প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

কোভিড-১৯ মহামারীর প্রেক্ষিতে গ্রামে ফিরে আসা প্রবাসী শ্রমিকদের কর্মসংস্থান ও জীবিকার সুযোগ বৃদ্ধির জন্য প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ রোজগার অভিযানের সূচনা করলেন

Posted On: 20 JUN 2020 2:06PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ২০ জুন, ২০২০

 

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ব্যাপক কর্মসংস্থানমূলক তথা গ্রামীণ মানুষকে নিয়ে কর্মসূচি রূপায়ণের জন্য গরিব কল্যাণ রোজগার অভিযানের সূচনা করেন। এই অভিযানের উদ্দেশ্য হ’ল – কোভিড-১৯ এর দরুণ ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসী শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেওয়ার পাশাপাশি, জীবন-জীবিকার মানোন্নয়ন ঘটানো। বিহারে খাগাড়িয়া জেলার তেলিহার গ্রাম থেকে এই অভিযানের সূচনা হয়। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আয়োজিত এই অভিযানের সূচনা অনুষ্ঠানে ৬টি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও প্রতিনিধিরা ছাড়াও একাধিক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিহারের খাগাড়িয়া জেলার তেলিহার গ্রামবাসীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

সম্প্রতি নিজ গ্রামে ফিরে আসা প্রবাসী শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের কাজকর্মের ব্যাপারেও প্রধানমন্ত্রী খোঁজখবর নেন। এছাড়াও, লকডাউনের সময় প্রবাসী শ্রমিকদের কল্যাণে যে সমস্ত কর্মসূচি চালু করা হয়েছে, সে সম্পর্কেও তিনি খোঁজখবর করেন।

প্রবাসী শ্রমিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের পর সন্তোষ প্রকাশ করে শ্রী মোদী বলেন, কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গ্রামীণ ভারত কিভাবে সমগ্র পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছে, সে কথাও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গ্রামীণ ভারতের দৃঢ় সংকল্প সমগ্র দেশ ও বিশ্বের কাছে প্রেরণাদায়ক বলেও শ্রী মোদী উল্লেখ করেন।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলি দরিদ্র মানুষ ও প্রবাসী শ্রমিকদের কল্যাণের ব্যাপারে সচেতন রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনার কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, এই কর্মসূচির আওতায় ১ লক্ষ ৭৫ হাজার কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজ সম্বলিত আত্মনির্ভর ভারত অভিযানের সূচনা হয়েছে।

বাড়ি ফিরতে আগ্রহী প্রবাসী শ্রমিকদের যাতায়াতের সুবিধার্থে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলি বিশেষ শ্রমিক এক্সপ্রেস ট্রেন পরিষেবা চালু করেছে।

প্রধানমন্ত্রী আজকের দিনটিকে ঐতিহাসিক বলে বর্ণনা করে বলেন দরিদ্র মানুষের কল্যাণ ও তাঁদের কর্মসংস্থানের জন্য এক বিরাট অভিযানের সূচনা হ’ল।

এই অভিযান আমাদের শ্রমিক ভাইবোন, যুবসম্প্রদায়, বোন ও কন্যাদের জন্য উৎসর্গ করা হ’ল। এই অভিযানের আওতায় শ্রমিকদের বাড়ির কাছেই কর্মসংস্থানের সুবিধা প্রদান করা হবে।

গরিব কল্যাণ রোজগার অভিযানের আওতায় সুস্থায়ী গ্রামীণ পরিকাঠামো গড়ে তোলার জন্য ৫০ হাজার কোটি টাকা খরচের কথা ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী।

শ্রী মোদী আরও বলেন, গ্রামগুলিতে সার্বিক উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের জন্য ২৫টি ভিন্ন ভিন্ন কর্মক্ষেত্রকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই কর্মকান্ড বা কর্মসূচিগুলি গ্রামের মানুষের আবাসন, বৃক্ষরোপণ, পানীয় জল সরবরাহ, পঞ্চায়েত ভবন, সর্বজনীন শৌচাগার, গ্রামীণ কৃষি বাজার, গ্রামীণ সড়ক সহ গবাদী পশুর আশ্রয়-স্থল, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র নির্মাণের মতো বিভিন্ন ধরনের পরিকাঠামো গড়ে তোলার চাহিদা মেটানো।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই অভিযানের আওতায় গ্রামীণ এলাকাগুলিতে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হবে। সুলভে গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে যুবা ও শিশুদের সুবিধার্থে হাইস্পীড ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদান করা অত্যন্ত জরুরি বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই প্রথমবার শহর এলাকার তুলনায় গ্রামীণ এলাকাগুলিতে ইন্টারনেটের ব্যবহার বেশি। তাই, এই বিষয়টিকে বিবেচনায় রেখে অভিযানের আওতায় ইন্টারনেট পরিষেবার জন্য ফাইবার কেবল স্থাপনের পরিকল্পনা করা হয়েছে।

এই সমস্ত কর্মকান্ডগুলি নিজের গ্রামের থেকেই এবং পরিবারের সঙ্গে সময় কাটিয়ে রূপায়িত হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আত্মনির্ভর কৃষক এক স্বনির্ভর ভারত গড়ে তোলার জন্য সমান জরুরি। তিনি আরও বলেন, সরকার এমন বহু অপ্রয়োজনীয় আইন ও নীতি-নির্দেশিকা বাতিল করেছে, যার ফলে কৃষকরা এখন দেশের যে কোনও জায়গায় উৎপাদিত ফসল অবাধে বিক্রি করতে পারবেন এবং সরাসরি বিক্রেতাদের সঙ্গেও সংযোগ স্থাপন করতে পারবেন।

শ্রী মোদী বলেন, কৃষকদেরকে এখন বাজার ব্যবস্থার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত করা হচ্ছে। এছাড়াও, সরকার হিমঘরের মতো একাধিক কৃষি পরিকাঠামো ক্ষেত্রে যোগসূত্র গড়ে তোলার জন্য ১ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগের পরিকল্পনা করা হয়েছে।

এই অভিযানের আওতায় ১২৫ দিনের কর্মসংস্থান হবে এবং বিভিন্ন কর্মকান্ড মিশন মোড-ভিত্তিতে রূপায়িত হবে। অভিযানের জন্য যে ৬টি রাজ্যের ১১৬টি জেলাকে চিহ্নিত করা হয়েছে, সেখানে বিপুল সংখ্যায় প্রবাসী শ্রমিকরা নিজ বাড়িতে ফিরেছেন। এই ৬টি রাজ্য হ’ল – বিহার, উত্তর প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ঝাড়খন্ড এবং ওডিশা। এই অভিযানের আওতায় মানুষকে সামিল করে যে ২৫টি ক্ষেত্রে কর্মসূচি রূপায়িত হবে, তার জন্য ৫০ হাজার কোটি টাকার সংস্থান করা হবে। ১২টি কেন্দ্রীয় মন্ত্রক বা দপ্তরের মধ্যে সুসমন্বিত উপায়ে এই অভিযানের কর্মকান্ড পরিচালিত হবে। এই মন্ত্রক বা দপ্তরগুলি হ’ল – গ্রামোন্নয়ন, পঞ্চায়েতি রাজ, সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক, খনি, পানীয় জল ও স্যানিটেশন, পরিবেশ, রেল, পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস, নতুন ও পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি, সীমান্ত সড়ক, টেলিযোগাযোগ এবং কৃষি। এই অভিযানের উদ্দেশ্যই হ’ল গ্রামে ফিরে আসা প্রবাসী শ্রমিক ও ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামীণ মানুষের জন্য জীবন-জীবিকার সুবিধা প্রদান করা। যে সমস্ত গ্রামে গণপরিকাঠামোগত অভাব রয়েছে, সেখানে সড়ক, আবাসন, অঙ্গনওয়াড়ি, পঞ্চায়েত ভবন, কম্যুনিটি কমপ্লেক্স নির্মাণের মতো কর্মসূচি গ্রহণ করা। অভিযানের মাধ্যমে যে ২৫টি ক্ষেত্রকে চিহ্নিত করা হয়েছে, তার ফলে ফেরৎ প্রবাসী শ্রমিকরা নিজেদের দক্ষতা অনুযায়ী, আগামী ১২৫ দিন কর্মসংস্থানের সুবিধা পাবেন। এই কর্মসূচি এমনভাবে প্রস্তুত করা হবে, যাতে জীবন-জীবিকার প্রসার ও পরিধি দীর্ঘ মেয়াদী ভিত্তিতে বাড়ানো যায়।

কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক নোডাল মন্ত্রক হিসাবে এই কর্মসূচি রূপায়ণ করবে। রূপায়ণের কাজে রাজ্য সরকারগুলির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সমন্বয় বজায় রাখা হবে। অভিযানের আওতায় চিহ্নিত জেলাগুলিতে বিভিন্ন কর্মসূচি যথাযথভাবে ও সময় মতো রূপায়ণের কাজ দেখাশোনার জন্য যুগ্মসচিব বা তাঁর উচ্চ পদাধিকারী আধিকারিকদের কেন্দ্রের পক্ষ থেকে নোডাল আধিকারিক হিসাবে নিয়োগ করা হবে।

 

গরিব কল্যাণ রোজগার অভিযানের আওতায় নিম্নলিখিত রাজ্যগুলির তালিকা :

 

ক্রমিক সংখ্যা

রাজ্যের নাম

#জেলা

উন্নয়নে আগ্রহী জেলা

বিহার

৩২

১২

উত্তর প্রদেশ

৩১

মধ্যপ্রদেশ

২৪

রাজস্থান

২২

ওডিশা

ঝাড়খন্ড

 

মোট জেলা

১১৬

২৭

 

নিম্নলিখিত টেবিলে যে ২৫টি ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে, তার বিবরণ

 

ক্রমিক সংখ্যা

কর্মসূচি/কাজকর্ম

ক্রমিক সংখ্যা

কর্মসূচি/কাজকর্ম

সর্বজনীন স্বাস্থ্যবিধি কেন্দ্র নির্মাণ

১৪

গবাদি পশুর জন্য শেড নির্মাণ

গ্রাম পঞ্চায়েত ভবন নির্মাণ

১৫

পোল্ট্রির শেড নির্মাণ  

চতুর্দশ অর্থ কমিশনের তহবিলের আওতায় বিভিন্ন কাজকর্ম

১৬

ছাগল রাখার শেড নির্মাণ

জাতীয় মহাসড়ক সংক্রান্ত কাজকর্ম

১৭

কেঁচো সার উৎপাদনের কাঠামো নির্মাণ

জল সংরক্ষণ ও বৃষ্টির জল ধরে রাখা সংক্রান্ত কাজকর্ম

১৮

রেল সংক্রান্ত

কুঁয়ো খনন

১৯  

রারবান

চারাগাছ রোপণ সংক্রান্ত কাজকর্ম

২০

পিএম কুসুম

উদ্যান পালন

২১

ভারত নেট

অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র নির্মাণ

২২

ক্যাম্পা কর্মসূচির আওতায় বৃক্ষ রোপণ

১০

গ্রামীণ আবাসন সংক্রান্ত কর্মকান্ড

২৩

পিএম ঊর্জা গঙ্গা কর্মসূচি

১১

গ্রামীণ যোগাযোগ সম্পর্কিত কর্মকান্ড

২৪

জীবন-জীবিকার জন্য কে.বি.কে. প্রশিক্ষণ  

১২

কঠিন ও তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা

২৫

জেলা খনিজ তহবিল সংগঠন কর্তৃপক্ষের যুক্ত কর্মকান্ড

১৩

চাষাবাদের জন্য পুকুর খনন

 

 

 

 

 

CG/BD/SB


(Release ID: 1633037) Visitor Counter : 415