প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে নিউজ নাইন গ্লোবাল সামিটে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের বঙ্গানুবাদ।
Posted On:
22 NOV 2024 10:46PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ২২ নভেম্বর ২০২৪
শুভ সন্ধ্যা!
স্টুটগার্ট নিউজ নাইন গ্লোবাল সামিটের সকল অংশগ্রহণকারীদের নমস্কার!
মন্ত্রী উইনফ্রিড, আমার মন্ত্রিসভার সহকর্মী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া এবং এই সম্মেলনে উপস্থিত সকল বিশিষ্ট মহিলা ও ভদ্রমহিলাগণ!
আজ, ভারত-জার্মান অংশীদারিত্বে একটি নতুন অধ্যায় যুক্ত হচ্ছে। ভারতের টিভি-৯, ভিএফবি স্টুটগার্ট এবং বাডেন-ভুর্টেমবের্গ -এর সহযোগিতায় এখানে জার্মানিতে এই সম্মেলনের আয়োজন করেছে। আমি আনন্দিত যে এই তথ্য-প্রযুক্তির যুগে একটি ভারতীয় মিডিয়া গোষ্ঠী জার্মানি এবং এর জনগণের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার চেষ্টা করছে। এই উদ্যোগটি ভারত ও জার্মানির জনগণের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়ার একটি মঞ্চ প্রদান করবে। আমি আরও আনন্দিত যে ইংরেজি নিউজ চ্যানেল নিউজ-নাইন চালু হচ্ছে।
বন্ধুগণ,
এই সম্মেলনের মূল ভাবনা হল "ভারত-জার্মানি: স্থিতিশীলতা বৃদ্ধির জন্য একটি পথচিত্র"। এই ভাবনাটি দুই দেশের মধ্যেকার দায়িত্বশীল অংশীদারিত্বের প্রতীক। গত দু'দিন ধরে আপনারা কেবল অর্থনৈতিক বিষয় নিয়েই নয়, বরং খেলাধুলা এবং বিনোদন সম্পর্কিত বিষয় নিয়েও খুবই ইতিবাচক আলোচনা করেছেন।
বন্ধুগণ,
ইউরোপ ভূ-রাজনৈতিক সম্পর্ক এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগ – উভয় দৃষ্টিকোণ থেকেই ভারতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অঞ্চল। জার্মানি আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারদের মধ্যে অন্যতম। ভারত-জার্মান কৌশলগত অংশীদারিত্ব ২০২৪ সালে ২৫ বছর পূর্ণ করছে, যা এই বছরটিকে এই অংশীদারিত্বের জন্য একটি ঐতিহাসিক ও বিশেষ মাইলফলক করে তুলেছে। মাত্র গত মাসেই, চ্যান্সেলর শলজ তৃতীয়বারের মতো ভারতে এসেছিলেন। ১২ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো, জার্মান ব্যবসার এশিয়া-প্যাসিফিক সম্মেলনটি নতুন দিল্লিতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এই সম্মেলনের সময়, জার্মানি ‘ফোকাস অন ইন্ডিয়া’ ডকুমেন্ট এবং ভারতের জন্য দক্ষ শ্রমিক কৌশল প্রকাশ করে। এটিই হল জার্মানি দ্বারা তৈরি প্রথম দেশ-নির্দিষ্ট কৌশল।
বন্ধুগণ,
যদিও ভারত-জার্মানি কৌশলগত অংশীদারিত্বের বয়স ২৫ বছর, তবে, আমাদের সাংস্কৃতিক ও বৌদ্ধিক বন্ধন শত শত বছরের পুরনো। ইউরোপে প্রথম সংস্কৃত ব্যাকরণ বইটি একজন জার্মান দ্বারা রচিত হয়েছিল। দুই জন জার্মান ব্যবসায়ীর প্রয়াসে জার্মানি প্রথম ইউরোপীয় দেশ হিসেবে তামিল এবং তেলুগু ভাষায় বই প্রকাশ করেছিল। বর্তমানে, প্রায় ৩ লক্ষ ভারতীয় জার্মানিতে বসবাস করেন। প্রায় ৫০,০০০ ভারতীয় ছাত্র জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে নথিভুক্ত রয়েছে, যা তাদেরকে এখানে বিদেশী ছাত্রদের বৃহত্তম গোষ্ঠীতে পরিণত করেছে। ভারত-জার্মানি সম্পর্কের আরেকটি দিক ভারতেও দেখা যায়। ১,৮০০-এরও বেশি জার্মান কোম্পানি ভারতে কাজ করছে এবং গত তিন থেকে চার বছরে প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় ৩৪ বিলিয়ন ডলার, এবং আমি নিশ্চিত যে আগামী বছরগুলিতে এটি আরও বৃদ্ধি পাবে। এই বিশ্বাসটি ভারত ও জার্মানির মধ্যে সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ধীরে ধীরে শক্তিশালী হওয়া অংশীদারিত্ব থেকেই তৈরি হয়েছে।
আজ, ভারত হল বিশ্বের দ্রুততম-বর্ধনশীল বৃহৎ অর্থনীতি। প্রতিটি দেশই তার উন্নয়নের জন্য ভারতের সঙ্গে অংশীদার হতে আগ্রহী। জার্মানির ‘ফোকাস অন ইন্ডিয়া’ ডকুমেন্টের একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ। এই ডকুমেন্টটি প্রতিফলিত করে যে কীভাবে সমগ্র বিশ্ব ভারতের কৌশলগত গুরুত্ব স্বীকার করছে। সংস্কার, সম্পাদন, রূপান্তর - গত এক দশক ধরে ভারত এই মন্ত্রে কাজ করেছে, যার ফলস্বরূপ ধারণার এই পরিবর্তন এসেছে। দ্রুত একবিংশ শতাব্দীর বৃদ্ধির জন্য প্রস্তুত হতে ভারত সকল ক্ষেত্রে নতুন নীতি বাস্তবায়ন করেছে। আমরা রেড টেপের সমস্যা দূর করেছি, ব্যবসা করার সুবিধা উন্নত করেছি এবং ৩০,০০০-এরও বেশি নিয়ম কমিয়েছি। ভারত উন্নয়নের জন্য সাশ্রয়ী ও সময়োপযোগী পুঁজি সরবরাহ করতে ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করেছে। আমরা একটি কার্যকর জিএসটি কাঠামোর মাধ্যমে কর ব্যবস্থাকে সরল করেছি এবং ব্যবসার বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করতে একটি প্রগতিশীল ও স্থিতিশীল নীতি-প্রণয়ন পরিবেশ তৈরি করেছি। আজ, ভারত এমন একটি দৃঢ় ভিত্তি স্থাপন করেছে যার ওপর ‘বিকশিত ভারত’ - উন্নত ভারত -এর মহৎ অট্টালিকা নির্মিত হবে, এবং এই যাত্রায় জার্মানি এক বিশ্বস্ত অংশীদার থাকবে।
বন্ধুগণ,
উৎপাদন ক্ষেত্র এবং কারিগরি ক্ষেত্র জার্মানির উন্নয়ন যাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ভারতও বিশ্বব্যাপী একটি প্রধান উৎপাদন কেন্দ্রে পরিণত হওয়ার দিকে এগিয়ে চলেছে। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ উদ্যোগে যোগ দেওয়া উৎপাদকদের উৎপাদন-সংযুক্ত উৎসাহভাতা দিয়ে উৎসাহিত করা হচ্ছে। আমি আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে আমাদের উৎপাদন ক্ষেত্র উল্লেখযোগ্যভাবে রূপান্তরিত হয়েছে। আজ, ভারত মোবাইল এবং বৈদ্যুতিক উৎপাদন ক্ষেত্রে অন্যতম শীর্ষস্থানীয় দেশ। আজ, ভারত দু'চাকা যানের উৎপাদনে বৃহত্তম, ইস্পাত ও সিমেন্ট উৎপাদনে দ্বিতীয়-বৃহত্তম এবং চার চাকা যানের উৎপাদনে চতুর্থ-বৃহত্তম। ভারতের সেমিকন্ডাক্টর শিল্পও বিশ্বব্যাপী তাদের স্থান তৈরি করার জন্য প্রস্তুত। এই অগ্রগতি এসেছে পরিকাঠামোর উন্নয়ন,ব্যবস্থাপনা খরচ হ্রাস, ব্যবসা করার সুবিধা এবং স্থিতিশীল শাসনের উপর নিবদ্ধ ধারাবাহিক নীতি ও নতুন সিদ্ধান্তের ফলে। একটি দেশের দ্রুত উন্নয়নের জন্য শারীরিক, সামাজিক এবং ডিজিটাল পরিকাঠামোতে বিনিয়োগের প্রয়োজন এবং ভারত এই সমস্ত ক্ষেত্রেই এগিয়ে চলেছে। আজ বিশ্ব ডিজিটাল প্রযুক্তিতে আমাদের বিনিয়োগ এবং উদ্ভাবনের প্রভাব দেখতে পাচ্ছে। ভারত হল বিশ্বে অনন্য ডিজিটাল সাধারণ মানুষের পরিকাঠামো উপযুক্ত একটি দেশ।
বন্ধুগণ,
আজ ভারতে অসংখ্য জার্মান কোম্পানি রয়েছে এবং আমি তাদের বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। আমি সেই সমস্ত জার্মান কোম্পানিকেও আমন্ত্রণ জানাচ্ছি যারা এখনও ভারতে তাদের ঘাঁটি তৈরি করেনি। দিল্লিতে জার্মান কোম্পানিগুলির এশিয়া-প্যাসিফিক সম্মেলনে আমি যেমনটা বলেছিলাম, ভারতের সঙ্গে অংশীদার হওয়ার এটাই সঠিক সময়। ভারতের গতিশীলতার সঙ্গে জার্মানির যথার্থতা, জার্মানির কারিগরি বিদ্যার সঙ্গে ভারতের উদ্ভাবন - এই সমন্বয় আমাদের সম্মিলিত লক্ষ্য হওয়া উচিত। বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন সভ্যতা হিসেবে আমরা সবসময়ই সমগ্র বিশ্ব থেকে আসা মানুষকে স্বাগত জানিয়েছি এবং তাদের আমাদের যাত্রার অংশ করে নিয়েছি। বিশ্বের জন্য একটি সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ গড়তে আমি আপনাদের আমাদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানাই।
ধন্যবাদ!
ধন্যবাদ!
SSS/AS....
(Release ID: 2177333)
Visitor Counter : 6
Read this release in:
English
,
Urdu
,
Marathi
,
हिन्दी
,
Manipuri
,
Assamese
,
Punjabi
,
Gujarati
,
Odia
,
Tamil
,
Telugu
,
Kannada
,
Malayalam