প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

গুজরাটের তাপীর ভয়ারায় ১ হাজার ৯৭০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের বহুবিধ উন্নয়নমূলক উদ্যোগের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী

 

“যেখানেই আমার সরকার গড়েছি আদিবাসী সম্প্রদায়ের উন্নয়ন আমাদের সর্বাধিক অগ্রাধিকারের তালিকায় থেকেছে, আদিবাসী কল্যাণকে আমরা সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছি”

 

“আদিবাসী সন্তানরা এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে নতুন সুযোগ পেয়েছে”

 

“গত ৭-৮ বছরে আদিবাসী কল্যাণে বাজেট বরাদ্দ ৩ গুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে”

 

“সবকা প্রয়াসের মধ্যে দিয়ে আমরা উন্নত গুজরাট এবং উন্নত ভারত গড়বো”

Posted On: 20 OCT 2022 5:35PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি,  ২০ অক্টোবর, ২০২২

তাপীর ভয়ারায় ১ হাজার ৯৭০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের বহুবিধ উন্নয়নমূলক উদ্যোগের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এই উন্নয়নমূলক প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে সাপুতারা থেকে স্ট্যাচু অফ ইউনিটি পর্যন্ত রাস্তার উন্নয়ন, সেইসঙ্গে নর্মদা জেলার তাপীতে ৩০০ কোটি টাকারও বেশি জল সরবরাহ প্রকল্প এবং দূর্গম এলাকাগুলির সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন।

এই উপলক্ষ্যে জনসাধারণের আবেগ এবং উৎসাহের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত দু-দশক ধরে তাদের ভালোবাসা পেয়ে তিনি সম্মানিত বোধ করছেন। তিনি বলেন, “অনেক দূরবর্তী এলাকা থেকে আপনারা এখানে এসেছেন। আপনাদের শক্তি এবং উদ্যোম দেখে আমার মন যে আনন্দে ভরে যাচ্ছে তাই নয় আমার শক্তিও বৃদ্ধি পাচ্ছে।” তিনি আরো বলেন, “আমি চেষ্টা করছি। আপনাদের উন্নয়নকল্পে সর্বান্তকরণে কাজ করে আমি সেই ঋণ শোধ করতে চাই। আজও এই কয়েকশো কোটি টাকা মূল্যের এই বিভিন্ন প্রকল্পের শিলান্যাস সমগ্র আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকার উন্নয়নের স্বার্থেই এরসঙ্গে তাপী এবং নর্মদাকেও যুক্ত করা হয়েছে।” প্রধানমন্ত্রী বলেন, আদিবাসী সম্প্রদায়ের কল্যাণ এবং তাদের স্বার্থকে ঘিরে দেশ দু-ধরনের রাজনীতি দেখেছে। একদিকে যেমন রয়েছে সেইসমস্ত রাজনৈতিক দলগুলি যারা আদিবাসী স্বার্থের প্রতি নজর দেয়না এবং এই আদিবাসীদের নিয়ে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেওয়ার ইতিহাস রয়েছে তাদের। আর অন্যদিকে রয়েছে বিজেপে-র মতো রাজনৈতিক দল। আদিবাসী উন্নয়নকে যারা সবসময় অগ্রাধিকারের তালিকায় রেখেছে। তিনি আরো বলেন, “পূর্ববর্তী সরকারগুলি আদিবাসী ঐতিহ্যকে নিয়ে ঠাট্টা-মস্করা করেছে। অন্যদিকে আমরা আদিবাসী ঐতিহ্যকে শ্রদ্ধা করি। আদিবাসী সম্প্রদায়ের উন্নয়ন আমাদের অগ্রাধিকারের তালিকায়। আমরা যখনই সরকার তৈরি করেছি আদিবাসী কল্যাণকে আমরা সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছি।”

আদিবাসী সম্প্রদায়ের উন্নয়ন নিয়ে বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, “আদিবাসী ভাই-বোনদের পাকা বাড়ি, বিদ্যুৎ সংযোগ, গ্যাস সংযোগ, শৌচালয়, তাদের বাড়িতে আসার রাস্তা, স্থানীয় এলাকায় চিকিৎসা কেন্দ্র এবং নিকটবর্তী এলাকায় উপার্জনের মাধ্যম এবং সন্তানদের জন্য বিদ্যালয় থাকতে হবে।” তিনি আরো বলেন, গুজরাট অভূতপূর্ব উন্নয়ন প্রত্যক্ষ করেছে। প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, গুজরাটের প্রত্যেকটি গ্রামে আজ ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ রয়েছে। তবে প্রতিটি গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ পৌঁছানোর ক্ষেত্রে প্রথম জায়গা পেয়েছে আদিবাসী জেলার দাং। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “১৫ বছর আগে জ্যোতিগ্রাম যোজনার অধীন দাং জেলার ১০০টি গ্রামে ১০০ শতাংশ বিদ্যুৎ সংযোগের লক্ষ্য অর্জন করা গেছে। আপনারা যখন আমাকে দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী করে পাঠান দাং জেলা থেকে এই উৎসাহই দেশের সমস্ত গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ পৌঁছে দেওয়ার কাজে আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে।”

আদিবাসী এলাকায় কৃষি ক্ষেত্রে নতুন জীবনদান করতে ওয়াদি যোজনার ওপর প্রধানমন্ত্রী আলোকপাত করেন। অতীতের অবস্থা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আদিবাসী গ্রামগুলিতে বাজরা এবং ভুট্টার উৎপাদন ও বিক্রি খুবই কঠিন ছিল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আজ আম, পেয়ারা, লেবুর সঙ্গে সঙ্গে আদিবাসী এলাকাগুলিতে কাজুর চাষ করা হচ্ছে”। তিনি বলেন, এই ওয়াদি যোজনা সদর্থক পরিবর্তন নিয়ে এসেছে এবং এই প্রকল্পের মাধ্যমে পতিত জমিতে চাষীরা ফল, বাঁশ এবং সেগুনের চাষ করছে। তিনি বলেন, “গুজরাটের বিভিন্ন জেলায় এই কর্মসূচিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।” প্রধানমন্ত্রী স্মরণ করেন রাষ্ট্রপতি ডঃ আব্দুল কালাম এই ভাবর জেলায় এসে এই প্রকল্পের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

গুজরাটের জলের অবস্থার পরিবর্তনের ব্যাপারেও আলোচনা করেন তিনি। গুজরাটে ইলেকট্রিক গ্রিডের মতো ওয়াটার গ্রিড তৈরি করা হয়েছে। তাপী সহ সমগ্র গুজরাট এলাকায় খাল এবং উত্তোলিত সেচ নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হয়েছে। দাবা কান্থা খাল থেকে জল উত্তোলনের ফলে তাপী জেলায় জলের সুবিধা বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, কয়েকশো কোটি টাকা খরচ করে উকাই প্রকল্প গড়ে তোলা হচ্ছে এবং এই যে প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হল তাতে জলের সুবিধা আরো বৃদ্ধি পাবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “একসময় গুজরাটে পরিবারগুলির মাত্র এক-তৃতীয়াংশ জল সংযোগের সুযোগ পেতো। আজ গুজরাটের ১০০ শতাংশ পরিবারই পাইপ বাহিত পরিশ্রুত জলসংযোগ সুবিধা পাচ্ছেন।”

বনবন্ধু কল্যাণ যোজনার ওপর আলোকপাত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গুজরাটের আদিবাসী সম্প্রদায়ের আকাঙ্খা এবং প্রত্যেকটি ন্যুনতম চাহিদা পূরণকে লক্ষ্য রেখে এটি রূপায়ণ করা হয়। তিনি বলেন, “তাপী এবং সংলগ্ন আদিবাসী জেলাগুলি থেকে আজ আমরা দেখছি অনেক কন্যা সন্তান স্কুল এবং কলেজে যাচ্ছে। আজ এই আদিবাসী সমাজের পুত্র-কন্যারা বিজ্ঞান পড়ছেন, ডাক্তার এবং ইঞ্জিনিয়ার হচ্ছেন।” প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, এই যুব সম্প্রদায়ের জন্য ২০-২৫ বছর আগে কুমারগ্রাম থেকে আম্বাজি পর্যন্ত সমগ্র আদিবাসী ক্ষেত্রে অল্প কিছু সংখ্যক বিদ্যালয় ছিল এবং বিজ্ঞান পড়ার সুযোগ ছিল যৎসামান্য। প্রধানমন্ত্রী জানান, গুজরাটে গতকাল উদ্বোধন হওয়া মিশন স্কুল অফ এক্সিলেন্সের অধীন আদিবাসী এলাকাগুলিতে প্রায় ৪ হাজার বিদ্যালয়ের আধুনিকীকরণ করা হবে।

প্রধানমন্ত্রী জানান, গত দু-দশকে আদিবাসী এলাকায় ১০ হাজারেরও বেশি বিদ্যালয় তৈরি করা হয়েছে। একলব্য মডেল স্কুল এবং কন্যা সন্তানদের জন্য বিশেষ আবাসিক বিদ্যালয় গড়ে তোলা হয়েছে। নর্মদার বীরসা মুন্ডা আদিবাসী বিশ্ববিদ্যালয় এবং গোধরার গোবিন্দ গুরু বিশ্ববিদ্যালয় আদিবাসী যুবকদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ করে দিচ্ছে। আদিবাসী সন্তানদের জন্য স্কলারশিপ বাবদ বাজেট বরাদ্দ দ্বিগুণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, “একলব্য স্কুল কয়েকগুণ বৃদ্ধি করা হয়েছে। আদিবাসী সন্তানদের জন্য উচ্চশিক্ষার বিশেষ সুযোগ তৈরি করা হয়েছে এবং বিদেশে গিয়ে পড়তেও তাদের আর্থিক সাহায্য দেওয়া হচ্ছে।” প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, খেলো ইন্ডিয়া অভিযানের মাধ্যমে ক্রীড়া ক্ষেত্রে সুযোগ এবং স্বচ্ছতা বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং আদিবাসী সন্তানদের বেড়ে উঠতে ও তাদের সক্ষমতা বাড়াতে নতুন সুযোগ-সুবিধা সম্প্রসারিত হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন বনবন্ধু কল্যাণ যোজনার গুজরাট সরকার ১ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি খরচ করেছে। বর্তমানে এই প্রকল্পের দ্বিতীয় ধাপে গুজরাট সরকার আরো ১ লক্ষ কোটি টাকার বেশি খরচ করছে। এরফলে আদিবাসী সন্তানদের জন্য অনেক নতুন বিদ্যালয়, নতুন হোস্টেল, নতুন মেডিকেল কলেজ এবং নার্সিং কলেজ গড়ে উঠবে। তিনি বলেন, “এই প্রকল্পের অধীন আদিবাসীদের জন্য আড়াই লক্ষেরও বেশি বাড়ি তৈরি করা হবে। গত কয়েক বছরে ৬ লক্ষেরও বেশি বাড়ি তৈরি করা হয়েছে এবং আদিবাসী এলাকায় প্রায় ১ লক্ষ আদিবাসী পরিবারকে জমি লিজ দেওয়া হয়েছে।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের সংকল্প হল আদিবাসী সমাজকে সম্পূর্ণভাবে অপুষ্টি সমস্যা থেকে মুক্ত করা। এই কারণবশতই কেন্দ্রীয় সরকার বৃহ পোষণ অভিযান শুরু করেছে। এর মাধ্যমে প্রসবকালীন মায়েরা যাতে পুষ্টিকর খাবার খেতে পারেন সেজন্য ১ হাজার কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে।” মিশন ইন্দ্রধনুষের অধীন যে বৃহৎ অভিযান হাতে নেওয়া হয়েছে তার লক্ষ্য হল শিশু ও মায়েদের সঠিক সময়ে টিকাকরণ যাতে সুনিশ্চিত করা যায়। আড়াই বছরেরও বেশি হল সারা দেশজুড়ে গরিব মানুষদের বিনামূল্যে রেশন দেওয়া হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকার ৩ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি এই খাতে খরচ করছে। এ পর্যন্ত দেশে মায়েরা এবং বোনেরা ধোঁয়া জনিত রোগ থেকে যাতে মুক্ত হতে পারেন এজন্য দেশে প্রায় ১০ কোটি নিখরচায় গ্যাস সংযোগ দেওয়া হয়েছে। আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের অধীন কয়েক লক্ষ আদিবাসী পরিবার বছরে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনা পয়সায় চিকিৎসার সুযোগ পাচ্ছেন।

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে ইতিহাসে আদিবাসী সম্প্রদায়ের বিস্মৃত গৌরবজ্জ্বল ভূমিকাকে রক্ষা করতে সরকার পুনরুদ্ধার করছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আদিবাসী সম্প্রদায়ের খুব সমৃদ্ধ পরম্পরা রয়েছে। তিনি বলেন, “এই প্রথম দেশ ১৫ নভেম্বর ভগবান বীরসা মুন্ডার জন্মজয়ন্তীকে আদিবাসী গৌরব দিবস হিসেবে উদযাপন করছে।” তিনি আরো বলেন, আদিবাসী স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ভূমিকাকে সংরক্ষণ করা হচ্ছে এবং দেশজুড়ে বিভিন্ন মিউজিয়ামে তা তুলে দেওয়া হচ্ছে। তিনি স্মরণ করেন, আদিবাসী মন্ত্রক বলে একসময় কিছু ছিল না। অটলজির সরকারই প্রথম আদিবাসী মন্ত্রক প্রতিষ্ঠা করেন।

তিনি আরো বলেন, অটলজির সরকারের সময় গ্রাম সড়ক যোজনা শুরু হয় যা আদিবাসী এলাকায় প্রভূত কল্যাণ সাধন করেছে। তিনি বলেন, “আদিবাসীদের প্রতি অন্যায় অবসানের জন্য আমরা কাজ করেছি।” প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ৮ বছরে আদিবাসী কল্যাণে জড়িত বাজেট বরাদ্দ তিন গুণেরও বেশি বৃদ্ধি করা হয়েছে। এরফলে আদিবাসী যুবকদের জন্য কর্মসংস্থান এবং স্বনির্ভর ক্ষেত্রে সুযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “উন্নয়নের সহযোগিতাকে প্রতিনিয়ত শক্তিশালী করতে হবে। যুব সম্প্রদায়ের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ডবল ইঞ্জিন সরকারের কর্মপ্রয়াসের সঙ্গে সকলকে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।” প্রধানমন্ত্রী শেষ করেন এই বলে “সবকা প্রয়াসের মধ্য দিয়ে আমরা উন্নত গুজরাট এবং উন্নত ভারত গড়ে তুলবো।”

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল, মধ্যপ্রদেশের রাজ্যপাল মঙ্গুভাই প্যাটেল, সাংসদ শ্রী সি আর পাটিল, শ্রী কি সি প্যাটেল, শ্রী মনসুখ ভাসাভা, শ্রী প্রভুভাই ভাসাভা এবং গুজরাটের মন্ত্রীদের মধ্যে রুশিকেশ প্যাটেল, শ্রী নরেশ ভাই প্যাটেল, শ্রী মুকেশ ভাই প্যাটেল, শ্রী জগদীশ পাঞ্চাল এবং শ্রী জীতুভাই চৌধুরী।

PG/AB/NS


(Release ID: 1870026) Visitor Counter : 208