প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
যৌথ বিবৃতি: ভারত ও ব্রাজিল- বৃহত্তর উদ্দেশ্যের দুই দেশ
Posted On:
09 JUL 2025 5:55AM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ৯ জুলাই, ২০২৫
ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুই ইনাসিও লুলা দ্য সিলভা-র আমন্ত্রণে ৮ জুলাই ২০২৫ রাষ্ট্রীয় সফরে ব্রাজিলে যান। গত প্রায় ৮ দশক ধরে মৈত্রী ও পারস্পরিক আস্থা ভারত-ব্রাজিল সম্পর্কের মূল ভিত্তি হয়ে থেকেছে। ২০০৬ সালে এই সম্পর্ক কৌশলগত অংশীদারিত্বে উন্নীত হয়।
দুই নেতা দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয়ে মতবিনিময় করেছেন। তাঁরা ভারত-ব্রাজিল কৌশলগত অংশীদারিত্বকে শক্তিশালী করতে তাঁদের সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করেন। এর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিষয়ে তাঁদের দেশের স্বতন্ত্র ভূমিকা বজায় রাখা এবং অভিন্ন মূল্যবোধ ও বৃহত্তর উদ্দেশ্যে তাঁদের নাগরিকদের শান্তি, সমৃদ্ধি ও সুস্থিত উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাওয়ার অঙ্গীকার করেন।
ভারত ও ব্রাজিলের মধ্যে যে শক্তিশালী অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত পরিপূরকতা আছে, তার প্রেক্ষিতে দুই নেতা আগামী দশকে ৫টি স্তম্ভের ওপর ভিত্তি করে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করার কথা বলেছেন:
১. প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা
২. খাদ্য ও পুষ্টি সুরক্ষা
৩. জ্বালানি রূপান্তর ও জলবায়ু পরিবর্তন
৪. ডিজিটাল রূপান্তর ও উদীয়মান প্রযুক্তি
৫. কৌশলগত ক্ষেত্রগুলিতে শিল্প অংশীদারিত্ব
১. প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা
দুই নেতা যৌথ সামরিক মহড়া, উচ্চপর্যায়ের প্রতিরক্ষা প্রতিনিধিদলের সফর সহ প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রের ক্রমবর্ধমান সহযোগিতাকে স্বাগত জানিয়েছেন। দুই দেশের মধ্যে গোপনীয় তথ্য বিনিময় ও পারস্পরিক সুরক্ষা সংক্রান্ত চুক্তি সাক্ষরিত হওয়ায় তাঁরা সন্তোষ প্রকাশ করেন। এরফলে বিভিন্ন কৌশলগত ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও মজবুত হবে বলে মতপ্রকাশ করেন তাঁরা। দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সাইবার নিরাপত্তা বার্তালাপের সূচনাকেও স্বাগত জানিয়েছেন দুই নেতা। এই বার্তালাপ সাইবার সুরক্ষা সংক্রান্ত তথ্য, অভিজ্ঞতা ও জাতীয় পরিপ্রেক্ষিত বিনিময়ের এক মঞ্চ হিসেবে কাজ করবে বলে আশাপ্রকাশ করেন তাঁরা।
জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁও-এ জঙ্গি হানার নিন্দা করে ভারতের প্রতি সংহতি প্রকাশ করায় প্রধানমন্ত্রী মোদী ব্রাজিলের প্রশংসা করেন। দুই নেতা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় সীমান্তপারের সন্ত্রাস, হিংসাশ্রয়ী উগ্রপন্থা সহ সন্ত্রাসবাদের যেকোন আকার ও রূপের তীব্র নিন্দা করেন। সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলায় সংঘবদ্ধ আন্তর্জাতিক উদ্যোগের ওপর জোর দেন তাঁরা। এই প্রসঙ্গে ভারত ও ব্রাজিলের মধ্যে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ ও সংগঠিত অপরাধ মোকাবিলায় হওয়া চুক্তিকে স্বাগত জানান দুই নেতা। সাইবার অপরাধের বিষয়ে রাষ্ট্রসংঘের সনদকে স্বাগত জানিয়ে একে সমর্থন করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন তাঁরা।
লস্কর-ই-তৈবা, জৈশ-ই-মহম্মদ সহ রাষ্ট্রসংঘের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলির বিরুদ্ধে একযোগে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে দুই নেতা সন্ত্রাসের মদতদাতা ও অর্থ যোগানকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
মহাকাশ কর্মসূচিতে সাফল্যের জন্য প্রেসিডেন্ট লুলা, প্রধানমন্ত্রী মোদীকে অভিনন্দন জানান। মহাকাশ ও সমুদ্র ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর জোর দেন তাঁরা।
ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা বর্তমানে ক্রমাগত বেড়ে চলার প্রেক্ষিতে দুই নেতা বহুপাক্ষিকতাকে আরও জোরদার করার ওপর জোর দিয়েছেন। বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য বার্তালাপ ও কূটনীতি সবথেকে বেশি কার্যকর বলে মতপ্রকাশ করেছেন তাঁরা।
রাষ্ট্রসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সার্বিক সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার উল্লেখ করে লাতিন আমেরিকা, ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ, এশিয়া ও আফ্রিকার মতো প্রতিনিধিহীন অঞ্চলগুলির প্রতিনিধিত্বের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। এই প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী সদস্যপদলাভের জন্য ভারত ও ব্রাজিল একে অপরের দাবিকে সমর্থন জানিয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে দুই নেতা বলেছেন, ওই অঞ্চলের বিভিন্ন ধরনের বিরোধের নিষ্পত্তিতে আলোচনা ও কূটনীতির কোনও বিকল্প নেই।
দুই নেতা সার্বভৌম ও স্বাধীন প্যালেস্তাইন রাষ্ট্রের প্রতি তাঁদের সমর্থন ব্যক্ত করেছেন। সেইসঙ্গে পণবন্ধীদের মুক্তি এবং গাজায় মানবিক সাহায্য নির্বিঘ্নে পৌঁছে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
দুই নেতা ইউক্রেনে সংঘর্ষের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন। বিপুল প্রাণহানি ও সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতিতে দুঃখপ্রকাশ করেছেন তাঁরা। সেইসঙ্গে উন্নয়নশীল দেশগুলির ওপর এই সংঘর্ষের প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দুই নেতা। এই সংঘর্ষের শান্তিপূর্ণ ও দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের জন্য কূটনৈতিক প্রয়াসকে স্বাগত জানিয়েছেন তাঁরা।
২. খাদ্য ও পুষ্টি সুরক্ষা
উন্নয়ন অসাম্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ এবং সামাজিক অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতির প্রসারে তাঁদের সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করেছেন দুই নেতা। সুনির্দিষ্ট নীতি প্রণয়নের মাধ্যমে খাদ্য ও পুষ্টি সুরক্ষা সুনিশ্চিত করার ওপর জোর দিয়েছেন তাঁরা। উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, সুস্থিত কৃষি, লাভজনক দাম, কৃষকদের আর্থিক সহায়তা এবং তাঁদের যথাযথ স্বাস্থ্য ও শিক্ষা পরিষেবা দেওয়ার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্ব থেকে ক্ষুধা নির্মূল করার যে লক্ষ্য রাখা হয়েছে, তা স্মরণ করে ক্ষুধা ও দারিদ্রের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী জোটের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেছেন তাঁরা।
কৃষি পণ্যের ন্যায্য দাম সুনিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে তাঁরা অনুকূল কৃষি বাজার ও কৃষি নীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে সরকারের প্রধান ভূমিকার উল্লেখ করেছেন। কৃষক ও শ্রমিকদের জীবিকায় সহায়তা এবং সেইসঙ্গে জাতীয়, আঞ্চলিক ও বিশ্বজনীন খাদ্য সুরক্ষা সুনিশ্চিত করতে সরকারি খাদ্য মজুতের প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করেন তাঁরা। কৃষি ও গ্রামোন্নয়ন ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বৃদ্ধির সম্ভাবনার উল্লেখ করে দুই নেতা সুস্থিত কৃষি অনুশীলনে প্রযুক্তির প্রয়োগের ওপর জোর দেন। কৃষি বাণিজ্য যাতে একতরফা নিষেধাজ্ঞা বা সংরক্ষণবাদের শিকার না হয়, তা নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক মহলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।
কৃষি উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে যৌথ গবেষণা ও উন্নয়নের সম্ভাবনার উল্লেখ করেন দুই নেতা।
৩. জ্বালানি রূপান্তর ও জলবায়ু পরিবর্তন
জৈব জ্বালানি ক্ষেত্রে ভারত ও ব্রাজিলের অসাধারণ সহযোগিতার প্রশংসা করে দুই নেতা বিশ্ব জৈব জ্বালানি জোটে তাঁদের সম্পৃক্ততা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। ভারত ও ব্রাজিল এই জোটের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। দুই নেতা দূষণমুক্ত, সুস্থিত, ন্যায্য, সুলভ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক জ্বালানি রূপান্তরের পক্ষে জোরালো সওয়াল করেছেন। পরিবহন ক্ষেত্রে কার্বন নির্গমনের হার কমাতে তাঁরা জৈব জ্বালানি ও ফ্লেক্স ফুয়েলের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার উল্লেখ করেন। বিমান ক্ষেত্রে কার্বন নির্গমনের হার কমাতে বর্তমানে যে সাসটেনেবল অ্যাভিয়েশন ফুয়েল (এসএএফ) ব্যবহার করা হচ্ছে তার গুরুত্ব স্বীকার করে এক্ষেত্রে ভারত ও ব্রাজিলের অংশীদারিত্বের উল্লেখ করেন তাঁরা।
ব্রাজিল ট্রপিক্যাল ফরেস্ট ফরএভার ফান্ড (টিএফএফএফ) নামে যে তহবিলের সূচনা করেছে, তার প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। ক্রান্তীয় অরণ্যের সুরক্ষা ও সংরক্ষণে আন্তর্জাতিক ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার গুরুত্বের ওপর জোর দেন দুই নেতা।
দুই নেতা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন বর্তমান সময়ের প্রধান চ্যালেঞ্জগুলির অন্যতম। সুস্থিত উন্নয়ন এবং দারিদ্র দূরীকরণের প্রেক্ষাপটে এর মোকাবিলা করতে হবে। এই বিষয়ে তাঁরা দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতাকে আরও সুগভীর ও প্রসারিত করতে সহমত হন। জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলায় তাঁরা কিয়োটো প্রটোকল ও প্যারিস চুক্তির পক্ষে সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।
ভারত-ব্রাজিল অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও সুগভীর করার গুরুত্ব স্বীকার করে দুই নেতা সুস্থিত উন্নয়ন, স্থানীয় মুদ্রার যোগান, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় অর্থের যোগান ও মূলধনী বাজার সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই সহযোগিতা আরও মজবুত করার অঙ্গীকার গ্রহণ করেন।
তাঁরা উন্নয়নের প্রসারে রাষ্ট্রসংঘের নেতৃত্বে আরও শক্তিশালী, সংহত এবং আরও বেশি অন্তর্ভুক্তিমূলক আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ও আর্থিক কাঠামো গড়ে তোলার পক্ষে মতপ্রকাশ করেন।
সুস্থিত উন্নয়নের লক্ষ্যে যে কর্মসূচি গড়ে তোলা হয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে সংযুক্ত ও ভারসাম্যপূর্ণভাবে তার পূর্ণ রূপায়নের প্রতি অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন দুই নেতা। জৈব অর্থনীতি ও বৃত্তাকার অর্থনীতি সুস্থিত উন্নয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে তাঁরা মতপ্রকাশ করেন।
৪. ডিজিটাল রূপান্তর ও উদীয়মান প্রযুক্তি
ডিজিটাল জনপরিকাঠামো, কৃত্রিম মেধা এবং উদীয়মান প্রযুক্তি সহ ডিজিটাল কর্মসূচি অর্থনৈতিক উন্নয়নের পক্ষে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে স্বীকার করে নিয়ে দুই নেতা এক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বৃদ্ধিকে স্বাগত জানান। এই সংক্রান্ত সহযোগিতার প্রসারে ভারত ও ব্রাজিলের মধ্যে যে সমঝোতাপত্র সাক্ষরিত হয়েছে তাকেই স্বাগত জানান দুই নেতা। ডিজিটাল শাসন সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক মঞ্চে তাঁরা একযোগে কাজ কাজ করতে অঙ্গীকারবদ্ধ হন। এক্ষেত্রে কৃত্রিম মেধার সুবিধা এবং সম্ভাব্য ঝুঁকি বিশেষভাবে তুলে ধরা হবে বলে জানান তাঁরা। ২০২৬ সালে পরবর্তী এআই শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করতে চলেছে ভারত। এজন্য প্রেসিডেন্ট লুই ইনাসিও লুলা দ্য সিলভা ভারতকে অভিনন্দন জানান।
বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আরও বৃদ্ধির সম্ভাবনা নিয়ে দুই নেতা সহমত হয়েছেন। ডিজিটাল জনপরিকাঠামো, কৃত্রিম মেধা, কোয়ান্টাম প্রযুক্তি, পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি ও বহির্মহাকাশে সহযোগিতা বাড়াতে তাঁরা একটি যৌথ কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গবেষক, উদ্ভাবন হাব ও স্টার্টআপগুলির মধ্যে সরাসরি সংযোগ স্থাপনের গুরুত্বের ওপর জোর দেন তাঁরা।
৫. কৌশলগত ক্ষেত্রগুলিতে শিল্প অংশীদারিত্ব
সংরক্ষণবাদের জেরে ক্রমশ কঠিন হয়ে ওঠা আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে দুই নেতা দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। ওষুধ, প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম, খনি ও খনিজ এবং তেল ও গ্যাস ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক অংশীদারিত্ব মজবুত করার সংকল্প নেওয়া হয়।
দুই নেতা ওষুধ ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান সহযোগিতাকে স্বাগত জানান। ব্রাজিলে কাজ করতে থাকা ভারতীয় ওষুধ কোম্পানীর সংখ্যা বাড়ায় তাঁরা সন্তোষপ্রকাশ করেন। দুই দেশের প্রতিষ্ঠানগুলিকে তাঁরা নতুন ওষুধ আবিষ্কারের জন্য যৌথ গবেষণা প্রয়াস গ্রহণের আহ্বান জানান।
অসামরিক বিমান ক্ষেত্রে ভারত ও ব্রাজিলের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির ব্যাপক সম্ভাবনার উল্লেখ করে তাঁরা সরকারি ও বেসরকারি কোম্পানীগুলিকে সহযোগিতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
দুই নেতা তাঁদের দেশের প্রতিরক্ষা শিল্পগুলিকে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে সহযোগিতার নতুন অধ্যায়ের সূচনা করার আহ্বান জানান।
অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও জাতীয় সুরক্ষার ক্ষেত্রে বিরল খনিজের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে তাঁরা সৌর প্যানেল, বায়ু টার্বাইন, ইলেক্ট্রিক যানবাহন ও জ্বালানী মজুত ব্যবস্থার উন্নয়নে যৌথ উদ্যোগ স্থাপনের কথা বলেন।
দু-দেশের তেল ও গ্যাস সংস্থাগুলিকে যৌথ উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান তাঁরা। সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র অনুসন্ধানে উৎসাহ দেন।
পর্যটনের বিকাশে দুই নেতা সুমন্বিত ব্যবস্থা গ্রহণের অঙ্গীকার করেছেন।
দু-দেশের মধ্যে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করে দুই নেতা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি মন্ত্রীস্তরীয় পর্যালোচনা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সহমত হয়েছেন। ব্যবসা ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বেসরকারি সংস্থাগুলিকে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান তাঁরা। ২০২০ সালে স্বাক্ষরিত দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ সহযোগিতা চুক্তি এবং ২০২২ সালে স্বাক্ষরিত দ্বৈতকর পরিহার চুক্তি দ্রুত কার্যকর করতে সহমত হয়েছেন দুই নেতা। ব্রাজিল-ভারত বিজনেস কাউন্সিলের মাধ্যমে দুই দেশের উদ্যোক্তা ও বাণিজ্য সংগঠনগুলিকে সক্রিয়ভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তাঁরা।
ভারতের শিল্প ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য প্রসার দপ্তর এবং ব্রাজিলের উন্নয়ন, শিল্প ও পরিষেবা দপ্তরের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতাপত্রকে স্বাগত জানিয়েছেন দুই নেতা।
দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার অন্যান্য ক্ষেত্র
দুই নেতা সংস্কৃতি, স্বাস্থ্য, ক্রীড়া, প্রথাগত জ্ঞান প্রভৃতি ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
বিনিময় কর্মসূচিতে ভারত ও ব্রাজিলের পড়ুয়াদের একে অপরের দেশে যাওয়াকে স্বাগত জানান তাঁরা।
এই সফরের সময় যেসব চুক্তি হয়েছে, সেগুলিকে দুই নেতা স্বাগত জানিয়েছেন। এগুলি হল:
আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ ও সংগঠিত অপরাধের মোকাবিলায় সহযোগিতা চুক্তি
গোপনীয় তথ্য বিনিময় ও পারস্পরিক সংরক্ষণ সংক্রান্ত চুক্তি
পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি ক্ষেত্রে সহযোগিতার সমঝোতাপত্র স্বাক্ষর
কৃষি গবেষণা নিয়ে ইএমবিআরএপিএ এবং ভারতীয় কৃষি গবেষণা পরিষদের মধ্যে সমঝোতাপত্র স্বাক্ষর
ডিজিটাল রূপান্তরের লক্ষ্যে বৃহৎ মাত্রার ডিজিটাল সমাধান বিনিময় নিয়ে সমঝোতাপত্র স্বাক্ষর
মেধাসত্ব নিয়ে ভারতের ডিপিআইআইটি ও ব্রাজিলের এমডিআইসি-র মধ্যে সমঝোতাপত্র স্বাক্ষর
নিম্নলিখিত দ্বিপাক্ষিক চুক্তি ও সমঝোতাপত্রগুলি দ্রুত চূড়ান্ত করতে দুই নেতা সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলিকে নির্দেশ দিয়েছেন। এগুলি হল:
দেওয়ানি বিষয় নিয়ে পারস্পরিক আইনী সহযোগিতা চুক্তি
প্রতিরক্ষা শিল্প সহযোগিতা বিষয়ক সমঝোতাপত্র
ক্রীড়াক্ষেত্রে সহযোগিতা নিয়ে সমঝোতাপত্র
সংগ্রহালয় সংক্রান্ত সমঝোতাপত্র
সাংস্কৃতিক বিনিয়ম কর্মসূচি ২০২৫-২০২৯
তাঁর উষ্ণ অভ্যর্থনা এবং অসাধারণ আতিথেয়তার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুই ইনাসিও লুলা দ্য সিলভাকে ধন্যবাদ জানান এবং তাঁর সুবিধামতো সময়ে তাঁকে ভারতে আসার আমন্ত্রণ জানান। প্রেসিডেন্ট লুলা সানন্দে সেই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন।
SC/SD/NS
(Release ID: 2143597)
Read this release in:
English
,
Urdu
,
Marathi
,
Hindi
,
Manipuri
,
Assamese
,
Punjabi
,
Gujarati
,
Odia
,
Tamil
,
Telugu
,
Kannada
,
Malayalam