প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় ভারতীয় সম্প্রদায়ের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

Posted On: 10 JUL 2024 11:59PM by PIB Kolkata

নতুন দিল্লি, ১০ জুলাই ২০২৪

 


ভারত মাতার জয়!

ভারত মাতার জয়!

ভারত মাতার জয়!

আমি কি বলা শুরু করব? অস্ট্রিয়ার অর্থ ও শ্রমমন্ত্রী, অনুষ্ঠানে উপস্থিত ভারতীয় বংশোদ্ভূতরা, ভারতের সকল বন্ধু ও শুভাকাঙ্খীরা, আপনাদের সকলকে অভিনন্দন। 

গুটেন টাগ!

বন্ধুগণ, 

এটি আমার প্রথম অস্ট্রিয়া সফর। এই সফরকালে যে উৎসাহ ও উদ্দীপনা আমি প্রত্যক্ষ করেছি, তা অনবদ্য। ৪১ বছর পর ভারতের কোন প্রধানমন্ত্রী আবার এখানে এলেন। এখানে উপস্থিত অনেকই হয়তো জন্ম হয়নি যখন এর আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী এখানে এসেছিলেন। ভাবতে পারছেন কতদিন আগে? ছেড়ে দিন সেই কথা। অপেক্ষার অবসান হল। অপনারা বলুন, আপনারা সবাই খুশি তো? সত্যি সত্যি খুশি তো, নাকি শুধু কথার কথা বলছেন?

বন্ধুগণ, 

এক ঐতিহাসিক মুহূর্তে এই প্রতিক্ষার অবসান ঘটল। আপনারা অনেকই হয়তো জানেন না এবছর ভারত ও অস্ট্রিয়ার বন্ধুত্বের সম্পর্কের ৭৫ বছর পূর্তি। আমাকে এখানে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানোয় চান্সেলার কার্ল নেমারকে আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। অর্থ ও শ্রমমন্ত্রী মাল্টিন কোশারকে কৃতজ্ঞতা জানাই। অস্ট্রিয়ায় বসবাসরত ভরতীয় সম্প্রদায় যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ আপনার উপস্থিতি সেটিই প্রমাণ করে। 

বন্ধুগণ,  

ভৌগোলিক ভাবে পৃথিবীর দুই প্রান্তে ভারত ও অস্ট্রিয়া। কিন্তু আমাদের দুটি দেশের মধ্যে অনেক মিল আছে। গণতন্ত্র দুই দেশের মধ্যে সেতুবন্ধ রচনা করেছে। স্বাধীনতা, সাম্য, বহুত্ববাদ এবং আইনের শাসন মেনে চলার মতো অভিন্ন মূল্যবোধ আমাদের মধ্যে রয়েছে। আমাদের সমাজ বহুভাষিক ও বহু সাংস্কৃতিক। আমাদের দেশে নির্বাচন এই মূল্যবোধের প্রতিফলন। অস্ট্রিয়ায় আর কয়েক মাস পরে নির্বাচন হবে। ভারতে গণতন্ত্রের উৎসব সদ্য শেষ হয়েছে। 

বন্ধুগণ, 

সারা বিশ্বের জনগণ ভারতের নির্বাচন সম্পর্কে অত্যন্ত আগ্রহী। কয়েক সপ্তাহ আগে শেষ হওয়া সেই নির্বাচনে ৬৫ কোটির বেশি মানুষ ভোট দিয়েছেন। এই সংখ্যা অস্ট্রিয়ার জনসংখ্যার ৬৫ গুণ। ভাবতে পারছেন এত বৃহৎ নির্বাচন – তার ফল ঘোষণা করা হয়েছে মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যে। ভারতের নির্বাচনী ব্যবস্থাপনা এবং আমাদের গণতন্ত্রে শক্তি এখানেই নিহিত আছে।   

বন্ধুগণ, 

এই নির্বাচনে শত শত রাজনৈতিক দল এবং ৮,০০০-এরও বেশি প্রার্থী এখানে অংশ নিয়েছেন। তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্যে ভারতের মানুষ মতদান করেছেন। কী সেই মতদান? ষাট বছর পর ভারতে একটি সরকার পরপর তিনবার নির্বাচনে জয়লাভ করল। কোভিড পরবর্তী সময়ে সারা বিশ্বে যখন অস্থিরতা বিরাজ করছে, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সরকারের পরিবর্তন হচ্ছে, সেই আবহে একটি সরকারের পুনর্নিবাচন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এই পরিস্থিতিতে ভারতের জনগণ আমাকে, আমার দলকে এবং এনডিএ-র প্রতি আস্থা রেখেছেন। এই ফলাফল থেকে স্পষ্ট ভারতের জনগণ স্থায়িত্বে বিশ্বাস করে। গত ১০ বছর ধরে যে নীতি ও কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে তারা চান সুশাসনের সেই ধারা অব্যাহত থাকুক। 

বন্ধুগণ, 

আমি সবসময় বিশ্বাস করি দুটি দেশের মধ্যে সম্পর্ক গড়তে শুধুই সরকারেই ভূমিকা থাকে না, মানুষের অংশগ্রহণও সমান গুরুত্বপূর্ণ। বহুদিন আগে মোৎজার্টের এই দেশে সঙ্গীত আপনাদের হৃদয়ে রয়েছে। ভিয়েনা, গাৎজ, লিনৎজ, ইন্সব্রুক, সালজবুর্গ-সহ বিভিন্ন শহরে ভারতের ছোঁয়া রয়েছে। দীপাবলি এবং ক্রিসমাস একই উৎসাহ, উদ্দীপনায় পালিত হয়। টর্স এবং লাড্ডু আপনারা একই উৎসাহে বানান, খান এবং অন্যকে দেন। আপনারা অস্ট্রিয়ার ফুটবল দল এবং ভারতের ক্রিকেট দলকে একই উৎসাহে সমর্থন করেন। আপনারা এখানে যখন কফি খান, তখন ভারতে যেখানে আপনাদের বাড়ি সেই অঞ্চলের চায়ের দোকানের কথা মনে পড়ে।  

বন্ধুগণ,  

ভারতের মতো অস্ট্রিয়ার ইতিহাস ও সংস্কৃতিও বহু পুরানো। সাংস্কৃতিক ও বাণিজ্যিক ভাবে দুই দেশের মধ্যে বহু যুগ ধরে সম্পর্ক রয়েছে। ভিয়েনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০ বছর আগে সংস্কৃত পড়ানো হতো। এই ভাষার প্রতি আগ্রহের কারণে ১৮৮০ সালে ভারত তত্ত্বের ওপর একটি স্বাধীন চেয়ার প্রতিষ্ঠিত হয়। আজ কয়েকজন বিদগ্ধ ভারততত্ত্ববিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সুযোগ আমার হয়েছে। অস্ট্রিয়ায় অনেকে ভারতীয়দের খুব ভালোবাসেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর মতো মহান ব্যক্তিত্বরা ভিয়েনায় থেকেছেন। গান্ধীজীর শিষ্য মীরাবেন তাঁর জীবনের শেষ কটি দিন এখানেই কাটিয়েছেন। 

বন্ধুগণ, 

আমাদের সম্পর্ক শুধু সংস্কৃতি ও বাণিজ্যের মধ্যেই আবদ্ধ নেই, বিজ্ঞানও এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। বহু বছর আগে আমাদের নোবেল জয়ী বিজ্ঞানী স্যার সি ভি রমন ভিয়েনা বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা দিয়েছেন। আমার নিজের নোবেল জয়ী বিজ্ঞানী আন্তোন জিলিংগারের সঙ্গে সাক্ষাতের সৌভাগ্য হয়েছে। এই দুই বিজ্ঞানী কোয়ান্টাম তথ্য নিয়ে কাজ করেছেন। আন্তোনের কোয়ান্টাম কম্পিউটিং সারা বিশ্বকে অনুপ্রাণিত করেছে। 

বন্ধুগণ, 

আজ ভারতকে নিয়ে সারা বিশ্বে আলোচনা হয়। আপনাদের মধ্যে নিশ্চয়ই কৌতুহলের সৃষ্টি হয় যে ভারতকে নিয়ে কেন এত আগ্রহ। ভারত কী করছে। বিশ্বের মোট জনসংখ্যার এক ষষ্ঠাংশের বাস ভারতে। আমরা জ্ঞানকে সারা বিশ্বে ভাগ করে নিই। আমরা গর্ব করে বলি ভারত বুদ্ধকে দিয়েছে যুদ্ধকে নয়। যখন আমরা বুদ্ধকে নিয়ে কথা বলি, তখন তার অর্থ দাঁড়ায় ভারত শান্তি ও সমৃদ্ধিও প্রদান করেছে। তাই একবিংশ শতাব্দীতে ভারত বিশ্ব বন্ধু হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। আপনারা নিশ্চয়ই এর জন্য গর্বিত?  

বন্ধুগণ, 

আপনারা নিশ্চই শুনেছেন ভারতে দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। আজ ভারত বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি। ২০১৪ সালে আমি যখন দায়িত্ব গ্রহণ করি, তখন আমাদের স্থান ছিল দশম। আজ ভারতের উন্নয়ন হার ১০ শতাংশ। খুব শীঘ্রই আমরা তৃতীয় স্থানে পৌঁছোব। আপনাদেরকে জানাই আমরা শীর্ষে পৌঁছোনোর জন্য যেমন কাজ করছি, একই ভাবে আমাদের স্বাধীনতার শততম বর্ষে ২০৪৭ সালে আমরা দেশকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করতে উদ্যোগী হয়েছি। প্রতিটি ক্ষেত্রে ভারতের উন্নয়নযাত্রা সংগঠিত হচ্ছে। আগামী ১,০০০  বছরের ভিত আমরা গড়ে তুলছি। 

বন্ধুগণ, 

শিক্ষা, দক্ষতা, গবেষণা এবং উদ্ভাবন নিয়ে দারুন কাজ হচ্ছে। গত ১০ বছরে প্রতিদিন ভারতে দুটি করে কলেজ খুলছে। প্রত্যেক সপ্তাহে একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় কাজ শুরু করছে। গতবছর প্রতিদিন ২৫০-টির বেশি পেটেন্ট দেওয়া হয়েছে। আজ বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম স্টার্টআপ ব্যবস্থাপনা ভারতে। বিশ্বের এক দশমাংশ ইউনিকর্ন ভারতে। ডিজিটাল পদ্ধতিতে যে পরিমাণ আর্থিক লেনদেন হয় তা অন্য দেশে হয় না। ভারত কাগজবিহীন এক ব্যবস্থাপনায় এগিয়ে চলেছে। 

বন্ধুগণ, 

আজ ভারত উজ্জ্বলতম, বৃহত্তম ও উচ্চতম মাইলফলকের জন্য কাজ করে চলেছে। আমরা চতুর্থ শিল্প বিপ্লব এবং পরিবেশবান্ধব ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।  পরিবেশবান্ধব হাইড্রোজেন মিশনের লক্ষ্য হল ২০৭০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণকে শূন্যে নামিয়ে আনা। ভারতের উন্নয়ন যজ্ঞে অস্ট্রিয়াও লাভবান হচ্ছে। আজ ভারতের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অস্ট্রিয়ার ১৫০-টি কোম্পানি কাজ করছে। মেট্রোরেল, জলাধার এবং সুড়ঙ্গ নির্মাণের মতো বিভিন্ন পরিকাঠামোর প্রকল্পে অস্ট্রিয়ার সংস্থাগুলি কাজ করছে। আমি আশা করব অদূর ভবিষ্যতে আরও বেশি অস্ট্রিয়ার কোম্পানি ভারতে বিনিয়োগ করবে। 

বন্ধুগণ,  

অস্ট্রিয়ায় বসবাসরত ভারতীয়ের সংখ্যা খুব বেশি নয়। কিন্তু অস্ট্রিয়ার সমাজে আপনাদের ভূমিকা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। এদেশের স্বাস্থ্য পরিষেবায় আপনারা যে কাজ করছেন তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। আশা করব অস্ট্রিয়ার উন্নয়নে ভবিষ্যতেও আপনারা এই ভাবেই কাজ করে যাবেন। আরও একবার বিপুল সংখ্যায় এখানে আসার জন্য আমি আপনাদের কৃতজ্ঞতা জানাই। অনেক অনেক ধন্যবাদ।

বন্ধুগণ, 

আমার অস্ট্রিয়া সফর অত্যন্ত অর্থবহ। আরও একবার আমি অস্ট্রিয়া সরকার এবং জনগণকে আমার কৃতজ্ঞতা জানাই। আমি নিশ্চিত এবছর অন্যান্য বছরের তুলনায় আরও বেশি করে আপনারা ১৫ আগস্ট উদযাপন করবেন। কি আমি ঠিক বললাম তো? আমার সঙ্গে একযোগে বলুন... 


ভারত মাতার জয়!

ভারত মাতার জয়!

ভারত মাতার জয়!

বন্দে মাতরম!

বন্দে মাতরম!

বন্দে মাতরম!

বন্দে মাতরম!

বন্দে মাতরম!

বন্দে মাতরম!

বন্দে মাতরম!

বন্দে মাতরম!

বন্দে মাতরম!

বন্দে মাতরম!


অনেক অনেক ধন্যবাদ!

(প্রধানমন্ত্রীর মূল ভাষণটি হিন্দিতে ছিল)


******

SSS/CB/AS


(Release ID: 2177960) Visitor Counter : 13