শ্রমওকর্মসংস্থানমন্ত্রক

ঐতিহাসিক ‘গেম চেঞ্জার’ শ্রম আইন কার্যকর করার জন্য সংসদে তিনটি শ্রম বিধি পাশ

Posted On: 23 SEP 2020 4:28PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লী, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০
 
 
 
 
রাজ্যসভায় বুধবার ১) শিল্প সস্পর্কিত বিধি ২০২০, ২) পেশাগত সুরক্ষা, স্বাস্থ্য ও কার্যনির্বাহী শর্তাদি বিধি ২০২০, এবং ৩) সামাজিক সুরক্ষা বিধি ২০২০ পাশ হয়েছে। মঙ্গলবার লোকসভায় এই তিনটি শ্রম বিধি পাশ হয়। 
 
বিল নিয়ে আলোচনায় শ্রী গঙ্গোয়ার এই বিধিগুলিকে ঐতিহাসিক ‘গেম চেঞ্জার’ হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, এগুলি শ্রমিক, শিল্প এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে প্রয়োজনীয় সামঞ্জস্য বজায় রাখবে। তিনি বলেন, এই শ্রম বিধিগুলি দেশের শ্রমিকদের কল্যাণে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে প্রমাণিত হবে। শ্রী গঙ্গোয়ার জানিয়েছেন, ২০১৪ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত আমাদের সরকার শ্রমিকদের কল্যাণে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। শ্রম বিধি পাশের মাধ্যমে সার্বিক শ্রম সংস্কারের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে বলেও তিনি জানান। পেশাগত সুরক্ষা, স্বাস্থ্য ও কার্যনির্বাহী শর্তবিধি কর্মীদের বিশেষত মহিলাদের জন্য নিরাপদ কাজের পরিবেশ তৈরি করবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। মন্ত্রী আরও বলেন, প্রতিটি সংস্থায় বিরোধ নিষ্পত্তি ব্যবস্থাপনার জন্য শিল্প সম্পর্কিত বিধি কার্যকর হবে। এতে শ্রমিক এবং সংস্থার মধ্যে বিরোধ নিষ্পত্তি প্রক্রিয়া নিষ্পন্ন করা সুনিশ্চিত হবে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, সামাজিক সুরক্ষা বিধি সংগঠিত ও অসংগঠিত ক্ষেত্রে কর্মীদের সামাজিক সুরক্ষার আওতায় নিয়ে আসবে। এই সামাজিক সুরক্ষার আওতায় সংস্থান অসংগঠিত কর্মীদের জন্য ইপিএফও, ইএসআইসি-র সুবিধা প্রদান করবে। এই বিধিতে গৃহ নির্মাণ ও অন্যান্য নির্মাণ শ্রমিক, গর্ভবতী মহিলা শ্রমিকদের জন্য গ্র্যাচুয়িটি এবং সামাজিক সুরক্ষা তহবিল গঠনের বিষয় উল্লেখ রয়েছে। শ্রী গঙ্গোয়ার আরও বলেন, ‘এই বিধির মাধ্যমে আমরা সর্বজনীন সামাজিক সুরক্ষার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিভঙ্গী বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে চলেছি।’ 
 
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর দূরদর্শী নেতৃত্বে এই সরকার ২০১৪ সাল থেকে বাবা সাহেব আম্বেদকরের স্বপ্ন বাস্তবায়নে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ‘শ্রমেব জয়তে’ এবং ‘সত্যমেব জয়তে’কে সমান গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কোভিড-১৯ মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সংগঠিত এবং অসংগঠিত ক্ষেত্রে যুক্ত শ্রমিকদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা ও অন্যান্য কল্যাণমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বর্তমান মন্ত্রিসভা নিরলস প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, এই সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে একাধিক অভূতপূর্ব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। আমাদের বোনেদের মাতৃত্বকালীন ছুটি ১২ সপ্তাহ থেকে বাড়িয়ে ২৬ সপ্তাহ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী রোজগার প্রোৎসাহন যোজনার আওতায় মহিলাদের খনিতে কাজ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ইপিএফও-য় সাধারণ কর্মসংস্থান এবং কল্যাণমূলক প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এমনকি আমাদের প্রিয় নাগরিকদের জন্য ইএসআইসি-র সুবিধার সীমা সম্প্রসারণ করা হয়েছে। 
 
২৯টি শ্রম আইনকে এক জায়গায় নিয়ে এসে ৪টি শ্রমবিধি তৈরি করার বিষয়ের কথা উল্লেখ করে শ্রী গঙ্গোয়ার বলেন, এই শ্রম বিধি চূড়ান্ত করার আগেই সরকার বিভিন্ন পক্ষের কাছ থেকে একাধিক পরামর্শ গ্রহণ করেছে। ৯টি ত্রিপাক্ষিক পরামর্শমূলক বৈঠক ছাড়াও ৪টি সাব কমিটির সভা, ১০টি আন্তঃমন্ত্রক সংক্রান্ত পরামর্শ গ্রহণ, শ্রমিক সংগঠন, চাকরিতে নিয়োগকারী সমিতি, রাজ্য সরকার, বিশেষজ্ঞ, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির সঙ্গে আলোচনা চালিয়েছে। সাধারণ নাগরিকদের মতামত গ্রহণ করার জন্য ২-৩ মাস সময়ও দেওয়া হয়েছে। 
 
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আরও বলেন, শ্রম সংস্কারের উদ্দেশ্যই হল পরিবর্তিত বিশ্বের সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রেখে কর্মক্ষেত্রে উপযুক্ত শ্রম আইন তৈরি করা। শ্রমিক ও শিল্পের প্রয়োজনীয় ভারসাম্য বজায় রেখে একটি কার্যকরী ও স্বচ্ছ ব্যবস্থাপনা তৈরি করার লক্ষ্যেই এই শ্রম বিধি নিয়ে আসা হয়েছে। তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৭৩ বছরে পারিপার্শিক পরিস্থিতি, প্রযুক্তি, কাজের পদ্ধতি এবং কাজের প্রকৃতিতে অনেক পরিবর্তন এসেছে। এই পরিবর্তনের মাধ্যমে ভারত যদি তার শ্রম আইনগুলিতে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন না নিয়ে আসে তবে আমাদের শ্রমিকদের কল্যাণ ও শিল্পের উন্নয়ন উভয়ই পিছিয়ে থাকবে বলে শ্রী গঙ্গোয়ার জানান। 
 
তিনি বলেন, শ্রমিক কল্যাণ এবং আত্মনির্ভর শ্রমিকের অধিকারের কাঠামো ৪টি স্তম্ভের ওপর ভিত্তি করে দাঁড়িয়ে রয়েছে। প্রথম স্তম্ভটি হল শ্রমিকদের বেতন নিশ্চয়তা। এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার ৭৩ বছর পরেও এবং ৪৪টি শ্রম আইন থাকা সত্ত্বেও ভারতের ৫০ কোটি শ্রমিকের মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশের ন্যূনতম মজুরির আইনগত অধিকার ছিলনা এবং অনেক শ্রমিকই সময়মতো বেতন পেতেন না। শ্রী গঙ্গোয়ার আরও বলেন, ‘এই প্রথমবার আমাদের সরকার এই বৈষম্য দূর করতে কাজ করেছে এবং ৫০ কোটি সংগঠিত ও অসংগঠিত ক্ষেত্রে যুক্ত কর্মীদের ন্যূনতম মজুরি ও সময়মতো বেতন পাওয়ার বিষয়টিকে আইনী অধিকার দিয়েছে।’ 
 
দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হল শ্রম সুরক্ষা। এই প্রসঙ্গে শ্রী গঙ্গোয়ার বলেন, শ্রমিকদের স্বাস্থ্য রক্ষা এবং একটি সুখী জীবন-যাপনের দিকে লক্ষ্য রেখে নিরাপদ কাজের পরিবেশ প্রয়োজন। তিনি বলেন, এজন্য সরকার পেশাগত সুরক্ষা, স্বাস্থ্য ও কার্যনির্বাহী শর্তাদি বিধি নিয়ে এসেছে। এই প্রথমবার নির্দিষ্ট বয়েসের ওপর শ্রমিকদের জন্য বার্ষিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সুরক্ষার সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়গুলি কার্যকর করার জন্য জাতীয় পেশাগত সুরক্ষা ও স্বাস্থ্য পর্ষদ গঠন করা হয়েছে। নিরাপদ কাজের পরিবেশ প্রদানের জন্য শ্রমিক ও নিয়োগকারী সংস্থা একত্রে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। এজন্য সমস্ত প্রতিষ্ঠানে একটি সুরক্ষা কমিটি গঠন করার সংস্থান রয়েছে। 
 
তিনি সভায় আরও জানান, এই পেশাগত সুরক্ষা, স্বাস্থ্য ও কার্যনিবাহী শর্তাদি বিধিতে শ্রমিকদের ছুটির বিষয়টি বিশেষ সুবিধা প্রদান করা হয়েছে। ২৪০ দিনের পরিবর্তে ১৮০ দিনের কাজ করা হলে প্রতি ২০ দিন অন্তর ১ দিন করে ছুটি নেওয়ার সুযোগ থাকছে শ্রমিকদের। এছাড়াও এই বিলটিতে অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাও প্রদান করা হয়েছে। কর্মস্থলে কোন শ্রমিকের মৃত্যু হলে বা আহত হলে নিয়োগ কর্তার ওপর আরোপিত জরিমানার কমপক্ষে ৫০ শতাংশ ওই শ্রমিককে প্রদান করার সংস্থান রয়েছে এই বিলে। শ্রমিকদের একটি নিরাপদ কাজের পরিবেশ প্রদান করার জন্য সামগ্রিক চেষ্টা চালানো হয়েছে এই বিলের মাধ্যমে।
 
তিনি বলেন, এই প্রথমবার পুরুষদের মতো মহিলাদেরও একই কাজ করার স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। এবার থেকে নারীরাও তাঁদের পছন্দ অনুযায়ী যেকোন প্রতিষ্ঠানে রাতে কাজ করতে পারবেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, ‘তবে নিয়োগ কর্তাকে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত উপরোক্ত সমস্ত প্রয়োজনীয় সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।’
 
তিনি আরও বলেন, শ্রমিকদের জন্য তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভটি হল সম্প্রসারিত সামাজিক সুরক্ষা। এই সামাজিক সুরক্ষা বিধিতে ইএসআইসি এবং ইপিএফও-র পরিধি বাড়ানো হয়েছে। এখন থেকে দেশের ৭৪০টি জেলায় ইএসআইসি-র সুবিধা মিলবে। এর পাশাপাশি চা/কফি শ্রমিক, অসংগঠিত ক্ষেত্রে যুক্ত শ্রমিক, ঠিকাদারি সংস্থার আওতায় অস্থায়ী কর্মী এবং প্ল্যাটফর্ম কর্মীদের ইএসআইসি-র আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। ১০ জনের কম শ্রমিক রয়েছে এমন প্রতিষ্ঠানগুলিও ইএসআইসি-র আওতাভুক্ত হতে পারে। যদি কোনও প্রতিষ্ঠানে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ হয়ে থাকে তবে সেই প্রতিষ্ঠানকে অনিবার্যভাবে ইএসআইসি-র আওতায় আনা হবে। যদি সেই প্রতিষ্ঠানে ১ জন শ্রমিকও থাকে তাহলেও এই সুবিধার আওতাভুক্ত হবে। একইভাবে ইপিএফও-র সুবিধার পরিধি বাড়ানো হয়েছে। এখন যেসব প্রতিষ্ঠানে ২০ বা তার চেয়ে বেশি কর্মী রয়েছে তাদের ইপিএফও-র আওতায় নিয়ে আসা হবে। ২০ জনেরও কম কর্মী এবং স্বনিযুক্তি কর্মসংস্থান ক্ষেত্রে কর্মীরা স্বেচ্ছায় ইপিএফও-র আওতাভুক্ত হতে পারেন। সামাজিক সুরক্ষা বিধিতে এই সুবিধা প্রদান করা হয়েছে। 
 
৪০ কোটি অসংগঠিত ক্ষেত্রে কর্মীদের সামাজিক সুরক্ষা প্রদানের জন্য ‘সামাজিক সুরক্ষা তহবিল’ গঠনের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানান। এই তহবিলের মাধ্যমে অসংগঠিত ক্ষেত্রে কর্মরত শ্রমিক, ঠিকাদারি সংস্থার আওতাভুক্ত অস্থায়ী কর্মী এবং প্ল্যাটফর্ম কর্মীদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প তৈরি করা হবে। দূর্ঘটনা বা মৃত্যু বিমা, মাতৃত্বকালীন সুবিধা এবং পেনশনের মতো সমস্ত ধরণের সামাজিক সুরক্ষার সুবিধা প্রদানের পরিকল্পনা এখানে রয়েছে। ৪০ কোটি শ্রমিকদের সুবিধার্থেই এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এই প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমরা সর্বজনীন সামাজিক সুরক্ষা প্রদানের প্রতিশ্রুতি পূরণের লক্ষ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।’
 
চতুর্থ স্তম্ভটি হল শিল্প সম্পর্কিত বিধি। শিল্প সংস্থাগুলিতে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখতে এই বিধি কার্যকর করা হয়েছে। এমনকি এই বিধি আরও সহজ ও সরল করা হয়েছে বলেও শ্রী গঙ্গোয়ার উল্লেখ করেন। এই বিধিতে স্থায়ী মেয়াদ ভিত্তিক কর্মচারীদের সুবিধা প্রদানের বিষয়টিকে নিয়ে আসা হয়েছে। তাদের স্বল্প সময়ের জন্য নিযুক্ত করা হলেও নিয়মিত কর্মীদের মতো চাকরির শর্ত, ছুটি, বেতন এবং সামাজিক সুরক্ষা ও গ্র্যাচুয়িটি ইত্যাদি প্রদান করা হবে বলেও তিনি জানান। স্থায়ী মেয়াদ ভিত্তিক কর্মচারীদের সুবিধা প্রদান সুনিশ্চিত করতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তারা যাতে নিয়মিত কর্মচারীর সমান সুযোগ-সুবিধা পান সেই বিষয়টি এই বিধিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও স্থায়ী মেয়াদ ভিত্তিক কর্মচারীদের প্রো-রেটা গ্র্যাচুয়িটির অধিকারও দেওয়া হয়েছে। 
 
শ্রী গঙ্গোয়ার আরও বলেন, এই শিল্প সম্পর্কিত বিধিতে শ্রমিকদের ধর্মঘটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়নি। তবে ধর্মঘটে যাওয়ার আগে শ্রমিকদের ১৪ দিনের নোটিশ দেওয়া বাধ্যতামূলক। এই সময়সীমার মধ্যে শ্রমিক এবং কর্তৃপক্ষ আলোচনার মাধ্যমে যাতে সমস্যার সমাধান ঘটাতে পারে তার জন্যই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘ধর্মঘটে শ্রমিক বা শিল্প সংস্থার কারুরই লাভ হয়না।’
 
হঠাৎ করে শ্রমিকদের ছাঁটাই, বেতন বন্ধ যাতে না করা যায় তাও সুনিশ্চিত করা হয়েছে এই আইনের মাধ্যমে। তিনি বলেন, শ্রমিকদের স্বার্থে রাজ্য সরকার প্রয়োজন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবেন।সরকার কর্মসংস্থানের লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বলে শ্রী গঙ্গোয়ার জানান।
 
মন্ত্রী আরও জানান, ২০১৯র অর্থিক সমীক্ষা অনুযায়ী দেখা গেছে  রাজস্থানে শ্রমিক ছাঁটাই রুখতে  নতুন  নিয়ম কার্যকর করার ফলে কারখানা থেকে শ্রমিকদের ছাঁটাই অভূতপূর্বভাবে হ্রাস পেয়েছে। তিনি বলেন, এই বিধি কার্যকর করার মাধ্যমে বিনিয়োগকারী সংস্থাগুলিকে দেশে বড় ধরণের কারখানা স্থাপনে উৎসাহ যোগাবে এতে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে এবং দেশে শ্রমিকরা লাভবান হবেন। 
 
শ্রী গঙ্গোয়ার আরও বলেন, শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় শ্রম সংগঠনগুলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাদের অবদানকে স্বীকৃতি জানিয়ে প্রথমবার এই আইনে শ্রম সংগঠনগুলিকে কেন্দ্রীয় ও রাজ্যস্তরে স্বীকৃতি প্রদানের সুবিধা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, শ্রমিকরা কাজ হারালে তার কর্মদক্ষতার বৃদ্ধির জন্য পুর্নঃদক্ষতা তহবিল গঠনের সংস্থান রয়েছে এই বিধিতে। এর মাধ্যমে শ্রমিকদের ১৫ দিনের বেতন দেওয়া হবে। 
 
কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে পরিযায়ী শ্রমিকদের অধিকার জোরদার করে তুলতে বিশেষ পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, পরিযায়ী শ্রমিকদের সংজ্ঞা আরও প্রশস্ত করা হয়েছে। যেসব শ্রমিক এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে কাজ করতে যান তাদের বেতন ১৮ হাজার টাকার কম হলে তারা পরিযায়ী শ্রমিকের সংজ্ঞার মধ্যে আসবেন। সরকারের কল্যাণমূলক প্রকল্পগুলির সুবিধাও পাবেন তাঁরা। এছাড়াও পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য তথ্য ভান্ডার তৈরি করা হবে। পরিযায়ী শ্রমিকরা নিজ রাজ্যে ফিরে আসার জন্য বছরে একবার করে ভ্রমণ ভাতা পাবেন। তাঁদের সুবিধার্থে পৃথক হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হবে বলেও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানান।
 
শ্রী গঙ্গোয়ার আরও জানান, শিল্প সম্পর্কিত বিধির আওতায় দেশে শিল্প স্থাপনের জন্য একাধিক লাইসেন্সের প্রয়োজন হবেনা। তিনি বলেন, ‘যতদূর সম্ভব এখন আমরা একটি সময়সীমার মধ্যে  এবং অনলাইন ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে লাইসেন্স প্রদানের ব্যবস্থা করেছি।’
 
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, এই ৪টি শ্রম বিধির মাধ্যমে আমরা একদিকে যেমন শ্রমিকদের কল্যাণ নিশ্চিত করেছি, তেমনই অন্যদিকে নতুন ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে শিল্পের বিকাশ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির প্রয়াসও চালিয়েছি। শ্রী গঙ্গোয়ার জানান, ‘নতুন শ্রম বিধি কার্যকর করার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর সবকা সাথ সাবকা বিকাশ-এর দৃষ্টিভঙ্গী সফলভাবে রূপায়িত হবে এবং ভারত উন্নত দেশের পথে যাত্রা করতে পারবে।’
 
 
 
 
CG/SS/NS


(Release ID: 1658693) Visitor Counter : 1482