প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

উত্তরপ্রদেশের রোজগার মেলায় প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও বার্তা

Posted On: 26 FEB 2023 12:52PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩


রোজগার মেলা বর্তমানে আমার কাছে বিশেষ একটি ঘটনা হয়ে উঠেছে। গত কয়েক মাস যাবৎ আমি লক্ষ্য করেছি যে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির কোথাও না কোথাও প্রতি সপ্তাহেই রোজগার মেলার আয়োজন করা হচ্ছে। ঐ অনুষ্ঠানগুলিতে হাজার হাজার তরুণ-তরুণীকে কাজে যোগদানের জন্য নিয়োগপত্রও দেওয়া হচ্ছে। এই ধরনের ঘটনার সাক্ষী হতে পেরে আমি নিজেকে ভাগ্যবান বলে মনে করি। মেধাবী এই তরুণ প্রজন্ম সরকারি ব্যবস্থায় নতুন নতুন ধ্যান-ধারণা নিয়ে আসার পাশাপাশি দক্ষতা বাড়ানোর কাজেও বিশেষভাবে সাহায্য করছেন।

বন্ধুগণ,

আজ উত্তরপ্রদেশে আয়োজিত রোজগার মেলার এক বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। এই মেলা ৯ হাজার পরিবারে সুখ ও আনন্দই শুধু নিয়ে আসেনি, একইসঙ্গে উত্তরপ্রদেশে নিরাপত্তার অনুভূতি জাগিয়ে তুলেছে। নতুন নতুন নিয়োগের মাধ্যমে উত্তরপ্রদেশ পুলিশবাহিনীর আরও উন্নয়ন তথা ক্ষমতায়ন ঘটছে। জীবন নতুনভাবে শুরু করার এবং নতুন দায়িত্বভার গ্রহণ করার জন্য যে সমস্ত তরুণ ও যুবার হাতে আজ নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হচ্ছে, তাঁদের আমি আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। আমি জানতে পেরেছি যে ২০১৭ সাল থেকেই উত্তরপ্রদেশ পুলিশবাহিনীর একটিমাত্র দপ্তরেই দেড় লক্ষেরও বেশি নতুন কর্মীকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে। এর অর্থ হল, বিজেপি-র শাসনে কর্মসংস্থান এবং নিরাপত্তা - দুইয়েরই প্রসার ও উন্নতি ঘটেছে।

বন্ধুগণ,

উত্তরপ্রদেশে এক সময় মাফিয়া রাজ চলত। যখন তখন সেখানে আইন ও শৃঙ্খলাজনিত সমস্যার উদ্ভব হতে দেখা যেত। কিন্তু এই রাজ্যটি বর্তমানে উন্নত আইন ও শৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য সুখ্যাতি অর্জন করেছে। উন্নয়নের লক্ষ্যে যেক’টি রাজ্য এগিয়ে চলেছে উত্তরপ্রদেশ হল তার অন্যতম। বিজেপি সরকার সাধারণ মানুষের মধ্যে নিরাপত্তার মানসিকতাকে আরও জোরদার করে তুলেছে। আমরা সকলেই জানি যে আইন ও শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেখানে যথেষ্ট শক্তিশালী, সেখানে আরও বেশি মাত্রায় কর্মসংস্থানের সুযোগ ও সম্ভাবনা বৃদ্ধি পেতে থাকে। বাণিজ্যিক কাজকর্মের নিরাপদ পরিবেশ গড়ে উঠলে বিনিয়োগের মাত্রাও ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে থাকে। আপনারা সকলেই লক্ষ্য করেছেন যে ভারতীয় নাগরিকদের জন্য অসংখ্য ধর্মীয় তথা পর্যটন কেন্দ্র এখন গড়ে উঠেছে। বিভিন্ন ধরনের ঐতিহ্যকে অনুসরণ করে থাকেন এমন প্রত্যেক মানুষের জন্য উত্তরপ্রদেশে এখন সবকিছুরই ব্যবস্থা রয়েছে। আইন ও শৃঙ্খলাজনিত পরিস্থিতি যদি শক্তিশালী হয় তাহলে এ ধরনের খবর দেশের প্রতিটি প্রান্তেই দ্রুত পৌঁছে যায়। ফলে, উত্তরপ্রদেশে পর্যটক আগমনের সংখ্যাও ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে থাকে। আমরা এখন আরও লক্ষ্য করেছি যে বিজেপি-র ডবল ইঞ্জিন সরকার যেভাবে উত্তরপ্রদেশের উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিয়েছে তার সুবাদে প্রতিটি ক্ষেত্রেই কর্মসংস্থানের সুযোগ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আধুনিক সড়ক নির্মাণ, নতুন নতুন বিমানবন্দর গড়ে তোলা, ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডর, নতুন প্রতিরক্ষা করিডর, নতুন নতুন মোবাইল প্রস্তুতকারক সংস্থা, আধুনিক জলপথ এবং আধুনিক পরিকাঠামোর প্রসারের মাধ্যমে উত্তরপ্রদেশের প্রতিটি প্রান্তেই নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে।

বন্ধুগণ,

উত্তরপ্রদেশে এখন এক্সপ্রেসওয়ের সংখ্যা হল সর্বাধিক। এখানকার মহাসড়কগুলির সম্প্রসারণ ঘটছে নিরন্তরভাবেই। কিছুক্ষণ আগে একটি পরিবার আমার সঙ্গে এখানে সাক্ষাৎ করতে আসে। কন্যাকেও সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন তাঁরা। আমি তাঁদের প্রশ্ন করলাম, আপনারা কি উত্তরপ্রদেশে বাস করেন? তাঁরা জানালেন, না। আমরা এক্সপ্রেস প্রদেশে বাস করি। তাহলে দেখুন, উত্তরপ্রদেশের পরিচিতি এখন কিরকম বদলে গিয়েছে। এখানকার রাস্তাঘাট নির্মিত হচ্ছে প্রতিটি শহরের সঙ্গে মহাসড়কগুলিকে যুক্ত করার লক্ষ্যে। এই উন্নয়ন প্রকল্পগুলির মাধ্যমে শুধুমাত্র কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিই হচ্ছে না, একইসঙ্গে এই রাজ্যে অন্যান্য প্রকল্প বাস্তবায়নের পথও সুপ্রশস্ত হচ্ছে। উত্তরপ্রদেশ সরকার যেভাবে পর্যটন শিল্পের বিকাশের মাধ্যমে নতুন নতুন সুযোগ-সুবিধার প্রসার ঘটিয়েছে তা অনুসরণ করে এখানে কর্মসংস্থানের সংখ্যাও দারুণভাবে বেড়ে গেছে। কয়েকদিন আগে আমি পড়ছিলাম যে ক্রিস্টমাসের সময় মানুষ গোয়া সফর করতে যান। তখন গোয়ায় তিল ধারণের জায়গা থাকে না। কিন্তু এখন নতুন পরিসংখ্যানগত তথ্য অনুযায়ী গোয়ার তুলনায় কাশী যাওয়ার জন্য মানুষের আগ্রহ বেড়েছে অনেক বেশি। কাশীর সাংসদ হিসেবে এই ঘটনা আমাকে উদ্বুদ্ধ করেছে। কয়েকদিন আগে বিশ্ব বিনিয়োগকর্তাদের সম্মেলনে বিনিয়োগকারীদের উৎসাহ-উদ্দীপনা আমি লক্ষ্য করেছি। হাজার হাজার কোটি কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রচেষ্টা বাস্তবায়িত হতে চলেছে। ফলে, সরকারি এবং বেসরকারি দুটি ক্ষেত্রেই এখানে কর্মসংস্থানের সুযোগ আরও প্রসারিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বন্ধুগণ,

নিরাপত্তা ও কর্মসংস্থান – এই দুইয়ের মিলিত শক্তি উত্তরপ্রদেশের অর্থনীতিতে জোয়ার নিয়ে এসেছে। ‘মুদ্রা’ যোজনা উত্তরপ্রদেশের লক্ষ লক্ষ তরুণ ও যুবকদের স্বপ্ন দেখতে সাহায্য করেছে। ‘মুদ্রা’ যোজনার আওতায় কোনরকম গ্যারান্টি ছাড়াই ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ সহায়তা দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। ‘একটি জেলা থেকে একটিমাত্র উৎপাদন’ – এই অভিযান প্রতিটি জেলাতেই নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সম্প্রসারিত করেছে। এর মাধ্যমে তরুণ ও যুবকরা বড় বড় বাজারগুলিতে তাঁদের দক্ষতা প্রমাণের সুযোগ পেয়েছেন। উত্তরপ্রদেশে রয়েছে নথিভুক্ত লক্ষ লক্ষ ক্ষুদ্র, মাঝারি ও অণু শিল্প সংস্থা। এই রাজ্যটি হল ভারতের ক্ষুদ্রায়তন শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলির এক বৃহত্তম কেন্দ্র। নতুন শিল্পোদ্যোগীদের জন্য স্টার্ট-আপ-এর অনুকূল পরিবেশ ও পরিস্থিতি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে উত্তরপ্রদেশ বর্তমানে রয়েছে নেতৃত্বের ভূমিকায়।

বন্ধুগণ,

আজ যাঁরা এখানে নিয়োগপত্র হাতে পেয়েছেন তাঁদের সব সময়েই একটি কথা মনে রাখা প্রয়োজন। নতুন নতুন দায়িত্ব, নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ এবং সেইসঙ্গে নতুন নতুন সুযোগও আসতে চলেছে আপনাদের জীবনে। প্রায় প্রতিটি দিনই কোনও না কোনও নতুন সুযোগ আপনাদের জন্য অপেক্ষা করে রয়েছে। তা সত্ত্বেও উত্তরপ্রদেশের একজন সাংসদ হিসেবে আমি ব্যক্তিগতভাবে আপনাদের কাছে কিছু বলতে আগ্রহী। বেশ কয়েক বছর ধরে জনজীবনের সঙ্গে যুক্ত থাকার সুবাদে আমার কিছু অভিজ্ঞতারও সঞ্চয় হয়েছে। তা থেকে আমি আপনাদের বলতে চাই যে যদিও আজকে আপনারা নিয়োগপত্র হাতে পেয়েছেন, আপনাদের মধ্যে যে ছাত্র মনটি লুকিয়ে আছে তাকে কখনও আপনারা হারিয়ে যেতে দেবেন না। প্রতিটি মুহূর্তেই নতুন নতুন বিষয় আপনারা শিখতে থাকুন। আপনাদের দক্ষতা ও ক্ষমতাকে আরও উন্নত করে তোলার চেষ্টা করুন। অনলাইন শিক্ষার সুযোগ এখন রয়েছে সকলের নাগালের মধ্যেই। সেখানে অনেক কিছুই শেখার রয়েছে। আপনাদের উন্নতি তথা অগ্রগতির জন্য তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জীবনকে কোনদিন থেমে থাকতে দেবেন না। তাকে গতিশীল করে তুলুন। আরও নতুন নতুন উচ্চতায় ওঠার চেষ্টা করুন। এজন্য আপনাদের জ্ঞান ও দক্ষতাকে আরও বাড়িয়ে তোলা প্রয়োজন। আপনারা একটি বিশেষ সেবার জন্য নিযুক্ত হচ্ছেন। এটিকে আপনারা এক সূচনাকাল বলে মনে করুন। আপনাদের ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটানোর পাশাপাশি অগ্রগতির লক্ষ্যে আপনাদের জ্ঞানভাণ্ডারকেও আরও বাড়িয়ে তুলুন। যেহেতু আপনারা নিয়োগপত্র হাতে পেয়েছেন, এখন থেকে পুলিশের ইউনিফর্মেই আপনাদের সজ্জিত হতে হবে। সরকার আপনাদের হাতে একটি ব্যাটন তুলে দিয়েছে। কিন্তু আপনাদের ভুললে চলবে না যে সরকার এসেছে অনেক পরে। তারও আগে ভগবান আপনাদের সকলের মধ্যে হৃদয়বৃত্তি এনে দিয়েছে। তাই আপনাদের কাছে ব্যাটনের থেকে বড় হয়ে উঠুক হৃদয় তথা অন্তর। আপনাদের সংবেদনশীল হয়ে উঠতে হবে। সেইসঙ্গে সমগ্র পদ্ধতিগত ব্যবস্থাকেও সংবেদনশীল করে তোলার চেষ্টা করুন। নিযুক্ত তরুণ ও যুবকদের প্রশিক্ষণকালে তাঁদের সংবেদনশীল করে তোলার যথাসাধ্য চেষ্টা করা হবে। পুলিশবাহিনীর প্রশিক্ষণকে দ্রুত উন্নত করে তুলতে উত্তরপ্রদেশ সরকার বিশেষভাবে সচেষ্ট রয়েছে। এজন্য অনেক ক্ষেত্রেই আমূল পরিবর্তনও সম্ভব করে তোলা হয়েছে। উত্তরপ্রদেশের পুলিশবাহিনীকে আরও তৎপর ও দক্ষ করে তুলতে তরুণ ও যুবকদের সাইবার অপরাধ দমন, ফরেন্সিক বিজ্ঞান এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে প্রশিক্ষিত করে তোলা হবে।

বন্ধুগণ,

আজ যে সমস্ত তরুণ এখানে নিয়োগপত্র পেলেন তাঁদের সকলেরই দায়িত্ব রয়েছে সমাজকে পথ দেখানোর এবং সেইসঙ্গে সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে নিরাপত্তার মানসিকতা জাগিয়ে তোলার। আশার কথা, সাধারণ মানুষের কাছে আপনারা সেবা ও শক্তি - দুইয়েরই এক মিলিত প্রতিফলন। আপনাদের আনুগত্য এবং কঠিন সঙ্কল্প এমন এক পরিবেশ গড়ে তুলতে পারে যেখানে দাগী অপরাধীরাও ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়বে। কিন্তু, যাঁরা আইনকে অনুসরণ করে চলবেন, তাঁরা সাহসের সঙ্গে জীবনযাত্রায় সামিল হবেন। আমি আরও একবার আপনাদের সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই। শুভেচ্ছা জানাই আপনাদের পরিবারের সদস্যদেরও। অনেক অনেক ধন্যবাদ।

প্রধানমন্ত্রীর মূল ভাষণটি ছিল হিন্দিতে

 

PG/SKD/DM/


(Release ID: 1902816) Visitor Counter : 193