প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

উত্তরপ্রদেশে সদগুরু সদাফলদেও বিহঙ্গম যোগ সংস্থানের ৯৮তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

Posted On: 14 DEC 2021 6:52PM by PIB Kolkata

নতুন দিল্লি, ১৪ই ডিসেম্বর, ২০২১

 

হর হর মহাদেব!

শ্রী সদগুরু চরণ কমলেভ্যো নমঃ

মঞ্চে উপস্থিত উত্তর প্রদেশের রাজ্যপাল শ্রীমতী আনন্দিবেন প্যাটেলজি, উত্তর প্রদেশের প্রাণশক্তিতে পরিপূর্ণ কর্মযোগী মুখ্যমন্ত্রী শ্রী যোগী আদিত্যনাথজি, সদগুরু আচার্য শ্রী স্বতন্ত্রদেওজি মহারাজ, সন্ন্যাসী প্রবর শ্রী বিজ্ঞানদেওজি মহারাজ, আমার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্য এবং এই এলাকার সাংসদ শ্রী মহেন্দ্রনাথ পান্ডেজি, এখানকার স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং আপনাদের প্রিয় বিধায়ক ও যোগীজি সরকারের মন্ত্রী শ্রী অনিলরাজভরজি, দেশ – বিদেশ থেকে সমাগত সমস্ত সাধক এবং ভক্তগণ,

ভাই ও বোনেরা,

সমস্ত উপস্থিত বন্ধুগণ!

কাশীর প্রাণশক্তি তো অক্ষুন্ন আছেই। এটি নিত্য নতুন বিস্তার লাভ করছে। গতকাল কাশী অনিন্দ্যসুন্দর ‘বিশ্বনাথ ধাম’ মহাদেবের চরণে অর্পণ করেছে। আর আজ ‘বিহঙ্গম যোগ সংস্থান’ –এর এই অদ্ভুৎ আয়োজন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই দিব্য ভূমিতে ঈশ্বর নিজের অনেক ইচ্ছা পূরণের জন্য সাধুদেরকেই নিমিত্ত করে তোলেন। আর যখন সন্ন্যাসীদের সাধনা পূণ্যফল অর্জন করে, তখন অনন্দময় সংযোগও একের পর এক রচিত হতে থাকে।

আজ আমরা দেখছি, অখিল ভারতীয় বিহঙ্গম যোগ সংস্থানের ৯৮তম বার্ষিক উৎসব, স্বাধীনতা আন্দোলনে সদগুরু সদাফলদেওজির কারাগার যাত্রার শততম বর্ষ, আর দেশের স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব। আমরা সবাই, এই সব কিছুর, একসঙ্গে এতো কিছুর সাক্ষী হয়ে উঠছি। এই সকল সংযোগের পাশাপাশি আজ গীতা জয়ন্তীরও পুণ্য অবসর। আজকের দিনেই কুরুক্ষেত্র যুদ্ধভূমিতে যখন সেনারা মুখোমুখি দাঁড়িয়ে ছিলেন, মানবতা তখন যোগ, আধ্যাত্ম এবং পরমার্থের পরম জ্ঞান পেয়েছিল। আমি এই উপলক্ষ্যে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের চরণে প্রণাম করে আপনাদের সবাইকে এবং সকল দেশবাসীকে গীতা জয়ন্তীর আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই।

ভাই ও বোনেরা,

সদগুরু সদাফলদেওজির সমাজের জাগরণের জন্য, ‘বিহঙ্গম যোগ’ –কে প্রত্যেক মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য যজ্ঞ করেছিলেন। আজ সেই সংকল্প বীজ আমাদের সামনে এতো বড় বটবৃক্ষরূপে দাঁড়িয়ে আছে। আজ ৫১০১টি যজ্ঞকুন্ডকে বিশ্ব শান্তি বৈদিক মহাযজ্ঞরূপে এতো বড় সহ যোগাসন প্রশিক্ষণ শিবির রূপে, এতো গুলি সেবা প্রকল্পরূপে, আর লক্ষ লক্ষ সাধকদের এই বিশাল পরিবার রূপে আমরা সেই সাধু সংকল্পের সিদ্ধিকে অনুভব করছি।

আমি সদগুরু সদাফলদেওজিকে প্রণাম জানাই। তাঁর আধ্যাত্মিক উপস্থিতিকে প্রণাম জানাই। আমি শ্রী স্বতন্ত্রদেও মহারাজ এবং শ্রী বিজ্ঞানদেও মহারাজকেও কৃতজ্ঞতা ব্যক্ত করতে চাই, যাঁরা এই পরম্পরাকে সজীব করে রেখেছেন, সঞ্জীবিত রেখেছেন, নতুন বিস্তার দিচ্ছেন আর এভাবেই আজ একটি অনিন্দ্য সুন্দর আধ্যাত্মিক ভূমির নির্মাণ হচ্ছে। আমার এটি দেখার সুযোগ হয়েছে। যখন এটির কাজ সম্পূর্ণ হবে, তখন শুধুই কাশীর জন্য নয়, ভারতের জন্য একটি অনেক বড় নজরানা বা উপহার হয়ে উঠবে।

বন্ধুগণ,

আমাদের দেশ এতো অদ্ভুৎ যে এখানে যখনই সময় প্রতিকূল হয়, তখন কোনও না কোনও সাধু মহাপুরুষ সময়ের ধারাকে মুড়ে মানবতার অনুকূল করে তোলেন। এটাই সেই ভারত যার স্বাধীনতা সংগ্রামের সবচাইতে বড় নায়ককে বিশ্ববাসী ‘মহাত্মা’ বলে ডাকে। এটি সেই ভারত, যেখানে স্বাধীনতার রাজনৈতিক আন্দোলনের মধ্যেই আধ্যাত্মিক চেতনা ক্রমাগত প্রবাহিত হতে থাকে। আর এই ভারতই হল এমন দেশ, যেখানে সাধকদের প্রতিষ্ঠান নিজেদের বর্ষপূর্তি উৎসবকে স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবরূপে পালন করছে।

বন্ধুগণ,

এখানে প্রত্যেক সাধক গৌরবান্নিত। কারণ তাদের প্রত্যক্ষ গুরুদেব স্বাধীনতা সংগ্রামকে পথ দেখিয়ে ছিলেন। আর অসহযোগ আন্দোলনে জেল যাওয়ার আগেকার ব্যক্তিদের মধ্যে সন্ন্যাসী সদাফলদেওজিও ছিলেন। জেলেই তিনি ‘স্বর্বেদ’ ভাবনাগুলি মন্থন করেন। জেল থেকে বেরিয়ে আসার পর তিনি একে মূর্ত স্বরূপ দেন।

বন্ধুগণ,

কয়েকশো বছরের ইতিহাসে আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের এমন কত না দিক রয়েছে, যেগুলি দেশকে একতার সূত্রে বেধে রেখেছে। এরকম কত না সন্ন্যাসী ছিলেন, যাঁরা আধ্যাত্মিক তপস্যা ছেড়ে স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছেন। আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের এই আধ্যাত্মিক ধারা সম্পর্কে ইতিহাসে তেমন ভাবে লেখা হয় নি, যেভাবে লেখা উচিত ছিল। আজ যখন আমরা স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব পালন করছি, তখন এই ধারাকে সামনে নিয়ে আসা আমাদের দায়িত্ব। সেজন্যে আজ দেশ স্বাধীনতার যুদ্ধে এর তৎকালীন গুরুদেব সন্ন্যাসী এবং তপস্বীদের অবদানকে স্মরণ করছে। আর নতুন প্রজন্মকে তাঁদের অবদান সম্পর্কে পরিচিত করাচ্ছে। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে এই ‘বিহঙ্গম যোগ সংস্থান’ও এক্ষেত্রে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে।

বন্ধুগণ,

ভবিষ্যতের ভারতকে সুদৃঢ় করার জন্য নিজেদের পরম্পরা, নিজের জ্ঞান – দর্শণের বিস্তার আজ সময়ের চাহিদা। এই সিদ্ধির জন্য কাশীর মতো আমাদের আধ্যাত্মিক এবং সাংস্কৃতিক কেন্দ্র একটি কার্যকর মাধ্যম হয়ে উঠতে পারে। আমাদের সভ্যতার এই প্রাচীন শহর গোটা বিশ্বকে পথ দেখাতে পারে। বেনারসের মতো শহরগুলি কঠিন থেকে কঠিনতর সময়েও ভারতের পরিচয়ের, কলা সংস্কৃতির, শিল্পদ্যোগের বীজগুলিকে সংরক্ষিত করে রেখেছে। যেখানে বীজ থাকে, বৃক্ষ সেখান থেকেই বিস্তার লাভ করতে শুরু করে। আর এজন্য আমরা যখন বেনারসের উন্নয়নের কথা বলি, তখন এ থেকে সম্পূর্ণ ভারতের উন্নয়নের রোডম্যাপও রচিত হয়ে যায়।

ভাই ও বোনেরা,

আজ আপনারা লক্ষ লক্ষ মানুষ এখানে উপস্থিত হয়েছেন, আপনারা ভিন্ন ভিন্ন রাজ্য থেকে, ভিন্ন ভিন্ন স্থান থেকে এসেছেন। আপনারা কাশীতে নিজেদের শ্রদ্ধা, নিজেদের বিশ্বাস, নিজেদের প্রাণশক্তি, আর তার সঙ্গে অসীম সম্ভাবনাময় কত কিছু নিয়ে এসেছেন। আপনারা যখন কাশী থেকে যাবেন, তখন নতুন সংকল্প, এখানকার আর্শীবাদ, এখানকার অভিজ্ঞতা - কত কিছু সঙ্গে নিয়ে যাবেন। কিন্তু সেই দিনটির কথা মনে করুন, যখন আপনারা এখানে আসতেন, তখন কী পরিস্থিতি ছিল। যে স্থান এতটাই পবিত্র তার খারাপ অবস্থা জনগণকে  নিরাশ করতো। কিন্তু আজ সেই পরিস্থিতি বদলাচ্ছে। আজ যখন দেশ – বিদেশ থেকে মানুষ আসেন, তখন বিমান বন্দর থেকে বেরোতেই তাঁদের মনে হয় অনেক কিছু বদলেছে। বিমান বন্দর থেকে সরাসরি শহরে আসতে এখন ততটা দেরী লাগে না। রিং রোডের কাজও কাশী রেকর্ড সময়ে সম্পূর্ণ করেছে। বড় ও ভারী যানবাহন এবং বাইরের সব গাড়ি এখন বাইরে বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যায়। বেনারসগামী অনেক সড়ক পথও এখন প্রশস্ত করা হয়েছে। যাঁরা সড়ক পথে বেনারস আসেন, তাঁরা এখন এই সুবিধা কত বেশি পাচ্ছেন, এটা আমরা খুব ভালোভাবেই বুঝি।

এখানে আসার পর আপনারা কেউ হয়তো বাবা বিশ্বনাথকে দর্শন করতে যাবেন, কেউ বা গঙ্গার ঘাটে যাবেন, প্রত্যেক জায়গায় কাশীর মহিমার অনুরূপ আভা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কাশীতে বিদ্যুতের তারের জঞ্জালকে মাটির তলা দিয়ে বিছানোর কাজ চলছে। লক্ষ লক্ষ লিটার পয়ঃপ্রণালীর জলকে পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তোলা হচ্ছে। এই উন্নয়নের দ্বারা এখানকার আস্থা, আধ্যাত্মিকতা এবং পর্যটনের পাশাপাশি এখানকার কলা, সংস্কৃতিও লাভবান হচ্ছে।

ট্রেড ফেসিলিটেশন সেন্টার থেকে শুরু করে রুদ্রাক্ষ কনভেনশন সেন্টার কিংবা তাঁতি কারিগরদের জন্য যে কর্মসূচিগুলি চালু করা হয়েছে, সেগুলিও আজ কাশীর দক্ষতাকে নতুন শক্তি যোগাচ্ছে। স্বাস্থ্যক্ষেত্রেও আধুনিক পরিষেবাগুলি আরো পরিকাঠামোর কারণে বেনারস একটি বড় মেডিকেল হাব হয়ে উঠে আসছে।

বন্ধুগণ,

আমি যখন কাশীতে আসি, কিংবা যখন দিল্লিতে থাকি, তখন বেনারসেই নির্মীয়মাণ উন্নয়ন কর্মসূচিগুলিকে গতি প্রদান করি। গতকাল রাত ১২টা ৩০ মিনিটের পর এই সুযোগ পেয়েছি। আমি তারপর বেরিয়ে পড়েছিলাম, আমরা কাশীতে যে কাজগুলি চলছে, যে কাজগুলি করা হচ্ছে, সেগুলি দেখার জন্য বেরিয়ে পড়েছিলাম। গৌদুলিয়াতে যে সৌন্দর্যায়নের কাজ হয়েছে, তা প্রকৃত পক্ষে দেখার যোগ্য। সেখানে কত না মানুষের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আমি মডুয়াডিহতে বেনারস রেলওয়ে স্টেশনও দেখেছি। এই স্টেশনেরও এখন পুনর্নবিকরণ হয়ে গেছে। পুরাতনকে সঙ্গে নিয়ে নবীনতাকে ধারণ করা বেনারস শহরকে আজ নতুন দিশা দেখাচ্ছে।

বন্ধুগণ,

এই উন্নয়নের ইতিবাচক প্রভাব বেনারসের পাশাপাশি এখানে আসা পর্যটকদের উপরও পড়ছে। আমরা যদি ২০১৯ – ২০র কথা বলি, তাহলে ২০১৪ – ১৫র তুলনায় এখানে আসা পর্যটকদের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। ২০১৯ – ২০তে করোনার সময়কালে শুধু বাবতপুর বিমান বন্দর থেকেই ৩০ লক্ষেরও বেশি যাত্রী আসা – যাওয়া করেছেন। এই পরিবর্তনের মাধ্যমে কাশী এটা দেখিয়েছে যে, ইচ্ছাশক্তি থাকলে আরও পরিবর্তন আসতে পারে!

এই পরিবর্তন আজ আমাদের অন্যান্য তীর্থস্থানেও দেখা যাচ্ছে। কেদারনাথ, যেখানে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। ২০১৩র চরম বিপর্যয়ের পর সেখানে মানুষের যাতায়াত করে গিয়েছিল। কিন্তু এখন সেখানেও রেকর্ড সংখ্যক ভক্তরা পৌঁছচ্ছেন। এর ফলে উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থানের অনেক অসীম অবসর গড়ে উঠছে। যুব-সম্প্রদায়ের স্বপ্নগুলিতে আরো শক্তি সঞ্চার হচ্ছে। এই বিশ্বাস আজ গোটা দেশে দেখা যাচ্ছে। এই গতিতে আজ দেশ উন্নয়নের নতুন নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে।

সদগুরু সদাফলদেওজি তাঁর রচিত স্বর্বেদ-এ বলেছেন,

‘দয়া করে সব জীব পর, নীচ উচ নেহি জান।

দেখে অন্তর আত্মা, ত্যাগ দেহ অভিমান।।’

অর্থাৎ সবার সঙ্গে প্রীতি, সবার প্রতি করুণা, উঁচু, নিচু বৈষম্য থেকে মুক্তি – এটাইতো আজ দেশের প্রেরণা। আজ দেশের মন্ত্র হল ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস’। আমি আমার স্বার্থ থেকে উপরে উঠে আজ দেশ ‘সবকা প্রয়াস’ এই সংকল্প নিয়ে এগিয়ে চলেছে।

বন্ধুগণ,

স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় সদগুরু আমাদের মন্ত্র দিয়েছিলেন স্বদেশী আন্দোলনের। আজ সেই ভাব নিয়ে দেশ ‘আত্মনির্ভর ভারত মিশন’ শুরু করেছে। আজ দেশের স্থানীয় ব্যবসা – বাণিজ্য, রোজগারকে, উৎপাদিত পণ্যকে শক্তি যোগাচ্ছে। লোকাল কে গ্লোবালে রূপান্তরিত করা হচ্ছে। সদগুরু আমাদের স্বর্বেদে যোগ এবং বিহঙ্গম যোগের পথও দিয়েছিলেন। তাঁর স্বপ্ন ছিল যে যোগকে প্রত্যেক মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। আর ভারতের যোগ শক্তি গোটা বিশ্বে স্বীকৃতি পাক। আজ যখন আমরা গোটা বিশ্বকে যোগ দিবস পালন করতে দেখি, যোগের অনুসরণ করতে দেখি, তখন আমাদের মনে হয়, যে সদগুরুর আর্শীবাদ বাস্তবে ফলছে।

বন্ধুগণ,

আজ স্বাধীনতার অমৃতকালে ভারতের জন্য ‘স্বরাজ’ যতটা গুরুত্বপূর্ণ, তার চাইতেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হল সুশাসন। এই দুইয়ের পথ ভারতীয় জ্ঞান – বিজ্ঞান, জীবনশৈলী এবং পদ্ধতি থেকেই বেরিয়ে আসবে। আমি জানি যে, বিহঙ্গম যোগ সংস্থান অনেক বছর ধরে এই ভাবনাকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে। আপনাদের আদর্শ বাক্য হল ‘গাভো বিশ্বস্ব মাতরঃ’! গোমাতার সঙ্গে এই সম্পর্ককে সুদৃঢ় করার জন্য, গোধনকে আমাদের গ্রামীণ অর্থনীতির একটি স্তম্ভ করে তোলার জন্য দেশে অনেক প্রচেষ্টা চলছে।

বন্ধুগণ,

আমাদের গোধন যাতে আমাদের কৃষকদের জন্য কেবল দুধের উৎস হয়েই না থেকে যায়! আমাদের চেষ্টা থাকতে হবে, যাতে গোবংশ দেশের প্রগতির অন্যান্য মাত্রাকেও পুষ্ট করে। আজ গোটা বিশ্ব স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন হচ্ছে। রাসায়নিক ছেড়ে বিশ্ববাসী জৈব চাষের দিকে ফিরে আসছে। আমাদের দেশে গোবর কখনও জৈব চাষের মূল উপাদান ছিল। গোবর শুকিয়ে তৈরি করা ঘুটে আমাদের জ্বালানীর প্রয়োজনও পূরণ করতো। আজ দেশ গোবর – ধন যোজনার মাধ্যমে বায়োফুয়েল বা জৈব জ্বালানীকে উৎসাহ যোগাচ্ছে, জৈব চাষকে উৎসাহ যোগাচ্ছে। আর এসবের মাধ্যমে এক দিক থেকে পরিবেশের সুরক্ষাও সুনিশ্চিত হচ্ছে।

আজ থেকে দু - দিন পর ১৬ তারিখে জিরো বাজেট ন্যাচারাল ফার্মিং নিয়ে একটি জাতীয় কর্মসূচিও হতে চলেছে। এতে গোটা দেশের কৃষকরা জুড়বেন। আমি চাইবো যে আপনারা সবাইও ১৬ই ডিসেম্বরে প্রাকৃতিক চাষবাস সম্পর্কে  যত বেশি সম্ভব তথ্য জোগাড় করুন এবং কৃষকদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে বলুন, এটা এমন একটা মিশন, যা নিয়ে গণ আন্দোলন হওয়া উচিত। আর এর মাধ্যমে আপনারা সবাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন।

বন্ধুগণ,

স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবে দেশ অনেক সংকল্প নিয়ে কাজ করছে। বিহঙ্গম যোগ সংস্থান, সদগুরু সদাফলদেওজির নির্দেশ পালন করে দীর্ঘকাল ধরেই সমাজ কল্যাণের কত না অভিযান চালাচ্ছে। আজ থেকে ২ বছর পর আপনাদের মতো সমস্ত সাধকরা এখানে শততম অধিবেশনের জন্য একত্রিত হবেন। ২ বছর অত্যন্ত উত্তম সময়।

একথা মাথায় রেখে আজ আপনাদের সবাইকে একটি সংকল্প গ্রহণের অনুরোধ জানাতে চাই। এই সংকল্প এমনটি হওয়া চাই যাতে সদগুরুর সংকল্পগুলি সিদ্ধি পায়, আর যাতে দেশের মনোরথ সামিল হয়। এটি এমন সংকল্প হয়ে উঠতে পারে, যাকে আগামী ২ বছরে গতি দিয়ে মিলে মিশে সম্পন্ন করা যেতে পারে।

যেমন একটি সংকল্প হতে পারে – আমাদের মেয়েদের পড়াতে হবে, আমাদের মেয়েদের দক্ষতা উন্নয়নের জন্যেও তৈরি করতে হবে। নিজের পরিবারের পাশাপাশি যারা সমাজে দায়িত্ব নির্বাহে সক্ষম তারা এক – দুজন গরীব কন্যার দক্ষতা উন্নয়নের দায়িত্ব পালন করুন।

আরেকটি সংকল্প হতে পারে জল সাশ্রয়ের। আমাদের নিজেদের নদীগুলিকে গঙ্গাজিকে এবং সমস্ত জলের উৎসকে পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। এর জন্যে আপনাদের প্রতিষ্ঠানও নতুন অভিযান শুরু করতে পারে। যেমনটি আমি আগে বলেছি, দেশ আজ প্রাকৃতিক চাষকেও গুরুত্ব দিচ্ছে। এর জন্য লক্ষ লক্ষ কৃষকভাই ও বোনকে প্রেরণা যোগানোর ক্ষেত্রে আপনারা সবাই অনেক বড় সাহায্য করতে পারেন।

আমাদের নিজেদের চারপাশে সাফাই – পরিচ্ছন্নতার দিকেও বিশেষ লক্ষ্য রাখতে হবে। যে কোনো সরকারি জায়গায় যাতে নোংরা না ফেলা হয়, সে দিকে লক্ষ্য থাকে ও পরমাত্মার নামে আপনাদের কোনো না কোনো সেবার মাধ্যমে একাজ অবশ্যই করতে হবে। এর দ্বারা গোটা সমাজ উপকৃত হবে।

আমার দৃঢ় বিশ্বাস, এই পবিত্র অবসরে সন্ন্যাসীদের আর্শীবাদে এই সংকল্প অবশ্যই বাস্তবায়িত হবে। আর নতুন ভারতের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে সহযোগিতা করবে।

এই বিশ্বাস নিয়েই আপনাদের সকলকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

পুজনীয় স্বামীজির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ যে তিনি এই গুরুত্বপূর্ণ পবিত্র উপলক্ষ্যে আমারও আপনাদের সকলের মধ্যে আশার অনেক সুযোগ পেয়েছি। এই পবিত্র স্থানের দর্শনের সৌভাগ্য হয়েছে। আমি আরেক বার সবাইকে কৃতজ্ঞতা জানাই।

হর হর মহাদেব!

অনেক অনেক ধন্যবাদ।

 

CG/SB/SFS



(Release ID: 1784208) Visitor Counter : 180