প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

নতুন দিল্লিতে এক কৃষি বিষয়ক অনুষ্ঠানে কৃষকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় প্রধানমন্ত্রী

Posted On: 12 OCT 2025 6:45PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ১২ অক্টোবর, ২০২৫

 

প্রধানমন্ত্রী- রাম রাম !

কৃষক- রাম রাম ! আমি হরিয়ানার হিসার জেলার। আমি কাবুলি চানা দিয়ে চাষাবাদ শুরু করি...

প্রধানমন্ত্রী- কত বছর আগে আপনি এটা শুরু করেছিলেন? 

কৃষক- এখন থেকে ৪ বছর আগে। আমি প্রতি একর জমিতে প্রায় ১০ কুইন্টাল কাবুলি চানা চাষ করি। 

প্রধানমন্ত্রী- ডালের মতো কিছু মধ্যবর্তী ফসলও রয়েছে।

কৃষক- হ্যাঁ।

প্রধানমন্ত্রী- আপনি কিছুটা বাড়তি শ্রম দিলে অতিরিক্ত আয় করতে পারেন। এটি দেখে অন্য চাষিরাও ডাল চাষে অনুপ্রাণিত হবেন, এই ভেবে যে, তাঁদের জমিও পুনরুজ্জীবিত হবে। 

কৃষক- হ্যাঁ, আমরাও এটা মনে করি। আমি অন্য কৃষকদের বলি যে, যদি আমরা ছোলার ডালের মতো ডাল চাষ করি, আমরা শুধুমাত্র এই ডালই পাবো না, এর সঙ্গে পরের ফসলও লাভবান হবে। ছোলার ডাল এবং অন্যান্য ডাল থেকে মাটিতে নাইট্রোজেন তৈরি হয়, যা পরের ফসলকে সমৃদ্ধ করে। 

কৃষক- আমার জীবনে এই প্রথম প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলাম। তিনি একজন অত্যন্ত ভালো প্রধানমন্ত্রী, কৃষকদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত এবং একজন সাধারণ মানুষের মতোই। 

কৃষক- আমিও কৃষক উৎপাদক সংস্থা (এফপিও)-র সঙ্গে যুক্ত। পেশাগতভাবে আমি একজন চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট, কিন্তু আমি ডাল চাষ করি। আমাদের পরিবারের ১৬ বিঘা জমি রয়েছে। সেখানে আমি ছোলার ডাল চাষ করি। আমাদের গ্রামে ২০ জন মহিলাকে নিয়ে আমরা একটি করে দলও তৈরি করেছি। আমরা একসঙ্গে চানা-রসুন-পাঁপড় তৈরি করি। 

প্রধানমন্ত্রী- ওহ্, আপনারা নিজেরা পণ্য তৈরি করেন?

কৃষক- হ্যাঁ, হ্যাঁ, হ্যাঁ।

প্রধানমন্ত্রী- আপনারা আপনাদের পণ্যের কোনও নাম দিয়েছেন কি?

কৃষক- হ্যাঁ, আমাদের গ্রামে একে দুগারি বলা হয়ে থাকে, তাই আমরা এর নাম দিয়েছি দুগারিওয়ালে। 

প্রধানমন্ত্রী- আচ্ছা।

কৃষক- চানা-রসুন-পাঁপড়ের নাম দেওয়া হয়েছে দুগারিওয়ালে চানা-রসুন-পাঁপড়। 

প্রধানমন্ত্রী- মানুষ কী সেগুলি কেনে?

কৃষক- হ্যাঁ স্যার। আমরা সরকারের ই-বিপণন পোর্টাল GeM-এ নাম নথিভুক্ত করেছি। স্যার, সেনাকর্মীরা সেখান থেকে কিনে থাকেন। 

প্রধানমন্ত্রী- এটি কি রাজস্থানজুড়ে পরিচিত?

কৃষক- স্যার, এটি গোটা ভারতে বিক্রি হয়।

প্রধানমন্ত্রী- সত্যি? 

কৃষক- হ্যাঁ।

প্রধানমন্ত্রী- অন্যরাও কী একই ধরনের জিনিস উৎপাদন করছেন?

কৃষক- হ্যাঁ। কিন্তু এটি প্রধানত মহিলারা তৈরি করে থাকেন। 


কৃষক- প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমরা সাক্ষাৎ করবো, এই ভেবে আমরা শিহরিত হচ্ছিলাম। তিনি যখন এলেন, তাঁকে দেখে আমরা বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ি। এটি ছিল এক অবর্ণনীয় মুহূর্ত। 

কৃষক- আমি ২০১৩-১৪ থেকে ডাল চাষ করছি। আমি এক একরে চাষাবাদ শুরু করেছিলাম এবং তারপর তা ক্রমশ বাড়িয়ে ১৩-১৪ একর জমিতে ছোলার ডাল চাষ করতে থাকি। 

প্রধানমন্ত্রী- হ্যাঁ, অনেক আগেই আপনি এক একর জমিতে ছোলার ডাল এবং অন্যত্র কি অন্য চাষ করতেন?

কৃষক- হ্যাঁ স্যার। 

প্রধানমন্ত্রী- আপনি ধীরে ধীরে জমি বাড়িয়েছেন! 

কৃষক- হ্যাঁ, আমি ধীরে ধীরে বাড়িয়ে ১৩-১৪ একর করেছি।

প্রধানমন্ত্রী- এতে আপনার আয়ের ওপর কীরকম প্রভাব পড়েছে?

কৃষক- আমার আয় বেড়েছে, কারণ বছরের পর বছর ধরে আমি উন্নতমানের বীজ ব্যবহার করছি এবং উৎপাদন বেড়ে চলেছে। 

প্রধানমন্ত্রী- নিরামিষভোজী মানুষের কাছে ডাল হল প্রোটিনের প্রধান উৎস, তাই নয় কি?

কৃষক- হ্যাঁ স্যার। 

প্রধানমন্ত্রী- এখনকার দিনে আমাদের জমিগুলি ছোট ছোট। সেই কারণে কেউ যখন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে, তিনি প্রায়ই নিজেকে একাকী মনে করেন। কিন্তু কল্পনা করুন, যদি ২০০ জন কৃষক একত্রিত হন...

কৃষক- হ্যাঁ।

প্রধানমন্ত্রী- ...এবং ২০০ জন সিদ্ধান্ত নেন যে, তাঁরা মিলিতভাবে ৪০০ বা ৫০০ বিঘা জমিতে একটি বা দুটি বাছাই করা ফসল চাষ করবেন এবং সেগুলিকে বিক্রি করবেন- তাতে কি কৃষকদের আরও বেশি লাভ হবে না?

কৃষক- অবশ্যই স্যার।

কৃষক- আমি বীড জেলা থেকে এসেছি। 

প্রধানমন্ত্রী- কোথা থেকে? বীড জেলা। সেখানে সাধারণত জলের ঘাটতি থাকে, তাই নয় কি?

কৃষক- সেই কারণে স্যার ধনধান্য প্রকল্প চালু করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ দিতে চাই।

প্রধানমন্ত্রী- ধন্যবাদ। আপনারা সর্বত্র মিলেটকে তুলে ধরছেন, বাজরা, জোয়ার এবং অন্য পরম্পরাগত শস্যেরও এখন বিশ্বের বাজারে প্রভূত চাহিদা রয়েছে। এমনকি জলের ঘাটতি থাকা জমিতেও কৃষকরা ভালো আয় করতে পারেন।   

কৃষক- আমার এলাকায় আমি অড়হর ডাল চাষ করি। আমি এই ডালের ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য তরুণদের কাছেও আবেদন জানিয়েছি। এটি কৃষকদের পক্ষে লাভবান হবে এবং ভাল ব্যবসারও সুযোগ রয়েছে। 

প্রধানমন্ত্রী- আপনারা কি কখনও সারের ব্যবহার কমানোর কথা ভেবেছেন?

কৃষক- হ্যাঁ।

প্রধানমন্ত্রী- আমাদের মনে রাখা উচিত, এই পৃথিবী হল আমাদের মা। আমরা যদি এই ধরনের রাসায়নিক তাকে খাওয়াতে থাকি, তবে তিনি কতদিন বাঁচবেন?

কৃষক- হ্যাঁ স্যার, সেটা সত্যি। 

প্রধানমন্ত্রী- যদি একবার কৃষকরা অনুভব করেন যে, তাঁরা তাঁদের সন্তানদের জন্য উর্বর জমি রেখে যাবেন, তবে তাঁরা এর ক্ষতি করবেন না। 

প্রধানমন্ত্রী- আপনারা কি আপনাদের জমির চারপাশে কখনও বেড়া দেওয়ার কথা ভেবেছেন? সাধারণত প্রতিবেশীরা বেড়া দিয়ে থাকেন। এতে জমি নষ্ট হয়। যদি উভয় পক্ষ মিলে সৌর প্যানেল বসান, তবে আপনারা দুই পক্ষই বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারেন, ব্যবহার করতে পারেন এবং অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিক্রি করতে পারেন।

কৃষক- অত্যন্ত সুন্দর ভাবনা স্যার। এটা সম্ভব...

প্রধানমন্ত্রী- আমরা এখন এর জন্য টাকাও দিয়ে থাকি। 

কৃষক- পশুপালন ও ডেয়ারি মন্ত্রককে ধন্যবাদ। আমরা ৫০% ভর্তুকি পেয়ে থাকি। আগে আমার কয়েকটি গরু ছিল, এখন আমার ২৫০-টির বেশি গির গরু রয়েছে। আজকে আমি কয়েক কোটি টাকার গোশালার মালিক। ২০১০-এ আমি একটি হোটেলে রুম বয় হিসেবে কাজ করতাম।  

প্রধানমন্ত্রী- আপনি কীভাবে এই জায়গায় এলেন? 

কৃষক- সরকারি উদ্যোগের জন্যই এটা পেরেছি। 

প্রধানমন্ত্রী- বিশ্বজুড়ে মৎস্য চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।

কৃষক- হ্যাঁ স্যার।

প্রধানমন্ত্রী- এক্ষেত্রে ভারতের বিশেষ সুবিধা রয়েছে। 

কৃষক- প্রধানমন্ত্রী মৎস্য সম্পদ যোজনা স্টার্টআপের সঙ্গে যুক্ত কৃষকদের কাছে বড় আশা নিয়ে এসেছে। সরাইকেলায় আমি ১২৫টি গরিব আদিবাসী পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে সুসংহত চাষ শুরু করি। 

কৃষক- স্যার আমি সখি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। ২০ জন মহিলাকে নিয়ে আমাদের যাত্রা শুরু হয়েছিল। এখন আমাদের সঙ্গে কাজ করছেন ৯০,০০০ মহিলা। 

প্রধানমন্ত্রী- ৯০,০০০ !

কৃষক- হ্যাঁ স্যার। দুধ বিক্রি করে এইসব মহিলারা ভালো আয় করেন এবং এ পর্যন্ত আমরা ১৪,০০০-এর বেশি লাখপতি দিদি তৈরি করেছি। 

কৃষক- পিএমএমএসওয়াই প্রকল্পের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আমরা বরফ তৈরি এবং মৎস্য চাষ ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত।

প্রধানমন্ত্রী- আপনাদের সঙ্গে কতজন কাজ করেন?

কৃষক- প্রায় ১০০ জন। 

কৃষক- স্যার আমি কাশ্মীর থেকে এসেছি। আমি পিএমএমএসওয়াই প্রকল্প সম্পর্কে জানার পর কাজ করতে শুরু করি। এখন আমার ১৪ জন কর্মী রয়েছেন। 

প্রধানমন্ত্রী- আচ্ছা।

কৃষক- আমি বছরে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা লাভ করি। বাজার খুব ভালো এবং অন্যরাও উপকৃত হচ্ছেন। 

কৃষক- নমস্কার।

প্রধানমন্ত্রী- নমস্কার।

কৃষক- স্যার আমি ২০১৪-তে আমেরিকা থেকে ফিরে আসি। আমি ১০ একর জমিতে চাষাবাদ শুরু করি। এখন ৩০০ একরের বেশি জমিতে চাষাবাদ করছি। আমি এফআইডিএফ থেকে উপকৃত হয়েছি। বর্তমানে আমার ২০০ জন কর্মী রয়েছে। 

প্রধানমন্ত্রী- ওহ! খুব ভাল!

কৃষক- স্যার আমি গুজরাটের আমরেলি জেলার ধারী থেকে এসেছি। আমার নাম ভাবনা গোন্ডভিয়া। আমার এফপিও-তে ১৭০০ জন কৃষক রয়েছেন। আমি চার বছর ধরে তাঁদের ২০% ডিভিডেন্ড দিয়ে আসছি। 

প্রধানমন্ত্রী- ১৭০০ কৃষক?

কৃষক- নমস্কার প্রধানমন্ত্রী জি। আমার নাম সুনীল কুমার। আমি রাজস্থানের জয়সলমীর থেকে এসেছি। আমরা প্রধানত জিরা চাষ করে থাকি। আমার এফপিও-তে ১০৩৫ জন কৃষক রয়েছেন। আমরা গুজরাটের বিভিন্ন রপ্তানিকারকদের কাছে জিরা সরবরাহ করে থাকি। 

কৃষক- স্যার, আমি কাশ্মীর থেকে এসেছি। আমার নাম ফৈয়জ আহমেদ। আমরা আপেল উৎপাদন করি। 

প্রধানমন্ত্রী- ৬০,০০০ টন ফল, সব্জি এবং ফুল ট্রেনে করে দিল্লিতে পৌঁছয়। 

কৃষক- হ্যাঁ, আমরা দিল্লি এবং অন্যত্র পৌঁছে দিয়ে থাকি।

কৃষক- স্যার, আমার নাম মহম্মদ আসলাম। আমি রাজস্থানের বড়াঁ জেলা থেকে আসছি। আমরা রসুন চাষ করে থাকি। আমাদের রপ্তানির লাইসেন্সও রয়েছে। 

প্রধানমন্ত্রী- আমি একজন তরুণের সঙ্গে কথা বলেছি, যিনি বেসন এবং রসুন থেকে পাঁপড় তৈরি করে থাকেন। 

কৃষক- স্যার, মন কি বাতের মাধ্যমে আপনার সঙ্গে এই মতবিনিময় করতে পেরে আমি সম্মানিত বোধ করছি। 

প্রধানমন্ত্রী- খুব ভাল! ভাই আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। 

 

SSS/MP/NS….


(Release ID: 2179429) Visitor Counter : 4