প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

গুজরাটের আমেদাবাদে ৫৪০০ কোটি টাকার উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, দেশের নিরাপত্তা ও আত্মনির্ভরতার প্রসঙ্গে দিলেন তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা

Posted On: 25 AUG 2025 9:04PM by PIB Kolkata

নতুন দিল্লি, ২৫ অগাস্ট, ২০২৫

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ গুজরাটের আমেদাবাদে ৫৪০০ কোটি টাকার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করলেন। ভাষণে তিনি বলেন, সারা দেশে এখন গণেশোৎসবের আবহ। তারই মধ্যে গণপতি বাপ্পার আশীর্বাদ নিয়ে গুজরাটের বিকাশের লক্ষ্যে এই প্রকল্পগুলির সূচনা হচ্ছে।

এবারের বর্ষায় গুজরাটের অনেক অঞ্চলেই তুমুল বৃষ্টিপাত হয়েছে এবং দেশে বিভিন্ন এলাকায় মেঘভাঙা বৃষ্টির বিপর্যয় নেমে এসেছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির প্রতি সমবেদনা জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রকৃতির খামখেয়ালিপনা এখন সারা দেশের সামনেই বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজ্যগুলির সঙ্গে সমন্বয়ের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় সরকার ত্রাণ ও উদ্ধারের কাজে সক্রিয়। 

গুজরাট দুই মোহনের ভূমি বলে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রথম জন দ্বারকাধীশ শ্রী কৃষ্ণ- যাঁর সুদর্শন চক্র দেশ ও সমাজের সুরক্ষা ও ন্যায় বিচারের প্রতীক এবং পঙ্কিল অন্ধকারের মধ্যে লুকিয়ে থাকা শত্রুকেও বিনাশ করতে সক্ষম। সুদর্শন চক্রের এই ধারণা অনুযায়ী আজ ভারত এগিয়ে চলেছে। পহেলগাঁও হামলার উত্তরে ভারতের অপারেশন সিঁদুর সেই কথাই বলে।  
দ্বিতীয় জন সবরমতীর পূজনীয় বাপু – যাঁর চরকা আত্মনির্ভরতার বার্তা দেয়। স্বদেশীর মাধ্যমে সমৃদ্ধির পথ দেখিয়েছিলেন তিনি। 
প্রধানমন্ত্রী এপ্রসঙ্গে বলেন, বাপুজির সবরমতী আশ্রম এমন একটি দলের কর্মকাণ্ডের সাক্ষী, যাদের হাতে দেশ চালনার দায়িত্ব ছিল ৬০ থেকে ৬৫ বছর, অথচ স্বদেশী বা আত্মনির্ভরতার মন্ত্র অনুযায়ী তারা চলেনি। ভারত নির্ভরশীল হয়ে পড়ে অন্য নানা দেশের ওপর। দুর্নীতিকে প্রশয় দেওয়ার জন্য পরিকল্পিতভাবে এমনটা করা হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী পূর্বের শাসকদলকে কটাক্ষ করেন। তবে আজকের ভারত স্বনির্ভরতার পথে হেঁটে উন্নত দেশ হয়ে ওঠার ভিত গড়ছে বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেছেন। এই যাত্রায় কৃষক, মৎস্যজীবী, পশুপালক ও উদ্যোগপতিরা অন্যতম চালিকাশক্তি বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গুজরাটে পশুপালকদের সংখ্যা অনেক। এখানকার দুগ্ধ উৎপাদন শিল্প সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে দেশকে স্বনির্ভর করে তুলেছে। সারা বিশ্ব এখন অর্থনৈতিক স্বার্থজনিত অনভিপ্রেত রাজনীতি প্রত্যক্ষ করছে বলে প্রধানমন্ত্রী সাবধান করে দেন। আমেদাবাদের মাটিতে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী ফের আশ্বাস দেন যে ক্ষুদ্র উদ্যোগপতি, দোকানি, কৃষক ও পশুপালকদের স্বার্থরক্ষা তাঁর সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের বিষয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আত্মনির্ভর ভারত কর্মসূচিকে জোরদার করে তোলায় গুজরাট বিশেষ ভূমিকা পালন করে চলেছে। এটা সম্ভব হয়েছে দু-দশকের আন্তরিক প্রয়াসের দরুণ। আজকের যুব প্রজন্ম সেই দিনগুলি প্রত্যক্ষ করেনি যখন এই অঞ্চলে কার্ফু জারি হওয়া ছিল নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা। ব্যবসা বাণিজ্যের কাজ এর ফলে দারুণভাবে ব্যাহত হয়ে পড়েছিল। কিন্তু আজ ছবিটা একেবারেই আলাদা। 
গুজরাটে এখন সব ধরনের শিল্পের ব্যাপক প্রসার ঘটে চলেছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর সাম্প্রতিক দাহোদ সফরের উল্লেখ করেন তিনি। সেখানে তৈরি হচ্ছে রেলের ইলেকট্রিক ইঞ্জিন। গুজরাটে তৈরি হওয়া মেট্রো কামরা এখন রপ্তানি হচ্ছে। এই রাজ্যে ব্যাপক হারে উৎপাদিত হচ্ছে মোটর সাইকেল ও গাড়ি। আন্তর্জাতিক নানা সংস্থা এই রাজ্যে বিনিয়োগ করছে। এমনকি এখানে তৈরি হওয়া বিমানের যন্ত্রাংশও রপ্তানি হচ্ছে। ভদোদরায় বিমান উৎপাদনের কাজ শুরু হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। বৈদ্যুতিক যান উৎপাদনের অন্যতম কেন্দ্র হয়ে উঠেছে গুজরাট। বস্ত্র ও বয়ন, রত্ন ও অলঙ্কার প্রভৃতি শিল্পেও গুজরাট অন্যতম উৎপাদন স্থল। দেশের ওষুধ রপ্তানিতে এক তৃতীয়াংশ অবদান গুজরাটের । 
ভারত সৌর, বায়ু এবং পরমানু শক্তির ক্ষেত্রে দ্রুত এগিয়ে চলেছে এবং গুজরাট পরিবেশ বান্ধব শক্তি ও পেট্রোকেমিক্যাল ক্ষেত্রে অন্যতম উৎপাদন কেন্দ্র বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন। 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিল্পের বিকাশে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রাথমিক শর্ত। গুজরাটে এই বিষয়ে বিগত ২০-২৫ বছরে কাজ অনেক দূর এগিয়েছে। তৈরি হয়ে উঠেছে সুবিধাজনক ও আরামদায়ক পরিবহন ব্যবস্থা। 
দরিদ্র মানুষের মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপন সুনিশ্চিত করা তাঁর সরকারের দায়বদ্ধতার বিষয় বলে প্রধানমন্ত্রী ফের উল্লেখ করেন। সবরমতী আশ্রমের কাছে গড়ে ওঠা আবাসন এই সদিচ্ছারই প্রতিফলন বলে তাঁর মন্তব্য। 
সবরমতী আশ্রমের সংস্কারের লক্ষ্যে তাঁর সরকারের উদ্যোগের কথা উঠে আসে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে। এর পাশাপাশি তিনি উল্লেখ করেন সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের মূর্তির কথাও। 
দারিদ্র্য দূরীকরণে তাঁর সরকারের উদ্যোগের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন বিগত ১১ বছরে ২৫ কোটি মানুষ দারিদ্র্য সীমার ওপরে উঠে এসেছেন। তৈরি হয়েছে একটি নব্য মধ্যবিত্ত শ্রেণী। মধ্যবিত্ত বর্গের সুবিধার্থে ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করমুক্ত করা হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। জিএসটি ক্ষেত্রে আসন্ন সংস্কার প্রক্রিয়াও মধ্যবিত্ত বর্গ এবং ক্ষুদ্র উদ্যোগপতিদের সুবিধা করে দেবে বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গুজরাটের রাজ্যপাল আচার্য দেবব্রত, মুখ্যমন্ত্রী শ্রী ভূপেন্দ্রভাই প্যাটেল, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী সি আর পাতিল প্রমুখ।

প্রেক্ষাপট
প্রধানমন্ত্রীর হাতে আজ মোট ১৪০০ কোটি টাকার একাধিক রেল প্রকল্পের সূচনা হয়। বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎ প্রকল্পেরও সূচনা করেন তিনি। এছাড়াও দরিদ্রের আবাসন, সড়ক এবং পরিষেবা সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি প্রকল্পেরও সূচনা হয় আজ। 

 

SC/AC/SG


(Release ID: 2160814)