প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

'আরম্ভ ২০২০' অনুষ্ঠানে সিভিল সার্ভিসেস-এর প্রবেশনারদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর মতবিনিময়

Posted On: 31 OCT 2020 4:46PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ৩১ অক্টোবর, ২০২০

 

 

শাসন ব্যবস্থায় অনেক বড় ভূমিকা পালনকারী আমাদের নবীন প্রজন্ম ব্যতিক্রমী ভাবনার জন্য প্রস্তুত। তাঁরা নতুন কিছু করার ইচ্ছা রাখেন। এই প্রবণতাগুলি দেখে আমার মনে একটি নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে, আর সেজন্য আমি আপনাদের অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই। গত বছর আজকের দিনে কেভাডিয়াতে আপনাদের পূর্ববর্তী অফিসার প্রশিক্ষণকারীদের সঙ্গে আমার অনেক বিস্তারিত কথা হয়েছিল। ফলস্বরূপ এটা ঠিক হয়েছিল যে প্রতি বছর এই বিশেষ আয়োজন শুরুর জন্য এখানে সর্দার প্যাটেলের এই মূর্তির পাদদেশে, মা নর্মদার তটে, এখানেই আমরা মিলিত হব এবং একসঙ্গে থেকে আমরা সবাই ভাবনা-চিন্তা করব ও প্রারম্ভিক অবস্থাতেই আমরা নিজেদের ভাবনাগুলিকে একটি আকার দেওয়ার চেষ্টা করব। কিন্তু করোনার ফলে এ বছর এসব আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। এ বছর আপনারা সবাই মুসৌরিতে রয়েছেন, ভার্চ্যুয়াল প্রযুক্তির মাধ্যমে আমার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। এই আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত সমস্ত ব্যক্তিদের প্রতি আমার অনুরোধ, যখনই করোনার প্রভাব আরও হ্রাস পাবে, আমি সমস্ত উচ্চপদস্থ আধিকারিকদেরও বলে রাখছি, যাতে আপনারা অবশ্যই একসঙ্গে একটি ছোট ক্যাম্পে এই সর্দার প্যাটেলের গগণচুম্বী মূর্তির সান্নিধ্যে এসে কিছুটা সময় কাটাতে পারেন আর ভারতের এই অতুলনীয় শহর কিভাবে দ্রুত একটি আন্তর্জাতিক পর্যটক গন্তব্য রূপে গড়ে উঠছে সেটাও অবশ্যই অনুভব করবেন।

 

বন্ধুগণ,

 

এক বছর আগে যে পরিস্থিতি ছিল আর আজ যে পরিস্থিতি - উভয়ের মধ্যে অনেক বড় পার্থক্য রয়েছে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, এই সঙ্কটকালে দেশবাসী যেভাবে কাজ করেছে, দেশের শাসন ব্যবস্থা যেভাবে কাজ করেছে তা থেকে আপনারা হয়তো অনেক কিছু শিখেছেন। আপনারা কাছে গিয়ে প্রত্যক্ষভাবে না দেখলেও হয়তো পর্যবেক্ষণ করেছেন এবং এর থেকে অনেক কিছু শেখার মতো আপনারা পেয়েছেন। করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য এমন অনেক কিছু, যেগুলির জন্য দেশ পরনির্ভরশীল ছিল, আজ ভারত সেইসব সরঞ্জাম রপ্তানি করার মতো জায়গায় এসে গেছে। 'সঙ্কল্প থেকে সিদ্ধি'র এটি অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য উদাহরণ।

 

বন্ধুগণ,

 

আজ ভারতের উন্নয়ন যাত্রার যে গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে আপনারা রয়েছেন, যে সময়ে আপনারা সিভিল সার্ভিসে এসেছেন, সেটি অত্যন্ত বিশেষ সময়। আপনাদের ব্যাচ যখন কাজ করতে শুরু করবে, যখন আপনারা প্রকৃত অর্থে ফিল্ডে যাওয়া শুরু করবেন, তখন আপনারা সেই সময়ে পৌঁছবেন যখন ভারত তার স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষে পদার্পণ করবে। এটি একটি বড় মাইলফলক। অর্থাৎ, আপনারা এই ব্যবস্থায় প্রবেশ করছেন আর ভারত তার স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষে প্রবেশ করছে। আর বন্ধুগণ, আপনারাই সেই আধিকারিক হয়ে উঠবেন একথা ভুলবেন না, আজ সম্ভব হলে ঘরে গিয়ে নিজের ডায়েরিতে লিখে নেবেন। বন্ধুগণ, আপনারাই সেই আধিকারিক হবেন যাঁরা সেই সময়েও দেশ সেবায় রত থাকবেন, আপনাদের কেরিয়ারে আপনাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে থাকবেন যখন ভারত তার স্বাধীনতার ১০০তম বর্ষ পালন করবে। স্বাধীনতার ৭৫ বছর থেকে শুরু করে শততম বর্ষের মাঝে এই ২৫ বছর ভারতের জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ আর আপনারা সেই ভাগ্যবান প্রজন্ম, আপনারা সেই মানুষ যাঁরা এই ২৫ বছরে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক ব্যবস্থার কর্ণধার হবেন। আগামী ২৫ বছরে দেশের নিরাপত্তা, আইন-শৃঙ্খলা, গরীবদের কল্যাণ, কৃষকদের কল্যাণ, মহিলা ও নবীন প্রজন্মের হিতে বিশ্বস্তরে ভারতের একটি যথোচিত স্থান প্রাপ্তি, অনেক বড় বড় দায়িত্ব আপনাদের কাঁধে রয়েছে। আমাদের মধ্যে অনেকেই তখন আপনাদের মাঝে থাকব না, কিন্তু আপনারা থাকবেন, আপনাদের সঙ্কল্প থাকবে, আপনাদের সঙ্কল্প থেকে সিদ্ধির প্রচেষ্টা থাকবে। আর সেজন্য আজকের এই পবিত্র দিনে আপনাদেরকে নিজের জন্য অনেক শপথ গ্রহণ করতে হবে। আমার জন্য নয়, আপনাদের নিজেদের জন্য। সেই শপথ, যার সাক্ষী থাকবেন শুধু আপনি এবং আপনার আত্মা। আপনাদের প্রতি আমার অনুরোধ, আজ রাতে ঘুমোনোর আগে নিজেকে অবশ্যই আধ ঘন্টা সময় দেবেন। আপনার মনে যে চলছে, আপনি যে কর্তব্যের কথা ভাবছেন, যে দায়িত্বের কথা ভাবছেন, যে শপথের কথা ভাবছেন তা অবশ্যই ডায়েরিতে লিখে রাখবেন।

 

বন্ধুগণ,

 

যে কাগজে আপনারা নিজেদের সঙ্কল্পের কথা লিখবেন, যে কাগজে আপনারা আপনাদের স্বপ্নগুলিকে শব্দের আকার দেবেন, কাগজের সেই টুকরোগুলি শুধু কাগজ হয়ে থাকবেন না সেগুলি এক একটা আপনার হৃদয়ের টুকরো হয়ে থাকবে। এই টুকরোগুলি দেখবেন, সারা জীবন ধরে আপনাদের সঙ্কল্পগুলিকে বাস্তবায়িত করতে হৃদয়ের স্পন্দন হয়ে সঙ্গে থাকবে। যেভাবে আপনার হৃদয় নিরন্তর শরীরে রক্ত প্রবাহ সঞ্চালন করে, তেমনই এই কাগজে লেখা প্রতিটি শব্দ আপনার জীবনের সঙ্কল্পগুলিকে একে একে বাস্তবায়নের প্রবাহে নিরন্তর গতি প্রদান করতে থাকবে। প্রত্যেক স্বপ্নকে সঙ্কল্প আর সঙ্কল্প থেকে সিদ্ধির প্রবাহে এগিয়ে নিয়ে যাবে। আর আপনাদের কোনও প্রেরণা, কোনও নতুন শিক্ষার প্রয়োজন পড়বে না। এগুলি আপনারই লেখা কাগজ। আপনার হৃদয়ের মনোভাব প্রকট করা শব্দগুলি, আপনার মন-মন্দির থেকে বেড়িয়ে আসা এক একটি বাক্য আপনাকে আজকের দিনটি মনে করাবে, আপনার সঙ্কল্পকে মনে করিয়ে দিতে থাকবে।

 

বন্ধুগণ,

 

সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলই এক প্রকার আমাদের দেশের সিভিল সার্ভিসের জনক ছিলেন। ২১ এপ্রিল ১৯৪৭ সালে অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিসেস অফিসারদের প্রথম ব্যাচকে সম্বোধিত করার সময় সর্দার প্যাটেল সিভিল সার্ভিসেসকে দেশের 'স্টিল ফ্রেম' বলে উল্লেখ করেছিলেন। সেই আধিকারিকদের সর্দার সাহেব পরামর্শ দিয়েছিলেন, ‘দেশের নাগরিকদের পরিষেবা প্রদান এখন আপনাদের সর্বোচ্চ কর্তব্য!’ আমারও এটাই অনুরোধ, সিভিল সার্ভেন্টরা যে সিদ্ধান্তই নিন না কেন, তাঁরা সবসময় রাষ্ট্রীয় প্রেক্ষিতেই দেশের একতা ও অখণ্ডতাকে মজবুত করে তুলবেন। সংবিধানের আত্মাকে অক্ষত রাখবেন। আপনাদের ক্ষেত্র যত ছোটই হোক না কেন, আপনারা যে বিভাগকে সামলাবেন তার আওতা যত কমই হোক না কেন, কিন্তু সিদ্ধান্তগুলি সর্বদাই দেশের কল্যাণে, জনগণের কল্যাণে হওয়া উচিৎ। প্রতিটি সিদ্ধান্তের একটি জাতীয় প্রেক্ষিতও থাকা উচিৎ।

 

বন্ধুগণ,

 

স্টিল ফ্রেমের কাজ শুধুই ভিত্তি হিসেবে কাজ করা, শুধুই প্রচলিত ব্যবস্থাগুলিকে সামলানোই নয়, স্টিল ফ্রেমের কাজ হিসেবে দেশবাসীকে এই অনুভবও করাতে হবে, যত বড় সঙ্কটই হোক না কেন, যত বড় পরিবর্তনই আসুক না কেন, আপনারা একটি শক্তি হিসেবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে নিজেদের দায়িত্ব পালন করে যাবেন। আপনাদের পূর্ববর্তী আধিকারিকদের মতো সাফল্যের সঙ্গে নিজেদের দায়িত্বগুলি পালন করবেন। ফিল্ডে যাওয়ার পর নানা ধরনের মানুষের দ্বারা পরিবৃত হওয়ার পর, আপনাদের নিজেদের এই ভূমিকার কথা নিরন্তর মনে রাখতে হবে। এগুলি ভোলার ভুল কখনও করবেন না। আপনাদের এটাও মনে রাখতে হবে যে ফ্রেম যেটারই হোক না কেন; গাড়ির হোক কিংবা চশমার, কিংবা কোনও ছবির, যখন সেটা একসঙ্গে থাকে তখনই সার্থক হয়। আপনারা যে স্টিল ফ্রেমের প্রতিনিধিত্ব করছেন তারও সর্বোচ্চ প্রভাব তখনই হবে যখন আপনারা টিমের মধ্যে থাকবেন, টিমের মতো কাজ করবেন। কিছুদিন পর থেকেই আপনাদের গোটা জেলার দায়িত্ব সামলাতে হবে। ভিন্ন ভিন্ন বিভাগের নেতৃত্ব দিতে হবে। ভবিষ্যতে আপনারা এমন সব সিদ্ধান্ত নেবেন যার প্রভাব গোটা রাজ্যকে প্রভাবিত করবে, গোটা দেশকে প্রভাবিত করবে। সেই সময় আপনাদের এই টিম ভাবনা আপনাদের আরও বেশি কাজে লাগবে। যখন আপনারা নিজেদের ব্যক্তিগত সঙ্কল্পগুলির পাশাপাশি দেশহিতে নিজেদের বৃহৎ লক্ষ্যকে যুক্ত করবেন, সে আপনি যে সার্ভিসেই থাকুন না কেন, একটি টিমকে সঙ্গে নিয়ে সম্পূর্ণ শক্তি দিয়ে কাজ করবেন, তখনই আপনি সফল হবেন আর আমি দৃঢ় বিশ্বাসের সঙ্গে বলছি যে দেশও কখনও বিফল হবে না।

 

বন্ধুগণ,

 

সর্দার প্যাটেল একটি 'এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত'-এর স্বপ্ন দেখেছিলেন। তাঁর এই স্বপ্ন আত্মনির্ভর ভারতের ভাবনাসঞ্জাত। করোনা বিশ্বব্যাপী মহামারীর সময়েও আমরা সবার আগে যে শিক্ষা পেয়েছি তা হল আত্মনির্ভরতার শিক্ষা। আজ 'এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত'-এর ভাবনা, আত্মনির্ভর ভারতের ভাবনা, এক নবীন ভারত গড়ে উঠতে দেখছে। নবীন হওয়ার অনেক মানে থাকতে পারে। অনেক ভাব থাকতে পারে। কিন্তু আমার জন্য নবীনের মানে শুধু এটাই নয় যে আপনারা শুধু পুরনোকে হটিয়ে দিন আর কিছু নতুন করুন। আমার জন্য নবীনের মানে হল কায়াকল্পে রূপান্তরণ, সৃষ্টিশীল হওয়া, তরতাজা হওয়া এবং নবীন শক্তিতে উদ্দীপ্ত হওয়া। আমার জন্য নবীন হওয়ার মানে হল যা কিছু পুরনো তাকে আরও প্রাসঙ্গিক করে তোলা, যা কিছু কালবাহ্য তাকে বাতিল করে দেওয়া। বাতিল করার জন্য সাহসের প্রয়োজন হয়। আর সেজন্য আজ নবীন, শ্রেষ্ঠ এবং আত্মনির্ভর ভারত গড়ে তোলার জন্য কী কী প্রয়োজন, তা আপনাদের মাধ্যমে কিভাবে সম্পন্ন হবে, তা নিয়ে আপনাদের প্রতিনিয়ত মন্থন করে যেতে হবে। বন্ধুগণ, একথা সত্যি যে আত্মনির্ভর ভারতের লক্ষ্যকে বাস্তবায়িত করার জন্য আমাদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রয়োজন রয়েছে, সম্পদ এবং অর্থ বিনিয়োগের প্রয়োজন রয়েছে কিন্তু এই দৃষ্টিভঙ্গিকে বাস্তবায়িত করার জন্য একজন সিভিল সার্ভেন্ট হিসেবে আপনাদের ভূমিকা কী হবে এটাও গুরুত্বপূর্ণ গণ-আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়িত করতে আপনাদের কাজের উৎকর্ষে, গতিতে আপনাদেরকে দেশের লক্ষ্য পূরণের জন্য ২৪ ঘন্টা খেয়াল রাখতে হবে।

 

বন্ধুগণ,

 

দেশে নতুন পরিবর্তনের জন্য, নতুন লক্ষ্যপ্রাপ্তির জন্য, নতুন পথ এবং নতুন পদ্ধতি রপ্ত করার জন্য অনেক বড় ভূমিকা পালন করে প্রশিক্ষণএভাবে 'স্টিল সেট'-এর উন্নয়ন করতে হয়। আগেকার দিনে এসব বিষয়ে তেমন জোর দেওয়া হত না। প্রশিক্ষণে আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গি কিভাবে অভিযোজিত করতে হবে তা নিয়ে খুব একটা কিছু ভাবা হয়নি। কিন্তু এখন দেশে মানবসম্পদকে সঠিক এবং আধুনিক প্রযুক্তি-নির্ভর প্রশিক্ষণের ওপর অনেক বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে। আপনারা নিজেরাও হয়তো লক্ষ্য করেছেন, কিভাবে বিগত ২-৩ বছরেই সিভিল সার্ভেন্টদের প্রশিক্ষণের স্বরূপ অনেক বদলে গিয়েছে। এই 'আরম্ভ' নিছকই আরম্ভ নয়, এটি যেমন একটি প্রতীক, তেমনই একটি নতুন পরম্পরাও। এভাবেই সরকার কিছুদিন আগে আরেকটি অভিযান শুরু করেছে - মিশন কর্মযোগী'মিশন কর্মযোগী, ক্যাপাসিটি বিল্ডিং’-এর লক্ষ্যে নিজের মতো একটি নতুন প্রয়োগ। এই অভিযানের মাধ্যমে, সরকারি কর্মচারীদের, তাঁদের ভাবনা-চিন্তাকে আধুনিক করে তুলতে, তাঁদের 'স্টিল সেট'কে সংস্কার করতে, তাঁদের কর্মযোগী করে তোলার সুযোগ দেওয়া হবে।

 

বন্ধুগণ,

 

গীতায় ভগবান কৃষ্ণ বলেছেন -

 

যজ্ঞ অর্থাৎ কর্মণঃ অন্যত্র লোকঃ

অয়ম্‌ কর্ম বন্ধনঃ'

অর্থাৎ, যজ্ঞ মানে পরিষেবা ছাড়া স্বার্থের জন্য করা যে কোনও কাজ কর্তব্য রূপে পরিগণিত হ্য় না, সেই কাজ উলটে আমাদেরই বেঁধে ফেলার কাজ করে। কর্ম তাকেই বলে যা একটি বড় দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে করা হয়, একটি বড় লক্ষ্য পূরণের জন্য করা হয়। আমাদের সবাইকে এই কর্মের কর্মযোগী হয়ে উঠতে হবে। আমাকেও হতে হবে, আপনাকেও হতে হবেআমাদের সবাইকে হতে হবে।

 

বন্ধুগণ,

 

আপনারা সবাই যে বৃহৎ এবং দীর্ঘ সফরের জন্য প্রস্তুত হয়েছেন সেখানে নিয়মকানুনের বড় অবদান থাকবে। কিন্তু এর পাশাপাশি আপনাদের দায়িত্বের ওপর অনেক বেশি ফোকাস থাকতে হবে। আইনকানুন এবং দায়িত্ব লাগাতার এই দুইয়ের মধ্যে সংঘর্ষ চলবে, লাগাতার উত্তেজনা সৃষ্টি হবে, নিয়মের আলাদা গুরুত্ব রয়েছে, দায়িত্বেরও নিজস্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এই দুটির মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করাই আপনাদের জন্য ট্র্যাপিজের দড়ির ওপর দিয়ে চলার মতো খেলা। বিগত কয়েক বছর ধরে সরকারও দায়িত্ব-ভিত্তিক দৃষ্টিকোণের ওপর বেশি জোর দিচ্ছে। এর ফলও দেখা যাচ্ছে। প্রথমত, সিভিল সার্ভিসেস-এ ক্ষমতা এবং পারদর্শিতা সৃষ্টির ক্ষেত্রে নতুন নতুন ‘আর্কিটেকচার’ গড়ে উঠেছে। দ্বিতীয়ত, শেখার পদ্ধতি অনেক বেশি গণতান্ত্রিক হয়েছে। আর তৃতীয়ত, প্রত্যেক আধিকারিকের জন্য তাঁর ক্ষমতা এবং প্রত্যাশা হিসেবে তাঁর দায়িত্বও ঠিক করে দেওয়া যাচ্ছে। এই দৃষ্টিকোণ নিয়ে কাজ করার পেছনে ভাবনা হল যখন আপনারা প্রতিটি ভূমিকা খুব ভালোভাবে পালন করবেন তখন আপনারা নিজেদের সমগ্র জীবনেও ইতিবাচক থাকবেন। এই ইতিবাচকতা আপনাদের সাফল্যের পথ খুলে দেবে, আপনাকে একজন কর্মযোগী রূপে জীবনের পথে আনন্দের অনেক বড় কারণ হিসেবে প্রতিপন্ন করবে।

 

বন্ধুগণ,

 

বলা হয়, জীবন একটি গতিশীল অবস্থা। প্রশাসনও তো একটি গতিশীল পরিস্থিতি। সেজন্য আমরা স্পন্দনশীল সরকারের কথা বলি। একজন সিভিল সার্ভেন্টের জন্য সব থেকে বেশি প্রয়োজনীয় হল আপনারা দেশের সাধারণ মানুষের সঙ্গে নিয়মিত যুক্ত থাকাযখন আপনারা সাধারণ মানুষের সঙ্গে যুক্ত থাকবেন, তখন দেখবেন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় কাজ করা অনেক সহজ হয়ে উঠবে। আপনারা ফাউন্ডেশন টেনিং এবং প্রফেশনাল ট্রেনিং সম্পূর্ণ হওয়ার পর ফিল্ড ট্রেনিং-এর জন্যও যাবেন। আপনাদের প্রতি আমার পরামর্শ হল, আপনারা এই ফিল্ডে কাজ করার সময় জনগণের সঙ্গে যত বেশি সম্ভব যুক্ত হবেন, তাঁদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকবেন না। আপনার মস্তিষ্কে কখনও নিজের জন্য 'বাবু' ব্যাপারটা আসতে দেবেন না। আপনি যে মাটি থেকে উঠে এসেছেন, যে পরিবার, সমাজ থেকে উঠে এসেছেন, তাকে কখনও ভুলবেন না। সমাজের সঙ্গে যুক্ত হতে থাকবেন, আরও যুক্ত হবেন, আরও যুক্ত হবেন, আরও যুক্ত হবেন। এভাবে একটা সময় সমাজ জীবনে বিলীন হয়ে যাবেন। তবেই সমাজ আপনার জীবনে শক্তির আধার হয়ে উঠবে। আপনার দুটি হাত তখন সহস্র বাহু হয়ে উঠবে। এই সহস্র বাহু হল জনশক্তি। একে বোঝার, একে রপ্ত করার চেষ্টা অবশ্যই করবেন। আমি প্রায়ই বলি, সরকার শীর্ষস্থান থেকে চলে না। নীতিগুলি যে জনগণের জন্য তৈরি হয়েছে, নীতি প্রনয়ণে তাঁদের সমাবেশও অত্যন্ত জরুরি। জনগণ কেবল সরকারের নীতিগুলি বা সরকারের কর্মসূচিগুলির গ্রাহক নন, জনগণই হল আসল চালিকাশক্তি। সেজন্য আমাদের সরকার থেকে প্রশাসনের দিকে এগোনোর বেশি প্রয়োজন রয়েছে।

 

বন্ধুগণ,

 

এই অ্যাকাডেমি থেকে বেড়িয়ে যখন আপনারা এগিয়ে যাবেন, আপনাদের সামনে দুটো পথ থাকবে। একটি পথ খুব সহজ। সেগুলি হচ্ছে সুবিধার, নাম এবং যশের পথ। আরেকটি পথ হল যেখানে চ্যালেঞ্জ থাকবে, সমস্যা থাকবে, সংঘর্ষ থাকবে। কিন্তু আমি আপনাদের নিজের অভিজ্ঞতা থেকে আজ একটি কথা বলতে চাই। আপনাদের আসল সমস্যা তখনই হবে যখন আপনারা সহজ রাস্তাটি বেছে নেবেন। আপনারা হয়তো দেখেছেন, যে পথ সোজা হয়, কোনও মোড় থাকে না, সেখানে সবচাইতে বেশি আকস্মিক দুর্ঘটনা হয়। কিন্তু যে পথ বাঁকা-ত্যারা হয় এবং অনেক মোড় থাকে, সেখানে গাড়ির চালকেরা অনেক সতর্ক থাকেন, সে পথে আকস্মিক দুর্ঘটনা অনেক কম হয়। আর সেজন্য সহজ-সরল রাস্তা কখনও কখনও চলার পথে অনেক কঠিন হয়ে ওঠে। রাষ্ট্র নির্মাণের ক্ষেত্রে আত্মনির্ভর ভারতের যে বড় লক্ষ্যের দিকে আপনারা পা বাড়াতে চলেছেন, সেখানে সহজ পথই পাবেন তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। আর এটা মনে মনে কল্পনাও করা উচিৎ নয়। সেজন্য যখন আপনারা প্রতিটি সমস্যা একে একে সমাধান করে এগিয়ে যাবেন, জনগণের 'ইজ অফ লিভিং' বৃদ্ধির জন্য নিরন্তর কাজ করবেন, তখন এর মাধ্যমে শুধু আপনারাই লাভবান হবেন না, গোটা দেশ লাভবান হবে আর আপনাদেরই চোখের সামনে স্বাধীনতার ৭৫তম বছর থেকে স্বাধীনতার শততম বছরের দিকে যাত্রা ফলে ফুলে ভরে ওঠা সমৃদ্ধ ভারত দেখার সময় হবে। আজ দেশ যে ছন্দে কাজ করছে, সেখানে আপনাদের মতো সমস্ত আমলাদের ভূমিকা 'ন্যূনতম সরকার অধিকতম প্রশাসন'-এর ভূমিকা হবে। আপনাদের এটা সুনিশ্চিত করতে হবে যে নাগরিকদের জীবনে আপনাদের দখল কিভাবে কম হবে। সাধারণ মানুষের ক্ষমতায়ন কিভাবে হবে!

 

আমাদের উপনিষদে বলা হয়েছে - ন তৎ দ্বিতীয়ম অস্তিঅর্থাৎ, কোনও দ্বিতীয় নেই। কেউ আমার থেকে আলাদা নয়। যে কাজই করবেন, যার জন্যই করবেন, নিজের ভেবে করবেন। আর আমি নিজস্ব অভিজ্ঞতা থেকে বলব, যখন আপনি নিজের বিভাগকে সঙ্গে নিয়ে, সাধারণ মানুষদের নিজের পরিবারের মানুষ ভেবে কাজ করবেন, তখন আপনার কখনও ক্লান্তি আসবে না। সবসময়ই আপনি নতুন প্রাণশক্তিতে ভরপুর থাকবেন। বন্ধুগণ, ফিল্ড পোস্টিং-এর সময় আমরা এটাও দেখেছি যে আধিকারিকদের পরিচয় অন্যভাবেও গড়ে ওঠে, তিনি তাঁর নিজের ধরাবাধা কাজের বাইরে কী কী করেছেন, যা কিছু প্রচলিত তার বাইরে কী কী করেছেন! আপনারাও ফিল্ডে ফাইল থেকে বেরিয়ে, রুটিন থেকে একটু সরে গিয়ে নিজের অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য, জনগণের জন্য কী কী করলে তার প্রভাব স্বতন্ত্র হবে, তার পরিণাম ভিন্ন হবে সেটা দেখবেন। উদাহরণ হিসেবে আপনারা যে জেলায়, ব্লকগুলিতে কাজ করবেন সেখানে এমন অনেক কিছু থাকবে, এমন অনেক পণ্য উৎপাদিত হবে যেগুলির হয়তো আন্তর্জাতিক সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু সেই পণ্যগুলির, সেই শিল্পকলাগুলির, সেই শিল্পীদের আন্তর্জাতিক হওয়ার জন্য স্থানীয় সমর্থনের প্রয়োজন রয়েছে। এই সমর্থন আপনাকেই করতে হবে। এই দৃষ্টিভঙ্গি আপনাকেই প্রয়োগ করতে হবে। এভাবে আপনারা যে কোনও একজন স্থানীয় উদ্ভাবকের খোঁজে থাকবেন এবং তাঁর কাজে একজন বন্ধুর মতো তাঁকে সাহায্য করতে পারেন। হয়তো আপনার সহযোগিতায় সেই উদ্ভাবক সমাজের জন্য অনেক বড় অবদান রাখতে এগিয়ে আসবেন! এমনিতে আমি জানি, আপনারা হয়তো ভাবছেন, সবকিছু তো করেই নেব, কিন্তু মাঝে যদি বদলি হয়ে যাই তাহলে কী হবে? আমি যে টিম ভাবনা নিয়ে কথা শুরু করেছিলাম ... করেছিলাম না? সেটা এজন্যই শুরু করেছিলাম। যদি আপনি আজ এক জায়গায় আছেন, কাল অন্য জায়গায়, তবুও আপনি সেই প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবেন। নিজের লক্ষ্যকে ভুলবেন না। আপনার পরে যিনি দায়িত্ব গ্রহণ করবেন তাঁর ওপর আস্থা রাখুন, তাঁকে এই কাজের দায়িত্ব দিয়ে যান এবং এরপরেও তাঁর ওপর আস্থা রেখে যান এবং তাঁকে উৎসাহ দিয়ে যান। যেভাবে সম্ভব তাঁকে সাহায্যও করুন। আপনার স্বপ্নগুলিকে আপনার পরবর্তী প্রজন্ম বাস্তবায়িত করবে। যে নতুন আধিকারিকরা আসবেন, আপনি তাঁদেরকেও এভাবে নিজের লক্ষ্য পূরণের অংশীদার করে তুলতে পারেন।

 

বন্ধুগণ,

 

আপনারা যেখানেই যান না কেন, আপনাদের আরেকটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে। আপনারা যে কার্যালয়ের দায়িত্ব সামলাবেন, তার বোর্ডে লেখা আপনার কার্যকালের তারিখ দিয়ে যেন আপনার পরিচয় না হয়। আপনার পরিচয় যেন হয় আপনার কাজের মাধ্যমে। হ্যাঁ, ক্রমবর্ধমান পরিচয়ের মাধ্যমে আপনাকে সংবাদমাধ্যম এবং সোশ্যাল মিডিয়াও অনেক বেশি আকর্ষণ করবে। ভালো কাজ করলে সংবাদমাধ্যমে তা নিয়ে আলোচনা হওয়া একথা আর সংবাদমাধ্যমে আলোচনা হওয়ার জন্য কাজ করা অন্য কথা। আপনাকে এই দুটোর মাঝখানে পার্থক্য বুঝে এগোতে হবে। আপনাদের মনে রাখতে হবে যে সিভিল সার্ভেন্টদের একটি প্রকৃতি হল নামহীন থেকে কাজ করে যাওয়া। আপনারা স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত যে দীর্ঘ সময়, সেদিকে যদি তাকান দেখবেন, কখনও কখনও খুব প্রতিভাবান মানুষের কাজের কথা আমরা শুনেছি। কিন্তু তাঁরা তাঁদের দীর্ঘ কার্যকালে নামহীনই থেকে গেছেন। কেউ তাঁদের নাম জানেনি। অবসর নিয়ে নিয়েছেন, তারপর যখন কেউ তাঁদেরকে নিয়ে লিখেছেন, তখন জানতে পারা গেছে যে এই 'বাবু' দেশকে এতবড় উপহার দিয়ে গেছেন। আপনারা এ ধরনের মানুষকেই যেন আদর্শ অনুসরণ করেন। আপনাদের আগে ৪-৫ দশক ধরে যে সিনিয়ররা কাজ করেছেন, তাঁরা অত্যন্ত অনুশাসনের সঙ্গে এই জিনিসটা পালন করেছেন। আপনাদেরও এদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

 

বন্ধুগণ,

 

আমি যখন আমার নবীন রাজনৈতিক কর্মী-বন্ধুদের সঙ্গে, আমাদের নবীন বিধায়ক কিম্বা সাংসদদের সঙ্গে মিলিত হই তখন কথায় কথায় আমি অবশ্যই তাঁদেরকে বলি, লোক দেখানো এবং ছবি ছাপানো - এই দুটি রোগ থেকে দূরে থাকবেন। আমি আপনাদেরও এটাই বলব, লোক দেখানো এবং ছবি ছাপানো কিংবা টিভিতে দেখানো বা খবরের কাগজে ছাপানোর যে রোগ এটা যার হবে তিনি তাঁর লক্ষ্য পূরণে কখনই সফল হবেন না। আপনারা যে লক্ষ্য নিয়ে সিভিল সার্ভিস করতে এসেছেন সেটাই যেন আপনাদের জীবনে মুখ্য থাকে।

 

বন্ধুগণ,

 

আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আপনারা সবাই নিজেদের সেবার মাধ্যমে, নিজেদের সমর্পণের মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন যাত্রায়, দেশকে আত্মনির্ভর করে তোলার ক্ষেত্রে অনেক বড় অবদান রাখবেন। আমার কথা শেষ করার আগে আমি আপনাদেরকে একটি কাজ দিতে চাই। আপনারা করবেন? সবাই হাত ওপরে তুলে যদি স্বীকৃতি দেন তবেই আমি বলব, তবেই আমি ভাবব আপনারা করবেন। সবার হাত ওপরে দেখতে চাই। কী করবেন?

আচ্ছা তাহলে শুনুন। আপনাদেরও 'ভোকাল ফর লোকাল' স্লোগানটি হয়তো শুনতে ভালো লাগে। লাগে না? নিশ্চয়ই লাগে। আপনারা একটা কাজ করবেন। আগামী দু'চারদিনের মধ্যে আপনাদের কাছে যা আছে, যা দৈনন্দিন কাজে লাগে, সেরকম কত জিনিসই তো আছে। সেগুলি ভারতে তৈরি কিনা, সেগুলিতে ভারতের জনগণের ঘামের গন্ধ পান কিনা, সেটা লক্ষ্য করুন। যে পণ্যগুলিতে ভারতের নবীন প্রজন্মের মেধার ছাপ সুস্পষ্ট হয়, সেই জিনিসগুলির একটি তালিকা তৈরি করুন। আর আরেকটি তালিকা তৈরি করুন যেখানে আপনাদের জুতো থেকে শুরু করে মাথার চুল অবধি কোন কোন বিদেশি জিনিস ব্যবহৃত হয়, কোন কোন জিনিস আপনার ঘরে রয়েছে, আপনার ব্যাগে রয়েছে যেগুলি আপনারা ব্যবহার করেন একটু দেখুন আর মনে মনে ভাবুন যে এর মধ্যে কোন প্রয়োজনীয় জিনিসটি আজ ভারতে পাওয়া যায় না কিংবা পাওয়া সম্ভব নয়। আমার মনে হয় আপনাদের তালিকা থেকে এটা সুস্পষ্ট হয়ে উঠবে যে ৫০টির মধ্যে ৩০টি এমন জিনিস পাবেন যেগুলির স্থানীয় বিকল্প রয়েছে। সম্ভবত, সেগুলির তেমন প্রচার নেই বলে সেগুলি জনমনে প্রভাব ফেলতে পারেনি। আপনারা চেষ্টা করুন সেই বিকল্পটিকে ব্যবহার করা যায় কিনা।

 

দেখুন, আত্মনির্ভরতার সূত্রপাত 'আত্ম' থেকে হওয়া উচিৎ। আপনারা 'ভোকাল ফর লোকাল' অভিযানের সূত্রপাত নিজের জীবনে কিভাবে শুরু করতে পারেন। দ্বিতীয়ত, যে প্রতিষ্ঠানের নাম লালবাহাদুর শাস্ত্রীর সঙ্গে যুক্ত, সেই প্রতিষ্ঠানের গোটা ক্যাম্পাসে এবং আপনাদের কামরায়, আপনাদের অডিটোরিয়ামে, আপনাদের ক্লাসরুমে প্রত্যেক জায়গায় কতগুলি বিদেশি জিনিস ব্যবহৃত হয়, তারও একটি তালিকা প্রস্তুত করুন। আপনারা ভাবুন যে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য এসেছি। যেখান থেকে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার মতো একটি সম্পূর্ণ প্রজন্ম গড়ে উঠছে, যেখানে বীজ ধারণ করা হয়, সেই স্থানেও 'ভোকাল ফর লোকাল' আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে উঠতে পারছে কিনা। আপনারা ভালোভাবে দেখুন। খুব মজা পাবেন। আমি এটা বলছি না যে আপনারা অন্য বন্ধুদেরকেও এ ব্যাপারে চাপ দিন। আপনারা নিজের জন্য করুন। আপনারা দেখবেন, বিনা কারণে এমন অনেক জিনিস আপনাদের ব্যবহার্য তালিকায় রয়েছে যেগুলির ভারতীয় বিকল্প থাকা সত্ত্বেও আপনারা বিদেশি জিনিস কিনেছেন। আপনারা জানতেনও না যে সেগুলি বিদেশ থেকে আমদানি করা। দেখুন, ভারতকে আত্মনির্ভর করে তোলার জন্য আমাদের সবাইকে 'আত্ম' থেকে শুরু করেই দেশকে যত দ্রুত সম্ভব আত্মনির্ভর করে তুলতে হবে।

 

আমার প্রিয় বন্ধুগণ, আমার নবীন বন্ধুগণ, দেশের স্বাধীনতার ১০০ বছর, স্বাধীনতার ১০০ বছরের স্বপ্ন, স্বাধীনতার ১০০ বছরের সঙ্কল্প, স্বাধীনতা-পরবর্তী প্রজন্ম এখন আপনাদের হাতে দেশকে সমর্পণ করে দিয়ে যাচ্ছে। দেশ আপনাদের হাতে পরবর্তী ২৫ থেকে ৩৫ বছর পরিচালিত হবে। এত বড় উপহার আপনারা পাচ্ছেন। আপনারা এই উপহারটিকে জীবনের সৌভাগ্য হিসেবে গ্রহণ করে নিজেদের হাতে নিন। মনের মধ্যে কর্মযোগী ভাব জাগিয়ে নিজেদের করকমলে এই দায়িত্ব গ্রহণ করুন। কর্মযোগের পথে চলার জন্য আপনারা এগিয়ে যান। এই শুভকামনার পাশাপাশি আপনাদের সবাইকে আরেকবার অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই। আমি আপনাদের অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই। আর আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই, প্রতি মুহূর্তে আমি আপনাদের সঙ্গে আছি। আমি প্রতি মুহূর্তে আপনাদের সঙ্গে আছি। যখনই প্রয়োজন হবে, আপনারা নিঃসঙ্কোচে আমার দরজায় নক করতে পারেন। যতক্ষণ আমি আছি, যেখানেই থাকি না কেন, আমি আপনাদের বন্ধু, আপনাদের সাথী, আমরা সবাই মিলে স্বাধীনতার ১০০ বছরের স্বপ্ন বাস্তবায়িত করার কাজ এখন থেকেই শুরু করব। আসুন, আমরা সবাই এগিয়ে যাই।

 

অনেক অনেক ধন্যবাদ।

 

 

CG/SB/DM



(Release ID: 1669302) Visitor Counter : 294