প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
তৃতীয় কৌটিল্য ইকোনমিক্স কনক্লেভ ২০২৪ -এ প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের বঙ্গানুবাদ
Posted On:
04 OCT 2024 7:45PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ৪ অক্টোবর ২০২৪
অর্থমন্ত্রী শ্রীমতী নির্মলা সীতারামন জি, ইনস্টিটিউট অফ ইকোনমিক গ্রোথের প্রেসিডেন্ট এন কে সিং জি, কনক্লেভে উপস্থিত ভারত ও বিদেশের অন্যান্য বিশিষ্ট অতিথি এবং ভদ্রমহিলা ও ভদ্রমহোদয়গণ! এটি কৌটিল্য কনক্লেভের তৃতীয় সংস্করণ। আপনাদের সকলের সঙ্গে মিলিত হওয়ার সুযোগ পেয়ে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। আগামী তিন দিন এখানে বিভিন্ন অর্থনৈতিক বিষয় নিয়ে অসংখ্য আলোচনা হবে। আমি নিশ্চিত যে এই আলোচনাগুলি ভারতের প্রবৃদ্ধিকে দ্রুততর করতে সাহায্য করবে।
বন্ধুগণ ,
এই কনক্লেভ এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে যখন বিশ্বের দুটি প্রধান অঞ্চলে যুদ্ধ চলছে। এই অঞ্চলগুলি আন্তর্জাতিক অর্থনীতির জন্য, বিশেষত জ্বালানি সুরক্ষার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এমন গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে, আমরা এখানে ‘দ্য ইন্ডিয়ান এরা’ (মহান ভারতীয় যুগ) নিয়ে আলোচনা করতে একত্রিত হয়েছি। এটি দেখায় যে, আজ ভারতের প্রতি যে আস্থা, তা অতুলনীয়... এটি প্রমাণ করে যে ভারতের আত্মবিশ্বাস অসাধারণ।
বন্ধুগণ,
আজ ভারত বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল প্রধান অর্থনীতি। মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বা জিডিপির দিক থেকে বর্তমানে ভারত পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি। বিশ্বব্যাপী ফিনটেক গ্রহণকারী দেশের তালিকায় আমরা এক নম্বরে আছি। আজ আমরা স্মার্টফোন ডেটা ব্যবহারের ক্ষেত্রেও এক নম্বরে। বিশ্বজুড়ে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে আমাদের স্থান দ্বিতীয়। বিশ্বের প্রায় অর্ধেক রিয়েল-টাইম ডিজিটাল লেনদেন আজ ভারতেই হচ্ছে। বর্তমানে ভারতে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম স্টার্ট-আপ ইকোসিস্টেম রয়েছে। পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির সক্ষমতার ক্ষেত্রে ভারত চতুর্থ স্থানে আছে। যখন উৎপাদনের কথা আসে, তখন ভারত দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল ফোন উৎপাদক। ভারত দুই-চাকার যান এবং ট্র্যাক্টর উৎপাদনেও বৃহত্তম। শুধু তাই নয়, ভারত বিশ্বের সবচেয়ে তরুণ দেশ। বিশ্বব্যাপী বিজ্ঞানী ও প্রযুক্তিবিদদের ক্ষেত্রে ভারতের স্থান তৃতীয় বৃহত্তম। বিজ্ঞান, প্রযুক্তি বা উদ্ভাবন - যে ক্ষেত্রেই হোক না কেন, ভারত স্পষ্টভাবে একটি
আদর্শ অবস্থানে রয়েছে।
বন্ধুগণ,
সংস্কার, কার্যকারিতা এবং রূপান্তর’-এর মন্ত্র অনুসরণ করে, আমরা দেশকে দ্রুত গতিতে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ক্রমাগত সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। এই প্রভাবের কারণেই ৬০ বছর পর ভারতের জনগণ পরপর তৃতীয়বারের মতো একই সরকারকে নির্বাচিত করেছে। যখন মানুষের জীবনযাত্রার পরিবর্তন ঘটে, তখন তারা এই আস্থা অর্জন করে যে দেশ সঠিক পথেই এগোচ্ছে। জনসাধারণের এই অনুভূতিই ভারতের এই জনাদেশে প্রতিফলিত হয়েছে। ১৪০ কোটি নাগরিকের বিশ্বাস এই সরকারের জন্য এক বিশাল সম্পদ।
একটি বিকশিত ভারত গড়ার জন্য কাঠামোগত সংস্কার অব্যাহত রাখাই আমাদের অঙ্গীকার। আমাদের তৃতীয় মেয়াদের প্রথম তিন মাসের কাজের মধ্যেই আপনারা এই প্রতিশ্রুতি দেখতে পাবেন। সাহসী নীতি পরিবর্তন, কর্মসংস্থান ও দক্ষতার প্রতি দৃঢ় অঙ্গীকার, সুস্থায়ী প্রবৃদ্ধি ও উদ্ভাবনের উপর জোর, আধুনিক পরিকাঠামো, জীবনযাত্রার মান এবং দ্রুত উন্নয়নের ধারাবাহিকতা - এই সব কিছুই আমাদের প্রথম তিন মাসের নীতিতে প্রতিফলিত হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে, ১৫ ট্রিলিয়ন টাকা অর্থাৎ ১৫ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি অর্থের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র এই তিন মাসেই ভারতে অসংখ্য মেগা পরিকাঠামো প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। আমরা দেশজুড়ে ১২টি শিল্প নোড তৈরি করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এছাড়াও, ৩ কোটি নতুন বাড়ি নির্মাণের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বন্ধুগণ,
ভারতের উন্নয়ন কাহিনীর আরও একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হল এর অন্তর্ভুক্তিমূলক মানসিকতা। একসময় ধারণা করা হত যে প্রবৃদ্ধির সঙ্গে বৈষম্য আসে। কিন্তু ভারতে তার উল্টোটা ঘটছে। প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি, ভারতেই অন্তর্ভুক্তিকরণও ঘটছে। ফলস্বরূপ, গত ১০ বছরে ২৫০ মিলিয়ন অর্থাৎ ২৫ কোটি মানুষকে দারিদ্র্যতা থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। ভারতের দ্রুত অগ্রগতির পাশাপাশি, আমরা নিশ্চিত করছি যে বৈষম্য হ্রাস পাবে এবং উন্নয়নের সুবিধা যেন সকলের কাছে পৌঁছায়।
বন্ধুগণ,
ভারতের প্রবৃদ্ধি সংক্রান্ত পূর্বাভাসগুলির প্রতি এই আস্থা আমাদের গন্তব্য পথের দিকনির্দেশ দেখায়। সাম্প্রতিক সপ্তাহ ও মাসগুলির তথ্যে আপনারা এটি দেখতে পাচ্ছেন। গত বছর আমাদের অর্থনীতি যে কোনো পূর্বাভাসের চেয়ে ভালো ফল করেছে। তা বিশ্ব ব্যাংক, আইএমএফ, বা মুডি'স - যে কেউই হোক না কেন, প্রত্যেকেই ভারতের জন্য তাদের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস বাড়িয়েছে। এই সব সংস্থা বলছে যে বিশ্বব্যাপী অনিশ্চয়তা থাকা সত্ত্বেও ভারত ৭ শতাংশের বেশি হারে বৃদ্ধি করতে থাকবে। আমরা ভারতীয়রা আত্মবিশ্বাসী যে আমরা এর চেয়েও ভালো ফল করব।
ভারতে এই আত্মবিশ্বাসের পিছনে শক্তিশালী কারণ রয়েছে। তা উৎপাদন ক্ষেত্র হোক বা পরিষেবা ক্ষেত্র - আজ বিশ্ব ভারতকে বিনিয়োগের জন্য একটি পছন্দের গন্তব্য হিসেবে দেখছে। এটি কোনো কাকতালীয় ঘটনা নয়, বরং গত ১০ বছরে করা গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারগুলির ফল। এই সংস্কারগুলি ভারতের সামষ্টিক অর্থনৈতিক মৌলিক বিষয়গুলিকে পাল্টে দিয়েছে।এর একটি উদাহরণ হল ভারতের ব্যাঙ্কিং সংস্কার, যা ব্যাঙ্কগুলির আর্থিক অবস্থাকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি, তাদের ঋণদান ক্ষমতাও বাড়িয়েছে। একইভাবে, জিএসটি বিভিন্ন কেন্দ্রীয় ও রাজ্য পরোক্ষ করকে একত্র করেছে। ইনসলভেন্সি অ্যান্ড ব্যাঙ্ক্রাপসি কোড - দায়িত্ব, পুনরুদ্ধার এবং সমাধানের একটি নতুন ঋণ সংস্কৃতি তৈরি করেছে। ভারত খনি, প্রতিরক্ষা এবং মহাকাশের মতো ক্ষেত্রগুলিকেও বেসরকারি সংস্থা এবং আমাদের তরুণ উদ্যোগপতিদের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে। বিশ্বের বিনিয়োগকারীদের জন্য আরও বেশি সুযোগ তৈরি করতে আমরা এফডিআই নীতিকে উদারীকরণ করেছি। আমরা ব্যবস্থাপনা খরচ এবং সময় কমাতে আধুনিক পরিকাঠামোর ওপর জোর দিচ্ছি। গত এক দশকে, আমরা পরিকাঠামোতে বিনিয়োগের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়েছি।
বন্ধুগণ,
সরকারের চলমান উদ্যোগগুলিতে ভারত প্রক্রিয়াগত সংস্কারকে একীভূত করেছে। আমরা ৪০,০০০-এরও বেশি সম্মতি বাতিল করেছি এবং কোম্পানি আইনকে অপরাধমুক্ত করেছি। যে সমস্ত বিধান পূর্বে ব্যবসা পরিচালনাকে কঠিন করে তুলেছিল, তার অনেকগুলিতেই সংশোধন আনা হয়েছে। কোম্পানি শুরু করা, বন্ধ করা এবং ছাড়পত্র পাওয়ার প্রক্রিয়াগুলিকে সরল করতে ন্যাশনাল সিঙ্গল উইন্ডো সিস্টেম চালু করা হয়েছে। এখন আমরা রাজ্য সরকারগুলিকে রাজ্য স্তরে প্রক্রিয়াগত সংস্কারগুলিকে দ্রুততর করতে উৎসাহিত করছি।
বন্ধুগণ,
ভারতে উৎপাদন ক্ষেত্রকে চাঙ্গা করতে, আমরা উৎপাদন-সংযুক্ত উৎসাহ প্রকল্প চালু করেছি, যার প্রভাব এখন অনেক ক্ষেত্রেই দৃশ্যমান। গত তিন বছরে, পিএলআই প্রায় ১.২৫ ট্রিলিয়ন টাকা (১.২৫ লক্ষ কোটি টাকা) বিনিয়োগ আকর্ষণ করেছে। এর ফলে প্রায় ১১ ট্রিলিয়ন টাকা (১১ লক্ষ কোটি টাকা) মূল্যের উৎপাদন ও বিক্রি হয়েছে। মহাকাশ এবং প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রেও ভারতের অগ্রগতি লক্ষণীয়। এই ক্ষেত্রগুলি সম্প্রতি উন্মুক্ত হলেও, ইতিমধ্যেই মহাকাশ ক্ষেত্রে ২০০টিরও বেশি স্টার্ট-আপ গড়ে উঠেছে। আজ, আমাদের বেসরকারি প্রতিরক্ষা কোম্পানিগুলি দেশের মোট প্রতিরক্ষা উৎপাদনের ২০ শতাংশের জন্য দায়ী।
বন্ধুগণ,
বৈদ্যুতিন ক্ষেত্রের প্রবৃদ্ধি আরও বেশি উল্লেখযোগ্য। মাত্র ১০ বছর আগেও ভারত ছিল বেশিরভাগ মোবাইল ফোনের প্রধান আমদানিকারক। আজ, ৩৩০ মিলিয়ন অর্থাৎ ৩৩ কোটিরও বেশি মোবাইল ফোন ভারতেই তৈরি হয়। আসলে, আপনি যে ক্ষেত্রের দিকেই তাকান না কেন, বিশ্বজুড়ে বিনিয়োগকারীদের জন্য ভারতে বিনিয়োগ করা এবং উচ্চ মুনাফা অর্জনের অসাধারণ সুযোগ রয়েছে।
ভারত এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং সেমিকন্ডাক্টরের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তিগুলিতেও মনোযোগ দিচ্ছে এবং আমরা এই ক্ষেত্রগুলিতে উল্লেখযোগ্যভাবে বিনিয়োগ করছি। আমাদের এআই মিশন এই ক্ষেত্রে গবেষণা এবং দক্ষতা উন্নয়ন - উভয়কেই বাড়িয়ে তুলবে। ইন্ডিয়া সেমিকন্ডাক্টর মিশনের অধীনে ১.৫ ট্রিলিয়ন টাকা (১.৫ লক্ষ কোটি টাকা) বিনিয়োগ করা হচ্ছে। শীঘ্রই ভারতে পাঁচটি সেমিকন্ডাক্টর প্ল্যান্ট চালু হবে এবং তারা বিশ্বজুড়ে প্রতিটি কোণায় ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ চিপ সরবরাহ শুরু করবে।
বন্ধুগণ,
আপনারা সকলেই জানেন যে, ভারত হলো সাশ্রয়ী বুদ্ধিবৃত্তিক শক্তির প্রধান উৎস। এর প্রমাণ হল - আজ সারা বিশ্বের কোম্পানিগুলির ১,৭০০টিরও বেশি গ্লোবাল কেপেবিলিটি সেন্টার ভারতে কাজ করছে। এই কেন্দ্রগুলিতে দুই মিলিয়ন অর্থাৎ ২০ লক্ষের বেশি ভারতীয় যুবক-যুবতী নিযুক্ত আছেন, যাঁরা বিশ্বকে উচ্চ-দক্ষতাসম্পন্ন পরিষেবা প্রদান করছেন। আজ, ভারত এই জনসংখ্যার লভ্যাংশকে সর্বাধিক ব্যবহার করার উপর অভূতপূর্ব মনোযোগ দিচ্ছে। এটি অর্জন করার জন্য, শিক্ষা, উদ্ভাবন, দক্ষতা এবং গবেষণার উপর বিশেষ মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে। এই ক্ষেত্রে নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা একটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার এনেছি। গত ১০ বছরে, প্রতি সপ্তাহে একটি নতুন বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রতিদিন দুটি করে নতুন কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে, আমাদের দেশে মেডিকেল কলেজগুলির সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে।
এবং বন্ধুগণ,
আমরা শুধুমাত্র শিক্ষার সুযোগ বাড়ানোর দিকেই নজর দিচ্ছি না, এর মান উন্নয়নের দিকেও মনোযোগ দিচ্ছি। ফলস্বরূপ, গত এক দশকে কিউএস ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র্যাঙ্কিংসে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানগুলির সংখ্যা তিন গুণেরও বেশি হয়েছে। এই বছরের বাজেটে, আমরা লক্ষ লক্ষ তরুণ-তরুণীর দক্ষতা বৃদ্ধি এবং ইন্টার্নশিপের জন্য একটি বিশেষ প্যাকেজ ঘোষণা করেছি। প্রধানমন্ত্রী ইন্টার্নশিপ প্রকল্পের অধীনে, প্রথম দিনেই পোর্টালে ১১১টি কোম্পানি নিবন্ধিত হয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে, আমরা বড় বড় কোম্পানিতে ইন্টার্নশিপ করার জন্য ১ কোটি যুবক-যুবতীকে সহায়তা করছি।
বন্ধুগণ,
গত ১০ বছরে ভারতের গবেষণা সংক্রান্ত ফলাফল এবং পেটেন্ট দাখিলও দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। এক দশকেরও কম সময়ে, ভারত গ্লোবাল ইনোভেশন ইনডেক্স র্যাঙ্কিংয়ে ৮১-তম স্থান থেকে ৩৯-তম স্থানে উঠে এসেছে এবং আমরা আরও এগিয়ে যেতে চাই। গবেষণার এই বাস্তুতন্ত্রকে আরও শক্তিশালী করতে ভারত ১ ট্রিলিয়ন টাকা মূল্যের একটি গবেষণা তহবিলও তৈরি করেছে।
বন্ধুগণ,
আজ, একটি সবুজ ভবিষ্যৎ এবং সবুজ কর্মসংস্থান নিয়ে বিশ্বের ভারতের প্রতি অনেক প্রত্যাশা রয়েছে এবং এই খাতে আপনাদের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ বিদ্যমান। ভারতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জি২০ শীর্ষ সম্মেলন আপনারা সবাই দেখেছেন। এই সম্মেলনের অনেক সাফল্যের মধ্যে একটি হল সবুজ রূপান্তরের প্রতি নতুন করে উৎসাহ সৃষ্টি। জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের সময়, ভারতের উদ্যোগে গ্লোবাল বায়োফুয়েল অ্যালায়েন্স চালু করা হয় এবং জি২০ সদস্য দেশগুলি ভারতের গ্রিন হাইড্রোজেন শক্তি উন্নয়নের প্রতি দৃঢ় সমর্থন জানায়।ভারতে, আমরা এই দশকের শেষ নাগাদ ৫ মিলিয়ন টন গ্রিন হাইড্রোজেন উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি। আমরা ক্ষুদ্র স্তরেও সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।
ভারত সরকার পিএম সূর্য ঘর নামে বিনামূল্যে একটি বিদ্যুৎ যোজনা বৃহৎ ছাদের স্থাপিত সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প চালু করেছে। আমরা প্রতিটি পরিবারকে রুফটপ সোলার সিস্টেম (ছাদে স্থাপিত সৌর বিদ্যুৎ প্রযুক্তি) স্থাপনের জন্য তহবিল সরবরাহ করছি এবং সোলার পরিকাঠামো বসাতে সহায়তা করছি। এখন পর্যন্ত ১৩০ লক্ষেরও বেশি অর্থাৎ ১ কোটি ৩০ লক্ষ পরিবার এই প্রকল্পের জন্য নাম নথিভুক্ত করেছে, যার অর্থ হল এই পরিবারগুলি এখন সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদকে পরিণত হয়েছে। এই উদ্যোগের ফলে, প্রতিটি পরিবারের গড়ে ২৫,০০০ টাকা সাশ্রয় হবে। উৎপাদিত প্রতি তিন কিলোওয়াট সৌর বিদ্যুতের জন্য ৫০-৬০ টন কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ রোধ করা যাবে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ১.৭ মিলিয়ন (১৭ লক্ষ) কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে, যা এক বিশাল দক্ষ যুব সমাজ গড়ে তুলবে। ফলস্বরূপ, এই ক্ষেত্র আপনাদের জন্য অসংখ্য নতুন বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি হচ্ছে।
বন্ধুগণ,
ভারতীয় অর্থনীতি বর্তমানে একটি গুরুত্বপূর্ণ রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভিত্তি নিয়ে ভারত ধারাবাহিক উচ্চ প্রবৃদ্ধির পথে রয়েছে। আজ, ভারত কেবল শীর্ষস্থানে পৌঁছানোর জন্যই চেষ্টা করছে না, বরং সেখানে স্থায়ীভাবে থাকার জন্যেও সম্মিলিত প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। আজ বিশ্ব প্রতিটি খাতে বিশাল সুযোগ প্রদান করছে। আমি নিশ্চিত যে আগামী দিনগুলিতে আপনাদের আলোচনা অনেক মূল্যবান অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করবে।
আমি আত্মবিশ্বাসী যে আগামী দিনগুলিতে আপনাদের আলোচনা থেকে অনেক মূল্যবান অন্তর্দৃষ্টি বেরিয়ে আসবে। আমি এই উদ্যোগের জন্য শুভ কামনা জানাই এবং আপনাদের আশ্বস্ত করছি যে, এটি আমাদের কাছে কেবল একটি বিতর্কের মঞ্চ নয়। এখানে যে আলোচনাগুলি হয়, যে বিষয়গুলি উত্থাপিত হয়, যে করণীয় এবং বর্জনীয়গুলি উপকারী প্রমাণিত হয় - সেগুলিকে আমরা সযত্নে আমাদের সরকারি ব্যবস্থার মধ্যে একত্রীভূত করি। আমরা সেগুলিকে আমাদের নীতি এবং প্রশাসনে অন্তর্ভুক্ত করি।
আমরা সেগুলিকে আমাদের নীতি এবং প্রশাসনে অন্তর্ভুক্ত করি। এই মন্থন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আপনারা যে জ্ঞান দেন, তাকেই আমরা আমাদের দেশের জন্য এক উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়তে ব্যবহার করি। অতএব, আপনাদের অংশগ্রহণ আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনাদের প্রতিটি কথা আমাদের কাছে মূল্যবান। আপনাদের চিন্তা, আপনাদের অভিজ্ঞতা - এগুলিই আমাদের সম্পদ। আপনাদের এই অবদানের জন্য আমি আরও একবার ধন্যবাদ জানাই। এছাড়াও, আমি এন কে সিং এবং তাঁর সমস্ত দলকে তাঁদের প্রশংসনীয় প্রয়াসের জন্য অভিনন্দন জানাই।
আন্তরিক শুভেচ্ছা-সহ।
ধন্যবাদ!
SSS/AS....
(Release ID: 2176686)
Visitor Counter : 10
Read this release in:
Odia
,
Tamil
,
Telugu
,
Kannada
,
Assamese
,
English
,
Urdu
,
Marathi
,
हिन्दी
,
Manipuri
,
Punjabi
,
Gujarati
,
Malayalam