প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

প্রধানমন্ত্রী ‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব’ ইন্ডিয়া@৭৫-এর সূচনাপর্বের উদ্বোধন করেছেন


ভারত তার স্বাধীনতা সংগ্রামীদের কখনই ভুলবেনা : প্রধানমন্ত্রী

বিগত ৬ বছর ধরে অজানা নায়কদের ইতিহাস সংরক্ষণের সচেতন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী

আমরা আমাদের সংবিধান এবং আমাদের গণতান্ত্রিক ঐতিহ্যের জন্য গর্বিত : প্রধানমন্ত্রী

Posted On: 12 MAR 2021 2:15PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লী, ১২ মার্চ, ২০২১
 
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব’ ইন্ডিয়া@৭৫-এর সূচনাপর্বের উদ্বোধন উপলক্ষ্যে আমেদাবাদের সবরমতী আশ্রম থেকে পদযাত্রার সূচনা করেছেন। তিনি স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং ডিজিটাল পদ্ধতিতে ইতিহাসকে স্মরণ করার নানা উদ্যোগেরও সূচনা করেছেন। গুজরাটের রাজ্যপাল শ্রী আচার্য দেবব্রত, সংস্কৃতি দপ্তরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী শ্রী প্রহ্লাদ সিং প্যাটেল এবং গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিজয় রূপানী এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। 
 
ভারতের স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে কেন্দ্র ‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব’এর আয়োজন করেছে। এই মহোৎসব জন-ভাগীদারির ভাবনায় জন-উৎসবে পরিণত হবে। 
 
সবরমতী আশ্রমে এই উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ২০২২ সালের ১৫ই আগস্টের ৭৫ সপ্তাহ আগে এই উৎসব শুরু হয়েছে, চলবে ২০২৩ সালের ১৫ই আগস্ট পর্যন্ত। তিনি মহাত্মা গান্ধী এবং স্বাধীনতা সংগ্রামে যেসব মহান ব্যক্তিত্বরা আত্মোৎসর্গ করেছেন তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।  
 
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, স্বাধীনতা সংগ্রাম, ৭৫ বছরের ধারণা, ৭৫ বছরের অর্জন, ৭৫-এ কি কি করা হবে এবং ৭৫এর জন্য সিদ্ধান্ত- এই ৫টি স্তম্ভের ওপর ভিত্তি করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে- যাতে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্বপ্ন পূরণ হয় এবং তাঁদের অনুপ্রেরণায় আমরা আমাদের কর্তব্য পালন করতে পারি।  
 
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আজাদির অমৃত মহোৎসবের অর্থ হল স্বাধীনতার শক্তির অমৃত। অর্থাৎ স্বাধীনতা সংগ্রামীদের অনুপ্রেরণার অমৃত, নতুন ধারণার অমৃত এবং আত্মনির্ভরতার জন্য শপথ গ্রহণ। এটিই হল এই মহোৎসবের মূল উদ্দেশ্য। 
 
লবণের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দামের কারণে কখনই নুনকে গুরুত্ব দেওয়া হত না। ভারতীয়দের জন্য নুন সততা, বিশ্বাস, আনুগত্য, শ্রম, সাম্য ও আত্মনির্ভরতার প্রতীক। ভারতের মূল্যবোধের পাশাপাশি ব্রিটিশরা সেইসময় আত্মনির্ভরতাতেও আঘাত হেনেছিল। ভারতের জনসাধারণকে ইংল্যান্ড থেকে আসা লবণের ওপর নির্ভর করতে হত। গান্ধীজি জনসাধারণের এই দীর্ঘদিনের সমস্যা বুঝতে পেরেছিলেন, দেশের মানুষের আবেগ উপলব্ধি করে সেটিকে আন্দোলনে পরিণত করেছিলেন। 
 
১৮৫৭ সালে ভারতের প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধের মতো স্বাধীনতা সংগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী , মহাত্মা গান্ধীর বিদেশ থেকে ফিরে আসা, সত্যাগ্রহের ক্ষমতা, লোকমান্য তিলকের পূর্ণ স্বরাজের আহ্বান, নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর নেতৃত্বে আজাদ হিন্দ বাহিনীর দিল্লীর উদ্দেশে যাত্রা এবং বিখ্যাত  শ্লোগান ‘দিল্লী চলো’র কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি আরও বলেছেন স্বাধীনতা সংগ্রামের বিষয়ে নিরলসভাবে সচেতনতার জন্য প্রত্যেক জায়গায় প্রতিটি ধর্মে আমাদের আচার্য, সাধু, সন্ন্যাসী এবং শিক্ষকরা পথ দেখিয়েছেন। দেশজুড়ে স্বাধীনতা  সংগ্রামের ক্ষেত্র ভক্তি আন্দোলন প্রস্তুত করেছিল। শ্রীমদ শঙ্কর দেব দেশজুড়ে স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করেছিলেন। একইভাবে দেশের সর্বত্র সাধু সন্ন্যাসীরা স্বাধীনতা সংগ্রামের বিষয়ে সবাইকে সচেতন করে তোলেন। বহু দলিত, আদিবাসি, মহিলা এবং যুবক-যুবতীরা স্বাধীনতার জন্য আত্মোৎসর্গ করেছেন। কড়ি কথা কুমারণের মতো ৩২ বছর বয়সী তামিলনাড়ুর সেই যুবকের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ব্রিটিশরা তার মাথায় গুলি চালালেও তিনি দেশের পতাকাকে মাটিতে পরতে দেননি। প্রথম মহারানী হিসেব ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন ভেলু নাচিয়ের। প্রধানমন্ত্রী এরকম অজানা নায়কদের আত্ম বলিদানের কথা উল্লেখ করেছেন।  
 
শ্রী মোদী আমাদের দেশের আদিবাসী সমাজের সংগ্রামের কথা তাঁর ভাষণে তুলে ধরেন। বিদেশী শাসকদের অপসারণের জন্য তাঁরা তাঁদের শৌর্য্য ও সাহসের পরিচয় দিয়েছেন। ঝাড়খন্ডে বীরসা মুন্ডা ব্রিটিশদের চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন, মুর্মু ভাইয়েরা সাঁওতাল আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন। ওড়িশায় ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে চক্র বিসয়ী যুদ্ধ করেছেন। গান্ধী আদর্শে লক্ষ্মণ নায়েক মানুষের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তুলেছেন। অন্ধ্রপ্রদেশের মানুয়াম বিরুধু আল্লুরি সিরারাম রাজুর মতো অজানা আদিবাসী নেতাদের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মিজোরামের পার্বত্য অঞ্চলেও ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম হয়েছে।  পসল্থ খুংচেরা সেখানে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। আসাম এবং উত্তর পূর্বাঞ্চলের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেছেন, গোমধর পোনওয়ার, লচিত বরফুকন ও সেরাত সিং-এর  দেশের স্বাধীনতায়  অবদান অনস্বীকার্য। গুজরাটের জাম্বুঘোড়ায় নায়ক আদিবাসীদের আত্মবলিদান এবং মনগদে শত শত আন্দোলনরত আদিবাসীদের হত্যার কথা দেশ কোনদিন ভুলবে না। 
 
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, গত ৬ বছর ধরে দেশের প্রত্যেক রাজ্যের, প্রত্যেক অঞ্চলের এই ইতিহাসগুলিকে সচেতনভাবে সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দু বছর আগের ডান্ডি যাত্রার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলগুলির সংস্কার করা হয়েছে। দেশের প্রথম স্বাধীন সরকার গঠন হওয়ার পর আন্দামানের যে জায়গায় নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু ত্রিবর্ণ রঞ্জিত পতাকা উত্তোলন করেছিলেন সেই জায়গাটিরও সংস্কার করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের নাম পরিবর্তন করে স্বাধীনতা সংগ্রাম আন্দোলনের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে নতুন নাম দেওয়া হয়েছে। বাবাসাহেব ভীমরাও আম্বেদকরের স্মৃতি বিজড়িত জায়গাগুলিকে নিয়ে পঞ্চতীর্থ তৈরি করা হয়েছে। জালিয়ানওয়ালাবাগ এবং পাইক আন্দোলনের স্মারক স্থলগুলিরও সংস্কার করা হয়েছে।   
 
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমরা কঠোর পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে দেশে-বিদেশে আমাদের ক্ষমতা প্রমাণ করেছি। আমাদের সংবিধান এবং গণতান্ত্রিক রীতি-নীতির জন্য আমরা গর্বিত। গণতন্ত্রের জননী ভারত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার জন্য এগিয়ে চলেছে। ভারতের সাফল্য সমস্ত মানব জাতির পক্ষে আশার সঞ্চার করেছে। ভারতের উন্নয়নের পথে সফর আত্মনির্ভরতায় পরিপূর্ণ। এদেশের উন্নয়ন যাত্রা সারা বিশ্বের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে।  
 
আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ইতিহাস সম্বলিত তথ্যগুলি সংরক্ষণের জন্য প্রধানমন্ত্রী যুব সম্প্রদায় ও বিদগ্ধজনেদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। সারা বিশ্বকে এদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের সাফল্যের ছবি তুলে ধরার জন্য তিনি অনুরোধ করেছেন। শিল্প, সাহিত্য, থিয়েটার, চলচ্চিত্র ও ডিজিটাল বিনোদনের সঙ্গে যারা জড়িত তাদেরকে আমাদের অতীতের বিভিন্ন ঘটনাবলী মানুষের কাছে উপস্থাপনার পরামর্শও দিয়েছেন।  
 
***
 
 
 
CG/CB/NS


(Release ID: 1704408) Visitor Counter : 458