প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

কেন্দ্রীয় কমিটিতে 'স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব' উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর মূল ভাষণ

Posted On: 08 MAR 2021 6:15PM by PIB Kolkata

নতুন দিল্লি, ০৮.০৩.২০২১

 

নমস্কার!

 

স্বাধীনতার ৭৫তম বছর  দরজায় কড়া নাড়ছে। আমরা সকলেই একে স্বাগত জানাই। এই বছরটি দেশের জন্য ঐতিহাসিক, গুরুত্বপূর্ণ, এবং গৌরবময়, এবং দেশ এই মহোৎসবকে উৎসাহ এবং উদ্দীপনার সঙ্গে উদযাপন করবে।

 

আমাদের সৌভাগ্য যে এই সময়, এই দেশ আমাদের এই অমৃত মহোৎসবকে বাস্তবায়িত করার দায়িত্ব দিয়েছে। আমি আনন্দিত যে এই উৎসবকে ঘিরে যে আশা-প্রত্যাশা রয়েছে, যে পরামর্শগুলি এসেছে এবং যে পরামর্শগুলি আসছে, জনসাধারণের কাছে পৌঁছতে এই কমিটি কঠোর পরিশ্রম করছে। আপনারা ধারাবাহিকভাবে নতুন নতুন ভাবনা, নতুন পরামর্শ, জনসাধারণকে আবারও দেশের জন্য বাঁচতে উদ্বুদ্ধ করা, অনুপ্রাণিত করা, কীভাবে এই অনুষ্ঠানে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করা যায়, সে বিষয়ে পথপ্রদর্শন করে চলেছেন। আজও এই অনুষ্ঠানে আমাদের কয়েকজন মাননীয় সদস্যের পরামর্শ আমরা পেয়েছি। আজ থেকে এই আলোচনার সূচনা হয়েছে। আমরা পরে আরও বিস্তারিত আলোচনা করব। আমাদের কাছে ৭৫ সপ্তাহ রয়েছে এবং পরে পুরো বছরটাই রয়েছে। সুতরাং যখন আমরা এই সমস্ত বিষয় নিয়ে এগিয়ে যাব, তখন এই পরামর্শগুলি খুব কাজে লাগবে।

 

 এই পরামর্শগুলিতে আপনাদের অভিজ্ঞতাও প্রতিফলিত হয় এবং ভারতের বৈচিত্র্যময় ভাবনার সঙ্গে আপনাদের সংযোগও দেখা যায়। এখানে স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষের অনুষ্ঠানের একটি খসড়া, একটি  উপস্থাপনা  দেখানো হয়েছে।  চিন্তাশক্তিকে চালিত করাই এর মূল লক্ষ্য। এটি এমন কোনও তালিকা নয় যে এটাই প্রয়োগ করতে হবে এবং এরমধ্যেই আবদ্ধ থাকতে হবে। এটি প্রাথমিক খসড়া কারণ কোথাও থেকে শুরু তো করতে হতো, তবে আলোচনা এগোলে এই খসড়া পুরোপুরি অনুষ্ঠানের আকার নেবে, সময় নির্ধারণ হবে, সময়-সারণী তৈরি হবে। কে কী দায়িত্ব পরিচালনা করবেন, কীভাবে করা হবে, আমরা এগুলি বিস্তারিতভাবে দেখব। এই উপস্থাপনায় যে রূপরেখা তৈরি করা হয়েছে, তাতেও এই বিষয়ে বিভিন্ন ফোরামে যে বিষয়গুলি এসেছে তা অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে, এটি অন্তর্ভুক্ত করাও হয়েছে। একইরকমভাবে, স্বাধীনতার ৭৫তম বছরের এই অনুষ্ঠানকে, স্বাধীনতার এই অমৃত মহোৎসবকে, ভারতের প্রতিটি মানুষের, ভারতের প্রতিটি মনের উৎসব হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে।     

 

বন্ধুরা,

স্বাধীনতার ৭৫বছরের এই উৎসব, স্বাধীনতার এই অমৃত উৎসব౼ এমন একটি অনুষ্ঠান হওয়া উচিত যেখানে স্বাধীনতা সংগ্রামের চেতনা, ত্যাগের অভিজ্ঞতা পাওয়া যেতে পারে। যেখানে দেশের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদানও হবে, এবং তাদের স্বপ্নের ভারত গড়ার প্রতিশ্রুতিও থাকবে,  যার মধ্যে সনাতন ভারতের গৌরবের ঝলক থাকবে, এবং আধুনিক ভারতের চমকও থাকবে। যেখানে মনীষীদের আধ্যাত্মিকতার আলোও থাকবে,  আমাদের বৈজ্ঞানিকদের দক্ষতাও থাকবে। এই উৎসব ৭৫ বছরের আমাদের সাফল্য বিশ্বকে সামনে রাখবে এবং আগামী ২৫ বছরের জন্য আমাদের একটি রূপরেখা, একটি সংকল্প গড়ে তুলতে সাহায্য করবে। কারণ ২০৪৭ সালে, যখন দেশ স্বাধীনতার শতাব্দী উদযাপন করবে, আমরা কোথায় থাকব, বিশ্বে আমাদের স্থান কী হবে, আমরা ভারতকে কতদূর নিয়ে যাব, সেই বিষয়ে স্বাধীনতার ৭৫ বছরের উৎসব এবং স্বাধীনতা সংগ্রামের স্মৃতি আমাদের অনুপ্রেরণা দেবে। এর জন্য একটি খসড়া তৈরি করা হবে এবং সেই খসড়ার ভিত্তিতে ভারতের স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষের উৎসব এবং শতবর্ষ উৎসবের জন্য, যা সেই দিকে দৃঢ়ভাবে এগিয়ে চলার জন্য, অনুপ্রাণিত করবে।

 

বন্ধুরা,

আমাদের এখানে বলা হয়ে থাকে- 'উৎসবেনঃ বিনা যস্মাৎ স্থাপিত নিস্ফলম ভবেত', অর্থাৎ কোনও প্রচেষ্টা, কোন সংকল্পই উৎসব ছাড়া সফল হয় না। যখন একটি সংকল্প উৎসবের রূপ নেয়, তখন লক্ষ লক্ষ কোটি প্রতিশ্রুতি যুক্ত হয়, কয়েক লক্ষ কোটি শক্তি যোগ হয়। এই অনুভূতির সঙ্গে নিয়েই আমাদের ১৩০ কোটি দেশবাসীকে একসঙ্গে জুড়তে হবে, তাদের একত্রিত করতে হবে এবং স্বাধীনতার এই অমৃত উৎসব, স্বাধীনতার ৭৫তম বছরের এই উৎসব পালন করতে হবে। জনগণের অংশগ্রহণই এই অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য। এবং যখন আমরা জনসাধারণের অংশগ্রহণের কথা বলি, তখন তারমধ্যে ১৩০ কোটি দেশবাসীর অনুভূতি, তাঁদের মতামত, পরামর্শ এবং তাঁদের স্বপ্নও রয়েছে।

 

বন্ধুরা,

আপনারাও জানেন যে, স্বাধীনতার এই ৭৫তম বছর, 'স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবের' আয়োজনের জন্য আমরা মোটামুটি এটিকে ৫ টি স্তম্ভে  বসাতে  পারি। প্রথমটি হ'ল স্বাধীনতা সংগ্রাম, ৭৫-এর ভাবনা, ৭৫-এর উপলব্ধি, ৭৫-এর পদক্ষেপ এবং ৭৫-এর সমাধান - আমাদের এই পাঁচটি বিষয় নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে। এগুলির মধ্যে দেশের ১৩০ কোটি জনসাধারণের ভাবনা, তাঁদের অনুভূতি যুক্ত করতে হবে। আমরা যখন স্বাধীনতা সংগ্রামীদের শ্রদ্ধা জানাচ্ছি, তবে একই সাথে আমাদের সেই যোদ্ধাদের জীবন কাহিনীও নিয়ে আসতে হবে যারা ইতিহাসে এতটা স্বীকৃতি পাননি। আমাদের দেশে এমন জায়গা খুব কমই  আছে, এমন  অঞ্চল  আছে, যেখানে  কোনও মা ভারতীর ছেলে বা মেয়ে অবদান বা ত্যাগ স্বীকার করেনি। তাদের অবদানের এই সমস্ত ত্যাগ এবং সেই মহান অনুপ্রেরণামূলক কাহিনীও তারা যখন দেশের সামনে নিয়ে আসবে তখন এক মহান অনুপ্রেরণার উ ৎস হবে। একইভাবে, আমাদের দেশের প্রতিটি অঞ্চল এবং প্রতিটি বিভাগের অবদান দেশে সকলের সামনে  আনতে হবে। এমন অনেক লোক আছেন যারা প্রজন্ম ধরে প্রজন্ম ধরে দেশ ও সমাজের জন্য দুর্দান্ত কিছু কাজ করে আসছেন। আমাদের তাঁর চিন্তাভাবনা, তাঁর ধারণাগুলিও প্রকাশ্যে আনতে হবে, তার প্রচেষ্টার সাথে আমাদের দেশকে যুক্ত করতে হবে। এটিই এই অমৃত উৎসবের মূল চেতনা।   

 

বন্ধুরা,   

দেশ এই ঐতিহাসিক উৎসবের জন্য রূপরেখাও তৈরি করেছে।এবং তা আরও সমৃদ্ধ করে তোলার কাজ আজ থেকে শুরু হয়েছে। সময় থাকতে থাকতে পরিকল্পনা করলে, প্রস্তুতি আরও ভালো হবে, আরও কার্যকর হবে এবং অনুপ্রেরণাদায়ক হবে। আমরা সেই প্রজন্ম, যারা স্বাধীনতার জন্য, দেশের স্বাধীনতার জন্য প্রাণ বলিদান করার সুযোগ পাইনি। তবে আমরা দেশের জন্য বেঁচে থাকার, কিছু করার সুযোগ পেয়েছি। এবং একই অনুভূতি আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের মধ্যেও বজায় থাকলে, ২০৪৭ সালে, যখন দেশের স্বাধীনতার শতবর্ষ উৎসব হবে, তখন  দেশকে আমরা যেখানে নিয়ে যেতে চাই, সেই স্বপ্নগুলি পূরণ  সম্ভব হবে। দেশের প্রত্যেক নতুন সিদ্ধান্ত, নতুন ধারণা, নতুন ভাবনা, আত্মনির্ভর ভারতের সংকল্প এই প্রচেষ্টারই রূপ। এটা সেই স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্বপ্ন পূরণেরও চেষ্টা, ভারতকে এমন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা, যার স্বপ্ন নিয়ে বীর যোদ্ধারা ফাঁসীর দড়ি গলায় পড়েছিলেন।

 

বন্ধুরা,

আজ ভারত যা কিছু করছে, কয়েক বছর আগে তার কল্পনাও অসম্ভব ছিল। দেশ ৭৫ বছরের যাত্রায় পায়ে পায়ে এখানে পৌঁছেছে। ৭৫ বছরে, অনেক ব্যক্তির অবদান, সমস্ত ধরণের মানুষের অবদান রয়েছে। এবং কারও অবদানকে প্রত্যাখ্যান করে দেশকে বড় করা সম্ভব নয়। সবার অবদান গ্রহণ করে, স্বাগত জানিয়ে, সম্মান করে এগিয়ে গেলেই দেশের অগ্রগতি সম্ভব। এবং আমরা একই মন্ত্র নিয়ে বড় হয়েছি, আমরা একই মন্ত্র নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। দেশ যখন স্বাধীনতার ৭৫ বছর উদযাপন করবে, তখন দেশ দৃঢ় পদক্ষেপে সেই লক্ষ্যগুলির দিকে অগ্রসর হবে, যে লক্ষ্যগুলি এককালে অসম্ভব বলে মনে হতো। আমি বিশ্বাস করি যে আপনাদের সবার সহযোগিতায় এই অনুষ্ঠান ভারতের ঐতিহাসিক গৌরব বজায় রাখবে। আপনারা সবাই  বিভিন্ন ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ, আপনাদের অবদানের মাধ্যমে এই অনুষ্ঠান বিশ্বের সামনে ভারতের গৌরবময় ছবি তুলে ধরবে, অনুপ্রাণিত করবে, পথ প্রদর্শন করবে। আপনাদের অবদান খুবই মূল্যবান।

 

এই কথাগুলির সঙ্গেই, আমি আপনাদের এই অনুষ্ঠানে সক্রিয় অংশগ্রহণের জন্য  সকলকে আমন্ত্রণ জানিয়ে আমার বক্তব্য শেষ করছি। আপনাদের অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই।  

 

 অনেক ধন্যবাদ!

***

 

 

CG/JD


(Release ID: 1704601) Visitor Counter : 514