা তানজানিয়ার মানুষের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার চেষ্টা করেছি।
ভবিষ্যতেও আমরা এরকম দায়বদ্ধতা সহকারে আমাদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখব।
তানজানিয়ার জাঞ্জিবারে আইআইটি মাদ্রাজের একটি ক্যাম্পাস খোলার সিদ্ধান্ত আমাদের পারস্পরিক  সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।
এটি শুধুমাত্র তানজানিয়ার জন্য নয়, পার্শ্ববর্তী ক্ষেত্রীয় দেশগুলির শিক্ষার্থীদের জন্যও একটি উচ্চ মানের শিক্ষাকেন্দ্র হয়ে উঠবে।
উভয় দেশের উন্নয়ন যাত্রার অগ্রগতির ক্ষেত্রে প্রযুক্তি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি।
ডিজিটাল ‘পাবলিক গুডস শেয়ারিং’ এর ক্ষেত্রেও আজকের চুক্তিটি আমাদের পারস্পরিক অংশীদারিত্বকে শক্তিশালী করবে।
আমি আনন্দিত যে আজ তানজানিয়া আমাদের দেশের ইউ পি আই -এর সাফল্য দেখে তাঁদের দেশেও এই ব্যবস্থাকে গ্রহণ করার জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছে।

বন্ধুগণ, 

প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আমরা পাঁচ বছরের একটি যৌথ পথচিত্র চূড়ান্ত করা নিয়ে একমত হয়েছি।
এর মাধ্যমে সামরিক প্রশিক্ষণ, সামুদ্রিক সহযোগিতা, সক্ষমতা বৃদ্ধি, প্রতিরক্ষা শিল্পের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে নতুন নতুন মাত্রা যোগ হবে।
জ্বালানি খাতে ভারত ও তানজানিয়ার মধ্যে ঘনিষ্ঠ পারস্পরিক সহযোগিতাও রয়েছে।
ভারতে দ্রুত পরিবর্তিত পরিবেশবান্ধব পরিচ্ছন্ন শক্তির উৎপাদন ব্যবস্থা গড়ে ওঠার  পরিপ্রেক্ষিতে, আমরা উভয় দেশ এই গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রেও একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছি।
আমি আনন্দিত যে তানজানিয়া জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে ভারতের দ্বারা চালু করা ‘গ্লোবাল বায়োফুয়েলস অ্যালায়েন্স’ বা আন্তর্জাতিক জৈবজ্বালানী সঙ্ঘে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷
এর পাশাপাশি, ‘ইন্টারন্যাশনাল বিগ ক্যাট অ্যালায়েন্স’-এ তানজানিয়ার যোগদানের সিদ্ধান্ত আমাদের বাঘ বা বড় বিড়াল জাতীয় প্রাণীদের সংরক্ষণের জন্য বিশ্বব্যাপী উদ্যোগ জোরদার করতে শক্তি বাড়াবে।
আজ আমরা মহাকাশ ও পারমাণবিক প্রযুক্তিকে জনকল্যাণে ব্যবহারের ওপর জোর দিয়েছি। আমরা এই গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলিতে সুনির্দিষ্ট উদ্যোগ চিহ্নিত করে যৌথভাবে এগিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।


বন্ধুগণ,


আজ আমরা অনেক আন্তর্জাতিক এবং ক্ষেত্রীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি।
ভারত মহাসাগরের সঙ্গে যুক্ত থকা দেশ হিসেবে আমরা নিজেদের সামুদ্রিক নিরাপত্তা,  জলদস্যু প্রতিরোধ, মাদক পাচারের মতো বিভিন্ন সমস্যা মোকাবেলার ক্ষেত্রে পারস্পরিক সমন্বয় বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছি।
আমরা তানজানিয়াকে ‘ইন্দো-প্যাসিফিক’ বা ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় সমস্ত উদ্যোগের ক্ষেত্রে একটি মূল্যবান অংশীদার দেশ হিসাবে দেখি।
ভারত এবং তানজানিয়া একমত যে মানবতার নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার ক্ষেত্রে  সবচাইতে গুরুতর সমস্যা হল সন্ত্রাসবাদ।
সেজন্য আমরা সন্ত্রাস দমনের ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

বন্ধুগণ,

আমাদের পারস্পরিক সম্পর্কের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ যোগসূত্র হল যুগ যুগ ধরে গড়ে ওঠা আমাদের উভয় দেশের জনগণের মধ্যে সুদৃঢ় মানবিক সম্পর্ক।
দুই হাজার বছর আগেও আমাদের গুজরাটের মান্ডভি বন্দর ও তানজানিয়ার জাঞ্জিবার বন্দরের মধ্যে বাণিজ্য চলত।
ভারতের সিদি উপজাতির উৎপত্তি পূর্ব আফ্রিকার জাঞ্জি উপকূলে।
আজও, ভারতের বিপুল সংখ্যক মানুষ তানজানিয়াকে তাদের দ্বিতীয় বাড়ি বলে মনে করে।
প্রবাসী ভারতীয় ও ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের প্রতি এই আত্মীয়সুল্ভ ব্যবহারের জন্য আমি তাঞ্জানিয়ার মাননীয় রাষ্ট্রপতি সামিয়া হাসান জির প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
সম্প্রতি যোগের পাশাপাশি তানজানিয়ায় কবাডি ও ক্রিকেটের জনপ্রিয়তাও বাড়ছে।
আমরা দুই দেশের জনগণের মধ্যে পারস্পরিক ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধির এই প্রচেষ্টা ভবিষ্যতেও অব্যাহত রাখব।
মহামান্য রাষ্ট্রপতি সামিয়া হাসান জি,
আর একবার আপনাকে এবং আপনার প্রতিনিধি দলকে ভারতে স্বাগত জানাই। সবাইকে 
অনেক অনেক ধন্যবাদ। 


*
PG/SB


(Release ID: 1966191) Visitor Counter : 114