প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

প্রধানমন্ত্রী গল্প বলার গুরুত্বের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন

Posted On: 27 SEP 2020 1:35PM by PIB Kolkata

নতুনদিল্লি, ২৭শে সেপ্টেম্বর, ২০২০

 

 

মন কি বাতের সর্বশেষ পর্বে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী গল্প বলার গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেছেন।  

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, গল্প বলার ইতিহাস মানব সভ্যতার মতোই পুরানো। মানুষের মধ্যে যে সৃজনশীল এবং সংবেদনশীল দিক আছে গল্প তাকেই তুলে ধরে। দীর্ঘদিন ধরে একজন পরিব্রাজক হিসাবে  ঘুরে বেড়ানোর সময়  প্রতিদিন নতুন নতুন গ্রাম, নতুন মানুষ, নতুন পরিবারের সঙ্গে তাঁর আলাপ হতো। কিন্তু তিনি যখন বাচ্চাদের  একটা গল্প শোনাতে বলতেন, তখন  তারা  বলত যে আঙ্কেল আমরা আপনাকে গল্প না, একটা চুটকি শোনাবো আর আপনিও চুটকি বলবেন। অর্থাৎ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, তাদের জীবন চুটকিতেই আটকে গেছে।

  ভারতে গল্প বলার সমৃদ্ধ ঐতিহ্য নিয়ে আলোচনার সময় শ্রী মোদী বলেছেন যে আমরা সেই দেশের বাসিন্দা যেখানে হিতোপদেশ এবং পঞ্চতন্ত্রের ঐতিহ্য রয়েছে। যেখানে, গল্পে পশুপাখি ও পরীদের একটি কাল্পনিক জগৎ তৈরী করা হয় যার মাধ্যমে আমরা বিবেক ও বুদ্ধিমত্তার পাঠ নিতে পারি খুব সহজেই। আমাদের এখানে গল্প বলার একটা সুপ্রাচীন পরম্পরা আছে।

 আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরণের লোককাহিনীর কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তামিলনাড়ু এবং কেরালায় গল্প বলার একটি খুব আকর্ষণীয় পদ্ধতি রয়েছে। একে বলা হয় 'বিল্লুপাট'। এটিতে কাহিনী এবং সঙ্গীতের খুব আকর্ষণীয় মিশেল রয়েছে। ভারতে পুতুল নাচের ঐতিহ্যও রয়েছে। আজকাল বিজ্ঞান এবং কল্পবিজ্ঞানের সঙ্গে সম্পর্কিত গল্প বেশ জনপ্রিয় হয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী জানান,  কিছু মানুষ গল্প বলার শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যেতে প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিচ্ছেন। তিনি গাথাস্টোরি ডট ইন-এর মতো ওয়েবসাইট-এর কথা উল্লেখ করেন। অমর ব্যাস, আই আই এম আহমেদাবাদ থেকে এমবিএ করার পরে বিদেশে চলে যান, তারপর আবার দেশে ফিরে আসেন। বর্তমানে তিনি বেঙ্গালুরু-তে আছেন এবং কিছুটা অবসর সময় বার করে গল্প বলার এই আকর্ষণীয় কাজটির সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। এমন অনেক প্রচেষ্টা রয়েছে যা গ্রামীণ ভারতের গল্পগুলিকে জনপ্রিয় করে তুলতে অগ্রণী ভূমিকা নিচ্ছে। বৈশালী ব্যবহারে দেশপাণ্ডের মতো অনেক মানুষ আছেন যারা মারাঠি ভাষায় এটিকে  জনপ্রিয় করছেন। চেন্নাইয়ের শ্রীবিদ্যা বির রাঘাভনও আমাদের সংস্কৃতি সম্পর্কিত গল্পের প্রচার ও প্রসারে নিজেকে নিয়োজিত করেছেন। তেমনি কথালয় এবং দ্য ইন্ডিয়ান স্টোরি টেলিং নেটওয়ার্ক নামের দুটি ওয়েবসাইটও এই ক্ষেত্রে দুর্দান্ত কাজ করছে। গীতা রমানুজন কথালয় ডট ওআরজিতে গল্পগুলোকে একত্রিত করেছেন, তেমনি দ্য ইন্ডিয়ান স্টোরি টেলিং নেটওয়ার্কের মাধ্যমেও বিভিন্ন শহরের গল্পকারদের একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করা হচ্ছে। বেঙ্গালুরুতে একজন বিক্রম শ্রীধর আছেন যিনি বাপু সম্পর্কিত গল্পগুলি নিয়ে খুব উৎসাহী। এরপর অনুষ্ঠানে বেঙ্গালুরু স্টোরি টেলিং সোসাইটির অপর্ণা আথ্রেয়া এবং অন্যান্যরা যোগ দেন। তাঁরা রাজা কৃষ্ণদেব রায় ও তেলেনি রামার গল্প শোনান।

শ্রী মোদী, যারা গল্প শোনান, তাঁদের উদ্দেশে আহ্বান জানান, আমাদের দেশের নবীন প্রজন্মকে কীভাবে আমাদের  মহাপুরুষ, মহীয়সী মা বোনদের সম্পর্কে অবহিত করা যায়, গল্পের মাধ্যমে কীভাবে তাদের সাথে যুক্ত করা যায়, আমরা গল্প ও গল্প বলাকে কীভাবে আরো বেশি প্রচার করতে পারি, জনপ্রিয় করতে পারি তা নিয়ে চিন্তা ভাবনার জন্য। প্রতিটি ঘরে ভালো গল্প বলা, ভালো গল্প বাচ্চাদের শোনানো এটি জনজীবনের খুব বড় সম্পদ। এই পরিবেশ কিভাবে তৈরি করা যায় সে লক্ষ্যে আমাদের সবাইকে একসঙ্গে মিলে কাজ করতে হবে। তিনি সকলের কাছে অনুরোধ করেন, পরিবারের সদস্যরা একজোট হলে  যাতে তাঁরা অবশ্যই গল্প বলার জন্য কিছুটা সময় বার করেন। পরিবারের প্রতিটি সদস্য প্রত্যেক সপ্তাহের জন্য একটি বিষয় স্থির করার পরামর্শ দেন, যেমন করুণা, সংবেদনশীলতা, পরাক্রম, ত্যাগ, শৌর্য - যেকোনো একটি আবেগ। এবার পরিবারের সব সদস্য ওই সপ্তাহে সেই একটি বিষয়ের ওপরই গল্প খুঁজবেন এবং পরিবারের সবাই মিলে একেক জন একেকটি গল্প বলবেন। স্বাধীনতার ৭৫ বছর উদযাপনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে  আমাদের পরাধীনতার সময়কালের কিছু প্রেরণাদায়ক ঘটনাকে গল্পের মাধ্যমে প্রচার করার তিনি পরামর্শ দিয়েছেন। বিশেষত, ১৮৫৭ থেকে ১৯৪৭ সালের মধ্যে ঘটে যাওয়া ছোট, বড় সকল ঘটনার সঙ্গেই গল্প বলার মাধ্যমে আমাদের বর্তমান প্রজন্মকে পরিচিত করানো যেতে পারে বলে শ্রী মোদী অনুষ্ঠানে উল্লেখ করেছেন।

 

 

CG/CB



(Release ID: 1659586) Visitor Counter : 157