প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার সময় প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের বঙ্গানুবাদ
Posted On:
27 APR 2022 3:26PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ২৭ এপ্রিল, ২০২২
নমস্কার!
আমি সবার আগে তামিলনাড়ুর তাঞ্জাভুরে আজ যে দুর্ঘটনা ঘটেছে তা নিয়ে আমার শোক প্রকাশ করছি। যে নাগরিকদের মৃত্যু হয়েছে তাঁদের পরিবারকে আমি গভীর সমবেদনা জানাই। পীড়িত পরিবারগুলিকে যত দ্রুত সম্ভব আর্থিক সহায়তাও পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
বন্ধুগণ,
বিগত দুই বছর ধরে করোনা নিয়ে এটা আমাদের ২৪তম বৈঠক। করোনা মহামারীর সময় যেভাবে কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকারগুলি মিলেমিশে কাজ করেছে, তা করোনার বিরুদ্ধে দেশের লড়াইয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আমি সমস্ত মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীদের, সকল রাজ্য সরকার এবং সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের পাশাপাশি সকল করোনা ওয়ারিয়র্স বা যোদ্ধাদের প্রশংসা করছি।
বন্ধুগণ,
একটু আগেই কিছু রাজ্যে আবার করোনার ক্রমবর্ধমান সংক্রমণ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্য সচিব আমাদের সামনে বিস্তারিত প্রতিবেদন পেশ করেছেন। মাননীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীজিও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আমাদের সামনে রেখেছেন। পাশাপাশি, আপনাদের মধ্যে কয়েকজন মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীও বেশ কিছু জরুরি পয়েন্ট তুলে ধরে সবার সামনে তাঁদের বক্তব্য প্রস্তুত করেছেন। এই আলোচনা থেকে এটা স্পষ্ট যে করোনার সমস্যা এখনও সম্পূর্ণভাবে মেটেনি। ওমিক্রন এবং তার সাব-ভ্যারিয়েন্টগুলি কিভাবে জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে, তা আমরা ইউরোপের দেশগুলিতে দেখতে পাচ্ছি। বিগত কয়েক মাসে ইউরোপের কিছু দেশে এই সাব-ভ্যারিয়েন্টগুলির কারণে অনেক সার্জ বা বৃদ্ধি এসেছে। আমরা ভারতবাসীরা অনেক দেশের তুলনায় এখনও নিজেদেরকে ভালো অবস্থায় রাখতে পেরেছি, আর পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রেখেছি। এত কিছু সত্ত্বেও বিগত দুই সপ্তাহ ধরে যেভাবে কিছু রাজ্যে সংক্রমণের সংখ্যা বাড়ছে, তা থেকে আমাদের সতর্ক থাকার প্রয়োজন অনুভূত হচ্ছে। আমাদের কাছে কয়েক মাস আগে যে ঢেউ এসেছিল সেই ঢেউ থেকে আমরা অনেক কিছু শিখেছি। সমস্ত দেশবাসী ওমিক্রন ঢেউয়ের বিরুদ্ধে সাফল্যের সঙ্গে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পেরেছে। কোনরকমভাবে ভয় না পেয়ে, ঘাবড়ে না গিয়ে দেশবাসী এর মোকাবিলাও করেছে।
বন্ধুগণ,
দুই বছরের মধ্যে দেশে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো থেকে শুরু করে অক্সিজেন সরবরাহ পর্যন্ত করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সমস্ত সাজসরঞ্জামের সহজলভ্যতা নিয়ে অনেক কাজ হয়েছে। তৃতীয় ঢেউয়ে কোনও রাজ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার খবর আসেনি। এক্ষেত্রে আমাদের কোভিড টিকাকরণ অভিযান থেকেও অনেক সাহায্য পেয়েছি। দেশের প্রত্যেক রাজ্যে, প্রত্যেক জেলায়, প্রত্যেক ক্ষেত্রে – তা সে যে কোনও ভৌগোলিক পরিস্থিতি হোক না কেন, প্রায় প্রত্যেক মানুষের কাছেই টিকা পৌঁছে গেছে। প্রত্যেক ভারতবাসীর জন্য এটা গর্বের কথা যে আজ ভারতের ৯৬ শতাংশ বয়স্ক মানুষ করোনা টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন। ১৫ বছরের বেশি বয়সী প্রায় ৮৫ শতাংশ নাগরিক দ্বিতীয় ডোজও পেয়েছেন।
বন্ধুগণ,
আপনারাও বোঝেন, আর বিশ্বের অধিকাংশ বিশেষজ্ঞদের মত এটাই যে করোনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধের জন্য টিকা সবচাইতে বড় রক্ষাকবচ। আমাদের দেশে দীর্ঘ সময়ের পর স্কুলগুলি খুলেছে, ক্লাস শুরু হয়েছে। এক্ষেত্রে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় কোথাও না কোথাও অভিভাবক ও অভিভাবিকাদের চিন্তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিছু স্কুলে ছেলে-মেয়েদের সংক্রমিত হওয়ার ঘটনারও কিছু খবর আসছে। কিন্তু আনন্দের বিষয় হল, অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীরাও এখন দ্রুত টিকার রক্ষাকবচে সুরক্ষিত হয়ে উঠবে। মার্চ মাসে আমরা ১২ থেকে ১৪ বছর বয়সী কিশোর-কিশোরীদের টিকাকরণ শুরু করে দিয়েছিলাম আর গতকালই ৬ থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুদের জন্য কোভ্যাক্সিন টিকা প্রদানের অনুমতি পাওয়া গেছে। সমস্ত এলিজেবল বা উপযুক্ত শিশুকে যত দ্রুত সম্ভব টিকা দেওয়াই আমাদের অগ্রাধিকার। এর জন্য আগের মতো স্কুলগুলিতে বিশেষ অভিযানও চালানোর প্রয়োজন হবে। শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং মা-বাবারা যেন এই বিষয়ে সচেতন থাকেন, আমাদের তা সুনিশ্চিত করতে হবে। টিকার সুরক্ষাকবচ অর্জনের খাতিরে দেশের সমস্ত বয়স্কদের জন্য এখন প্রিকশন ডোজও দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষক-শিক্ষিকা, অভিভাবক-অভিভাবিকা এবং বাকি উপযুক্ত ব্যক্তিরাও এই প্রিকশন ডোজ নিতে পারেন। এক্ষেত্রেও আমাদের তাঁদেরকে সচেতন করে তুলতে হবে।
বন্ধুগণ,
করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের সময় আমরা প্রত্যেকদিন ৩ লক্ষেরও বেশি রোগীর দেখভাল করতে পেরেছি। আমাদের সমস্ত রাজ্যগুলিতে এই রোগীদেরকে সুশ্রুষা করা হয়েছে, আর বাকি সামাজিক ও আর্থিক কাজকর্মকেও গতি প্রদান করা হয়েছে। এই ভারসাম্য রক্ষার প্রক্রিয়া ভবিষ্যতেও আমাদের রণকৌশলের অংশ হয়ে ওঠা উচিৎ। এখন আমাদের বৈজ্ঞানিকরা এবং বিশেষজ্ঞরা জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিকে লাগাতার পর্যবেক্ষণ করে যাচ্ছেন। অনেক পরামর্শ নিয়ে আমাদের ‘প্রিএম্পটিভ’ বা ‘প্রোঅ্যাক্টিভ’ এবং ‘কালেক্টিভ’ অ্যাপ্রোচ নিয়ে কাজ করতে হবে। সংক্রমণের শুরুতেই একে থামানো আগেও আমাদের অগ্রাধিকার ছিল, আর এখনও সেটাই থাকা উচিৎ। আপনারা সবাই যে কথা উল্লেখ করেছেন – আমাদের সেই ‘টেস্ট, ট্র্যাক, ট্রিট’-এর রণকৌশলকেও ততটাই কার্যকর রূপে চালু রাখতে চাই। আজ করোনার যে স্থিতি তাতে এটা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় যে হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের মধ্যে আমাদের যে সিরিয়াস ইনফ্লুয়েঞ্জার কেসগুলিও রয়েছে তাদের ১০০ শতাংশ আরটিপিসিআর টেস্ট হোক। এতে যাঁরা পজিটিভ আসবেন, তাঁদের স্যাম্পেল জেনোম সিকোয়েন্সিং-এর জন্য অবশ্যই পাঠানো হোক। এ থেকে আমরা ভ্যারিয়েন্টসকে সময়ে সময়ে চিনতে পারব।
বন্ধুগণ,
আমাদের সার্বজনিক স্থানগুলিতে ‘কোভিড অ্যাপ্রোপ্রিয়েট বিহেভিয়ার’কে যথাযথভাবে প্রোমোট করতে হবে। পাশাপাশি, জনসাধারণের মনে যাতে কোনও অহেতুক ভয় ও-ভীতি না ছড়ায় সেটাও সুনিশ্চিত করতে হবে।
বন্ধুগণ,
আজকের এই আলোচনায় স্বাস্থ্য পরিকাঠামোকে উন্নত করার জন্য যে যে কাজ চলছে, তা নিয়েও কথা হয়েছে। পরিকাঠামো ক্ষেত্রে আপগ্রেডের কাজ যাতে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলতে থাকে তা সুনিশ্চিত করা উচিৎ। করোনার রোগীদের জন্য শয্যা, ভেন্টিলেটর্স এবং পিএসএ অক্সিজেন প্ল্যান্টের মতো সুবিধা সম্পর্কে আমরা অনেক ভালো পরিস্থিতিতে রয়েছি। কিন্তু এই সমস্ত সুবিধা যাতে কার্যকর থাকে - এটাই আমাদেরও সুনিশ্চিত করতে হবে, আর তাকে তদারকি করতে হবে। প্রত্যেকের দায়িত্ব ঠিকভাবে বুঝিয়ে ভাগ করে দিতে হবে যাতে কখনও প্রয়োজন পড়লে আমাদের সঙ্কট এসে ঘিরে ফেলতে না পারে। যাতে দ্রুত প্রতিরোধ গড়ে তোলা যায়। পাশাপাশি, যদি কোথাও কোনও গ্যাপ থাকে, তাহলে আমি অনুরোধ জানাতে চাই যে টপ লেভেলে তাকে ভেরিফাই করিয়ে নিন, সেই খামতি পূরণের চেষ্টা করুন। অনেকক’টি নতুন মেডিকেল কলেজ, জেলা হাসপাতাল গড়ে উঠেছে। এই সমস্ত স্থানে আমাদের নিজেদের মেডিকেল ইনফ্রাস্ট্রাকচারকেও স্কেল-আপ করতে হবে আর ম্যানপাওয়ারকেও স্কেল-আপ করাতে হবে। আমাদের রেসপন্স টাইম যেন ন্যূনতম হয় । আমার দৃঢ় বিশ্বাস, পারস্পরিক সহযোগিতা এবং বার্তালাপের মাধ্যমে আমরা লাগাতার ‘বেস্ট প্র্যাক্টিসেস’ ইভলভ করতে থাকব আর মজবুতভাবে করোনা মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াই লড়তে থাকব এবং এই সঙ্কট থেকে বেরিয়ে আসার পথগুলিও খুঁজতে থাকব।
বন্ধুগণ,
কো-অপারেটিভ ফেডারিলজম বা সমবায়মূলক যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থার যে ভাবনা আমাদের সংবিধানে ব্যক্ত করা হয়েছে তা নিয়ে যাত্রা শুরু করে ভারত করোনার বিরুদ্ধে অনেক মজবুতভাবে দীর্ঘ লড়াই লড়েছে। আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিগুলির কারণে, বাহ্যিক কারকগুলির কারণে দেশের আভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির ওপর যে প্রভাব পড়ে, কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকারগুলি মিলেমিশে তার মোকাবিলা করেছি, আর ভবিষ্যতেও করতেই হবে। কেন্দ্র এবং রাজ্যগুলি মিলেমিশে তার মোকাবিলা এখনও করে চলেছে, ভবিষ্যতেও করতে থাকবে। কেন্দ্র এবং রাজ্যগুলির যৌথ প্রয়াসেই আজ দেশে বড় বড় স্তরে স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নতিসাধন করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু বন্ধুরা, আজ এই আলাপ-আলোচনায় আমি আরও একটি পক্ষ মনে করাতে চাই। আজকের আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিতে ভারতের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করে তোলার জন্য অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তগুলিতে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারগুলির মধ্যে বোঝাপড়া আরও বাড়াতে হবে। তাদের মধ্যে সামঞ্জস্য রক্ষা করা আগের থেকে অনেক বেশি প্রয়োজনীয়। আপনারা সবাই এই বিষয়টির সঙ্গে পরিচিত যে আন্তর্জাতিক প্রেক্ষিতে যুদ্ধের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ফলে যেভাবে সরবরাহ শৃঙ্খল প্রভাবিত হয়েছে, আর এহেন প্রেক্ষিতে প্রতিদিন একের পর এক নতুন সমস্যা, মিলিত সমস্যার চাপ ক্রমবর্ধমান। এই সঙ্কট বিশ্বব্যাপী সঙ্কট, আর তা অনেক নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে এসেছে। এহেন সঙ্কটের সময় কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকারগুলির মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করে কো-অপারেটিভ ফেডারিলিজম-এর ভাবনাকে আরও বাড়িয়ে তোলা অনিবার্য হয়ে উঠেছে।
এখন আমি একটি ছোট্ট উদাহরণ দিতে চাই। যখন পেট্রোল ও ডিজেলের দাম নিয়ে একটি বিষয় আমাদের সবার সামনে রয়েছে। দেশবাসীর ওপর পেট্রোল ও ডিজেলের ক্রমবর্ধমান দামের বোঝা কম করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার এক্সাইজ ডিউটিও কম করেছে। বিগত নভেম্বর মাসে পেট্রোল ও ডিজেলের ওপর এক্সাইজ ডিউটি কমানো হয়েছিল। কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য সরকারগুলিকে অনুরোধ করেছিল যে তারাও যেন নিজেদের কর হ্রাস করে আর এই লাভ নাগরিকদের হস্তান্তরিত করে। এরপর কিছু রাজ্য কেন্দ্রীয় সরকারের এই ভাবনার অনুরূপ তাদের রাজ্যে কর কম করে দেয়, কিন্তু কিছু রাজ্য তা করেনি। এর ফলে পেট্রোল ও ডিজেলের দাম সেই রাজ্যগুলিতে এখনও অন্যান্যদের তুলনায় অনেক বেশি। এটা একভাবে এই রাজ্যগুলির জনগণের সঙ্গে অন্যায় করা হচ্ছে। পাশাপাশি, প্রতিবেশী রাজ্যগুলিরও লোকসান হচ্ছে। যে রাজ্য কর মকুব করছে তাদের রাজস্ব কম সংগ্রহ হচ্ছে। যেমন, যদি কর্ণাটক কর মকুব না করত তাহলে এই ছয় মাসে ৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি আরও রাজস্ব তারা পেত, গুজরাটও যদি কর মকুব না করত তাহলে এই ছয় মাসে তারাও অতিরিক্ত ৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা থেকে ৪ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব হিসেবে পেত। তবু কিছু রাজ্য তাদের নাগরিকদের যাতে কোনও সমস্যায় না পড়তে হয়, সেদিকে লক্ষ্য রেখে রাজ্যের চাপানো ভ্যাটের কর হ্রাস করেছে, ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছে। তেমনই গুজরাট আর কর্ণাটকের প্রতিবেশী রাজ্যগুলি কর না কমানোর ফলে এই ছয় মাসে ৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা থেকে শুরু ৫ হাজার থেকে ৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব অর্জন করেছে। যেমনটি আমরা জানি যে গত বছর নভেম্বর মাসে ভ্যাট কম করার কথা ছিল। আমি সমস্ত রাজ্যকে অনুরোধ জানিয়েছিলাম, কিন্তু অনেক রাজ্য তা করেনি। আমি এখানে কারোর সমালোচনা করছি না, আমি শুধু আপনাদের অনুরোধ জানাচ্ছি, আপনার রাজ্যের নাগরিকদের ভালোর জন্য প্রার্থনা করছি। এখন যেমন সেই সময়ে, ছয় মাস আগে কিছু রাজ্য আমার অনুরোধ শুনে কর মকুব করেছে আর কিছু রাজ্য তা মানেনি। এখন অনেক রাজ্য – যেমন মহারাষ্ট্র, পশ্চিমবঙ্গ, তেলেঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, কেরালা ও ঝাড়খণ্ডের মতো রাজ্যগুলি কোনও না কোনও কারণে আমার অনুরোধ মানেনি আর তাদের রাজ্যের নাগরিকদের ওপর সেই বোঝা বজায় রেখেছে। আমি একথা বলতে চাই না যে এই সময়ে এই রাজ্যগুলি কতটা টাকা করবাবদ সংগ্রহ করেছে! কিন্তু এখন আপনাদের কাছে আমার প্রার্থনা যে, দেশের হিতে আপনারা গত নভেম্বরে যা করা উচিৎ ছিল, ছয় মাস দেরি হয়ে গেছে, এখনও আপনারা নিজেদের রাজ্যের নাগরিকদের ভ্যাট কমিয়ে এর লাভ সুবিধাভোগীদের কাছে পৌঁছে দিন। আপনারা সবাই জানেন যে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে যে কর আসে তার ৪২ শতাংশ তো রাজ্যগুলির কাছেই চলে যায়। সমস্ত রাজ্যগুলির প্রতি আমার অনুরোধ যে বিশ্বব্যাপী সঙ্কটের এই সময়ে সমবায়মূলক যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থার ভাবনা নিয়ে এগিয়ে একটি টিম রূপে আমরা সবাই মিলে যেন কাজ করি। আমি অনেক বিষয়ে খুঁটিনাটি বলতে চাই না। যেমন ফার্টিলাইজার বা সার। আজ আমরা তো সারের ক্ষেত্রে বিশ্বের অনেক দেশের ওপর নির্ভরশীল। আর এখন গোটা বিশ্বই একটি অদ্ভূত সঙ্কটের মুখোমুখি, ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দাম ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। আমরা তো আর সেই বোঝা কৃষকদের মাথায় চাপাতে পারি না! তাই ক্রমাগত অনেকগুণ ভর্তুকি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবারও বলছি, আমরা কৃষকদের ওপর এই বোঝা চাপাতে চাই না, তাই কেন্দ্রীয় সরকারকেই সেই বোঝা বহন করতে হচ্ছে। এখন যখন এত বড় সঙ্কটের মোকাবিলা করতে হচ্ছে, সেই প্রেক্ষিতে আপনাদের সবাইকে অনুরোধ করছি, প্রার্থনা জানাচ্ছি যে আপনারা নিজেদের রাজ্য, নিজেদের প্রতিবেশী রাজ্য, সকল দেশবাসীর হিতে অন্ততঃ পেট্রল ডিজেলের দামে ভ্যাট হ্রাসের বিষয়টাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিন। আমি আরও একটি বিষয় নিয়ে বলতে চাই। তার আগে বলতে চাই, গত নভেম্বরে যা করতে হত তা আপনারা করেননি। সেজন্য বিগত ছয় মাসে কী হয়েছে? আজ চেন্নাইয়ে, তামিলনাড়ুতে পেট্রোল প্রায় ১১১ টাকার কাছে, জয়পুরে ১১৮ টাকারও বেশি, হায়দরাবাদে ১১৯ টাকারও বেশি, কলকাতায় ১১৫ টাকারও বেশি, মুম্বাইয়ে ১২০ টাকারও বেশি, আর যারা কর হ্রাস করেছে, মুম্বাইয়ের পার্শ্ববর্তী দমন ও দিউতে ১০২ টাকা দরে প্রতি লিটার পেট্রোল পাওয়া যাচ্ছে। মুম্বাইয়ে ১২০ টাকা আর পাশের রাজ্য দমন ও দিউতে ১০২ টাকা। একইভাবে, কলকাতায় ১১৫ টাকা, লক্ষ্ণৌতে ১০৫ টাকা, হায়দরাবাদে প্রায় ১২০ টাকার কাছাকাছি। জম্মুতে ১০৬ টাকা প্রতি লিটার পেট্রোল, জয়পুরে ১১৮ টাকা, গুয়াহাটিতে ১০৫ টাকা, গুরুগ্রামে ১০৫ টাকা, দেরাদুনে ১০৩ টাকা, দেখুন আমাদের ছোট রাজ্য উত্তরাখণ্ডের রাজধানী দেরাদুনে ১০৩ টাকা প্রতি লিটার। আমি আপনাদের অনুরোধ করছি যে, আপনারা ছয় মাস ধরে কর না কমিয়ে যে রাজস্ব সংগ্রহ করেছেন তা আপনাদের রাজ্যের উন্নয়নের কাজে লাগবে, কিন্তু এখন গোটা দেশের সঙ্গে আপনারা সহযোগিতা করুন। আপনাদের প্রতি আজ আমার এটি বিশেষ প্রার্থনা।
বন্ধুগণ,
আরও একটি বিষয় যা নিয়ে আমি আপনাদের সঙ্গে আজ কথা বলতে চাই। দেশের সর্বত্র দ্রুতগতিতে গরম বাড়ছে, অনেক জায়গায় তাপপ্রবাহ চলছে। সময়ের অনেক আগে অনেক গরম পড়েছে, আর এরকম সময়ে আমরা ভিন্ন ভিন্ন স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বাড়তে দেখছি। বিশেষ করে জঙ্গলে দাবানল, গুরুত্বপূর্ণ ভবনগুলিতে আগুন, হাসপাতালে আগুনের বেশ কিছু ঘটনা গত কয়েকদিনে হয়েছে। আমাদের সকলের মনে আছে সেই দিনগুলি কতো বেদনাদায়ক ছিল, যখন গত বছর বেশ কিছু হাসপাতালে আগুন লেগেছিল আর সেটি অত্যন্ত দুঃখজনক পরিস্থিতি ছিল। অনেক কঠিন সময় ছিল সেটা। অনেক মানুষকে ওই দুর্ঘটনাগুলিতে তাঁদের জীবন হারাতে হয়েছে। সেজন্য আমার সকল রাজ্যের প্রতি অনুরোধ যে এখন থেকে যেন আমরা বিশেষ করে হাসপাতালগুলির সেফটি অডিট করাই, নিরাপত্তার ব্যবস্থা যেন সুনির্দিষ্ট করি, আর অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে করি। এ ধরনের ঘটনাগুলি থেকে যাতে আমরা আমাদের হাসপাতালগুলি এবং রোগীদের বাঁচাতে পারি, এ ধরনের ঘটনা যেন হ্রাস পায়, আমাদের রেসপন্স টাইম যেন ন্যূনতম হয়, জিনিসপত্র ও জীবনহানি যেন না হয়, সেজন্য আমি আপনাদের অনুরোধ করব যে আপনারা আপনাদের টিমকে বিশেষভাবে এ কাজে লাগান আর খুব ভালোভাবে তদারকি করুন যাতে দেশের কোথাও কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে। আমাদের নিরীহ নাগরিকদের যেন জীবন হারাতে না হয়।
মাননীয় বন্ধুগণ,
আপনারা সবাই নিজেদের মূল্যবান সময় বের করে এসেছেন, সেজন্য আমি আরও একবার আপনাদের সবাইকে কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই, আর একথা জানাতে চাই যে,সর্বদাই আমি আপনাদের জন্য নিজেকে হাজির রাখি। যে কোনও সময়, যে কোনও প্রয়োজনীয় পরামর্শ যদি আপনারা এগিয়ে এসে আমাকে দেন, তাহলে আমার খুব ভালো লাগবে। আমি আরও একবার আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।
CG/SB/DM/
(Release ID: 1821498)
Visitor Counter : 160
Read this release in:
Malayalam
,
English
,
Urdu
,
Marathi
,
Hindi
,
Assamese
,
Manipuri
,
Punjabi
,
Gujarati
,
Odia
,
Tamil
,
Telugu
,
Kannada