কেন্দ্রীয়মন্ত্রিসভা
azadi ka amrit mahotsav

২০২৫-২৬ পর্যন্ত স্বচ্ছ ভারত মিশন (শহরাঞ্চল) (এসবিএম ইউ) প্রকল্পের ফলাফল স্থিতিশীল রাখার জন্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অনুমোদন


এসবিএম-ইউ ২.০-র জন্য ১,৪১,৬০০ কোটি টাকার অর্থ বরাদ্দ, এই প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের থেকে যা আড়াইগুণ বেশি

এসবিএম-ইউ ২.০-র উদ্দেশ্য হলো সম্পূর্ণ খোলা স্থানে শৌচকর্ম মুক্ত, এছাড়াও যেসব শহরের জনসংখ্যা ১ লক্ষের কম সেখানে মল কাদা ব্যবস্থাপনার সূচনা

নর্দমা ও সেপ্টিক ট্যাঙ্কে বিপজ্জনকভাবে ঢুকে পরিষ্কার করার পদ্ধতি বন্ধ করা

জলাশয়গুলিকে দূষিত না করার জন্য বর্জ্য জলের শোধন

প্রতিটি শহরকে ন্যূনতম থ্রি স্টার বর্জ্য মুক্ত শংসাপত্র পেতে হবে

Posted On: 12 OCT 2021 8:37PM by PIB Kolkata

নতুন দিল্লি,  ১২ অক্টোবর, ২০২১

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরোহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে স্বচ্ছ ভারত মিশন (শহরাঞ্চল) ২০২৫-২৬ সাল পর্যন্ত অব্যাহত রাখার প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। খোলা স্থানে শৌচকর্ম মুক্ত, সমস্ত শহরে কঠিন বর্জ্যের বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়াকরণ এবং  ২০২১-এর আদমসুমারি অনুযায়ী যেসব শহরে ১ লক্ষের কম মানুষ বসবাস করেন সেখানে বর্জ্য জলের শোধনের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তবে, অটল মিশন ফর রেজুভেনেশন অ্যান্ড আরবান ট্রান্সফারমেশন বা অমরুত প্রকল্পের আওতাভুক্ত শহর এই তালিকার অন্তর্ভুক্ত নয়।

এসবিএম-ইউ ২.০-এর জন্য আর্থিক বরাদ্দ –

এসবিএম-ইউ ২.০-র জন্য ১,৪১,৬০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ২০২১-২২ থেকে ২০২৫-২৬ সময়কালে কেন্দ্র এই প্রকল্পে ৩৬,৪৬৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করবে। আগের প্রকল্পের থেকে যা আড়াইগুণ বেশি।

কেন্দ্র এবং রাজ্যগুলির মধ্যে অর্থ বরাদ্দের অনুপাত

যেসব শহরে ১০ লক্ষের বেশি মানুষ বসবাস করেন, সেখানে কেন্দ্র ২৫ শতাংশ এবং রাজ্য ৭৫ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ করবে।

যেসব শহরে ১ লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ মানুষ বসবাস করেন, সেখানে কেন্দ্র ৩৩ শতাংশ এবং রাজ্য ৬৭ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ করবে।

যেসব শহরে ১ লক্ষের কম মানুষ বসবাস করেন, সেখানে কেন্দ্র ৫০ শতাংশ এবং রাজ্য ৫০ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ করবে।

যেসব কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিধানসভা নেই সেখানে ১০০ শতাংশ অর্থই কেন্দ্র দেবে।

যেসব কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিধানসভা রয়েছে সেখানে কেন্দ্র ৮০ শতাংশ এবং সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ২০ শতাংশ  ব্যয়ভার বহন করবে।

স্বচ্ছ ভারত মিশন – শহরাঞ্চল ২.০-র জন্য প্রত্যাশিত ফলাফল –

পয়ঃ নিকাশি ব্যবস্থা –

১) বিধিবদ্ধ প্রতিটি শহরকে খোলা স্থানে শৌচকর্ম মুক্ত হতে হবে।

২) যেসব শহরের জনসংখ্যা ১ লক্ষের কম সেগুলিকে খোলা স্থানে শৌচকর্ম মুক্ত করতে হবে।

৩) নিকাশি জলের যথাযথ শোধন করতে হবে। সেগুলিকে পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তুলতে হবে। কোনো জলাশয়ে যাতে অপরিশোধিত জল জমা না হয় সেটি নিশ্চিত করতে হবে।

কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা –

প্রতিটি শহরকে থ্রি স্টার বর্জ্য মুক্ত শংসাপত্র পেতে হবে।

আগামী ৫ বছর এসবিএম-ইউ ২.০-র মূল উদ্দেশ্য হলো স্থিতিশীল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা। পয়লা আগস্ট প্রধানমন্ত্রী এই প্রকল্পটির সূচনা করেছেন, যার মূল উদ্দেশ্য হলো ভারতের শহরাঞ্চলকে সম্পূর্ণ বর্জ্য মুক্ত করা।

এই প্রকল্পের বিভিন্ন বৈশিষ্টের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো নির্দিষ্ট কাঠামো ও সময় অনুযায়ী পুরো প্রকল্পটির বাস্তবায়ন করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়ে তুলতে হবে। ৫ বছরের মধ্যে প্রতি বছরের নির্দিষ্ট পরিকল্পনা থাকতে হবে। পুরো প্রকল্পটি কাগজবিহীন, ডিজিটাল পদ্ধতি এবং ডিজিটাল প্রযুক্তি অনুসারে চলতে হবে। এক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বজায় রাখার জন্য জিআইএস প্রযুক্তি ব্যবহার করে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার পরিকাঠামো গড়ে তুলতে হবে। অনলাইনে অভিযোগ জানানোর এবং সেই অভিযোগ নিষ্পত্তির পরিকাঠামো গড়ে তুলতে হবে ও নজরদারির ব্যবস্থা রাখতে হবে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় তহবিলের যোগান দেওয়ার জন্য ছোট পুরসভাগুলিকে বেশি অর্থ সাহায্য দিতে হবে। অতিরিক্ত অর্থের ব্যবস্থা পঞ্চদশ অর্থ কমিশন থেকে করা হবে। মানুষের বিভিন্ন অভ্যাস পরিবর্তনে জনসচেতনতামূলক উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। বেসরকারি সংস্থাগুলিকে এবং বিভিন্ন শিল্প সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে হবে, যাতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রকল্পটির বাস্তবায়িত করা সম্ভব হয়।

স্বচ্ছ ভারত মিশন – শহরাঞ্চল ২.০-র গুরুত্বপূর্ণ কিছু বৈশিষ্ট্য –

১) কাজের খোঁজে এবং আরও উন্নত জীবনযাত্রার জন্য যাঁরা গ্রাম থেকে শহরে আসছেন তাদের জন্য শৌচাগারের ব্যবস্থা করা এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য। এর জন্য সাড়ে তিন লক্ষ সর্বসাধারণের ব্যবহার যোগ্য শৌচাগার তৈরি করা হবে।

২) যেসব শহরের জনসংখ্যা ১ লক্ষের কম সেখানে নিকাশি জলের ব্যবস্থাপনা করতে হবে। বর্জ্য জলকে নিরাপদে সংগ্রহ করে সেগুলি পরিবহণ করে নির্দিষ্ট জায়গায় নিয়ে যেতে হবে। সেখানে সেই জল শোধন করা হবে। এর ফলে জলশয়গুলিতে নোংরা জল ফেলা বন্ধ হবে।

কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা –

প্রতিটি শহরকে ন্যূনতম থ্রি স্টার বর্জ্য মুক্ত শংসাপত্র পাওয়ার জন্য উদ্যোগী হতে হবে –

স্বচ্ছ ভারত মিশন শহরাঞ্চল ২.০-র গুরুত্বপূর্ণ কিছু বৈশিষ্ট্য –

আগামী ৫ বছর এই প্রকল্পে শহরাঞ্চলকে সম্পূর্ণ বর্জ্য মুক্ত করে তোলা হবে। পুরো প্রকল্পটি নির্দিষ্ট সময় শেষ করা বাধ্যতামূলক।

স্থিতিশীল কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা -

১) প্রতিটি শহরে বর্জ সংগ্রহ করার সময় সেগুলিকে উৎসে পৃথকীকরণ করতে হবে। এক্ষেত্রে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক যাতে বাতিল হয় সেদিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে।

২) যেসব শহরের জনসংখ্যা ৫ লক্ষের বেশি সেখানে ন্যাশনাল ক্লিন এয়ার প্রোগ্রাম অনুযায়ী বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণের জন্য ‘কন্সস্ট্রাকশন অ্যান্ড ডেমোলিশন’ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে হবে। যান্ত্রিক পদ্ধতিতে শহরকে পরিষ্কার করার ব্যবস্থা করতে হবে। 

৩) ১৪,০০০ একর জমিকে বর্জ্য মুক্ত করতে হবে। যেসব জমিতে ১৫ কোটি টনের কম বর্জ্য পদার্থ রয়েছে সেখানে এই ব্যবস্থা করতে হবে।

উপরে বর্ণিত ব্যবস্থাপনাগুলির সাহায্যে বিভিন্ন পৌরসভাকে জঞ্জালমুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট পুরসভায় সাধারণ মানুষকে এই প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য জোরদার প্রচার চালাতে হবে, যাতে এটি জন আন্দোলনের রূপ নেয়।

সাফাই কর্মীদের কল্যাণে বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে। তাদের সেফটি কিট দেওয়া হবে। দক্ষতা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন সরকারি কল্যাণমূলক প্রকল্পে এঁদের যুক্ত করা হবে।

স্বচ্ছ ভারত মিশন – শহরাঞ্চলের কিছু উদ্দেশ্য – 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর দূরদর্শিতায় ২০১৪ সালে ভারতে শহরাঞ্চলের পরিকল্পনার জন্য একটি  সর্বাঙ্গীণ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জল সরবরাহ এবং পয়ঃনিকাশি ব্যবস্থার উন্নতির জন্য সরকার বিভিন্ন পরিকল্পনা করেছে। ২০১৪-র দোসরা অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী স্বচ্ছ ভারত মিশনের সূচনা করেন। ওই বছরের স্বাধীনতা দিবসে তিনি এই প্রকল্পটি ঘোষণা করেছিলেন। যার উদ্দেশ্য হলো –

বিধিবদ্ধ শহরগুলিকে খোলা স্থানে শৌচকর্ম মুক্ত করতে হবে।

শহরাঞ্চলের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ১০০ শতাংশ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে করা হবে।

জন আন্দোলনের মাধ্যমে নাগরিকদের অভ্যাসের পরিবর্তন ঘটাতে হবে।

স্বচ্ছ ভারত মিশন – শহরাঞ্চলের সাফল্য –

বিগত ৭ বছর ধরে এই প্রকল্পটি দেশের প্রতিটি অঞ্চলে বাস্তবায়িত হচ্ছে। ‘জনসাধারণ প্রথম’ এই উদ্দেশ্য নিয়ে এই প্রকল্প শুরু হয়েছে। এর ফলে অগুণিত মানুষের জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এসেছে। এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো :

এসবিএম-ইউ –এর আওতায় শহরাঞ্চলে ১০০ শতাংশ শৌচাগারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাড়িতে এবং সর্বসাধারণের জন্য ব্যবহারযোগ্য ৭০ লক্ষের বেশি শৌচাগার তৈরি করা হয়েছে। মহিলা, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ এবং ভিন্নভাবে মানুষদের সুবিধার ওপর  এই প্রকল্পে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। 

গুগুল ম্যাপে এসবিএম টয়লেট –এর সন্ধান দেওয়া হচ্ছে। এখানে ৩,৩০০-র বেশি শহরে ৬৫ হাজারের বেশি সর্বসাধারণের জন্য ব্যবহারযোগ্য শৌচাগারের তথ্য পাওয়া যায়।

২০১৯ সালে ভারতের শহরাঞ্চলকে খোলাস্থানে শৌচকর্ম মুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। ৩,৩০০-র বেশি শহরকে খোলা স্থানে শৌচকর্ম মুক্ত বা ওডিএফ + এবং ৯৬০টি শহরকে ওডিএফ ++ -এর শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে। 

নিকাশি জলকে শোধন করে পুনর্ব্যবহারের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শহরগুলি ওয়াটার প্লাস শংসাপত্র অর্জনের জন্য এই লক্ষ্যে নানা উদ্যোগ নিয়েছে।

বিজ্ঞান সম্মতভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। ২০১৪ সালে যেখানে দেশে মোট বর্জ্যের মাত্র ১৮ শতাংশ প্রক্রিয়াকরণ করা হতো, সেখানে বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে ৭০ শতাংশ।

বাড়ি বাড়ি বর্জ্য পদার্থ সংগ্রহ করার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে দেশের ৯৭ শতাংশ শহরের প্রত্যেক বাড়ি থেকে বর্জ্য পদার্থ সংগ্রহ করা হয়। ৮৫ শতাংশ ওয়ার্ডে নাগরিকরা বর্জ্য পদার্থ দেওয়ার সময় বিভিন্ন উপাদানকে আলাদা করে দেন।

এই প্রকল্পের ফলে নিকাশি কর্মীদের এবং অসংগঠিত সাফাই কর্মীদের জীবনযাত্রায় পার্থক্য দেখা যাচ্ছে। ৫ লক্ষ ৫০ হাজার সাফাই কর্মী এখন সামাজিক বিভিন্ন প্রকল্পের আওতাভুক্ত হয়েছেন। করোনা মহামারীর সময় সামনের সারিতে থাকা সাফাই কর্মীরা নিরবিচ্ছিন্নভাবে পরিষেবা দিয়ে গেছেন। এর ফলে ভারতের শহরগুলিতে সুরক্ষা নিশ্চিত হয়েছে। 

এই প্রকল্পে ২০ কোটি নাগরিক সক্রিয়ভাবে যুক্ত হয়েছেন - যা দেশের শহরগুলির বসবাসকারীর জনসংখ্যার ৫০ শতাংশ। এর ফলে এটি এক জন আন্দোলনের রূপ নিয়েছে। মানুষের অভ্যাসের পরিবর্তন নজরে আসছে।

স্বচ্ছতা অ্যাপের মতো ডিজিটাল ব্যবস্থাপনার সাহায্যে বিভিন্ন অভিযোগের নিষ্পত্তি হচ্ছে। ২০১৬ সালে নগরোন্নয়ন মন্ত্রক এই অ্যাপের সূচনা করে। এপর্যন্ত অ্যাপের সাহায্যে ২ কোটির বেশি অভিযোগ নিষ্পত্তি হয়েছে। নগরোন্নয়ন মন্ত্রক সম্প্রতি স্বচ্ছতা অ্যাপ ২.০-র সূচনা করেছে। 

বিশ্বের বৃহত্তম শহরাঞ্চল পরিষ্কার করার সমীক্ষা ‘স্বচ্ছ সর্বেক্ষণ’ ২০১৬ সালে শুরু হয়েছে। এই সমীক্ষা প্রতি বছর নির্দিষ্ট সময়ে করা হচ্ছে। মহামারী সত্ত্বেও ২০২১ সালে সমীক্ষার কাজ শেষ হয়েছে। ২০১৬ সাল থেকে এপর্যন্ত ৭ লক্ষ নাগরিক তাদের মতামত জানিয়েছেন।

পুরসভাগুলির ১০ লক্ষ আধিকারিক এবং কর্মীকে বিভিন্ন ধরণের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এঁদের দক্ষতা বাড়ানোর জন্যই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

 

CG/CB/SKD/


(Release ID: 1763611) Visitor Counter : 707