প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

বন্দে মাতরম-এর ১৫০তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে লোকসভায় বিশেষ আলোচনায় প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

प्रविष्टि तिथि: 08 DEC 2025 4:30PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ 

 

মাননীয় অধ্যক্ষ মহাশয়,

এই উল্লেখযোগ্য বিষয়কে বিশেষ আলোচনায় স্থান করে দেওয়ার জন্য আমি আপনাকে এবং সভার বিশিষ্ট সদস্যদের আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই। যে সম্ভ্রমের মন্ত্র সারা দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনকে অনুপ্রাণিত করেছিল, শক্তি জুগিয়েছিল এবং ত্যাগ ও কৃচ্ছ্রসাধনের জন্য দেশবাসীকে উদ্বুদ্ধ করেছিল, এই সভায় সেই বন্দে মাতরমের উদযাপন আমাদের প্রত্যেকের কাছেই অত্যন্ত গর্বের। বন্দে মাতরমের ১৫০তম বর্ষপূর্তির আমরা সাক্ষী হতে পারছি, এটা সত্যিই গর্বের। এই দীর্ঘ সময়ে ইতিহাসের পাতায় অসংখ্য ঘটনা স্থান করে নিয়েছে। যদি আমরা এই মুহূর্তটিকে সম্মিলিতভাবে কাজে লাগাতে পারি, তবে আগামী প্রজন্মের কাছে তা শিক্ষার এক উৎস হয়ে থাকবে।

মাননীয় অধ্যক্ষ মহাশয়,

এখন আমরা এমন এক সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি, যখন ইতিহাসের বহু প্রেরণাদায়ক অধ্যায় আমাদের সামনে আবার জীবন্ত হয়ে উঠছে। অতি সম্প্রতি আমরা গর্বের সঙ্গে আমাদের সংবিধানের ৭৫ বর্ষপূর্তি উদযাপন করেছি। দেশ আজ সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল এবং ভগবান বিরসা মুন্ডার ১৫০তম জন্ম জয়ন্তী উদযাপন করছি। আমরা অতি সম্প্রতি গুরু তেগ বাহাদুরজির ৩৫০তম বলিদান দিবস পালন করেছি। আজ আমরা এই সভায় বন্দে মাতরমের ১৫০ বছর উদযাপন উপলক্ষে একত্রিত হয়েছি। 


মাননীয় অধ্যক্ষ মহাশয়,

বন্দে মাতরমের যখন ৫০ বছর পূর্ণ হয়, তখন দেশ দাসত্বের শৃঙ্খলের ঘেরাটোপে আবদ্ধ থাকতে বাধ্য হয়েছিল। যখন এর ১০০ বছর পূর্ণ হয়, তখন দেশ জরুরি অবস্থার ফাঁসে আটকে পড়েছিল। যখন দেশের বন্দে মাতরমের শতবর্ষ উদযাপনে মেতে ওঠার কথা ছিল, তখন ভারতের সংবিধানের গলা টিপে ধরা হয়েছিল। যে গানটি স্বাধীনতা আন্দোলনে দেশকে উজ্জীবিত করেছিল, তার শতবর্ষে ইতিহাসের এক অন্ধকারময় অধ্যায়ের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে দেশ। 


মাননীয় অধ্যক্ষ মহাশয়,

এখানে এই মুহূর্তে শাসক বা বিরোধী পক্ষ বলে কিছু নেই, কারণ আমরা সকলেই এখানে বসে রয়েছি, এটি হ’ল – প্রকৃত অর্থে একটি ঋণ স্বীকারের মুহূর্ত। বন্দে মাতারমের জন্যই অনেক মানুষ স্বাধীনতা আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন এবং তাঁদের জন্যই আমরা আজ এখানে বসে থাকতে পারছি। তাই, সমস্ত সাংসদ এবং জনপ্রতিনিধিদের কাছে এটি হ’ল – বন্দে মাতরমের প্রতি ঋণ স্বীকারের একটি পবিত্র মুহূর্ত। উত্তর থেকে ৎদক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম – বন্দে মাতরম মন্ত্র স্বাধীনতা আন্দোলনে গোটা দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। 


মাননীয় অধ্যক্ষ মহাশয়,

১৮৭৫ সালে এমন একটা সময়ে বঙ্কিমচন্দ্র জি-র বন্দে মাতরমের যাত্রা শুরু হয়েছিল, যখন ১৮৫৭ সালের বিদ্রোহের পর, দেশজুড়ে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ভিত নড়বড়ে হয়ে উঠেছিল। তারা ভারতের উপর নানা ধরনের চাপ সৃষ্টি করতে থাকে, সেইসঙ্গে চলে অত্যাচার ও নিপীড়ন। এর কয়েক বছর পর, ১৮৮২ সালে তিনি আনন্দমঠ লেখেন, সেখানে এই গানটিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। 


মাননীয় অধ্যক্ষ মহাশয়,

বন্দে মাতরম সেই ভাবনার পুনরুজ্জীবন ঘটিয়েছিল, যা ভারতের হাজার হাজার বছরের ভিত্তি তৈরি করে গিয়েছে। বন্দে মাতরম শুধুমাত্র রাজনৈতিক স্বাধীনতার একটি মন্ত্র নয়, কিংবা শুধুমাত্র ব্রিটিশদের উৎখাতের ডাক নয়, এটি তার চেয়েও বেশি কিছু। মাতৃভূমিকে শৃঙ্খলমুক্ত করার একটি পবিত্র মিশন হ’ল – স্বাধীনতা আন্দোলন। 

মাননীয় অধ্যক্ষ মহাশয়,

বঙ্কিম দা যখন বন্দে মাতরম সৃষ্টি করেছিলেন, তখন তা স্বাভাবিকভাবেই স্বাধীনতা আন্দোলনের কন্ঠস্বর হয়ে উঠেছিল। দেশের প্রতিটি প্রান্তের ভারতবাসীর অঙ্গীকার হয়ে উঠেছিল। বন্দে মাতরমের প্রশংসা করে এই লাইনগুলি লেখা হয়েছিল – 

“मातृभूमि स्वतंत्रता की वेदिका पर मोदमय, मातृभूमि स्वतंत्रता की वेदिका पर मोदमय, स्वार्थ का बलिदान है, ये शब्द हैं वंदेमातरम, है सजीवन मंत्र भी, यह विश्व विजयी मंत्र भी, शक्ति का आह्वान है, यह शब्द वंदे मातरम। उष्ण शोणित से लिखो, वक्‍तस्‍थलि को चीरकर वीर का अभिमान है, यह शब्द वंदे मातरम।”

অর্থাৎ "মাতৃভূমির স্বাধীনতার বেদীতে আনন্দের সঙ্গে আত্ম-স্বার্থ ত্যাগ, মাতৃভূমির স্বাধীনতার বেদীতে আনন্দের সঙ্গে আত্ম-স্বার্থ ত্যাগ, স্বার্থের বলিদান, এই শব্দগুলি হ’ল - বন্দে মাতরম, এটি সজীবতারও মন্ত্র, এটি বিশ্বজয়েরও মন্ত্র, এটি শক্তির আবাহন, এই শব্দ বন্দে মাতরম। উষ্ণ রক্ত দিয়ে লেখ, এটি গর্বের সঙ্গে বুক চিরে বীরের কান্না, এই শব্দগুলি হ’ল - বন্দে মাতরম।"

মাননীয় অধ্যক্ষ মহাশয়,

কয়েকদিন আগে যখন বন্দে মাতরমের ১৫০তম বর্ষপূর্তি শুরু হয়, তখন একটি অনুষ্ঠানে আমি বলেছিলাম, বন্দে মাতরম হাজার হাজার বছরের সাংস্কৃতিক শক্তির প্রতীক। ব্রিটিশ শাসনকালে ভারতকে দুর্বল, হীনভাবে তুলে ধরার একটি প্রবণতা তৈরি হয়েছিল। বঙ্কিম দা তাঁর এই শক্তিশালী স্তোত্রের মাধ্যমে দেশকে এই হীনমন্যতা থেকে মুক্ত করেছিলেন এবং ভারতের শক্তিকে জাগ্রত করেছিলেন।

 তিনি লিখেছিলেন, 

“ত্বান হি দুর্গা দশপ্রহরণধারিণী, কমলা কমলদলবিহারিণী, বাণী বিদ্যাদায়িনী। নমামি ত্বান নমামি কমলম, অমলম অতুলান সুজলান সুফলন মাতরম। বন্দে মাতরম।"


মাননীয় অধ্যক্ষ মহাশয়,

সিন্ধু, সরস্বতী, কাবেরী, গোদাবরী, গঙ্গা বা যমুনা – যে নদীর কথাই বলা হোক না কেন – তার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে একটি সাংস্কৃতিক প্রবাহ, উন্নয়নের যাত্রা। বিশ্বে বন্দে মাতরমের মতো এ ধরনের আবেগ সৃষ্টিকারী গান বিরল। ব্রিটিশরা “বিভেদ সৃষ্টি কর এবং শাসন কর” নীতি গ্রহণ করেছিল এবং বাংলাকে তাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার ক্ষেত্র করে তুলেছিল। কারণ, তারা জানত যে, বাংলার মেধাশক্তি এক সময়ে গোটা দেশকে পথ দেখিয়েছিল। তাই, ব্রিটিশরা এই শক্তিকে দুর্বল করার চেষ্টা চালাতে থাকে। তারা বিশ্বাস করত যে, বাংলা ভেঙে পড়লে, গোটা দেশ টুকরো টুকরো হয়ে যাবে এবং তারা যতদিন খুশি রাজত্ব চালাতে পারবে। ১৯০৫ সালে তারা বঙ্গভঙ্গ করে। সেই সময়ে বন্দে মাতরম মন্ত্রে উত্তাল হয়ে ওঠে বাংলা। বাংলার প্রতিটি প্রান্ত, রাস্তঘাট বন্দে মাতরম শ্লোগানে কেঁপে ওঠে, যা ব্রিটিশদের চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দেয়।


মাননীয় অধ্যক্ষ মহাশয়,

সেই সময়ে, সর্বত্র একটাই মন্ত্র ধ্বনিত হতে থাকে, তা হ’ল – বন্দে মাতরম। এই হ’ল – বঙ্কিম দা’র আবেগঘন মন্ত্র... ঠিক আছে ঠিক আছে, আপনাকে ধন্যবাদ, আমি আপনার অনুভূতি উপলব্ধি করতে পারছি। বঙ্কিম বাবু... বঙ্কিম বাবু, আপনাকে ধন্যবাদ দাদা। আমি কি আপনাকে দাদা বলে ডাকতে পারি? অন্যথায়, আপনিও আপত্তি তুলতে পারেন। বঙ্কিম বাবু বন্দে মাতরমের মাধ্যমে ব্রিটিশদের অন্তঃস্থলে আঘাত করেছিলেন। তারা এর উপর আইনি নিষেধাজ্ঞা জারি করতে বাধ্য হয়। আমাদের দেশের শত শত নারী স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন। তাঁদের অবদানও সীমাহীন। বন্দে মাতরম গাইবার অপরাধে সেই সময়ে বরিশালে চরম নির্যাতন চালানো হয়। এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আমাদের মা, বোন ও শিশুরা বরিশালের রাস্তায় নেমে এসেছিলেন। নারী-পুরুষ-শিশু নির্বিশেষে প্রত্যেককে কারাগারে পাঠিয়ে আন্দোলন দমনের চেষ্টা চালায় ইংরেজরা। 


মাননীয় অধ্যক্ষ মহাশয়,

আমাদের বীর বিপ্লবীরা নির্ভয়ে ফাঁসির মঞ্চে উঠেছিলেন এবং বন্দে মাতরম ধ্বনি দিতে দিতে হাসি মুখে মৃত্যুবরণ করেছিলেন। ক্ষুদিরাম বোস, মদললাল ধিংড়া, রবীন্দ্রনাথ লাহিড়ি, রামকৃষ্ণ বিশ্বাস... ভারতমাতার আরও অসংখ্য সন্তান এই মন্ত্র উচ্চারণ করে মৃত্যুবরণ করেছেন। দেশের বিভিন্ন কারাগারে একই ছবি দেখা গিয়েছে। তাঁদের ভাষা আলাদা হলেও, মন্ত্র ছিল একটাই – ‘এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত’। ভারতবাসী হিসেবে আমাদের গর্বিত হওয়া উচিত। বিশ্বের আর কোথাও এরকম নজির নেই। এই একটি মাত্র মন্ত্র লক্ষ লক্ষ মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছিল। এটাই হ’ল – বিশ্বের বিস্ময়। আমাদের গর্বের সঙ্গে এটা তুলে ধরা উচিত এবং তখনই গোটা বিশ্ব আমাদের সম্মান জানাতে শুরু করবে। এটি হ’ল – আমাদের স্বাধীনতার মন্ত্র, বলিদানের মন্ত্র, শক্তি সঞ্চয়ের মন্ত্র, বিশুদ্ধতার মন্ত্র, আত্মত্যাগের মন্ত্র, আত্মোপলব্ধির মন্ত্র। গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যথার্থই বলেছেন, ‘এক কার্যে সঁপিয়াছি সহস্র জীবন – বন্দে মাতরম’। 

মাননীয় অধ্যক্ষ মহাশয়,

একই সময়ে বন্দে মাতরমের রেকর্ডিং বিশ্বের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়ে। লন্ডন ইন্ডিয়া হাউসে বীর সাভারকরের কন্ঠে গানটি উচ্চারিত হয়। সেই সময়ে বিপিন চন্দ্র পাল এবং অরবিন্দ ঘোষ বন্দে মাতরম নামে সংবাদপত্র চালু করেন। বস্তুতপক্ষে, বন্দে মাতরম সেই সময়ে ব্রিটিশদের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছিল। আজ এই সভায় বন্দে মাতরম সম্পর্কে আমি মহাত্মা গান্ধীর অনুভূতি তুলে ধরতে চাই। দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে প্রকাশিত একটি সাপ্তাহিক সংবাদপত্রে ০২ ডিসেম্বর, ১৯০৫-এ তিনি লিখেছিলেন, “বঙ্কিমচন্দ্রের লেখা বন্দে মাতরম গোটা বাংলায় অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। স্বদেশী আন্দোলনের সময়ে বাংলায় হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়েছিলেন এবং তাঁরা বঙ্কিমচন্দ্রের গানটি গেয়েছিলেন।" গান্ধীজি আরও লিখেছিলেন, “গানটি এতই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে যে, এটি যেন আমাদের জাতীয় সঙ্গীত হয়ে উঠেছে। এটির একমাত্র উদ্দেশ্য হ’ল – আমাদের মধ্যে দেশাত্মবোধের চেতনাকে জাগ্রত করা।"

মাননীয় অধ্যক্ষ মহাশয়,

মহাত্মা গান্ধী ১৯০৫ সালে বন্দে মাতরমকে জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন। যে বন্দে মাতরম দেশবাসীকে অনুপ্রাণিত করেছিল, তার সঙ্গে কেন বিশ্বাসঘাতকতা করা হ’ল? ১৫ অক্টোবর, ১৯৩৭ সালে মহম্মদ আলি জিন্নাহ লক্ষ্ণৌতে বন্দে মাতরমের বিরুদ্ধে শ্লোগান তুলেছিলেন। তদানীন্তন কংগ্রেস সভাপতি জওহরলাল নেহরু পাল্টা প্রতিবাদের পথে হাঁটেননি। বরং তার উল্টোটাই ঘটেছিল। জিন্নাহ’র বিরোধিতার পর ২০ অক্টোবর নেহরু, নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুকে একটি চিঠি লিখে জিন্নাহ’র অনুভূতির সঙ্গে সহমর্মিতা প্রকাশ করেছিলেন। নেহরু জি লিখেছিলেন, “আমি বন্দে মাতরমের নেপথ্য সঙ্গীতটি শুনেছি। আমার মনে হয়, মুসলিমরা এই নেপথ্য গানে প্ররোচিত হতে পারেন।"
 
মাননীয় অধ্যক্ষ মহাশয়,

এই বিবৃতির পর, ২৬ অক্টোবর বন্দে মাতরমের ব্যবহার নিয়ে পর্যালোচনার জন্য কলকাতায় কংগ্রেস কর্ম সমিতির বৈঠক ডাকা হয়। গোটা দেশ ক্ষুব্ধ, বিস্মিত হয়। দেশজুড়ে বন্দে মাতরম গাইতে গাইতে দেশপ্রেমিকরা প্রভাতী মিছিলে সামিল হন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, কংগ্রেস আপসের পথ ধরে। সামাজিক সম্প্রীতির দোহাই দিয়ে তারা বন্দে মাতরমকে কয়েকটি অংশে ভাগ করার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু কংগ্রেস যে মুসলিম লীগের কাছে নতি স্বীকার করেছে, তার সাক্ষ্য রয়ে গেছে ইতিহাসে। এটি হ’ল – তোষণের রাজনীতি।

মাননীয় অধ্যক্ষ মহাশয়,

তোষণের রাজনীতির চাপের কাছে নতি স্বীকার করে কংগ্রেস বন্দে মাতরমকে টুকরো করার পথে হেঁটেছিল। সেই কারণে, দেশভাগের ক্ষেত্রে কংগ্রেস মাথা নত করেছিল। এমনকি, আজও কংগ্রেস এবং তার সহযোগী দলগুলি বন্দে মাতরম নিয়ে বিতর্ক তৈরির চেষ্টা করছে। সঙ্কটের সময়েই যে কোনও দেশের চরিত্র বোঝা যায়। ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার পর, দেশের চ্যালেঞ্জগুলি বদলে যায়, অগ্রাধিকার বদলে যায়। কিন্তু, দেশের চরিত্র ও সহনশীলতা অপরিবর্তিত থাকে। ভারত যখনই কোনও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে, তখন বন্দে মাতরমকে সামনে রেখে তার মোকাবিলা করেছে। এমনকি, আজও ১৫ অগাস্ট এবং ২৬ জানুয়ারি কিংবা “হর ঘর তিরঙ্গা”র সময়ে সর্বত্র একই আবেগ দেখা যায়। গর্বের সঙ্গে উড়তে থাকে তিরঙ্গা। যখনই দেশের উপর যুদ্ধ চাপিয়ে দেওয়া হয়, যখন আমাদের সংঘর্ষের পথে ঠেলে দেওয়া হয়, তখন বন্দে মাতরমের চেতনা আমাদের সীমান্তে সেনাকর্মীদের মনোবলকে দৃঢ় করে। মা ভারতীকে জয়ের পতাকা এনে দেয়। 

মাননীয় অধ্যক্ষ মহাশয়,

আমি আগেই বলেছি, বন্দে মাতরমের কাছে আমরা ঋণী। প্রতিটি চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে বন্দে মাতরম আমাদের জয়ের শক্তি জুগিয়েছে, দেশের প্রতি আমাদের দায়িত্ব-কর্তব্যকে জাগ্রত করেছে। আমরা এখন ‘আত্মনির্ভর ভারত'-এর স্বপ্নকে সামনে রেখে এগোচ্ছি এবং আমাদের অবশ্যই তা পূর্ণ করতে হবে। আমাদের প্রেরণা হ’ল – বন্দে মাতরম। আমরা স্বদেশী আন্দোলনকে শক্তিশালী করতে চাই। সময় বদলাতে পারে, ধরন বদলাতে পারে, কিন্তু বন্দে মাতরম আমাদের সব সময়ই ঐক্যবদ্ধ রেখে যাবে। আমাদের মহান নেতাদের স্বপ্ন ছিল, এক স্বাধীন ভারত। আজকের প্রজন্মের স্বপ্ন হ’ল – এক সমৃদ্ধ ভারত। স্বাধীন ভারতের স্বপ্নকে লালিত করেছে বন্দে ভারত। বন্দে মাতরমের চেতনা সমৃদ্ধ ভারতের স্বপ্নকে লালন-পালন করবে। আমাদের অবশ্যই ‘আত্মনির্ভর ভারত’ গড়ে তুলতে হবে। ২০৪৭ সালের মধ্যে দেশ অবশ্যই ‘বিকশিত ভারত’-এ পরিণত হবে। যদি স্বাধীনতার ৫০ বছর আগে কেউ এক মুক্ত ভারতের স্বপ্ন দেখতে পারেন, তবে ২০৪৭-এর ২৫ বছর আগে আমরাও সমৃদ্ধ ভারতের স্বপ্ন দেখতে পারি এবং এই স্বপ্নের বাস্তবায়নে আমরা নিজেদের উৎসর্গ করতে পারি। এই মন্ত্র এবং অঙ্গীকারের মাধ্যমে বন্দে মাতরম আমাদের ক্রমাগত অনুপ্রাণিত করতে থাকবে। আসুন, বন্দে মাতরমের চেতনাকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাই, দেশের মানুষকে এগিয়ে নিয়ে যাই, আমরা একসঙ্গে পথ চলি এবং এই স্বপ্ন পূরণ করি। এই ভাবনা নিয়ে আজ আলোচনা শুরু হয়েছে। আমার বিশ্বাস, এই আলোচনা দেশবাসীর চেতনাকে প্রজ্জ্বলিত করবে। সংসদের উভয় কক্ষে আমাদের নতুন প্রজন্মের সদস্যদের শক্তি জোগাবে। এই কয়েকটি কথা বলে আমি আপনাদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি, আপনাদের অসংখ্য ধন্যবাদ!


বন্দে মাতরম!
বন্দে মাতরম!
বন্দে মাতরম!

 

SC/MP/SB


(रिलीज़ आईडी: 2201677) आगंतुक पटल : 14
इस विज्ञप्ति को इन भाषाओं में पढ़ें: English , Urdu , हिन्दी , Marathi , Assamese , Manipuri , Punjabi , Gujarati , Odia , Telugu , Kannada , Malayalam