প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

প্রধানমন্ত্রী গুজরাটের রাজকোটে ৪৮,১০০ কোটি টাকার বেশি একগুচ্ছ উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করলেন

Posted On: 25 FEB 2024 6:40PM by PIB Kolkata

নতুন দিল্লি, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

 


প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ গুজরাটের রাজকোটে ৪৮,১০০ কোটি টাকার বেশি একগুচ্ছ উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেছেন। এই প্রকল্পগুলি স্বাস্থ্য পরিষেবা, সড়ক, রেল, জ্বালানি, পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস এবং পর্যটনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। 

এই উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করা বিভিন্ন রাজ্যের রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়ক এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, অতীতে শুধুমাত্র নতুন দিল্লিতেই গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়নমূলক প্রকল্প বাস্তবায়িত হতো। তাঁর সরকার এই ধারার পরিবর্তন ঘটিয়েছে। “আজ রাজকোটে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানটি তারই প্রমাণ”। প্রধানমন্ত্রী বলেন, একই সঙ্গে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের জন্য নানা প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাসের সংস্কৃতি তৈরি করেছে। এর আগে জম্মুতে এক অনুষ্ঠানে তিনি ভিলাই ও তিরুপতিতে আইআইটি, কুর্নুলের আইআইআইটি এবং বুদ্ধ গয়া, জম্মু, বিশাখাপত্তনমে আইআইএম এবং  কানপুরে আইআইএস-এর উদ্বোধন করেছিলেন। আজ এই অনুষ্ঠানে তিনি রাজকোট, রায়বেরেলি, মঙ্গলাগিরি, ভাতিন্দা এবং কল্যাণীতে এইমসের উদ্বোধন করা হল। “উন্নয়নশীল ভারতে দ্রুত গতিতে বিভিন্ন কর্মকান্ড বাস্তবায়িত হচ্ছে, আজ আপনারা এই পাঁচটি এইমসের উদ্বোধন প্রত্যক্ষ করেছেন”। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে রাজকোটের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ রয়েছে। উল্লেখ্য, ২২ বছর আগে ২৫ ফেব্রুয়ারি তিনি রাজকোটের বিধায়ক হিসেব শপথ গ্রহণ করেছিলেন। সেই সময় রাজকোটের জনসাধারণের আস্থা অর্জনের জন্য তাঁর পক্ষে যতটা করা সম্ভব তিনি ততটাই করেছেন। কৃতজ্ঞচিত্তে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমি এক প্রজন্ম থেকে পরবর্তী প্রজন্মকে দেখেছি, কিন্তু সকল প্রজন্মের মোদীর প্রতি ভালবাসা দেখেছি।”

আজকের অনুষ্ঠান দেরিতে শুরু করার জন্য তিনি সকলের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তিনি জানান, এর আগে দ্বারকায় সুদর্শন সেতু-সহ একগুচ্ছ উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস তিনি করে এসেছেন। ডুবন্ত পবিত্র শহর দ্বারকায় তাঁর আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা তিনি সকলের সঙ্গে ভাগ করে নেন। “দ্বারকা সম্পর্কে বিভিন্ন প্রত্নতাত্বিক ও ধর্মীয় গ্রন্থ পাঠ করে আমরা আশ্চর্য হয়ে যাই। আজ নিজের চোখে সেই পবিত্র দৃশ্য এবং পবিত্র ধ্বংসাবশেষ স্পর্শ করার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। আমি সেখানে প্রার্থনা করেছি এবং ‘মর-পঙ্ক’-এ অঞ্জলি দিয়েছি। সেই সময়ে যে অনুভূতি হয়েছে তা প্রকাশ করা যাবে না।” আবেগাপ্লুত প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ওই স্থানে ভারতের গৌরব অর্জন ইতিহাসের কথা ভেবে আমি আশ্চর্য হয়ে যাই। আমি যখন সেখান থেকে বেরিয়ে আসি, তখন ভগবান কৃষ্ণের আশীর্বাদধন্য হই। একই সঙ্গে দ্বারকার আদর্শে অনুপ্রাণিত হই। এর ফলে বিকাশ এবং ঐতিহ্যকে সঙ্গে নিয়ে উন্নয়নের কাজ করার বিষয়ে আমার যে সংকল্প রয়েছে তা শক্তিশালী হয়। বিকশিত ভারতের জন্য এক অধ্যাত্ম চেতনা আমার সঙ্গী।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ যে ৪৮ হাজার কোটি টাকার বেশি উন্নয়নমূলক প্রকল্পের সূচনা হল, এর মধ্যে রয়েচে নিউ মুন্দ্রা-পানিপত পাইপলাইন। গুজরাটের উপকূল থেকে হরিয়নার পানিপতে ইন্ডিয়ান অয়েলের তেল শোধনাগারে অশোধিত তেল নিয়ে যাওয়া হবে। তিনি এই সঙ্গে সড়ক, রেল, বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত প্রকল্পগুলির কথা উল্লেখ করেন। “একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উদ্বোধনের পর রাজকোট এইমস জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করা হল।” প্রধানমন্ত্রী এই উপলক্ষে রাজকোট ও সৌরাষ্ট্রের জনগণকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।  

শ্রী মোদী বলেন, “আজ শুধু রাজকোটের জন্য নয়, সারা দেশের জন্য এটি এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত”। প্রধানমন্ত্রী জানান, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর প্রথম ৫০ বছরে মাত্র একটি এইমস ছিল। সেটিও নতুন দিল্লিতে। স্বাধীনতার সাত দশকে দেশে মাত্র সাতটি এইমস কাজ শুরু করেছে। “গত ১০ দিনে দেশ সাতটি নতুন এইমসের শিলান্যাস ও উদ্বোধন প্রত্যক্ষ করেছে।” বর্তমান সরকার দ্রুতগতিতে উন্নয়ন করছে। গত ৭০ বছরে যে কাজ হয়নি, এখন সেই কাজই হচ্ছে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মোদীর গ্যারান্টির অর্থ প্রতিশ্রুতি পূরণ। তিনি বলেন, তিন বছর আগে তিনি নিজে রাজকোট এইমসের শিলান্যাস করেন। একই ভাবে পাঞ্জামে এইমসের শিলান্যাসও তিনি করেছেন।  রায়বেরেলি, মঙ্গলগিরি, লেওয়ারি এবং কল্যাণীতেও কাজ শুরু করলো। গত ১০ বছরে বিভিন্ন রাজ্যে ১০টি নতুন এইমস গড়ে তোলার প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। “যেখানে মানুষ আর কিছু প্রত্যাশা করেন না, সেখান থেকে মোদীর গ্যারান্টি শুরু হয়।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা ও পরিকাঠামো গত ১০ বছরে গড়ে উঠেছে। তাই যথাযথ ভাবে মহামারীর মোকাবিলা করা গেছে। এই ১০ বছরে যেভাবে এইমস, মেডিকেল কলেজ এবং জরুরী পরিষেবা সংক্রান্ত পরিকাঠামো অপ্রতিরোধ্যভাবে প্রসারিত হয়েছে। বিভিন্ন গ্রামে মোট ১.৫ লক্ষ  আয়ুষ্মান আরোগ্য মন্দির গড়ে তোলা হয়েছে। ২০১৪ সালে দেশে মেডিকেল কলেজ ছিল ৩৮৭-টি। বর্তমানে তা বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৭০৬-টি। দশ বছর আগে ডাক্তারির আসন ছিল ৫০ হাজার, এখন তা বেড়ে হয়েছে এক লক্ষ। ২০১৪ সালে ডাক্তারিতে স্নাতকোত্তর স্তরে আসন ছিল ৩০ হাজার। বর্তমানে তা বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৭০ হাজার। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে এই কলেজগুলি থেকে প্রচুর ডাক্তার বের হবেন। আয়ুষ্মান ভারত হেল্থ ইনফ্রাস্ট্রাকচার মিশন থেকে ৬৪ হাজার কোটি টাকা আয়ুষ্মান ভারত স্বাস্থ্য বীমা পরিষেবার জন্য ব্যয় করা হয়েছে। আজ মেডিকেল কলেজ, যক্ষ্মা হাসপাতাল এবং গবেষণা কেন্দ্র, পিজিআই স্যাটেলাইট সেন্টার এবং বেশকিছু ইএসআইসি হাসপাতাল প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে।  

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সরকার রোগ প্রতিরোধ এবং রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষমতাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। তাই পুষ্টি, যোগ, আয়ুষ এবং পরিচ্ছন্নতার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। গুজরাটে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার চিরায়ত চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা গড়ে উঠছে।” 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দরিদ্র ও মধ্যবিত্তদের উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানের পাশাপাশি, তাঁদের আর্থিক সাশ্রয়ের দিকটিকেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। আয়ুষ্মান ভারত যোজনা ১ লক্ষ কোটি টাকা সাশ্রয় করেছে। বিভিন্ন জনৌষধি কেন্দ্র থেকে স্বল্প মূল্যে ওষুধ বিক্রি করা হচ্ছে। তার ফলে, ৩০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। উজ্জ্বলা যোজনার আওতায় দরিদ্র মানুষ ৭০ হাজার কোটি টাকা বাঁচাতে পেরেছেন। মোবাইল ফোনের ডেটার দাম কমে যাওয়ায় নাগরিকরা প্রতিমাসে চার হাজার টাকা সাশ্রয় করছেন। কর ব্যবস্থার সংস্কারের ফলে করদাতাদের আড়াই লক্ষ কোটি টাকার সাশ্রয় হয়েছে। 

প্রধানমন্ত্রী পিএম সূর্যঘর প্রকল্পের বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন। এই প্রকল্পের সুবিধা প্রাপকরা ৩০০ ইউনিট বিদ্যুৎ বিনামূল্যে পাবেন। বাকি বিদ্যুৎ সরকার কিনে নেবেন। তিনি জানান, কচ্ছে বায়ুশক্তি ও সৌরশক্তি চালিত দুটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের শিলান্যাস করেছেন তিনি। 

রাজকোটকে কর্মী, শিল্পোদ্যোগী এবং হস্তশিল্পীদের শহর বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পিএম বিশ্বকর্মা প্রকল্পের সুবিধা লক্ষ লক্ষ বিশ্বকর্মার কাছে পৌঁছে গেছে। এই প্রকল্পে ১৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। তিনি বলেন, দেশের নাগরিকদের ক্ষমতায়নের ফলে বিকশিত ভারত গড়ে তোলার লক্ষ্য দ্রুত অর্জিত হবে। “যখন মোদী ভারতকে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনৈতিক শক্তিতে উন্নীত করার গ্যারান্টি দিয়েছে, তখন সকলের স্বাস্থ্য ও সমৃদ্ধির গ্যারান্টিও সে দিচ্ছে।” 

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডঃ মনসুখ মান্ডভিয়া, সাংসদ শ্রী সি আর পাতিল-সহ বিশিষ্ট জনেরা। 


SSS/CB/AS


(Release ID: 2177955) Visitor Counter : 6