পঞ্চায়েতিরাজমন্ত্রক

গ্রাম-পঞ্চায়েতগুলি দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণ প্রতিহত করতে বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে


শ্রেষ্ট অনুশীলনগুলির মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ওয়েবসাইট, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, পোস্টার এবং দেওয়াল লিখনের মাধ্যমে সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়া, জীবাণুনাশক স্প্রে করা, গ্রামবাসীদের স্থানীয়ভাবে উত্পাদিত প্রতিরক্ষামূলক সরঞ্জাম বিতরণ, অভাবগ্রস্তদের বিনামূল্যে খাদ্যসামগ্রী ও আর্থিক সহায়তা প্রদান এবং নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দরজায় দরজায় পৌঁছে দেওয়া

Posted On: 14 APR 2020 5:42PM by PIB Kolkata

নতুনদিল্লি, ১৪ এপ্রিল, ২০২০

 

 

 

কোভিড-১৯ এর মহামারী প্রতিরোধে, ভারত সরকারের পঞ্চায়েতী রাজ মন্ত্রক, রাজ্য সরকারগুলির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতায় বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এই রোগের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে লকডাউন শর্ত যাতে লঙ্ঘন না হয় এবং সামাজিক দূরত্বের নিয়মগুলি কঠোরভাবে অনুসরণ করা হয় তা নিশ্চিত করতে রাজ্য এবং জেলা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিবিড় আলাপ-আলোচনা ও পরামর্শ দেওয়ার প্রক্রিয়া জারি রাখা হচ্ছে।


পঞ্চায়েত পর্যায়ে নানা রাজ্যে বিভিন্ন সৃষ্টিশীল উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে যা সর্বোত্তম অনুশীলনের উদাহরণ হিসাবে অন্যরা অনুসরণ করতে পারে। এর মধ্যে কয়েকটি হ'ল -


রাজস্থান: রাজ্যের সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েতে গ্রামের মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে সোশ্যাল মিডিয়া হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের ব্যবহার হয়েছে। তৃণমূল পর্যায়ের তথ্য সর্বত্র পোস্টার লাগিয়ে জনগণকে জানানো হচ্ছে। নিয়মিত সাফাই কর্মসূচি পরিচালনা করা হচ্ছে। হনুমানগড় জেলার গ্রাম পঞ্চায়েত মক্কাসারে রাস্তায় রাস্তায় সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইট স্প্রে করা হচ্ছে। গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য ও সামাজিক সংস্থাগুলি নাগরিকদের মধ্যে ফেসমাস্ক বিতরণ করছে, এবং নাগরিকদের বলা হচ্ছে যাতে তাঁরা নিজেদের চোখ, নাক এবং মুখ স্পর্শ না করেন, ঘন ঘন সাবান দিয়ে হাত ধোন এবং ব্যক্তিগত দূরত্ব বজায় রাখেন। গ্রামবাসীদের রেশন বিতরণের পাশাপাশি পরিত্যক্ত গবাদি পশুদের জন্য  একটি সামাজিক সেবা সংস্থা পশুখাদ্যও সরবরাহ করছে।


বিহার: ভারত-নেপাল সীমান্ত থেকে মাত্র ১৪ কিলোমিটার দূরে গ্রাম পঞ্চায়েত সিংহবাহিনীর পঞ্চায়েত প্রধান কোভিড-১৯ এর মহামারী প্রতিরোধে দৃষ্টান্তস্বরূপ নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি ও তাঁর টিম সৃষ্টিশীল দেওয়াল লিপি রচনার মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধির কাজ করছেন।


ছত্তিশগড়: কাঙ্কের জেলায় যে পরিযায়ী শ্রমিকরা মহানগরগুলি থেকে যারা গ্রামে ফিরেছেন তাদের জন্য কী কী সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত তা নিয়ে জনমনে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং গ্রামবাসী ও অভিবাসীদের সামাজিক দুরত্ব সম্পর্কে সচেতন করা হচ্ছে। পিআর আধিকারিকরা মনরেগা কৃষি শ্রমিক ও মজুরদের সামাজিক দূরত্ব এবং হাত ধোওয়ার বিষয়েও সচেতন করার কাজ করছেন।


তামিলনাড়ু: কান্নানুর গ্রাম পঞ্চায়েতে স্যানিটাইজেশনের কাজ হচ্ছে। মেটুপট্টি গ্রাম পঞ্চায়েতে গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস থেকে রেশন এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র গ্রহণের সময় গ্রামবাসীরা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখছেন। কোয়েম্বাতুর জেলার পোল্লাছি উত্তর ব্লকের ভাদাক্কিপলিয়াম গ্রামে নিয়মিত জীবাণুনাশক ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। তিরুওয়াল্লুর জেলার পুলারামবক্কাম পিটি- ব্লকে বিভিন্ন দরিদ্র সম্প্রদায়ের মধ্যে যানবাহনের মাধ্যমে সবজি বিতরণ করা হচ্ছে। বিরুধুনগর ব্লকে গণপরিচ্ছন্নতা অভিযান ও জীবাণুনাশ করার কাজ চলছে। তিরুভান্নমালাই জেলার প্রতিটি ঘরে জীবাণুনাশক স্প্রে করা হয়েছিল। জেলার স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন কর্মীদের তিন ধরণের পিপিই কিট বিতরণ করা হয়েছে।


ওড়িশা: কটক, ভুবনেশ্বর ও ভদ্রক জেলায় বিভিন্ন জিপিতে লকডাউনের সময় নিঃস্ব ব্যক্তিদের খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। ভান্ডারিপোখারী জিপিতে সুবিধাভোগীদের মধ্যে জনপ্রতি ১০০০/- টাকার খাদ্য সুরক্ষা সহায়তা বিতরণ করা হয়েছে। ভদ্রক জিপির আওতাধীন সদর গ্রাম পঞ্চায়েতে ওড়িশা ফায়ার সার্ভিসেস স্যানিটাইজ করার কাজ করছে। ‘আরও জীবিকা নির্বাহ, কম জনসমাগম’ প্রকল্পের মাধ্যমে ব্লকের নিকটবর্তী জিপি গুলিতে শাকসবজি চাষীদের সহায়তার জন্য, ভদ্রক বাজারে স্থানীয় প্রয়োজন মেটানোর পাশাপাশি সামাজিক দূরত্বের নিয়ম সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির কাজ চলছে। বিলাসপুর জেলার বামতা ব্লকের গ্রামপ্রধান শুধুই কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে, গ্রামবাসীদের মধ্যে এই বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করেই থামেন নি, পাশাপাশি, তিনি ও তাঁর টিম স্কুল, অঙ্গনওয়ারি, জিপি অফিস, মন্দির, ঘরবাড়ি, রাস্তা ইত্যাদিসহ  সমস্ত সরকারি ভবনগুলিকে স্যানিটাইজ করছেন। তাছাড়া তিনি নিজস্বউদ্যোগে গ্রামবাসীদের জন্য মুখোশ এবং স্যানিটাইজার সরবরাহ করছেন এবং স্থানীয় যুবকদের সাহায্যে পরিযায়ী শ্রমিকদের মধ্যে রেশন বিতরণ করছেন।


তেলঙ্গানা: তেলঙ্গানায় রাজ্যজুড়ে জেলা পর্যায়ে সচেতনতা সভা অনুষ্ঠিত হয়। কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিয়ে সমস্ত গ্রামপ্রধান, কাউন্সিলর, জেলা পরিষদ সদস্য, পৌর চেয়ারম্যান, তহসিলদার ইত্যাদি পদাধিকারীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। গ্রামে ঢোকার আগে স্যানিটাইজ করার পরেই জনসেবা স্বেচ্ছাসেবক ও সরকারী কর্মকর্তাদের অনুমতি দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে রাঙ্গারেড্ডি জেলার এসবি পালি জিপি। শাকরাপল্লী মন্ডলের চেয়ারপারসন নিজের উদ্যোগে মাস্ক তৈরি করে কোটাপল্লী জিপির গ্রামবাসীদের বিতরণ করেছেন। মেদক জেলার শালকরম্পেট মণ্ডলের এমপিডিও মহোদয় লকডাউনের সময় যারা ব্যাঙ্কিং পরিষেবা ব্যবহার করতে পারেন না, তেমন সুবিধাভোগীদের সরাসরি পেনশন পেতে সাহায্য করেছেন।


মহারাষ্ট্র: মহারাষ্ট্র রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিক যারা পায়ে হেঁটে তাদের জন্মস্থানের দিকে যাচ্ছিলেন, তাঁদেরকে দোর্নাকালে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে এবং কর্মকর্তারা তাঁদের ভাত ও পানীয় জল সরবরাহ করেছেন।


কর্ণাটক: উত্তর কন্নড় জেলার ভাটকাল তালুকের জালি টাউন পঞ্চায়েত কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে প্রশংসনীয় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার চেষ্টা করেছে। সেখানকার নগর পঞ্চায়েত গোটা দেশে লকডাউন হওয়ার আগেই যথাযথ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল। সেখানকার ভাটকাল সমুদ্র সৈকতে স্থানীয় মানুষ, জেলে এবং পর্যটকদের স্বাভাবিক ভিড় হয়। সেখানকার পঞ্চায়েত সভাপতি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে সৈকতে এই ভিড় কমাতে প্রথমে এলাকার সীমানা সিল করার কৌশল অবলম্বন করেন। তিনি এই উদ্যোগটি অনুসরণ এবং সমর্থন করার জন্য প্রতিবেশী গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির সদস্য ও কর্মচারিদেরকেও সঙ্গে নিয়ে সচেতনতা অভিযান চালান। তিনি করোনা ভাইরাস এবং এর প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা সম্পর্কে মানুষকে সংবেদনশীল করার জনয় নিজের উদ্যোগে কন্নড় ও ইংরেজিতে প্যামপ্লেট ছাপিয়ে বিতরণ করেছেন।


লাদাখ: কারগিল জেলার ড্রাস ব্লক (শীতলতম জনগোষ্ঠীর মধ্যে অন্যতম),চৌগিয়াল জিপি, এবং লেহ জেলার ডিস্কেট নুব্রা জিপিতে নিয়মিত খাদ্য সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে। লাদাখে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও কোয়ারেন্টাইন সুবিধার ব্যবস্থা রয়েছে।
ঝাড়খণ্ড: কোডারমা জেলার প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে বন কর্মীরা নিজেদের উদ্যোগে বিনামূল্যে রেশন বিতরণ করছেন।


কেরালা: এরনাকুলাম জেলার ভাদাক্কেকড়া গ্রাম পঞ্চায়েত একটি ওয়েবসাইট চালু করেছে যা যে কোনও জরুরি প্রতিক্রিয়া কর্মসূচির প্ল্যাটফর্ম হিসাবে কাজ করে।


আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ: সরকার এমন মানুষদের চিহ্নিত করেছে যাঁদের সত্যই সাহায্যের প্রয়োজন রয়েছে। তাঁদের ত্রাণ সামগ্রী সরবরাহ করা হয়েছে, যার মধ্যে শাকসবজি, রেশন আইটেম, মুরগী, বেকারিজাত খাদ্য এবং পানীয় জল রয়েছে। এমনকি কয়েকটি পরিবারকে আর্থিক সহায়তাও প্রদান করা হয়েছে। গোটা দ্বীপপুঞ্জে পরিবারে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে মানুষের প্রয়োজন সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে সেই অনুযায়ী স্বেচ্ছাসেবীরা জনগণের মঙ্গলার্থে দিনরাত কাজ করছেন। নীলদ্বীপ জিপিতে স্যানিটেশন কর্মীরা দোকান, সবজি বাজার, পঞ্চায়েত ভবন এবং সরকারি এলাকা সহ পুরো বাজার এলাকা স্যানিটাইজ করছেন।


গোয়া: সাত্তারির (উত্তর গোয়া) সোনাল গ্রামের বাসিন্দারা একটি কাঠের গেট নির্মাণ করেছেন, যেখানে যুবকেরা দিনরাত কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা পরিচালনা করেন। গ্রামের মানুষদের যাতে বাড়ির বাইরে না যেতে হয়, সেজন্য তাঁরা জিপি দ্বারা সরবরাহ করা প্রয়োজনীয় জিনিসগুলি নিজেরাই গ্রামের মধ্যে বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে দেন।

 

 


CG/SB


(Release ID: 1614660) Visitor Counter : 511