প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

স্বাধীনতা সংগ্রামী শ্রী প্রহ্লাদজি প্যাটেলের ১১৫ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে গুজরাটের বেচারাজিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর বার্তা

Posted On: 04 APR 2022 10:30PM by PIB Kolkata

নতুন দিল্লি, ০৪ এপ্রিল, ২০২২

 

বেচারাজি বললেই মনে ভেসে ওঠে বহুছরা দেবীর পবিত্র তীর্থস্থান। বেচারাজির এই পুণ্যভূমি বহু সমাজসেবক ও দেশপ্রেমিকের জন্ম দিয়েছে। তেমনই এক সুপুত্র, স্বাধীনতা সংগ্রামী ও সমাজসেবক শ্রী প্রহ্লাদজি হরগোবনদাস প্যাটেলের ১১৫ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আমরা তাঁর গুণাবলী স্মরণ করার সুযোগ পেয়েছি। মা বহুছরার পুণ্যভূমিতে নবরাত্রির পবিত্র উৎসবের মধ্যে এই আয়োজন এক বিশেষ মাত্রা পেয়েছে। আমরা ভারতীয়রা আজ যখন ‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব’ উদযাপন করছি, তখন প্রহ্লাদভাইয়ের মতন এক দেশপ্রেমীকে স্মরণ করা আমাদের কাছে বিশেষ সৌভাগ্যের। 

প্রহ্লাদভাই আদতে সীতাপুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন, কিন্তু পরে তিনি বেচারাজিতে চলে আসেন। সারা রাজ্যে তিনি শেঠ লাটিওয়ালা নামে পরিচিত ছিলেন। তিনি যেন কৃষ্ণের ‘সানওয়ালিয়া শেঠ’ রূপে এই রাজ্যে এসেছিলেন এবং তাঁর উদার চিত্তে সমাজের সেবা করেছিলেন। সেই সময় আরও অনেক তরুণের মতো প্রহ্লাদভাইও গান্ধীজির আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে স্বাধীনতা আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। তাঁকে সবরমতি ও ইয়েরওয়াড়া জেলে কারারুদ্ধ করা হয়েছিল। তিনি যখন কারাবন্দী ছিলেন, তখন তাঁর বাবা মারা যান। কিন্তু প্রহ্লাদভাই ব্রিটিশ সরকারের কাছে মুচলেকা দিয়ে প্যারোলে মুক্তি পেতে চাননি। তাঁর বাবা-র শেষকৃত্য করেছিলেন তাঁর এক সম্পর্কিত ভাই। এইভাবেই তিনি পরিবারের আগে দেশের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়েছিলেন, ‘দেশ সবার আগে’ – এই ধারণার প্রতিমূর্তি ছিলেন তিনি। স্বাধীনতা সংগ্রামে তিনি সহিংস আন্দোলনের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন, বেশ কিছু বিপ্লবীকে তিনি বেচারাজিতে তিনি লুকিয়ে থাকতে সাহায্যও করেছিলেন। স্বাধীনতার পর তিনি সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের নির্দেশে ছোট ছোট রাজ্যগুলির একত্রীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন। ভারতের সঙ্গে দাসাদা, ভানোদ ও জয়নাবাদের মতো রাজ্যগুলির সংযুক্তিকরণে তাঁর সক্রিয় ভূমিকা ছিল। এমন দেশপ্রেমিকদের কথা যে দেশের ইতিহাসের বইতে বিশেষ পাওয়া যায় না, তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। 

প্রহ্লাদভাইয়ের মতো স্বাধীনতা সংগ্রামীদের বীরত্বগাথা নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়া আমাদের সকলের কর্তব্য। নতুন প্রজন্ম এ থেকে প্রেরণা পাবে। স্বাধীনতা সংগ্রামের শেষে স্বাধীন ভারতেও তিনি বিশ্রাম নেননি, নিজেকে নিমগ্ন রেখেছেন সমাজসেবায়। ১৯৫১ সালে, বিনোবা ভাবের ভূদান আন্দোলনে যোগ দিয়ে তিনি নিজে ২০০ বিঘা জমি দান করেন। ভূমিহীন মানুষের জন্য এক ‘ভূমিপুত্র’-এর এ এক অসাধারণ পদক্ষেপ ছিল। বোম্বে থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর গুজরাট রাজ্যের প্রথম নির্বাচনে তিনি চানাস্মা আসন থেকে লড়ে জিতেছিলেন। জন প্রতিনিধি হওয়ার পাশাপাশি তিনি হয়ে উঠেছিলেন সাধারণ মানুষের কণ্ঠস্বর। তিনি গোটা রাজ্যকে উন্নয়নের পথে নিয়ে গিয়েছিলেন। আমি যখন সঙ্ঘের হয়ে কাজ করতাম তখন আমাকে নানা জায়গায় যেতে হতো। আমার মনে পড়ে, মানুষজন প্রহ্লাদভাইকে স্মরণ করে বেচারাজিতে যেতে চাইতেন। প্রহ্লাদভাই সারা জীবন নিঃস্বার্থভাবে সমাজের কাজ করে গেছেন, তিনি ছিলেন গুজরাটের মহাজন ঐতিহ্যের যোগসূত্র। প্রহ্লাদভাই-এর কথা বলতে গিয়ে তাঁর স্ত্রী কাশী বা-র কথা না বললে এই স্মরণ অনুষ্ঠান অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। কাশী বা শুধু একজন আদর্শ গৃহিনীই ছিলেন না, কস্তুরবার মতোই তিনিও তাঁর স্বামীর পাশে দাঁড়িয়ে দৃঢ় সমর্থন ও সহযোগিতা জুগিয়েছিলেন। প্রহ্লাদভাই-এর গোটা জীবন, তাঁর কাজের পদ্ধতি, প্রতিকূল পরিস্থিতিও কাজ করার ইচ্ছা এবং তাঁর জীবনের প্রতিটি ছোট ছোট ঘটনা দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের অমূল্য দলিল। তাঁর কাজ ও সামাজিক অবদান নথিভুক্ত করা উচিত, যাতে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তা থেকে অনুপ্রেরণা পায়। সারা জীবন তিনি জনসেবা করে গেছেন, মৃত্যুর পরেও তিনি তাঁর চোখ দুটি দান করে যান। একবার ভেবে দেখুন, তাঁর এই সিদ্ধান্ত কতটা মহান ও প্রেরণাদায়ক ছিল। মনে রাখতে হবে, সেই সময় কিন্তু চক্ষুদান নিয়ে কোনো সচেতনতা গড়ে উঠেনি। 

গুজরাটের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উচিত রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এমন মহাপুরুষদের খুঁজে বের করা এবং তাঁদের অজানা কাহিনীগুলি লিখে বই প্রকাশ করা। তবেই ‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব’  প্রকৃত সার্থকতা পাবে। শ্রী প্রহ্লাদভাই ছিলেন দেশপ্রেম, নিষ্ঠা এবং কর্তব্যের ত্রিবেণী সঙ্গম। নতুন ভারত গড়তে গিয়ে আজ তাঁর আত্মত্যাগ থেকে আমাদের প্রেরণা নিতে হবে। সেটাই হবে তাঁর প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধাঞ্জলি। আমি প্রহ্লাদভাই এবং তাঁর অসাধারণ কাজের প্রতি মাথা নত করি। মা বহুছরার এই স্থানে তাঁকে এবং মা ভারতীর সেবকদের প্রণাম জানিয়ে আমি আমার বক্তব্য শেষ করছি।

ভারত মাতা কি জয়!

জয় জয় গারভি গুজরাট!

 

CG/SD/SKD/


(Release ID: 1814056) Visitor Counter : 133