প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর "মন কি বাত”, ১০৬ তম অনুষ্ঠানের বাংলা অনুবাদ
प्रविष्टि तिथि:
29 OCT 2023 11:52AM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ২৯ অক্টোবর, ২০২৩
আমার প্রিয় পরিবারবর্গ, নমস্কার। "মন কি বাতে" আরও একবার স্বাগত জানাই আপনাদের। এই পর্ব এমন একটা সময় সম্প্রচার হচ্ছে যখন গোটা দেশজুড়ে উৎসব নিয়ে উৎসাহ রয়েছে। আপনাদের সবাইকে আগামী সব উৎসবের জন্য অনেক-অনেক শুভেচ্ছা।
বন্ধুরা, উৎসব নিয়ে এই উৎসাহের মধ্যে, দিল্লির একটা খবর দিয়েই আমি "মন কি বাত" শুরু করতে চাইছি। এই মাসের শুরুতে গান্ধী জয়ন্তী উপলক্ষে দিল্লীতে খাদির রেকর্ড পরিমাণ বিক্রি হয়েছে। এখানে কনট প্লেসে, একটাই খাদি ভাণ্ডারে, একই দিনে, দেড় কোটিরও বেশী মূল্যের জিনিসপত্র কিনেছেন মানুষজন। এই মাসে চলতে থাকা খাদি মহোৎসব একবার ফের বিক্রিতে নিজের সব পুরনো রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। আপনাদের আরও একটা বিষয় জেনে খুব ভালো লাগবে, দশ বছর আগে যেখানে দেশে খাদি পণ্যের বিক্রি খুব কষ্টে তিরিশ হাজার কোটি টাকারও কম হত, এখন সেটা বেড়ে ১.২৫ কোটি টাকার আশেপাশে পৌঁছচ্ছে। খাদির বিক্রি বাড়ার মানে, এর লাভ শহর থেকে শুরু করে গ্রামে ভিন্ন ভিন্ন বর্গের মানুষের কাছে পৌঁছচ্ছে। এর লাভ আমাদের তন্তুবায়ীদের, আমাদের হস্তশিল্পের কারিগর, আমাদের কৃষক, আয়ুর্বেদিক বৃক্ষের চারা বপন করা কুটিরশিল্প সবাই পাচ্ছেন। আর এটাই তো 'ভোকাল ফর লোকাল' অভিযানের শক্তি, আর ধীরে-ধীরে সব দেশবাসীর সমর্থনও বেড়ে চলেছে।
বন্ধুরা, আজ আমি আমার আর একটা আগ্রহের কথা আবার বলতে চাই আর খুব আগ্রহের সঙ্গে সেটা ফের বলতে চাই। যখনই আপনারা পর্যটনে যাবেন, তীর্থযাত্রায় যাবেন, তখন সেখানকার স্থানীয় শিল্পীদের বানানো পণ্য অবশ্যই কিনবেন। আপনি আপনার ওই যাত্রার গোটা বাজেটে স্থানীয় পণ্যের ক্রয়কে এক গুরুত্বপূর্ণ প্রাধান্য অবশ্যই দিন। দশ শতাংশ হোক, কুড়ি শতাংশ হোক, যতটা আপনার বাজেটে কুলায় ততটা স্থানীয় জিনিসের উপর অবশ্যই খরচ করুন এবং ওখানেই করুন।
বন্ধুরা, প্রতিবারের মতো এবারেও আমাদের উৎসবে আমাদের প্রাথমিক বিষয় হওয়া উচিত 'ভোকাল ফর লোকাল' এবং আমরা মিলেমিশে যে স্বপ্ন পূরণ করব সেই স্বপ্ন হল ‘আত্মনির্ভর ভারত’। এবার এমন জিনিসপত্র দিয়েই নিজের ঘর আলোকিত করুন যার মধ্যে আমার কোনো এক দেশবাসীর ঘাম ঝরানো শ্রমের গন্ধ মিশে আছে, আমার দেশের কোনো এক তরুণের ট্যালেন্ট রয়েছে, যেটা তৈরি করতে গিয়ে আমার দেশবাসীর রোজগার হয়েছে, দৈনন্দিন জীবনে যে ধরনের চাহিদাই আসুক না কেন আমরা লোকালই কিনব। কিন্তু আপনাদের আরো একটা বিষয়ে নজর দিতে হবে। ভোকাল ফর লোকালের এই ভাবনা শুধুমাত্র উৎসবের দিনের কেনাকাটার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় এবং আমি এমনও অনেক জায়গায় দেখেছি যে দীপাবলির জন্য প্রদীপ কেনার পর সোশ্যাল মিডিয়াতে গিয়ে পোস্ট করে 'ভোকাল ফর লোকাল', কিন্তু না, এটা শুধুই সূত্রপাত। আমাদের আরো এগোতে হবে, দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি জরুরী জিনিস এখন আমাদের দেশে উপলব্ধ। এই ভাবনা শুধুমাত্র ছোট দোকানদার কিংবা হকারদের থেকে পণ্যদ্রব্য কেনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। আজ ভারত বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ Manufacturing Hub হয়ে উঠছে। অনেক বড় বড় ব্র্যান্ড তাদের জিনিসপত্র এখানেই তৈরি করছে। আমরা যদি তাদের সেইসব জিনিসপত্রগুলো ব্যবহার করি, তবেই Make In India বিষয়টিকে উৎসাহিত করা হবে এবং এটাকে লোকালের জন্য ভোকাল হওয়াই বলে। এবং হ্যাঁ, এসব প্রোডাক্ট কেনার সময় আমাদের দেশের গৌরব UPI digital payment system এর মাধ্যমে পেমেন্ট করায় আগ্রহী হোন, জীবনে অভ্যেস করুন এবং সেই প্রোডাক্টের সঙ্গে অথবা সেই কারিগরের সঙ্গে সেলফি তুলে NamoApp-এ আমার সঙ্গে শেয়ার করুন এবং সেটা Made In India smart phone থেকে করুন। এর মধ্যে থেকে কিছু পোস্ট আমি সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করব যাতে অন্যদেরও "ভোকাল ফর লোকালের" প্রতি অনুপ্রেরণা জাগে।
বন্ধুরা, যখন আপনি ভারতে তৈরি, ভারতীয়দের তৈরি পণ্য দিয়ে আপনার দীপাবলিকে উজ্জ্বল করবেন, নিজের পরিবারের প্রতিটি ছোটখাটো চাহিদাও স্থানীয় জিনিস পত্রের দ্বারা পূরণ করবেন, তখন দীপাবলির ঔজ্বল্য তো আরো বাড়বেই, আর সেই কারিগরদের জীবনে, একটি নতুন দীপাবলির আগমন ঘটবে, জীবনে একটি নতুন এক সকাল আসবে, ওঁদের জীবন সুন্দর হয়ে উঠবে। ভারতকে আত্মনির্ভর করুন, 'মেক ইন ইন্ডিয়া' বেছে নিন, যাতে আপনার সঙ্গে সঙ্গে কোটি কোটি দেশবাসীরও দীপাবলি হয়ে ওঠে চমৎকার, প্রাণবন্ত, উজ্জ্বল এবং আকর্ষণীয়।
আমার প্রিয় দেশবাসী, ৩১শে অক্টোবর আমাদের সকলের জন্য খুবই বিশেষ দিন। এই দিনে আমরা আমাদের লৌহ মানব সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের জন্মবার্ষিকী উদযাপন করি। আমরা ভারতীয়রা অনেক কারণেই তাঁকে স্মরণ করি এবং শ্রদ্ধা জানাই। সবচেয়ে বড় কারণ হল দেশের ৫৮০টিরও বেশি রাজন্যবর্গকে সংযুক্ত করার ক্ষেত্রে তাঁর অতুলনীয় ভূমিকা। আমরা জানি, প্রতি বছর ৩১শে অক্টোবর, গুজরাটের স্ট্যাচু অফ ইউনিটিতে একতা দিবস সম্পর্কিত একটি মুখ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এবার সেটা ছাড়াও, দিল্লিতে কর্তব্য পথে একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে। আপনাদের হয়তো মনে আছে যে, আমি কিছু আগে থেকেই দেশের প্রতিটি গ্রাম থেকে, প্রতিটি বাড়ি থেকে মাটি সংগ্রহ করার জন্য অনুরোধ করে ছিলাম। প্রতিটি বাড়ি থেকে মাটি সংগ্রহ করার পরে, এটি একটি পাত্রে রাখা হয়েছিল এবং তারপর অমৃত কলস যাত্রা বের করা হয়েছিল। দেশের প্রতিটি কোণ থেকে সংগ্রহ করা এই মাটি, এই হাজার হাজার অমৃত-কলশ যাত্রা এখন দিল্লিতে পৌঁছচ্ছে। এখানে দিল্লিতে সেই মাটি ঢেলে দেওয়া হবে বিশাল একটি ভারত কলশ-এ এবং এই পবিত্র মাটি থেকেই দিল্লিতে অমৃত বাটিকা তৈরি হবে। এটি দেশের রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রে অমৃত মহোৎসবের মহান ঐতিহ্যের নিদর্শন হিসেবে বর্তমান থাকবে। এর সঙ্গেই দেশজুড়ে গত আড়াই বছর ধরে চলে আসা আজাদির অমৃত মহোৎসবও শেষ হবে এই ৩১শে অক্টোবর। আপনারা সবাই মিলে এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ চলা উৎসবগুলির একটিতে পরিণত করেছেন। নিজেদের যোদ্ধাদের সম্মান হোক, বা ঘর ঘর তিরঙ্গা আজাদীর অমৃত মহোৎসবে মানুষ তাঁদের স্থানীয় ইতিহাসকে নতুন পরিচয় দিয়েছে। এই সময়ের মধ্যেই, সম্প্রদায়ভিত্তিক সেবার বিস্ময়কর উদাহরণও দেখা গেছে।
বন্ধুরা, আজ আমি আপনাদের আরেকটি সুখবর জানাচ্ছি। বিশেষ করে, আমার তরুণ ছেলে-মেয়েরা, যাদের মনের মধ্যে আবেগ, স্বপ্ন এবং দৃঢ় সংকল্প রয়েছে। এই সুসংবাদটি শুধু দেশবাসীর জন্য নয়, আমার তরুণ বন্ধুরা, এটা আপনাদের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ। মাত্র দু'দিন পর, ৩১শে অক্টোবর, একটি বিশাল দেশব্যাপী সংগঠনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হচ্ছে এবং তাও সর্দার সাহেবের জন্মবার্ষিকীতে। এই সংগঠনের নাম "মেরা যুবা ভারত" অর্থাৎ MYBharat। MYBharat সংস্থা ভারতের যুবকদের রাষ্ট্র নির্মাণের বিভিন্ন কর্মকান্ডে তাঁদের সক্রিয় ভূমিকা পালনের সুযোগ দেবে। এটি উন্নত ভারত গড়তে ভারতের যুব শক্তিকে একত্রিত করার একটি অনন্য প্রচেষ্টা। মেরা যুবা ভারত-এর ওয়েবসাইট MYBharat-ও চালু হতে চলেছে। আমি যুবকদের অনুরোধ করব, বারবার অনুরোধ করব যে আপনারা সবাই, আমার দেশের যুবকরা, আপনারা সবাই, আমার দেশের ছেলে মেয়েরা, MYBharat.Gov.in-এ register করুন এবং বিভিন্ন কর্মসূচিতে sign-up করুন। ৩১শে অক্টোবর প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীজির মৃত্যুবার্ষিকীও। আমি তাঁকেও আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা জানাই।
আমার পরিবারবর্গ, আমাদের সাহিত্য, literature, এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারতের ভাবনাকে প্রগাঢ় করার সবথেকে উত্তম মাধ্যমের একটি। আমি আপনাদের সঙ্গে তামিলনাডুর গৌরবময় ঐতিহ্যর সঙ্গে জড়িত দু'টি অত্যন্ত প্রেরণামুলক প্রচেষ্টাকে ভাগ করে নিতে চাই। আমার, প্রসিদ্ধ তামিল লেখিকা শিবশঙ্করীজির সম্বন্ধে জানার সুযোগ হয়েছিল। উনি একটি প্রজেক্ট করেছেন 'knit India through literature'। যার মানে হলো সাহিত্যের মাধ্যমে দেশকে এক সুতোয় গাঁথা এবং জোড়া। উনি এই প্রজেক্টে বিগত ১৬ বছর ধরে কাজ করছেন। এই প্রজেক্টের মাধ্যমে উনি ১৮টি ভারতীয় ভাষায় লেখা বিভিন্ন সাহিত্যের অনুবাদ করেছেন। উনি অনেকবার কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর এবং ইম্ফল থেকে জয়সলমের পর্যন্ত, দেশজুড়ে ভ্রমন করেছেন। যাতে ভিন্ন ভিন্ন রাজ্যের লেখক এবং কবিদের সাক্ষাৎকার নিতে পারেন। শিবশঙ্করীজি ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় যাত্রা করেছেন, ট্রাভেল commentary-এর সঙ্গে সেগুলোকে পাবলিশ করেছেন। এটি তামিল এবং ইংরেজি উভয় ভাষাতেই আছে। এই প্রজেক্টে চারটি বড় ভলিউম আছে। প্রত্যেক ভলিউম ভারতের বিভিন্ন অংশের প্রতি সমর্পিত। আমি ওঁর এই সংকল্প শক্তিতে গর্বিত।
বন্ধুরা, কন্যাকুমারীর থিরু এ. কে. পেরুমালজীর কাজও প্রেরণাদায়ক। তামিলনাডুর স্টোরি টেলিং-এর ঐতিহ্য কে উনি সংরক্ষিত করার প্রশংসামূলক কাজ করেছেন। উনি এই কাজে বিগত চল্লিশ বছর ধরে নিয়োজিত। এরজন্য উনি তামিলনাডুর বিভিন্ন অংশে ট্রাভেল করেন আর ফোক আর্ট ফরমস কে খুঁজে নিজের বইয়ের অংশ বানান। আপনারা জেনে আশ্চর্য হবেন, উনি এখনো পর্যন্ত প্রায় ১০০টি বই লিখে ফেলেছেন। এছাড়াও পেরুমলজীর আরেকটা প্যাশন আছে। তামিলনাডুর টেম্পল কালচার সম্বন্ধে রিসার্চ করতে উনি খুব ভালোবাসেন। উনি লেদার puppets-এর উপরেও অনেক গবেষণা করেছেন। যার লাভ ওখানকার স্থানীয় লোকশিল্পীদের হচ্ছে। শিবশঙ্করীজী এবং এ. কে. পেরুমালজীর প্রচেষ্টা সবার জন্য একটি উত্তম উদাহরণ। ভারতের সংস্কৃতিকে সুরক্ষিত করার এরকম সমস্ত প্রচেষ্টার জন্য আমরা গর্বিত, যা আমাদের রাষ্ট্রীয় একতাকে দৃঢ় করার সঙ্গে সঙ্গে দেশের নাম ও দেশের মান সবকিছু বাড়ায়।
আমার পরিবারবর্গ, আগামী ১৫ই নভেম্বর সারা দেশ "জনজাতীয় গৌরব দিবস" উদযাপন করবে। এই বিশেষ দিনটি ভগবান বিরসা মুন্ডার জন্মজয়ন্তীর সঙ্গে যুক্ত। ভগবান বিরসা মুন্ডা আমাদের সবার হৃদয়ে অধিষ্ঠান করেন। প্রকৃত সাহস কি এবং নিজের দৃঢ় সংকল্পে অটল থাকা কাকে বলে, তা আমরা তাঁর জীবন থেকে শিখতে পারি। তিনি বিদেশি শাসনকে কখনো স্বীকার করেননি। উনি এমন এক সমাজের পরিকল্পনা করেছিলেন যেখানে অন্যায়ের কোন স্থান নেই। তিনি চাইতেন প্রতিটি মানুষ যেন সম্মান ও সমানাধিকারের জীবন পায়। ভগবান বিরসা মুন্ডা প্রকৃতির সঙ্গে সদ্ভাব বজায় রাখার প্রতিও সব সময় জোর দিয়েছেন। আজও আমরা দেখতে পাই আমাদের জনজাতি ভাই-বোনেরা প্রকৃতির দেখাশোনা এবং সংরক্ষণের জন্য সম্পূর্ণভাবে সমর্পিত। আমাদের সবার জন্য আমাদের জনজাতি ভাই-বোনেদের এই কাজ অত্যন্ত প্রেরণাদায়ক।
বন্ধুরা, আগামীকাল অর্থাৎ ৩০শে অক্টোবর গোবিন্দ গুরুজীরও পুণ্য তিথি। আমাদের গুজরাট ও রাজস্থানের জনজাতি ও প্রান্তিক মানুষদের জীবনে গোবিন্দ গুরুজীর বিশেষ মাহাত্ম্য রয়েছে। গোবিন্দ গুরুজীকেও আমি আমার শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করছি। নভেম্বর মাসে আমরা মানগড় নরসংহারের দিনটিও পালন করি। আমি সেই নরসংহারে শহীদ হওয়া ভারত মায়ের সকল সন্তানদের প্রণাম জানাই।
বন্ধুরা, ভারতবর্ষে জনজাতি যোদ্ধাদের সমৃদ্ধ ইতিহাস রয়েছে। এই ভারতভূমিতে মহান তিলকা মাঞ্ঝী অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের ডাক দিয়েছিলেন। এই মাটিতেই সিধু কানু সমানাধিকারের দাবি তুলেছিলেন। আমরা গর্বিত যে জনযোদ্ধা তাঁতিয়া ভীল আমাদের ভারত ভূমিতেই জন্মগ্রহণ করেছিলেন। আমরা শহীদ বীরনারায়ণ সিংকে সশ্রদ্ধ স্মরণ করি, যিনি প্রতিকূল পরিস্থিতিতে আপনজনদের পাশে দাঁড়িয়ে লড়াই করেছিলেন। বীর রামজি গোল্ড, বীর গুন্ডাধুর, ভীমা নায়ক এঁদের শৌর্য আজও আমাদের অনুপ্রাণিত করে। অঙ্গুরী সীতারাম রাজু জনজাতি ভাইবোনেদের মধ্যে যে জনজাগরণ সৃষ্টি করেছিলেন তা দেশ আজও স্মরণ করে। নর্থইস্টে কিয়াং নোয়াং ও রানী গাইদিনলিউর মত স্বাধীনতা সংগ্রামীদের থেকেও আমরা যথেষ্ট অনুপ্রেরণা পাই। জনজাতি সমাজ থেকেই দেশ রাজমোহিনী দেবী ও রানী কমলাপতির মত বীরাঙ্গনাদের পেয়েছে। দেশ এখন জনজাতি সমাজের প্রেরণাদাত্রী রানী দুর্গাবতীজির ৫০০তম জন্মজয়ন্তী উদযাপন করছে। আমি আশা করি দেশের তরুণ প্রজন্ম আরও বেশি করে নিজের অঞ্চলের জনজাতির গৌরবময় ঐতিহ্য সম্বন্ধে অবগত হবে এবং তা থেকে অনুপ্রাণিত হবে। দেশ কৃতজ্ঞ তার জনজাতি সমাজের প্রতি, যারা দেশের সম্মান এবং অগ্রগতিকে সর্বদা সবার উপরে স্থান দিয়েছেন।
আমার প্রিয় দেশবাসী, উৎসবের এই মরশুমে, এই সময় দেশে, খেলাধুলার জয়ধ্বজাও উড়ছে। সম্প্রতি Asian games-এর পর Para Asian গেমসেও অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছে ভারতীয় খেলোয়াড়রা। এই খেলাগুলোতে ১১১টি পদক জিতে ভারত একটি নতুন ইতিহাস রচনা করেছে। আমি Para Asian games-এ অংশগ্রহণকারী সব Athletes-দের অনেক অনেক অভিনন্দন জানাই।
বন্ধুরা, আমি Special Olympics World Summer Games-এর দিকেও আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। বার্লিনে এর আয়োজন করা হয়েছিল। এই প্রতিযোগিতা Intellectual Disabilities ক্রীড়াবিদদের বিস্ময়কর সম্ভাবনার কথা আমাদের সামনে তুলে ধরে। এই প্রতিযোগিতায়, ভারতীয় দল ৭৫টি gold medals সহ ২০০টি পদক জিতেছে। Roller skating হোক, beach volleyball হোক, football হোক বা lawn tennis, ভারতীয় খেলোয়াড়রা medals এর বর্ষণ ঝরিয়েছে। এই পদক বিজয়ীদের Life Journey বেশ inspiring। হরিয়ানার রণবীর সাইনি Golf-এ Gold medal জিতেছেন। শৈশব থেকেই অটিজমের শিকার রণবীরের কাছে, কোনও চ্যালেঞ্জই Golf-এর প্রতি তাঁর আবেগকে দমাতে পারেনি। ওঁর মা এমনও বলেন, যে পরিবারের সবাই আজ Golfer হয়ে গেছে। পুদুচেরির ১৬ বছর বয়সী টি. বিশাল চারটি medal জিতেছেন। গোয়ার সিয়া সরোদে power lifting এ ২টি Gold medals সহ ব্যক্তিগত ৪টি পদক অর্জন করেছেন। ৯ বছর বয়সে মাকে হারানোর পরও নিজেকে হতাশ হতে দেননি। ছত্তিশগড়ের দুর্গ-এর বাসিন্দা অনুরাগ প্রসাদ power lifting এ ৩টি Gold ও ১টি Silver medal জিতেছেন। এমনই একটি অনুপ্রেরণামূলক কাহিনী হল ঝাড়খণ্ডের ইন্দু প্রকাশের, যিনি Cycling এ ২টি medal জিতেছেন। খুব সাধারণ পরিবার থেকে আসা সত্ত্বেও, ইন্দু কখনও দারিদ্র্যকে তাঁর সাফল্যের আগে প্রাচীর হতে দেননি। আমি আত্মবিশ্বাসী যে এই খেলাগুলোতে ভারতীয় খেলোয়াড়দের সাফল্য Intellectual Disabilities-এর সঙ্গে লড়াই করা বাকি শিশুদের এবং পরিবারগুলিকেও অনুপ্রাণিত করবে। আমি আপনাদের সকলের কাছে প্রার্থনা করছি আপনার গ্রামে, আপনার গ্রামের আশেপাশে, এইরকম শিশু, যারা এই ক্রীড়াসূচিতে অংশ নিয়েছে বা বিজয়ী হয়েছে, আপনি সপরিবার ওঁদের কাছে যান। ওদের অভিনন্দন জানান। আর কিছু মুহূর্ত ওই বাচ্চাদের সঙ্গে যাপন করুন। আপনাদের এক অন্যরকম অনুভূতি হবে। পরমাত্মা ওদের মধ্যে এমন এক শক্তির সঞ্চার করে থাকেন যার দর্শন আপনারাও পেতে পারেন। অবশ্যই যাবেন।
আমার পরিবারবর্গ, আপনারা গুজরাতের তীর্থক্ষেত্র অম্বাজি মন্দির-এর কথা নিশ্চয়ই শুনে থাকবেন। এটি এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি পিঠ যেখানে দেশ-বিদেশ থেকে অসংখ্য তীর্থযাত্রী মা আম্বাজির দর্শন করতে আসেন। এখানে গব্বর পর্বতের পথে, বিভিন্ন ধরনের যোগ মুদ্রা আর আসনের ভাস্কর্য দেখতে পাবেন। এই মূর্তিগুলির বিশেষত্ব কি আপনারা জানেন? আসলে এগুলি scrap থেকে তৈরি ভাস্কর্য। একপ্রকার আবর্জনা দিয়ে তৈরি আর যা অদ্ভুত সুন্দর। তার মানে, এই মূর্তিগুলি পূর্ব ব্যবহৃত, পরিত্যক্ত জিনিস দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এই পিঠস্থানে অম্বা দেবীর দর্শনের পাশাপাশি এই মূর্তিগুলিও ভক্তদের জন্য মূল আকর্ষণের কারণ হয়ে উঠেছে।
এই প্রচেষ্টার সফলতা দেখে আমি একটি পরামর্শ দিতে চাই। আমাদের দেশে এমন অনেকেই আছেন যারা waste দিয়ে এই ধরনের শিল্পকর্ম তৈরি করতে পারেন। আমি গুজরাট সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি একটি প্রতিযোগিতা শুরু করার জন্য আর এরকম শিল্পীদের আমন্ত্রণ জানানোর জন্য। এই প্রয়াস গব্বর পর্বতের আকর্ষণ বাড়ানোর পাশাপাশি পুরো দেশে waste to wealth অভিযান শুরু করার উদ্দেশ্যে দেশবাসীকে অনুপ্রাণিত করবে।
বন্ধুগণ, যখনই স্বচ্ছ ভারত আর waste to wealth এর কথা ওঠে তখনই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অগুনতি উদাহরণ ভেসে ওঠে। আসামের Kamrup metropolitan district-এ Akshar Forum নামে একটি স্কুল বাচ্চাদের মধ্যে sustainable development এর ভাবনা, সুসংস্কার দেওয়ার নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এই স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা প্রতি সপ্তাহে plastic waste একত্র করে eco-friendly ইট আর চাবির চেনের মতন জিনিসপত্র তৈরী করে। এখানে students-দের recycling আর plastic waste থেকে product বানানো শেখানো হয়। অল্প বয়স থেকেই পরিবেশের প্রতি এই সচেতনতা এই বাচ্চাদেরকে দেশের এক কর্তব্যনিষ্ঠ নাগরিক হয়ে উঠতে সাহায্য করবে।
আমার পরিবারবর্গ, আজ জীবনে এমন কোন পরিসর নেই যেখানে নারী শক্তির কৃতিত্ব আমাদের চোখে পড়ে না। এ সময় যখন সর্বত্র তাদের এই পারদর্শিতার প্রশংসা করা হচ্ছে তখন আমাদের আরো এক সাধিকাকে মনে রাখতে হবে যিনি আমাদের দেখিয়েছিলেন ভক্তিই শক্তি, যাঁর নাম ইতিহাসের পাতায় আজও স্বর্ণাক্ষরে লেখা।
দেশ এ বছর মহান সাধিকা মীরাবাঈয়ের ৫২৫'তম জন্মজয়ন্তী পালন করছে। বহু কারণে তিনি দেশের সমস্ত লোকের কাছে প্রেরণার উৎস। সংগীতপ্রেমীর কাছে তিনি সংগীতের প্রতি সমর্পণের দৃষ্টান্ত। যিনি কবিতা ভালোবাসেন, ভক্তিরসে পূর্ণ মীরাবাঈ-এর ভজন তাঁকে ভিন্নমাত্রার আনন্দ দেয়। আধ্যাত্মিকতায় বিশ্বাস করলে, মীরাবাঈ-এর শ্রীকৃষ্ণে লীন হয়ে যাওয়া তাঁকে অনুপ্রাণিত করতে পারে। মীরাবাঈ, 'সন্ত রবিদাস'কে তাঁর গুরু বলে মনে করতেন। তিনি বলতেন-
"গুরু মিলিয়া রৈদাস, দিহী জ্ঞান কি গুটকি।"
আমাদের দেশের মা বোন ও মেয়েদের জন্য মীরাবাঈ আজ'ও অনুপ্রেরণার উৎস। সেই সময়কালেও তিনি অন্তরাত্মার কথাই শুনেছিলেন ও সমস্ত প্রথাগত মতাদর্শের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিলেন। একজন সাধিকা হিসেবে'ও তিনি আমাদের উৎসাহিত করেন। তিনি তখন ভারতীয় সমাজ ও সংস্কৃতিকে শক্তিশালী করতে এগিয়ে এসেছিলেন যখন দেশ নানাধরনের আক্রমণে জর্জরিত ছিল। সারল্য ও পবিত্রতায় কতখানি শক্তি থাকে তা আমরা মীরাবাই'এর জীবনী থেকেই জানতে পারি। সাধিকা মীরাবাই'কে আমার সশ্রদ্ধ প্রণাম।
আমার প্রিয় পরিবারবর্গ, এবারের 'মন কি বাত' এই পর্যন্তই। আপনাদের সকলের সঙ্গে প্রত্যেকবারের এই আলাপচারিতা আমার মধ্যে নতুন শক্তির সঞ্চার ঘটায়। আপনাদের বার্তার মাধ্যমে আশা এবং পজিটিভিটি ছড়িয়ে দেওয়া শতশত কাহিনী আমার কাছে পৌঁছয়। আমি আবার আপনাদের কাছে অনুরোধ করছি যে আত্মনির্ভর ভারত অভিযানে আপনারা শক্তি যোগান। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত জিনিসপত্র কিনুন, লোকারের জন্য ভোকাল হোন। যেমন আপনারা আপনাদের বাড়ি-ঘর পরিষ্কার রাখেন, তেমনি আপনাদের পাড়া এবং শহরও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন আর আপনারা জানেন ৩১শে অক্টোবর সর্দার সাহেবের জন্মজয়ন্তী। এই দিনটি "দেশ একতা দিবস" হিসেবে পালন করে। ঐদিন দেশের অনেক জায়গায় রান ফর ইউনিটি অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। আপনারাও ৩১শে অক্টোবরের "রান ফর ইউনিটি” অনুষ্ঠানের আয়োজন করুন। আপনারা এর সঙ্গে বেশি সংখ্যায় যুক্ত হোন এবং একতার সংকল্পকে আরো দৃঢ় করুন। সামনে আগত উৎসবের জন্য আমি আপনাদের অনেক অনেক শুভকামনা জানাচ্ছি। আপনারা সকলেই সপরিবার আনন্দ করুন, সুস্থ থাকুন, খুশিতে থাকুন এই আমার কামনা রইল। আর হ্যাঁ, দীপাবলীর সময় কখনো এমন ভুল করবেন না যাতে আগুন লেগে যাওয়ার মত কোন দুর্ঘটনা ঘটে যায়। কারোর জীবনে কোনরকম বিপদ নেমে এলে আপনারা অবশ্যই সামলান, নিজেদেরও সামলান আর পুরো এলাকাকেও সামলান। অনেক অনেক শুভকামনা। অনেক অনেক ধন্যবাদ।
SSS/MP/SB…
(रिलीज़ आईडी: 2179806)
आगंतुक पटल : 21
इस विज्ञप्ति को इन भाषाओं में पढ़ें:
Kannada
,
Telugu
,
Assamese
,
Manipuri
,
English
,
Urdu
,
Marathi
,
हिन्दी
,
Punjabi
,
Gujarati
,
Odia
,
Tamil
,
Malayalam