প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

জি-২০ নেতৃবৃন্দের পঞ্চদশ শিখর সম্মেলন

Posted On: 21 NOV 2020 10:35PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ২১ নভেম্বর, ২০২০

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ২১-২২ নভেম্বর জি-২০ নেতৃবৃন্দের পঞ্চদশ শিখর সম্মেলনে যোগ দেন। সৌদি আরবের পৌরোহিত্যে এবারের সম্মেলন আয়োজিত হয়েছে। এবারের জি-২০ সম্মেলনে ১৯টি সদস্য দেশের সরকার ও রাষ্ট্র প্রধানরা ছাড়াও ইউরোপীয় ইউনিয়ন, অন্যান্য আমন্ত্রিত দেশ এবং একাধিক আন্তর্জাতিক সংগঠন অংশ নেয়। কোভিড-১৯ মহামারীর প্রেক্ষিতে এবারের শিখর সম্মেলন ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতিতে আয়োজন করা হয়েছে।

 

২) এবছর জি-২০-র সভাপতির পদ সফলভাবে দক্ষতার সঙ্গে নির্বাহ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী সৌদি আরবকে অভিনন্দন জানান। কোভিড-১৯ মহামারীজনিত বাধা-বিপত্তি ও চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতিতে এই শিখর সম্মেলন আয়োজনের জন্য সৌদি আরবের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী।

 

৩) সৌদি আরবের সভাপতিত্বে এবারের শিখর সম্মেলনের মূল ভাবনা 'একবিংশ শতাব্দীতে সকলের জন্য সুযোগ-সুবিধাগুলি বাস্তবায়িত করা’। বর্তমান কোভিড-১৯ মহামারীর প্রেক্ষিতে সকলের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধার বিষয়টি মূল ভাবনা হীসেবে সম্মেলনে গৃহীত হওয়া তার অত্যন্ত তাৎপর্য রয়েছে। শিখর সম্মেলনের বিভিন্ন এজেন্ডা নিয়ে দু'দিন ধরে আলোচনা হয়েছে। সম্মেলনের দুটি অধিবেশনে বর্তমান মহামারীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা, আর্থিক গতি পুনরুদ্ধার ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির সুযোগ অব্যাহত রাখা সহ এক সর্বব্যাপী, সুস্থায়ী ও অনুকূল ভবিষ্যৎ নির্মাণের মতো বিষয়গুলি অগ্রাধিকার পেয়েছে। শিখর সম্মেলনের পাশাপাশি পার্শ্ব অনুষ্ঠানেও মহামারীর বিরুদ্ধে সামগ্রিক প্রস্তুতি এবং আমাদের এই গ্রহের সুরক্ষার মতো বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হয়।

 

৪) প্রধানমন্ত্রী কোভিড-১৯ মহামারীকে মানবতার ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ মোড় হিসেবে মন্তব্য করে বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সমগ্র বিশ্বের কাছে এটিই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। এই প্রেক্ষিতে তিনি জি-২০ দেশগুলিকে নির্ণায়ক পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, জি-২০ দেশগুলির যাবতীয় প্রচেষ্টা কেবল আর্থিক গতি পুনরুদ্ধার, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও বাণিজ্যিক লেনদেনের মধ্যেই যেন সীমিত না থাকে, বরং তা আমাদের এই বিশ্বের সুরক্ষায় আমরা যাতে মানবজাতির ভবিষ্যতের বিশ্বস্ত অংশীদার হয়ে উঠতে পারি।

 

৫) প্রধানমন্ত্রী করোনা-পরবর্তী সময়ে সমগ্র বিশ্বের জন্য একটি নতুন সূচক প্রণয়নের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, চারটি বিষয়ে এই সূচক প্রণয়ন করা যেতে পারে এবং তা হল – মেধাসম্পদ যোগানের এক ধারাবাহিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা; সমাজের সব শ্রেণীর মানুষের কাছে প্রযুক্তির সুফল যাতে পৌঁছয় তা সুনিশ্চিত করা; প্রশাসনিক ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা বজায় রাখা এবং প্রকৃতি মা ও এই গ্রহের এক বিশ্বস্ত অংশীদার হিসেবে সব পরিস্থিতির মোকাবিলা করা। এই চারটি বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে জি-২০ দেশগুলি এক নতুন বিশ্ব গঠনের ভিত্তি স্থাপন করতে পারে বলেও শ্রী মোদী অভিমত প্রকাশ করেন।

 

৬) প্রধানমন্ত্রী গত কয়েক দশকের কথা উল্লেখ করে বলেন, একদিকে যেমন মূলধন ও অর্থের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, কিন্তু এখন সময় এসেছে বিভিন্ন বিষয়ে সুদক্ষ করে তোলা এবং দক্ষদের পুনরায় আধুনিক পদ্ধতি অনুযায়ী সুদক্ষ করে তোলা যাতে মানবসম্পদের এক পর্যাপ্ত যোগানভাণ্ডার গড়ে তোলা যায়। তিনি বলেন, এর ফলে সাধারণ মানুষের মর্যাদাই বাড়বে না, বরং সাধারণ মানুষ যে কোনও সমস্যার মোকাবিলায় আরও বেশি সংবেদনশীল হয়ে উঠবেন। তিনি বলেন, নতুন প্রযুক্তির প্রয়োগের ক্ষেত্রে যে কোনও মূল্যায়নের ভিত্তি হবে তা মানব-জীবনের মানোন্নয়নে ও জীবনের গুণগত মান বাড়াতে কতখানি প্রভাব ফেলছে তার ওপর।

 

৭) শ্রী মোদী প্রশাসনিক ব্যবস্থায় আরও বেশি স্বচ্ছতার আহ্বান জানিয়ে বলেন, এর ফলে সাধারণ মানুষও অভিন্ন চ্যালেঞ্জগুলির মোকাবিলায় আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী হয়ে এগিয়ে আসবেন। শ্রী মোদী বলেন, বিশ্বস্ত অংশীদার হিসেবে পরিবেশ ও প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রেখে যে কোনও পরিস্থিতি মোকাবিলা আমাদেরকে এক সুস্থ-সবল জীবনশৈলী গ্রহণে উৎসাহিত করবে। এই প্রেক্ষিতে সুস্থ-সবল জীবনের মাপকাঠি হিসেবে তিনি ব্যক্তিপিছু কার্বন নিঃসরণ পরিমাণ কমানোর পরামর্শ দেন। 

 

৮) কোভিড-পরবর্তী বিশ্বে যে কোনও জায়গা থেকেই কর্মসম্পাদন নতুন স্বাভাবিক পন্থা হিসেবে উঠে আসবে বলে অভিমত প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী জি-২০ দেশগুলির জন্য একটি ভার্চ্যুয়াল সেক্রেটারিয়েট গঠনের প্রস্তাব দেন, যাতে প্রয়োজনীয় যাবতীয় কাজকর্ম ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতিতেই সম্পাদন করা যায়। 

 

৯) জি-২০ নেতৃবৃন্দের পঞ্চদশ শিখর সম্মেলন আগামী ২২ তারিখ পর্যন্ত চলবে। নেতৃবৃন্দের যৌথ ঘোষণার মধ্য দিয়ে এবং সৌদি আরবের কাছ থেকে সভাপতির দায়িত্ব ইতালির কাছে হস্তান্তরিত করার মধ্য দিয়ে এবারের শিখর সম্মেলনের পরিসমাপ্তি ঘটবে।

***

 

CG/BD/DM


(Release ID: 1675263)