প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

গুজরাটের ভায়ারাতে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের বঙ্গানুবাদ

Posted On: 20 OCT 2022 10:25PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ২০ অক্টোবর, ২০২২

 

ভারত মাতা কি – জয়!

ভারত মাতা কি – জয়!

এই জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আপনারা সকলে এসেছেন আমাদের আশীর্বাদ দিতে। আমাকে বলা হয়েছে, প্রায় আড়াই থেকে তিন ঘন্টা আপনারা এখানে অপেক্ষা করছেন। আপনাদের ধৈর্য্য, ভালোবাসা, উৎসাহ-উদ্দীপনা এখানকার পরিবেশকে সম্পূর্ণ বদলে দিয়েছে এবং আমাকে আপনাদের জন্য কাজ করার নতুন শক্তি যুগিয়েছে। তাই, শুরুতেই আপনাদের সকলকে হৃদয়ের অন্তস্থল থেকে জানাই শুভেচ্ছা। 

বিগত ২০ বছর ধরে আপনারা আমাকে ভালোবাসা ও সমর্থন জানিয়ে যাচ্ছেন। আপনাদের সঙ্গে উষ্ণ সম্পর্ক স্থাপন করতে পেরে আমি আনন্দিত। আপনারা বিগত ২০ বছর ধরে আমাকে নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসছেন। আমি দিল্লিতে আছি না গান্ধীনগরে, তা অর্থহীন। একমাত্র বিষয় হ’ল – আমি আপনাদের সেবা করার সবরকম সুযোগ যেন পাই। 

আজ এখানে আদিবাসী এলাকায় যে প্রকল্পগুলির উদ্বোধন ও শিলান্যাস হয়েছে, তা সমগ্র অঞ্চলে উন্নয়ন ঘটাতে সক্ষম হবে। 

এই প্রকল্পগুলি শুধুমাত্র আপনাদের জন্যই। আপনাদের সন্তানের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য আমরা এগুলি নির্মাণ করছি। আপনাদের অভিভাবকরা তাঁদের জীবনের একটি অংশ জঙ্গলে অতিবাহিত করেছেন। নানা কঠিন পরিস্থিতিতে জীবনযাপন করতে হয়েছে তাঁদের। এর মধ্যে অনেক কিছুই এখন দূর করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু, এখনও আপনারা নানা চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করছেন। কিন্তু, আপনাদের সন্তানরা যেন কোনও রকম পরিস্থিতির সম্মুখীন না হয়, সেই প্রতিশ্রুতি পূরণের লক্ষ্যেই আমি দিনরাত কাজ করে চলেছি। আমরা চাই, আদিবাসী অঞ্চলের উন্নয়ন।

আদিবাসী ভাই ও বোনেদের উন্নয়নের জন্য আমরা কঠোর পরিশ্রম করছি। আপনারা এই এলাকায় পূর্বতন সরকারের কর্মসংস্কৃতি দেখেছেন। আপনারা মুখে কিছু না বললেও, সবটাই জানেন। 

পূর্বতন কংগ্রেস সরকার ও বর্তমান বিজেপি সরকারের মধ্যে তুলনা করে দেখুন, পূর্বতন কংগ্রেস সরকার আপনাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য বিন্দুমাত্র ভাবনাচিন্তা করেনি। তারা সর্বদাই নির্বাচনের চিন্তা করতো। ভোটের আগে দেওয়া মিথ্যা প্রতিশ্রুতি, ভোটের পর ভুলে যেত। 

বর্তমান বিজেপি সরকার আদিবাসীদের উন্নয়নকেই সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়। আদিবাসী ভাই-বোনদের সক্ষম করে তুলতে আমরা সবরকম সাহায্য করছি। 

আমি যদি কখনও কোনও ঐতিহ্যবাহী আদিবাসী পোশাক পরি, তা হলে তারা এটাকে নিয়ে মজা করেন। কিন্তু আমি আপনাদের বলতে চাই যে, কংগ্রেস নেতারা আদিবাসী নেতাদের তাঁদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে নিয়ে মজা করেন। আদিবাসী ভাইয়েরা কখনই এই ঘটনা ভুলে যাবেন না এবং সঠিক সময়ে এর যোগ্য জবাব দেবেন। এর পাশাপাশি, কংগ্রেস সরকার আদিবাসী ভাইয়ের তৈরি সামগ্রীর গুরুত্বও বোঝেনি কখনও। বিজেপি বন ধন – এর শক্তি উপলব্ধি করেছে এবং বিশ্ব বাজারে যেন এর সঠিক মূল্যায়ন হয়, সেদিকে নজর দিয়েছে। 

ভাই ও বোনেরা, বিজেপি সরকার সর্বদাই আদিবাসীদের উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেয়। আদিবাসী ভাই-বোনদের দ্রুত উন্নয়নের জন্য সবরকম চেষ্টা চালানো হচ্ছে। কংগ্রেস সরকার কখনই এগুলি নিয়ে ভাবেনি। 

প্রতিটি বাড়ি যেন পাকা বাড়ি হয় – বিদ্যুৎ ও রান্নার গ্যাস সংযোগ যেন যথাযথভাবে পাওয়া যায়, বাড়িতে শৌচাগার, বাড়ির কাছাকাছি চিকিৎসা কেন্দ্র, বিদ্যালয় ও খেলার মাঠ এবং যথাযথ সড়ক নির্মাণ ক্ষেত্রে আমরা বিশেষ জোর দিচ্ছি। আমার এখনও মনে আছে, যখন প্রথম মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলাম, তখন জনগণ বলতেন, সন্ধ্যা বেলা বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত থাকলেই তাঁরা খুশি হবেন। বর্তমানে গুজরাটে ২৪ ঘন্টাই বিদ্যুৎ থাকে। গুজরাটের ডাং জেলায় প্রথম জ্যোতি গ্রাম যোজনার আওতায় ২৪ ঘন্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। আদিবাসীদের ৩০০টি গ্রামে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। অন্য কোনও সরকারের নেতা হলে তাঁরা এই প্রকল্পের জন্য আমেদাবাদ বা ভদোদরার মতো কোনও শহরকে বেছে নিতেন। কিন্তু, আমার কাছে আদিবাসীদের উন্নয়নই ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমি যখন প্রধানমন্ত্রী হলাম, তখন দেশে বিদ্যুৎ সংযোগ বিহীন গ্রামগুলির সংখ্যা গণনা করি, দেখা যায়, দেশে বিদ্যুতের একটি খুঁটিও নেই এমন গ্রামের সংখ্যা ১৮ হাজার। বর্তমানে বিদ্যুৎ সংযোগ বিহীন এমন গ্রাম দেশে নেই। 

আমার আদিবাসী ভাই ও বোনেদের জমির পরিমাণ খুবই কম। এই পরিস্থিতিতে তাঁরা কি করবেন? আপনারা মিলেট উৎপাদনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করেন। কিন্তু, তা আপনাদের ক্ষুধা নিবৃত্তির জন্য পর্যাপ্ত নয়। বর্তমানে আদিবাসী ভাই ও বোনেরা, তাঁদের ছোট জমিতেই কাজু বাদাম, আম, পেয়ারা, লেবুর মতো ফল উৎপাদনের কাজ শুরু করেছেন। 

বাড়ি প্রকল্প জনগণের জীবনযাত্রা সম্পূর্ণ বদলে দিয়েছে। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডঃ আব্দুল কালাম একবার তাঁর জন্মদিনে এখানের ভালসাদ জেলায় এসে বাড়ি প্রকল্প প্রত্যক্ষ করেন ও এর ভুয়সী প্রশংসাও করেন। এই প্রকল্পটি আদিবাসীদের জীবনে বিশাল পরিবর্তন এনেছে। বর্তমান সরকার বিভিন্ন গ্রামে জলের ট্যাঙ্ক তৈরি করছে। গুজরাটে এমন একটা সময় ছিল যখন ১০০টি বাড়ির মধ্যে মাত্র ২৫টি বাড়িতে জলের সুবিধা পাওয়া যেত। বর্তমানে ভূপেন্দ্রভাই সরকারের কঠোর পরিশ্রমের ফলে ১০০টির মধ্যে ১০০টি বাড়িতেই নলবাহিত জলের সুবিধা রয়েছে। 

ভাই ও বোনেরা, আদিবাসী এলাকার সাধারণ চাহিদা পূরণের জন্য আমরা বন বন্ধু কল্যাণ যোজনা চালু করেছি। আজ এখানে উপস্থিত রয়েছেন মধ্যপ্রদেশের রাজ্যপাল মঙ্গুভাই। আমি এটা বলতে পেরে গর্বিত যে, মঙ্গুভাই গুজরাটের এক আদিবাসী মায়ের সন্তান। তিনি যখন এখানে মন্ত্রী ছিলেন, তখন আদিবাসীদের উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন। ২০-২৫ বছর আগে সমগ্র আদিবাসী এলাকায় মাত্র কয়েকটি আশ্রম স্কুল ছিল, যাতে বিজ্ঞান বিভাগে পড়ার কোনও সুযোগই ছিল না। কিন্তু, বর্তমানে এই অঞ্চলের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে। এখানকার সন্তানরা এখন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হচ্ছেন। আদিবাসী এলাকায় আমরা ১০ হাজারেরও বেশি বিদ্যালয় স্থাপন করেছি। বীরসা মুন্ডা আদিবাসী বিশ্ববিদ্যালয়ও চালু করা হয়েছে। দেওয়া হচ্ছে বিশেষ বৃত্তিও। 

আমরা যখন নানা সুবিধা দেওয়ার জন্য কাজ করছি, কংগ্রেসের সদস্যরা আসেন, মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিতে। আমি জানি, আমার আদিবাসী ভাই-বোনেরা এর যোগ্য জবাব দেবেন। 

ভাই ও বোনেরা, ভূপেন্দ্রভাই বর্তমানে বন বন্ধু প্রকল্পটিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। এই প্রকল্পে ২ লক্ষ ৫০ হাজার কোটি টাকারও বেশি ব্যয় করা হয়েছে।

ভাই ও বোনেরা, আদিবাসী সমাজে অন্যতম বড় সমস্যা ছিল অপুষ্টি। সঞ্জিবনী দুধ যোজনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করা হয়েছে। বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পেতে চালু করা হয়েছে ভগিরথ প্রকল্প। এছাড়াও, ইন্দ্রধনুষ ও পোষণ যোজনার মাধ্যমেও উপকৃত হচ্ছেন জনগণ।

করোনা অতিমারীর আড়াই বছরেরও বেশি সময় ধরে আমরা দেশের দরিদ্র শ্রেণীর জনগণকে বিনামূল্যে রেশন দিয়েছি। ৮০ কোটিরও বেশি মানুষ এর সুবিধা পেয়েছেন। আমাদের মা ও বোনেরা যখন কাঠের উনুনে ধোঁয়ার মধ্যে রান্না করতেন, তখন তাঁদের নানারকম সমস্যা দেখা দিত। এর সমাধানের জন্য বিনামূল্যে একটি সিলিন্ডার সহ গ্যাস সংযোগ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু, ভূপেন্দ্রভাই এই দীপাবলি থেকে ১টির বদলে বিনামূল্যে ২টি সিলিন্ডার দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। এজন্য আমি তাঁকে অভিনন্দন জানাই। 

আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের আওতায় নানাবিধ রোগের চিকিৎসা এখন খুব সহজেই সম্ভব হচ্ছে। এই কার্ডটি আপনারা কলকাতা, মুম্বাই, দিল্লি যেখানেই যান না কেন, সেখানেই সহজে ব্যবহার করতে পারবেন।

স্বাধীনতা সংগ্রামে আদিবাসী সমাজের ভূমিকা ছিল বিশেষ। বীরসা মুন্ডা দেশের জন্য তাঁর জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। কিন্তু, পূর্বতন সরকার তাঁর এই অবদান মনে রাখেনি। বর্তমান সরকার এ বিষয়ে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। ১৫ নভেম্বর বীরসা মুন্ডার জন্মদিনটি আদিবাসী গর্ব দিবস হিসাবে পালন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 

ভাই ও বোনেরা, ডবল ইঞ্জিন সরকার জনগণের উন্নয়নে দ্রুতগতিতে কাজ করছে। বাড়ানো হয়েছে ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যও।

বর্তমানে দেশের এক আদিবাসী কন্যা রাষ্ট্রপতি পদে আসীন। এতা অত্যন্ত গর্বের বিষয়। দেশের ইতিহাসে এই প্রথম।

ভাই ও বোনেরা, ডবল ইঞ্জিন সরকার পর্যটন ক্ষেত্রের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। স্ট্যাচু অফ ইউনিটি এই অঞ্চলের আদিবাসীদের কর্মসংস্থানের হাব হয়ে উঠেছে। উন্নয়নের সুফল পাচ্ছেন দরিদ্র থেকে দরিদ্র শ্রেণীর জনগণও।

ভাই ও বোনেরা, সরকার দরিদ্র ও পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর জনগণের উন্নয়নে কাজ করে চলেছে। আপনাদের আশীর্বাদ আমাদের উৎসাহ দেয় ও শক্তি যোগায়। আমরা অনুপ্রাণিত হই। আমি আপনাদের স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য কাজ চালিয়ে যেতে চাই। আমি বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প আপনাদের উৎসর্গ করে আমার বক্তব্য শেষ করছি। দু’হাত তুলে আমার সঙ্গে উচ্চস্বরে বলুন – 

ভারত মাতা কি – জয়!

আরও জোরে - ভারত মাতা কি – জয়!

আরও ভারত মাতা কি – জয়!

অসংখ্য ধন্যবাদ। 

প্রধানমন্ত্রীর মূল ভাষণটি ছিল গুজরাটিতে


PG/PM/SB



(Release ID: 1870039) Visitor Counter : 199