প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বারাণসী থেকে চারটি নতুন বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের যাত্রার সূচনা করেছেন

Posted On: 08 NOV 2025 10:15AM by PIB Kolkata

নতুন দিল্লি, ৮ নভেম্বর ২০২৫

 


ভারতের আধুনিক রেল পরিকাঠামোর সম্প্রসারণে এক গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ উত্তর প্রদেশের বারাণসী থেকে চারটি নতুন বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রার সূচনা করেন। এই উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শ্রী মোদী বাবা বিশ্বনাথের আশীর্বাদধন্য বারাণসী শহরের সকল বসবাসকারীকে শ্রদ্ধা জানান। তিনি বলেন, দেব দীপাবলির উপলক্ষে সুন্দর যে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল, তা সকলেই প্রত্যক্ষ করেছেন। আজ উন্নয়নের উৎসবে তিনি সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নত রাষ্ট্রগুলির অর্থনৈতিক বিকাশে বৃহৎ পরিকাঠামো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রতিটি দেশের উন্নয়নে উন্নত পরিকাঠামো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভারত দ্রুত সেই পথে অগ্রসর হচ্ছে। এই আবহে প্রধানমন্ত্রী নতুন বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের যাত্রার সূচনা করেন। বারাণসী - খাজুরাহো বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ছাড়াও, ফিরোজপুর – দিল্লি, লখনউ – সাহারানপুর এবং এর্নাকুলাম – বেঙ্গালুরুর মধ্যে বন্দে ভারতের যাত্রার সূচনা হল আজ। এর ফলে দেশে ১৬০টির বেশি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চলাচল  শুরু করল। এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।  

শ্রী মোদী বলেন, "বন্দে ভারত, নমো ভারত এবং অমৃত ভারতের মতো ট্রেনগুলি ভারতীয় রেলের পরবর্তী প্রজন্মের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করছে"। বন্দে ভারতকে তিনি ভারতবাসীর জন্য, ভারতবাসীর দ্বারা এবং ভারতবাসীর ট্রেন বলে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, এই ট্রেন প্রত্যেক ভারতবাসীর মধ্যে গর্ববোধ সঞ্চার করবে। বিদেশীরাও বন্দে ভারত এক্সপ্রেস দেখে উচ্ছ্বসিত। উন্নত ভারত গড়ার ক্ষেত্রে সম্পদ বৃদ্ধির যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এই ট্রেনগুলি সেই উদ্যোগেরই অঙ্গ। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতে যুগ যুগ ধরে তীর্থযাত্রা করা হয়। এর মধ্য দিয়ে শুধু পবিত্র স্থানই দর্শন করা হয় না, দেশের আত্মার সঙ্গে পবিত্র ঐতিহ্যের মেলবন্ধন ঘটানো হয়। প্রয়াগরাজ, অযোধ্যা, হরিদ্বার, চিত্রকূট এবং কুরুক্ষেত্রের মতো আধ্যাত্মিক শহরগুলি দেশের ঐতিহ্যের অঙ্গ। “এই পবিত্র শহরগুলি বন্দে ভারত নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সংযুক্ত হয়েছে। ভারতের সংস্কৃতি, আস্থা এবং উন্নয়ন যাত্রায় এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এদেশের ঐতিহ্যশালী শহরগুলিকে জাতীয় উন্নয়নের প্রতীক হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে”।  

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ১১ বছর ধরে উত্তর প্রদেশে বিভিন্ন ধর্মীয় স্থানের উন্নয়নে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। গত বছর বারাণসীতে ১১ কোটি ভক্ত বাবা বিশ্বনাথকে দর্শন করেছেন। রামলালার মন্দির প্রতিষ্ঠার পর অযোধ্যায় ৬ কোটি ভক্ত গেছেন। এই তীর্থযাত্রীরা উত্তর প্রদেশের অর্থনীতির জন্য কোটি কোটি টাকার তহবিল যুগিয়েছেন। হোটেল, ব্যবসা-বাণিজ্য, পরিবহন সংস্থা, স্থানীয় শিল্পী, নৌকা চালকরা এর ফলে উপকৃত হয়েছেন। বারাণসীতে বহু যুবক-যুবতী পরিবহণ থেকে বেনারসি শাড়ি – নানা ধরনের ব্যবসা করছেন। এর ফলে উত্তরপ্রদেশ এবং বারাণসীতে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির নতুন নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে।   

শ্রী মোদী বলেন, উন্নত বারাণসীর মধ্য দিয়ে উন্নত ভারত গড়ে তোলার স্বপ্ন সফল হবে। আজ বারাণসী শহরে পরিকাঠামোর মানোন্নয়ন ঘটানো হচ্ছে। উন্নত হাসপাতাল, সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা, গ্যাসের পাইপলাইন এবং ইন্টারনেট সংযোগ বসানো হয়েছে। রোপওয়ে প্রকল্পের কাজও জোরকদমে চলছে। গঞ্জারি এবং সিগরা স্টেডিয়াম গড়ে তোলা হচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে বারাণসী সফরকারী পর্যটকরা নতুন নতুন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হবেন।   

শ্রী মোদী বলেন, ১০-১১ বছর আগেও বারাণসী শহরে গুরুতর অসুস্থ হলে বেণারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ই একমাত্র ভরসার জায়গা ছিল। কিন্তু বিপুল রোগীর কারণে অনেকেই ঠিকমত চিকিৎসা পেতেন না। ক্যান্সারের চিকিৎসা যারা করাতে চাইতেন তারা জমি বিক্রি করে মুম্বাইয়ে পাড়ি দিতেন। কিন্তু তাঁর সরকার ক্ষমতায় আসার পর মহামনা ক্যান্সার হাসপাতাল, শঙ্কর নেত্রালয়, বিএইচইউ-তে উন্নত ট্রমা সেন্টার তৈরি  করা হয়েছে। এর ফলে বারাণসী, পূর্বাঞ্চল সহ পার্শ্ববর্তী রাজ্যের সুবিধা হয়েছে। আয়ুষ্মান ভারত ও জনৌষধি কেন্দ্রগুলি লক্ষ লক্ষ রোগীর কোটি কোটি টাকার সাশ্রয় করেছে। আজ বারাণসী সমগ্র অঞ্চলের স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের রাজধানী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।  

বর্তমানে বারাণসীর উন্নয়নে গতি এসেছে। প্রধানমন্ত্রী আশা করেন, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পর্যটকরা বাবা বিশ্বনাথের আশীর্বাদধন্য এই শহরে অনন্য উৎসাহ-উদ্দীপনার স্বাদ পাবেন। 

শ্রী মোদী বলেন, আজ এই অনুষ্ঠানে বহু ছাত্র-ছাত্রী উপস্থিত রয়েছেন। নতুন বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের যাত্রার সূচনা উপলক্ষে শ্রী অশ্বীনি বৈষ্ণব বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করায় তিনি সন্তোষপ্রকাশ করেন। এই উপলক্ষে বিকশিত ভারত, বিকশিত কৃষি ও সুরক্ষিত ভারত বিষয়ের ওপর অঙ্কন ও কবিতা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবক এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি প্রস্তাব দেন শিশুদের নিয়ে সাহিত্য সম্মেলনের আয়োজন করার। এই সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন ছাত্র-ছাত্রী নানা প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন। প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। বারাণসীর প্রতিভাবান শিশুদের অভিনন্দন জানিয়ে এই কেন্দ্রের সাংসদ হওয়ায় তিনি গর্ববোধ করেন। 

অনুষ্ঠানে উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী যোগী আদিত্যনাথ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব সহ বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন। কেরালার রাজ্যপাল শ্রী রাজেন্দ্র আরলেকার, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী সুরেশ গোপী, শ্রী জর্জ কুরিয়ান, শ্রী রবনীত সিং বিট্টু সহ বিশিষ্টজনেরাও ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন।  

প্রেক্ষাপটঃ-
ভারতের আধুনিক রেল পরিকাঠামোর প্রসারের লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে নাগরিকদের সহজ, দ্রুত, এবং বিশ্বমানের স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে রেল পরিষেবা দেওয়ার প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নপূরণে এটি আরও একটি মাইলফলক। এই নতুন বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেনগুলো চলবে বেনারস-খাজুরাহো, লক্ষ্ণৌ-শাহারানপুর, ফিরোজপুর-দিল্লি এবং এর্নাকুলাম-বেঙ্গালুরু রুটে। এরফলে প্রধান গন্তব্য স্থলগুলির মধ্যে যাতায়াতের সময় কম লাগবে, আঞ্চলিক যোগাযোগ বাড়বে, পর্যটনের প্রসার হবে এবং দেশজুড়ে অর্থনৈতিক কার্যকলাপের সহায়ক হবে। 
বেনারস-খাজুরাহো-বন্দেভারত এই রুটে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করেছে। বর্তমানে যে ট্রেনগুলির এই রুটে চলে , তার তুলনায় নতুন ট্রেনে  যাতায়াতের সময় দুঘন্টা ৪০ মিনিট কম পড়বে। বারাণসী, প্রয়াগরাজ, চিত্রকূট এবং খাজুরাহো সহ ভারতের ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলির মধ্যে সংযোগ ঘটাবে, এতে ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক পর্যটন বৃদ্ধি পাবে তাই নয়, ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় থাকা খাজুরাহো যাত্রা সহজ হল তীর্থযাত্রী এবং পর্যটকদের জন্য।    
লক্ষ্ণৌ— শাহারানপুর বন্দে ভারত এক্সপ্রেস সময় নেবে ৭ ঘন্টা ৪৫ মিনিট। যাতায়াতে সময় কমবে প্রায় ১ ঘন্টার মতো। লক্ষ্ণৌ, সীতাপুর, শাজাহানপুর, বেরেলি, মোরাদাবাদ, বীজনোর এবং শাহারানপুরের যাত্রীরা সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবেন। এছাড়া রুরকি হয়ে পবিত্র হরিদ্বার শহর যাওয়ার উন্নতি হবে। মধ্য এবং পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ জুড়ে সংযোগ বৃদ্ধি করতে এবং আঞ্চলিক উন্নয়নে এই পরিষেবা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। ফিরোজপুর —দিল্লি, বন্দে ভারত  এই রুটের দ্রুততম ট্রেন , এই ট্রেনের গন্তব্যে পৌছাতে লাগবে ৬ ঘন্টা ৪০ মিনিট। রাজধানীর সঙ্গে ফিরোজপুর, ভাতিন্ডা এবং পাতিয়ালার মতো পাঞ্জাবের শহরগুলোর যোগাযোগ এর ফলে বৃদ্ধি পেল। এই ট্রেনের জন্য ব্যবসা বাণিজ্য, পর্যটন, কর্মসংস্থানের সুবিধা বৃদ্ধির পাশাপাশি আশা করা হচ্ছে সীমান্ত অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটবে এবং জাতীয় বাজারের সঙ্গে আরও বেশি করে সমন্বয় হবে।    
দক্ষিণ ভারতে এর্নাকুলাম-বেঙ্গালুরু-বন্দেভারত দুঘন্টার মতো যাত্রার সময় কমিয়ে দিল। প্রধান প্রধান আইটি এবং বাণিজ্যিক হাবগুলিকে যুক্ত করল এই ট্রেন। পেশাদার ব্যক্তি, ছাত্র-ছাত্রী এবং পর্যটকরা আরও দ্রুত স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে ভ্রমণের সুযোগ পাবেন। কেরালা, তামিলনাড়ু এবং কর্ণাটকের মধ্যে অর্থনৈতিক কার্যকলাপ বৃদ্ধি পাবে। পর্যটনের প্রসার ঘটবে।     
  

 

SC/CB/AS


(Release ID: 2187881) Visitor Counter : 3