প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে বাজেট পরবর্তী ওয়েবিনারে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

Posted On: 25 FEB 2022 11:57AM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ‘প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আত্মনির্ভরতা – পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান’ শীর্ষক বিষয়ে বাজেট পরবর্তী ওয়েবিনারে ভাষণ দিয়েছেন। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক এই ওয়েবিনারের আয়োজন করে। প্রধানমন্ত্রী বাজেট পরবর্তী পর্যায়ে যে ওয়েবিনারগুলিতে ভাষণ দিচ্ছেন, তার মধ্যে চতুর্থতম হ’ল এটি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আত্মনির্ভরতা – পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান’ শীর্ষক ওয়েবিনারের বিষয়-ভাবনা দেশের আবেগকেই তুলে ধরে। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আত্মনির্ভরতাকে শক্তিশালী করে তোলার জন্য সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এবারের বাজেটে তা স্পষ্ট হয়ে গেছে। দাসত্বের সময়কাল এবং স্বাধীনতার অব্যবহিত পরেও, ভারতে প্রতিরক্ষা উৎপাদন ব্যবস্থাপনা বেশ শক্তিশালী ছিল বলে স্মৃতিচারণ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধে ভারতে তৈরি অস্ত্র একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। তিনি জানান, “যদিও পরবর্তী সময়ে আমাদের এই দক্ষতা হ্রাস পেয়েছে, তবুও এটি দেখার যে ক্ষমতার দিক থেকে আমাদের কোনও খামতি ছিল না। তখনও ছিল না, এখনও নেই”।

প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাপনার আধুনিকীকরণ ও স্বাতন্ত্রের উপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী জানান, প্রতিপক্ষকে চমকে দেওয়ার মতো আশ্চর্য ক্ষমতা আমাদের রয়েছে। তিনি বলেন, “স্বতন্ত্রতা ও বিস্ময়কর ঘটনা তখনই ঘটতে পারে, যখন আপনার নিজের দেশে এই সরঞ্জামগুলি তৈরি হবে”। প্রধানমন্ত্রী জানান, এবারের বাজেটে দেশের অভ্যন্তরে গবেষণা, নক্‌শা ও উন্নয়ন থেকে উৎপাদন পর্যন্ত একটি ইকো ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার ব্লু প্রিন্ট রয়েছে। প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দ বাজেটের প্রায় ৭০ শতাংশ শুধু দেশীয় শিল্পের জন্য রাখা হয়েছে।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রক এখনও পর্যন্ত ২০০টিরও বেশি প্রতিরক্ষা প্ল্যাটফর্ম এবং সরঞ্জামের স্বদেশীকরণের তালিকা প্রকাশ করেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ঘোষণার পর দেশীয় অস্ত্র কেনার জন্য ৫৪ হাজার কোটি টাকা মূল্যের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সাড়ে চার লক্ষ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের যন্ত্রপাতি ক্রয় প্রক্রিয়া বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে।

দীর্ঘকাল ধরে অস্ত্রশস্ত্র কেনার বিষয় নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এর ফলে অনেক ক্ষেত্রে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যে, সেই অস্ত্রশস্ত্র সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সময় পুরনো হয়ে যেত। তিনি বলেন, এর একমাত্র সমাধানের পথ হ’ল – ‘আত্মনির্ভর ভারত’ এবং ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’। আত্মনির্ভরতার গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সশস্ত্র বাহিনীর চাহিদা ও প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেওয়া হয়েছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এটি তখনই সম্ভব, যখন আমরা এই সব ক্ষেত্রে আত্মনির্ভর হয়ে উঠব।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাইবার নিরাপত্তা এখন আর ডিজিটাল জগতে সীমাবদ্ধ নেই বরং এটি জাতীয় নিরাপত্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, “প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আমরা যত বেশি তথ্য প্রযুক্তিকে শক্তিশালী করে তুলবো, আমাদের নিরাপত্তার বিষয় তত বেশি সুনিশ্চিত হবে”।

অস্ত্রশস্ত্র তৈরির চুক্তির জন্য প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম নির্মাতাদের মধ্যে প্রতিযোগিতার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী জানান, প্রায়শই আর্থিক লেনদেন ও দুর্নীতির কথা উঠে আসে। এমনকি, অস্ত্রের গুণগতমান ও পছন্দের বিষয়ে অনেকের মধ্যেই বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছিল। তিনি বলেন, আত্মনির্ভর ভারত অভিযান এই সমস্যার মোকাবিলা করবে।  
দৃঢ় সংকল্পের সঙ্গে অগ্রগতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত প্রতিষ্ঠার জন্য অর্ডন্যান্স কারখানাগুলির প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি সন্তোষ প্রকাশ করে জানান যে, গত বছর ৭টি নতুন প্রতিরক্ষা উদ্যোগী সংস্থাকে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যারা দ্রুত তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণ করে চলেছে। তিনি আরও বলেন, “গত ৫-৬ বছরে আমরা প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে রপ্তানির পরিমাণ ছ’গুণ বাড়িয়েছি। আজ আমরা ৭৫টিরও বেশি দেশে মেড ইন ইন্ডিয়া প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম সরবরাহ এবং পরিষেবা দিচ্ছি”।

মেক ইন ইন্ডিয়া কর্মসূচিতে সরকারের উৎসাহের ফলস্বরূপ গত ৭ বছরে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদনের জন্য ৩৫০টিরও বেশি নতুন শিল্প সংস্থাকে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ২০০১ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত – এই ১৪ বছরে মাত্র ২০০টি সংস্থাকে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে যুক্ত রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা এবং ডিআরডিও-র অংশীদারিত্ব হয়ে বেসরকারি সংস্থাগুলিও কাজ করতে পারবে। সেই কারণেই প্রতিরক্ষা গবেষণা উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ বাজেটের ২৫ শতাংশ শিল্প সংস্থা, স্টার্টআপ এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির জন্য রাখা হয়েছে।

প্রতিরক্ষা শিল্পের বিকাশের জন্য পরীক্ষার স্বচ্ছ  ব্যবস্থাপনা, সময় সীমা, পরীক্ষা এবং শংসাপত্র অপরিহার্য বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এজন্য একটি স্বাধীন ব্যবস্থাপনার প্রয়োজন, যা ফলপ্রসূভাবে এই সমস্যার সমাধান করতে পারবে।

প্রধানমন্ত্রী বাজেটে যেসব সুযোগ-সুবিধা রাখা হয়েছে, তা যথাসময়ে বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট পক্ষকে নতুন চিন্তাভাবনা নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। সাম্প্রতিক সময়ে বাজেটের তারিখ একমাস এগিয়ে আসার সুফল পুরোপুরি সদ্ব্যবহারের জন্যও  জানান তিনি।

 

CG/SS/SB



(Release ID: 1801246) Visitor Counter : 169